দেশ
দেশের বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশের নিচে
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি সাত শতাংশের নিচে নেমে এসেছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
এতে দেখা যায়, জুন মাসে বাংলাদেশে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। যা মূলত উচ্চ সুদের হার ও সরকার পরিবর্তনের পর অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে ঋণ বিতরণের তীব্র মন্দাকে তুলে ধরে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, জুন মাসে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি মাত্র ৬ দশমিক ৪০ শতাংশ রেকর্ড করা হয়েছে, যা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেখা যায়নি।
চলতি বছর দ্বিতীয়বারের মতো ঋণ প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। ধারাবাহিকভাবে কোনো মাসেই এই সংখ্যা অতিক্রম করেনি, তবে এই সংখ্যার আশেপাশেই থাকত ঋণ প্রবৃদ্ধি।
ইউএনবির সঙ্গে আলাপকালে ইনস্টিটিউট ফর ইনক্লুসিভ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইএনএম) এর নির্বাহী পরিচালক ড. মুস্তাফা কে মুজেরি এই পতনের জন্য বেশ কয়েকটি কারণকে দায়ী করেন।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, সংঘাতপূর্ণ পরিবেশ এবং আইনশৃঙ্খলার ব্যাঘাত উদ্যোক্তাদের নতুন বিনিয়োগ ঝুঁকি নিতে নিরুৎসাহিত করছে। এই মন্দার পেছনে ব্যাংকিং খাতও ভূমিকা পালন করে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, বিগত বছরগুলোতে ব্যাপক আর্থিক অনিয়মের কারণে অনেক ব্যাংক তারল্য ঘাটতিতে পড়েছিল। যার ফলে তাদের ঋণ দেওয়ার ক্ষমতাও কমেছে।
এছাড়াও, ক্রমবর্ধমান অনাদায়ী ঋণের (এনপিএল) কারণে ব্যাংকগুলো এখন ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক বেশি সতর্ক, বলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক এই প্রধান অর্থনীতিবিদ মুজেরি।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিক হ্রাস অর্থনীতির জন্য একটি উল্লেখযোগ্য আসন্ন সংকটের ইঙ্গিত দেয়।
পড়ুন: চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি-রপ্তানিতে ৩০ শতাংশ শুল্ক বাড়ানোর সিদ্ধান্ত
এই ধারাবাহিক পতন ব্যাংকিং খাত ও বৃহত্তর ব্যবসায়িক পরিবেশ উভয় ক্ষেত্রেই ক্রমবর্ধমান সংকটের দিকে ইঙ্গিত করে।
ঋণ প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার ফলে সরাসরি নতুন শিল্প স্থাপনের সংখ্যা ও ব্যবসায়িক সম্প্রসারণ কমে গেছে। ফলস্বরূপ কর্মসংস্থানের সুযোগও কমে গেছে।
অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতির সম্ভাবনা কম। যদি কোনো কারণে জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত হয়—তাহলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
বাংলাদেশি পণ্যের উপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পারস্পরিক শুল্ক আরোপের বিষয়ে গ্রহণযোগ্য সমাধানের অভাব অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মাসিক তথ্যে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিক নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে-
চলতি বছরের মে মাসে ছিল ৭ দশমিক ১৭ শতাংশ, এপ্রিলে সাড়ে ৭ শতাংশ, মার্চে ৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ, ফেব্রুয়ারিতে ৬ দশমিক ৮২ শতাংশ, জানুয়ারিতে ৭ দশমিক ১৫ শতাংশ, আর গত বছরের ডিসেম্বরে ছিল ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ।
১৩১ দিন আগে
দেশ যেভাবে চলছে জনগণ সন্তুষ্ট নয়, ক্ষুব্ধ: ডা. শফিকুর রহমান
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, দেশ যেভাবে চলছে জনগণ তাতে সন্তুষ্ট নয়, ক্ষুব্ধ। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) বিকালে রংপুরের মমিনপুরে ঢাকায় জামায়াতের জাতীয় সমাবেশে মৃত্যুবরণ করা শাহ আলমের কবর জিয়ারত করতে এসে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. শফিকুর বলেন, ‘একটি দুর্নীতিমুক্ত ও চাঁদাবাজমুক্ত দেশ গঠন করতে হবে। জামায়াতে ইসলামী দুর্নীতি ও চাঁদাবাজি করবে না, করতেও দেবে না। আমরা ঘুষ খাবো না কাউকে ঘুষ খেতেও দেব না।’
তিনি বলেন, আমাদের লড়াই শ্রমিকের জন্য, কৃষকের জন্য, খেটে খাওয়া মানুষের জন্য।
রংপুরের সদর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে স্থানীয় মমিনপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি তো সেদিন চলেই গিয়েছিলাম। কিছু সময়ের জন্য, জানি না কোথায় ছিলাম। আপনাদের চোখের পানি, আল্লাহ তায়ালার রহমত, তিনি ফেরত দিয়েছেন। দিনের পথে লড়তে চাই জীবনের শেষ শ্বাস পর্যন্ত। আর বিদায় নিতে চাই শহীদ হয়ে। রক্তাক্ত চাদর গায়ে দিয়ে আল্লাহর দরবারে দাঁড়াতে চাই। আল্লাহ যখন জিজ্ঞেস করবেন তোর গায়ে রক্তের চাদর কেন? সেদিন যেন বলতে পারি আল্লাহ তোমার চাইতে আমার জন্য কি আর বড় সাক্ষী কেউ আছে? তুমি তো আমার সবচেয়ে বড় সাক্ষী। বলতে চাই, ইয়া মাবুদ বাংলাদেশকে তুমি কোরআনের শাসন দাও।
ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, আমরা অনেক শাসন দেখেছি। এগুলো শাসন ছিল না, ছিল শোষণ। আমরা সৎ শাসক চাই, কোরআনের শাসন চাই।
জামায়াতপ্রধান বলেন, মাওলানা আবু সাঈদ ইসলামী আন্দোলনে অংশ নিয়ে শহীদ হয়েছেন। চব্বিশের আন্দোলনে আমাদের সন্তান আরেক আবু সাঈদ শহীদ হয়েছে। তোমার দ্বীন কায়েমের জন্য আর যতো আবু সাঈদকে প্রয়োজন তুমি কবুল করে নাও।
