রাজস্ব
এক বছর আগে রাজস্ব হার প্রকাশ করা হবে: এনবিআর চেয়ারম্যান
এক বছর আগেই কর পরিকল্পনা প্রকাশ করবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), যাতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো পরবর্তী বছরের জন্য প্রস্তুত হতে পারে। শনিবার (২২ মার্চ) রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) মিলনায়তনে ‘অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আহরণ’ শীর্ষক কর্মশালায় এসব কথা বলেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান।
তিনি বলেন, ‘অপ্রয়োজনীয় সংবিধিবদ্ধ নিয়ন্ত্রক আদেশ (এসআরও) জারি করবে না এনবিআর। কারণ এতে বছরের মাঝামাঝিতে এসে রাজস্ব হারের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।’
ইআরএফ ও রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র্যাপিড) যৌথভাবে এ কর্মশালা আয়োজন করে।
কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) থাকা সত্ত্বেও যারা আয়কর রিটার্ন দেন না, তাদের নোটিশ দেওয়া শুরু হয়েছে বলে জানান এনবিআর চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, আমরা নোটিশ দেওয়া শুরু করেছি। এখন লোকজন হয়তো বলা শুরু করবে যে আমরা তো খুব ঝামেলায় আছি।
তিনি আরও জানান, আগামী বাজেটে নতুন করে কোনো কর অব্যাহতি দেওয়া হবে না। আমরা চিন্তা করেছি, বিদ্যমান কর অব্যাহতিও কমাব, উঠিয়ে দেব এবং যারা কম হারে দেয়, তাদের বাড়িয়ে দেব। নতুন কোনো কর অব্যাহতি দেওয়া হবে না।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন র্যাপিডের নির্বাহী পরিচালক আবু ইউসুফ।
আরও পড়ুন: বিস্কুটে ভ্যাট অর্ধেকে নামিয়ে আনল এনবিআর
আগামী বাজেট কেমন হতে পারে, জানতে চাইলে আবদুর রহমান খান বলেন, প্রকৃত অর্থে আগামী বাজেট হবে ব্যবসাবান্ধব ও জনকল্যাণমুখী। কিছুদিন ধরে এনবিআর যে কাজগুলো করেছে, এর মাধ্যমে বিষয়টি আপনারা টেরও পেয়েছেন।
এনবিআর চেয়ারম্যান জানান, এ বছর দুবার সয়াবিন তেলের শুল্ক কমানো হয়েছে; দুবার চিনির শুল্ক কমানো হয়েছে। এ ছাড়া খেজুর, ডাল, ডিম, চাল, পেঁয়াজ প্রভৃতি পণ্য আমদানিতে শুল্ক কমিয়েছি। তার সুফলও পাওয়া গেছে।
‘এতে (শুল্কছাড়ের ফলে) আমরা কয়েক হাজার কোটি টাকা রাজস্ব হারিয়েছে। তবে আমরা সেগুলো চিন্তা করিনি। আমরা জনস্বার্থ চিন্তা করেছি,’ বলেন তিনি।
৪২ দিন আগে
ভোমরা স্থলবন্দরে আমদানি কমলেও বেড়েছে রাজস্ব
চলতি অর্থবছরে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি কমলেও রাজস্ব আয় বেড়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ। গত অর্থবছরের প্রথম আট মাসের তুলনায় চলতি অর্থবছরের একই সময়ে বন্দরে পণ্য আমদানিতে সরকারের রাজস্ব আয় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৬২ কোটি টাকা বেশি হয়েছে।
বন্দর সংশ্লিষ্ট ও ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, আমদানিকৃত পণ্যের মূল্য বেশি হওয়ায় রাজস্ব আয় বেড়েছে।
ভোমরা শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব শাখা থেকে জানা গেছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ভোমরা স্থলবন্দরের জন্য চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-জুন পর্যন্ত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে ৯৪৬ কোটি ২৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে গেল আট মাসের অর্থাৎ জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয় ৫৮৯ কোটি ৪২ লাখ টাকা। কিন্তু বন্দরটিতে ওই লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রাজস্ব আয় হয়েছে ৭৫১ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৬২ কোটি ২৪ লাখ টাকা বেশি।
অন্যদিকে গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৮৫৩ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। যার প্রথম আট মাসের রাজস্ব আদায় লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয় ৪৯৫ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। অথচ ওই লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয় ৫০৮ কোটি ৪ লাখ টাকা। এ হিসাব অনুযায়ী চলতি অর্থবছরে রাজস্ব বেড়েছে ২৪৩ কোটি ২৬ লাখ টাকা।
ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়শনের সভাপতি আবু হাসান জানান, ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি কম হলেও সরকারের রাজস্ব বেড়েছে। তবে বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীরা যদি সব ধরনের পণ্য আমদানি করতে পারতো, তাহলে রাজস্ব আয় আরও কয়েকগুণ বেশি হতো।
আরও পড়ুন: বন্দর থেকে নিধারিত সময়ে পণ্য না নিলে তিনগুণ জরিমানা: নৌ উপদেষ্টা
‘কিন্তু এখানকার ব্যবসায়ীরা সব প্রকার পণ্য আমদানি করতে পারেন না। তাছাড়া অন্যান্য বন্দরের তুলনায় ভোমরা বন্দর অনেক বৈষম্যের শিকার। পাশেই বেনাপোল বন্দরে ফল আমদানিতে ব্যবসায়ীরা যে সুযোগ-সুবিধা পায়, ভোমরাতে তা পায় না। অথচ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের খুবই সম্ভাবনাময় স্থলবন্দর ভোমরা। এখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা যেমন ভালো, তেমনি বন্দরে পণ্য বা যানজট থাকে না। সহজে বন্দর ত্যাগ করতে পারে পণ্যবাহী পরিবহনগুলো।’
ভোমরা শুল্ক স্টেশনের দায়িত্ব থাকা কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার আবুল কালাম আজাদ জানান, গত আট মাসের রাজস্ব আয় লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৮৯ কোটি ৪২ লাখ টাকা। সেখানে আদায় হয়েছে ৭৫১ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রাজস্ব আয় বেড়েছে ১৬২ কোটি ৪২ লাখ টাকা। এ ধারাবাহিকতা বজায় রাখায় চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তাছাড়া বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ী ও যাত্রী সাধারণ যাতে সর্বোচ্চ সেবা পায় সে দিকটাও লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি কেউ অনৈতিক সুযোগ যাতে নিতে না পারে সে ব্যবহারের কঠোরভাবে খেয়াল করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
৫৪ দিন আগে
আমদানি কমলেও বেনাপোল কাস্টমসে রাজস্ব আদায় বেড়েছে
বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি কমলেও প্রথম ৬ মাসে রাজস্ব আহরণ বেড়েছে ১৬ শতাংশের বেশি।
বেনাপোল কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব পড়েছে আমদানিতে। এর ফলে কমেছে বাণিজ্যের গতি। তবুও রাজস্ব আদায়ের ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে বেনাপোল কাস্টম হাউস।
চলতি অর্থবছরে এই স্থলবন্দর থেকে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৬ হাজার ৭০৫ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল, গত অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ হাজার ৯৪৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত অর্থবছরের তুলনায় এবার ৭৫৭ কোটি টাকা বেশি আদায়ের লক্ষ্য রয়েছে।
সূত্র জানায়, যদিও এ সময়ে স্থলবন্দরটি দিয়ে আগের তুলনায় আমদানি ৬ শতাংশ কমেছে, তা সত্ত্বেও এই অর্জনের মধ্য দিয়ে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১৬ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। একই সঙ্গে পৌঁছে গেছে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রার দ্বারপ্রান্তে। এই সময় (জুলাই-ডিসেম্বর) ৩ হাজার ২২৫ কোটি টাকা রাজস্ব সংগ্রহ করেছে প্রতিষ্ঠানটি, যা বছর জুড়ে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার প্রায় অর্ধেক।
আরও পড়ুন: দুইদিন বন্ধ থাকার পর বেনাপোল বন্দর দিয়ে ফল আমদানি শুরু
বেনাপোলে বন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি মহসিন মিলন বলেন, ‘বৈশ্বিক মন্দা, ডলারের বিনিময় হারে ঊর্ধ্বগতি আর সংকটের কারণে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো গত কয়েক বছর ধরে এলসি (লেটার অব ক্রেডিট) খোলার সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছে। এতে আমদানি কমায় বছরের শুরুতে রাজস্ব ঘাটতি ছিল প্রায় দ্বিগুণ। তবে বছরের শেষে উচ্চ শুল্কহারে পণ্য আমদানি বেশি হওয়ায় কাস্টম হাউসের রাজস্ব আদায় বেশি হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্য সহজ করতে বেনাপোল বন্দরের শূন্য রেখায় ৪১ একর জমিতে চালু হয়েছে কার্গোভেহিকেল টার্মিনাল, যা বন্দরের সক্ষমতা বাড়িয়েছে। এই টার্মিনাল চালুর ফলে বাণিজ্য সম্প্রসারণের নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, যা ভবিষ্যতে আমদানি ও রাজস্ব আদায় বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা পালন করবে।’
বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কমিশনার মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘বছরজুড়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা আর ব্যাংকে তারল্য সংকটে আমদানি কমলেও ডলারের বাড়তি দাম ও কাস্টমসের নানা পদক্ষেপে রাজস্ব থেকে আয় বেড়েছে। আমদানি কিছুটা কমলেও রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধি ১৬ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ হয়েছে। সবার সহযোগিতায় রাজস্ব আয়ে সফলতা এসেছে।’
৮৪ দিন আগে
রাজস্ব আদায় বাড়ানোর উপায় খুঁজছে বাংলাদেশ
রাজস্ব আহরণ জোরদার করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য সম্ভাবনা রয়েছে, যা রাজস্ব বৃদ্ধির ওপর সাম্প্রতিক সরকারি মূল্যায়নে তুলে ধরা হয়েছে। এটি একটি পরিমাপ, যা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে কর ও রাজস্ব কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায় তা প্রতিফলিত করে।
রাজস্ব উচ্ছাস, মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) রাজস্বের প্রতিক্রিয়াশীলতা, রাজস্ব ব্যবস্থার কার্যকারিতা এবং রাজস্ব বৃদ্ধির পূর্বাভাস পরিমাপের একটি গুরুত্বপূর্ণ মানদন্ড।
একের বেশি একটি উচ্ছাস সহগ ইঙ্গিত দেয় যে, যখন একের চেয়ে কম সহগ ধীর বৃদ্ধির পরামর্শ দেয়, তখন করের রাজস্ব জিডিপির তুলনায় দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
প্রকৃত জিডিপি এবং ২০১২ অর্থবছর থেকে ২০২৩ অর্থবছর পর্যন্ত প্রকৃত রাজস্ব বৃদ্ধির হার ব্যবহার করে এক বিশ্লেষণে শূন্য দশমিক ৯০ এর গড় রাজস্ব উচ্ছাস পাওয়া গেছে, যার অবস্থান একের নিচে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের নথিতে বলা হয়েছে, এই নিম্ন স্কোর বাংলাদেশে রাজস্ব আহরণ বাড়ানোর সুযোগকে তুলে ধরে।
সরকারি মূল্যায়নে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, কার্যকর করের হার রাজস্ব কর্মক্ষমতার আরেকটি পরিমাপ হিসাবে কাজ করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ভ্যাটের কার্যকর হার বাস্তব খাত থেকে ভোগের তথ্যের সঙ্গে তুলনা করে প্রাপ্ত করা যেতে পারে।
আরও পড়ুন: হয়রানি রোধ ও স্বচ্ছতা বাড়াতে কর নিরীক্ষা বাছাইকে ডিজিটালাইজেশনের উদ্যোগ এনবিআরের
বিশ্লেষণে দেখা যায়, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কার্যকর ভ্যাটের হার বেড়েছে, যা ২০২৩ অর্থবছরে ৭ দশমিক ১ শতাংশে পৌঁছেছে। তবে এটি বাংলাদেশের বেশিরভাগ পণ্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ১৫ শতাংশ ভ্যাট হারের মানের চেয়ে অনেক কম।
বাংলাদেশের রাজস্ব আদায় এখনো তুলনামূলক অর্থনীতির তুলনায় পিছিয়ে আছে।
২০২২ সালে সাধারণ সরকারের রাজস্ব-জিডিপি অনুপাত ছিল নেপালে ২৩ দশমিক ১ শতাংশ, ভারতে ১৯ দশমিক ৮ শতাংশ এবং লাও পিডিআরে ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ।
অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্তর এবং রাজস্ব সংগ্রহের মধ্যে একটি ইতিবাচক পারস্পরিক সম্পর্ক বিদ্যমান বলে বিস্তৃত ঐকমত্য রয়েছে।
দেশের উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনে কর প্রশাসন ব্যবস্থার কার্যকারিতা, দক্ষতা, স্বচ্ছতা এবং ন্যায্যতা বাড়াতে বড় ধরনের সংস্কারের আহ্বান জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
এই সুবিধাগুলো বৃহত্তর অর্থনীতিকে সমর্থন করে এবং স্বল্প আয়ের গোষ্ঠীর ব্যয়ে ধনী ব্যক্তিদের পক্ষে অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে অনুকূল যাতে না হয় তা নিশ্চিত করতে নথিটি কর ছাড়ের পুনর্বিবেচনার উপরও জোর দেয়। এভাবে রাজস্ব নীতির পুনর্বণ্টনমূলক লক্ষ্যকে ক্ষুণ্ন করে।
ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেওয়ার ক্ষেত্রেও উন্নতির উল্লেখযোগ্য সুযোগ রয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে মাত্র ৩৩ দশমিক ৩ শতাংশ টিআইএনধারী ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল করেছেন, যা একই ধরনের দেশে উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।
অর্থ মন্ত্রণালয় রাজস্ব আহরণ জোরদার করার জন্য বেশ কয়েকটি আধুনিক সংস্কার কৌশলের রূপরেখা তৈরি করেছে।
এর মধ্যে রয়েছে করের ভিত্তি সম্প্রসারণ, একটি আধুনিক সম্পত্তি কর ব্যবস্থা গ্রহণ, সবুজ এবং কার্বন কর প্রবর্তন, কর সংগ্রহ সহজতর করা, ট্যাক্স ফাইলিং এবং পেমেন্ট প্রক্রিয়াগুলো সম্পূর্ণরূপে স্বয়ংক্রিয় করা এবং কর সংগ্রহকারী এবং করদাতাদের মধ্যে সরাসরি মিথস্ক্রিয়া হ্রাস করা।
আরও পড়ুন: কর ফাঁকিবাজদের চিহ্নিত করতে ডাটা অটোমেশনে ঝুঁকছে এনবিআর
অন্যান্য কৌশলগুলোর মধ্যে রয়েছে নিরীক্ষাগুলোকে আরও নির্বাচনমূলক, উৎপাদনশীল এবং মানদণ্ডভিত্তিক করার পাশাপাশি কর নীতিনির্ধারণকে কর সংগ্রহ থেকে পৃথক করা।
মোট রাজস্বে আয়কর ও ভ্যাটের অংশ বৃদ্ধি করে সরকার এ লক্ষ্যে অগ্রগতি সাধন করেছে।
তবে এখনও পরোক্ষ করের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে প্রত্যক্ষ করের ওপর বেশি নজর দিতে হবে।
মোট রাজস্বে প্রত্যক্ষ করের প্রকৃত অংশ ছিল ২০২১ অর্থবছরে ৩২ দশমিক ৩ শতাংশ, যা অর্থবছর ২০২৩ এ সামান্য বেড়ে ৩২ দশমিক ৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
রাজস্ব প্রবৃদ্ধি বজায় রাখার জন্য সরকার করের ভিত্তি প্রসারিত করার প্রচেষ্টা চালাবে, বাণিজ্য কর থেকে প্রত্যক্ষ করের দিকে নির্ভরতা স্থানান্তর করবে এবং আগামী বছরগুলোতে প্রত্যক্ষ করের প্রবৃদ্ধিকে আরও ত্বরান্বিত করবে।
আরও পড়ুন: রাজস্ব মামলার জট কমাতে জোরদার উদ্যোগ এনবিআরের
১৮২ দিন আগে
উদ্বোধনের পর থেকে পদ্মা সেতুতে টোল আদায় হয়েছে ১৫০০ কোটি টাকা
পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর থেকে সরকারের রাজস্ব বেড়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে। এ সময় পদ্মা সেতু দিয়ে পারাপার হওয়া যানবাহন থেকে ১৫০০ কোটি টাকা টোল আদায় করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে পরিবহন ধর্মঘট চলছে, চরম দুর্ভোগে সাধারণ মানুষ
পদ্মা সেতু সাইট অফিসের অতিরিক্ত পরিচালক আমিরুল ইসলাম চৌধুরী জানান, শনিবার রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত সেতু উদ্বোধনের পর থেকে এ পর্যন্ত ১৫০২ কোটি ৬২ লাখ ১৫ হাজার ৯০০ টাকা টোল আদায় হয়েছে। এ সময় সেতুটি দিয়ে ১ কোটি ১২ লাখ ৯১ হাজার ৯৫টি যানবাহন পারাপার হয়েছে।
২০২৩ সালের ২৫ জুন সেতুটি প্রথম যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়।
ট্রাফিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রায় ৫৬ লাখ ১ হাজার ২৩২টি যানবাহন মাওয়া পয়েন্ট দিয়ে এবং ৫৬ লাখ ৮৯ হাজার ৮৬৩টি যানবাহন জাজিরা পয়েন্ট দিয়ে অতিক্রম করে।
চলতি বছরের ৯ এপ্রিল ৪৫ হাজার ২০৪টি যানবাহন থেকে ৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা আয় করে সেতুটি একদিনে সর্বোচ্চ টোল আদায়ের রেকর্ড গড়ে।
২০২৩ সালের ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতুটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন এবং পরদিন সকালে যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়, যা দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সম্প্রসারণে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হয়।
আরও পড়ুন: রোগীর প্রতি চিকিৎসকের অবহেলা সহ্য করা হবে না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে বৃষ্টির পূর্বাভাস
৩৭০ দিন আগে
বাংলাদেশের রাজস্ব আয়ের ৩৩ শতাংশ ঋণ পরিশোধে ব্যয় হয়: ড. দেবপ্রিয়
