বোরো আবাদ
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বোরো আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে
চলতি মৌসুমে চাঁপাইনবাবগঞ্জে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৫১ হাজার ৫৫৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। গেলো আমন মৌসুমে ধানের দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকেরা বোরো ধান আবাদে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
চাষীরা উফশী ও হাইব্রিড জাতের বোরোর আবাদ করেছেন। এখন জেলা জুড়ে ফসলের মাঠে মাঠে শুধু সবুজের সমারোহ। বাতাসে দোল খাচ্ছে ধান গাছের সবুজ পাতা। ইতোমধ্যে কিছু কিছু জমিতে ধানের শীষ আসতে শুরু করেছে। চলতি মৌসুমে অনুকূল আবহাওয়া, সেচ, সার সংকট না থাকাও পোকামাকড়ের তেমন উপদ্রব না হওয়ায় এবং শেষ পর্যন্ত সবকিছু অনুকূলে থাকলে এবার বোরোর ভালো ফলন আশা করছেন কৃষকরা।
সদর উপজেলার আতাহার এলাকার চাষী মুঞ্জুর আলী বলেন, এবার তিনি আট বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করেছেন। এ বছর বীজ ও সারের কোনো সংকট হয়নি। তবে কীটনাশকের দাম বেড়েছে। জমিতে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার এখন পর্যন্ত রোগবালাই অনেক কম। আবহাওয়া ভালো আছে, তাপমাত্রা ভালো আছে। শেষ পর্যন্ত বড় ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় না ঘটলে আশা করা যায় ভলো ফলন হবে।
আরও পড়ুন: আমনে আবাদ লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ অর্জিত: কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর
আতাহার এলাকার আরেক বেরো চাষী আকবর আলী বলেন, গেলো আমনে দর মোটামুটি ভালো পেয়েছিলাম। এ কারণে এবার সাত বিঘা জমিতে বোরা চাষ করেছি। এবার বিদ্যুতের সমস্যা না থাকায় সেচের কোনো সমস্যা হয়নি। পোকামাকড়ের আক্রমণ তেমনভাবে নাই। কীটনাশক ও বালাইনাশক স্প্রে করেছি। তবে কীটনাশক ও বালাইনাশকের দাম প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। এতে খরচ বেড়েছে। এখন ধানের অবস্থা খুব ভালো। কিছু কিছু জমিতে ধান গাছে শীষ আসতে শুরু করেছে। আশা করা যায় এক সপ্তাহের মধ্যে এ এলাকার সব জমিতে পুরোপুরি শীষ ফুটে যাবে।
দক্ষিণশহর এলাকার চাষী আবেদ আলী বলেন, এবার তিনি দুই বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছেন। এখন পর্যন্ত ধান গাছের অবস্থা ভালো আছে। জমিতে এসে ধান গাছ দেখে মন জুড়িয়ে যাচ্ছে। পোকামাকড় তুলনামূলকভাবে এবার অনেক কম। দুই বার কীটনাশক ও বালাইনাশক স্প্রে করেছি। এখন পর্যন্ত আবহাওয়া ভালো আছে। বর্তমানে জমিতে শীষ ফুটতে শুরু করেছে। শেষ পর্যন্ত এরকম আবহাওয়া ভালো থাকলে আশা করা যায় ভালো ফলন পাব।
নাচোল উপজেলার নেজমপুর এলাকার চাষী সেরাজুল ইসলাম জানান, তিনি তার তিন বিঘা জমিতে বোরা চাষ করেছেন। বর্তমানে শীষ আসতে শুরু করেছে। ধান গাছের চেহারা বেশ ভালো আছে। এখন পর্যন্ত কোনো সমস্যা নেই। এমনটি শেষ পর্যন্ত থাকলে ভালো ফলন আশা করছেন তিনি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চাঁপাইনবাবগঞ্জের উপ-পরিচালক ড. পলাশ সরকারজানান, এ বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ৫১ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আবাদ হয়েছে ৫১ হাজার ৫৫৫ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রা থেকে ৪০৫ হেক্টর বেশি। বর্তমানে আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। শেষ পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয় না ঘটলে এবার জেলায় দুই লাখ ৩৫ হাজার ৬০৬ মেট্রিক টন বোরো চাল উৎপাদিত হবে বলে আশা কৃষি বিভাগের।
