দেশ
দেশের ৬৯ কারাগারের মধ্যে অতি ঝুঁকিপূর্ণ ১৭: কারা মহাপরিদর্শক
কারা মহাপরিদর্শক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মোহাম্মদ মোতাহের হোসেন বলেছেন, দেশের কারাগারগুলো অনেক পুরোনো হওয়ায় ৬৯টির মধ্যে ১৭টি অতি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
তিনি বলেন, সরকারও এ বিষয়ে জানেন। বেশ কিছু কারাগার নতুন করে নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
কারাগারের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বুধবার (৪ ডিসেম্বর) কারা সদর অধিদপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, কারাবন্দীদের খাবারে প্রোটিনের পরিমাণ বৃদ্ধি, অসুস্থ হলে দ্রুত অ্যাম্বুলেন্স সেবা, প্রতি একমাসে তাদের আইনজীবী ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়াসহ গত তিন মাসে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি আমরা।
আরও পড়ুন: সাতক্ষীরা জেলা কারাগারে হামলা, বেরিয়ে গেছে সব হাজতি-কয়েদি
মোতাহের হোসেন বলেন 'যোগাযোগের ক্ষেত্রে আদালতের আদেশ ছাড়াও সকল প্রকার বিচারাধীন বন্দী প্রতি ১৫ (পনের) দিনে এবং সাজাপ্রাপ্ত বন্দি ৩০ (ত্রিশ) দিনে, আইনজীবীসহ একবারে পরিবারের সর্বোচ্চ পাঁচজন সদস্যের সঙ্গে সাক্ষাত করতে পারেন।
এছাড়া প্রত্যেক বন্দিই প্রতি সাত দিনে একবার আইনজীবীসহ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তিনটি নম্বরে ১০ মিনিটের জন্য কথা বলার সুযোগ পান। শ্রেণিপ্রাপ্ত বন্দীরা দিনে দুই বেলা এবং অন্য সকল বন্দী দিনে একবেলা আমিষ জাতীয় খাবার পান।
আরও পড়ুন: জামিন নামঞ্জুর, সাবেক রেলমন্ত্রী সুজন কারাগারে
তিনি বলেন, কারাগারের অভ্যন্তরর ক্যান্টিনে পণ্যের দাম ন্যায্যতার সঙ্গে নির্ধারণ করে ক্যান্টিন সুবিধা সকলের জন্যই উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। তবে ব্যক্তি বিশেষে মাসিক সর্বোচ্চ ব্যয় নির্ধারণ করে দেওয়ার উদ্যোগও গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
কারা মহাপরিদর্শক বলেন, দেশের এই পরিবর্তিত সময়ে কারাগারগুলোতে সাময়িকভাবে বন্দীর সংখ্যা তুলনামুলকভাবে কমলেও বর্তমানে তা উর্ধ্বমুখী। তাছাড়া বিশেষ প্রকৃতির বন্দীর সংখ্যা কম নয়। তবে সকল সময়ের ন্যায় কারাবিধিসহ অন্যান্য বিধি-বিধানের আলোকে তাদের নিরাপদ আটক ও প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা হচ্ছে।
বিএসএমএমইউতে সাবেক এমপি আসাদুজ্জামান নূরের সঙ্গে অনাকাঙ্ক্ষিত একটি ঘটনার বিষয়ে তিনি বলেন, 'যখন আমরা বন্দীদের চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাই, তখন আমাদের রক্ষীরা উপস্থিত থাকেন। সেদিনও ছিল। তারা সে সময় ব্যবস্থা নিয়েছে। ‘
কারাগারে বর্তমানে ১৫ জন জঙ্গি এবং ৭০ জনের মতো পলাতক আছেন বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন,‘ আমরা কাউকে জঙ্গি বলছি না। আদালত থেকে তারা জঙ্গি হিসেবে এসেছে। আমাদের অবকাঠামোগত কিছু দুর্বলতা আছে। সেগুলো সমাধানের জন্য সরকারের কাছে আমরা প্রস্তাবনা দেবো।'
কারা মহাপরিদর্শক বলেন, গত ৫ অগাস্ট পরবর্তী সময়ে ৫০ হাজারের মতো বন্দী ছিল। এই সংখ্যা কমে আসলেও এখন আবার তা বেড়ে ৬৫ হাজারের মতো হয়েছে। দেশের সব হাসপাতালে প্রিজন সেল না থাকায় বন্দীদের চিকিৎসা ক্ষেত্রে কিছু দুর্বলতা থাকার কথা স্বীকার করে তা কাটিয়ে উঠার আশ্বাস দেন তিনি।
কারা কর্তৃপক্ষের গৃহীত পদক্ষেপসমূহ
১. কারা অভ্যন্তরের সকল প্রকার তল্লাশি জোরদার করা হয়েছে। এছাড়া অবৈধ দ্রব্যাদির প্রবেশ রোধকল্পে প্রবেশপথে বডিস্ক্যানারসহ অন্যান্য আধুনিক সরঞ্জামাদি স্থাপন করা হয়েছে।
২. কারাগারে মাদক দ্রব্যের প্রবেশ রোধ করতে ঝুকিপূর্ণ কারাগারগুলোতে ডগ স্কোয়াড মোতায়েন প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। সৎ এবং যোগ্যতাসম্পন্ন কর্মকর্তা এবং কারারক্ষীদের তাদের পেশাগত যোগ্যতার ভিত্তিতে কারা সদর দপ্তরসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কারাগারসমূহে পদায়ন করা হয়েছে।
৩. অসাধু কারা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে চাকরি থেকে অপসারণ, তাৎক্ষণিক বদলিসহ সকল প্রকার বিভাগীয় কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। এক্ষেত্রে আইনি দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে অনেকে আবার অপরাধমূলক কার্যক্রমে জড়িত হচ্ছেন বিধায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে আইনি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
৪. সকল সময়ে বন্দীদের সঙ্গে মানবিক আচরণ নিশ্চিতের জন্য বেশ কয়েকটি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বন্দীদের প্রাপ্যতা অনুযায়ী খাবার সহ প্রয়োজনীয় সরাঞ্জামাদির সরবরাহ নিশ্চিতের জন্য কঠোর তদারকি অব্যাহত রয়েছে। বন্দীদের দেখা সাক্ষাত, টেলিফোনে কথোপকথন, চিকিৎসা সেবা যথাযথভাবে নিশ্চিতের লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা জারিসহ তা বাস্তবায়নে কঠোর নজরদারি করা হচ্ছে।
৫. বন্দী ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে কারাগার ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সফটওয়্যারসহ, আর এফ আইডি এবং জিপিএস ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সেবা প্রত্যাশীদের সহায়তার জন্য ২৪ ঘণ্টা হটলাইন চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
৬. কারাগারকে সংশোধনাগার হিসেবে রূপান্তরের লক্ষ্যে বন্দীদের প্রশিক্ষণসহ তাদের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে থাকবে, নতুন পণ্যের উৎপাদনের লক্ষ্যে স্থাপনা তৈরি, পুরোনো যন্ত্রপাতির আধুনিকায়ন। এছাড়া বিজিএমই এর সহায়তায় একটি পূর্ণাঙ্গ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারিং লাইন স্থাপনের লক্ষ্যে তাদের সাথে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি সই করাসহ কারাগারে কর্মদক্ষতা অর্জনকারী বন্দীদের তাদের মুক্তির পর বিজেএমই আওতাভুক্ত কারখানাগুলোতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চাকরি দেওয়ার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে আলোচনা চলছে। পরবর্তীতে কারাগারে খাবার পানি বোতলজাতকরণ, মাস্ক তৈরির মতো কার্যক্রমও গ্রহণ করা হবে।
