ডিএসসিসি
গাছ কাটার প্রতিবাদ: পুলিশের বাধায় পণ্ড হলো নগর ভবন ঘেরাও কর্মসূচি
রাজধানীর ধানমন্ডির সাত মসজিদ রোডে গাছ কাটার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিক্ষোভকারীদের ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সদর দপ্তর নগর ভবন ঘেরাও কর্মসূচি পুলিশের বাধায় পণ্ড হয়ে গেছে।
রবিবার ঘটনাস্থল থেকে আমাদের প্রতিবেদক জানান, সকালে ধানমন্ডির ‘সাত মসজিদ সড়ক গাছ রক্ষা আন্দোলন’-এর ব্যানারে প্রায় ২০০ জন মানুষ এই বিক্ষোভে অংশ নেয়।
উন্নয়নের নামে ধানমন্ডির সাত মসজিদ রোডে ডিএসসিসি কর্তৃক গাছ কাটার প্রতিবাদে সাত মসজিদ সড়ক গাছ রক্ষা আন্দোলন-এর পক্ষ থেকে শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে রবিবার সকালে শাহবাগের দোয়েল চত্বরে জড়ো হন আন্দোলনকারীরা। পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), বাংলাদেশ এনভায়রনমেন্টাল লয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন (বেলা) সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও পরিবেশবাদী সংগঠন এবং সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ এই কর্মসূচিতে যোগ দেয়।
সকাল সাড়ে ১১টায় শাহবাগের দোয়েল চত্বর থেকে নগর ভবন অবরোধ করে তাদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে যাত্রা করে বিক্ষোভকারীরা।
পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পিওবিএ) সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির ইউএনবিকে বলেন, তারা রাজধানীর গুলিস্তান এলাকার বঙ্গবাজার মোড়ে পৌঁছালে পুলিশ তাদের সামনে এগোতে বাধা দেয়।
পরে বিক্ষোভকারীরা বঙ্গবাজার মোড়ে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দেয় এবং ডিএসসিসির মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে আলাপের দাবি জানায়।
বেলা ১২টা ৪০ মিনিটে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান ও প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন বঙ্গবাজার মোড়ে এসে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলেন।
আরও পড়ুন: অনুদানের বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়ে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনকে আইনি নোটিশ
নিউ সুপার মার্কেটে আগুন: ডিএসসিসির ৯ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন
রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকার নিউ সুপার মার্কেটে লাগা অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধান, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রণয়ন এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে ৯ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)।
রবিবার (১৬ এপ্রিল) করপোরেশনের সচিব আকরামুজ্জামান সই করা এক দপ্তর আদেশের মাধ্যমে এই কমিটি গঠন করা হয়।
আরও পড়ুন: ঢাকার ৫৮টি মার্কেট আগুনের ঝুঁকিতে, ৯টি 'অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ': ফায়ার সার্ভিস
এছাড়া গঠিত কমিটিকে আগামী ৩ দিনের মধ্যে কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
করপোরেশনের অঞ্চল-১ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মেরীনা নাজনীনকে আহ্বায়ক এবং প্রধান সমাজকল্যাণ ও বস্তি উন্নয়ন কর্মকর্তা আকন্দ মোহাম্মদ ফয়সাল উদ্দীনকে সদস্য সচিব করে এই কমিটি গঠন করা হয়।
আরও পড়ুন: টেলিটক পরিষেবার উন্নতির জন্য পদক্ষেপ নিন: মন্ত্রণালয়ের উদ্দেশে সংসদের স্থায়ী কমিটি
বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ৩,৮৪৫ জন: ডিএসসিসি
গত ৪ এপ্রিল রাজধানীর বঙ্গবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) গঠিত তদন্ত কমিটি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এই অগ্নিকাণ্ডে তিন হাজার ৮৪৫ ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
তবে, কমপ্লেক্স তৈরির কয়েকটি পৃথক মার্কেটের মধ্যে একটি অ্যানেক্সকো টাওয়ারের ব্যবসায়ীদের নাম তালিকায় উল্লেখ করা হয়নি। তাদের বীমা থাকায় ওই বাজারের দোকানদাররা ডিএসসিসির তালিকায় নাম লেখাতে চাননি।
