কাবুল
কাবুলে তালেবান শাসন: ম্যানিকুইনেরও মুখ ঢেকে রাখার নির্দেশ!
তালেবান শাসনামলে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলজুড়ে নারীদের পোশাকের দোকানের পুতুলের (ম্যানিকুইন) মাথা কাপড় বা কালো প্লাস্টিকের ব্যাগ দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে।
এই পুতুলগুলো তালেবানের শুদ্ধতাবাদী শাসনের অন্যতম প্রতীক।
অন্যদিকে, এটি কাবুলের পোশাক ব্যবসায়ীদের খাপ খাইয়ে নেয়া ও সৃজনশীলতার একটি ক্ষুদ্র প্রদর্শনী।
প্রথমত তালেবানরা পুতুলগুলোর মাথা কেটে ফেলতে চেয়েছিল।
২০২১ সালের আগস্টে ক্ষমতা দখলের কিছুদিনের মধ্যেই তালেবানের ভাইস অ্যান্ড নেচার মন্ত্রণালয় আদেশ দেয় যে, দোকানের জানালা থেকে সব পুতুল সরিয়ে ফেলতে হবে অথবা তাদের মাথা খুলে ফেলতে হবে।
এই আদেশটি তারা ইসলামী কঠোর আইনের ব্যাখ্যা দ্বারা তৈরি করেছে। যাতে মূর্তি ও মানুষের ছবি আঁকা বা কাঠামো তৈরি নিষিদ্ধ। যেহেতু এগুলো প্রতিমা হিসেবে পূজা করা যেতে পারে।
যদিও এটি নারীদের বিষয়ে তালেবানের মতাদর্শ প্রচারের সঙ্গেও জড়িত।
কিছু পোশাক বিক্রেতা এ সিদ্ধান্ত মেনে নেয়, কিন্তু অন্যরা এ সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করে।
তারা অভিযোগ করেছে, এ সিদ্ধান্ত মানলে হয় তারা তাদের জামাকাপড় সঠিকভাবে প্রদর্শন করতে ব্যর্থ হবে অথবা তাদের মূল্যবান ম্যানেকুইনগুলোকে ধ্বংস করতে হবে।
পরবর্তীতে তালেবানদের তাদের এই আদেশ সংশোধন করতে হয় এবং পরিবর্তে দোকান মালিকদের পুতুলের মাথা ঢেকে রাখতে বলা হয়।
একটি দোকানে পুতুলগুলোর মাথা তাদের তৈরি ঐতিহ্যবাহী পোশাকের মতো একই নকশা করা কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছিল।
পুতুলটি একটি বেগুনি রঙের পোশাকে কাউরি শেল দিয়ে সাজানো ছিল এবং গায়ে বেগুনি রঙের হুড ছিল। আরেকটি পুতুল লাল গাউন পরে ছিল, যার মাথায় সোনার মুকুটসহ লাল ভেলভেটের মুখোশ ছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পোশাক ব্যবসায়ী অ্যাসোসিয়েট প্রেসের (এপি) সঙ্গে আলাপকালে বলেন, ‘আমি প্লাস্টিক বা কুৎসিত জিনিস দিয়ে মাথা ঢেকে রাখতে পারি না, কারণ এতে আমার দোকান ও এর জানালা কুৎসিত দেখাবে।’
তিনি বলেন, ‘দোকান মালিকদের পোশাকগুলো আকর্ষণীয় ভাবে রাখতে হয়, যাতে ক্রেতা সেগুলো দেখে পছন্দ করে কেনে। তবে তালেবান দেশের ক্ষমতা দখলের পর থেকে অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে এবং আন্তর্জাতিক অর্থায়নের অবসান ঘটেছে। যা প্রায় পুরো জনসংখ্যাকে দারিদ্র্যের মুখে ফেলেছে।’
আফগানিস্তানে বিয়ের জন্য বড় ঘের যুক্ত পোশাক সব সময়ই জনপ্রিয়। দেশটির রক্ষণশীল সমাজে হাতে গোনা যে কয়েকটি অনুষ্ঠানে নারীরা তাদের সেরা পোশাক পরার সুযোগ পায়, বিয়ে তার মধ্যে অন্যতম।
আরও পড়ুন: ১১ লাখ আফগান শিশু ভয়াবহ অপুষ্টির মুখে পড়তে পারে
কিন্তু উপার্জন এতটাই কমে গেছে যে বিয়েতেও তারা জনপ্রিয় এই পোশাকগুলো কিনতে পারছে না।
ওই ব্যবসায়ী বলেন, ‘তার বিক্রি আগের তুলনায় অর্ধেক হয়ে গেছে। বিয়ে, সন্ধ্যার অনুষ্ঠান ও ঐতিহ্যবাহী পোশাক কেনা এখন আর মানুষের কাছে অগ্রাধিকার নয়। মানুষ খাদ্য ও বেঁচে থাকার বিষয়ে বেশি চিন্তা করে।’