পড়ুন: বিমান দুর্ঘটনাকে ঘিরে ‘আ. লীগের ষড়যন্ত্রকারীদের’ প্রতিরোধের হুঁশিয়ারি জামায়াতের
তিনি বলেন, জালিম শাসকের আমলে আমাদের দুইজন আমিরসহ সারাদেশে যারা শহীদ হয়েছেন সবাইকে তুমি কবুল করো।
উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তের বিষয়ে বলেন, গতকাল সামরিক প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে অনেক শিক্ষার্থী, শিক্ষক ইন্তেকাল করেছেন। চিকিৎসকরা বলছেন আরও ৩০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। যারা হাসপাতালে আছেন আল্লাহ তাদের সুস্থ করে তুলুন। তাদেরকে আপনজনের বুকে ফিরিয়ে দিন।
পথসভায় দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা মমতাজ উদ্দিন ও মাহবুবুর রহমান বেলাল, কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও রংপুর মহনগরী আমির মাওলানা এটিএম আযম খাঁন প্রমুখ।
১৩৫ দিন আগে
পিআর পদ্ধতির নির্বাচন দেশকে বিভক্ত করবে, সতর্ক করে ঐক্যের আহ্বান তারেকের
আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) নির্বাচন ব্যবস্থা বাংলাদেশের জন্য উপযুক্ত কিনা—তা সাবধানতার সঙ্গে বিবেচনা করতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘জনগণের ঐক্য এখন আগের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এটি (পিআর) বিভক্তির দিকে নিয়ে যেতে পারে।’
মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাজধানীর চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে বিএনপি আয়োজিত ‘গণঅভ্যুত্থান ২০২৪: জাতীয় ঐক্য এবং গণতান্ত্রিক যাত্রা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি দেওয়া বক্তব্যে তারেক রহমান এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘কিছু রাজনৈতিক দল আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) নির্বাচন ব্যবস্থার দাবি তুলেছে। যদিও বিশ্বের কিছু দেশে এই নির্বাচন ব্যবস্থা রয়েছে। তবে দেশের বর্তমান বাস্তবতা এবং এর ভৌগোলিক-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে আমি সকলকে সাবধানতার সঙ্গে বিবেচনা করার আহ্বান জানাচ্ছি—এটি দেশের জন্য এই মুহূর্তে কতটা উপযুক্ত, অথবা আদৌ উপযুক্ত কিনা।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত করতে দেশকে পরাধীনতা থেকে মুক্ত করতে হবে।
পড়ুন: ঐক্য ধরে রেখে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার আহ্বান খালেদা জিয়ার
বিএনপি নেতা বলেন, ‘এই মুহূর্তে জাতীয় ঐক্য আগের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তবে আমি সকল রাজনৈতিক দলের নেতাদের কাছে বিনীতভাবে আবেদন জানাতে চাই যে, আপনারা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করুন—আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা জাতীয় ঐক্যের পরিবর্তে একটি বিভক্ত সমাজ এবং একটি অস্থিতিশীল সরকার তৈরি করতে পারে কিনা।’
গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশ ফ্যাসিবাদমুক্ত হওয়ায় এখন একটি গণতান্ত্রিক ও বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার সুযোগ এসেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বিএনপি নেতা বলেন, শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও একটি সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে একটি নির্বাচিত সরকার গঠন করা প্রয়োজন।
এসময় গণঅভ্যুত্থানে শহীদ এবং দীর্ঘ গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শহীদ বা আহতদের পরিবারের প্রতি শ্রদ্ধা ও সমবেদনা জানান তারেক রহমান।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে দেশের স্বাধীনতার জন্য যারা জীবন দিয়েছেন—তাদের মানুষ যেমন ভুলে যায়নি, তেমনি ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের সময় যারা শহীদ হয়েছেন—তাদেরও জাতি ভুলবে না।
তারেক বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে, তার দল শহীদদের সম্মানে তাদের নামে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান এবং স্থাপনার নামকরণ করবে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে দেশকে মুক্ত করতে অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে।
তিনি দাবি করেন, গণঅভ্যুত্থানের সময় প্রায় ৭০০ বিএনপি নেতা-কর্মী নিহত হয়েছেন।
বিএনপি নেতা বলেন, গত ১৭ বছরে আরও অনেককে হত্যা করা হয়েছে, জোরপূর্বক গুম করা হয়েছে, অথবা বিভিন্ন ধরণের দমন-পীড়নের শিকার হতে হয়েছে।
তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক আন্দোলন দমনের জন্য ফ্যাসিবাদী শাসনামলে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ৬০ লাখ মামলা দায়ের করা হয়েছে। অন্যদিকে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় জেলে পাঠানো হয়েছে।
বিএনপি নেতা বলেন, গণঅভ্যুত্থান একটি নতুন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তোলার সুযোগ তৈরি করেছে।
বিএনপি রাষ্ট্রীয় কাঠামো পরিবর্তন এবং একটি গণতান্ত্রিক দেশ গড়ে তোলায় বিশ্বাস করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের অনেক আগে তার দল রাষ্ট্র ব্যবস্থা সংস্কারের জন্য ২৭ দফা রূপরেখা পেশ করেছিল—পরে ৩১ দফা করা হয়।
পড়ুন: অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে নির্বাচিত সরকার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ: মির্জা ফখরুল
