উপন্যাস
বুক রিভিউ লিখবেন যেভাবে
সুনিপুণভাবে সৃষ্ট শিল্পের সার্থকতায় নতুন মাত্রা যোগ করে তার গঠনমূলক বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা। প্রবন্ধ বা গল্প-উপন্যাস নির্বিশেষে সযত্নে লেখা একটি বইও তার ব্যতিক্রম নয়। বিষয়বস্তু ও রচনাশৈলী নিয়ে পক্ষপাতহীন অন্তর্দৃষ্টি নিছক কতক কাগজের গণ্ডি ছাড়িয়ে বইকে দান করে অবর্ণনীয় বিশালতা। এই দৃশ্যমানতা পাঠকদের কাছে বইকে আরও স্বচ্ছ করে তোলে। সঙ্গত কারণেই একটি বই ঠিক কতটা পাঠক পৃষ্ঠপোষকতা পাবে- তার রূপরেখা গড়ে দেয় বই রিভিউ। এই সৃজনশীলতারই সাতকাহন নিরূপণ করা হবে আজকের নিবন্ধে। চলুন, একটি সার্থক বুক রিভিউ লেখার ধারাবাহিক পদ্ধতি জেনে নেওয়া যাক।
বুক রিভিউ লেখার ক্ষেত্রে যে পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করা উচিত
স্পয়লার ব্যতিরেকে বইয়ের সারাংশ উত্থাপন
সারসংক্ষেপের মাধ্যমে বইয়ের নির্যাস সংগ্রহ রিভিউয়ের প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। কিন্তু কেন্দ্রীয় ঘটনাপ্রবাহ ও উদ্দেশ্য ব্যক্ত করার সময় ক্লাইমেক্স বা প্লট টুইস্টের ক্ষেত্রে পরিমিতি বোধের পরিচয় দিতে হবে। বিশেষ করে চূড়ান্ত পরিণতি এড়িয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে অক্ষুণ্ন থাকে বইয়ের প্রধান আকর্ষণ।
এর পরিবর্তে যে ভিত্তির ওপর বইটির পটভূমি দাঁড়িয়ে সেদিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত। এতে করে রহস্য উদ্ঘাটনের স্বাধীনতাটা পাঠকদের হাতে থাকে। এটি বইয়ের মতো একটি সৃষ্টিকর্মের সার্থকতার জন্য অতীব জরুরি। তাছাড়া একটি পূর্ণাঙ্গ সারাংশ থেকেই বিকশিত হয় সমালোচনা ও পর্যালোচনার খোরাকগুলো।
আরো পড়ুন: কীভাবে এল বাংলা ক্যালেন্ডার: দিনলিপি গণনার ইতিবৃত্ত
বইটির কেন্দ্রীয় বিষয় বিশ্লেষণ এবং যুক্তি খণ্ডন
প্রতিটি লেখার মাঝে নিহিত থাকে লেখকের দাবি ও নিজস্ব দর্শন। এই স্বতন্ত্র দৃষ্টিভঙ্গি লেখকের দিক থেকে তার রচনাকে ন্যায়সঙ্গত করে। আর এই মতার্দশের ওপর ভিত্তি করেই একটি লেখার অবকাঠামো তৈরি হয়। একজন রিভিউদাতার দায়িত্ব এই ভিত্তিগুলোকে জনসমক্ষে নিয়ে আসা।
একইসঙ্গে প্রয়োজন লেখকের দাবিগুলোকে সুক্ষ্মভাবে বিশ্লেষণ করা। এই নিরীক্ষণের আওতায় আসে ঘটনার প্রতীকীকরণ, চরিত্রের বিকাশ ও প্লট গঠন। এখানেই লুকিয়ে থাকে একটি লেখার অন্য লেখা থেকে আলাদা হওয়ার মৌলিক উপাদানগুলো। তাই এই পর্যালোচনা কেবল সমালোচনাই নয়, রচয়িতার সৃজনশীলতা খুঁজে বের করাতেও সাহায্য করে।
লেখকের রচনাশৈলী ও লেখার মূল্যায়ন
একটি বই কতটুকু নিখুঁত তা যাচাইয়ের জন্য একজন রিভিউদাতারও উপযুক্ত যোগ্যতার প্রয়োজন। সাধারণত যে কোনো শিল্পের কারিগরি দিকগুলো সাধারণ দর্শক বা পাঠকদের জন্য নয়। বিশেষজ্ঞদের বিচরণটাই এখানে বরং বেশি থাকে। তবে ব্যাকরণগতভাবে সিদ্ধ লেখা অবচেতনেই পাঠকদের হৃদয়স্পর্শ করে যায়। আর এই কারণেই বইয়ের প্রমিত রূপ মূল্যায়নে অংশ নেওয়া উচিত রিভিউদাতাদের।
