রাজস্ব
রাজস্ব আদায় বাড়ানোর উপায় খুঁজছে বাংলাদেশ
রাজস্ব আহরণ জোরদার করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য সম্ভাবনা রয়েছে, যা রাজস্ব বৃদ্ধির ওপর সাম্প্রতিক সরকারি মূল্যায়নে তুলে ধরা হয়েছে। এটি একটি পরিমাপ, যা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে কর ও রাজস্ব কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায় তা প্রতিফলিত করে।
রাজস্ব উচ্ছাস, মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) রাজস্বের প্রতিক্রিয়াশীলতা, রাজস্ব ব্যবস্থার কার্যকারিতা এবং রাজস্ব বৃদ্ধির পূর্বাভাস পরিমাপের একটি গুরুত্বপূর্ণ মানদন্ড।
একের বেশি একটি উচ্ছাস সহগ ইঙ্গিত দেয় যে, যখন একের চেয়ে কম সহগ ধীর বৃদ্ধির পরামর্শ দেয়, তখন করের রাজস্ব জিডিপির তুলনায় দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
প্রকৃত জিডিপি এবং ২০১২ অর্থবছর থেকে ২০২৩ অর্থবছর পর্যন্ত প্রকৃত রাজস্ব বৃদ্ধির হার ব্যবহার করে এক বিশ্লেষণে শূন্য দশমিক ৯০ এর গড় রাজস্ব উচ্ছাস পাওয়া গেছে, যার অবস্থান একের নিচে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের নথিতে বলা হয়েছে, এই নিম্ন স্কোর বাংলাদেশে রাজস্ব আহরণ বাড়ানোর সুযোগকে তুলে ধরে।
সরকারি মূল্যায়নে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, কার্যকর করের হার রাজস্ব কর্মক্ষমতার আরেকটি পরিমাপ হিসাবে কাজ করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ভ্যাটের কার্যকর হার বাস্তব খাত থেকে ভোগের তথ্যের সঙ্গে তুলনা করে প্রাপ্ত করা যেতে পারে।
আরও পড়ুন: হয়রানি রোধ ও স্বচ্ছতা বাড়াতে কর নিরীক্ষা বাছাইকে ডিজিটালাইজেশনের উদ্যোগ এনবিআরের
বিশ্লেষণে দেখা যায়, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কার্যকর ভ্যাটের হার বেড়েছে, যা ২০২৩ অর্থবছরে ৭ দশমিক ১ শতাংশে পৌঁছেছে। তবে এটি বাংলাদেশের বেশিরভাগ পণ্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ১৫ শতাংশ ভ্যাট হারের মানের চেয়ে অনেক কম।
বাংলাদেশের রাজস্ব আদায় এখনো তুলনামূলক অর্থনীতির তুলনায় পিছিয়ে আছে।
২০২২ সালে সাধারণ সরকারের রাজস্ব-জিডিপি অনুপাত ছিল নেপালে ২৩ দশমিক ১ শতাংশ, ভারতে ১৯ দশমিক ৮ শতাংশ এবং লাও পিডিআরে ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ।
অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্তর এবং রাজস্ব সংগ্রহের মধ্যে একটি ইতিবাচক পারস্পরিক সম্পর্ক বিদ্যমান বলে বিস্তৃত ঐকমত্য রয়েছে।
দেশের উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনে কর প্রশাসন ব্যবস্থার কার্যকারিতা, দক্ষতা, স্বচ্ছতা এবং ন্যায্যতা বাড়াতে বড় ধরনের সংস্কারের আহ্বান জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
এই সুবিধাগুলো বৃহত্তর অর্থনীতিকে সমর্থন করে এবং স্বল্প আয়ের গোষ্ঠীর ব্যয়ে ধনী ব্যক্তিদের পক্ষে অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে অনুকূল যাতে না হয় তা নিশ্চিত করতে নথিটি কর ছাড়ের পুনর্বিবেচনার উপরও জোর দেয়। এভাবে রাজস্ব নীতির পুনর্বণ্টনমূলক লক্ষ্যকে ক্ষুণ্ন করে।
ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেওয়ার ক্ষেত্রেও উন্নতির উল্লেখযোগ্য সুযোগ রয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে মাত্র ৩৩ দশমিক ৩ শতাংশ টিআইএনধারী ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল করেছেন, যা একই ধরনের দেশে উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।
অর্থ মন্ত্রণালয় রাজস্ব আহরণ জোরদার করার জন্য বেশ কয়েকটি আধুনিক সংস্কার কৌশলের রূপরেখা তৈরি করেছে।
এর মধ্যে রয়েছে করের ভিত্তি সম্প্রসারণ, একটি আধুনিক সম্পত্তি কর ব্যবস্থা গ্রহণ, সবুজ এবং কার্বন কর প্রবর্তন, কর সংগ্রহ সহজতর করা, ট্যাক্স ফাইলিং এবং পেমেন্ট প্রক্রিয়াগুলো সম্পূর্ণরূপে স্বয়ংক্রিয় করা এবং কর সংগ্রহকারী এবং করদাতাদের মধ্যে সরাসরি মিথস্ক্রিয়া হ্রাস করা।