আরও একটি দোকানের মালিক হাকিম সিদ্ধান্ত নেন যে, পুতুলগুলোর মাথা অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল দ্বারা মোড়ানো যেতে পারে।
তিনি বলেন, ‘আমি এই নিষেধাজ্ঞা থেকে একটি পরিকল্পনা করেছি, যাতে পুতুলগুলো আগের চেয়ে আরও আকর্ষণীয় হয়।’
তবে সবাই বিষয়টিতে এত মনোযোগ দেয়না।
একটি দোকানে স্লিভলেস গাউন পরা পুতুলগুলোর মাথা কালো প্লাস্টিকের বস্তা দিয়ে ঢাকা ছিল।
মালিক বলেন,তার আর সামর্থ্য নেই।
আরেক দোকানের মালিক আজিজ বলেন, উপসচিব ও কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা নিয়মিত দোকান ও শপিংমলগুলোতে টহল দিয়ে থাকে, তারা নজরদারি করে যে পুতুলগুলোর মাথা কেটে ফেলা হয়েছে বা ঢেকে রাখা হয়েছে কিনা।
তিনি এই নিয়মের জন্য তালেবানের যৌক্তিকতা প্রত্যাখ্যান করেন।
তিনি বলেন, ‘সবাই জানে ডামিগুলো মূর্তি নয় এবং কেউ তাদের উপাসনা করবে না। সব মুসলিম দেশেই পোশাক প্রদর্শনের জন্য ম্যানিকুইন ব্যবহার করা হয়।’
দেশটির বিভন্ন দোকানের ডিসপ্লে উইন্ডোতে অল্প সংখ্যক পুরুষ ডামি দেখা যায়, তাদেরও মাথা ঢেকে রাখা হয়। যাতে বোঝা যায় যে কর্তৃপক্ষ একইভাবে পুরুষ পুতুলের জন্যও একই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
প্রথমদিকে তালেবান বলেছিল যে তারা তাদের আগে মেয়াদের মতো (১৯৯০ এর দশকের শেষের দিকে) সমাজের ওপর কঠোর নিয়ম চাপিয়ে দেবে না। কিন্তু ক্রমান্বয়ে তারা আরও বেশি বিধিনিষেধ আরোপ করেছে,বিশেষ করে নারীদের ওপর। তারা নারী ও মেয়ে শিশুদের ষষ্ঠ শ্রেণীর পরে স্কুলে যাওয়া নিষিদ্ধ করেছে, নারীদের ঘরের বাইরে বেশিরভাগ কাজ থেকে নিষিদ্ধ করেছে এবং বাইরে যাওয়ার সময় মুখ ঢেকে রাখার আদেশ দিয়েছে।
সম্প্রতি লাইসি মরিয়ম স্ট্রিটে কেনাকাটা করা এক নারী মুথ ঢেকে রাখা পুতুলগুলো দেখে বলেন,‘আমি যখন তাদের দেখি আমার তখন মনে হয়, এই পুতুলগুলোও ধরা পড়েছে এবং আটকা পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছে আমি এই দোকানের জানালার কাঁচে নিজেকে দেখছি, এমন একজন আফগান নারী; যাকে তার সমস্ত অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: সাবেক আফগান ও আন্তর্জাতিক বাহিনীর শতাধিক সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে: জাতিসংঘ
ওআইসির বৈঠকে আফগান শান্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বান বাংলাদেশের
১ বছর আগে
কাবুলে অভিযানে ৭ আইএস সদস্য হত্যার দাবি তালেবানের
আফগানিস্তানের কাবুলে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) জঙ্গিদের একটি আস্তানায় অভিযান চালিয়েছে। বুধবার একজন সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, হামলায় কমপক্ষে সাতজন নিহত ও আরও সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার তালেবানের অন্যতম মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ এক টুইটে বলেছেন, ‘ইসলামী আমিরাতের নিরাপত্তা বাহিনী বুধবার সন্ধ্যায় কাবুলের কালাচা ও শুহাদাই সালেহেন এলাকায় আইএস জঙ্গিদের আস্তানায় অভিযান চালায়। এর ফলে সাত আইএস বিদ্রোহী নিহত এবং সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আরও পড়ুন: আফগানিস্তানে মসজিদে বিস্ফোরণে নিহত ১৮, আহত ২১
