জলবায়ু
ঢাকায় ধরা’র দুই দিনব্যাপী দ্বিতীয় জলবায়ু ন্যায্যতা সম্মেলন শুরু
নাগরিক সংগঠন ‘ধরিত্রী রক্ষায় আমরা’ ধরা’র আয়োজনে ঢাকায় পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক দ্বিতীয় জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ ২০২৪ শুরু হয়েছে।
শনিবার সকাল ১০টায় ঢাকার আগারগাঁওয়ের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে এটির উদ্বোধন করেন সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ।
সমাবেশ আয়োজক কমিটির আহ্বয়ক ধরা’র উপদেষ্টা ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফারিদা আখতার।
সমাবেশে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন এপিএমডিডি ফিলিপাইনের সমন্বয়ক লিডি ন্যাকপিল। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন সমাবেশ আয়োজক কমিটি এবং ধরা’র সদস্য সচিব শরীফ জামিল।
উপদেষ্টা শারমীন মুরশিদ বলেন, আমরা যদি জলবায়ু পরিবর্তনকে প্রতিহত না করতে পারি তাহলে এই পরিবর্তন এই সভ্যতাকে ধ্বংস করে দেবে। আমরা যে সভ্যতা গড়ে তুলেছি তা অত্যন্ত সংকটে নিমজ্জিত। জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় এই সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। এই সরকার চায় দেশটা যেন একটা সবুজ দেশ হয়। আমরা আইনের শাসন চাই। পরিবেশ, নদী রক্ষায় আইন প্রয়োগ করব। পরিবেশ ধ্বংস, মানুষ ধ্বংস, শিশু ধ্বংস সবকিছুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমরা প্রতিশ্রুতিবন্ধ। জুলাই অভ্যুত্থান আমাদের এই শিক্ষাই দিয়েছে।
আরও পড়ুন: গাজায় সাহায্য ও ইউক্রেন যুদ্ধ সমাধানের আহ্বান জি২০ সম্মেলনে
উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন আমরাদের কৃষি, খাদ্য এবং জীবন-জীবিকাকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করছে। আমরা দেখেছি এবার ইলিশ মাছের ডিম কম এসেছে। এর পেছনে কারণ হিসাবে দেখা গেছে সময়মতো বৃষ্টি হয়নি। নদীগুলো ভরাট-দখল হয়ে যাওয়ার ফলে মাছের চলাচলের রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। হাওরের ভেতর দিয়ে রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। প্রয়োজনে এই রাস্তাগুলো আমাদের ভাঙতে হবে। ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রোডাকশনের চেয়ে আমাদেরকে কৃষির দিকে গুরুত্ব দিতে হবে। তাহলে এগুলো আমাদের খাদ্য সংকট মোকাবিলায় ভূমিকা রাখবে। জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার আমাদের জন্য ক্ষতিই বয়ে আনবে। তাই অবশ্যই টেকসই ভবিষ্যতের জন্য আমাদেরকে অবশ্যই নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে রূপান্তর করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, এরই মধ্যে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় শীর্ষে এবং এর জন্য আমাদের কোনো দায় নেই। পশ্চিমা এবং উন্নত দেশগুলো জলবায়ু উষ্ণায়নের জন্য দায়ী। যেসকল দায়ী দেশগুলো উষ্ণায়নে ভূমিকা রাখছে তাদেরকেই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আমাদেরকে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো বন্ধ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে রূপান্তরের ব্যবস্থা নিতে হবে।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপক লিডি ন্যাকপিল বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন কৃষি এবং খাদ্যকে প্রভাবিত করছে যা অর্থনৈতিক চাপ তৈরি করছে পৃথিবীর দক্ষিণের দেশগুলোতে। আমরা বিশ্বব্যাপী জলবায়ু সমস্যার সমাধানের জন্য চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছি। জলবায়ুর পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় তহবিল জরুরি। কপ ২৯ এই তহবিল আদায়ে জন্য ব্যর্থ হয়েছে। এই তহবিল তৈরির জন্য আমাদেরকে অনেক শক্তিশালী হয়ে কাজ করতে হবে।
তারা ফাউন্ডেশনের ডেপুটি রিজনাল প্রোগ্রাম ডাইরেক্টর কাইনান হগটন বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নতুন যে জ্বালানি নীতি গ্রহণ করছে তা অবশ্যই আশাব্যঞ্জক। টেকসই ভবিষ্যতের জন্য বাংলাদেশকে অবশ্যই পরিচ্ছন্ন জ্বালানিতে রূপান্তরিত হতে হবে। এর জন্য জীবশ্ম জ্বালানির পরিবর্তে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে রূপান্তর করতে হবে। আমরা এই জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পেরে আনন্দিত।
আরও পড়ুন: জি-২০ সামাজিক সম্মেলনে টেকসই উন্নয়নের অগ্রগতির প্রতিশ্রুতি তুলে ধরেন অধ্যাপক ইউনূস
২ সপ্তাহ আগে
কপ-২৯: জলবায়ু সংলাপের অগ্রভাগে বাংলাদেশের তরুণ নেতারা
আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে জাতিসংঘের ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (ইউএনএফসিসিসি) কপ২৯-এর জন্য বৈশ্বিক নেতারা জড়ো হওয়ার পাশাপাশি তরুণ নেতা, নীতিনির্ধারক এবং জলবায়ু সমর্থকদের মধ্যে ‘জলবায়ু পরিবর্তন’ একটি শক্তিশালী আলোচনার বিষয় হয়ে উঠছে।
কপ-২৯ পূর্ববর্তী 'ইয়ুথ অ্যাজ এজেন্ট অব চেঞ্জ' শীর্ষক একটি গুরুত্বপূর্ণ গোলটেবিল বৈঠকে যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশের তরুণ জলবায়ু কর্মীরা। তারা ইউরোপীয় ইউনিয়ন, সুইডেন এবং অন্যান্য টিম ইউরোপ সদস্যদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মত বিনিময়, সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপের প্রস্তাব দেওয়াসহ জলবায়ু নীতিতে জরুরি অগ্রগতির দাবি জানাবে।