আরও পড়ুন: কর ফাঁকিবাজদের চিহ্নিত করতে ডাটা অটোমেশনে ঝুঁকছে এনবিআর
অন্যান্য কৌশলগুলোর মধ্যে রয়েছে নিরীক্ষাগুলোকে আরও নির্বাচনমূলক, উৎপাদনশীল এবং মানদণ্ডভিত্তিক করার পাশাপাশি কর নীতিনির্ধারণকে কর সংগ্রহ থেকে পৃথক করা।
মোট রাজস্বে আয়কর ও ভ্যাটের অংশ বৃদ্ধি করে সরকার এ লক্ষ্যে অগ্রগতি সাধন করেছে।
তবে এখনও পরোক্ষ করের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে প্রত্যক্ষ করের ওপর বেশি নজর দিতে হবে।
মোট রাজস্বে প্রত্যক্ষ করের প্রকৃত অংশ ছিল ২০২১ অর্থবছরে ৩২ দশমিক ৩ শতাংশ, যা অর্থবছর ২০২৩ এ সামান্য বেড়ে ৩২ দশমিক ৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
রাজস্ব প্রবৃদ্ধি বজায় রাখার জন্য সরকার করের ভিত্তি প্রসারিত করার প্রচেষ্টা চালাবে, বাণিজ্য কর থেকে প্রত্যক্ষ করের দিকে নির্ভরতা স্থানান্তর করবে এবং আগামী বছরগুলোতে প্রত্যক্ষ করের প্রবৃদ্ধিকে আরও ত্বরান্বিত করবে।
আরও পড়ুন: রাজস্ব মামলার জট কমাতে জোরদার উদ্যোগ এনবিআরের
১ মাস আগে
উদ্বোধনের পর থেকে পদ্মা সেতুতে টোল আদায় হয়েছে ১৫০০ কোটি টাকা
পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর থেকে সরকারের রাজস্ব বেড়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে। এ সময় পদ্মা সেতু দিয়ে পারাপার হওয়া যানবাহন থেকে ১৫০০ কোটি টাকা টোল আদায় করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে পরিবহন ধর্মঘট চলছে, চরম দুর্ভোগে সাধারণ মানুষ
পদ্মা সেতু সাইট অফিসের অতিরিক্ত পরিচালক আমিরুল ইসলাম চৌধুরী জানান, শনিবার রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত সেতু উদ্বোধনের পর থেকে এ পর্যন্ত ১৫০২ কোটি ৬২ লাখ ১৫ হাজার ৯০০ টাকা টোল আদায় হয়েছে। এ সময় সেতুটি দিয়ে ১ কোটি ১২ লাখ ৯১ হাজার ৯৫টি যানবাহন পারাপার হয়েছে।
২০২৩ সালের ২৫ জুন সেতুটি প্রথম যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়।
ট্রাফিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রায় ৫৬ লাখ ১ হাজার ২৩২টি যানবাহন মাওয়া পয়েন্ট দিয়ে এবং ৫৬ লাখ ৮৯ হাজার ৮৬৩টি যানবাহন জাজিরা পয়েন্ট দিয়ে অতিক্রম করে।
চলতি বছরের ৯ এপ্রিল ৪৫ হাজার ২০৪টি যানবাহন থেকে ৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা আয় করে সেতুটি একদিনে সর্বোচ্চ টোল আদায়ের রেকর্ড গড়ে।
২০২৩ সালের ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতুটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন এবং পরদিন সকালে যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়, যা দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সম্প্রসারণে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হয়।
আরও পড়ুন: রোগীর প্রতি চিকিৎসকের অবহেলা সহ্য করা হবে না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে বৃষ্টির পূর্বাভাস
৭ মাস আগে
বাংলাদেশের রাজস্ব আয়ের ৩৩ শতাংশ ঋণ পরিশোধে ব্যয় হয়: ড. দেবপ্রিয়
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, বাংলাদেশ একটি অনিশ্চিত আর্থিক অবস্থার মধ্যে রয়েছে, যেখানে রাজস্বের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ঋণ পরিশোধে ব্যয় করা হয়।
ড. ভট্টাচার্যের মতে, সরকারের মোট ঋণের দুই-তৃতীয়াংশ অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে আসে, যার ফলে মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ প্রায় ৮৫০ ডলারে পৌঁছায়।
বৃহস্পতিবার(৪ এপ্রিল) রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে এশিয়া ফাউন্ডেশন-বাংলাদেশের অংশীদারিত্বে সিপিডি আয়োজিত 'বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ ও ঋণ পরিশোধের পরিস্থিতি: উদ্বিগ্ন হওয়ার কি কোনো কারণ আছে?' শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
