সিইসি
নির্বাচন সফল করতে মাঠ প্রশাসনকে দৃঢ় ও সাহসী পদক্ষেপ নিতে আহ্বান সিইসির
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দৃঢ় ও সাহসী ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। তিনি বলেছেন, নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে যে সমালোচনা ও অপবাদ চলছে, সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে চায় নির্বাচন কমিশন।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের অডিটোরিয়ামে বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি) ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
সিইসি বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে বলা হচ্ছে নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে, ম্যানেজড ইলেকশন হয়েছে। এই অপবাদ থেকে আমরা মুক্তি চাই। আমরা প্রমাণ করতে চাই— সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা সম্ভব। আর সেটি হবে আইনের শাসন কঠোরভাবে প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে।
এ সময় রিটার্নিং কর্মকর্তা ও মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আইনের শাসন মানে আইন সবার জন্য সমানভাবে প্রয়োগ করতে হবে। আপনারা যখন আইনের প্রয়োগে সাহসী পদক্ষেপ নেবেন, তখন নির্বাচন কমিশনও আপনার পাশে থাকবে।
প্রশাসন ও পুলিশের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে সিইসি বলেন, আমরা একটা যুগসন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছি। দেশের অবস্থা আপনারা জানেন। আমার বুঝিয়ে বলার দরকার নেই। এ ক্রান্তিলগ্নে আমাদের ওপরে যে দায়িত্ব এসে পড়েছে, যদি সঠিকভাবে সে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হই, আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে জবাব দিতে পারব না।
নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর পরিবেশে সম্পন্ন করতে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে এই সভায়। ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ সভায় সভাপতিত্ব করেছেন।
এ ছাড়াও সভায় উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ, তাহমিদা আহমদ, মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।
ডিসি ও এসপিদের পাশাপাশি সভায় উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি), আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা।
১ দিন আগে
তিন বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে সিইসির বৈঠক
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ও গণভোট সামনে রেখে দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনায় তিন বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিন।
রবিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে নির্বাচন ভবনে প্রবেশ করেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান এবং বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান। পরে তারা বৈঠকে অংশ নিয়েছেন।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর তিন বাহিনী প্রধানের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের এটাই প্রথম সাক্ষাৎ। তারা নির্বাচন ভবনে পৌঁছালে ইসি সচিব আলাদাভাবে তাদের অভ্যর্থনা জানান। ১২ ফেব্রুয়ারির ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং গণভোট সামনে রেখে দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হবে বৈঠকে।
এরপর দুপুর আড়াইটায় নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সে সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর শীর্ষ প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে নির্বাচন কমিশনের।
প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, তিন বাহিনী প্রধান বা তাদের উপযুক্ত প্রতিনিধি, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি), এনএসআই, ডিজিএফআই, কোস্টগার্ড, বিজিবি, র্যাব, আনসার ও ভিডিপির মহাপরিচালক এবং ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার উপস্থিত থাকবেন ওই বৈঠকে।
৩ দিন আগে
হাদির ঘটনা বিচ্ছিন্ন, নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা নেই: সিইসি
আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা নেই বলে পুনর্ব্যক্ত করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন। তিনি বলেন, নির্ধারিত সময়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও প্রতিযোগিতামূলকভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর সকালে রাজধানীর গুলশান-১ এ অবস্থিত আলোকিতে ‘জেনভোট ফেস্টিভ্যাল’ উদ্বোধনের সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিইসি এসব কথা বলেন।