জলবায়ু মোকাবিলায় বাংলাদেশের তারুণ্যের কণ্ঠস্বর
নিজ দেশ যে জলবায়ু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি এবং সেগুলোর মোকাবিলার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলোর বিষয়ে জোরালোভাবে কপ-২৯ পূর্ববর্তী সংলাপে তুলে ধরেন বাংলাদেশের তরুণ নেতারা।
বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে থাকায় তরুণ নেতারা জলবায়ু অভিযোজন, অর্থায়ন এবং জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে উত্তরণসহ গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলোতে মনোনিবেশ করেছেন।
গোলটেবিল বৈঠকে তরুণ প্রতিনিধিরা বেশ কিছু সুপারিশ করেন। এর মধ্যে আরও উচ্চাভিলাষী নির্গমন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের জন্য জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদান (এনডিসি) বাড়ানো এবং টেকসই শক্তির জন্য দীর্ঘমেয়াদি কৌশল প্রণয়ন অন্তর্ভুক্ত ছিল।
আরও পড়ুন: কপ২৯: আজারবাইজানের পথে প্রধান উপদেষ্টা
বাংলাদেশি তরুণ জলবায়ু কর্মী রিনা আহমেদ বলেন, 'আমরা এমন একটি ভবিষ্যৎ চাই, যেখানে আমাদের সম্প্রদায়গুলো স্বাভাবিক অবস্থায় থাকবে, জাতীয় নীতি গঠনে আমাদের আহ্বানগুলো থাকবে এবং আমাদের জলবায়ু অভিযোজন পদক্ষেপগুলো সামনের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় যথেষ্ট শক্তিশালী হবে।’
জলবায়ু পরিবর্তন: জরুরি সংকট
গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের কারণে ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা সংকটজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে উল্লেখ করে জলবায়ু বিজ্ঞানী ড. মোহাম্মদ রহমান বলেন, ‘২০২৩ সাল ছিল সবচেয়ে উষ্ণতম বছর।’
তিনি আরও বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন শুধু উষ্ণায়ন নয়, বরং এটি খরাকে তীব্রতর করছে, বন্যা বাড়াচ্ছে, জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করছে এবং বিশ্বব্যাপী ঝড়কে আরও খারাপ করছে। বাংলাদেশের মতো দেশে এর প্রভাব আরও বেড়েছে ‘
অভিযোজন, প্রশমন এবং সমর্থন
গোলটেবিল বৈঠকে জলবায়ু কর্মকাণ্ডের জন্য দুটি প্রধান উপায়ের রূপরেখা দেওয়া হয়েছে-
জলবায়ু অভিযোজন: জলবায়ুর প্রভাব মোকাবিলায় সম্প্রদায়গুলোকে প্রস্তুত করা। বাংলাদেশের জন্য এর মধ্যে রয়েছে সমুদ্র প্রাচীরের মতো অবকাঠামো নির্মাণ এবং চরম আবহাওয়া সহনশীল কৃষি পদ্ধতির প্রসার ঘটানো।
জলবায়ু প্রশমন: নবায়ণযোগ্য জ্বালানি গ্রহণ, জ্বালানি দক্ষতা উন্নত করা এবং জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভরতা কমানোসহ গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাস করা।
অভিযোজন এবং প্রশমনের সমন্বয়ে একটি বিস্তৃত পদ্ধতি গুরুত্বপূর্ণ বলে জোর দেন এই তরুণ নেতারা।
সুইডেনের জলবায়ু দূত মায়া সোভেনসন বলেন, 'জলবায়ু অভিযোজনের জন্য আমাদের সমর্থন অবশ্যই এই মুহুর্তে জরুরিভিত্তিতে পূরণ করতে হবে। মারাত্মক জলবায়ুর প্রভাবের মুখোমুখি দেশগুলোর ভবিষ্যত সুরক্ষিত করতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অপরিহার্য।’
ইউরোপ দলের ভূমিকা
আরেকটি মূল বিষয় আলোচনা হয়। আর তা হলো ইউরোপীয় ইউনিয়নের কার্বন বর্ডার অ্যাডজাস্টমেন্ট মেকানিজম (সিবিএএম), যা ২০২৬ সালে কার্যকর হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই উদ্যোগটি কার্বন নিঃসরণ কমাতে এবং বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পদক্ষেপকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে কম কঠোর জলবায়ু নীতিযুক্ত দেশগুলো থেকে আমদানিতে কার্বন মূল্য প্রয়োগ করবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের জলবায়ু উপদেষ্টা মার্গারেটা নিলসন বলেছেন, ‘সিবিএএম দেশগুলোকে তাদের নির্গমনের জন্য দায়বদ্ধ রাখতে এবং বিশ্ব বাজারে একটি সমান ক্ষেত্র তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’
আরও পড়ুন: কপ-২৯ সম্মেলনে যোগ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা
কপ২৯’র বাইরে
জলবায়ু আলোচনা অব্যাহত থাকায় সংস্থাগুলো নির্গমন কমানো এবং জলবায়ু-ইতিবাচক উদ্যোগ উভয়ই অনুসরণে উৎসাহিত করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, জলবায়ু-ইতিবাচক প্রচেষ্টার লক্ষ্য কেবল কার্বন নিরপেক্ষতা অর্জন করা নয়, বরং বায়ুমণ্ডল থেকে অতিরিক্ত সিও২ অপসারণ করা।
বাংলাদেশসহ টেকসই নেতাদের জন্য জলবায়ু পদক্ষেপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যুব নেতাদের এসব উদ্যোগ স্থানীয় সম্প্রদায়কে একত্রিত করছে এবং আন্তর্জাতিক পদক্ষেপকে অনুপ্রাণিত করছে।
নির্গমন কমানো, অভিযোজন এবং সবুজ শক্তি রূপান্তরের জন্য ব্যাপক পরিষেবাগুলোর গুরুত্বকেও জোর দিয়ে আসছে পরিবেশগত পরীক্ষা এবং ছাড়পত্র প্রদানকারী একটি বৈশ্বিক সংস্থা এসজিএস। সংস্থার পরিষেবাগুলো জিএইচজি নির্গমন পরামর্শ থেকে শুরু করে কার্বন নিরপেক্ষতা যাচাইকরণ পর্যন্ত বিস্তৃত। বেসরকারি এবং সরকারি উভয় খাতের নেতৃত্বকে সমর্থন করে।
তরুণদের নেতৃত্বে বৈশ্বিক আন্দোলন
কপ২৯ গোলটেবিল বৈঠকে জোর দিয়ে বলা হয়, জলবায়ু কর্মকাণ্ডে তরুণদের সম্পৃক্ততা নিছক প্রতীকী নয়। বরং এটি একটি প্রাণোচ্ছল এবং টেকসই ভবিষ্যত অর্জনের জন্য অপরিহার্য। টিম ইউরোপের সহযোগিতায় বাংলাদেশি তরুণ জলবায়ু নেতারা কার্যকর কৌশল এবং জবাবদিহিতার জন্য চাপ দিচ্ছেন। তাদের বার্তা পরিষ্কার: রূপান্তরমূলক পদক্ষেপের এখনই সময়।