তিনি বলেন, বিএনপিকে সংস্কারবিরোধী হিসেবে চিত্রিত করার জন্য একটি মিথ্যা প্রচারণা চালানো হয়েছে—যা সত্য নয়।
রাজনৈতিক দলগুলোকে বিএনপিকে শত্রু হিসেবে না দেখার বা সমালোচনা না করার আহ্বান জানান ফখরুল। বলেন,এটি জাতীয় ঐক্যের জন্য সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল এবং গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, ‘ঐক্য ও গণতন্ত্রের ক্ষেত্রে আমরা কোনো আপস করব না। একটি উদার গণতান্ত্রিক দল হিসেবে আমরা গণতান্ত্রিক উপায়ে এবং সংসদে পরিবর্তন চাই। আমি সকলকে এটি ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করতে অনুরোধ করছি।’
জুলাই সনদ সম্পর্কে তিনি বলেন, বিএনপি ইতোমধ্যেই এটি চূড়ান্ত করার জন্য সমর্থন জানিয়েছে। ‘এখন প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করার দায়িত্ব সরকারের।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, কিছু মহল সূক্ষ্মভাবে বিএনপিকে ক্ষমতায় আসতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে, কারণ দলের পরবর্তী নির্বাচনে জয়লাভের প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি বলেন, জাতিকে বিভক্ত করার জন্য বিএনপিকে প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে চিহ্নিত করার পরিকল্পিত প্রচেষ্টা চলছে। ‘অনেকগুলো দল নির্বাচন ব্যাহত করার জন্যও বিভিন্ন দাবি তুলছে—যা জাতীয় অনৈক্যের কারণ হচ্ছে। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য বজায় রাখতে হবে। ‘নতুন বাংলাদেশ গঠনে এটি একটি আমাদের শক্তি হবে।’
তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য থাকতে পারে, তবে জাতির স্বার্থে এবং দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় তাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
এতে আরও বক্তব্য দেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, ১২ দলীয় জোটের প্রধান সমন্বয়কারী ও জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (মঞ্জু) চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, এনপিপি চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, নেজাম ই ইসলাম পার্টির চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান মঞ্জু, সাবেক সংসদ সদস্য ও জেএসডির সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, জাতীয় গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, গণ-অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রাশেদ খান প্রমুখ।
পড়ুন: নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর করতে আগ্রহী চীন: ফখরুল
১৫৬ দিন আগে
‘অত্যন্ত সফল’ চীন সফর শেষে রাতে দেশে ফিরছেন প্রধান উপদেষ্টা
চীনে চার দিনের সরকারি সফরকে ‘মাইলফলক’ ও ‘অত্যন্ত সফল’ আখ্যায়িত করে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের আজ (শনিবার) রাতে দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
শনিবার (২৯ মার্চ) রাত ৮টা ৪০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে তার।
প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ইউএনবিকে জানান, বেইজিং ক্যাপিটাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ড. ইউনূসকে বিদায় জানান চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের চিফ প্রটোকল অফিসার ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী মন্ত্রী হং লেই।
আরও পড়ুন: বিমসটেক ইয়াং জেন ফোরামে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন ড. ইউনূস
এর আগে, চার দিনের সফরে ২৬ মার্চ চীন পৌঁছান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এরপর বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়ার (বিএফএ) মহাসচিবের আমন্ত্রণে ২৬ ও ২৭ মার্চ দেশটির হাইনান প্রদেশে অনুষ্ঠিত বিএফএ বার্ষিক সম্মেলন ২০২৫-এ যোগ দেন তিনি। সম্মেলনের সাইডলাইনে ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন চীনের স্টেট কাউন্সিলের ভাইস প্রিমিয়ার ডিং জুয়েশিয়াং।
তারপর চীন সরকারের আমন্ত্রণে ২৭ থেকে ২৯ মার্চ বেইজিং সফর করেন প্রধান উপদেষ্টা। এর মধ্যে গতকাল (শুক্রবার) চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন অধ্যাপক ইউনূস। সেখানে দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট হান ঝেংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধানের।
বৈঠককালে উষ্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ইস্যুতে মতবিনিময় করে উভয় পক্ষ। আলোচনাগুলোতে দুপক্ষ ব্যাপকভাবে ঐকমত্যেও পৌঁছায়।
আজ (শনিবার) সকালে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে ড. ইউনূসকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করা হয়। এ সময় সেখানে উপস্থিত ব্যক্তিবর্গের উদ্দেশে বক্তৃতা দেন প্রধান উপদেষ্টা।
আরও পড়ুন: স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকুন: ড. ইউনূস
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট, বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের চেয়ারম্যান হে গুয়াংচাইসহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিত হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট, পরিষদ চেয়ারম্যান ও পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের একটি ছোট্ট দল তাকে স্বাগত জানান। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতাদের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত বৈঠকও করেন মুহাম্মদ ইউনূস।