সিইসি বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই। আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুত। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এবং সবার সহযোগিতায়। গতকালই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সর্বোচ্চ কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছি। তারাও পুরোপুরি প্রস্তুত।
‘নির্বাচন পর্যন্ত শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবং সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের সম্পূর্ণ প্রস্তুতির কথা গতকালই আমাদেরকে জানিয়েছে। আপনারা সব দুশ্চিন্তা ঝেড়ে দিয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিন। সঠিক সময়ে, সঠিকভাবে একটা সুষ্ঠু ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন আমরা দেখতে পাব।’
এ সময় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরীফ ওসমান হাদির ওপর সাম্প্রতিক হামলার প্রসঙ্গ টেনে সিইসি ঘটনাটিকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করেন।
বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের পথে বাধা কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা অবনতি হলো কোথায়? মাঝেমধ্যে দুই-একটা খুনখারাবি হয়। এই যে হাদির একটা ঘটনা হয়েছে, আমরা এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে মনে করি।’
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন যে অতীতেও এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা আহসানউল্লাহ মাস্টার এবং সাবেক অর্থমন্ত্রী কিবরিয়ার প্রসঙ্গ টেনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা তো সবসময় ছিল। আগে আহসানউল্লাহ মাস্টারের সঙ্গেও এ রকম হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা হয় বাংলাদেশে, এটা নতুন কিছু না।’
তিনি বলেন, ‘মিডিয়াসহ বিভিন্ন মহলে নির্বাচন নিয়ে কিছু আশঙ্কা হয়তো আছে, তবে আমি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, নির্বাচন নিয়ে আমাদের কোনো সংশয় নেই। আমরা সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত। ইনশাআল্লাহ, নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং তা হবে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে, সবার সহযোগিতা নিয়ে।’
এএমএম নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমরা গতকালই আমাদের শীর্ষ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক করেছি এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছি। আমাদের বাহিনী সম্পূর্ণ প্রস্তুত। তারা নিশ্চিত করেছে, নির্বাচনের সময় পর্যন্ত শান্তিশৃঙ্খলা বজায় থাকবে এবং সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন আয়োজনে তারা সক্ষম। আপনারা মিডিয়াতে হয়তো দেখেছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের প্রস্তুতির কথা আমাদের জানিয়েছে।
‘আপনারা নিশ্চিন্ত থাকুন, নির্বাচন সঠিক সময়ে, সঠিকভাবে, একটি সুষ্ঠু, সুন্দর ও প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে। জাতিকে আমরা যে ওয়াদা দিয়েছি, নির্বাচন কমিশন তা পরিপালনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আশা করি, আমাদের পরবর্তী নির্বাচন হবে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা পেছনে ফিরে যাইনি। এখন তরুণদের ওপর ভর করে বাংলাদেশকে এগিয়ে যেতে হবে। আমরা আশা করি, আমাদের পরবর্তী নির্বাচন হবে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন। দেশের বিশেষ জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ যখন আমি দেখি, তখন বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে আমি আরও বেশি উৎসাহিত বোধ করি।’
আসন্ন নির্বাচনকে ঐতিহাসিক উল্লেখ করে নির্বাচনের কমিশনের প্রধান বলেন, ‘আমি বারবার বলে থাকি, এই নির্বাচনটি একটি ঐতিহাসিক নির্বাচন। কারণ এই নির্বাচনে প্রথমবারের মতো আমরা ডাকযোগে (পোস্টাল ব্যালট) আমাদের প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটের আওতায় এনেছি। গত ৫৪ বছর ধরে যা হয়নি, এবার আমরা সেটা করছি।
‘এবার আমরা প্রায় ১০ লাখ কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ যারা ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়ায় জড়িত থাকেন, তারা কোনোদিন ভোট দিতে পারতেন না। আমরা এবার তাদেরও ভোটের ব্যবস্থা করছি—পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে। কারাবন্দিদের জন্য ভোটের ব্যবস্থা করা হচ্ছে, প্রবাসীদের জন্য করা হচ্ছে এবং যেসব সরকারি কর্মচারী নিজ নির্বাচনী এলাকার বাইরে আছেন, তাদের জন্যও ভোটের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সর্বোপরি এবার একটি গণভোটও একসঙ্গে অনুষ্ঠিত হবে। এই সমস্ত দিক থেকে এটি নিঃসন্দেহে ঐতিহাসিক। আমরা যে সাহস করে এই পথে নেমে পড়েছি, আমাদের এই সাহসী পদক্ষেপের সঙ্গে যদি আপনাদের সবার, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের অংশগ্রহণ থাকে, ইনশাআল্লাহ আমরা সফল হব। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন উপহার দেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন একা সফল হতে পারে না। সবাইকে নিয়েই আমরা এটি করব।’