বাকুতে কপ২৯ সম্মেলন যখন শুরু হচ্ছে, তখন এটা স্পষ্ট যে, আজকের তরুণরা কেবল জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত নয়, বরং পরিবর্তনের কঠোর সমর্থকও। বিশ্ব সম্প্রদায় শুনছে, এবং এটি এই প্রজন্মের প্রতিশ্রুতি এবং প্রচেষ্টা যা অবশেষে জলবায়ু পরিবর্তনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে।
আরও পড়ুন: কপ-২৯ সম্মেলনের আগে জলবায়ু ন্যায্যতার দাবিতে যুববন্ধন
১ মাস আগে
জলবায়ু ন্যায়বিচার নিশ্চিতে বৈশ্বিক সহযোগিতার বাড়ানোর আহ্বান পরিবেশমন্ত্রীর
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিবাসন ও পরিবেশগত অবনতির জটিল সমস্যা মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও সংহতির গুরুত্ব তুলে ধরে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, বৈশ্বিক জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় জলবায়ু ন্যায়বিচার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বেলজিয়ামের লিজ শহরে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৯ জুলাই) সন্ধ্যায় এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ক্লাইমেট মোবিলিটিস নেটওয়ার্কের (ইসিএমএন) দ্বিতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে ‘কলোনাইজিং দ্য ফিউচার: ক্লাইমেট জাস্টিস, ডেমোক্রেসি অ্যান্ড মাইগ্রেশন গভর্ন্যান্স’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় এসব কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: পরিবেশমন্ত্রীর সঙ্গে এডিবির ভাইস প্রেসিডেন্টের সাক্ষাৎ, জলবায়ু সহযোগিতা জোরদারের আশা
জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি মোকাবিলায় বাংলাদেশের গৃহীত পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ অন্যতম কম কার্বন নিঃসরণকারী দেশগুলোর মধ্যে একটি হলেও এটি বিশ্বের অন্যতম জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশ। জলবায়ু পরিবর্তন বাংলাদেশের অস্তিত্বের জন্য একটি হুমকি। এই শতাব্দীর শেষ নাগাদ সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ার কারণে ১৭ শতাংশ উপকূলীয় এলাকা তলিয়ে যেতে পারে এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা এক মিটার বাড়লে ৪০ মিলিয়ন মানুষ বাস্তুচ্যুত হতে পারে।
কপ আলোচনায় বাংলাদেশের প্রথম সারির ভূমিকা, বিশেষ করে ক্ষয়-ক্ষতি মোকাবিলার বিষয়ে প্রশংসা করেন প্যানেলিস্টরা। বৈশ্বিক আর্থিক ও গভর্নিং মেকানিজমের সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার বিষয়েও কথা বলেন তারা।
এছাড়াও উত্তর-দক্ষিণ বিভাজন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় আরও অর্থপূর্ণ পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা, আস্থা পুনর্গঠন এবং একটি ন্যায্য, আরও গণতান্ত্রিক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক আন্তর্জাতিক শাসনের কথা তুলে ধরেন প্যানেলিস্টরা।
বেলজিয়ামের রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও গবেষক ফ্রাঁসোয়া গেমেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে ইতিহাসবিদ এবং লেখক ডেভিড ভ্যান রেইব্রুক মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের মহাসচিব ও মালদ্বীপের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদ প্যানেলিস্ট হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
এছাড়াও প্যানেলিস্টদের মধ্যে ছিলেন স্যান্ড্রিন ডিক্সন-ডেক্লেভ, ক্লাব অব রোমের সহসভাপতি এবং আর্থ ৪অল-এর নির্বাহী পরিচালক এবং সেন্ট্রাল ইউরোপের ইনস্টিটিউটের পরিচালক ক্যাটারিনা সেফালভায়োভা।
অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন- বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও ইইউতে মিশন প্রধান মাহবুব হাসান সালেহসহ দূতাবাসের অন্যান্য কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: জলবায়ু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে ফ্রান্স-বাংলাদেশ অভিযোজন চুক্তি: পরিবেশমন্ত্রী
বাসযোগ্য পৃথিবী নিশ্চিতে পরিবেশ রক্ষায় কাজ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
৫ মাস আগে
জলবায়ু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে ফ্রান্স-বাংলাদেশ অভিযোজন চুক্তি: পরিবেশমন্ত্রী
জলবায়ু পরিবর্তনের জরুরি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য ফ্রান্স-বাংলাদেশ অভিযোজন চুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী।
তিনি আরও বলেন, এ যৌথ উদ্যোগ বাংলাদেশের অভিযোজন কৌশলকে ত্বরান্বিত করার পাশাপাশি জলবায়ু সহনশীল প্রকল্পগুলোর জন্য অতিরিক্ত তহবিল নিশ্চিত করবে।
আরও পড়ুন: বাসযোগ্য পৃথিবী নিশ্চিতে পরিবেশ রক্ষায় কাজ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
রবিবার (৭ জুলাই) মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ চুক্তি নিয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত ম্যারি মাসদুপুইয়ের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠককালে এসব কথা বলেন পরিবেশমন্ত্রী।
বৈঠকে ফ্রান্স-বাংলাদেশ অভিযোজন চুক্তি চূড়ান্তকরণে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। মন্ত্রণালয়ের পক্ষে জাতীয় অগ্রাধিকারগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বরাদ্দ বিভাজনের অনুরোধ জানানো হয়। বাস্তবায়ন পর্যায়ে বাংলাদেশের জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ করার ইচ্ছা প্রকাশ করে ফরাসি প্রতিনিধি দল।