৭। কারাগারকে সংশোধনাগার হিসেবে রূপান্তরের লক্ষ্যে বন্দীদের প্রশিক্ষণসহ তাদের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে নতুন পণ্য উৎপাদনের লক্ষ্যে স্থাপনা তৈরি, পুরনো যন্ত্রপাতির আধুনিকায়ন। এছাড়া বিজিএমই এর সহায়তায় একটি পূর্ণাঙ্গ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারিং লাইন স্থাপনের লক্ষ্যে তাদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি সই করাসহ কারাগারে কর্মদক্ষতা অর্জনকারী বন্দীদের তাদের মুক্তির পর বিজেএমই আওতাভূক্ত ফ্যাক্টরীসমূহে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চাকুরী প্রদানের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে আলোচনা চলছে। পরবর্তীতে কারাগারে খাবার পানি বোতলজাতকরণ, মাস্ক তৈরির মতো কার্যক্রমও গ্রহণ করা হবে।
৮. অতি পুরাতন কারা আইন ও বিধি বিধান সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণসহ কারা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কল্যাণে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে জনবল বৃদ্ধি, পদ-পদবির আপগ্রেডেশন, নিয়োগবিধি পরিবর্তনসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা। এ সকল বিষয়সমূহ সরকারের সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে।
৯. নানা মহলের দাবির প্রেক্ষিতে কারা অধিদপ্তরের লোগো পরিবর্তনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এ ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত লোগো যেন কারা অধিদপ্তরের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় সে দিকে লক্ষ্য রাখা হবে।
১০. বন্দী ব্যবস্থাপনা উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রীয় কারা হাসপাতাল স্থাপনসহ বেশ কয়েকটি ঝুঁকিপূর্ণ কারাগার পুনঃনির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এ ছাড়া জ্যামার, বডিক্যামসহ আধুনিক সরঞ্জামাদি কেনার উদ্যোগও গ্রহণ করা হয়েছে।
১১. কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন স্তরে নিয়মিত প্রশিক্ষণের আয়োজনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে এবং এরুপ বেশ কয়েকটি প্রশিক্ষণ ইতোমধ্যেই সম্পন্ন করা হয়েছে।
১২. কারাগারগুলোর ভবনগুলোর অব্যবহৃত ছাদসমূহ ব্যবহার করে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এতে সরকারের বিপুল রাজস্ব সাশ্রয় হবে এবং বাড়তি বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করার ব্যবস্থাও রাখা হবে, যা দেশের সবুজ বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
আরও পড়ুন: ৫ দিনের রিমান্ড শেষে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল কারাগারে
২ সপ্তাহ আগে
দেশকে তপ্ত শ্মশানে পরিণত করতে আইনজীবীকে হত্যা করা হয়: ডা. শফিকুর
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে একটি উগ্র গোষ্ঠী চট্টগ্রাম আদালতের আইনজীবীকে হত্যা করে তারা দেশকে তপ্ত শ্মশানে পরিণত করতে চেয়েছিল।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টায় স্থানীয় একটি কমিউনিটি সেন্টারে জেলা জামায়াতের ইউনিয়ন দায়িত্বশীল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. শফিকুর রহমান এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এদেশের দায়িত্বশীল মুসলমানরা তাদের ফাঁদে পা দেয়নি।
জামায়াত আমির বলেন, জামায়াত ক্ষমতায় গেলে কাউকে অধিকার ভিক্ষা করতে হবে না। সবাইকে তার অধিকার সম্মানের সঙ্গে দেওয়া হবে। দেশের অফিস আদালতে কাউকে লাঞ্ছিত হতে হবে না। কৃষক তার ফসলের নায্য দাম পাবেন, আর শ্রমিক পাবেন তার ঘামের মজুরি।
আরও পড়ুন: যৌক্তিক সময়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের দাবি জামায়াতের
তিনি বলেন, আমরা ধৈর্য ধরেছি, দেশের মানুষকে শান্ত করেছি। এদেশে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্ট্রান সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে শান্তিতে বসবাস করবে। কোনো ধর্মীয় উপাসনালয় কাউকে পাহারা দিতে হবে না।
জামায়াতের আমির বলেন, আবু সাঈদ আমাদের এই স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রধান আইকন ও সেনাপতি। তিনি অধিকার চেয়েছিলেন কিন্তু তাকে পর পর তিনটি গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আমরা তাকে সেল্যুট জানাই।
তিনি আরও বলেন, লেখাপড়া করে এ দেশের যুবকেরা বেকারত্বের অভিশাপে আত্মহত্যা করবে না, বরং শিক্ষা অর্জন করার সঙ্গে সঙ্গে কাজ পাবেন।
জেলা জামায়াতের আমির ও কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য আইনজীবী হাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন, জামায়াত নেতা মাসুদ সাঈদী প্রমুখ।
আরও পড়ুন: ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের কৃতিত্ব ছাত্র-জনতার, কোনো দলের নয়: জামায়াতের আমীর
২ সপ্তাহ আগে
‘বাংলাদেশসহ জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর অর্থ পাওয়ার চেয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকা জরুরি’
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, কপ সম্মেলনে আমাদের নিগোসিয়েটরদের ঐক্যবদ্ধ থাকা জরুরি। কে কত টাকা পেল বা পেল না, এমনটি হলে আমাদের ঐক্য দুর্বল হবে। আর যদি ঐক্য ভেঙে যায় তাহলে আমাদের জন্য সেটি হবে ক্ষতিকর।
আজারবাইজানের রাজধানী বাকুর কপ-২৯ সেন্টারে ইউএনবিকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