অনুষ্ঠানে ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার, সেকেন্ড সেক্রেটারি (পলিটিক্যাল এফেয়ার্স) ফিলিপ বার্নিয়ার আর্ক্যান্ড, বৃটিশ হাইকমিশনের হেড অব পলিটিক্যাল টিমোথি ডাকেট, সুইডেন দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন ইভা স্মেডবার্গ, আইএফইএস কান্ট্রি ডিরেক্টর পল গেরিন ও ইসি সচিব আখতার হোসেনসহ অন্যান্য অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।
আজকের ‘জেনভোট ফেস্টিভ্যাল’-এ তরুণদের ভোটদানে উৎসাহিত করতে মক ভোটিং, কমিকস, ক্যারিকেচার, আর্ট ফেস্টিভ্যালসহ নানা আয়োজন রয়েছে। ভোট সংক্রান্ত তথ্য প্রদানের জন্য বসেছে স্টল এবং তরুণ ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ভোটারদের জন্য আকর্ষণীয় সেশনও আয়োজন করা হয়েছে।
এই উদ্যোগে সহযোগী হিসেবে রয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইউকে ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট, সুইডিশ এম্ব্যাসি, ক্যানাডিয়ান তহবিল বা সিএফএলআই এবং ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর ইলেকটোরাল সিস্টেমস।
৯ দিন আগে
ভয়ভীতি, প্রলোভনের ঊর্ধ্বে উঠে ভোটাধিকার প্রয়োগের আহ্বান সিইসির
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ‘আমাদের জাতির ইতিহাসে অনন্য ও গুরুত্বপূর্ণ’ আখ্যা দিয়ে দেশবাসীকে সমস্ত ভয়ভীতি ও প্রলোভনের ঊর্ধ্বে উঠে ভোটাধিকার প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন।
বৃহস্পতিবার (১১) সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণাকালে তিনি এ আহ্বান জানান।
এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, ‘জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল মালিকানা প্রতিষ্ঠার একমাত্র পথ হচ্ছে নির্বাচন। দুঃখজনক হলেও সত্য যে মানসম্মত নির্বাচনের অনুপস্থিতি প্রায়ই আমাদের ঐতিহ্য এবং সামষ্টিক প্রত্যাশাকে ম্লান করেছে। এমনই এক প্রেক্ষাপটে ২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে। আমাদের ভাইবোন, সন্তানদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আমাদের অঙ্গীকার হচ্ছে, একটি সুষ্ঠ ও সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠান, যা জাতি হিসেবে আমাদের প্রত্যাশা পূরণ করবে এবং বিশ্ব দরবারে আমাদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আপনারা একই প্রত্যাশা ধারণ করেন এবং একই অঙ্গীকারে অঙ্গীকারাবদ্ধ।
তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন কারণে এবারের নির্বাচন আমাদের জাতির ইতিহাসে অনন্য ও গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, প্রকৃত গণতান্ত্রিক ধারা পুনঃপ্রতিষ্ঠার পাশাপাশি কাঙ্ক্ষিত সংস্কার প্রশ্নে সিদ্ধান্তের নির্বাচন এটি। এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে যা একটি নতুন অভিজ্ঞতা।
‘দ্বিতীয়ত, সংশ্লিষ্ট সকল রাষ্ট্রীয় ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের জন্য এই নির্বাচন হচ্ছে সক্ষমতা প্রমাণ করে ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের অনন্য সুযোগ। তৃতীয়ত, দীর্ঘ গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রামের পর দেশের স্বার্থে রাজনৈতিক দলসমূহের মাঝে সৌহাদ্যপূর্ণ গণতান্ত্রিক প্রতিযোগিতার ধারা প্রবর্তনের দাবি রাখে এই নির্বাচন।
‘চতুর্থত, প্রায় অকার্যকর পোস্টাল ভোট ব্যবস্থাকে পরিমার্জন করে এই নির্বাচনে একটি কার্যকরী রূপ দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে, বাংলাদেশের অন্যতম চালিকাশক্তি, আমাদের রেমিটেন্স যোদ্ধা তথা প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটারদের প্রথমবারের মতো ভোটের আওতায় আনা হচ্ছে। একইভাবে প্রথমবারের মতো ভোটের আওতায় আসছেন আইনি হেফাজতে থাকা ভোটারগণ। এ ছাড়াও নিজ নির্বাচন এলাকার বাইরে কর্মরত সরকারি কর্মচারী এবং নির্বাচন অনুষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিগণও পোস্টাল ব্যালেটের মাধ্যমে এবার ভোট দেবেন।’
ভোটারদের উদ্দেশে সিইসি বলেন, ‘ভোট আপনার শুধু নাগরিক অধিকারই নয়, বরং পবিত্র আমানত ও দায়িত্ব। এই দায়িত্ব সচেতনভাবে আপনারা পালন করবেন—এ আমার বিশ্বাস । যে কোনো ভয়নীতি, প্রলোভন, প্রবঞ্চনা এবং সীমাবদ্ধতার ঊর্ধ্বে উঠে নিঃসঙ্কোচে আপনাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করুন।’