ড. দেবপ্রিয় বাংলাদেশের ঋণ কাঠামোর জটিলতার ওপর আলোকপাত করেন সেমিনারে।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান।
ড. দেবপ্রিয় পরিস্থিতির গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, 'জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশের রাজস্ব ব্যয়ের ৩৪ শতাংশ ঋণ পরিশোধে বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন, এই পরিসংখ্যানে অভ্যন্তরীণ ঋণের জন্য ২৮ শতাংশ এবং বৈদেশিক ঋণের জন্য ৫ শতাংশ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা মাত্র তিন বছরে ২৬ শতাংশ থেকে ৩৪ শতাংশে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে।
আরও পড়ুন: এমপিদের সম্পদের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি তদন্ত করতে হবে: সিপিডির মুস্তাফিজুর রহমান
কোভিড-১৯ মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ২০১৮-১৯ সাল থেকে ঋণ গ্রহণের প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, রাজস্ব বাজেট এখন এতটাই টানাটানি যে, উন্নয়ন প্রকল্পে এক পয়সাও অর্থায়ন করা সম্ভব নয়।
ঋণ পরিশোধের বৃহত্তর প্রভাব তুলে ধরে ড. দেবপ্রিয় অর্থনীতিবিদদের সতর্কবাণীর প্রতি নীতিনির্ধারকদের প্রত্যাখ্যানমূলক মনোভাবের সমালোচনা করেন। তিনি ২০২৪ সালে বাংলাদেশের সামনে চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে দুই বছর আগে করা নিজের ভবিষ্যদ্বাণীর কথা উল্লেখ করেন। ২০২৫ সাল থেকে শুরু করে ২০২৬ সালে ঋণ পরিশোধে প্রত্যাশিত অস্বস্তির ওপর জোর দেন তিনি।
আরও পড়ুন: আ.লীগ ছাড়া সবাই বিদ্যুৎ খাতে ক্যাপাসিটি পেমেন্ট বন্ধ করতে চায়: সিপিডি
তিনি বেসরকারি খাতের ঋণের তাৎপর্য তুলে ধরে বলেন, মোট ঋণের ৮০ শতাংশই সরকারি ঋণ, বাকি ২০ শতাংশ বেসরকারি খাত। তিনি দেশের দায় ও বিনিময় খাতে বেসরকারি খাতের ঋণের প্রভাবের ওপর জোর দিয়ে ব্যক্তিগত ঋণ এবং এর ব্যবহার দেশে বা বিদেশে যেখানেই হোক না কেন, অধিকতর যাচাই-বাছাইয়ের আহ্বান জানান।
বৈদেশিক ও অভ্যন্তরীণ ঋণ একত্রিত করে ড. ভট্টাচার্য মাথাপিছু দায়বদ্ধতার বোঝার উপর জোর দিয়েছিলেন, যা কেবল বৈদেশিক ঋণের জন্য ৩১০ ডলারে দাঁড়িয়েছে এবং অভ্যন্তরীণ ঋণের ক্ষেত্রে প্রায় ৮৫০ ডলারে উন্নীত হয়। বাংলাদেশের ঋণ পরিস্থিতির এই সামগ্রিক বিশ্লেষণ সামনের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় রাজস্বের ক্ষেত্রে বিচক্ষণতা ও কৌশলগত পরিকল্পনার জরুরি প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে।
আরও পড়ুন: এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার-সোনালির দাম বেড়েছে ১০-৩০ টাকা
৮ মাস আগে
আগামী দুই অর্থবছরে রাজস্ব সংগ্রহের উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা সরকারের
২০২৪-২৫ ও ২০২৫-২৬ অর্থবছরে উচ্চাভিলাষী রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ সরকার।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য এ লক্ষামাত্রা ৫ হাজার ৮৭২ বিলিয়ন এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ হাজার ৯৭ বিলিয়ন টাকা। তবে ডিজিটালাইজেশনের পরিধি বাড়ানো এবং ব্যক্তি ও ব্যবসা ক্ষেত্রে কর পদ্ধতি সহজ করার ওপর এ বিষয়টি নির্ভর করছে।
এছাড়াও রাজস্ব বাড়াতে প্রত্যক্ষ কর ও মূল্য সংযোজন করের ওপর নজর দিচ্ছে সরকার। কর নেট সম্প্রসারণ ও কর কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি কর অব্যাহতির যে ব্যাপক সুযোগ রয়েছে সে বিষয়টি যৌক্তিকতা যাচাই করতে এবং বাজেট বক্তৃতায় আরও স্বচ্ছতা আনতে সরকার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি (২০২৪-২৫ থেকে ২০২৫-২৬) অনুযায়ী, কর রাজস্ব খাত থেকে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রায় ৫ হাজার ৩৪৩ বিলিয়ন টাকা এবং ২০২৫-২৬ সালে ৬ হাজার ৪৬৩ বিলিয়ন টাকা আসবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আগামী দুই অর্থবছরে যথাক্রমে ৫০ হাজার ৯৫ কোটি টাকা এবং ৬ হাজার ১৭১ কোটি টাকা দেবে।