ঐক্যটা কি ধরনের জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের অংশগ্রহণকারীদের যে মিটিং হয় সেই প্রক্রিয়া যেন অব্যাহত থাকে। তাহলে এটি একটি অর্জন হবে। বাংলাদেশসহ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো- আমরা যারা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করি, তাদের ঐক্য থাকলে তা এই কপ-২৯ এর বড় একটি অর্জন হবে।
আরেক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এবারের কপ বেশ হতাশা এবং উদ্বেগের।’
আরও পড়ুন: কপ-২৯ সম্মেলনের আগে জলবায়ু ন্যায্যতার দাবিতে যুববন্ধন
জলবায়ু পরিবর্তজনিত কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে কত টাকা পাওয়া যাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অর্থ যদি বলেন, একটা পরিমাণ, যে পরিমাণ পাওয়ার কথা সেই পরিমাণ পাওয়া যাবে না এটা মোটামুটি নিশ্চিত। অর্থের পরিমাণ থেকে বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে অর্থের মানটাতে। অর্থটা কি ঋণ হিসেবে আসবে, না কার্বন ক্রেডিট হিসেবে আসবে, অর্থটা সরাসরি সাহায্য হিসেবে জাতিসংঘের গ্যারান্টি চাই। আমরা যদি অর্থের মানটাতে সমঝোতায় পৌঁছাতে পারি, তাহলে একটা জয় হিসেবে ধরে নিতে পারব।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, আশা আপনার একরকম, আমার একরকম, আপনি হয়তো ভাবছেন ১.৩ বিলিয়ন টাকা নিয়ে গেলে আমরা ভাল হয়ে যাব। আমি ভাবছি এই মুহূর্তে যদি টাকার অঙ্ককে কেন্দ্র করে আমাদের ঐক্যটা ভেঙে যায়- তাহলে এটা অনেক বড় একটা ক্ষতি হবে। আর যদি ঐক্যটা ধরে রাখতে পারি সেটা আমার ও আমাদের আশার জায়গা। অর্থের মানের ব্যবস্থার সিদ্ধান্তে আসতে পারি এবং সেটি পাবলিকস ফান্ডিং হতে হবে।
তিনি বলেন, অর্থের মানের দিকে জয়ী হতে পারলে বিশাল জয় হবে। বাংলাদেশের নাগরিক যারা ফেনীতে ,কুমিল্লায়, শেরপুর বা সিলেটে বন্যা আক্রান্ত শিশু প্রতি জনের ৯০ ডলার ঋণের বোঝা মাথায় আছে। মানে হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিভিন্ন সময় প্রকল্প নেওয়া হয়েছে সেই প্রকল্প ঋণের বোঝা মাথায় রয়েছে। তাই অর্থের মানটাই লাভ করতে পারলে বড় জয় হবে।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, কত টাকা পেলাম বা পেলাম না এটা জরুরি না। কারণ কত টাকা পেলাম তা বড় কথা নয়। বরং এক তৃতীয়াংশ ভূমি যদি পানির নিচে চলে যায়, তার জন্য কত টাকা প্রয়োজন সেটি বড় বিষয়। মিটিগেশন করে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে কার্বন নি:স্বরণ কমাতে আমাদের জোর দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, যত টাকা আমাদের তার ৫০ ভাগ বন্যা আক্রান্ত মানুষগুলোর ঋণ খাপ খাইয়ে সক্ষমতা বাড়াতে হবে। এই জায়গায় জয়ী হতে পারলে একটা ফল আসবে। আরেকটা আশার জায়গায় এই প্রক্রিয়াকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। তাহরে বছরে একবার না দুইবার কিভাবে টাকা আসবে সেটা করা যাবে। কিন্তু প্রক্রিয়াটাকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।
আরও পড়ুন: কপ২৯: বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ
তিনি জোর দিয়ে বলেন, আমি আগেও বলেছি আবারও বলছি আমাদের অবস্থান স্পষ্ট হওয়া উচিত। অনেক টাকা চাইনা, এর চেয়ে বরং যে সমস্যাটা আছে তার সমাধান চাই। বাংলাদেশর মতো দেশগুলো যারা ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা আছে, তাদের অবস্থান এমন হওয়া উচিত। যেসব দেশ জীবাশ্ম জ্বালানি কেন্দ্রিক যে উন্নয়ন করছে তা পরিবর্তন করতে হবে।
রিজওয়ানা বলেন, সরকার বর্তমানে জ্বালানি নীতিমালা পর্যালোচনা করছে এবং জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক উৎপাদন থেকে নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে অগ্রসর হওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। উচ্চ আমদানি শুল্ক পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে এবং বাংলাদেশে সৌরশক্তি প্রকল্পে বিদেশি বিনিয়োগ উৎসাহিত করা হচ্ছে। বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সৃষ্ট বায়ু দূষণ আমাদের বড় পরিবেশগত সমস্যা। তাই এখনই নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগের সঠিক সময়।
তিনি বলেন, আর্টিকেল-৬ নিয়ে অনেক বিবাদ আছে। কার্বন আমাদের আর্টিকেল-৬ একটি অস্ত্র। উন্নত বিশ্ব যদি মনে করে যার যার দেশে কার্বন নিঃস্বরণ করবে তাহলে অনেক ক্ষতি হবে।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশের জলবায়ু বাস্তবতা এক রকম। তাই জলবায়ুর যে ভংগুরতা আছে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তা কমাতে পারি কি না সেটিও দেখতে হবে। কোন জায়গায় কমাতে হবে। এটার অগ্রাধিকার দিতে হবে। আমরা এডাপটেশনে বেশি, নাকি মেডিকেশনে বেশি, না লস এন্ড ড্যামেজের কাজ বেশি করতে হবে। কাজ করার কী কী ক্ষেত্র আছে। -এসব দেখতে হবে।
তিনি বলেন, এটির প্রথম দুইটি মিটিং হয়েছে এবং দ্বিতীয় মিটিংটি বাংলাদেশে হবে জানুয়ারিতে।
উপদেষ্টা বলেন, মিটিগেশন নিয়ে জোরালো আলোচনা হচ্ছে। একটি হচ্ছে টেকনোলজিগুলোর কথা বলি আমরা। আমাদের দেশে দুর্যোগের সময় আমাদের যে পূর্ব সতর্কতা দরকার, তা যেন আমরা আগেই জানতে পারি। সেজন্য টেকনোলজির সহায়তা লাগবে। যে টেকনোলজি আমাদের দরকার, সেটির জন্য আমাদের সাহায্য প্রয়োজন আছে।
আরও পড়ুন: কপ২৯: বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ
বাংলাদেশে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা, যা দেশের মোট গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের প্রায় ১০ শতাংশ (২১.০৪ মিলিয়ন টন সিও২-সমমান) এর জন্য দায়ী। শুধু ঢাকাতেই প্রতিদিন ৬ হাজার টন বর্জ্য উৎপন্ন হয়, যার ৭৩ শতাংশ অপরিশোধিত অবস্থায় ল্যান্ডফিলে জমা হয়, ফলে মিথেন গ্যাস নিঃসরণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য পুনঃউৎস আহরণ কেন্দ্র, ওয়েস্ট-টু-এনার্জি প্ল্যান্ট এবং স্যানিটারি ল্যান্ডফিল স্থাপনে জাপানের সহায়তা চাওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে মোট জ্বালানি ব্যবহারের ৪০ শতাংশ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে সরবরাহের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। তবে, এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রয়োজন। চীনকে বাংলাদেশে সোলার ম্যানুফ্যাকচারিং প্ল্যান্ট স্থানান্তরের অনুরোধ জানানো হয়েছে, যা আমদানি নির্ভরতা কমাবে। এছাড়া, সোলার প্যানেলের উপর কর কমানোসহ সংশ্লিষ্ট নীতিমালা পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আপডেটেড এনডিসি বাস্তবায়নে ২০৩০ সালের মধ্যে ১৭৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন, যার মধ্যে ৩২ বিলিয়ন ডলার বাংলাদেশ নিজস্ব উদ্যোগে অর্জন করবে। তবে, বাকি অংশ আন্তর্জাতিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল।বাংলাদেশ আগামী বছর এনডিসি ৩ দশমিক শূণ্য জমা দেওয়ার পরিকল্পনা করছে।
এদিকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্য ও পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক( জলবায়ু পরিপর্তন ও আন্তর্জাতিক কনভেমশন) মির্জা শওকত আলী আজ ইউএনবিকে জানিয়েছেন, গত ১১ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া কপ২৯ সম্মেলন আজ ২২ নভেম্বর শেষ হওয়া কথা থাকলেও বলা যাচ্ছে না। কারণ শুরু থেকে এবং পরে মন্ত্রী পর্যায়ের আলোচনা নিয়ে ফাইনাল টেক্সট এখনো বের হয়নি।
আরও পড়ুন: কপ২৯: স্বল্পোন্নত-ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোকে ২০০ মিলিয়ন বরাদ্দ দিতে ইইউ’র সমর্থন চাইল বাংলাদেশ
১ মাস আগে
অন্য রাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার মতো পরিস্থিতি দেশে তৈরি হয়নি: রিজওয়ানা
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, বাংলাদেশে এমন কোনো পরিস্থিতি নেই যাতে কোনো বিদেশি রাষ্ট্র বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, অন্য কোনো বিদেশি রাষ্ট্র এধরনের বিধিনিষেধমূলক ব্যবস্থা নেয়নি।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, 'আমি মনে করি না বাংলাদেশে এমন কোনো পরিস্থিতি আছে যেখানে কোনো বিদেশি রাষ্ট্র বাংলাদেশিদের জন্য তাদের ভিসা দেওয়া আটকাবে, কোনো দেশ তা করেনি।’
আরও পড়ুন: কানাডার সঙ্গে সেনাপ্রধানের বৈঠকে ভিসা সহজীকরণ ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতায় গুরুত্ব
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার অবশ্যই ভারতের সঙ্গে ভালো ও দৃঢ় সম্পর্ক চায়, তবে যেকোনো সম্পর্কের ক্ষেত্রে এটা গুরুত্বপূর্ণ যে উভয় পক্ষ একে অপরের কথা শোনে এবং একে অপরকে 'বোঝে'।
উপদেষ্টা বলেন, প্রকৃত সত্য হলো বাংলাদেশের জনগণ ভারতে ভিসা সংক্রান্ত সীমিত নীতি অনুসরণ করায় ভারতের প্রতি 'অসন্তুষ্ট' এবং এটি অবশ্যই ভারত সরকার শুনেছে।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ভারত স্পষ্টভাবে যা বলে আসছে তা তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, 'আমি মনে করি না বাংলাদেশে এমন কোনো পরিস্থিতি আছে যেখানে অন্য কোনো দেশ বাংলাদেশিদের জন্য তাদের ভিসা আটকাতে পারবে, কারণ অন্য কোনো দেশ তা করেনি।’
তবে ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন শুধু জরুরি চিকিৎসা ভিসা দিচ্ছে।
আরও পড়ুন: ইতালির ভিসা সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান হবে, আশা উপদেষ্টা তৌহিদের
রিজওয়ানা বলেন, বাংলাদেশ সরকারের জন্যও এটা লক্ষ্য করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, যারা শিক্ষার্থী ও জনগণের ওপর নৃশংসতা চালিয়েছে তাদের অনেকেই ভারতে রয়েছেন বলে জানা গেছে। ‘তারা ভারতে আশ্রয় নিয়েছে।’
ভারত পুনর্বিবেচনা বা পুনরায় ভাবতে পারেন উল্লেখ করে তিনি বলেন,‘সম্ভবত,পরিস্থিতি বদল বলতে ভারত হয়তো এটাই বোঝাতে চাইছে। আমরা জানি না। কারণ অন্য কোনো দেশ- সেটা যুক্তরাষ্ট্র, জাপান বা ইউরোপীয় ইউনিয়ন যেই হোক না কেন- বাংলাদেশের জন্য ভিসা নীতিতে বিধিনিষেধ আরোপ করেনি।’
সংখ্যালঘু ইস্যু সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সরকার তাদের দাবি শুনেছে এবং দুর্গাপূজায় দুই দিনের ছুটি ঘোষণা করেছে।
রিজওয়ানা বলেন, 'আমরা সুস্পষ্টভাবে বলেছি, বিভিন্ন বিষয়ে সংলাপ ও আলোচনার জন্য আমাদের দরজা সব সময় খোলা।’
তিনি বলেন, তারা যদি রাজপথে আন্দোলনের পথ বেছে নেয় তবে এটি ইঙ্গিত দেয় যে এখনও আরও সংলাপ এবং আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আলোচনার মাধ্যমে যেকোনো কিছুর সুরাহা করা সম্ভব।
রিজওয়ানা বলেন, তিনি মনে করেন না যে রাস্তায় বিক্ষোভের প্রয়োজন আছে এবং যদি কোনো সমাধান আসতে হয় তবে তা বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে আসতে হবে এবং অন্য কোনো সরকার এটি করতে সক্ষম হবে না। 'আমাদের দরজা সব সময় খোলা'
সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম ও প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিকে আইনি নয়, রাজনৈতিক হিসেবে দেখছে সরকার: উপদেষ্টা রিজওয়ানা
১ মাস আগে
হাসিনার 'প্রেতাত্মারা' দেশের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করছে: ডা. জাহিদ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে পালিয়ে গেলেও তার 'প্রেতাত্মারা এখনো বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করছে।
শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) ফেনীর মুহুরীগঞ্জ বাজারে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