সুস্পষ্ট করে বলতে গেলে বাক্যের গঠন, শব্দভাণ্ডার ও সামগ্রিক বর্ণনামূলক প্রবাহ পঠনযোগ্যতাকে উন্নত করে। রূপকের ব্যবহারটি অভিনব হলেও তার প্রাসঙ্গিকতার মাত্রা ও সাহিত্যিক আমেজ নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে। পাশাপাশি বইয়ের কেন্দ্রীয় বিষয়বস্তু বা জনরার সঙ্গেও বাক্য গঠন ও শব্দ চয়নের সমন্বয় সাধন জরুরি।
আরো পড়ুন: ঢাকার সেরা ১০টি জাদুঘর: ইতিহাস রোমন্থনের সঙ্গে জ্ঞান আহরণের অভাবনীয় সুযোগ
বইয়ের শক্তিমান ও দুর্বলতম অংশগুলো তুলে আনা
একটি রিভিউকে এক নজরে দেখে বোঝার উপযোগী করার মোক্ষম উপায় হচ্ছে তুলনামূলক বিশ্লেষণ। আর এই পর্যালোচনার সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রভাবকগুলো হচ্ছে শক্তি ও দুর্বলতাগুলো।
চরিত্রের বিকাশ বা উদ্ভাবনী প্লটের মতো বিভিন্ন বিষয় রয়েছে যেগুলো বইটির প্রতি পাঠকদের আকর্ষণ বাড়ায়। এই শক্তিগুলোকে উদাহরণসহ লিপিবদ্ধ করে ব্যাখ্যা করা যায়। অন্যদিকে, ঘটনার ধারাবাহিকতার আকস্মিক ছন্দ পতন এবং চরিত্রের পূর্ণতা না পাওয়ার মত বিষয়গুলো বইয়ের দুর্বলতাকে জাহির করে। এগুলোর বিপরীতে সামঞ্জস্যপূর্ণ সম্ভাব্য সমাধান দাড় করানো যেতে পারে। এটি রিভিউয়ের সময় গঠনমূলক সমালোচনার অন্যতম একটি উপাদান।
সরাসরি বই থেকে উদ্ধৃতি দেওয়া
পর্যালোচনার সময় লেখকের দাবিগুলোকে যুক্তি হিসেবে দাঁড় করিয়ে তা খণ্ডন করার জন্য প্রয়োজন প্রমাণের। এর জন্য সরাসরি লেখকের লেখা বইয়ে থাকা উদ্ধৃতির চেয়ে শ্রেষ্ঠ প্রমাণ আর হয় না। উদ্দেশ্যটি একদম নিরেটভাবে ব্যক্ত থাকলে পুরো বাক্য বা অনুচ্ছেদটি তুলে আনা যেতে পারে। তবে একদম স্পষ্ট করে বলা নেই তবে ইঙ্গিত দেওয়া আছে বা বোঝানো হয়েছে, এমন দাবিগুলোর ক্ষেত্রে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে নিরীক্ষণ দরকার।
এক্ষেত্রে সর্বাপেক্ষা সাধারণ উদাহরণ হলো দীর্ঘ সংলাপের মাধ্যমে চরিত্রগুলোর মাঝের সম্পর্ক ও তাদের পারিপার্শ্বিক পরিবেশকে যাচাই করা। বইয়ের শক্তি বা দুর্বলতাগুলোকে চিহ্নিত করার জন্যও এই গবেষণা প্রয়োজন।
আরো পড়ুন: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রী ও শিক্ষিকাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের উপায়
অনুরূপ সৃষ্টিকর্মের সঙ্গে তুলনা
তুলনামূলক পর্যালোচনার আরও একটা উপায় হলো একই ধারার বা একই লেখকের অন্যান্য কাজের সঙ্গে বইটির তুলনা করা। এই বিশ্লেষণে উঠে আসবে রচনাশৈলী, বিষয়বস্তু বা চরিত্রের বিকাশ, প্রাঞ্জলতা এবং বোধগম্যতার সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য। এছাড়া অন্য বইটি পাঠকের কাছে কতটুকু গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে তার স্বাপেক্ষে রিভিউকৃত বইটির জনপ্রিয়তা পাওয়ার সম্ভাব্যতা যাচাই করা যায়।