আরও পড়ুন: চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে বাংলাদেশের জিডিপি বৃদ্ধি পেয়েছে ৬.০৭%
আয়কর শাখা থেকে, আগামী অর্থবছরের জন্য প্রাক্কলিত সংগ্রহ হবে ১ হাজার ৭৫৩ বিলিয়ন টাকা এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ২ হাজার ১২৩ বিলিয়ন টাকা। আমদানি শুল্ক থেকে আদায় হবে যথাক্রমে ১ হাজার ৫১১ বিলিয়ন টাকা এবং ১ হাজার ৮৩০ বিলিয়ন টাকা।
আর ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক থেকে রাজস্ব আদায় হবে যথাক্রমে ১ হাজার ৮৩১ বিলিয়ন টাকা এবং ২ হাজার ২১৮ বিলিয়ন টাকা।
২০২৪-২৫ ও ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য এনবিআর বহির্ভূত কর হবে যথাক্রমে ২৪৮ বিলিয়ন টাকা এবং ২৯২ বিলিয়ন টাকা।
কর বহির্ভূত রাজস্ব আদায় হবে যথাক্রমে ৫২৯ বিলিয়ন টাকা এবং ৬৩৪ বিলিয়ন টাকা।
চলমান ২০২৩-২৪ অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা ৪ হাজার ৫০০ বিলিয়ন টাকা রাজস্ব করসহ মোট ৫ হাজার বিলিয়ন টাকা। মোট রাজস্বের মধ্যে এনবিআর থেকে আসবে ৪ হাজার ৩০০ বিলিয়ন টাকা, যার মধ্যে আয়কর থেকে ১ হাজার ৪৮০ বিলিয়ন টাকা, আমদানি শুল্ক থেকে ১ হাজার ২৭৫ বিলিয়ন টাকা, ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক থেকে ১ হাজার ৫৪৫ বিলিয়ন টাকা।
অন্যদিকে এনবিআর বহির্ভূত খাত থেকে প্রায় ২০০ বিলিয়ন টাকা এবং কর বহির্ভূত রাজস্ব খাত থেকে ৫০০ বিলিয়ন টাকা আদায় করা হবে।
আরও পড়ুন: চলতি অর্থবছর ফেব্রুয়ারিতে সর্বোচ্চ ২১৬ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে বাংলাদেশে
মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি অনুসারে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য প্রাক্কলিত রাজস্ব আয় এবং পরবর্তী দুই বছরের আনুমানিক রাজস্ব আয়ে যে উচ্চ স্থিতিস্থাপকতা এবং ক্রমবর্ধমান প্রবৃদ্ধি দেখা যায়, তাতে রাজস্ব সংগ্রহের জোরালো আভাস পাওয়া যায়।
এতে উল্লেখ করা হয়েছে, রাজস্ব সংগ্রহে কর ও কর-বহির্ভূত অংশগুলোর মধ্যে, কর-বহির্ভূত অংশের তুলনায় কর রাজস্ব আরও ক্রিয়াশীল ও স্থিতিস্থাপক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এছাড়াও এই তথ্যউপাত্তে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ন্যূনতম জিডিপি থেকে সামগ্রিক রাজস্ব ১ দশমিক ৬৫ গুণ বেশি বাড়বে বলে অনুমান করা হয়েছে।
বিবৃতি অনুসারে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য জিডিপির রাজস্ব স্থিতিস্থাপকতা গত অর্থবছরের তুলনায় ১ দশমিক ২৮ গুণ বেশি এবং পরবর্তী অর্থবছরে এটি ১ দশমিক ৪০ গুণ বেশি হবে বলে অনুমান করা হয়েছে।
চলতি অর্থবছরে জিডিপির কর রাজস্ব স্থিতিস্থাপকতা ১ দশমিক ৩৩ গুণ বেশি হবে, যা পরবর্তী অর্থবছরে ১ দশমিক ৫০ গুণ বেশি এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ১ দশমিক ৬৬ গুণ বেশি হবে।
চলমান অর্থবছরের জন্য জিডিপির কর-বহির্ভূত রাজস্ব স্থিতিস্থাপকতা চলতি অর্থবছরে ০.৯২ গুণ বেশি, পরবর্তী অর্থবছরে ০.৪৭ গুণ বেশি এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ১.৫৭ গুণ বেশি হবে।
অন্যদিকে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে করের রাজস্ব প্রকৃত জিডিপির প্রবৃদ্ধির চেয়ে ৯৮ শতাংশ বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
নীতি বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, রাজস্ব সংগ্রহ একটি দেশের উন্নয়ন করতে অনুঘটক হিসেবে কাজ করে। বাংলাদেশ ২০৩১ সালে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালে একটি উন্নত দেশ হতে দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনা (২০২১-২০৪১)’- অনুযায়ী রাজস্ব-জিডিপি অনুপাত ২০৩১ সালের মধ্যে ১৯.৫৫ শতাংশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ২৪ শতাংশে পৌঁছানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ২০২৫-২৬ অর্থবছরের মধ্যে জিডিপির ১১.২% কর আদায়ের লক্ষ্য সরকারের