মঙ্গলবার বিকাল ৫টায় ডিএসসিসির মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের কাছে তদন্ত কমিটির সভাপতি ও ডিএসসিসির জোনাল নির্বাহী কর্মকর্তা (জোন-১) মেরিনা নাজনীন প্রতিবেদনটি হস্তান্তর করেন।
আরও পড়ুন: উল্লাপাড়ায় ট্রাকচাপায় পথচারী নিহত
তদন্ত কমিটি আগুনের পেছনে শর্ট সার্কিট ও নাশকতার কোনো ঘটনা খুঁজে পায়নি।
প্রতিবেদন অনুসারে ‘একটি জ্বলন্ত সিগারেট বা একটি মশা তাড়ানোর কয়েল থেকে বিধ্বংসী আগুনের সূত্রপাত হতে পারে।’
এদিকে, এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে মোট মালামালের পরিমাণ আনুমানিক ২৮৮ কোটি ৩৫ লাখ টাকা (প্রায়) পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
এছাড়া কাঠামোগত দিক বিবেচনায় ১৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে বলে ডিএসসিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।ডিএসসিসি এলাকায় ভবিষ্যতে যে কোনো অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা মোকাবিলায় তদন্ত কমিটি ১০টি সুপারিশ করেছে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ সন্দেহভাজন এআরএসএ কমান্ডার নিহত: এপিবিএন
সিলেটে নিখোঁজের ৩৬ ঘণ্টা পর কুশিয়ারা থেকে বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার
দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রতি বাজেটেই অর্থ বরাদ্দ রাখা হবে: মেয়র তাপস
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস জানিয়েছেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রতি বাজেটেই অর্থ বরাদ্দ রাখা হবে।
তিনি জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে প্রতি বছরই ঘোষিত বাজেটে সুনির্দিষ্ট অর্থ বরাদ্দ রাখা হবে।
মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) বিকালে ডিএসসিসির প্রধান কার্যালয় নগর ভবনের মেয়র মোহাম্মদ হানিফ মিলনায়তনে করপোরেশনের দ্বিতীয় পরিষদের ১৯তম বোর্ড সভায় তিনি এ ঘোষণা দেন।
মেয়র শেখ তাপস বলেন, ‘ঢাকা একটি জনবহুল শহর। অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলে আমরা লক্ষ্য করি, প্রতিনিয়তই দুর্ঘটনা ঘটছে। বিশেষ করে আগুনের কারণে অনেক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। কিন্তু এ খাতে অর্থ সংস্থান না থাকায় মানবিক এ বিপর্যয়ে আমরা ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে দাঁড়াতে পারি না। অথচ আমরা প্রতি বছরই বাজেটে ঐচ্ছিক তহবিল রাখি, বিভিন্ন খাতে সুনির্দিষ্ট বরাদ্দ রাখি’।
আরও পড়ুন: দুপুর ২টা থেকে কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ শুরু হবে: মেয়র তাপস
তিনি বলেন, সেভাবেই দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য আমরা ‘দুর্যোগ মোকাবিলা ও ব্যবস্থাপনায় মানবিক সহায়তা নীতিমালা-১৪২৯’ এ সভায় উপস্থাপন করবো।
অনুমোদন পেলে এ নীতিমালার আওতায় প্রতি বছরের বাজেটে দুর্যোগ মোকাবিলায় আমরা অর্থ সংস্থান রাখবো।
এতে যেকোনও দুর্যোগেই আমরা ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে দাঁড়াতে পারি।
পরে কাউন্সিলরদের সর্বসম্মতিক্রমে বোর্ড সভায় ‘দুর্যোগ মোকাবিলা ও ব্যবস্থাপনায় মানবিক সহায়তা নীতিমালা,-১৪২৯’ অনুমোদন পায়।
এর আগে বোর্ড সভায় ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. সিরাজুল ইসলাম ভাট্টিকে সভাপতি করে ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা’ বিষয়ক স্থায়ী কমিটি গঠন করা হয়।
কমিটিতে ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডের মো. সাইফুল ইসলাম, ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের মো. আব্দুর রহমান মিয়াজী, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মো. মোজাম্মেল হক, ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের মো. আব্দুল মান্নান, ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের মো. মকবুল হোসেন, সংরক্ষিত আসন ১৯-এর শেফালী আক্তার, সংরক্ষিত আসন ১৯-এর ফারহানা ইয়াছমিন কুয়াশা ও সংরক্ষিত আসন ১০-এর শামসুন নাহার ভূঁইয়াকে কমিটির সদস্য করা হয়।
স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন-২০০৯ এর ধারা ৫০(১) এর আলোকে এই স্থায়ী কমিটি গঠন করা হয়।