২৫০ দিন আগে
এবারও ২৫ মার্চ রাতে ১ মিনিট অন্ধকারে থাকবে দেশ
অন্য বছরের মতো এবারও ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসে এক মিনিট অন্ধকারে (ব্ল্যাকআউট) থাকবে সারা দেশ। কালরাতের প্রথম প্রহর স্মরণ করে রাত ১০টা ৩০ মিনিট থেকে ১০টা ৩১ মিনিট পর্যন্ত জরুরি স্থাপনা ছাড়া সারা দেশে প্রতীকী ‘ব্ল্যাকআউট’ পালন করা হবে।
তবে কেপিআই ও জরুরি স্থাপনা এ কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকবে। গত বছর অবশ্য রাত ১১টা থেকে ১১টা ১ মিনিট পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করা হয়েছিল।
সম্প্রতি ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস পালন এবং ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে জাতীয় কর্মসূচি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: জাতীয় স্মৃতিসৌধে ২৩ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত সর্বসাধারণের প্রবেশ নিষেধ
সভায় সভাপতিত্ব করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজম। সভার কার্যবিবরণী থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
কার্যবিবরণীতে বলা হয়, ২৫ মার্চ প্রতীকী ব্ল্যাকআউটের বিষয়ে সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়। আলোচনায় রেলপথ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি রমজান মাসে তারাবির নামাজের বিষয় বিবেচনায় রেখে রাত ১২টা থেকে ১২টা এক মিনিট পর্যন্ত প্রতীকী ব্ল্যাকআউটের প্রস্তাব দেন। তবে বিস্তারিত আলোচনার পর সারা দেশে রাত ১০টা ৩০ মিনিট থেকে ১০টা ৩১ মিনিট পর্যন্ত এক মিনিট প্রতীকী ব্ল্যাকআউট পালনের বিষয়ে সবাই একমত হন।
বাংলাদেশে অবস্থিত বিদেশি মিশনগুলোতে ব্ল্যাকআউট প্রযোজ্য হবে না বলেও কার্যবিবরণীতে উল্লেখ করা হয়েছে।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে ঢাকায় ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে বর্বর সামরিক অভিযানের মধ্য দিয়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ব্যাপক গণহত্যা চালিয়েছিল। ২৫ মার্চ রাতের আঁধারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ পুরো ঢাকাজুড়ে হত্যাযজ্ঞ চালায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী।
আরও পড়ুন: ২৫ মার্চকে ‘আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতির দাবিতে প্রেস ক্লাবে আলোচনা সভা
এছাড়া আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় সিদ্ধান্ত হয়, গুরুত্বপূর্ণ সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবন-স্থাপনায় কোনো অবস্থাতেই ২৫ মার্চ রাতে আলোকসজ্জা করা যাবে না।
অন্যান্য বছর ২৩ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত সমরাস্ত্র প্রদর্শনী হয়ে থাকে। এ বছর সমরাস্ত্র প্রদর্শনী হবে না বলেও সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে।
২৮১ দিন আগে
দেশ শয়তানমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
দেশ শয়তানমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ চলবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, যতদিন শয়তান থাকবে, ততদিন অভিযান চলবে।’
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে ইছাপুরা সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে ১৩৩তম বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘শিক্ষার প্রসার হয়েছে, কিন্তু শিক্ষার মান বাড়েনি।’
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষকদের সম্মান করতে হবে ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের রুখে দাঁড়াতে হবে।’
আরও পড়ুন: তৌহিদি জনতাই না, বিশৃঙ্খলায় জড়িত সবাইকে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে: উপদেষ্টা
বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন মুন্সীগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মুহম্মদ শামসুল আলম সরকার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আতাউল গনি ওসমানী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিনা আক্তার, বিক্রমপুর কুঞ্জবিহারী সরকারি কলেজের অধ্যাপক ড. রসময় কীর্তনী।
স্কুলটির প্রধান শিক্ষক মো. জামাল হোসেন মিয়ার সভাপতিত্বে আরও অংশ নেন আন্তর্জাতিক ফারাক্কা বাঁধ প্রতিরোধ কমিটির চেয়ারম্যান সৈয়দ টিপু সুলতান, সহকারী পুলিশ সুপার (সিরাজদিখান সার্কেল) আ.ন.ম ইমরান খান, উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস ধীরনসহ অভিভাবকরা।
২৯০ দিন আগে
আ. লীগ সাড়ে ১৫ বছর দেশের পরিবর্তে নিজেদেরকে সাজিয়েছে: জামায়াত আমির
বিগত দিনে একটানা সাড়ে ১৫ বছর যারা শাসন করেছেন তারা দেশকে না সাজিয়ে নিজেদেরকে সাজিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