এমনকি এই তুলনামূলক বিবৃতির মাধ্যমে কোন উপাদানগুলো বেশি চাহিদাসম্পন্ন সেগুলো চিহ্নিত হয়। ফলশ্রুতিতে বিষয়টি পাঠকদের উপলব্ধিতে আসার পাশাপাশি স্বয়ং লেখকের দৃষ্টিতেও তা ধরা পড়ে। এমনকি এটি বইয়ের মার্কেট রিসার্চের জন্য প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান এবং পাঠকদের নতুন বই কেনার সিদ্ধান্তকেও প্রভাবিত করে।
সুসংগঠিত চিন্তার বহিঃপ্রকাশ
একটি সফল রিভিউয়ের প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে একটি পরিচ্ছন্ন ও যৌক্তিক কাঠামো। প্রথমে তথ্যপূর্ণ সারাংশ দিয়ে শুরু হবে বইয়ের প্রাথমিক উপাদানগুলোর রূপরেখা। অতঃপর এর নিরিখে ধীরে ধীরে গভীর বিশ্লেষণ হবে লেখার শৈলী এবং যুক্তি তর্ক নিয়ে। প্রতিটি পর্যায়ে ধারাবাহিকভাবে পরের পর্যায়ে যাওয়ার প্রবণতা থাকা উচিত, যা পাঠকদের পরবর্তীতে কি আছে তা জানার জন্য উদ্যত করবে।
আরো পড়ুন: কালের বিবর্তনে বঙ্গদেশের যে ভাষাগুলো বিলুপ্তির পথে
এককভাবে শুধুমাত্র লেখা ও লেখকের কথা না বলে প্রাসঙ্গিকভাবে অন্যান্য অনুরূপ কাজেরও হস্তক্ষেপ ঘটানো প্রয়োজন। পরিশেষে ব্যক্তিগত মতামতের মাধ্যমে চূড়ান্তভাবে একটি তথ্যনির্ভর সুপারিশ বা বইটি পড়ার প্রতি নিরুৎসাহিতকরণ অন্তর্ভূক্ত হবে।
ব্যক্তিগত প্রতিফলন
একটি বই একজন পাঠকের ব্যক্তিগত পর্যায়ে কতটা অনুরণন ঘটাতে পারছে তার ওপর নির্ভর করে বইটির সফলতা। তাই বইটি পড়ার পর রিভিউদাতার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল সেটাও রিভিউয়ে থাকা জরুরি। বিশেষ করে পাঠকের ভালো বা খারাপ লাগা যেখানে ওতপ্রোতভাবে জড়িত, সেখানে অন্য পাঠকের অনুভূতি অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ।
তাছাড়া স্বাভাবিকভাবেই পাঠক যখন কোনো বই পড়ার কথা ভাবেন তখন আগেই তার রিভিউ খোঁজার চেষ্টা করেন। এর মধ্যে সেই রিভিউকে তিনি সর্বাপেক্ষা গুরুত্ব দেন যেখানে ব্যক্তিগত অভিমতের উপস্থিতি রয়েছে। এই অনুভূতিগুলোর সঙ্গে তারা নিজেদের পূর্ব অভিজ্ঞতা ও আবেগের সম্পর্ক খুঁজে পান। রিভিউ পড়ার প্রতিক্রিয়া হিসেবে তারা বইটির কিনতে বাধ্য হন।
ইতিবাচকতা ও নেতিবাচকতার মাঝে ভারসাম্যপূর্ণতা বজায় রাখা
রিভিউ মানেই বইয়ের কেবল ভালো দিক নিয়ে আলোচনা করা নয়। আবার এমনও নয় যে, শুধু মন্দ দিকগুলোকেই তুলে আনতে হবে। একটি পক্ষপাতহীন স্বচ্ছ পর্যালোচনার জন্য ভালো-মন্দ দুটোর মধ্যেই একটি ভারসাম্যপূর্ণ সুর বজায় রাখা অপরিহার্য। এর ফলে এটাই প্রমাণিত হয় যে, বিশ্লেষণটি ব্যক্তিগত পছন্দের বাইরে যেয়ে সুষ্ঠু প্রমাণের ভিত্তিতে করা হয়েছে। গুণগুলো অকপটে স্বীকার করার পাশাপাশি ত্রুটিগুলোর সন্নিবেশ ঘটাতে হবে গঠনমূলক দৃষ্টিকোণ থেকে। এই ভারসাম্যপূর্ণতা রিভিউয়ের প্রতি বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ায় এবং একই সঙ্গে তা পেশাদারিত্বেরও পরিচয় বহন করে।