ডা. জাহিদ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, যারা তৈরি পোশাক খাতকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করছে তাদের পরিণতি ভালো হবে না।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে যে বন্যা আঘাত হেনেছে তাও ষড়যন্ত্রের অংশ। কারণ শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ মিত্র ভারত বাংলাদেশকে না জানিয়েই বাঁধ খুলে দিয়েছে।’
আরও পড়ুন: অপরাধীদের ক্ষমা নয়, প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার হওয়া উচিত: রিজভী
বিএনপির এই নেতা বলেন, ভারত বাঁধ খুলে দেওয়ায় নোয়াখালী, ফেনী ও কুমিল্লাসহ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলোর মানুষ আকস্মিক বন্যায় পানিবন্দি হয়ে চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছে।
ডা. জাহিদ বলেন, বন্যার পানিতে এসব জেলায় অনেক ঘরবাড়ি, গরু, ছাগল ও মাছ ধরার খামার ভেসে গেছে এবং ফসলি জমি নষ্ট হয়েছে।
বন্যায় ধ্বংসযজ্ঞের বর্ণনা দিতে গিয়ে বিএনপি নেতা দুঃখের সঙ্গে বলেন, ‘শিশুসহ অনেক মানুষ বন্যার পানিতে ডুবে মারা গেছে।’
তিনি বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীদের বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য এবং তাদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান।
জাহিদ অভিযোগ করেন, একটি স্বার্থান্বেষী মহল এখন পোশাক খাতে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। অথচ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে দেশ ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। ‘কিন্তু কোনো ষড়যন্ত্রই সফল হবে না।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল এই ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচির আয়োজন করে।
এ সময় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসানসহ বিএনপি ও এর বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: গণতন্ত্র ধ্বংসের জন্য ইসি দায়ী: রিজভী
৩ মাস আগে
সরকারের দুঃশাসন দেশকে ধ্বংস করছে: ফখরুল
সরকার দুঃশাসনের মাধ্যমে দেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) এক দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে তিনি এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরাতে সরকারবিরোধী আন্দোলন জোরদার করতে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘১৯৭৫ সালে আওয়ামী লীগ একদলীয় বাকশাল শাসন কায়েম করে। তারা এখন ভিন্নভাবে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে।’
ক্ষমতাসীনরা নির্বাচনি ব্যবস্থা, দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করেছে এবং প্রশাসন ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে রাজনীতিকরণ করেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘দেশ এখন ধ্বংসের পথে। এই আওয়ামী লীগ সরকার যতদিন ক্ষমতায় থাকবে ততদিন বাংলাদেশ আরও দ্রুত অতল গহ্বরে যাবে।’
দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হয়ে পড়বে এবং অর্থনীতি, শিক্ষাসহ সব খাত পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমাদের এখন প্রয়োজন হলো সবার মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলা। সেই ঐক্যকে কাজে লাগিয়ে আমরা রাজপথের আন্দোলনকে বেগবান করে তাদের (আওয়ামী লীগ) পরাজিত করব।’
এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দ্রুত রোগমুক্তি কামনা করে রাজধানীর নয়াপল্টনের মওলানা ভাসানী মিলনায়তনে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি।
আরও পড়ুন: অসুস্থ খালেদা জিয়ার জীবন ঝুঁকিতে: ফখরুল
ফখরুল বলেন, বিদেশে খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে তাকে কোনো শর্ত ছাড়াই কারাগার থেকে মুক্ত করতে কঠোর আন্দোলন অপরিহার্য।
তিনি বলেন, ‘দেশনেত্রীর (খালেদা জিয়া) মুক্তি ও গণতন্ত্রকে পৃথক ইস্যু হিসেবে দেখার কোনো কারণ নেই। আমাদের নেত্রীকে মুক্ত করলে গণতন্ত্র ফিরে আসবে এবং দেশ সুরক্ষিত হবে।’
ফখরুল আরও বলেন, দেশের সমস্যা সমাধান ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করা প্রয়োজন। সেই লক্ষ্য অর্জনে আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করি। আমরা সবাই মিলে কাজ করলে কেউ আমাদের পরাজিত করতে পারবে না।
বিএনপি উত্তর ও দক্ষিণ যুবদলের নবগঠিত কমিটির নেতাদের অভিনন্দন জানান বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের নবগঠিত কমিটিগুলোর নেতৃত্বে সংগঠনগুলো আরও শক্তিশালী হবে এবং এই সরকারকে পরাজিত করতে ভূমিকা রাখবে।’
আরও পড়ুন: চলমান আন্দোলনে উসকানি দিচ্ছে বিএনপি, সরকারের এ অভিযোগ উড়িয়ে দিলেন ফখরুল
৫ মাস আগে
রোহিঙ্গা বিষয়ে ওআইসি দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্রিফিং
ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
নিউ ইয়র্কে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার বিকালে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের ওআইসি সম্মেলনকক্ষে তাদের ব্রিফ করেন তিনি।
রোহিঙ্গাদের দুর্দশা নিরসনে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার অগ্রভাগে থাকার জন্য তিনি অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের (ওআইসি) প্রশংসা করেন।
আরও পড়ুন: জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলা ও ক্ষুদ্র দ্বীপদেশগুলোর উন্নয়নে জোর আন্তর্জাতিক সহায়তার আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংঘাত বৃদ্ধির বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন ও মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রিত প্রায় ১৩ লাখ রোহিঙ্গার পূর্ণ নাগরিক অধিকারসহ তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসনের প্রচেষ্টায় ওআইসি রাষ্ট্রদূতদের সংহতি অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।