তিনি বলেন, আবহমান কাল থেকে আমাদের এই দেশটি সৌহার্দ্য-সম্প্রীতির। নানা ধর্মের মানুষ আমরা মিলেমিশে বসবাস করি। এমন একটি দেশ দুনিয়ায় কমই আছে। দেশের মানুষের হাতে কাজ তুলে দেওয়ার পরিবর্তে দেশের মানুষের রিযিক তারা তুলে নিয়েছে। লাখো বেকারের মিছিলে জনগণ ছিল পিষ্ঠ। এর জন্য সরকার দায়ী।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার আঠারোমাইল মোড়ে অনুষ্ঠিত জামায়াতের পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ডুমুরিয়া উপজেলা জামায়াত এই পথসভার আয়োজন করে।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘তারা ছাত্রদের হাত থেকে কলম কেড়ে নিয়ে তাদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছে। তারা দেশের মানুষের হাড় ভাঙা পরিশ্রমে অর্জিত টাকা বিদেশে পাচার করেছে।’
জামায়াতের আমির আরও বলেন, অনেকে জিজ্ঞেস করেন তারা আবার নির্বাচনে আসবে কি? আমি বলি- যারা গণহত্যা করেছে, গদিতে থাকার জন্য দেশের মানুষের কেনা অস্ত্র দিয়ে দেশের মানুষের বুকে গুলি ছুড়েছে- তারা কী রাজনীতি করার অধিকার রাখে? ‘স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও তারা এই সমাজকে, দেশকে অস্থির করার জন্য ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে।’
আরও পড়ুন: ২৫ সালের মধ্যেই নির্বাচন দিতে হবে: জামায়াতের নায়েবে আমীর
জামায়াতা প্রধান বলেন, আমরা এ দেশকে ভালবাসি, এদেশকে গড়তে চাই। সমাজে আমাদের মা বোনেরা ইজ্জতের সাথে ঘরে-বাইরে সমস্ত জায়গায় চলতে পারবে। যোগ্যতা অনুযায়ী যুবকরা কাজ পাবে।
তিনি বলেন, ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য আদালতের দরজায় যেয়ে মানুষকে কাঁদতে হবে না। বরং আদালত দায়িত্ব নিয়ে মানুষকে ন্যায়বিচার পাইয়ে দেবে। ন্যায়বিচারের দিক থেকে একটি দেশ এবং জাতি গঠন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের লড়াই অব্যাহত থাকবে।
বিশেষ অতিথি ছিলেন দলটির সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও খুলনা জেলা আমির মাওলানা এমরান হুসাইন, সাতক্ষীরা জেলা আমির মাওলানা শহিদুল ইসলাম মুকুল প্রমুখ।
ডুমুরিয়া উপজেলা আমির মাওলানা মোক্তার হোসাইনের সভাপতিত্বে পথসভা পরিচালনা করেন উপজেলা সেক্রেটারি মাওলানা শেখ সিরাজুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: আগামীর বাংলাদেশ হবে সাম্যের: জামায়াত আমির
৩৪৪ দিন আগে
দেশের ৬৯ কারাগারের মধ্যে অতি ঝুঁকিপূর্ণ ১৭: কারা মহাপরিদর্শক
কারা মহাপরিদর্শক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মোহাম্মদ মোতাহের হোসেন বলেছেন, দেশের কারাগারগুলো অনেক পুরোনো হওয়ায় ৬৯টির মধ্যে ১৭টি অতি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
তিনি বলেন, সরকারও এ বিষয়ে জানেন। বেশ কিছু কারাগার নতুন করে নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
কারাগারের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বুধবার (৪ ডিসেম্বর) কারা সদর অধিদপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, কারাবন্দীদের খাবারে প্রোটিনের পরিমাণ বৃদ্ধি, অসুস্থ হলে দ্রুত অ্যাম্বুলেন্স সেবা, প্রতি একমাসে তাদের আইনজীবী ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়াসহ গত তিন মাসে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি আমরা।
আরও পড়ুন: সাতক্ষীরা জেলা কারাগারে হামলা, বেরিয়ে গেছে সব হাজতি-কয়েদি
মোতাহের হোসেন বলেন 'যোগাযোগের ক্ষেত্রে আদালতের আদেশ ছাড়াও সকল প্রকার বিচারাধীন বন্দী প্রতি ১৫ (পনের) দিনে এবং সাজাপ্রাপ্ত বন্দি ৩০ (ত্রিশ) দিনে, আইনজীবীসহ একবারে পরিবারের সর্বোচ্চ পাঁচজন সদস্যের সঙ্গে সাক্ষাত করতে পারেন।
এছাড়া প্রত্যেক বন্দিই প্রতি সাত দিনে একবার আইনজীবীসহ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তিনটি নম্বরে ১০ মিনিটের জন্য কথা বলার সুযোগ পান। শ্রেণিপ্রাপ্ত বন্দীরা দিনে দুই বেলা এবং অন্য সকল বন্দী দিনে একবেলা আমিষ জাতীয় খাবার পান।
আরও পড়ুন: জামিন নামঞ্জুর, সাবেক রেলমন্ত্রী সুজন কারাগারে
তিনি বলেন, কারাগারের অভ্যন্তরর ক্যান্টিনে পণ্যের দাম ন্যায্যতার সঙ্গে নির্ধারণ করে ক্যান্টিন সুবিধা সকলের জন্যই উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। তবে ব্যক্তি বিশেষে মাসিক সর্বোচ্চ ব্যয় নির্ধারণ করে দেওয়ার উদ্যোগও গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
কারা মহাপরিদর্শক বলেন, দেশের এই পরিবর্তিত সময়ে কারাগারগুলোতে সাময়িকভাবে বন্দীর সংখ্যা তুলনামুলকভাবে কমলেও বর্তমানে তা উর্ধ্বমুখী। তাছাড়া বিশেষ প্রকৃতির বন্দীর সংখ্যা কম নয়। তবে সকল সময়ের ন্যায় কারাবিধিসহ অন্যান্য বিধি-বিধানের আলোকে তাদের নিরাপদ আটক ও প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা হচ্ছে।
বিএসএমএমইউতে সাবেক এমপি আসাদুজ্জামান নূরের সঙ্গে অনাকাঙ্ক্ষিত একটি ঘটনার বিষয়ে তিনি বলেন, 'যখন আমরা বন্দীদের চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাই, তখন আমাদের রক্ষীরা উপস্থিত থাকেন। সেদিনও ছিল। তারা সে সময় ব্যবস্থা নিয়েছে। ‘
কারাগারে বর্তমানে ১৫ জন জঙ্গি এবং ৭০ জনের মতো পলাতক আছেন বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন,‘ আমরা কাউকে জঙ্গি বলছি না। আদালত থেকে তারা জঙ্গি হিসেবে এসেছে। আমাদের অবকাঠামোগত কিছু দুর্বলতা আছে। সেগুলো সমাধানের জন্য সরকারের কাছে আমরা প্রস্তাবনা দেবো।'
কারা মহাপরিদর্শক বলেন, গত ৫ অগাস্ট পরবর্তী সময়ে ৫০ হাজারের মতো বন্দী ছিল। এই সংখ্যা কমে আসলেও এখন আবার তা বেড়ে ৬৫ হাজারের মতো হয়েছে। দেশের সব হাসপাতালে প্রিজন সেল না থাকায় বন্দীদের চিকিৎসা ক্ষেত্রে কিছু দুর্বলতা থাকার কথা স্বীকার করে তা কাটিয়ে উঠার আশ্বাস দেন তিনি।