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, বাংলাদেশ একটি অনিশ্চিত আর্থিক অবস্থার মধ্যে রয়েছে, যেখানে রাজস্বের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ঋণ পরিশোধে ব্যয় করা হয়।
ড. ভট্টাচার্যের মতে, সরকারের মোট ঋণের দুই-তৃতীয়াংশ অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে আসে, যার ফলে মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ প্রায় ৮৫০ ডলারে পৌঁছায়।
বৃহস্পতিবার(৪ এপ্রিল) রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে এশিয়া ফাউন্ডেশন-বাংলাদেশের অংশীদারিত্বে সিপিডি আয়োজিত 'বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ ও ঋণ পরিশোধের পরিস্থিতি: উদ্বিগ্ন হওয়ার কি কোনো কারণ আছে?' শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
ড. দেবপ্রিয় বাংলাদেশের ঋণ কাঠামোর জটিলতার ওপর আলোকপাত করেন সেমিনারে।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান।
ড. দেবপ্রিয় পরিস্থিতির গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, 'জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশের রাজস্ব ব্যয়ের ৩৪ শতাংশ ঋণ পরিশোধে বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন, এই পরিসংখ্যানে অভ্যন্তরীণ ঋণের জন্য ২৮ শতাংশ এবং বৈদেশিক ঋণের জন্য ৫ শতাংশ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা মাত্র তিন বছরে ২৬ শতাংশ থেকে ৩৪ শতাংশে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে।
আরও পড়ুন: এমপিদের সম্পদের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি তদন্ত করতে হবে: সিপিডির মুস্তাফিজুর রহমান
কোভিড-১৯ মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ২০১৮-১৯ সাল থেকে ঋণ গ্রহণের প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, রাজস্ব বাজেট এখন এতটাই টানাটানি যে, উন্নয়ন প্রকল্পে এক পয়সাও অর্থায়ন করা সম্ভব নয়।
ঋণ পরিশোধের বৃহত্তর প্রভাব তুলে ধরে ড. দেবপ্রিয় অর্থনীতিবিদদের সতর্কবাণীর প্রতি নীতিনির্ধারকদের প্রত্যাখ্যানমূলক মনোভাবের সমালোচনা করেন। তিনি ২০২৪ সালে বাংলাদেশের সামনে চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে দুই বছর আগে করা নিজের ভবিষ্যদ্বাণীর কথা উল্লেখ করেন। ২০২৫ সাল থেকে শুরু করে ২০২৬ সালে ঋণ পরিশোধে প্রত্যাশিত অস্বস্তির ওপর জোর দেন তিনি।
আরও পড়ুন: আ.লীগ ছাড়া সবাই বিদ্যুৎ খাতে ক্যাপাসিটি পেমেন্ট বন্ধ করতে চায়: সিপিডি
তিনি বেসরকারি খাতের ঋণের তাৎপর্য তুলে ধরে বলেন, মোট ঋণের ৮০ শতাংশই সরকারি ঋণ, বাকি ২০ শতাংশ বেসরকারি খাত। তিনি দেশের দায় ও বিনিময় খাতে বেসরকারি খাতের ঋণের প্রভাবের ওপর জোর দিয়ে ব্যক্তিগত ঋণ এবং এর ব্যবহার দেশে বা বিদেশে যেখানেই হোক না কেন, অধিকতর যাচাই-বাছাইয়ের আহ্বান জানান।
বৈদেশিক ও অভ্যন্তরীণ ঋণ একত্রিত করে ড. ভট্টাচার্য মাথাপিছু দায়বদ্ধতার বোঝার উপর জোর দিয়েছিলেন, যা কেবল বৈদেশিক ঋণের জন্য ৩১০ ডলারে দাঁড়িয়েছে এবং অভ্যন্তরীণ ঋণের ক্ষেত্রে প্রায় ৮৫০ ডলারে উন্নীত হয়। বাংলাদেশের ঋণ পরিস্থিতির এই সামগ্রিক বিশ্লেষণ সামনের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় রাজস্বের ক্ষেত্রে বিচক্ষণতা ও কৌশলগত পরিকল্পনার জরুরি প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে।
আরও পড়ুন: এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার-সোনালির দাম বেড়েছে ১০-৩০ টাকা
৩৯৪ দিন আগে
আগামী দুই অর্থবছরে রাজস্ব সংগ্রহের উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা সরকারের
২০২৪-২৫ ও ২০২৫-২৬ অর্থবছরে উচ্চাভিলাষী রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ সরকার।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য এ লক্ষামাত্রা ৫ হাজার ৮৭২ বিলিয়ন এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ হাজার ৯৭ বিলিয়ন টাকা। তবে ডিজিটালাইজেশনের পরিধি বাড়ানো এবং ব্যক্তি ও ব্যবসা ক্ষেত্রে কর পদ্ধতি সহজ করার ওপর এ বিষয়টি নির্ভর করছে।