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, গত কয়েক দশকে বাংলাদেশ চমকপ্রদ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, তবে বাংলাদেশ সমন্বিত রাজস্ব প্রবৃদ্ধি অর্জন হয়নি। রাজস্বের একটি বড় অংশ আসে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সংগৃহীত প্রত্যক্ষ (আয়কর) এবং পরোক্ষ কর (ভ্যাট এবং শুল্ক) থেকে। এছাড়াও এনবিআরবহির্ভূত কর এবং কর বহির্ভূত রাজস্ব (এনটিআর) হিসেবেও সামান্য অংশ আসে।
এতে বলা হয়েছে, পরবর্তী ধাপে যাওয়ার জন্য কম রাজস্ব সংগ্রহের কারণগুলো চিহ্নিত করতে হবে। অর্থনৈতিক কাঠামো (বৃহৎ অনানুষ্ঠানিকতা এবং অব্যাহতি), কাঠামোগত দুর্বলতা (জটিল প্রক্রিয়া এবং তথ্যের অসামঞ্জস্য) এবং সাংস্কৃতিক কারণ (কর প্রদানের প্রতি উদাসীনতা) কম রাজস্ব সংগ্রহের উল্লেখযোগ্য কারণ।
নীতিগত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বেসরকারি খাতে সহায়তা নিয়ে সরকার কর প্রদান পদ্ধতি সহজীকরণ, কর বিধি যেন সহজে বুঝা যায় এবং কর অব্যাহতি যেন যৌক্তিক হয় সে নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী।
এতে আরও বলা হয়, কর প্রশাসনের সঙ্গে সহজে যোগাযোগের সুযোগ, স্বচ্ছতা ও অনুমানযোগ্যতা আনতে ডিজিটালাইজেশন বাড়ানো এবং কর ব্যবস্থায় গতিশীলতা আনার মাধ্যমে রাজস্ব সংগ্রহে সাফল্য জোরদার করা সম্ভব হবে।
আরও পড়ুন: এডিবি'র সর্বশেষ প্রতিবেদন: ২০২৪ অর্থবছরকে বাংলাদেশের জন্য একটি ভালো বছর হিসেবে পূর্বাভাস
৯ মাস আগে
৭ মাসে ২ লাখ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় এনবিআরের, প্রবৃদ্ধি ১৫ শতাংশের বেশি
২০২৩-২৪ অর্থবছরের ৭ মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আদায় বেড়েছে ১৫.০৯ শতাংশ। যা চলতি অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার ৫১ শতাংশ।
৭ মাসে ২ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে প্রায় ১ লাখ ৯৮ হাজার টাকা সংগ্রহ করেছে রাজস্ব বোর্ড। এতে রাজস্ব সংগ্রহ বৃদ্ধি পেলেও লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব ঘাটতি রয়েছে ১৭ হাজার ৭৫১ কোটি টাকা।
বাজেটে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা হিসাব করলে ঘাটতি আরও বেশি হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
চলতি অর্থবছরের বাজেটে এনবিআরকে লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। তবে সম্প্রতি এই লক্ষ্যমাত্রা সংশোধন করে ৪ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে।
৯ মাস আগে
আইএমএফ ৪.৭০ বিলিয়ন ডলার ঋণের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা শিথিল করেছে
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশের জন্য ৪ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলারের ঋণ প্যাকেজের বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ, রাজস্ব সংগ্রহ, জ্বালানির স্বয়ংক্রিয় মূল্য সমন্বয়সহ বেশ কয়েকটি লক্ষ্য শিথিল করেছে।
চলতি বছরের শুরুতে আইএমএফ ঋণ প্যাকেজের শর্ত হিসেবে সেপ্টেম্বরের মধ্যে ২৫ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন ডলার এবং আগামী বছরের জুনের মধ্যে ২৬ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে।
রিজার্ভ গণনা পদ্ধতি বিপিএম৬ অনুযায়ী, বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২১ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার।
নিট ভিত্তিতে, এই পরিমাণ আরও হ্রাস পেয়ে ১৮ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে।
আরও পড়ুন: আইএমএফকে ঋণের পরবর্তী কিস্তির জন্য প্রয়োজনীয় রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারে নামিয়ে আনার আহ্বান বাংলাদেশের
এ অবস্থায় বৈদেশিক মুদ্রার মজুদের লক্ষ্যমাত্রা শিথিল করার জন্য আইএমএফকে অনুরোধ করেন অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা।