নির্বাচনে ভোটারদের নিরাপদ ও উৎসবমুখর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠান ও বাহিনী কাজ করবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার আহ্বান জানান, ‘ধর্ম-গোত্র-গোষ্ঠী-লিঙ্গ নির্বিশেষে সকলে এই আনন্দ আয়োজনে অংশগ্রহণ করুন। পরিবারের প্রতিবন্ধী, বয়স্ক ও সন্তান সম্ভবা মাসহ সকলকে নিয়ে ভোট দিতে আসুন। আমি আশা করি, আপনাদের স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে ভোটের অনুষ্ঠান উৎসবে রূপ নেবে।’
প্রবাসী ভোটারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘প্রবাসে বসবাসত প্রিয় ভোটারগণ প্রবাস থেকেই ভোটদানের জন্য নিবন্ধন কার্যক্রম গত ১৮ নভেম্বর থেকে চলমান আছে। আগামী ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপের মাধ্যমে পৃথিবীর যেকোনো স্থান থেকে ভোটদানের জন্য আপনারা নিবন্ধন করতে পারবেন। আপনারা এই সুযোগ গ্রহণ করে ভোটে অংশ নিন, দেশ গঠনে আপনাদের অধিকার বুঝে নিন।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো অপতথ্যে বিভ্রান্ত না হতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান সিইসি। তিনি বলেন, ‘বর্তমান সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়ানো হয়ে থাকে। বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে অসত্য তথ্য ও অপতথ্যের বিস্তার দিনকে দিন বেড়ে চলেছে। প্রতিপক্ষ দল ও প্রার্থীকে হেয় করার পাশাপাশি নারীদের প্রতি বিদ্বেষমূলক প্রচারণা আমাদের ঐতিহ্যকে ক্ষুণ্ন এবং নির্বাচনকে কলুষিত করে।’
দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী এসব রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনাদের প্রতি আমার বিশেষ অনুরোধ, অসত্য এবং অসৎ উদ্দেশ্যে প্রচারিত কোনো তথ্যে কান দেবেন না এবং গ্রহণ করবেন না। মনে রাখবেন, অসত্য তথ্য শেয়ার করাও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’
নির্বাচনে অংশগ্রহণে ইচ্ছুক প্রার্থী ও দলগুলোর উদ্দেশে এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আসুন, আমরা আচরণবিধি মেনে একটি শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর নির্বাচন নিশ্চিত করি। শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধা নিশ্চিত করে ভোটারদের বিশ্বাস ও আস্থা অর্জনই হোক আপনাদের লক্ষ্য।’
নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের আহ্বান, ‘নির্বাচন কমিশন স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা এবং দৃঢ়তার সঙ্গে দায়িত্ব পালনে বদ্ধপরিকর। কমিশনের অংশ হিসেবে আপনারা নির্ভয়ে সততা ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবেন। মনে রাখবেন, এ ব্যাপারে কোনো শিথিলতা বা গাফিলতি সহ্য করা হবে না।’
তিনি বলেন, ‘একটি সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে সংবাদমাধ্যম ও পর্যবেক্ষক সংস্থার ভূমিকা অপরিসীম। আপনারা স্বাধীনভাবে সর্বোচ্চ পেশাদারত্ব, নিরপেক্ষতা ও বস্তুনিষ্ঠতার সঙ্গে আপনাদের দায়িত্ব পালন করবেন—এটিই আমাদের প্রত্যাশা।’
সবশেষে তিনি নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সকল রাজনৈতিক দল ও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীসহ ভোটারদের আন্তরিক অংশগ্রহণ ও সক্রিয় সহযোগিতা কামনা করেন। সেই সঙ্গে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট সফল করে ‘আমাদের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায়’ ঐতিহাসিক ভূমিকা রাখতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
১৩ দিন আগে
তফসিল ঘোষণা, জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট ১২ ফেব্রুয়ারি
বহুল প্রতীক্ষিত ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ করা হবে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি। জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে গণভোটও হবে একই দিন। ওই দিন সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ।
বৃহস্পতিবার (১১) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়পত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় ২৯ ডিসেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের ১১ জানুয়ারি এবং আপিল নিষ্পত্তি হবে ১২ থেকে ১৮ জানুয়ারি। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২০ জানুয়ারি। প্রতীক বরাদ্দ করা হবে ২১ জানুয়ারি। নির্বাচনি প্রচার শুরু হবে ২২ জানুয়ারি এবং প্রচার শেষ হবে ১০ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৭টায়। এরপর ১২ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে ৩০০ সংসদীয় আসনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যালট হবে সাদাকালো। আর গণভোটের ব্যালটের রং হবে গোলাপি। দেশের ইতিহাসে এই প্রথম গণভোট ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন একই দিনে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