এর আগে বুধবার বিকালে কাবুলের বাসিন্দারা জানিয়েছিলেন যে পুলিশ ডিস্ট্রিক্ট ৮-এর কারতা-ই-নাউ এলাকা এবং এর আশেপাশে ধারাবাহিক বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
মুজাহিদ আরও বলেন, আফগান নিরাপত্তা বাহিনী বুধবার ভোরে পশ্চিম নিমরোজ প্রদেশে প্রতিদ্বন্দ্বী আইএস বা ইসলামিক স্টেট গ্রুপের দুই সশস্ত্র বিদ্রোহীকে আটক করেছে।
আইএস বেশ কয়েকবার আফগান সরকারের বিরুদ্ধে হামলার দায় স্বীকার করেছে। এর মধ্যে কয়েকদিন আগে কাবুলের একটি সামরিক বিমানবন্দরের গেটে সর্বশেষ হামলায় এক ডজনেরও বেশি মানুষ নিহত ও আহত হয়।
তবে, তালেবানের হামলার বিষয়ে আইএস এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।
আরও পড়ুন: আফগানিস্তানে মসজিদে বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৩
‘আফগানিস্তান যুদ্ধের অবশিষ্ট অস্ত্রের বিস্ফোরণে ৪ শিশু নিহত’
১ বছর আগে
কাবুলে শিক্ষাকেন্দ্রে আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহত ১৯: তালেবান
আফগানিস্তানের রাজধানীর কাবুলের শিয়া অধ্যুষিত এলাকায় শুক্রবার একটি শিক্ষাকেন্দ্রে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ১৯ জন নিহত এবং ২৭ জন আহত হয়েছেন।
তালেবান নিযুক্ত কাবুল পুলিশের মুখপাত্র খালিদ জাদরান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, কাবুলের দাশত-ই বার্চি এলাকায় বিস্ফোরণটি ঘটে। এই এলাকায় বেশিরভাগই আফগানিস্তানের সংখ্যালঘু শিয়া সম্প্রদায়ের জনবসতি।
জাদরান জানান, হতাহতদের মধ্যে ছাত্র এবং ছাত্রী উভয়ই রয়েছে। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দেয়ার জন্য প্রস্তুতিমূলক পড়াশোনা করছিল। কেন্দ্রটি উচ্চশিক্ষা কেন্দ্র নামে পরিচিত এবং এটি ছাত্রছাত্রীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত ও অধ্যয়ন করতে সহায়তা করে।
তালেবান ক্ষমতা দখলের পর থেকে সহিংসতার মধ্যে এই আত্মঘাতী বোমা হামলাটি ছিল সর্বশেষতম। তাৎক্ষণিকভাবে কেউ হামলার দায় স্বীকার করেনি
২০২১ সালের আগস্টে আফগানিস্তান দখল করার পর দাশত-ই বার্চি এলাকার জনগোষ্ঠী তালেবানের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামিক স্টেট গ্রুপ এবং অন্যদের হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে।
আরও পড়ুন: কাবুলে মসজিদের কাছে বিস্ফোরণে নিহত ৪
কাবুলে রুশ দূতাবাসে বিস্ফোরণ, দূতাবাসের ২ কর্মীসহ নিহত ৩
কাবুলে মসজিদে বোমা বিস্ফোরণে নিহত ১০
পরমাণু চুক্তি আলোচনায় ‘লিখিত প্রতিক্রিয়া’ পেশ ইরানের
২ বছর আগে
কাবুলে মসজিদের কাছে বিস্ফোরণে নিহত ৪
আাফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের ওয়াজির আকবর খান মসজিদের কাছে হওয়া এক বিস্ফোরণে অন্তত চারজন নিহত ও আরও ১০ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার দেশটির স্থানীয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই হতাহতের কথা নিশ্চিত করে।