কারা কর্তৃপক্ষের গৃহীত পদক্ষেপসমূহ
১. কারা অভ্যন্তরের সকল প্রকার তল্লাশি জোরদার করা হয়েছে। এছাড়া অবৈধ দ্রব্যাদির প্রবেশ রোধকল্পে প্রবেশপথে বডিস্ক্যানারসহ অন্যান্য আধুনিক সরঞ্জামাদি স্থাপন করা হয়েছে।
২. কারাগারে মাদক দ্রব্যের প্রবেশ রোধ করতে ঝুকিপূর্ণ কারাগারগুলোতে ডগ স্কোয়াড মোতায়েন প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। সৎ এবং যোগ্যতাসম্পন্ন কর্মকর্তা এবং কারারক্ষীদের তাদের পেশাগত যোগ্যতার ভিত্তিতে কারা সদর দপ্তরসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কারাগারসমূহে পদায়ন করা হয়েছে।
৩. অসাধু কারা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে চাকরি থেকে অপসারণ, তাৎক্ষণিক বদলিসহ সকল প্রকার বিভাগীয় কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। এক্ষেত্রে আইনি দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে অনেকে আবার অপরাধমূলক কার্যক্রমে জড়িত হচ্ছেন বিধায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে আইনি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
৪. সকল সময়ে বন্দীদের সঙ্গে মানবিক আচরণ নিশ্চিতের জন্য বেশ কয়েকটি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বন্দীদের প্রাপ্যতা অনুযায়ী খাবার সহ প্রয়োজনীয় সরাঞ্জামাদির সরবরাহ নিশ্চিতের জন্য কঠোর তদারকি অব্যাহত রয়েছে। বন্দীদের দেখা সাক্ষাত, টেলিফোনে কথোপকথন, চিকিৎসা সেবা যথাযথভাবে নিশ্চিতের লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা জারিসহ তা বাস্তবায়নে কঠোর নজরদারি করা হচ্ছে।
৫. বন্দী ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে কারাগার ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সফটওয়্যারসহ, আর এফ আইডি এবং জিপিএস ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সেবা প্রত্যাশীদের সহায়তার জন্য ২৪ ঘণ্টা হটলাইন চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
৬. কারাগারকে সংশোধনাগার হিসেবে রূপান্তরের লক্ষ্যে বন্দীদের প্রশিক্ষণসহ তাদের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে থাকবে, নতুন পণ্যের উৎপাদনের লক্ষ্যে স্থাপনা তৈরি, পুরোনো যন্ত্রপাতির আধুনিকায়ন। এছাড়া বিজিএমই এর সহায়তায় একটি পূর্ণাঙ্গ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারিং লাইন স্থাপনের লক্ষ্যে তাদের সাথে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি সই করাসহ কারাগারে কর্মদক্ষতা অর্জনকারী বন্দীদের তাদের মুক্তির পর বিজেএমই আওতাভুক্ত কারখানাগুলোতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চাকরি দেওয়ার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে আলোচনা চলছে। পরবর্তীতে কারাগারে খাবার পানি বোতলজাতকরণ, মাস্ক তৈরির মতো কার্যক্রমও গ্রহণ করা হবে।
৭। কারাগারকে সংশোধনাগার হিসেবে রূপান্তরের লক্ষ্যে বন্দীদের প্রশিক্ষণসহ তাদের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে নতুন পণ্য উৎপাদনের লক্ষ্যে স্থাপনা তৈরি, পুরনো যন্ত্রপাতির আধুনিকায়ন। এছাড়া বিজিএমই এর সহায়তায় একটি পূর্ণাঙ্গ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারিং লাইন স্থাপনের লক্ষ্যে তাদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি সই করাসহ কারাগারে কর্মদক্ষতা অর্জনকারী বন্দীদের তাদের মুক্তির পর বিজেএমই আওতাভূক্ত ফ্যাক্টরীসমূহে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চাকুরী প্রদানের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে আলোচনা চলছে। পরবর্তীতে কারাগারে খাবার পানি বোতলজাতকরণ, মাস্ক তৈরির মতো কার্যক্রমও গ্রহণ করা হবে।
৮. অতি পুরাতন কারা আইন ও বিধি বিধান সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণসহ কারা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কল্যাণে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে জনবল বৃদ্ধি, পদ-পদবির আপগ্রেডেশন, নিয়োগবিধি পরিবর্তনসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা। এ সকল বিষয়সমূহ সরকারের সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে।
৯. নানা মহলের দাবির প্রেক্ষিতে কারা অধিদপ্তরের লোগো পরিবর্তনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এ ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত লোগো যেন কারা অধিদপ্তরের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় সে দিকে লক্ষ্য রাখা হবে।
১০. বন্দী ব্যবস্থাপনা উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রীয় কারা হাসপাতাল স্থাপনসহ বেশ কয়েকটি ঝুঁকিপূর্ণ কারাগার পুনঃনির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এ ছাড়া জ্যামার, বডিক্যামসহ আধুনিক সরঞ্জামাদি কেনার উদ্যোগও গ্রহণ করা হয়েছে।
১১. কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন স্তরে নিয়মিত প্রশিক্ষণের আয়োজনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে এবং এরুপ বেশ কয়েকটি প্রশিক্ষণ ইতোমধ্যেই সম্পন্ন করা হয়েছে।