সেই অনুরোধ বিবেচনায় আইএমএফ লক্ষ্যমাত্রা শিথিল করেছে। চলতি বছরের ডিসেম্বর শেষে রিজার্ভ ১৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার এবং আগামী বছরের জুন শেষে ২০ বিলিয়ন ডলারে রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার ও বুধবার সফররত আইএমএফ প্রতিনিধি দল অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন।
অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আলোচনার পর আইএমএফ কিছু শর্তে নমনীয় হতে সম্মত হয়। সভায় সরকারের পক্ষে নেতৃত্ব দেন অর্থ সচিব মো. খায়রুজ্জামান মজুমদার। আইএমএফ মিশনের নেতৃত্বে ছিলেন আইএমএফের এশিয়া-প্যাসিফিক বিভাগের প্রধান রাহুল আনন্দ।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে বৈঠক করেছে আইএমএফ দল
চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির হার কমিয়ে ৬ শতাংশ করেছে আইএমএফ
১ বছর আগে
জুলাই-আগস্টে রাজস্ব কমেছে ৪৮৭০ কোটি টাকা: এনবিআর
চলতি অর্থবছরের জুলাই-আগস্টে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা কম রাজস্ব সংগ্রহ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সরকারি প্রতিষ্ঠানটির দেওয়া তথ্যে এই ঘাটতির বিষয়টি উঠে এসেছে।
এনবিআরের তথ্যমতে, জুলাই-আগস্ট মাসে ৫০ হাজার ৩২১ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। এর মধ্যে আদায় হয়েছে ৪৬ হাজার ২৩৩ কোটি টাকা। ঘাটতি সত্ত্বেও, এই দুই মাসে রাজস্ব সংগ্রহ ১৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে সর্বোচ্চ রাজস্ব এসেছে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) থেকে। তবে ভ্যাট ও আয়কর খাতের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হয়নি।
আরও পড়ুন: আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার সময় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ল: এনবিআর
জুলাই-আগস্টে ১৯ হাজার ৮৫ কোটি টাকা ভ্যাট আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে আদায় হয়েছে ১৭ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। প্রবৃদ্ধি ১৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ হলেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ হাজার ১৪৪ কোটি টাকা ঘাটতি রয়েছে।
একই সময়ে জুলাই-আগস্টে আয়কর ও ভ্রমণ কর আদায় কমেছে ২ হাজার ৯৫৮ কোটি ১৬ লাখ টাকা। এটির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৫ হাজার ৫৯ কোটি টাকা এবং সংগ্রহ হয়েছে ১২ হাজার ১০০ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। লক্ষ্যমাত্রার ঘাটতি সত্ত্বেও, কর আদায়ে ১৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
আরও পড়ুন: এনবিআর ২৩’ অর্থবছরে ভ্যাট থেকে সর্বোচ্চ ১.২৫ লাখ কোটি টাকা আয় করেছে
বৈদেশিক মুদ্রার সংকট সত্ত্বেও আমদানি-রপ্তানি থেকে শুল্ক আদায় তুলনামূলকভাবে বেড়েছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে শুল্কের ১৬ হাজার ১৭৭ কোটি ৫ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রা ধরে আদায় হয়েছে ১৬ হাজার ১৯২ কোটি ১২ লাখ টাকা। এ খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ দশমিক ৯৪ শতাংশ এবং শুল্ক থেকে ১৪ কোটি ৫ লাখ টাকা বেশি রাজস্ব এসেছে।
চলতি অর্থবছরে এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ভ্যাট থেকে ১ লাখ ৫৯ হাজার ১০০ কোটি টাকা, আয়কর থেকে ১ লাখ ৫৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকা এবং আমদানি-রপ্তানি শুল্ক থেকে ১ লাখ ১৬ হাজার ১০০ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: কাস্টমসের ২৭০ কর্মকর্তাকে বদলি করেছে এনবিআর
১ বছর আগে
৭৫ হাজার কোটি টাকার কম রাজস্বে বাড়বে বাজেট ঘাটতি: সিপিডি
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) জানিয়েছে যে চলতি অর্থবছরে (২০২২-২৩) রাজস্ব ঘাটতি প্রায় ৭৫ হাজার কোটি টাকা হবে, যার ফলে বাজেট ঘাটতি আরও বাড়বে।