এছাড়াও রাজস্ব বাড়াতে প্রত্যক্ষ কর ও মূল্য সংযোজন করের ওপর নজর দিচ্ছে সরকার। কর নেট সম্প্রসারণ ও কর কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি কর অব্যাহতির যে ব্যাপক সুযোগ রয়েছে সে বিষয়টি যৌক্তিকতা যাচাই করতে এবং বাজেট বক্তৃতায় আরও স্বচ্ছতা আনতে সরকার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি (২০২৪-২৫ থেকে ২০২৫-২৬) অনুযায়ী, কর রাজস্ব খাত থেকে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রায় ৫ হাজার ৩৪৩ বিলিয়ন টাকা এবং ২০২৫-২৬ সালে ৬ হাজার ৪৬৩ বিলিয়ন টাকা আসবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আগামী দুই অর্থবছরে যথাক্রমে ৫০ হাজার ৯৫ কোটি টাকা এবং ৬ হাজার ১৭১ কোটি টাকা দেবে।
আরও পড়ুন: চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে বাংলাদেশের জিডিপি বৃদ্ধি পেয়েছে ৬.০৭%
আয়কর শাখা থেকে, আগামী অর্থবছরের জন্য প্রাক্কলিত সংগ্রহ হবে ১ হাজার ৭৫৩ বিলিয়ন টাকা এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ২ হাজার ১২৩ বিলিয়ন টাকা। আমদানি শুল্ক থেকে আদায় হবে যথাক্রমে ১ হাজার ৫১১ বিলিয়ন টাকা এবং ১ হাজার ৮৩০ বিলিয়ন টাকা।
আর ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক থেকে রাজস্ব আদায় হবে যথাক্রমে ১ হাজার ৮৩১ বিলিয়ন টাকা এবং ২ হাজার ২১৮ বিলিয়ন টাকা।
২০২৪-২৫ ও ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য এনবিআর বহির্ভূত কর হবে যথাক্রমে ২৪৮ বিলিয়ন টাকা এবং ২৯২ বিলিয়ন টাকা।
কর বহির্ভূত রাজস্ব আদায় হবে যথাক্রমে ৫২৯ বিলিয়ন টাকা এবং ৬৩৪ বিলিয়ন টাকা।
চলমান ২০২৩-২৪ অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা ৪ হাজার ৫০০ বিলিয়ন টাকা রাজস্ব করসহ মোট ৫ হাজার বিলিয়ন টাকা। মোট রাজস্বের মধ্যে এনবিআর থেকে আসবে ৪ হাজার ৩০০ বিলিয়ন টাকা, যার মধ্যে আয়কর থেকে ১ হাজার ৪৮০ বিলিয়ন টাকা, আমদানি শুল্ক থেকে ১ হাজার ২৭৫ বিলিয়ন টাকা, ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক থেকে ১ হাজার ৫৪৫ বিলিয়ন টাকা।
অন্যদিকে এনবিআর বহির্ভূত খাত থেকে প্রায় ২০০ বিলিয়ন টাকা এবং কর বহির্ভূত রাজস্ব খাত থেকে ৫০০ বিলিয়ন টাকা আদায় করা হবে।
আরও পড়ুন: চলতি অর্থবছর ফেব্রুয়ারিতে সর্বোচ্চ ২১৬ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে বাংলাদেশে
মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি অনুসারে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য প্রাক্কলিত রাজস্ব আয় এবং পরবর্তী দুই বছরের আনুমানিক রাজস্ব আয়ে যে উচ্চ স্থিতিস্থাপকতা এবং ক্রমবর্ধমান প্রবৃদ্ধি দেখা যায়, তাতে রাজস্ব সংগ্রহের জোরালো আভাস পাওয়া যায়।
এতে উল্লেখ করা হয়েছে, রাজস্ব সংগ্রহে কর ও কর-বহির্ভূত অংশগুলোর মধ্যে, কর-বহির্ভূত অংশের তুলনায় কর রাজস্ব আরও ক্রিয়াশীল ও স্থিতিস্থাপক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এছাড়াও এই তথ্যউপাত্তে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ন্যূনতম জিডিপি থেকে সামগ্রিক রাজস্ব ১ দশমিক ৬৫ গুণ বেশি বাড়বে বলে অনুমান করা হয়েছে।
বিবৃতি অনুসারে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য জিডিপির রাজস্ব স্থিতিস্থাপকতা গত অর্থবছরের তুলনায় ১ দশমিক ২৮ গুণ বেশি এবং পরবর্তী অর্থবছরে এটি ১ দশমিক ৪০ গুণ বেশি হবে বলে অনুমান করা হয়েছে।
চলতি অর্থবছরে জিডিপির কর রাজস্ব স্থিতিস্থাপকতা ১ দশমিক ৩৩ গুণ বেশি হবে, যা পরবর্তী অর্থবছরে ১ দশমিক ৫০ গুণ বেশি এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ১ দশমিক ৬৬ গুণ বেশি হবে।
চলমান অর্থবছরের জন্য জিডিপির কর-বহির্ভূত রাজস্ব স্থিতিস্থাপকতা চলতি অর্থবছরে ০.৯২ গুণ বেশি, পরবর্তী অর্থবছরে ০.৪৭ গুণ বেশি এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ১.৫৭ গুণ বেশি হবে।
অন্যদিকে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে করের রাজস্ব প্রকৃত জিডিপির প্রবৃদ্ধির চেয়ে ৯৮ শতাংশ বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