গতকাল (বুধবার) বিকালে সিইসির ভাষণ রেকর্ড করেছে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন বিটিভি ও বাংলাদেশ বেতার। রেকর্ড করা ওই ভাষণ আজ (বৃহস্পতিবার) প্রচার করা হয়।
তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে গতকাল রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে দেখা করে কমিশন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এ এম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ, বেগম তাহমিদা আহমদ, মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ এ সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
সাক্ষাৎকালে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট আয়োজনে সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করে নির্বাচন কমিশন। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশনের সার্বিক প্রস্তুতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
এর আগে, গত ৭ ডিসেম্বর সংসদ নির্বাচন ও গণভোট আয়োজনের প্রস্তুতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে অবহিত করেন সিইসি। বৈঠকে কমিশন জানায়, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন ও গণভোট আয়োজনের জন্য তাদের সব প্রস্তুতি যথাসময়ে এগোচ্ছে। নাগরিকদের অংশগ্রহণে নির্বাচনি পরিবেশও তৈরি হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
প্রস্তুতিমূলক কাজগুলোতে সহযোগিতা দেওয়ার জন্য তিনি প্রধান উপদেষ্টা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সেনাবাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ৩০০ আসনভিত্তিক ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করেছে ইসি। প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী দেশে এখন মোট ভোটার সংখ্যা ১২ কোটি ৭৬ লাখ ৯৫ হাজার ১৮৩ জন। এই ভোটারদের মধ্যে পুরুষ ৬ কোটি ৪৮ লাখ ১৪ হাজার ৯০৭ জন, নারী ৬ কোটি ২৮ লাখ ৭৯ হাজার ৪২ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ১ হাজার ২৩৪ জন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তালিকা অনুযায়ী মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৩৩ জন।
১৩ দিন আগে
ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে তফসিল ঘোষণা হতে পারে: সিইসি
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ডিসেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ঘোষণা করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন।
শনিবার (২৯ নভেম্বর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে মক ভোটিং কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে এ কথা বলেন তিনি।
সিইসি বলেন, তফসিল, আমরা আশা করছি, ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে হবে। তারিখগুলো (ভোটের দিন, মনোনয়ন দাখিলের শেষ সময় ও প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময়) তখনই জানতে পারবেন। তফসিল ঘোষণার সময়ই সব জানানো হবে।
আজ সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত মক ভোটিং কার্যক্রম চালায় নির্বাচন কমিশন। এ বিষয়ে এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, আদর্শ পরিবেশে কীভাবে নির্বাচন পরিচালনা করা যায়, তা দেখতেই এই কার্যক্রম। ভোট দেওয়ার প্রক্রিয়া জনগণকে দেখাতে এবং দুই ব্যালটে ভোট দিতে কত সময় লাগে—তা পরিমাপ করতেও এই মক ভোটিং করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এ সময় দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কখনো ভালো ছিল না। এখন আগের চেয়ে অনেক উন্নতি হয়েছে। পুলিশ, আনসার, বিজিবি, র্যাব, সেনাবাহিনী সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। আগেও চুরি-ছিনতাই হয়েছে, এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা। পরিস্থিতি আরও ভালো হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
গণভোটের বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের ভাষ্য, গণভোট নিয়ে এখনো সেভাবে প্রচারণা শুরুই হয়নি। সরকার এবং ইসি একসঙ্গে ব্যাপক প্রচারণা চালাবে, সেভাবেই প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। গণভোটের যে বিষয়গুলো, এটা আমাদের প্রচারণার একটা বিশাল অংশ জুড়ে থাকবে। প্রচারণাটা যখন শুরু হবে, তখনি না আপনি বুঝতে পারবেন যে মানুষ জানল কি জানল না!