চুক্তির সময়সীমা সেপ্টেম্বর ২০২৩ থেকে আগস্ট ২০২৮ পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে।
আলোচনায় একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যযুক্ত সক্ষমতা বৃদ্ধি প্রোগ্রামের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
২০২৪ সালের জন্য ৪ মিলিয়ন ইউরোর প্রথম কিস্তি নিশ্চিত করতে ফরাসি উন্নয়ন সংস্থা মন্ত্রণালয়কে আনুষ্ঠানিক প্রকল্প জমা দেওয়ার অনুরোধ করে। প্রাথমিক তহবিল পেতে ন্যাপের 'ইকোসিস্টেম, ওয়েটল্যান্ড ও জীববৈচিত্র্য' খাতের অধীনে প্রকল্প ধারণা জমা দেবে মন্ত্রণালয়।
বৈঠকে সুন্দরবন পুনরুদ্ধার ও সুরক্ষার লক্ষ্যে প্রকল্পগুলোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়, যার মধ্যে রয়েছে ম্যানগ্রোভ রোপণ এবং কমিউনিটিভিত্তিক বন অগ্নি ব্যবস্থাপনা।
এছাড়াও, ফরাসি উন্নয়ন সংস্থার মাধ্যমে ৩০০ মিলিয়ন ইউরোর জলবায়ু নীতি ঋণ সহায়তা দিচ্ছে ফরাসি সরকার।
বৈঠকে ছিলেন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মো. মোশাররফ হোসেন, অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ) ড. ফাহমিদা খানম, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবদুল হামিদ, যুগ্মসচিব (উন্নয়ন) লুবনা ইয়াসমিন এবং ফরাসি উন্নয়ন সংস্থার ভারপ্রাপ্ত পরিচালক সিসিলিয়া কর্টেজসহ মন্ত্রণালয় ও ফ্রান্সের দূতাবাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: পরিবেশমন্ত্রীর সঙ্গে এডিবির ভাইস প্রেসিডেন্টের সাক্ষাৎ, জলবায়ু সহযোগিতা জোরদারের আশা
পরিবেশমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে কানাডার হাইকমিশনারের সাক্ষাৎ
৫ মাস আগে
‘জলবায়ু কর্ম পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ৮৭৬ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন’
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশের জলবায়ু কর্ম পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ৮৭৬ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
শনিবার (১ জুন) সাভারের ব্র্যাক সিডিএমে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ আয়োজিত ‘ক্লাইমেট ফাইন্যান্স এক্সেস অ্যান্ড মোবিলাইজেশন ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, দেশের জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা (ন্যাপ) ২০৫০ সালের মধ্যে অভিযোজনের জন্য ২৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ প্রয়োজন। এছাড়াও, জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদান (এনডিসি) বাস্তবায়নের জন্য ১৭৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হলে এর পরিণতি ভয়াবহ হবে: পরিবেশমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা (এমসিপিপি) ও বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২ হাজার ১০০ জন্য চিহ্নিত অগ্রাধিকার প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের জন্য ৪৭১ দশমিক ৭২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন। এলক্ষ্যে উন্নয়ন অংশীদারদের মধ্যে সমন্বয়ের জন্য সরকার বাংলাদেশ জলবায়ু উন্নয়ন অংশীদারিত্ব গঠন করেছে।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন শুধু একটি পরিবেশগত বিষয় নয়; এটি একটি অর্থনৈতিক, সামাজিক ও উন্নয়নমূলক বিষয় যা আমাদের সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রকে প্রভাবিত করে। জলবায়ু অর্থায়ন সংগ্রহ আমাদের নিম্ন-কার্বন, জলবায়ু-সহনশীল অর্থনীতিতে রূপান্তরকে সমর্থন করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, আমাদের বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ, আন্তর্জাতিক জলবায়ু তহবিল ও উদ্ভাবনী অর্থায়ন ব্যবস্থাকে কাজে লাগাতে হবে। আমাদের শক্তিশালী প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো গড়ে তুলতে হবে এবং জলবায়ু অর্থায়নে প্রবেশাধিকার, ব্যবস্থাপনা ও ব্যবহার কার্যকর করার জন্য আমাদের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বাড়াতে হবে।
সাবের হোসেন আরও বলেন, উন্নত দেশগুলোর নৈতিক ও আইনগত দায়িত্ব রয়েছে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে তাদের জলবায়ু কর্মে সহায়তা করার। আমরা আমাদের আন্তর্জাতিক অংশীদারদের তাদের প্রতিশ্রুতিগুলো সম্মান করতে এবং পর্যাপ্ত আর্থিক সহায়তা করার আহ্বান জানাই।
তিনি বলেন, একই সময়ে, আমাদের সবুজ বন্ড, জলবায়ু বিমা ও পাবলিক-প্রাইভেট অংশীদারিত্বের মতো উদ্ভাবনী অর্থায়নের উৎসগুলোও অন্বেষণ করতে হবে। আসুন আমরা প্রয়োজনীয় সম্পদ সংগ্রহ করতে, রূপান্তরমূলক কর্ম বাস্তবায়ন করতে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি ভালো, নিরাপদ ও টেকসই বিশ্ব গড়ে তুলতে একসঙ্গে কাজ করি।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী, সুইডেনের দূতাবাসের উন্নয়ন সহযোগিতার উপপ্রধান নায়োকা মার্টিনেজ-ব্যাকস্ট্রোম, ব্রিটিশ হাইকমিশনের ডেপুটি হাইকমিশনার ও উন্নয়ন পরিচালক ম্যাট ক্যানেল, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিন্টিং এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির বাংলাদেশস্থ প্রতিনিধি স্টেফান লিলার।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিশ্বকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় নিরলসভাবে কাজ করতে আহ্বান পরিবেশমন্ত্রীর