ওআইসিভুক্ত দেশ সৌদি আরব, গাম্বিয়া, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, তুর্কি, ইরান, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, আলজেরিয়া, মিশর, ইন্দোনেশিয়ার জাতিসংঘে স্থায়ী প্রতিনিধিরা সময়োপযোগী এ ব্রিফিংয়ের জন্য বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
তারা উদ্বাস্তু রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদারতার প্রশংসা করেন এবং রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশের দাবির প্রতি পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করেন।
৩০ মে থেকে দুই দিনের সরকারি সফরে নিউইয়র্কে অবস্থানরত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান জাতিসংঘের শীর্ষ কর্মকর্তা ও সদস্য দেশগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে আরও বৈঠক করবেন।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর বৈদেশিক নীতি অনুযায়ী শান্তির প্রচেষ্টায় জাতিসংঘের অগ্রভাগে বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
জ্যামাইকা ও ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে হাছান মাহমুদের বৈঠক
৬ মাস আগে
গণমাধ্যমকে দেশ-জনগণের স্বার্থে দাঁড়ানোর আহ্বান তথ্য প্রতিমন্ত্রীর
দেশ ও জনগণের স্বার্থের পক্ষে গণমাধ্যমকে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
তিনি বলেন, দেশটা আমাদের সবার। এদেশের স্বার্থের বিপক্ষে যেসব ষড়যন্ত্র হবে সেগুলো ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করতে হবে।
বুধবার (২৯ মে) বিকালে রাজধানীর সার্কিট হাউস রোডের তথ্য ভবন মিলনায়তনে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল পদক ২০২৩ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকার পূর্ণাঙ্গভাবে গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে। কারণ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অংশ। যে স্বপ্ন নিয়ে এদেশ তৈরি হয়েছিল সে স্বপ্নের একটি বড় জায়গায় গণতন্ত্র, মানবাধিকারের সুরক্ষা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর লড়াইয়ের গল্প তুলে ধরাই হোক অঙ্গীকার: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
আলী আরাফাত বলেন, গণমাধ্যমের সঙ্গে সম্পৃক্ত যারা আছেন তারা যাতে পেশাদারিত্ব ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করতে পারেন, সে কারণে সরকার বিভিন্নভাবে তাদের পাশে দাঁড়াচ্ছে। গণমাধ্যম সব ধরনের স্বাধীনতা ভোগ করে সরকারের সমালোচনাও যদি করে সেগুলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার স্বাগত জানাতে চায়। সরকারের চোখ হিসেবে কাজ করে গণমাধ্যম। কোথাও কোনো বিচ্যুতি-ব্যর্থতা থাকলে, সমস্যা থাকলে গণমাধ্যম সেটি নিরপেক্ষভাবে এবং পেশাদারিত্বের সঙ্গে তুলে ধরবে। এর মাধ্যমে সরকার মনে করে গণমাধ্যম সরকারের সহযোগিতাই করছে।
তিনি আরও বলেন, সরকারের সহায়ক শক্তি হিসেবে আমরা গণমাধ্যমকে দেখতে চাই। সরকারের বিচ্যুতি-ব্যর্থতা বা কোনো সমস্যা সত্য তথ্যের ভিত্তিতে তুলে ধরলে সেগুলোকে সরকার স্বাগত জানাবে এবং স্বীকৃতি দিয়ে পুরস্কারও হাতে তুলে দেবে। এ সরকার বঙ্গবন্ধু কন্যার সরকার। যারা সমালোচক তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেয়। কাজেই সমালোচনা নেয়ার ব্যাপারে শেখ হাসিনা সরকারের যে সহনশীলতা বা তার যে দৃষ্টিভঙ্গি সেটি প্রেস কাউন্সিল পদক প্রদানের মাধ্যমে প্রমাণ হচ্ছে।
তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, যখন বাংলাদেশবিরোধী ষড়যন্ত্রকারীরা গণমাধ্যমের ঘাড়ে চেপে বসে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে অপব্যবহার করে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়, বৈদেশিক বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের সাথে যুক্ত হয়ে দেশ ও দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে, অপতথ্য ও অপপ্রচারের মাধ্যমে দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করে, তখন সমস্যা তৈরি হয়। এগুলোকে সরকার সমালোচনা বলে না, সেগুলো হলো অপপ্রচার অপসংবাদিকতা, অপতথ্য, অন্যায় এবং ষড়যন্ত্র। অন্যায়, অপতথ্য ও অপপ্রচারের মাধ্যমে মানুষকে ধোকা দেওয়া হলে, অপসংবাদিকতা হলে পেশাদার সাংবাদিকরা সেটা দমন করতে চায় সুষ্ঠু ও সুস্থ সাংবাদিকতার স্বার্থে। সরকার পেশাদার সাংবাদিকদের সঙ্গে আছে।
তিনি বলেন, কিছুদিন আগে জার্মানির ডয়চে ভেলে একটি তথ্যচিত্র বানিয়ে প্রচার করেছে। আন্তর্জাতিকভাবে শান্তি রক্ষা মিশনে আমাদের যে সাফল্য ও সুনাম, সে সুনাম ক্ষুণ্ন করার জন্য, আমাদের খাটো করে দেখানোর জন্য এক ধরনের দূরভিসন্ধিমূলক অপপ্রচারের একটি তথ্যচিত্র তারা তৈরি করেছে। এটি বাংলাদেশের বিপক্ষে। কোনো দলের বিপক্ষে নয়, কোনো ব্যক্তির বিপক্ষে নয়। যে প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের নিরাপত্তাকে সুরক্ষা দেয়, যে প্রতিষ্ঠান গোটা বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অগ্রগামী ভূমিকা রেখেছে, বাংলাদেশের সুনাম যারা বৃদ্ধি করেছে, সেই বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে খাটো করা মানে বাংলাদেশকে খাটো করা। একটা গোষ্ঠী সিন্ডিকেট করে আন্তর্জাতিক কিছু গণমাধ্যম ব্যবহার করে এ ধরনের অপপ্রচার করছে। ডয়চে ভেলে বা যে কোনো প্রতিষ্ঠান বা সংবাদ সংস্থা তারা যদি মানবাধিকারের প্রতি তাদের কোনো সৎ অঙ্গীকার থেকে কোনো প্রতিবেদন বা তথ্যচিত্র করে সেটাকে আমরা স্বাগত জানাব। ডয়চে ভেলের যদি মানবাধিকারের প্রতি অঙ্গীকার থাকে, সততা থাকে তাহলে আমি তাদের চ্যালেঞ্জ করতে চাই, আজকে বিশ্বে যে যুদ্ধের ডামাডোল, মধ্যপ্রাচ্যের গাজায় যেভাবে নারী-শিশুকে হত্যা করে মানবাধিকার ভঙ্গের ন্যাক্কারজনক নজির তৈরি হচ্ছে, যেখানে গণহত্যা হচ্ছে, সেই গণহত্যা নিয়ে তারা একটি তথ্যচিত্র তৈরি করে তুলে ধরুক। তাহলে আমরা বুঝব তাদের মানবাধিকারের অঙ্গীকারে সততা আছে।