নীতি বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, রাজস্ব সংগ্রহ একটি দেশের উন্নয়ন করতে অনুঘটক হিসেবে কাজ করে। বাংলাদেশ ২০৩১ সালে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালে একটি উন্নত দেশ হতে দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনা (২০২১-২০৪১)’- অনুযায়ী রাজস্ব-জিডিপি অনুপাত ২০৩১ সালের মধ্যে ১৯.৫৫ শতাংশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ২৪ শতাংশে পৌঁছানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ২০২৫-২৬ অর্থবছরের মধ্যে জিডিপির ১১.২% কর আদায়ের লক্ষ্য সরকারের
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, গত কয়েক দশকে বাংলাদেশ চমকপ্রদ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, তবে বাংলাদেশ সমন্বিত রাজস্ব প্রবৃদ্ধি অর্জন হয়নি। রাজস্বের একটি বড় অংশ আসে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সংগৃহীত প্রত্যক্ষ (আয়কর) এবং পরোক্ষ কর (ভ্যাট এবং শুল্ক) থেকে। এছাড়াও এনবিআরবহির্ভূত কর এবং কর বহির্ভূত রাজস্ব (এনটিআর) হিসেবেও সামান্য অংশ আসে।
এতে বলা হয়েছে, পরবর্তী ধাপে যাওয়ার জন্য কম রাজস্ব সংগ্রহের কারণগুলো চিহ্নিত করতে হবে। অর্থনৈতিক কাঠামো (বৃহৎ অনানুষ্ঠানিকতা এবং অব্যাহতি), কাঠামোগত দুর্বলতা (জটিল প্রক্রিয়া এবং তথ্যের অসামঞ্জস্য) এবং সাংস্কৃতিক কারণ (কর প্রদানের প্রতি উদাসীনতা) কম রাজস্ব সংগ্রহের উল্লেখযোগ্য কারণ।
নীতিগত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বেসরকারি খাতে সহায়তা নিয়ে সরকার কর প্রদান পদ্ধতি সহজীকরণ, কর বিধি যেন সহজে বুঝা যায় এবং কর অব্যাহতি যেন যৌক্তিক হয় সে নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী।
এতে আরও বলা হয়, কর প্রশাসনের সঙ্গে সহজে যোগাযোগের সুযোগ, স্বচ্ছতা ও অনুমানযোগ্যতা আনতে ডিজিটালাইজেশন বাড়ানো এবং কর ব্যবস্থায় গতিশীলতা আনার মাধ্যমে রাজস্ব সংগ্রহে সাফল্য জোরদার করা সম্ভব হবে।
আরও পড়ুন: এডিবি'র সর্বশেষ প্রতিবেদন: ২০২৪ অর্থবছরকে বাংলাদেশের জন্য একটি ভালো বছর হিসেবে পূর্বাভাস
৪১৮ দিন আগে
৭ মাসে ২ লাখ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় এনবিআরের, প্রবৃদ্ধি ১৫ শতাংশের বেশি
২০২৩-২৪ অর্থবছরের ৭ মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আদায় বেড়েছে ১৫.০৯ শতাংশ। যা চলতি অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার ৫১ শতাংশ।
৭ মাসে ২ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে প্রায় ১ লাখ ৯৮ হাজার টাকা সংগ্রহ করেছে রাজস্ব বোর্ড। এতে রাজস্ব সংগ্রহ বৃদ্ধি পেলেও লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব ঘাটতি রয়েছে ১৭ হাজার ৭৫১ কোটি টাকা।
বাজেটে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা হিসাব করলে ঘাটতি আরও বেশি হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
চলতি অর্থবছরের বাজেটে এনবিআরকে লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। তবে সম্প্রতি এই লক্ষ্যমাত্রা সংশোধন করে ৪ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে।
৪২৫ দিন আগে
আইএমএফ ৪.৭০ বিলিয়ন ডলার ঋণের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা শিথিল করেছে
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশের জন্য ৪ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলারের ঋণ প্যাকেজের বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ, রাজস্ব সংগ্রহ, জ্বালানির স্বয়ংক্রিয় মূল্য সমন্বয়সহ বেশ কয়েকটি লক্ষ্য শিথিল করেছে।
চলতি বছরের শুরুতে আইএমএফ ঋণ প্যাকেজের শর্ত হিসেবে সেপ্টেম্বরের মধ্যে ২৫ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন ডলার এবং আগামী বছরের জুনের মধ্যে ২৬ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে।
রিজার্ভ গণনা পদ্ধতি বিপিএম৬ অনুযায়ী, বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২১ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার।
নিট ভিত্তিতে, এই পরিমাণ আরও হ্রাস পেয়ে ১৮ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে।
