চেক
আর কোন চেক ডিজঅনার মামলা করতে পারবে না ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান
ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঋণ আদায়ের জন্য কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে আর কোন চেক ডিজঅনারের মামলা করতে পারবে না বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে বর্তমানে বিচারিক আদালতে চলমান ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের করা সব চেক ডিজঅনার মামলার কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে ঋণ আদায়ের জন্য শুধু ২০০৩ সালের অর্থঋণ আইনে অর্থঋণ আদালতে মামলা করা যাবে বলে এই রায়ে বলা হয়েছে।
বুধবার ঋণ আদায়ে এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ব্র্যাক ব্যাংকের চেক ডিজঅনার মামলা বাতিল করে বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন। তবে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ব্র্যাক ব্যাংকের আইনজীবী সাইফুজ্জামান তুহিন। ব্যাবসায়ীর পক্ষে আদালতে শুনানি করেন আইনজীবী আবদুল্লা আল বাকি।
আরও পড়ুন: ময়মনসিংহে গ্রেপ্তার এক জঙ্গির জামিন প্রত্যাহার করলেন হাইকোর্ট
রায়ে হাইকোর্ট বলেন, ব্যাংক ঋণের বিপরীতে যে চেক নেয়া হচ্ছে, সেটা জামানত। বিনিময়যোগ্য দলিল নয়। জামানত হিসেবে রাখা সেই চেক দিয়ে চেক ডিজঅনার মামলা করা যাবে না।‘ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ একটি চুক্তির মাধ্যমে নেয়া হয়ে থাকে। ঋণের বিপরীতে ব্ল্যাংক চেক নেওয়াটাই বেআইনি। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো দীর্ঘদিন ধরে এই বেআইনি কাজ করে আসছে। তাদের ব্যবহার দাদন ব্যবসায়ীদের মতো।’
নিম্ন আদালতের প্রতি নির্দেশনা দিয়ে রায়ে হাইকোর্ট বলেন, আজ থেকে কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান যদি চেক ডিজঅনার মামলা করে, তাহলে আদালত তা সরাসরি খারিজ করে দেবেন। একইসঙ্গে তাদের ঋণ আদায়ের জন্য অর্থঋণ আদালতে পাঠিয়ে দেবেন।
আদালত আরও বলেন, ব্যাংক হওয়ার কথা ছিল গরিবের বন্ধু, কিন্তু তা না হয়ে ব্যাংক ও বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান গরিবের রক্ত চুষছে। এটা হতে পারে না। যারা হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে খেলাপি হচ্ছে ব্যাংক তাদের ঋণ মওকুফ করার কথা শুনি, কিন্তু কোনো গরিবের ঋণ মওফুফ করার কথা কোনোদিন শুনিনি।
নীলকর চাষি ও দাদন ব্যবসায়ীদের মতো যেনতেন ঋণ আদায় করাই ব্যাংকের লক্ষ্য উল্লেখ করে আদালত বলেন, লোন আদায়ের জন্য অর্থঋণ আইনে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান মামলা দায়ের না করে চেক ডিজঅনার মামলা করছে। এ কারণে আমাদের ক্রিমিনাল সিস্টেম প্রায় অকার্যকর হয়ে গেছে। তাই এখন থেকে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান শুধুমাত্র অর্থঋণ আদালতে মামলা দায়ের করতে পারবে। অন্য কোনো আইনে নয়।
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি হাইকোর্টের রায়ের আলোকে নির্দেশনা জারি করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়াও সব প্রকার ঋণের বিপরীতে ইন্স্যুরেন্স কাভারেজ দিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
২০১১ সালের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর সেলিমগঞ্জের বরাইল মধ্যপাড়ার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী ব্র্যাক ব্যাংক থেকে চার লাখ টাকা ঋণ নেন। পরে ৩৬ কিস্তির মধ্যে ২২ কিস্তি দিয়েছেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে কিস্তি জমা দিতে না পেরে দুই লাখ ৯৫ হাজার ৯০৪ টাকার চেক দেন। কিন্তু এ চেক ডিজঅনার হওয়ায় ব্র্যাক ব্যাংক ২০১৫ সালের ২৭ জুলাই মামলা করে। এ মামলায় ২০১৬ সালের ২০ জুন মোহাম্মদ আলীকে বিচারিক আদালত ৬ মাসের সাজা ও দুই লাখ ৯৫ হাজার ৯০৪ টাকা জরিমানা করেন।