বোর্ড সভায় করপোরেশনের কাউন্সিলররা ছাড়াও ছিলেন-ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান, সচিব আকরামুজ্জামান, প্রধান প্রকৌশলী সালেহ আহম্মেদ, পরিবহন মহাব্যবস্থাপক হায়দর আলী, ভারপ্রাপ্ত প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবির, প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ সিরাজুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: লালে নয়, হকাররা হলুদ-সবুজ চিহ্নিত এলাকায় ব্যবসা করবে: মেয়র তাপস
ডিএসসিসি’র প্রতিটি ওয়ার্ডেই ব্যায়ামাগার করা হবে: মেয়র তাপস
নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডেই ব্যায়ামাগার নির্মাণ করা হবে: মেয়র তাপস
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস জানিয়েছেন, ঢাকা শহরের তরুণ সমাজের জীবনমান উন্নয়নে প্রত্যেকটি ওয়ার্ডেই একটি করে ব্যায়ামাগার নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
বুধবার (১৫ মার্চ) দুপুরে নগরীর ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে নলগোলা বহুব্রীহির উন্নয়ন ও নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা জানান।
আরও পড়ুন: লালে নয়, হকাররা হলুদ-সবুজ চিহ্নিত এলাকায় ব্যবসা করবে: মেয়র তাপস
মেয়র বলেন, ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের এ জায়গাটায় অত্যন্ত ভঙ্গুর ও ছোট একটি শরীরচর্চা কেন্দ্র ছিল। আমরা এটাকে উন্নয়নের পরিকল্পনা নিয়েছি। এখানে তিনতলা বিশিষ্ট একটি অবকাঠামো হবে। অত্যন্ত নান্দনিক একটি নকশা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সেখানে শরীরচর্চা কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে এবং তরুণরা যেন বসতে পারেন, নদী উপভোগ করতে পারেন ও চা-কফি খেতে খেতে যেন নদীর পরিবেশ উপভোগ করতে পারেন, সে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
তরুণ সমাজের জন্য তৃণমূল পর্যায়ে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে জানিয়ে মেয়র বলেন, আমরা চাই, আমাদের তরুণ সমাজকে খেলাধুলায় উদ্বুদ্ধ করতে। সেজন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে আমরা তৃণমূল পর্যায়ে তরুণদের সম্পৃক্ত করতে চাই। সেই লক্ষ্যে প্রত্যেকটা ওয়ার্ডেই আমরা কার্যক্রম হাতে নিচ্ছি।
এছাড়া আমরা ঢাকা শহরের তরুণ সমাজের জন্য আমাদের কার্যক্রম, আমাদের সেবাগুলো পৌঁছে দিতে চাই। যেন ঢাকা শহর একটি বাসযোগ্য নগরী হয়, একটি নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
এ সময় মুক্তাঙ্গন নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আসলে এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। ঢাকা শহর একটি দখলের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। আমরা প্রতিনিয়ত আমাদের অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি। যেখানে দখল পাচ্ছি সেখানেই আমরা অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিচ্ছি। এই মুক্তাঙ্গন দখল অবস্থায় ছিল। সেখানে একটি বাস্কেটবল কোর্টসহ যেন ছোট বাচ্চারা খেলাধুলা করতে পারে, সেভাবেই আমরা মাঠটা উন্নয়নের কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। হয়তোবা আগামী মাসের মধ্যেই আমরা সেটা উদ্বোধন করতে পারব।
সুতরাং কোনোভাবেই অবৈধ উপায়ে কেউ সড়ক, হাঁটার পথ দখল করে রাখতে পারবেন না। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলমান থাকবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা-৭ আসেনর সংসদ সদস্য মোহাম্মদ হাজি সেলিম, করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, সচিব আকরামুজ্জামান, প্রধান প্রকৌশলী সালেহ আহম্মেদ, পরিবহন মহাব্যবস্থাপক মো. হায়দর আলী, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন, প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ সিরাজুল ইসলাম, ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ ইরফান সেলিম, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর সামসুন নাহার ভূঁইয়া উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: মাতুয়াইল নিমতলা কলেজ রোড ৬০ ফুটে উন্নীত করা হবে: তাপস