৬ মাস আগে
জলবায়ু সহনশীলতা জোরদারে ইউএনডিপির সঙ্গে ফ্রান্সের ১.২ মিলিয়ন ইউরোর চুক্তি
জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলা করতে 'ইনক্লুসিভ বাজেটিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিং ফর ক্লাইমেট রিজিলিয়েন্স প্রজেক্ট (আইবিএফসিআর)' প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্বে ১.২ মিলিয়ন ইউরোর চুক্তি সই করেছে ফরাসি উন্নয়ন সংস্থা (এএফডি) এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)।
এই ১.২ মিলিয়ন ইউরোর অনুদান বাংলাদেশে এএফডি’র ৩০০ মিলিয়ন ইউরোর জলবায়ু নীতিকেন্দ্রিক ঋণ প্রকল্পকে জোরদার করবে।
ঢাকায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের মিলনায়তনে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার এবং এএফডির ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর সিসিলিয়া কর্টেস।
এ সময় আরও ছিলেন ফ্রান্স দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত মেরি মাসদুপুই, বাংলাদেশ সরকারের অর্থ বিভাগের সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার এবং অতিরিক্ত সচিব সিরাজুন নূর চৌধুরী।
আরও পড়ুন: জ্বালানি খাতে সবুজ রূপান্তর সংলাপে ইউএনডিপির শুভেচ্ছাদূত
বাংলাদেশের অর্থ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে পরিচালিত এই কারিগরি সহযোগিতা চুক্তির লক্ষ্য হলো জলবায়ু-সংবেদনশীল কৌশলগত পরিকল্পনা এবং তহবিল ব্যবস্থাপনা প্রণয়ন, জলবায়ু-সংক্রান্ত সরকারি অর্থায়নের সুনিয়ন্ত্রিত পরিচালনা এবং স্থানীয় পর্যায়ে জলবায়ু অর্থায়নের জন্য আরও কার্যকর পরিকল্পনা এবং বাজেট প্রণয়ন।
ক্লাইমেট ফিসকেল ফ্রেমওয়ার্ককে (সিএফএফ) ঘিরে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ইউএনডিপির পূর্ববর্তী কার্যক্রম এবং আইবিএফসিআর প্রকল্পের প্রথম পর্বটি জলবায়ু-সংবেদনশীল সরকারি অর্থায়নের (ক্লাইমেট সেন্সেটিভেটি পাবলিক ফাইন্যান্স) ভিত্তি প্রস্তরের ভূমিকা পালন করেছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের লড়াইয়ে সহায়তা করতে এবং জাতীয় পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে টেকসই, স্বল্প-কার্বন নির্ভর উন্নয়নকে উৎসাহিত করতে আইবিএফসিআর প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্বে নীতিনির্ধারণী ও আর্থিক ব্যবস্থাপনায় জলবায়ু ইস্যুকে আরও গভীরভাবে একীভূত করা হবে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত ম্যারি মাসদুপুই বলেন, ‘বিশ্বের অন্যতম জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হওয়া সত্ত্বেও গত এক দশকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন ও দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশের সাফল্য অত্যন্ত প্রশংসনীয়। জলবায়ু পরিবর্তনের সর্বগ্রাসী প্রভাবের কারণে এই উল্লেখযোগ্য উন্নয়নও বিফলে চলে যাচ্ছে। অর্থনীতির প্রতিটি খাত জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে আক্রান্ত।’
তিনি আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের মানবিক অভিঘাতের দিক বিবেচনা করাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কেন না নারীরা, মেয়ে শিশুরা এবং সামাজিক-অর্থনৈতিকভাবে প্রান্তিক অবস্থায় থাকা অন্যান্য জনগোষ্ঠীগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের সামনে আরও বেশি অসহায়।
আরও পড়ুন: ১ বিলিয়ন ইউরোর জলবায়ু অভিযোজন চুক্তি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া জানিয়েছেন ফরাসি রাষ্ট্রদূত
এ প্রেক্ষাপটে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ইউএনডিপি বাংলাদেশের কাজ করার অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান জাতীয় ও স্থানীয় উভয় পর্যায়ে অন্তর্ভুক্তিমূলক জলবায়ু সম্পর্কিত সরকারি পরিকল্পনা প্রণয়ন, বাজেট প্রণয়ন এবং মনিটরিং জোরদারে সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন তিনি।
ফ্রান্স রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, এই অনুদান তহবিল চুক্তিটি (গ্রান্ট ফান্ডিং এগ্রিমেন্ট) একটি টেকসই এবং স্বল্প-কার্বনভিত্তিক উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাংলাদেশের পাশে থাকতে ফ্রান্সের দৃঢ় প্রতিশ্রুতিরই স্বাক্ষর বহন করে।”
স্টেফান লিলার বলেন, ‘জলবায়ু তথ্য নির্ভর সরকারি অর্থায়ন বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত জরুরি। জলবায়ুকে সরকারি অর্থায়নের ব্যবস্থাপনার প্রক্রিয়ায় মূলধারায় এনে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য সমৃদ্ধি অর্জন করেছে। বিভিন্ন পর্যায়ে জলবায়ু অর্থায়ন নিশ্চিত করতে জাতীয় বাজেট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ফরাসি উন্নয়ন সংস্থার সঙ্গে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে এই উদ্যোগ একটি অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে। এর ফলে সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনায় জলবায়ু পরিবর্তনের উপাদানগুলো আরও কার্যকরভাবে সংযোজিত হবে এবং একটি জলবায়ু সহনশীল অর্থনীতি প্রতিষ্ঠিত হবে বলে আশা করা যায়। আমরা এই গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়ার অংশ হতে পেরে আনন্দিত এবং বিশ্বব্যাপী ইউএনডিপির বিভিন্ন উদ্যোগে পাশে থাকার জন্য ফ্রান্সের প্রতি আমরা গভীরভাবে কৃতজ্ঞ।’