আইনজীবী আব্দুল্লা আল বাকী জানান, ওই রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালে হাইকোর্টে আপিল করেন মোহাম্মদ আলী। ওই আপিলের শুনানি শেষে আজ রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে আপিল গ্রহণ করে তাকে ছয় মাসের সাজা থেকে খালাস দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি মোহাম্মদ আলীকে ৫০ শতাংশ তথা এক লাখ ৪৮ হাজার টাকা ১০ দিনের মধ্যে দিতে ব্যাংককে নির্দেশ দেন আদালত।
আরও পড়ুন: বিচারের দাবিতে আদালতে শিশু, বিজিবি সদস্যের খালাস বাতিল করল হাইকোর্ট
ঢাকার ফুটপাত বিক্রি ও ভাড়া উত্তোলনে জড়িতদের তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট
২ বছর আগে
বরিশালে ৩ ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জালিয়াতির মামলা
গ্রাহকের চেকের স্বাক্ষর জাল করে টাকা উত্তোলন করে তা আত্মসাৎ করায় প্রিমিয়ার ব্যাংকের বরিশাল ব্রাঞ্চ ইনচার্জসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আদালতের বিচারক মাসুম বিল্লাহ মামলাটি আমলে নিয়ে উপ-পরিদর্শক সমমর্যাদা সম্পন্ন কোনও গোয়েন্দা পুলিশের মাধ্যমে তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের সহকারী কমিশনারকে আদেশ দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বরিশাল অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া এলাকার বাসিন্দা ও তিশা এন্টারপ্রাইজের প্রোপাইটর মনিরুল ইসলাম খান।
আরও পড়ুন: চেক জালিয়াতি: মাগুরা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে ২.৬৬ কোটি টাকা আত্মসাৎ
মামলার বিবাদীরা হলো, প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেড বরিশালের ব্রাঞ্চ ইনচার্জ সাইফুর রহমান সরদার, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার ফয়সাল আলম ও সিনিয়র এ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট শাহ মো. অসিউদ্দিন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, ২০২০ সালের ৬ অক্টোবর প্রিমিয়ার ব্যাংক বরিশাল শাখায় বাদী একাউন্টে ১৪ লাখ টাকা জমা দেওয়ার পরবর্তীতে একাউন্টে ব্যালেন্স অনুসন্ধানে গিয়ে একাউন্টে কোনো টাকা না থাকায় বাদী বিবাদীদের কাছে বিষয়টি জিজ্ঞাস করলে তারা কোনও উত্তর না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকে। এরপর চলতি বছরের ১৪ জুন বাদী নিয়োজিত কৌশুলীর মাধ্যমে বিবাদীদের লিগ্যাল নোটিশ করে ২০২০ সালের ৬ অক্টোবর ব্যাংকে জমা দেওয়া ১৪ লাখ টাকা একাউন্টে জমা না হওয়ার কারণ জানতে চায়।
পরে বিবাদীরা তাদের নিয়োজিত কৌশুলীর মাধ্যেম জবাব দেয় যে, বাদীর নোটিশের বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং বাদীর ১৪ লাখ টাকা ভুলক্রমে ক্রেডিট হওয়ায় তা ভাউচারের মাধ্যমে উত্তোলন করা হয়েছে।
বিবাদীদের এই জবাবের পর বাদী ব্যাংক একাউন্টের হিসাব বিবরণী উত্তোলনের পর দেখা যায়, মনিরুল ইসলামের একাউন্টের চেকের বরাতে তার স্বাক্ষর, টাকার পরিমাণ ও বাহকের নাম জাল করে বাদীর একাউন্ট থেকে ১৪ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়।
আরও পড়ুন: হাইকোর্টের জামিন জালিয়াতির ঘটনায় যুবলীগ নেতাসহ ১৬ জন কারাগারে
বিবাদীরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে বাদীর হাতে রক্ষিত অক্ষত চেকের বরাতে চেকে বাদীর স্বাক্ষর টাকার পরিমাণ, তারিখ ও বাহকের নাম জাল করে ওই চেকটি ব্যবহার দেখিয়ে বাদীর টাকা উত্তোলন ও আত্মসাৎ করে অপরাধ সংগঠন করায় বাদী বাধ্য হয়ে মামলাটি দায়ের করে বলে জানায়।