নগর পরিবহনের ২৪ ও ২৫ নম্বর যাত্রাপথ চালু করা হবে: মেয়র তাপস
বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল পুনরুদ্ধার কাজের সামান্য অগ্রগতি
গত আট মাসে কামরাঙ্গীরচরের কাছে আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেল পুনরুদ্ধারের কাজে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখা যায়নি।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) ২০২২ সালের জুন মাসে প্রকল্পের কাজ শুরু করলেও প্রাথমিক কাজ এখনও শেষ হয়নি। প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে সীমানা নির্ধারণ কার্যক্রম, উচ্ছেদ অভিযান, পুনঃখনন ও বর্জ্য অপসারণ।
দূষণ ও দখলের কারণে গৌরব হারানো আদি চ্যানেলটির অবস্থান বুড়িগঙ্গা নদী থেকে পুরান ঢাকার শহীদনগর-হাজারীবাগের বেড়িবাঁধ আর কামরাঙ্গীরচরের মাঝ বরাবর।
গত তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে দূষণ আর দখলের থাবায় প্রাণ হারিয়েছে নদীর চিরচেনা রূপ। প্রায় ৭ কিলোমিটার জায়গার দুই পাশ দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে বিভিন্ন স্থাপনা।
তবে আদি বুড়িগঙ্গার গৌরব ফিরিয়ে আনতে ডিএসসিসি গত বছরের জুন মাসে দখলদারদের কাছ থেকে চ্যানেলটি পুনরুদ্ধারের উদ্যোগ নেয়। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও কর্তৃপক্ষ এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে কাজ করছে।
ইউএনবির সঙ্গে আলাপকালে ডিএসসিসির কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, অবৈধ দখলদারদের কাছ থেকে চ্যানেলটি উদ্ধারে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু: বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের জীবন ও অবস্থার পরিবর্তন
ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষ প্রায় ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে তিন ধাপে রাজধানীর লাইফলাইন হিসেবে পরিচিত বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেলটি পুনরুদ্ধারের একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে।
তারা বলেন, চ্যানেলটি পুনরুদ্ধারের ফলে ঢাকার হাজারীবাগ, লালবাগ, ধানমন্ডি ও কামরাঙ্গীরচরের বাসিন্দারা জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাবে।
সাত কিলোমিটার দীর্ঘ এই চ্যানেলটি ঢাকাবাসীর জন্য বুড়িগঙ্গা থেকে তুরাগ নদীতে যাতায়াত সহজ করবে এবং খরচ কমার কারণে পণ্য পরিবহনও সহজ হবে।
ডিএসসিসি জানায়, নান্দনিক ডিজাইনের পাশাপাশি চ্যানেলের দুই পাশে গড়ে তোলা হবে ওয়াকওয়ে ও আলাদা সাইকেল লেনসহ আধুনিক নানান সুযোগ-সুবিধা।
২০১৮ সালের ২৪ ডিসেম্বর কামরাঙ্গীরচরে এক নির্বাচনী জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেল দখলকারীদের হাত থেকে পুনরুদ্ধারের পদক্ষেপ নেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। এ জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মেয়রকে নির্দেশও দেন তিনি।
বিস্তারিত পরিকল্পনার পর ডিএসসিসি চ্যানেলটিকে দখলদারদের হাত থেকে মুক্ত করার প্রকল্প হাতে নেয়।
পরিকল্পনা অনুযায়ী চ্যানেলের দুই পাশে ১৪ কিলোমিটার হাঁটার পথ ও সাইকেল লেন নির্মাণ করা হবে। রাজধানীর বাসিন্দাদের পাশাপাশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে সেতু নির্মাণ করা হবে।
ডিএসসিসি জানায়, এ বিষয়ে বিস্তারিত যাচাই-বাছাই ও পরিকল্পনা শেষে ২১ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে তিনটি প্যাকেজে বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল পুনরুদ্ধার পরিকল্পনার ঘোষণা দিয়েছে ডিএসসিসি। প্রথম পর্বের কাজ বর্তমানে চলমান।
তিনটি প্যাকেজের মধ্যে প্রথম প্যাকেজের আওতায় আদি বুড়িগঙ্গার প্রান্ত স্লুইস গেট থেকে ইসলামবাগ পর্যন্ত পলি, রাবিশ ও আবর্জনা অপসারণ করা হবে। এখানে ১২০০ মিটার খনন কাজ ব্যয় ধরা হয়েছে ৬ কোটি ৪১ লাখ টাকা।
এ বিষয়ে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুস সোবহান ইউএনবিকে বলেন, ‘বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল রক্ষায় শুধু প্রতিশ্রুতি নয়, বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল ক্যাডাস্ট্রাল সার্ভে (সিএস) রেকর্ড অনুযায়ী উদ্ধার ও খনন করতে হবে।’