আরও পড়ুন: সরকার সুষম ও টেকসই উন্নয়নে বিশ্বাস করে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
প্রতিমন্ত্রী আরও যোগ করেন, পাশ্চাত্যের দেশগুলো উঠতে-বসতে আমাদের গণমাধ্যমের স্বাধীনতার লেকচার দেয়। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-শিক্ষকদের একেবারে শান্তিপূর্ণ প্রতিরোধে পুলিশের আচরণ আমরা দেখেছি। কীভাবে মিলিটারি ক্যাম্পাসের ভেতরে ঢুকে গিয়ে গ্রেপ্তার করছে। একজন নারী অধ্যাপককে মাটিতে ফেলে যুদ্ধাংদেহী অ্যাপ্রোচে গ্রেপ্তার করছে। অথচ এরাই কিছুদিন আগে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মানবাধিকার এগুলোর লেকচার আমাদের দিচ্ছিল।
বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. নিজামুল হক নাসিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি কাজী কেরামত আলী এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকার। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল পদক ২০২৩ এর জুরি বোর্ডের সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. আবুল মনসুর আহাম্মদ।
অনুষ্ঠানে ছয়টি ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল পদক-২০২৩ দেওয়া হয়। আজীবন সম্মাননা ক্যাটাগরিতে সাপ্তাহিক বেগম সম্পাদক মরহুম নুরজাহান বেগম, প্রাতিষ্ঠানিক সম্মাননা ক্যাটাগরিতে দৈনিক ভোরের কাগজ, আঞ্চলিক প্রাতিষ্ঠানিক সম্মাননা ক্যাটাগরিতে দৈনিক কক্সবাজার, উন্নয়ন সাংবাদিকতা ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ টেলিভিশনের প্রযোজক (বার্তা) মো. ইকবাল হোসেন, গ্রামীণ সাংবাদিকতা ক্যাটাগরিতে সময় টেলিভিশনের পটুয়াখালী জেলা সংবাদদাতা সিকদার জাবীর হোসেন এবং নারী সাংবাদিক ক্যাটাগরিতে দৈনিক ভোরের কাগজের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক ঝর্ণা মনিকে পদক দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: গণমাধ্যমে শৃঙ্খলা আনার কাজ করা হচ্ছে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
৬ মাস আগে
প্রবৃদ্ধি অর্জনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে না পারলে উন্নয়নশীল দেশগুলো পিছিয়ে পড়বে: এডিবি প্রেসিডেন্ট
অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) ব্যবহার ও ডিজিটাল প্রযুক্তি গ্রহণের উপর জোর দিয়ে এর যর্থার্থ ও সতর্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে বলেছেন এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) প্রেসিডেন্ট মাসাতসুগু আসাকাওয়া।
ভবিষ্যৎ অগ্রাধিকারের বিষয়ে আলোকপাত করে তিনি বলেন, ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা স্বাস্থ্যসেবা প্রদান, কৃষি ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি এবং উন্নয়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহায়তা করার জন্য প্রচুর সম্ভাবনাময়।’
এডিবি প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, উন্নয়নশীল দেশগুলো এই প্রযুক্তি গ্রহণ করতে না পারলে পিছিয়ে পড়বে।
তিবিলিসির কনসার্ট হলে ৫৭তম বার্ষিক সভার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী অধিবেশনে তিনি বলেন, এআই ব্যবহারের ক্ষেত্রে পক্ষপাত ও স্বচ্ছতার অভাবের মতো ঝুঁকিও রয়েছে।
এ সময় জর্জিয়ার প্রধানমন্ত্রী ইরাকলি কোবাখিদজে উপস্থিত ছিলেন। একটি বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সমৃদ্ধ জর্জিয়ান সংস্কৃতি তুলে ধরা হয়।
আরও পড়ুন: আগামী ২ বছর উন্নয়নশীল এশীয় অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ৪.৯ শতাংশ থাকার আশা এডিবি প্রেসিডেন্টের
এডিবি প্রেসিডেন্ট বলেন, সংস্থাটি নৈতিক কাঠামো অনুসরণ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি অর্জনে কার্যকরী এআই সমাধান ব্যবহারে উন্নয়নশীল সদস্য দেশগুলোর সক্ষমতা জোরদারে কঠোর পরিশ্রম করছে।
তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল বিভাজন দূরীকণ এবং এআই এর সুযোগ উন্মুক্ত করণে আমরা বিশ্বাস করি। এটি আরও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের মূল চাবিকাঠি।’
এডিবি প্রেসিডেন্ট বলেন, তারা এমন এক সময়ে একত্রিত হয়েছেন, যখন এই অঞ্চলের জনগণ নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। এ সময় তাদের নিবিড় মনোযোগ ও সমন্বয়ের প্রয়োজন।
আসাকাওয়া বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের অবিরাম প্রভাবগুলো, সংঘাত ও সংকট দ্রুত তাদের জীবন-জীবিকাকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারে।’
তিনি বলেন, 'আসুন আমরা একসঙ্গে এগিয়ে যাই, যাতে আমরা আরও সমৃদ্ধ, অন্তর্ভুক্তিমূলক, সহনশীল ও টেকসই এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য সেতুবন্ধন গড়ে তুলি।’
শুরুতে জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকির বিষয়ে তিনি বলেন, এই হুমকিকে উপেক্ষা করা যায় না এবং তাদের প্রতিক্রিয়া বিলম্বিত করা যাবে না।
আসাকাওয়া বলেন, ‘২০২৩ সাল ছিল স্মরণকালের সবচেয়ে উষ্ণতম বছর। আমরা মানুষের উপর এর প্রভাব এবং ভবিষ্যতের উন্নয়নের ঝুঁকি দেখতে পাচ্ছি। শস্য ও খাদ্য ব্যবস্থা ক্রমবর্ধমান ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে।’
তিনি বলেন, ভবিষ্যতের সেতুবন্ধন অবশ্যই অন্তর্ভুক্তিমূলক হতে হবে। ‘অর্থায়নে প্রতিবন্ধকতার কারণে কেউ যেন উন্নয়নের সুফল থেকে বঞ্চিত না হয়।’
আরও পড়ুন: কার্যকরী-গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজে আগ্রহী এডিবি: ভাইস প্রেসিডেন্ট ভার্গব দাশগুপ্ত
সবুজ বিশ্বায়নের চালিকাশক্তি
এডিবি প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এই কক্ষে আমাদের উপস্থিতি প্রমাণ করে আমাদের বিশ্ব কতটা গভীরভাবে সংযুক্ত। আমাদের এটা কাজে লাগানো উচিত। আরও সবুজ ও উন্মুক্ত অর্থনীতি গড়ে তুলতে আমাদের এই সংযোগগুলো বাড়ানো উচিত।’