৩ বছর আগে
শ্রমিক কল্যাণ তহবিলে ৭ কোটি টাকা দিল ইউনিলিভার
শ্রমিকের কল্যাণে অবদান রাখার অংশ হিসেবে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ ‘শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন’ তহবিলে লভ্যংশ হিসেবে প্রায় ৭ কোটি ১৮ লাখ টাকা দিয়েছে ইউনিলিভার বাংলাদেশ (ইউবিএল) ও ইউনিলিভার কনজ্যুমার কেয়ার লিমিটেড (ইউসিএল)।
মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
আরও পড়ুনঃ শ্রমিক ছাঁটাই না করার অনুরোধ শ্রম প্রতিমন্ত্রীর
এতে বলা হয়, রাজধানীর সচিবালয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের কাছে চেক দুটি হস্তান্তর করেন ইউনিলিভার বাংলাদেশের লিগ্যাল ডিরেক্টর অ্যান্ড কোম্পানি সেক্রেটারি এস এম রাশেদুল কাইয়ুম, কোম্পানির কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স, পার্টনারশিপস অ্যান্ড কমিউনিকেশনস প্রধান শামীমা আক্তার ও ইউনিলিভার কনজ্যুমার লিমিটেডের রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স হেড অ্যান্ড কোম্পানি সেক্রেটারি মোহাম্মদ নাহারুল মোল্লা।
এই লভ্যংশ শ্রমিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং বড় ধরনের দুর্যোগে শ্রমিক ও তাদের পরিবারের পাশে থাকার সরকারি প্রচেষ্টাকে আরও শক্তিশালী করবে।
করোনা মহামারির শুরু থেকেই বাংলাদেশ সরকার ও ইউনিলিভারের শীর্ষ বৈশ্বিক স্বাস্থ্য-সুরক্ষা নীতির আলোকে কারখানা কর্মীদের নিরাপত্তায় যত্নবান রয়েছে ইউনিলিভার। অধিকন্তু কোম্পানির উৎপাদন কার্যক্রমে প্রয়োজনীয় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও মাস্ক ব্যবহারের বাধ্যবাধকতার পাশাপাশি ইউনিলিভার বাংলাদেশের ক্যান্টিন ও চেঞ্জরুমের মতো উন্মুক্তস্থানেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ কারখানা ছুটির আগেই শ্রমিকদের বেতন বোনাস দিতে হবে: শ্রম প্রতিমন্ত্রী
বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ শুরুর পরেই কারখানায় কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারীদের জন্য নিজস্ব পরিবহন সুবিধা চালু করে ইউনিলিভার। এক্ষেত্রেও কঠোরভাবে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা সহ পরিবহনে ব্যবহৃত যানগুলো দিনে বেশ কয়েকবার স্যানিটাইজ করে জীবাণুমক্ত করা হয়। এছাড়াও কর্মীদের রোগপ্রতিরোধ সক্ষমতা বৃদ্ধিতে চিকিৎসা সহায়তা কর্মসূচি পরিচালনা, তাদের বাসায় নিয়মিত সুরক্ষা কিট ও স্যানিটাইজেশন পণ্য সরবরাহ এবং সাপ্তাহিক কোভিড-১৯ পরীক্ষার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। কোভিড-১৯ ভাইরাস থেকে কর্মীদের সুরক্ষা দিতে ইউনিলিভার বিগত ১৮ মাসে বাংলাদেশে ১৮ কোটি টাকা ব্যয় করেছে। এছাড়াও দায়িত্বশীল সংস্থা হিসেবে কর্মীদের এই সংক্রান্ত সকল চিকিৎসা ব্যয়ও বহন করেছে ইউনিলিভার।
চেক হস্তান্তরকালে সংশিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব সাকিউন নাহার বেগম এনডিসি, বেগম জেবুন্নেসা করিম (অতিরিক্ত সচিব) এবং ডিরেক্টর জেনারেল বিএলডব্লিউএফ (বাংলাদেশ লেবার ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন) সহ আরও অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
৩ বছর আগে
ফরিদপুরে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণের চেক বিতরণ
ফরিদপুরে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ (১ম ও ২য় পর্যায়) প্রকল্পের জন্য অধিগ্রহণকৃত জমির মালিকদের মাঝে ক্ষতিপূরণের ২ কোটি ১২ লাখ ৪০ হাজার ৭০৯ টাকার চেক বিতরণ করা হয়েছে।
৩ বছর আগে