১২. কারাগারগুলোর ভবনগুলোর অব্যবহৃত ছাদসমূহ ব্যবহার করে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এতে সরকারের বিপুল রাজস্ব সাশ্রয় হবে এবং বাড়তি বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করার ব্যবস্থাও রাখা হবে, যা দেশের সবুজ বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
আরও পড়ুন: ৫ দিনের রিমান্ড শেষে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল কারাগারে
৩৬৫ দিন আগে
দেশকে তপ্ত শ্মশানে পরিণত করতে আইনজীবীকে হত্যা করা হয়: ডা. শফিকুর
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে একটি উগ্র গোষ্ঠী চট্টগ্রাম আদালতের আইনজীবীকে হত্যা করে তারা দেশকে তপ্ত শ্মশানে পরিণত করতে চেয়েছিল।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টায় স্থানীয় একটি কমিউনিটি সেন্টারে জেলা জামায়াতের ইউনিয়ন দায়িত্বশীল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. শফিকুর রহমান এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এদেশের দায়িত্বশীল মুসলমানরা তাদের ফাঁদে পা দেয়নি।
জামায়াত আমির বলেন, জামায়াত ক্ষমতায় গেলে কাউকে অধিকার ভিক্ষা করতে হবে না। সবাইকে তার অধিকার সম্মানের সঙ্গে দেওয়া হবে। দেশের অফিস আদালতে কাউকে লাঞ্ছিত হতে হবে না। কৃষক তার ফসলের নায্য দাম পাবেন, আর শ্রমিক পাবেন তার ঘামের মজুরি।
আরও পড়ুন: যৌক্তিক সময়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের দাবি জামায়াতের
তিনি বলেন, আমরা ধৈর্য ধরেছি, দেশের মানুষকে শান্ত করেছি। এদেশে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্ট্রান সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে শান্তিতে বসবাস করবে। কোনো ধর্মীয় উপাসনালয় কাউকে পাহারা দিতে হবে না।
জামায়াতের আমির বলেন, আবু সাঈদ আমাদের এই স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রধান আইকন ও সেনাপতি। তিনি অধিকার চেয়েছিলেন কিন্তু তাকে পর পর তিনটি গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আমরা তাকে সেল্যুট জানাই।
তিনি আরও বলেন, লেখাপড়া করে এ দেশের যুবকেরা বেকারত্বের অভিশাপে আত্মহত্যা করবে না, বরং শিক্ষা অর্জন করার সঙ্গে সঙ্গে কাজ পাবেন।
জেলা জামায়াতের আমির ও কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য আইনজীবী হাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন, জামায়াত নেতা মাসুদ সাঈদী প্রমুখ।
আরও পড়ুন: ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের কৃতিত্ব ছাত্র-জনতার, কোনো দলের নয়: জামায়াতের আমীর
৩৬৭ দিন আগে
‘বাংলাদেশসহ জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর অর্থ পাওয়ার চেয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকা জরুরি’
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, কপ সম্মেলনে আমাদের নিগোসিয়েটরদের ঐক্যবদ্ধ থাকা জরুরি। কে কত টাকা পেল বা পেল না, এমনটি হলে আমাদের ঐক্য দুর্বল হবে। আর যদি ঐক্য ভেঙে যায় তাহলে আমাদের জন্য সেটি হবে ক্ষতিকর।
আজারবাইজানের রাজধানী বাকুর কপ-২৯ সেন্টারে ইউএনবিকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
ঐক্যটা কি ধরনের জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের অংশগ্রহণকারীদের যে মিটিং হয় সেই প্রক্রিয়া যেন অব্যাহত থাকে। তাহলে এটি একটি অর্জন হবে। বাংলাদেশসহ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো- আমরা যারা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করি, তাদের ঐক্য থাকলে তা এই কপ-২৯ এর বড় একটি অর্জন হবে।
আরেক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এবারের কপ বেশ হতাশা এবং উদ্বেগের।’
আরও পড়ুন: কপ-২৯ সম্মেলনের আগে জলবায়ু ন্যায্যতার দাবিতে যুববন্ধন
জলবায়ু পরিবর্তজনিত কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে কত টাকা পাওয়া যাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অর্থ যদি বলেন, একটা পরিমাণ, যে পরিমাণ পাওয়ার কথা সেই পরিমাণ পাওয়া যাবে না এটা মোটামুটি নিশ্চিত। অর্থের পরিমাণ থেকে বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে অর্থের মানটাতে। অর্থটা কি ঋণ হিসেবে আসবে, না কার্বন ক্রেডিট হিসেবে আসবে, অর্থটা সরাসরি সাহায্য হিসেবে জাতিসংঘের গ্যারান্টি চাই। আমরা যদি অর্থের মানটাতে সমঝোতায় পৌঁছাতে পারি, তাহলে একটা জয় হিসেবে ধরে নিতে পারব।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, আশা আপনার একরকম, আমার একরকম, আপনি হয়তো ভাবছেন ১.৩ বিলিয়ন টাকা নিয়ে গেলে আমরা ভাল হয়ে যাব। আমি ভাবছি এই মুহূর্তে যদি টাকার অঙ্ককে কেন্দ্র করে আমাদের ঐক্যটা ভেঙে যায়- তাহলে এটা অনেক বড় একটা ক্ষতি হবে। আর যদি ঐক্যটা ধরে রাখতে পারি সেটা আমার ও আমাদের আশার জায়গা। অর্থের মানের ব্যবস্থার সিদ্ধান্তে আসতে পারি এবং সেটি পাবলিকস ফান্ডিং হতে হবে।