আরও পড়ুন: খরা: খুলনায় আমনের আবাদ নিয়ে শঙ্কা
১ বছর আগে
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বোরো আবাদে ব্যস্ত চাষিরা
গেল আমন মৌসুমে ধানের দাম ভালো পেয়েছেন কৃষকরা। বর্তমানেও ধানের বাজার দর ভালো। তাই উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে বোরো আবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষকরা।
বর্তমানে বীজ, সার ও সেচের সমস্যা না থাকলেও কৃষি উপকরণের দাম কমানোর দাবি জানিয়েছেন কৃষকরা। এদিকে বোরা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছে জেলা কৃষি কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, তীব্র শীত উপেক্ষা করে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাঠে মাঠে চলছে বোরো আবাদ। কেউ পাওয়ার টিলার দিয়ে জমি চাষ করেছে, কেউ সেচ নালা সংস্কার, কেউ সার প্রায়োগ, কেউ বা বীজ তলায় আবার কেউ ধানের চারা রোপন কাজে ব্যস্ত। এবার চাষিরা উপসি ও হাইব্রিড জাতের ধান আবাদ করছেন।
সদর উপজেলার বোরো চাষি আকবর আলী বলেন, ধানের বাজার দর ভালো চলছে। এর আগে আমন ধানের দর ভালো ছিল। এ কারণে আমরা বোরো আবাদ করছি। এ পর্যন্ত আমার ৭ বিঘা জমিতে ধান লাগানো হয়েছে। আরও ৩ বিঘা জমিতে লাগাব।
একই উপজেলার নওয়াবজায়গির এলাকার কৃষক জহুরুল ইসলাম জানান, তার আড়াই বিঘা জমিতে সরিষা লাগিয়েছেন। সরিষা উত্তোলন করে এবার সেই জমিতে বোরো ধান লাগানের জন্য জমির প্রস্তুতি চলছে। দু’এক দিনের মধ্যে ধানের চারা লাগানো শুরু হবে।
আরও পড়ুন: সাড়ে ১১ লাখ টন চাল ও সাড়ে ৬ লাখ টন ধান কিনবে সরকার
ইসলামপুর এলাকার চাষি শামিম আলী বলেন, গত বছর ১০ কাঠা জমিতে বোরো ধান চাষ করেছিলাম। বাজার দর ভালো থাকায় এবার ২৫ কাঠা জমিতে বোরো ধান রোপণ করছি।
নাচোল উপজেলার নেজামপুর এলাকার বোরো চাষি জানান, তিনি এবার ৩ বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করেছেন। বোরা উৎপাদনে খরচ বেশি। জমিতে সার ও সেচ লাগে। সেই সঙ্গে কীটনাশকও প্রয়োগ করতে হয়।
তিনি জানান, কীটনাশকের দাম খুব বেশি। এতে কৃষকের উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়। কীটনাশকের দাম কমানোর পাশাপাশি গুনগত মান ঠিক রাখতে সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের তদারকি জোরদার করা দরকার।
জেলা কৃষি বিভাগ জানায়, চলতি বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৪৯ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ১২ হাজার ১০০ হেক্টর, শিবগঞ্জ উপজেলায় ৭ হাজার ৫০ হেক্টর, গোমস্তাপুর উপজেলায় ১৬ হাজার ২০০ হেক্টর, নাচোল উপজেলায় ৮ হাজার ২০০ হেক্টর ও ভোলাহাট উপজেলায় ৫ হাজার ৮৫০ হেক্টর।
আরও পড়ুন: রাঙামাটিতে বোরো ধানের বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাসি
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চাঁপাইনবাবগঞ্জের উপ-পরিচালক নজরুল ইসলাম জানান, ৩ হাজার ৩৫৭ হেক্টর জমিতে বীজতলা আছে যা দিয়ে আবাদের চাহিদা পূরণ হবে। সার ও সেচের কোন সমস্যা নেই।
তিনি জানান, ধানের দর ভালো থাকায় কৃষকরা বোরো আবাদে আগহী হয়েছে। শেষ পর্যন্ত জেলায় বোরা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
২ বছর আগে
নতুন সম্ভাবনা নিয়ে আসছে বিনা উদ্ভাবিত ‘শেখ রাসেল’ ধান
বোরো আবাদে নতুন সম্ভাবনা নিয়ে আসছে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউিট (বিনা) উদ্ভাবিত নতুন জাতের বিনাধান-২৫। আর এর নামকরণ করা হয়েছে শেখ রাসেল ধান।