কাবুলের ইতালীয়ান ইমার্জেন্সি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ওই হাসপাতালে আহত ১৪ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া হাসপাতালে আনার আগেই আরও চারজনের মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: আফগানিস্তানে ভূমিকম্প: নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১১৫০
কাবুল পুলিশ প্রধানের মুখপাত্র খালিদ জাদরান বলন,জুমার নামাজের পর মসজিদ থেকে বের হওয়া মুসল্লিদের লক্ষ্য করে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে।
দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখপাত্র আব্দুল নাফি টাকোর বলেন, মসজিদের কাছে প্রধান সড়কে বিস্ফোরণটি ঘটে। বিস্ফোরণের কারণ অনুসন্ধান করা হচ্ছে।
টাকোর আরও বলেন,পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে রয়েছে এবং তদন্ত চলছে।
কাবুলের মসজিদগুলো এর আগেও অনেকবার হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালে বোমা হামলায় ওয়াজির আকবর খান মসজিদটির ইমামসহ দুইজন নিহত হয়েছিল। আবারও সেই মসজিদটির কাছে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটল।
আরও পড়ুন: আফগানিস্তানে মসজিদে বিস্ফোরণে নিহত ১৮, আহত ২১
আফগানিস্তানের জন্য বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে মানবিক সহায়তা
২ বছর আগে
কাবুলে মসজিদে বোমা বিস্ফোরণে নিহত ১০
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের একটি মসজিদে বুধবার মাগরিবের নামাজের সময় বোমা বিস্ফোরণে একজন বিশিষ্ট আলেমসহ কমপক্ষে ১০ জন নিহত এবং ২৭ জন আহত হয়েছেন দেশটির পুলিশ জানিয়েছে।
হামলার ঘটনায় কোনো পক্ষ এখন পর্যন্ত দায় স্বীকার করেনি। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন শিশু রয়েছে বলে জানা গেছে।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, রাজধানীর সিদ্দিকিয়া মসজিদে আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণটি ঘটানো হয়। নিহত আলেমের নাম মোল্লা আমির মোহাম্মদ কাবুলি।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৩০ জনেরও বেশি।
রাজধানী কাবুলে ইতালির একটি বেসরকারি ইমার্জেন্সি হাসপাতাল, যারা হাসপাতালটি পরিচালনা করে তারা জানিয়েছে, বোমা বিস্ফোরণের স্থান থেকে পাঁচ শিশুসহ অন্তত ২৭ জন আহত বেসামরিক নাগরিককে হাসপাতালে আনা হয়েছে।
কাবুলের পুলিশ প্রধানের তালেবান-নিযুক্ত মুখপাত্র খালিদ জাদরান উত্তর কাবুলের একটি মসজিদের ভিতরে বিস্ফোরণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে হতাহতের সংখ্যা বা মৃত ও আহতদের কোনো তথ্য তিনি জানাননি।
তালেবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদও বিস্ফোরণের ঘটনা নিশ্চিত করেছেন। তিনি এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে অপরাধীদের শিগগিরই বিচারের আওতায় আনা এবং শাস্তি দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
পড়ুন: আফগানিস্তানে মসজিদে বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৩