তিনি বলেন, অর্থের মানের দিকে জয়ী হতে পারলে বিশাল জয় হবে। বাংলাদেশের নাগরিক যারা ফেনীতে ,কুমিল্লায়, শেরপুর বা সিলেটে বন্যা আক্রান্ত শিশু প্রতি জনের ৯০ ডলার ঋণের বোঝা মাথায় আছে। মানে হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিভিন্ন সময় প্রকল্প নেওয়া হয়েছে সেই প্রকল্প ঋণের বোঝা মাথায় রয়েছে। তাই অর্থের মানটাই লাভ করতে পারলে বড় জয় হবে।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, কত টাকা পেলাম বা পেলাম না এটা জরুরি না। কারণ কত টাকা পেলাম তা বড় কথা নয়। বরং এক তৃতীয়াংশ ভূমি যদি পানির নিচে চলে যায়, তার জন্য কত টাকা প্রয়োজন সেটি বড় বিষয়। মিটিগেশন করে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে কার্বন নি:স্বরণ কমাতে আমাদের জোর দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, যত টাকা আমাদের তার ৫০ ভাগ বন্যা আক্রান্ত মানুষগুলোর ঋণ খাপ খাইয়ে সক্ষমতা বাড়াতে হবে। এই জায়গায় জয়ী হতে পারলে একটা ফল আসবে। আরেকটা আশার জায়গায় এই প্রক্রিয়াকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। তাহরে বছরে একবার না দুইবার কিভাবে টাকা আসবে সেটা করা যাবে। কিন্তু প্রক্রিয়াটাকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।
আরও পড়ুন: কপ২৯: বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ
তিনি জোর দিয়ে বলেন, আমি আগেও বলেছি আবারও বলছি আমাদের অবস্থান স্পষ্ট হওয়া উচিত। অনেক টাকা চাইনা, এর চেয়ে বরং যে সমস্যাটা আছে তার সমাধান চাই। বাংলাদেশর মতো দেশগুলো যারা ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা আছে, তাদের অবস্থান এমন হওয়া উচিত। যেসব দেশ জীবাশ্ম জ্বালানি কেন্দ্রিক যে উন্নয়ন করছে তা পরিবর্তন করতে হবে।
রিজওয়ানা বলেন, সরকার বর্তমানে জ্বালানি নীতিমালা পর্যালোচনা করছে এবং জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক উৎপাদন থেকে নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে অগ্রসর হওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। উচ্চ আমদানি শুল্ক পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে এবং বাংলাদেশে সৌরশক্তি প্রকল্পে বিদেশি বিনিয়োগ উৎসাহিত করা হচ্ছে। বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সৃষ্ট বায়ু দূষণ আমাদের বড় পরিবেশগত সমস্যা। তাই এখনই নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগের সঠিক সময়।
তিনি বলেন, আর্টিকেল-৬ নিয়ে অনেক বিবাদ আছে। কার্বন আমাদের আর্টিকেল-৬ একটি অস্ত্র। উন্নত বিশ্ব যদি মনে করে যার যার দেশে কার্বন নিঃস্বরণ করবে তাহলে অনেক ক্ষতি হবে।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশের জলবায়ু বাস্তবতা এক রকম। তাই জলবায়ুর যে ভংগুরতা আছে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তা কমাতে পারি কি না সেটিও দেখতে হবে। কোন জায়গায় কমাতে হবে। এটার অগ্রাধিকার দিতে হবে। আমরা এডাপটেশনে বেশি, নাকি মেডিকেশনে বেশি, না লস এন্ড ড্যামেজের কাজ বেশি করতে হবে। কাজ করার কী কী ক্ষেত্র আছে। -এসব দেখতে হবে।
তিনি বলেন, এটির প্রথম দুইটি মিটিং হয়েছে এবং দ্বিতীয় মিটিংটি বাংলাদেশে হবে জানুয়ারিতে।
উপদেষ্টা বলেন, মিটিগেশন নিয়ে জোরালো আলোচনা হচ্ছে। একটি হচ্ছে টেকনোলজিগুলোর কথা বলি আমরা। আমাদের দেশে দুর্যোগের সময় আমাদের যে পূর্ব সতর্কতা দরকার, তা যেন আমরা আগেই জানতে পারি। সেজন্য টেকনোলজির সহায়তা লাগবে। যে টেকনোলজি আমাদের দরকার, সেটির জন্য আমাদের সাহায্য প্রয়োজন আছে।
আরও পড়ুন: কপ২৯: বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ
বাংলাদেশে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা, যা দেশের মোট গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের প্রায় ১০ শতাংশ (২১.০৪ মিলিয়ন টন সিও২-সমমান) এর জন্য দায়ী। শুধু ঢাকাতেই প্রতিদিন ৬ হাজার টন বর্জ্য উৎপন্ন হয়, যার ৭৩ শতাংশ অপরিশোধিত অবস্থায় ল্যান্ডফিলে জমা হয়, ফলে মিথেন গ্যাস নিঃসরণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য পুনঃউৎস আহরণ কেন্দ্র, ওয়েস্ট-টু-এনার্জি প্ল্যান্ট এবং স্যানিটারি ল্যান্ডফিল স্থাপনে জাপানের সহায়তা চাওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে মোট জ্বালানি ব্যবহারের ৪০ শতাংশ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে সরবরাহের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। তবে, এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রয়োজন। চীনকে বাংলাদেশে সোলার ম্যানুফ্যাকচারিং প্ল্যান্ট স্থানান্তরের অনুরোধ জানানো হয়েছে, যা আমদানি নির্ভরতা কমাবে। এছাড়া, সোলার প্যানেলের উপর কর কমানোসহ সংশ্লিষ্ট নীতিমালা পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আপডেটেড এনডিসি বাস্তবায়নে ২০৩০ সালের মধ্যে ১৭৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন, যার মধ্যে ৩২ বিলিয়ন ডলার বাংলাদেশ নিজস্ব উদ্যোগে অর্জন করবে। তবে, বাকি অংশ আন্তর্জাতিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল।বাংলাদেশ আগামী বছর এনডিসি ৩ দশমিক শূণ্য জমা দেওয়ার পরিকল্পনা করছে।
এদিকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্য ও পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক( জলবায়ু পরিপর্তন ও আন্তর্জাতিক কনভেমশন) মির্জা শওকত আলী আজ ইউএনবিকে জানিয়েছেন, গত ১১ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া কপ২৯ সম্মেলন আজ ২২ নভেম্বর শেষ হওয়া কথা থাকলেও বলা যাচ্ছে না। কারণ শুরু থেকে এবং পরে মন্ত্রী পর্যায়ের আলোচনা নিয়ে ফাইনাল টেক্সট এখনো বের হয়নি।
আরও পড়ুন: কপ২৯: স্বল্পোন্নত-ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোকে ২০০ মিলিয়ন বরাদ্দ দিতে ইইউ’র সমর্থন চাইল বাংলাদেশ
৩৭৭ দিন আগে