মাকে হত্যা
সিলেটে মাকে হত্যার দায়ে ছেলের যাবজ্জীবন
সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলায় নিজের মাকে গলা কেটে হত্যার দায়ে ছেলের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। একই সঙ্গে রায়ে তাকে আরও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে সিলেটের অতিরিক্ত দায়রা জজ ৩য় আদালত ও বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক মো. মিজানুর রহমান ভূঁইয়া এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত কামাল আহমদ বিয়ানীবাজার উপজেলার মৃত তাহির আলী ওরফে সুন্দর আলীর ছেলে। নিহত ছয়মুন বিবি তারই মা।
রায়ের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. সোহেল রানা।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন এসএম পারভীন এবং রাষ্ট্রের নিয়োজিত আইনজীবী ফারজানা হাবিব চৌধুরী আসামি পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারি বিকাল ৫টার দিকে পারিবারিক কলহের জেরে ছয়মুন বিবির সঙ্গে ছেলে কামালের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে বসতঘরের পাশে ছয়মুন বিবিকে মাটিতে ফেলে ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে ছেলে।
আরও পড়ুন: নওগাঁয় ধর্ষণের দুই মামলায় দুই আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
এ সময় ঘটনাস্থলের পাশে থাকা প্রতিবেশি ফখরুদ্দিনের স্ত্রী হেনা বেগম হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি দেখে চিৎকার দেন। তার চিৎকারে লোকজন ছুটে আসলে কামাল আহমদ রক্তমাখা ধারাল ছুরিসহ দৌড়ে গিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে ফেলে। তখন স্থানীয় জনতা তাকে ঘরের মধ্যে আটকিয়ে রেখে থানা পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘাতক ছেলেকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ ঘটনায় নিহতের মেয়ের জামাতা সাইম উদ্দিন বাদী হয়ে সমন্ধিক কামাল আহমদকে অভিযুক্ত করে পরদিন বিয়ানীবাজার থানায় হত্যা মামলা করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত শেষে আদালতে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলাটি ওই আদালতে দায়রা ৫৩ মূলে রেকর্ড করা হয়।
আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পর আদালতের বিচারক সাক্ষীদের সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় মাদক মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
কিশোরগঞ্জে ভাই হত্যা মামলায় ৫ ভাই-বোনসহ ৭ জনের যাবজ্জীবন
১ বছর আগে
লক্ষ্মীপুরে মাকে হত্যার দায়ে ছেলের মৃত্যুদণ্ড
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে আমেনা বেগমকে হত্যার পর আগুনে পুড়িয়ে ফেলার দায়ে তার ছেলে রেদওয়ান হোসেন মিলনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তার ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ মে) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন।
লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আসামি নিজেই তার মাকে হত্যার ঘটনা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। রায়ের সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: রাবি অধ্যাপক তাহের হত্যা মামলা: দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে বাধা নেই
দণ্ডপ্রাপ্ত মিলন রামগনক উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের আশারকোটা গ্রামের মৃত আলী আকবরের ছেলে।
আদালত ও এজাহার সূত্র জানায়, ২০২২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে মিলন রাগান্বিত হয়ে তার মা আমেনাকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। পরে কাপড় ও কম্বল দিয়ে মুড়িয়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়।
২৪ ফেব্রুয়ারি ভোর ৫টার দিকে ঘর থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখে স্থানীয়রা তাদের বাসার গ্লাস ভেঙে দেখতে পায় মেঝেতে আগুন জ্বলছে। পরে দরজা ভেঙে বাসায় ঢুকে সবাই মেঝেতে আমেনার লাশ দেখতে পায়। আগুনে আমেনার শরীরের বেশিরভাগ অংশই পুড়ে যায়।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মিলনকে আটক করে। একইদিন ভুক্তভোগী আমেনার ভাই টিপু সুলতান বাদী হয়ে রামগঞ্জ থানায় মামলা করেন। পরে আসামি দোষ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়।
জবানবন্দিতে বলা হয়, চিকিৎসার জন্য মিলনকে দুই থেকে তিনজন ডাক্তার দেখায় তার মা আমেনা। এ নিয়েই তিনি মায়ের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এক পর্যায়ে ফজরের আযানের আগ মুহূর্তে মিলন তার মাকে কুপিয়ে হত্যা করে। পরে লাশ কাপড় ও কম্বল মুড়িয়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়।
২০২২ সালের ২২ জুন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও রামগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. অলিউল্লাহ আদালতে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দায়ের করেন। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত এ রায় প্রদান করেন।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় কলেজ শিক্ষক হত্যা মামলায় ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড
১ বছর আগে