আরও পড়ুন: জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলা ও ক্ষুদ্র দ্বীপদেশগুলোর উন্নয়নে জোর আন্তর্জাতিক সহায়তার আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
৬ মাস আগে
কার্যকরী-গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজে আগ্রহী এডিবি: ভাইস প্রেসিডেন্ট ভার্গব দাশগুপ্ত
জলবায়ু ইস্যুতে বাংলাদেশ ও অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে একত্রে কাজ করতে এবং কার্যকরী ও গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলোতে অর্থায়ন বাড়িয়ে দিতে আগ্রহী এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
শুক্রবার (৩ মে) ইউএনবির সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন এডিবির ভাইস প্রেসিডেন্ট (মার্কেট সলিউশন) ভার্গব দাশগুপ্ত।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা অন্যান্য বেসরকারি খাতের বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে খুব প্রভাব বিস্তারকারী, খুব কার্যকরী এবং খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে অর্থায়ন করতে চাই।’
গত বছরের ৪ ডিসেম্বর দায়িত্ব নেওয়া দাশগুপ্ত বলেন, তাদের মতে জ্বালানির উৎসের বৈচিত্র্য আনতে বাংলাদেশের অনেক আগ্রহ রয়েছে।
তিনি বলেন, 'কীভাবে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে অংশীদারিত্ব এবং একসঙ্গে কাজ করতে পারি তা নিয়ে আমরা কাজ করছি।’
এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ব্যবসার ক্ষমতায়ন ও বিনিয়োগ উন্মুক্ত করা যায় এবং উন্নয়ন অগ্রাধিকারের অগ্রগতিতে সহায়তা করা যায় এমনভাবেই এডিবির বেসরকারি খাতের কার্যক্রমগুলো সাজানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে প্রবীণদের জন্য আরও বেশি বরাদ্দ দিতে জোর দিয়েছে এডিবি
গ্রাহকদের উদ্ভাবনমূলক সমাধান দেওয়ার মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন, খাদ্য নিরাপত্তা এবং লিঙ্গ সমতার মতো জটিল উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে সহযোগিতা করছে এডিবি।
দাশগুপ্ত এডিবির প্রাইভেট সেক্টর অপারেশনস ডিপার্টমেন্ট ও অফিস অব মার্কেটস ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন। এডিবি এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলোর সরকারগুলোর জন্য অন্যতম 'সম্মানিত ও বিশ্বস্ত' অংশীদার।
তিনি বলেন, ‘আমরা সব সময়ের মতো ভালো কাজগুলো অব্যাহত রাখার চেষ্টা করছি।’
এডিবি ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, তারা বেসরকারি খাতে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করছেন, তবে তাদের এই ভূমিকা আনুপাতিক হারে বাড়াতে হবে বলে।
এডিবি ২০২১ সালে তাদের জলবায়ু অর্থায়ন প্রকল্পে বিনিয়োগ ২০১৯ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার ঘোষণা দিয়েছিল। যার মধ্যে ক্রমবর্ধমান অভিযোজন ও স্থিতিস্থাপকতার জন্য ৩৪ বিলিয়ন ডলার এবং ক্রমবর্ধমান প্রশমনে ৬৬ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দিয়েছিল।
এডিবি ২০৩০ সালের মধ্যে বেসরকারি খাতে জলবায়ু অর্থায়নে ১২ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে চায়। পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবে টেকসই ও জলবায়ুবান্ধব ব্যবসা বিকাশে সহায়তা করতে অতিরিক্ত ১৮ থেকে ৩০ বিলিয়ন ডলার জমা করতে চায়।
২০২২ সালে এডিবি নিজস্ব সম্পদ থেকে ৬ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার জলবায়ু অর্থায়নে দিয়েছে, যার মধ্যে ২ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার অভিযোজন ও স্থিতিস্থাপকতা এবং ৪ বিলিয়ন ডলার প্রশমন বিষয়ে।
আরও পড়ুন: এডিবির বার্ষিক সভা: এডিবি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে অর্থমন্ত্রীর বৈঠক
এডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, তাদের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে নেট জিরো লক্ষ্য অর্জনে এশিয়ার ১ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন ডলার প্রয়োজন।
বেসরকারি খাতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পৃক্ততার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের পাবনায় ১০০ মেগাওয়াট গ্রিড-সংযুক্ত সোলার ফটোভোলটাইক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ ও পরিচালনার জন্য এডিবি গত মাসে ডায়নামিক সান এনার্জি প্রাইভেট লিমিটেডের সঙ্গে ১২ কোটি ১৫ লাখ ৫০ হাজার ডলারের একটি অর্থায়ন প্রকল্প সই করেছে।
বৈশ্বিক অর্থায়নকারীদের সহায়তায় এটি দেশের প্রথম বেসরকারি খাতের ইউটিলিটি-স্কেল সোলার ফ্যাসিলিটি।
এডিবি একমাত্র সমন্বয়কারী ও ব্যবস্থাপক হিসেবে এই ঋণ প্রকল্প সাজানো, কাঠামো তৈরি ও নিয়ন্ত্রণ করছে।
এই অর্থায়ন প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে- এডিবি থেকে ৪ কোটি ৬৭ লাখ ৫০ হাজার ডলার ঋণ, এডিবির রেকর্ড ঋণদাতা হিসেবে এডিবির সঙ্গে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়তাকারী আমস্টারডামভিত্তিক ইমার্জিং মার্কেট প্রাইভেট ক্রেডিট ফান্ড আইএলএক্স ফান্ড আই থেকে ২ কোটি ৮০ লাখ ৫০ হাজার ডলারের একটি সিন্ডিকেটেড বি-ঋণ এবং জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) ৪ কোটি ৬৭ লাখ ৫০ হাজার ডলারের সিন্ডিকেটেড সমান্তরাল ঋণ।