আরও পড়ুন: আইএমএফকে ঋণের পরবর্তী কিস্তির জন্য প্রয়োজনীয় রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারে নামিয়ে আনার আহ্বান বাংলাদেশের
এ অবস্থায় বৈদেশিক মুদ্রার মজুদের লক্ষ্যমাত্রা শিথিল করার জন্য আইএমএফকে অনুরোধ করেন অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা।
সেই অনুরোধ বিবেচনায় আইএমএফ লক্ষ্যমাত্রা শিথিল করেছে। চলতি বছরের ডিসেম্বর শেষে রিজার্ভ ১৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার এবং আগামী বছরের জুন শেষে ২০ বিলিয়ন ডলারে রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার ও বুধবার সফররত আইএমএফ প্রতিনিধি দল অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন।
অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আলোচনার পর আইএমএফ কিছু শর্তে নমনীয় হতে সম্মত হয়। সভায় সরকারের পক্ষে নেতৃত্ব দেন অর্থ সচিব মো. খায়রুজ্জামান মজুমদার। আইএমএফ মিশনের নেতৃত্বে ছিলেন আইএমএফের এশিয়া-প্যাসিফিক বিভাগের প্রধান রাহুল আনন্দ।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে বৈঠক করেছে আইএমএফ দল
চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির হার কমিয়ে ৬ শতাংশ করেছে আইএমএফ
৫৬২ দিন আগে
জুলাই-আগস্টে রাজস্ব কমেছে ৪৮৭০ কোটি টাকা: এনবিআর
চলতি অর্থবছরের জুলাই-আগস্টে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা কম রাজস্ব সংগ্রহ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সরকারি প্রতিষ্ঠানটির দেওয়া তথ্যে এই ঘাটতির বিষয়টি উঠে এসেছে।
এনবিআরের তথ্যমতে, জুলাই-আগস্ট মাসে ৫০ হাজার ৩২১ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। এর মধ্যে আদায় হয়েছে ৪৬ হাজার ২৩৩ কোটি টাকা। ঘাটতি সত্ত্বেও, এই দুই মাসে রাজস্ব সংগ্রহ ১৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে সর্বোচ্চ রাজস্ব এসেছে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) থেকে। তবে ভ্যাট ও আয়কর খাতের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হয়নি।
আরও পড়ুন: আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার সময় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ল: এনবিআর
জুলাই-আগস্টে ১৯ হাজার ৮৫ কোটি টাকা ভ্যাট আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে আদায় হয়েছে ১৭ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। প্রবৃদ্ধি ১৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ হলেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ হাজার ১৪৪ কোটি টাকা ঘাটতি রয়েছে।
একই সময়ে জুলাই-আগস্টে আয়কর ও ভ্রমণ কর আদায় কমেছে ২ হাজার ৯৫৮ কোটি ১৬ লাখ টাকা। এটির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৫ হাজার ৫৯ কোটি টাকা এবং সংগ্রহ হয়েছে ১২ হাজার ১০০ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। লক্ষ্যমাত্রার ঘাটতি সত্ত্বেও, কর আদায়ে ১৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
আরও পড়ুন: এনবিআর ২৩’ অর্থবছরে ভ্যাট থেকে সর্বোচ্চ ১.২৫ লাখ কোটি টাকা আয় করেছে
বৈদেশিক মুদ্রার সংকট সত্ত্বেও আমদানি-রপ্তানি থেকে শুল্ক আদায় তুলনামূলকভাবে বেড়েছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে শুল্কের ১৬ হাজার ১৭৭ কোটি ৫ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রা ধরে আদায় হয়েছে ১৬ হাজার ১৯২ কোটি ১২ লাখ টাকা। এ খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ দশমিক ৯৪ শতাংশ এবং শুল্ক থেকে ১৪ কোটি ৫ লাখ টাকা বেশি রাজস্ব এসেছে।
চলতি অর্থবছরে এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ভ্যাট থেকে ১ লাখ ৫৯ হাজার ১০০ কোটি টাকা, আয়কর থেকে ১ লাখ ৫৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকা এবং আমদানি-রপ্তানি শুল্ক থেকে ১ লাখ ১৬ হাজার ১০০ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: কাস্টমসের ২৭০ কর্মকর্তাকে বদলি করেছে এনবিআর
৫৯০ দিন আগে