পরমাণু চুক্তি আলোচনায় ‘লিখিত প্রতিক্রিয়া’ পেশ ইরানের
২ বছর আগে
মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় আল-কায়েদা প্রধান আয়মান আল-জাওয়াহিরি নিহত
আফগানিস্তানের কাবুলে রবিবার সকালে মার্কিন ২টি হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় আল-কায়েদার নেতা আয়মান আল-জাওয়াহিরি নিহত হয়েছেন। এতে করে তার দশকব্যাপী রাজত্বের অবসান ঘটলো।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সময় আল–কায়েদার এই নেতা বাড়ির বারান্দায় ছিলেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মার্কিন প্রশাসনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন যে আল-জাওয়াহিরি যে ব্যালকনিতে মারা গিয়েছিলেন সেখানে ‘বিভিন্ন অনুষ্ঠানে, দীর্ঘ সময় কাটাতেন’।
আরও পড়ুন: কাবুলে তালেবানের আত্মঘাতী হামলায় নিহত ১৬, আহত ১১৯
ওই কর্মকর্তা বলেন, একাধিক গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মার্কিন সামরিক বাহীনী তার উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছেন।
তিনি আরও জানান, হামলাস্থলে জাওয়াহিরি ছাড়া অন্য কেউ ছিল না।
২০১১ সালে পাকিস্তানে মার্কিন অভিযানে আল-কায়েদার প্রতিষ্ঠাতা ওসামা বিন লাদেন নিহত হন। ওসামা বিন লাদেন নিহত হওয়ার পর ২০১১ সালের ১৬ জুন আয়মান আল-জাওয়াহিরিকে আল-কায়েদার নতুন নেতা হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়।
২ বছর আগে
আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে ২৫৫ জন নিহত
আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশে বুধবার ভোরে একটি শক্তিশালী ভূমিকম্পে অন্তত ২৫৫ জন নিহত হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
দেশটির রাষ্ট্রপরিচালিত বাখতার বার্তা সংস্থা মৃতের তথ্য জানিয়েছে। এতে বলা হয়, উদ্ধারকারীরা হেলিকপ্টারে করে আসছে।
নিউজ এজেন্সির মহাপরিচালক আব্দুল ওয়াহিদ রায়ান টুইটারে লিখেছেন, পাকতিকায় ৯০টি বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে এবং কয়েক ডজন লোক ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পাকিস্তান সীমান্তের কাছে পাকতিকা প্রদেশের ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, ক্ষতিগ্রস্তদের হেলিকপ্টারে করে ওই এলাকা থেকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। প্রদেশ থেকে অনলাইনে ব্যাপকভাবে প্রচারিত ছবিতে ধ্বংসপ্রাপ্ত পাথরের বাড়িগুলো দেখানো হয়েছে, যেখানে বাসিন্দারা মাটির ইট এবং অন্যান্য ধ্বংসস্তূপের মধ্য দিয়ে বাছাই করছেন৷
তালেবান সরকারের একজন ডেপুটি মুখপাত্র বিলাল করিমি টুইটারে লিখেছেন, ‘একটি ভয়াবহ ভূমিকম্প পাকতিকা প্রদেশের চারটি জেলায় কেঁপে ওঠে, আমাদের শত শত দেশবাসীকে হত্যা ও আহত করেছে এবং কয়েক ডজন ঘরবাড়ি ধ্বংস করেছে।’
তিনি লিখেন, ‘আরও বিপর্যয় এড়াতে আমরা সমস্ত সাহায্য সংস্থাকে দ্রুত এলাকায় দল পাঠাতে আহ্বান জানিয়েছি।’