আরো পড়ুন: ঢাকার জনপ্রিয় ১০টি বুক ও স্টাডি ক্যাফে: বইপ্রেমীদের স্বর্গরাজ্য
বইটি পড়ার জন্য সুপারিশ বা নিরুৎসাহিতকরণ
সবশেষে বইটি পড়ার জন্য সময় দেওয়া পাঠকের জন্য সমীচীন হবে কিনা তার একটি স্পষ্ট ঘোষণা থাকা উচিত। এই ঘোষণা শেষে দেওয়া হলে তা ন্যায়সঙ্গত হয় কেননা এরই মধ্যে যথাযথ তথ্য-প্রমাণ পাঠকদের উদ্দেশ্যে পরিবেশন করা হয়ে গেছে। সেই অর্থে চূড়ান্ত মতামতটি অবিসংবাদিতভাবে তথ্যবহুল ও যৌক্তিক হিসেবে প্রতীয়মান হবে।
বইটি সুপারিশযোগ্য হলে কোন ধরনের পাঠক সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবে, তা উল্লেখ করা যায়। আর যদি তা না হয় তবে কেন বইটি পড়া উচিত নয় তার নেপথ্যে উপযুক্ত কারণ দর্শাতে হবে। এতে করে পাঠকরা তাদের নিজ নিজ সাহিত্যিক রুচি ও পছন্দ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।
শেষাংশ
একটি বুক রিভিউ লেখার মাধ্যমে মূলত প্রমাণ ও ব্যক্তিগত অন্তর্দৃষ্টির পটভূমিতে একত্রিত হয় বইয়ের মূল নির্যাস ও রচয়িতার লেখনী। সেই সঙ্গে বইয়ের শক্তি ও দুর্বলতা এবং ইতিবাচকতা ও নেতিবাচকতার ভারসাম্যপূর্ণ মূল্যায়ন একটি উন্মুক্ত মঞ্চ পায়। অন্যান্য সৃষ্টিকর্মের সহিত তুলনা, রিভিউদাতার ব্যক্তিগত প্রতিফলন ও সুপারিশে স্পষ্ট হয়ে ওঠে পাঠকশ্রেণীর প্রতি বইয়ের আবেদন। সর্বোপরি, বইয়ের সুসংগঠিত বিশ্লেষণ পর্যালোচকের সুসংহত চিন্তার পরিচায়ক, যা বইয়ের মতো রিভিউকেও পরিণত করে শিল্পে।
আরো পড়ুন: একুশে বইমেলার শিকড়ের সন্ধান
৩ মাস আগে
আমি শান্ত ও ভদ্র একটা মেয়ে: পূজা
অনুদানের চলচ্চিত্র ‘হৃদিতা’ মুক্তি পাবে আগামীকাল (৭ অক্টোবর)। কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক এর সাড়া জাগানো উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেছেন পরিচালক জুটি ইস্পাহানী-আরিফ জাহান।
২০১৯-২০ অর্থবছরে ৫৫ লাখ টাকা সরকারি অনুদান পেয়েছে সিনেমাটি। এতে নাম ভূমিকার অভিনয় করেছেন চিত্রনায়িকা পূজা চেরি। তার বিপরীতে একজন কবির ভূমিকায় অভিনয় করেছেন এবিএম সুমন।
ছবিটিতে অভিনয় প্রসঙ্গে পূজা বলেন, ‘সিনেমায় আমি শান্ত ও ভদ্র একটা মেয়ে। যে কিনা আপনমনে কথা বলে। সব মিলিয়ে দারুণ একটা চরিত্র। নিজেকে এখন হৃদিতার জন্য তৈরি করছি।’
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিতীয় সপ্তাহে ‘পরান’ এর হল বাড়লো
২ বছর আগে
সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, আফসান চৌধুরীসহ ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার পেলেন ৬ লেখক
বাংলা সাহিত্যে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী এবং গবেষক ও সংবাদ সংস্থা ইউনাইটেড নিউজ অব বাংলাদেশের (ইউএনবি) এডিটর এট লার্জ আফসান চৌধুরীসহ ছয়জনকে ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ২০১৯ ও ২০২০ সালের পুরস্কারপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করা হয়।
২০২০ সালে প্রবন্ধ, আত্মজীবনী, ভ্রমণ ও অনুবাদ বিভাগে আফসান চৌধুরী ‘১৯৭১ গণনির্যাতন – গণহত্যা, কাঠামো, বিবরণ ও পরিসর’ শিরোনামের বইটির জন্য পুরস্কার জিতেছেন। কবিতা ও উপন্যাস বিভাগে ‘পথিক পরাণ’ শিরোনামের বইয়ের জন্য কবি মোহাম্মদ রফিক এবং ‘হুমায়ূন আহমেদ তরুণ লেখক’ বিভাগে ‘বাংলাদেশের লোকধর্ম’ শিরোনামের বইটির জন্য রঞ্জনা বিশ্বাস পুরস্কার জিতেছেন।
আরও পড়ুন: ফরিদা হোসেন: বাংলা সাহিত্যের এক স্বপ্ন শিল্পী
২০১৯ সালে প্রবন্ধ, আত্মজীবনী, ভ্রমণ ও অনুবাদ বিভাগে অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী তার ‘দীক্ষাগুরুর তৎপরতা’ শিরোনামের বইয়ের জন্য পুরস্কার জিতেছেন। কবি হেলাল হাফিজ কবিতা ও উপন্যাস বিভাগে তার ‘বেদনাকে বলেছি কেঁদো না’ শিরোনামের বইয়ের জন্য, মোজাফফর হোসেন তার ‘পাঠে বিশ্লেষণে বিশ্বগল্প: ছোটোগল্পের শিল্প ও রূপান্তর’ শিরোনামের বইটির জন্য ‘হুমায়ূন আহমেদ তরুণ লেখক’ বিভাগে পুরস্কার বিজয়ী হয়েছেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
এই দুই বছরে তিন ক্যাটাগরির পুরস্কারের জন্য এক হাজারের বেশি বই জমা পড়েছে। তার মধ্য থেকে সেলিনা হোসেন, খালিকুজ্জামান ইলিয়াস, বিশ্বজিৎ ঘোষ এবং আবিদ আনোয়ারের সমন্বয়ে গঠিত জুরি প্যানেল প্রতি বছর তিনটি সেরা বই নির্বাচিত করেন।
পুরস্কার বিজয়ী লেখক ও কলামিস্ট আফসান চৌধুরী বলেন, রাজনৈতিক সীমাবদ্ধতার কারণে আমাদের দেশে সবার বদলে গুটিকয়েক মানুষের ইতিহাস লিখেছি আমরা। বিদ্রোহী কৃষক সমাজের নেতৃত্বে ২০০ বছরের দীর্ঘ সংগ্রামের পর বাংলাদেশের জন্ম। ১৯৭১ সেই মুহূর্ত যখন এই সংগ্রাম সফল হয়েছিল। এটি কেবল একটি রাষ্ট্র বা সমাজের নয়, সকলের। তাই আমাদের গুটিকয়েক বা গোষ্ঠীর বদলে সবার ইতিহাস লিখতে হবে।
আরও পড়ুন: ‘মুক্তিযুদ্ধে নারীর ভূমিকা অস্বীকার করা মানে বাংলাদেশকে অস্বীকার করা’
টাইমস মিডিয়া লিমিটেডের এমডি এ কে আজাদ বলেন, ‘সমকালের জন্য এটা আনন্দের এবং গর্বের বিষয় যে আমরা লেখক ও সাহিত্যিক ব্যক্তিত্বদের অনুপ্রাণিত ও সম্মানিত করতে পেরেছি।’
ব্র্যাক ব্যাংকের এমডি ও সিইও সেলিম আর এফ হুসেন বলেন,‘এই পুরস্কারটি বাংলা সাহিত্য জগতে একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে এবং আমরা এটির অংশ হতে পেরে সম্মানিত।’
২ বছর আগে
সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হককে হারানোর দিন আজ
বাংলা সাহিত্যের সব্যসাচী খ্যাত সৈয়দ শামসুল হক ৫ম মৃত্যু বার্ষিকী আজ। আবহমান বাংলা ও বাঙালির অন্যতম সেরা এই ভাষাশিল্পী ২০১৬ সালের এই দিনে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
জন্মভূমি ও দেশের মানুষের মমত্ববোধকে আগলে রাখতে নিশ্চিত মৃত্যু জেনে ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার পর কয়েকদিন কাটানোর জন্য দ্রুত লন্ডন থেকে ছুটে আসেন। তার ইচ্ছে ছিল বাংলাদেশে চির নিদ্রায় শায়িত হবেন। ঠিক কয়েকদিন পর ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে তিনি মৃত্যু বরণ করেন। কবির শেষ ইচ্ছে অনুযায়ী জন্মের শহর কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ মাঠে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়।
আরও পড়ুন: জন্মদিনে লেখক শামসুল হককে স্মরণ
১৯৩৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর কুড়িগ্রাম জেলা শহরের থানা পাড়ার পৈত্রিক নিবাসে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা সৈয়দ সিদ্দিক হুসাইন ও মা হালিমা খাতুন। বাবা পেশায় হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার ছিলেন। সৈয়দ হক তার বাবা-মায়ের আট সন্তানের মধ্যে সবার বড়।
বাংলা সাহিত্যের সব শাখায় সমানভাবে পদচারণার জন্য সৈয়দ শামসুল হক সব্যসাচী লেখক হিসেবে ১৯৬৪ সালে মাত্র ২৯ বছর বয়সে তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার পেয়েছেন। এ পুরস্কার পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে তিনিই সবচেয়ে কম বয়সে এটি অর্জন করেন। এছাড়াও তিনি একুশে পদক এবং স্বাধীনতা পদক পেয়েছেন।
আরও পড়ুন: কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মৃত্যুবার্ষিকী আজ
১৯৫০-এর দশকে প্রকাশিত হয় তার প্রথম উপন্যাস ‘দেয়ালের দেশ’। এছাড়াও তার লেখা অন্যান্য উপন্যাসগুলোর মধ্যে খেলারাম খেলে যা, নিষিদ্ধ লোবান, সীমানা ছাড়িয়ে, নীল দংশন, বারো দিনের জীবন, তুমি সেই তরবারী,কয়েকটি মানুষের সোনালী যৌবন ও নির্বাসিতা।
৩ বছর আগে
বইমেলায় দুই উপন্যাস নিয়ে আসছেন কথাসাহিত্যিক জুয়েল
দেশের বই প্রেমীদের সবচেয়ে বড় আয়োজন অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০২০-এ দুটি উপন্যাস নিয়ে আসছেন কথাসাহিত্যিক শাহমুব জুয়েল।
৪ বছর আগে
জীবনে একবার হলেও পড়া উচিত যে ১০ বই
লেখকদের মতে একজন মানুষকে সবকিছু থেকে পালাতে সাহায্য করে গল্প, উপন্যাস বা সাহিত্য। ইংরেজি ভাষায় যাকে বলা হয় ‘এস্কেপিজম’। এই পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি অন্য যেকোনো শিল্পের চেয়ে তীব্র ও শক্তিশালী।
৪ বছর আগে