আমের মুকুল
সিলেটের গোলাপগঞ্জে গাছে গাছে আমের মুকুল, বৃষ্টি না হলে ক্ষতির আশঙ্কা
সিলেটের গোলাপগঞ্জে গাছে গাছে আমের মুকুলের মৌ মৌ গন্ধ। উপজেলার সর্বত্র আম গাছগুলোতে সোনালী রঙয়ের মুকুল শোভা পাচ্ছে। বৃষ্টি না হওয়ায় মুকুল ঝরে পড়ায় আমের উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
উপজেলায় আমের গাছ রয়েছে সর্বত্র। সুস্বাদু এই ফলের চারা রোপনে সর্বস্তরের জনগনের মধ্যে বেশ আগ্রহ দেখা যায়। বিশেষ করে বরেন্দ্র অঞ্চলের বিশেষ জাতের ও উচ্চ ফলনশীল আমের চারা বিগত কয়েক বছর ধরে গোলাপগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক হারে রোপন করা হয়েছে।
এ জাতীয় আমের গাছ রোপনের মাত্র বছর, দু-বছরের মধ্যেই ফলন আসে বলে স্থানীয় জাতের চেয়ে বরেন্দ্র অঞ্চলের বিভিন্ন জাতের আমের চারা গোলাপগঞ্জের মানুষ বেশ আগ্রহের সঙ্গে সংগ্রহ করে থাকেন।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় গাছে গাছে আমের মুকুল, ছড়াচ্ছে সৌরভ
অন্যান্য বারের চেয়ে এবার গোলাপগঞ্জে আমের গাছগুলোতে মুকুলের সংখ্যা অধিক। মুকুল ঝরে না পড়লে ও যথাসময়ে বৃষ্টি হলে গোলাপগঞ্জে এবার আমের বাম্পার ফলন হবে বলে উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়।
গোলাপগঞ্জে প্রায় আড়াই হাজার ছোট-বড় ও মাঝারি আকারের টিলা রয়েছে। একেকটি টিলা যেন একেকটি ফলের বাগান। বিশেষ করে ওই সব টিলাগুলোতে বিগত এক যুগ বা তার চেয়ে বেশিদিন ধরে উচ্চ ফলনশীল বিভিন্ন জাতের আমের চারা রোপন করায় সহজেই ভালো ফলন পাওয়া যাচ্ছে।
উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, গোলাপগঞ্জে বিগত ১০ বছরে লক্ষাধিক আমের চারা রোপন করা হয়েছে। প্রতি বছরই বিভিন্ন এলাকায় এর সংখ্যা কেবল বৃদ্ধি পাচ্ছে।
গোলাপগঞ্জে যে হারে আমের চারা রোপন করে বাগান করা হচ্ছে তা অব্যাহত থাকলে এ উপজেলা থেকে উৎপাদিত আম এলাকার চাহিদা মিটিয়ে অন্যত্র বিক্রয় করা সম্ভব হবে বলে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়। এক্ষেত্রে প্রবাসীরা বেশ আগ্রহী হয়ে তাদেরকে বাগান করতে দেখা যাচ্ছে।
গোলাপগঞ্জের টিলাগুলো আম চাষের জন্য খুবই উপযোগী, ফলে ঐ সব টিলায় আমের ফলন বেশ ভালো হয়ে থাকে।
গোলাপগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার মাশরেফুল আলম এ প্রতিবেদককে জানান, কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে মাঠ পর্যায়ে যোগাযোগ অব্যাহত আছে। আম চাষে কৃষকদেরকে বিভিন্ন ধরনের সহায়তা করা হচ্ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবার আমের ফলন বেশ ভালোই হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন: দালানে ঠাসা শহর খুলনায় আমের মুকুলের শোভা
চুয়াডাঙ্গায় গাছে গাছে আমের মুকুল, ছড়াচ্ছে সৌরভ
চুয়াডাঙ্গায় ঋতুরাজ বসন্তে ফুটা নানা ফুলের সঙ্গে আমের মুকুলও সৌরভ ছড়াচ্ছে। এবার সময়ের আগেই সোনালি মুকুলে ভরে গেছে জেলার আম বাগানগুলো। মাঘের আমন্ত্রণে আসা আগাম মুকুল ফাল্গুনকে স্বাগত জানিয়ে বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীদের মনে আশার আলো জ্বালিয়েছে।
জেলার সরেজমিনে কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা গেছে, গাছে গাছে নানা ফুলের সঙ্গে থোকায় থোকায় হলুদ রঙের আমের মুকুল আসতে শুরু করেছে। গাছে মুকুল ও গুটি আম দেখে ইতোমধ্যে ব্যবসায়ীরা বাগানের দরদাম হাঁকছেন। আর বাগানের মালিকেরা আমের ভালো ফলন পেতে ছত্রাকনাশক প্রয়োগসহ বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ততার সময় পার করছেন।
আরও পড়ুন: মিলছে না ন্যায্যমূল্য, লোকসানে চুয়াডাঙ্গার পান চাষিরা
চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, গত বছর চুয়াডাঙ্গা সদরে ৮২৫ হেক্টর জমিতে ১০ হাজার ৭৬০ মেট্রিক টন, আলমডাঙ্গায় ২৮০ হেক্টর জমিতে ৫ হাজার ৩৪০ মেট্রিক টন, জীবননগরে ৪০০ হেক্টর জমিতে ৭ হাজার মেট্রিক টন ও দামুড়হুদায় ৩১০ হেক্টর জমিতে ৭ হাজার ৮৭৫ মেট্রিক টনসহ জেলায় মোট এক হাজার ৮৯২ হেক্টর জমিতে ৩২ হাজার ৯৫৫ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হয়েছিল।
দালানে ঠাসা শহর খুলনায় আমের মুকুলের শোভা
চলছে মাঘ মাস, ফাল্গুন আসতে সপ্তাহ দুয়েক বাকি। এরই মধ্যে খুলনার কিছু কিছু গাছে আমের মুকুল শোভা পাচ্ছে। শাখাগুলো ভরা থাকা উজ্জ্বল সোনালি মুকুল যেন সর্বত্র আভা ছড়াচ্ছে। দালানে ঠাসা স্বল্প বৃক্ষের শহরে আমের মুকুল দিয়েছে আলাদা শোভা।