প্রতিবেশী পাকিস্তানের আবহাওয়া বিভাগ ভূমিকম্পের মাত্রা ৬ দমমিক ১ মাত্রা বলে জানিয়েছে। পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদ এবং পূর্ব পাঞ্জাব প্রদেশের অন্যত্রও কম্পন অনুভূত হয়েছে।
ইউরোপিয়ান মেডিটেরিয়ান সিসমোলজিকাল সেন্টার জানিয়েছে, ভূমিকম্পটি আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং ভারতের ৫০০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে অনুভূত হয়েছে।
পড়ুন: জাপানে ৭ দশমিক ৪ মাত্রার ভূমিকম্প, নিহত ৪
জরাজীর্ণ সব ভবন ভেঙ্গে ভূমিকম্প সহনীয় করার পরিকল্পনা
২ বছর আগে
কাবুলে মন্দিরে বিস্ফোরণে ২ জন নিহত
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের একটি হিন্দু -শিখ মন্দিরে পরপর তিনটি বিস্ফোরণে অন্তত দুজন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং নিরাপত্তা বাহিনীর তিন সদস্য আহত হয়েছে। শনিবার কাবুলের পুলিশ ডিস্ট্রিক্ট ৪-এর কার্ট-ই-পারওয়ান পাড়ায় এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।
দেশটির একাধিক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী সিনহুয়াকে বলেন,‘আমরা স্থানীয় সময় সকাল ৬টার দিকে কার্ট-ই-পারওয়ান পাড়ার একটি মন্দিরের গেটে একটি ভয়াবহ বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছি। প্রথমবার বিস্ফোরণের পর মন্দিরের ভেতরে আরও দুটি বিস্ফোরণ ঘটে।’
তিনি বলেন, নিরাপত্তা বাহিনী সতর্কতামূলক ব্যবস্থার জন্য এলাকাটি ঘেরাও করে রেখেছে এবং নিরাপত্তা কর্মীরা বেশ কয়েকটি সতর্কীকরণ গুলিও ছুড়েছে।
আরও পড়ুন: কাবুলে জোড়া আত্মঘাতী হামলা: মার্কিন সেনাসহ নিহত ৭২
এছাড়া দেশটির একটি নিরাপত্তা সূত্র সিনহুয়াকে জানিয়েছে, প্রথম বিস্ফোরণে দুই বেসামরিক লোক প্রাণ হারিয়েছে।
সূত্রটি জানায়, প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী জানা যায় বন্দুকধারীরা বিল্ডিংয়ে ঢুকে পড়ে এবং নিরাপত্তা বাহিনী হামলাকারীদের ধরার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় তিন নিরাপত্তা বাহিনী আহত হয়েছে।
সামাজিক মাধ্যমে সম্প্রচারিত ফুটেজে দেখা গেছে বিস্ফোরণের পর দেয়াল দিয়ে ঘেরা দোতলা ভবন থেকে ধোঁয়া উঠছে।
তবে এখন পর্যন্ত এ ঘটনার বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি দেশটির সরকার।
২০২০ সালের মার্চ মাসে কাবুলের কেন্দ্রস্থলে একটি হিন্দু -শিখ মন্দিরে হামলা হলে অন্তত ১২জন নিহত হন।
সম্প্রতি যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশটি তালেবান-নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরোধিতাকারী ইসলামিক স্টেট (আইএস) গোষ্ঠীর জঙ্গিদের একাধিক সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছে।
শুক্রবারও দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ কুন্দুজের একটি স্থানীয় মসজিদে বিস্ফোরণে একজন নিহত এবং সাতজন আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: বুরকিনা ফাসোতে বন্দুকধারীদের হামলায় নিহত ৫৫
আফগানিস্তানে মসজিদে বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৩
২ বছর আগে
নারীরা বোরকা না পরলে জেল হতে পারে পুরুষদের!