এতে বলা হয়েছে, ‘সরকার চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ৫৪ হাজার ৫০১ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে চলতি অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার পরিমাণ বেড়ে ৭৫ হাজার ৩৯৩ কোটি টাকা হয়েছে, এটি সামষ্টিক অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।’
সিপিডি ইঙ্গিত দিয়েছে যে সরকার দেশীয় উৎস (ব্যাংক) থেকে ঋণ গ্রহণ করলে অর্থনীতিতে মুদ্রাস্ফীতিমূলক ব্যবস্থা তৈরি হবে। বরং এটি পরামর্শ দেয় যে সরকারের উচিত বিদেশি অর্থায়নে বাজেটের সহায়তা জোগাড় করাকে অগ্রাধিকার দেওয়া।
শনিবার ধানমন্ডিতে সিপিডির কার্যালয়ে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ডক্টর ফাহমিদা খাতুন বাংলাদেশের অর্থনীতির থিঙ্ক-ট্যাঙ্কের পর্যায়ক্রমিক পর্যালোচনা উপস্থাপন করেন, এটি ২০২২-২৩ অর্থবছরের তৃতীয় পর্যালোচনা।
আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমলেও অভ্যন্তরীণ বাজারে এর প্রভাব দেখা যাচ্ছে না বলে তিনি উল্লেখ করেন।
সিপিডি জানিয়েছে, বিপিসি’র গত সাত বছরে অর্থবছর ২০১৫-১৬ থেকে ২০২১-২২ অর্থবছরে মোট মুনাফা ছিল প্রায় ৪৩ হাজার ৮০৪ কোটি টাকা। আয়কর হিসাবে সাত হাজার ৭২৭ কোটি টাকা দেওয়ার পরে বিপিসির নিট মুনাফা ছিল ৩৬ হাজার ৭৪ কোটি টাকা।
এতে বলা হয়েছে, একচেটিয়া ও রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান হওয়ায় দেশের নাগরিকদের জরিমানা করে ক্ষতিপূরণ লাভ করা ন্যায়সঙ্গত হতে পারে না।
থিঙ্ক ট্যাঙ্ক সরকারকে মধ্যপ্রাচ্যের পরিবর্তে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে অভ্যন্তরীণ রেমিট্যান্স বৃদ্ধির দিকে নজর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে, যেখানে বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি প্রবাসী কাজ করছে।
আরও পড়ুন: নির্বাচনী বছরের বাজেটের আগে মূল্যস্ফীতি, রাজস্ব ঘাটতি ও ডলার সংকট অর্থনীতির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ
থিঙ্ক ট্যাঙ্কটি বলেছে যে ২০২১-২২ অর্থবছরের ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) সৌদি আরব থেকে দেশে প্রায় তিন দশমিক ৮৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল, কিন্তু চলতি অর্থবছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স কমে তিন দশমিক ০৪ বিলিয়ন হয়েছে।
সিপিডি সন্দেহ করছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিট্যান্সের আকস্মিক বৃদ্ধির কারণে বাণিজ্যভিত্তিক মানি লন্ডারিংয়ের বিভিন্ন আকারে বাংলাদেশ থেকে আমেরিকায় পাঠানো চোরাচালানকৃত অর্থের পুনর্ব্যবহার হচ্ছে।
এটি দাম কমানোর জন্য সাময়িকভাবে স্বস্তি হিসাবে সাধারণ মানুষের ব্যবহৃত দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় পণ্যের শুল্ক কমানোর পরামর্শ দিয়েছে। সেক্ষেত্রে বাজার মনিটরিংও প্রয়োজন।
সিপিডির দৃষ্টিতে দরিদ্রদের সরাসরি সহায়তার সুযোগ বাড়ানো দরকার। সঠিক মানুষ পাচ্ছে কিনা তাও নিশ্চিত করতে হবে।
এটি উল্লেখ করেছে, রপ্তানি প্রবৃদ্ধির হার ইতিবাচক নয় এবং লক্ষ্যমাত্রার কম হচ্ছে। মে ও জুন মাসে (চলতি অর্থবছরের শেষ দুই মাস) তা ৪১ শতাংশ বাড়াতে হবে, যা খুবই কঠিন।
বিভিন্ন বিষয়ে বক্তব্য দেন বিশিষ্ট ফেলো অধ্যাপক ডা. মুস্তাফিজুর রহমান, গবেষণা পরিচালক অধ্যাপক খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম হোসেন, সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান প্রমুখ।
আরও পড়ুন: আসন্ন বাজেটে ওয়াশ খাতের বরাদ্দে অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান
১ বছর আগে
রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে দৃঢ় রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি ও মৌলিক সংস্কার প্রয়োজন: পিআরআই