২৫ দিন আগে
আগামী সংসদ নির্বাচন সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হবে: ইসি আনোয়ারুল
বাংলাদেশের ইতিহাসে যতগুলো নির্বাচন হয়েছে ত্রয়োদশ নির্বাচন হবে তার মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, আমাদের সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ভালো নির্বাচন করতে হবে। এর বিকল্প নেই।
শুক্রবার (২৯ আগস্ট) নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী কোর প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান তিনি এসব কথা বলেন।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট আয়োজিত এই প্রশিক্ষণে কার্যক্রমে ৮০ জন কর্মকর্তা অংশ নিচ্ছেন। এর মধ্য দিয়ে আগামী নির্বাচন আয়োজনে সাড়ে দশ লাখ কর্মকর্তা-কর্মচারীর প্রশিক্ষণ কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো।
আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের জায়গা। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হবে। সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ভালো নির্বাচন করতে হবে। ভালো নির্বাচন ছাড়া আমাদের সামনে দ্বিতীয় কোনো বিকল্প নেই।’
আরও পড়ুন: নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত: জোটে ভোট দিলেও নিজ দলের মার্কায় ভোট দিতে হবে
তিনি বলেন, ‘এ নির্বাচনের মূল কেন্দ্রবিন্দু হবে প্রিসাইডিং অফিসার। তাদের শক্তিশালী ও দক্ষ করে তুলতে পারলেই একটি সুন্দর নির্বাচন সম্ভব হবে।’
পেশাদারত্ব ও নিরপেক্ষতা নির্বাচন কমিশনের বটম লাইন
অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের বটম লাইন হলো পেশাদারত্ব ও নিরপেক্ষতা। আপনাদের এ বার্তাই পৌঁছে দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অগ্রাধিকার হচ্ছে পেশাদারত্ব এবং নিরপেক্ষতা। সব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নৈতিকতার সঙ্গে কাজ করতে হবে। আইন কানুনের বাইরে কারো যাওয়ার সুযোগ নেই। শতভাগ নিরপেক্ষতা বজায় রেখে আগামী নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।’
১১৭ দিন আগে
আইন পরিবর্তন হলে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে: সিইসি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, আনুপাতিক পদ্ধতি বা পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন সংবিধানে নেই। সংবিধানের বাইরে আমরা যেতে পারি না। যদি আইন পরিবর্তন হয় তাহলে এই পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে।
শনিবার (২৩ আগস্ট) সকাল ১০টায় রাজশাহী আঞ্চলিক লোকপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে রাজশাহী অঞ্চলের নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আগে তিনি এসব কথা বলেন।
এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, ‘নির্বাচন হবে কি হবে না, এ নিয়ে কোনো রাজনৈতিক দলের বক্তব্যের ভেতর আমরা যেতে চাই না। প্রধান উপদেষ্টার কথা অনুযায়ী আমরা এগিয়ে যেতে চাই।’
‘প্রধান উপদেষ্টার চিঠি পাওয়ার পর থেকে নির্বাচনের প্রস্তুতি জোরদার করা হয়েছে। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে রমজানের আগে যাতে নির্বাচন হয় তার জোর প্রস্তুতি চলছে।’
কোন পদ্ধতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, এ বিতর্ক নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আনুপাতিক পদ্ধতি বা পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন সংবিধানে নেই। সংবিধানের বাইরে আমরা যেতে পারি না। এটা নিয়ে তর্ক বিতর্ক চলছে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে। আমি এর মধ্যে ঢুকতে চাই না। যদি আইন পরিবর্তন হয় তাহলে হবে।’