এডিবির প্রাইভেট সেক্টর অপারেশনস ডিপার্টমেন্টের মহাপরিচালক সুজান গ্যাবৌরি বলেন, ‘এশিয়ার জলবায়ু ব্যাংক হিসেবে এডিবি বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে সহায়তা করার সুযোগ সাদরে গ্রহণ করছে, যেখানে এ ধরনের প্রকল্পের জন্য দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়ন পাওয়া একটি চ্যালেঞ্জ।’
তিনি আরও বলেন, ‘ক্লিন এনার্জি সুবিধাগুলোর জন্য অর্থায়ন জোগাড় করতে এবং যেখানে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সেখানে বিনিয়োগ বাড়াতে উৎসাহিত করতে এই অংশীদারিত্ব আমাদের ভূমিকাকে তুলে ধরবে।’
সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বার্ষিক ঘণ্টায় ১৯৩.৫ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে এবং বার্ষিক ৯৩ হাজার ৬৫৪ টন কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন এড়াবে।
আরও পড়ুন: আগামী ২ বছর উন্নয়নশীল এশীয় অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ৪.৯ শতাংশ থাকার আশা এডিবি প্রেসিডেন্টের
৭ মাস আগে
জলবায়ু অভিযোজনের জন্য সরকার প্রতি বছর ৩.৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করছে: পরিবেশমন্ত্রী
সরকার জলবায়ু অভিযোজন কর্মকাণ্ডের জন্য প্রতি বছর ৩.৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে অভিযোজন কার্যক্রমের জন্য বছরে ৯ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন, তাই অতিরিক্ত অর্থ আমাদের সংগ্রহ করতে হবে।
এ ক্ষেত্রে সরকার, এনজিও ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন অংশীদারদের মধ্যে সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন সাবের হোসেন চৌধুরী।
রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে যুক্তরাজ্য সরকারের পররাষ্ট্র, কমনওয়েলথ এবং উন্নয়ন অফিসের (এফসিডিও) প্রকৃতিভিত্তিক অভিযোজন প্রতি সমৃদ্ধ ও দক্ষ জীবনধারা এবং জীবিকা বাংলাদেশ (নব্পল্লব) প্রকল্প উদ্বোধন করার সময় এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বন্যপ্রাণী পাচার-শিকার রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে: পরিবেশমন্ত্রী
মন্ত্রী সাবের চৌধুরী জানান, বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন এবং পাখি ও মাছের প্রজননক্ষেত্র হাকালুকি হাওরের মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এলাকা রক্ষায় কাজ করা হবে। আয় বৃদ্ধির কৌশল এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রশিক্ষণ প্রদানের পাশাপাশি এই এলাকাগুলোতে চ্যালেঞ্জ কমাতে আশেপাশের সম্প্রদায়ের সঙ্গে সহযোগিতা করা হবে।
পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তিতে প্রশিক্ষণ দেওয়া, সম্পদ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি উন্নীতকরণ এবং সহনশীল ফসল এবং জলবায়ু-প্রতিরোধীর মতো সমাধানগুলো চালু করার ক্ষেত্রে জড়িত করা হবে।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশে সহযোগিতা বাড়াবে এডিবি: পরিবেশমন্ত্রী
বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ) ড. ফাহমিদা খানম, কেয়ার এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক রমেশ সিং, প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমির হোসাইন চৌধুরী, জলবায়ু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আইনুন নিশাত এবং নবপল্লবের চিফ অব পার্টি সেলিনা শেলী খান অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে দাতা সংস্থা প্রতিনিধি, অতিথি ও বাংলাদেশের পরিবেশ রক্ষায় কর্মরত কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: নদীর দখল ও দূষণমুক্ত করতে একযোগে কাজ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
৮ মাস আগে
জলবায়ু সহনশীল ফসল উদ্ভাবনে গবেষণায় গুরুত্বারোপ বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্যের অধ্যাপকদের
জলবায়ু পরিবৃর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় জলবায়ু সহনশীল ফসল উৎপাদনে অধিকতর গবেষণা এবং প্রচলিত ফসলের বিকল্প শস্য চাষের উপর গুরুত্বারোপ করেছেন বক্তারা।
যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব সালফোর্ড এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্বব্যিালয়ের (বাকৃবি) মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের যৌথ উদ্যোগে কৃষিতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাববিষয়ক একটি সেমিনারে তারা এসব সুপারিশ করেন।
শনিবার (৯ মার্চ) বাকৃবির কৃষি অনুষদের সম্মেলনকক্ষে সকাল সাড়ে ১০টায় ‘খাদ্য নিরাপত্তা, অর্থনীতি ও জনসাধারণের জীবিকার উপর জলবায়ুর প্রভাব’ শীর্ষক সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারে বাংলাদেশের বরেন্দ্র অঞ্চলের প্রাকৃতিক ক্ষয়ক্ষতি কমানো ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট প্রভাবের প্রতিকূলতা কাটিয়ে উঠার উপায় অন্বেষণে গুরুত্বারোপ করেন দুই দেশের অধ্যাপকেরা।
সেমিনারে যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব সালফোর্ডের অধ্যাপক বিঙ্গুনাথ ইনগিরিগে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন কেবল একটি নির্দিষ্ট দেশের সমস্যা নয়। এটি একটি আন্তর্জাতিক সমস্যা।