আফগানিস্তানের নারীদের জনসমক্ষে আপাদমস্তক ঢাকা পোশাক পরার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর এ আদেশ লঙ্ঘন হলে পুরুষ অভিভাবকদের শাস্তির বিধান রেখে আদেশ জারি করেছে দেশটির তালেবান সরকার।
শনিবার সরকার কর্তৃক জারিকৃত এক আদেশে বলা হয় নারীরা শুধুমাত্র প্রয়োজন হলেই বাড়ি থেকে বের হতে পারবেন।
আদেশে আরও বলা হয়, নারীদের ড্রেস কোড লঙ্ঘনের দায়ে তাদের পুরুষ আত্মীয়দের শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। এর প্রেক্ষিতে সমন জারি হওয়া থেকে শুরু করে আদালত পেরিয়ে জেলেও যেতে হতে পারে।
আরও পড়ুন: আফগানিস্তানে ঘরের বাইরে নারীদের বোরকা পরার নির্দেশ
যদিও দেশটিতে তালেবান নেতৃত্বের জারি করা দমনমূলক আদেশের সবগুলোই বাস্তবায়িত হয়নি। উদাহরণস্বরূপ গত মাসে তালেবান নারীদের একা ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হলেও বিরোধিতার মুখে নীরব থেকেছে তালেবান প্রশাসন।
রবিবার রাজধানী কাবুলের রাস্তায় অনেক নারীকে আগের মতোই বড় শাল পরতে দেখা গেছে।
আরও পড়ুন: ভারতে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের সাতজন নিহত
২ বছর আগে
কাবুলে সামরিক হাসপাতালে আইএসের হামলায় নিহত ৭
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে একটি সামরিক হাসপাতালের প্রবেশদ্বারে মঙ্গলবার ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিদের হামলায় অন্তত সাতজন নিহত হয়েছে বলে দেশটির একজন সিনিয়র তালেবান কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
তালেবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেছেন, নিহতদের মধ্যে তিনজন নারী, একজন শিশু এবং তিনজন তালেবান নিরাপত্তা কর্মী রয়েছেন।
তিনি বলেন, তালেবানের নিরাপত্তা কর্মীরা আইএস জঙ্গিদের হাসপাতালে প্রবেশে বাধা দিয়েছে। ১৫ মিনিটের মধ্যে হামলা শেষ হয়। হাসপাতালের ভিতরে কেউ নিহত হয়নি।
তালেবান নিরাপত্তা কর্মীরা ৪০০ শয্যার সুবিধায় চিকিৎসা কর্মী ও রোগীদের লক্ষ্য করে আইএসের বড় ধরনের হামলার পরিকল্পনা ব্যর্থ করে দিয়েছে বলে মুখপাত্র দাবি করেন।
আরও পড়ুন: আফগানিস্তানে মসজিদে আত্মঘাতী বোমা হামলা, নিহত বেড়ে ৩৭
দেশটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কাবুলের ১০ম জেলার সরদার মোহাম্মদ দাউদ খান হাসপাতালে এই হামলায় অন্তত ১৬ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে পাঁচজন তালেবান যোদ্ধা রয়েছে।
এর আগে অন্য একজন তালেবান কর্মকর্তা বলেছেন, হামলায় ছয়জন আইএস অংশ নিয়েছেন এবং তাদের মধ্যে দুজনকে বন্দী করা হয়েছে।
হামলার সময় শহরের বাসিন্দারা গুলির শব্দের পাশাপাশি এলাকায় দুটি বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন বলে জানিয়েছেন।
আগস্টে তালেবান দেশটির ক্ষমতায় আসার পর একের পর এক হামলা চালিয়ে আসছে আইএস।
পড়ুন: আফগানিস্তানে মানবিক সহায়তা দেবে যুক্তরাষ্ট্র
৩ বছর আগে