তিনি বলেন, মহামারি বা বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং সংঘাতের দিকে ফিরে তাকানো সহজ হতে পারে এবং এই সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সহজ হতে পারে যে বিশ্বায়ন এখন মৃত। ‘আমি এটা বিশ্বাস করি না।’
তিনি বলেন, 'এটা সত্য যে বৈশ্বিক বাণিজ্য ও সরবরাহ শৃঙ্খল সংকটের ঝুঁকিতে রয়েছে। তবে এর উত্তর সংরক্ষণবাদ এবং বিভাজন হতে পারে না।’
আসাকাওয়া বলেন, মুক্ত বাণিজ্য ও মূলধনের অবাধ চলাচল কয়েক দশক ধরে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে উপকৃত করেছে এবং এটিই অবশ্যই এগিয়ে যাওয়ার উপায় হতে হবে।
সরবরাহ শৃঙ্খল স্থিতিশীল রাখতে আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য বৃদ্ধি, বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ জোরদার এবং আর্থিক ও কর সহযোগিতা জোরদারে আঞ্চলিক সহযোগিতা কীভাবে গভীর করা যায় তা অনুসন্ধানের ওপর গুরুত্বারোপ করেন এডিবি প্রেসিডেন্ট।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে প্রবীণদের জন্য আরও বেশি বরাদ্দ দিতে জোর দিয়েছে এডিবি
বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণের ৩০ শতাংশের জন্য দায়ী বাণিজ্য সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম
আসাকাওয়া বলেন, 'অস্বস্তিকর সত্য হলো এশিয়ার শক্তিশালী প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণে আমাদের অবদান বাড়ছে।’
তিনি বলেন, আরও টেকসই ভবিষ্যতের জন্য বৈশ্বিক মূল্য শৃঙ্খলসম্পর্কিত নির্গমন হ্রাস করার জন্য কাজ করার এখনই সময়।
সর্বাধিক চাহিদাসম্পন্ন সদস্যদের সমর্থন করা
এডিবি প্রেসিডেন্ট জোর দিয়ে বলেন, ভবিষ্যতের জন্য সেতুবন্ধন যাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন তাদের পেছনে ফেলে রাখতে পারে না।
তিনি বলেন, ‘উন্নয়নশীল ক্ষুদ্র দ্বীপ রাষ্ট্রগুলোসহ দরিদ্রতম ও সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী জলবায়ু পরিবর্তন, অর্থনৈতিক মন্দা ও সংঘাতের কারণে সবচেয়ে বেশি সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে।’
এডিবি প্রধান বলেন, তাদের অর্থায়নে অবশ্যই অনুদানসহ রেয়াতি শর্তে সম্পদ অন্তর্ভুক্ত করা অব্যাহত রাখতে হবে।
তিনি বলেন, এশীয় উন্নয়ন তহবিল (এডিএফ) এর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বাহন। বৃহস্পতিবার পুনঃপূরণ সম্পন্ন হওয়ার পর আমরা এসব চাহিদা মেটাতে ৫০০ কোটি ডলার পর্যন্ত সরবরাহ করতে সক্ষম হব।
আরও পড়ুন: জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় প্রচেষ্টা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন জোরদারের আহ্বান এডিবি প্রেসিডেন্টের
৭ মাস আগে
৬ দিনের সফর শেষে দেশের উদ্দেশে ব্যাংকক ছেড়েছেন প্রধানমন্ত্রী
থাইল্যান্ডে ছয় দিনের সরকারি সফর শেষে দেশের উদ্দেশে ব্যাংকক ত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইট স্থানীয় সময় সোমবার (২৯ এপ্রিল) সকাল ১০টায় ডন মুয়াং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।
ফ্লাইটটি বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে।
দু'দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী শ্রেথা থাভিসিনের আমন্ত্রণে দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় সফরে গত ২৪ এপ্রিল ব্যাংককে যান শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন: থাইল্যান্ড সফরকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে মাইলফলক বললেন শেখ হাসিনা
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ২৬ এপ্রিল গভর্নমেন্ট হাউসে থাই প্রধানমন্ত্রী থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন এবং দুই নেতার উপস্থিতিতে ভিসা অব্যাহতি, জ্বালানি, পর্যটন ও কাস্টমস বিষয়ক সহযোগিতা এবং বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) নিয়ে আলোচনার বিষয়ে পাঁচটি দ্বিপক্ষীয় নথি সই হয়।
সেখানে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী থাভিসিন আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজে অংশ নিয়ে শেখ হাসিনা তার এই সফরকে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হিসেবে অভিহিত করেন।
তিনি বলেন, ‘এই সরকারি সফর আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। এটি আমাদের দুই দেশের মধ্যে ফলপ্রসূ অংশীদারিত্বের নতুন যুগের সূচনা করেছে।’
আরও পড়ুন: ৫টি দ্বিপক্ষীয় নথিতে সই করেছে ঢাকা-ব্যাংকক
এছাড়া প্রধানমন্ত্রী ২৫ এপ্রিল দুসিথ প্রাসাদের অ্যামফর্ন সাথার্ন হলে থাইল্যান্ডের রাজা ও রানী মহা ভাজিরালংকর্ন ফ্রা ভাজিরা ক্লাওচা উয়ুয়া এবং সুথিদা বজ্রসুধা বিমলা লক্ষণের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
বহুপক্ষীয় উদ্যোগের অংশ হিসেবে শেখ হাসিনা ২৫ এপ্রিল থাইল্যান্ডের ব্যাংককে জাতিসংঘ সম্মেলন কেন্দ্রের ইউএন এসকাপ হলে (২য় তলায়) জাতিসংঘের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (ইউএনএসকাপ) ৮০তম অধিবেশনে বক্তব্য দেন।
ঢাকা ও ব্যাংককের মধ্যে সই হওয়া পাঁচটি নথি হলো- একটি চুক্তি, তিনটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) এবং একটি লেটার অব ইনটেন্ট (এলওআই), জ্বালানি সহযোগিতা বিষয়ক সমঝোতা স্মারক; কাস্টমস সম্পর্কিত বিষয়ে সহযোগিতা ও পারস্পরিক সহায়তা সম্পর্কিত সমঝোতাপত্র; পর্যটন ক্ষেত্রে সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতাপত্র; এবং এলওআই ২০২৪ সালের মধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) নিয়ে আলোচনা শুরু করবে।
২৪ এপ্রিল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে ডন মুয়াং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়।
আরও পড়ুন: ৬ দিনের থাইল্যান্ড সফর শেষে সোমবার দেশে ফিরবেন প্রধানমন্ত্রী
৭ মাস আগে