প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ এবং পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) এর নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, শুধুমাত্র শক্তিশালী রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মৌলিক সংস্কারই বাংলাদেশের কর-জিডিপি অনুপাতকে উন্নত করতে পারে। রবিবার প্রাক-বাজেট প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ঋণের সুদ পরিশোধ, পেনশন সুবিধা এবং সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে ৩ লাখ কোটি টাকার বেশি বাজেট ব্যয় হয়েছে।
মনসুর বলেন, সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও বিদ্যমান রাজস্ব ও কর নীতির ব্যর্থতার কারণে রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা এবং অর্জনের মধ্যে ব্যবধান প্রতি অর্থবছরে বাড়ছে।
এই অর্থনীতিবিদ জানান, ব্যাংক, এনবিআর এবং অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং নিয়ন্ত্রকদের ব্যাপক সংস্কার ছাড়া এই খাতে আইএমএফের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা একেবারেই অসম্ভব।
একটি উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, গত ৯ মাসে প্রায় ৩৩ শতাংশ আমদানি কমিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করেছে। বিনিময় হার নিয়ন্ত্রণের কারণে এমনটা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন পিআরআই-এর চেয়ারম্যান ড. জাইদী সাত্তার এবং পিআরআই এর গবেষণা পরিচালক ড. মুহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক।
১ বছর আগে
বাংলাদেশ অনানুষ্ঠানিক খাত থেকে ৮৪ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে: সিপিডি
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সমীক্ষায় দেখা গেছে, অনিয়ম, প্রতিষ্ঠানের অক্ষমতা এবং কর ফাঁকির প্রবণতার কারণে বাংলাদেশ প্রতি বছর ৮৪ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব হারিয়েছে।
সমীক্ষায় আরও দেখা গেছে যে, প্রায় ৬৮ শতাংশ মানুষ করযোগ্য আয় করার পরেও আয়কর দেন না।
সোমবার থিঙ্ক ট্যাঙ্ক সিপিডি তাদের ধানমন্ডি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ গবেষণা পত্রটি উপস্থাপন করে।
গবেষণাটির শিরোনাম দেওয়া হয়েছে ‘কর্পোরেট ট্যাক্স ট্রান্সপারেন্সি ইস্যুস অ্যান্ড কনসার্নস ইন বাংলাদেশ এর ইমপ্লিকেশনস অন ট্যাক্স লস অ্যান্ড সোশ্যাল স্পেন্ডিং।’
আরও পড়ুন: ২০২২ সালে বাংলাদেশে ব্যবসার পরিবেশের অবনতি হয়েছে: সিপিডি
গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম এবং অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।
মোয়াজ্জেম বলেন, করযোগ্য আয় করেও ৬৮ শতাংশ মানুষ আয়কর দেন না। অর্থাৎ দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ কর দেওয়ার যোগ্য থাকা সত্ত্বেও কর দেন না। তাই কর জিডিপি অনুপাত না বাড়ার এটাই বড় কারণ।
অন্যদিকে, জয়েন্ট স্টক কোম্পানিতে দুই লাখ ১৩ হাজার কোম্পানি নিবন্ধিত হলেও রিটার্ন দাখিল করেছে মাত্র ৪৫ হাজার কোম্পানি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে অনানুষ্ঠানিক খাতের আয়তন জিডিপির ৩০ শতাংশ। ২০১০ সালে অনানুষ্ঠানিক খাতে করের পরিমাণ ছিল ২২ হাজার কোটি টাকা, যা ২০২১ সালে বেড়ে ৮৪ হাজার কোটি টাকা হয়েছে।
ছায়া অর্থনীতিতে প্রায় ৮৪ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব হারায়, যাকে অনানুষ্ঠানিক অর্থনীতিও বলা হয়।
গবেষণায় বলা হয়েছে, এ অর্থ অন্তর্ভুক্ত হলে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ব্যয় তিনগুণ হতে পারে। অর্থাৎ করনেট বৃদ্ধির প্রধান প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত।
মোয়াজ্জেম আরও বলেন, একটি বড় অংশ করের বাইরে রয়ে গেছে, যার ফলে কর লস দিন দিন বাড়ছে।
আরও পড়ুন: আগামী জাতীয় বাজেটে মূল্যস্ফীতিতে ক্ষতিগ্রস্ত সরকারি-বেসরকারি কর্মচারীদের বিশেষ বেতন বৃদ্ধির প্রস্তাব সিপিডির
সিপিডি রাজনৈতিক লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে: কৃষিমন্ত্রী
১ বছর আগে