তিনি আরও বলেন, যদি একটি দেশও জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী হয় এর প্রভাবে বিশ্বের প্রতিটি দেশকেই ভুগতে হবে।
আরও পড়ুন: বাকৃবিতে এনএসটির অর্থায়নে বিটরুট গবেষণায় দ্বিগুণ ফলন
এসময় তিনি জলবায়ুর পরিবর্তনে কৃষিতে বন্যা, খরা, ঘূর্ণিঝড় ও ভূমিধসের প্রভাব আলোচনা করেন।
কৃষিতে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে জীবিকার প্রভাব সম্পর্কে তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কৃষি উৎপাদন যেমন কমেছে, দারিদ্র্যের হারও বেড়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঋতুর পরিবর্তন ঘটেছে।
এ কারণে উচ্চ ফলনশীল কিছু কিছু ফসল উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে, যা দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর কৃষকদের জীবিকা ও অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে।
দেশের কৃষিতে জলবায়ুর প্রভাব কমানো ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার উপায় সম্পর্কে এ অধ্যাপক বলেন, প্রচলিত সেচ ব্যবস্থা সম্প্রসারণের পাশাপাশি ফসল রোপণ এবং কাটার সময়কাল জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে। জলবায়ু সহনশীল ফসল উদ্ভাবনে অধিক গবেষণা করতে হবে এবং প্রচলিত ফসলের বিকল্প ফসল চাষ করতে হবে।
সেমিনারের এক পর্যায়ে পর্যায়ে উন্মুক্ত প্রশ্নোত্তর পর্বের আয়োজন করা হয়।
এ পর্বে বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষিতে নদীর ভূমিকা, উচ্চ ফলনশীল ও রপ্তানিযোগ্য কৃষি পণ্য উৎপাদনে গুরুত্বারোপ, চাষাবাদে অল্প পানি ব্যবহারে উচ্চ ফলন ও ভূগর্ভস্থ পানির উপর চাপ কমানোর উপায়, স্বল্প সময়ে ফলন পাওয়া যায় এমন ফসল উৎপাদনে জোর দেওয়া, কৃষি উৎপাদনে জ্বালানির প্রভাব কমিয়ে সৌরশক্তির ব্যবহার, কৃষকদের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধি, জলবায়ু পরিবর্তনে কৃষকদের শহরমুখী হওয়ার কারণ এবং কৃষি উন্নয়নে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও এনজিওর ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করা হয়।
এছাড়া সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন- কৃষি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. গোলাম রাব্বানী, মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল আবেদীন, মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. শফিকুল ইসলামসহ বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষক ও স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুন: বাকৃবিতে তিন দেশের সাংস্কৃতিক বিনিময় অনুষ্ঠিত
দেশে কম খরচে ও স্বল্প সময়ে গবাদিপশুর নির্ভুল রোগ নির্ণয় পদ্ধতি উদ্ভাবনের দাবি বাকৃবি অধ্যাপকের
৯ মাস আগে
জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে গ্রামীণ নারী, দরিদ্র ও বয়স্কদের ওপর অসামঞ্জস্যপূর্ণ প্রভাব পড়ছে: এফএও
নারী কৃষক, দরিদ্র মানুষ এবং বয়স্ক জনগোষ্ঠী জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকেন এবং তাদের চাহিদার জন্য লক্ষ্যযুক্ত ব্যবস্থা প্রয়োজন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)।
মঙ্গলবার (৬ মার্চ) প্রকাশিত সংস্থাটির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
আরও পড়ুন: দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের আন্তঃসম্পর্ক জোরদারে এফএও মহাপরিচালকের গুরুত্বারোপ
‘আনজাস্ট ক্লাইমেট’ শীর্ষক গবেষণায় দেখা গেছে- চরম আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার অসম ক্ষমতার কারণে কিছু সামাজিক গোষ্ঠী জলবায়ু সম্পর্কিত আয়ের বৈষম্যের কারণে অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে প্রভাবিত হয়।
আটজন বিশেষজ্ঞ এবং বিভিন্ন পরামর্শকের একটি দল দুই বছর ধরে পরিচালিত এই গবেষণায় ২৪টি নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশের এক লাখ ৯ হাজার গ্রামীণ পরিবারের আর্থ-সামাজিক তথ্য সংগ্রহ করে। যা ৯৫০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে।
গবেষণাটি অনুসারে, গড় তাপমাত্রা যদি মাত্র এক ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়ে, তাহলে পুরুষের তুলনায় গ্রামীণ নারীরা তাদের মোট আয়ের ৩৪ শতাংশ বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।
দরিদ্র পরিবারের ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা তাদের জলবায়ু-সংবেদনশীল কৃষির ওপর আরও বেশি নির্ভরশীল করে তোলে এবং বন্যার সঙ্গে তারা গড়ে অ-দরিদ্র পরিবারের তুলনায় তাদের মোটের ৪ দশমিক শতাংশ হারাবে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে বন্যা কবলিত কৃষকদের মাঝে কৃষি উপকরণ বিতরণ করল এফএও
লিঙ্গ, সম্পদ ও বয়স অনুসারে শ্রেণিবদ্ধ করা এই গবেষণার লক্ষ্য হলো- ক্ষতিগ্রস্থ গোষ্ঠীর বিভিন্ন চাহিদা মোকাবিলার জন্য উপযুক্ত প্রতিক্রিয়া বিকাশে দেশগুলোকে গাইড করা।
এফএও'র জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ ও প্রতিবেদনের প্রধান লেখক নিকোলাস সিটকো সিনহুয়াকে বলেন, ‘আমাদের আশা হচ্ছে, আমরা মানুষের দুর্বলতার পার্থক্যগুলো আরও বেশি করে বিবেচনা করা শুরু করব, কারণ দুর্বলতা সবার জন্য এক নয় এবং তাদের বিভিন্ন ধরনের সমর্থন প্রয়োজন।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে এফএও'র নতুন প্রতিনিধি হিসেবে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে পরিচয়পত্র পেশ করলেন ড. শি
৯ মাস আগে