তিনি বলেন, ‘স্ট্রাইকিং ফোর্স নয়, সেনাবাহিনীকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সদস্যদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আমরা কাজ করছি। সেনাবাহিনী যাতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সংজ্ঞায় অন্তর্ভুক্ত হয় সেই ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। জেলা প্রশাসক বা পুলিশ সুপার যারা এর আগে নির্বাচনের দায়িত্বে ছিল, তাদের পদায়নের চিন্তা নেই।’
আরও পড়ুন: আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন: সিইসি
বিগত সরকার আমলে দায়িত্ব পালন করা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের অধীনে ৫৭০০ কর্মকর্তা রয়েছে। তারা আগেও দায়িত্ব পালন করেছেন। এদের কোথায় পাঠাব? তবে যারা স্বপ্রণোদিত হয়ে বিগত নির্বাচনে অনিয়ম করেছিল, সেইসব নির্বাচন কর্মকর্তাদের রাখা হবে না’
সরকারের কোনো চাপ আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই সরকার নির্বাচন নিয়ে আমাকে এখন পর্যন্ত কোনো চাপ দেয়নি। যদি চাপ দেয়, আমি পদত্যাগ করব, চেয়ারে থাকব না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের এই মুহূর্তে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নেই। তাদের বিচার চলছে। বিচার চলাকালীন আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। দেখা যাক বিচারে কী হয়।’
সিইসি বলেন, ‘ভোট আসতে আসতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হবে। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে রমজানের আগে যাতে নির্বাচন হয় তার জোর প্রস্তুতি চলছে। যারা বাক্স দখল করার স্বপ্নে বিভোর, তাদের স্বপ্নভঙ্গ হবে।’
‘যারা অস্ত্রবাজি করে ভোটে জিততে চাইবেন তাদের জন্য দুঃসংবাদ। ভোটকেন্দ্র দখলের ইতিহাস ভুলে যান। আমরা কঠোর অবস্থানে থাকব। ভোটকেন্দ্র দখলের চেষ্টা করলে পুরো কেন্দ্রের ভোট বাতিল করা হবে।’
পরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার সভায় রাজশাহী অঞ্চলের নির্বাচন কর্মকর্তাদের নির্বাচন বিষয়ে নানা দিকনির্দেশনা দেন।
১২৩ দিন আগে
আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন: সিইসি
ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, কাজেই নির্বাচন কমিশন সে লক্ষ্যে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। তিনি বলেন, নির্বাচনের কাজ এগিয়ে নেওয়ার জন্যই বিভাগওয়ারি প্রশাসন, নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করা হচ্ছে।
শনিবার (৯ আগস্ট) বিকালে রংপুর বিভাগীয় সদর দপ্তরে প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
সিইসি বলেন, ভোটের সময় কোনো একটি কেন্দ্রে গণ্ডগোল হলেই ওই আসনের নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়া হবে। কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা সহ্য করা হবে না। যেসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও ঘুষ-বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে, তাদেরকে নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করতে দেওয়া হবে না। গত নির্বাচনে যারা প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে সমস্যা সৃষ্টি করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে।
তিনি বলেন, নির্বাচনী সিস্টেমের ওপর মানুষের আস্থা নষ্ট হয়ে গেছে। মানুষকে ভোট কেন্দ্রে নিয়ে আসাটাই বড় চ্যালেঞ্জ।
নাসির উদ্দিন বলেন, এখনই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে না। তফসিল ঘোষণার দুই মাস আগে তারিখ জানানো হবে। তবে স্বল্প সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার প্রস্তুতি নিচ্ছে কমিশন।
এর আগে সকালে আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা রংপুর অঞ্চলসহ রংপুর অঞ্চলের সকল আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা এবং জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা করেন তিনি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, নির্বাচন কমিশন, প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও প্রশাসন মিলে ভালো নির্বাচন করা সম্ভব এবং নির্বাচন কমিশনের প্রতি মানুষের হারানো আস্থা ফিরিয়ে আনা সম্ভব—এই বিষয়েই আমরা কাজ করছি। তাই আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করাটাই সরকার ও নির্বাচন কমিশনের প্রধান চ্যালেঞ্জ।