বিনাধানের বিজ্ঞানীরা জানান, উচ্চ ফলনশীল ‘চিকন’ এ ধানটি ইতোমধ্যেই গবেষণা খামারে আলোড়ন তুলেছে। তাছাড়া নতুন জাতের এই ধানটি কৃষকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলবে এবং কৃষি অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন তারা।
আরও পড়ুন: রাঙামাটিতে বোরো ধানের বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাসি
সংশ্লিষ্টরা জানান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ ছেলে শেখ রাসেলের নামে ছাড়পত্র নেয়া বিনাধান-২৫’র বীজ শেরপুরে নালিতাবাড়ী বিনা উপকেন্দ্রের খামারে উৎপাদন করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ১০ কেজি ধানের বীজ ফেলা হয়েছে। সেখান থেকে উৎপাদিত শেখ রাসেল ধানবীজ পরবর্তীতে কৃষক পর্যায়ে চাষাবাদের জন্য দেয়া হবে।
বিনাধানের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও নালিতাবাড়ী উপকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কৃষি বিজ্ঞানীরা ড. মাহবুবুল আলম তরফদার বলেন, বিনা উদ্ভাবিত সর্বশেষ জাত এই ‘শেখ রাসেল’ ধান। সম্প্রতি বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সির থেকে নতুন জাতের এই ধানটি ছাড়পত্র পেয়েছে।
তিনি বলেন, এটি বোরো আবাদে চাষযোগ্য প্রমিয়াম কোয়ালিটির একটি জাত। এই ধান খুবই চিকন ও লম্বা। জীবনকাল ১৪০ দিন। খামারে এ ধানের গড় ফলন মিলেছে হেক্টর প্রতি সাড়ে আট টন, অর্থাৎ বিঘাপ্রতি প্রায় ৩০ মণ। এটি বাসমতি চালের বিকল্প হিসেবে আবির্ভূত হবে এবং কৃষকরা উৎপাদিত ধানের ভালো দাম পাবেন।
আরও পড়ুন: যশোরাঞ্চলে বোরো ধানের মিষ্টি গন্ধে মাতোয়ারা কৃষক-কৃষাণি
কৃষি বিজ্ঞানীরা ড. মাহবুবুল আলম তরফদার বলেন, ‘আমরা বাজারে চিকন চাল হিসেবে যেগুলো দেখতে পাই, তার বেশিরভাগই মেশিনে কেটে চিকন করে বাজারজাত করা হয়ে থাকে। কিন্তু বিনাধান-২৫ বা শেখ রাসেল ধানের চাল কেটে চিকন করতে হবে না। এটা এমনিতেই বেশ সরু। যে কারণে এ ধানের চালের পুষ্টিমান বজায় থাকবে।
এছাড়া এ চালের ভাত খেতেও বেশ সুস্বাদু ও ঝরঝরে। সামনের দিনে শেখ রাসেল ধান খুবই জনপ্রিয় একটি জাত হিসেবে পরিচিতি পাবে হবে আশা করছেন বিনার কৃষি বিজ্ঞানীরা।
২ বছর আগে
৪০০ কোটি টাকার বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষ্যে খুলনা
আম্পানের পর করোনার ধাক্কা। আম্পান ভেসে নিয়ে গেছে ফসল, করোনা ফসলের তেমন ক্ষতি না করলেও এর ধাক্কায় ধানের ন্যায্যমূল্য পায়নি এ অঞ্চলের কৃষক।
৩ বছর আগে
হাওরে পানি আটকে মাছ শিকার, সুনামগঞ্জে বোরো আবাদে শঙ্কা
হাওরে পানি আটকে মাছ শিকার করায় সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় বোরো ধান আবাদের সময় সীমা পেরিয়ে গেলেও হাওরের অনেক জায়গায় বোরো আবাদ বিঘ্নিত হচ্ছে। হাওর জলমগ্ন থাকায় এবার বোরো আবাদ করতে পারছেন না কৃষকরা। ফলে বোরো আবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তারা।
৩ বছর আগে
যশোরে বোরো আবাদে পাতাব্লাস্টের আক্রমণ, দিশেহারা কৃষক
করোনাভাইরাস আতঙ্কের মধ্যেও মাঠভরা ফসল দেখে আশায় বুক বেঁধেছিলেন যশোরের কৃষকরা। কিন্তু শীষ বের হওয়ার আগেই বোরো ধানে পাতাব্লাস্ট ছত্রাকের আক্রমণে বিবর্ণ হয়ে গেছে সবুজ ধানের মাঠ, কৃষকরা হয়ে পড়েছেন দিশেহারা।
৪ বছর আগে
চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৪৬৮০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা
চলতি বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৪৬ হাজার ৮’শ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ।
৫ বছর আগে