পড়ুন: নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যেও নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি: সিইসি নাসির
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো। আমরা চাই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আরও উন্নতি হোক, যাতে শান্তিপূর্ণ ও নির্ভয়ে মানুষ তার পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দিতে পারে। মানুষ ভোট কেন্দ্রে যাওয়া ভুলে গেছে। নির্বাচনের দিন অনেকেই ভোট দিতে কেন্দ্রে যায় না, বাসায় আরাম-আয়েস করে। অনেকেই মনে করে, ভোট দিতে গিয়ে কী হবে? কেউ না কেউ তো আমার ভোটটা দিয়ে দিবে। এই ধরনের মনোভাব তৈরি হয়েছে।
‘এই মনোভাব দূর করাই নির্বাচন কমিশনের বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা সেই চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করছি। এজন্য সচেতনতার প্রয়োজন রয়েছে। আর এই সচেতনতা তৈরিতে সাংবাদিকদের ভূমিকা রয়েছে। আমরা সাংবাদিকদের কাছে সহযোগিতা চাই এবং পরামর্শ চাই।’
এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, অস্ত্রের চেয়ে এখন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে এআই-এর ব্যবহার। এআই হচ্ছে বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহার। এটি আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা সাংবাদিকদের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছি না, সাংবাদিকরা আমাদের পক্ষ। যারা প্রফেশনাল সাংবাদিক, তারা আমাদের হয়ে কাজ করবেন, স্বচ্ছ নির্বাচনের জন্য কাজ করবেন—এই প্রত্যাশা আমাদের আছে।
এআইয়ের মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়ায় মানুষকে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে, এটি মোকাবেলা করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এসময় নাগরিকদের উদ্দেশ্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ভোট দেওয়া যেমন নাগরিক দায়িত্ব, তেমনি ঈমানি দায়িত্বও বটে।
১৩৭ দিন আগে
নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যেও নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি: সিইসি নাসির
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, নানা চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও স্বল্প সময়ের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
শনিবার (৯ আগস্ট) রংপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
সিইসি বলেন, ‘নির্বাচনী ব্যবস্থায় জনগণের আস্থা পুনঃস্থাপন এখন বড় চ্যালেঞ্জ। মানুষ এই ব্যবস্থার প্রতি আস্থা হারিয়েছে। তাদের আবার ভোটকেন্দ্রে ফিরিয়ে আনা বড় কাজ হবে।
তিনি জানান, শিগগিরই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হওয়ার সম্ভাবনা নেই। ‘তফসিল ঘোষণার দুই মাস আগে ভোটের তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে,’ যোগ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: সিইসি ও ইসি নিয়োগে হবে বাছাই কমিটি: আলী রীয়াজ
নাসির উদ্দিন জোর দিয়ে বলেন, জাতীয় নির্বাচনে ইসি কোনো দল বা গোষ্ঠীর পক্ষে বা বিপক্ষে কাজ করবে না।
‘আমরা দেশের ১৮ কোটি মানুষের পক্ষ থেকে কাজ করব। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে, যা ইসি প্রতিহত করার চেষ্টা করছে,’ বলেন তিনি।
ভোটাধিকার প্রয়োগে সবাইকে আহ্বান জানিয়ে সিইসি বলেন, ভোট দেওয়া শুধু নাগরিক দায়িত্ব নয়, এটি নৈতিক দায়িত্বও।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন স্বচ্ছভাবে আয়োজনের জন্য ইসি সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান সিইসি।
১৩৭ দিন আগে