আরও পড়ুন: ৮টি বিমানবন্দরের অবকাঠামো প্রকল্পের কাজ শেষ হবে চলতি বছরেই: বেবিচক প্রধান
তিনি আরও বলেন, ‘বুড়িগঙ্গা আদি চ্যানেল দখল ও ভরাট করে নির্মাণ করা কারখানা ও বাড়িঘরের পানি বিদ্যুৎ গ্যাসসহ সব নাগরিক সুযোগ এখনই বন্ধ করে দেয়া এবং অবিলম্বে সব দখল, ভরাট ও দূষণমুক্ত করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার। সিএস রের্কড অনুযায়ী বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেলের সীমানা নির্ধারণ করে স্থায়ী পিলার স্থাপনের দাবি জানাচ্ছি।’
ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন ইউএনবিকে জানান, ‘আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেল দখল করে অবৈধভাবে যেসব ভবন ও প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করা হয়েছে সেগুলো ইতোমধ্যে ডিএসসিসি, রাজউক, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন, গণপূর্ত অধিদপ্তর, বিআইডব্লিউটিএ, জেলা প্রশাসন, জরিপ অধিদপ্তর চিহ্নিত করেছে। চিহ্নিত করা সেসব ভবনের অবৈধ বর্ধিতাংশ ভেঙে ফেলতে মেয়র আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছি এবং তা অব্যাহত থাকবে। একইসঙ্গে উদ্ধার করা অংশে আদি চ্যানেল পুনরুদ্ধার কার্যক্রমও চলমান রয়েছে।’
এ বিষয়ে ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ইউএনবিকে বলেন, ‘দখলদারদের নানাবিধ বাধা উপেক্ষা করেই বুড়িগঙ্গা আদি চ্যানেল পুনরুদ্ধার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এখানে অনেক বাধা ছিল, অনেকগুলো মামলাও করা হয়েছে। হাইকোর্ট ডিভিশনে সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি এবং আমরা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রকল্প অনুযায়ী বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেলটি চলমান উদ্ধারকাজ শেষ করতে বদ্ধপরিকর।’
মেয়র বলেন, ‘মাত্র অর্ধশতাধিক বছরে আদি বুড়িগঙ্গা ভরাট হয়েছে ময়লা-বর্জ্য দিয়ে। এই প্রথম আমরা আদি বুড়িগঙ্গাকে পুনরুদ্ধারের কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। কাজটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল ও দুরূহ। চারপাশ দখল করে এটাকে সংর্কীর্ণ করে ফেলা হয়েছে। কিন্তু এখন আমরা এটার প্রশস্ততা প্রায় ১০ গুণ বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছি এবং আমাদের কার্যক্রম চলমান।’
শেখ তাপস বলেন, ‘প্রাথমিক পর্যায়ে আমরা নিজস্ব অর্থায়নে অর্থ বরাদ্দ দিয়েছি। সেটার আওতায় আমরা কাজ আরম্ভ করেছি। এছাড়াও এরই মাঝে আমরা পরামর্শক নিয়োগ দিয়েছি এবং নতুন করে প্রকল্প প্রাক্কলনের কাজ চলমান রয়েছে। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো নদীটাকে পুনরুদ্ধার করা এবং স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ করা। যাতে আর কেউ এটা দখল করতে না পারে এবং ময়লা-বর্জ্য ফেলার সুযোগ না পায়। তাছাড়া নদীর দুই পাশ দিয়ে হাঁটার পথ, সাইকেল চালানোর পথ, গণপরিসর ব্যবস্থা করা হবে, যাতে করে নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টি হয়। যাতে করে পর্যটকরা এখানে আসতে পারেন এবং আনন্দ উপভোগ করতে পারেন সে ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন এ বছরই চালু হবে: রেলমন্ত্রী
সায়েন্স ল্যাবে বিস্ফোরণ ঘটা শিরিন ম্যানশনকে 'ঝুঁকিপূর্ণ ভবন' ঘোষণা
সায়েন্স ল্যাবের বিস্ফোরণ ঘটা শিরিন ম্যানশনকে 'ঝুঁকিপূর্ণ ভবন' ঘোষণা করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ‘ঝুঁকিপূর্ণ ভবন সংক্রান্ত আঞ্চলিক কমিটি’।
সোমবার ডিএসসিসি’র জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবু নাছের সাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, করপোরেশনের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মেরীনা নাজনীনের নেতৃত্বাধীন ঝুঁকিপূর্ণ ভবন সংক্রান্ত আঞ্চলিক কমিটি শিরিন ম্যানশনকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে ইতোমধ্যে সেখানে ব্যানার লাগিয়ে দিয়েছে।
আঞ্চলিক কমিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলীর নেতৃত্বাধীন ‘ঝুঁকিপূর্ণ ভবন সংক্রান্ত ডিএসসিসি'র টেকনিক্যাল কমিটি’-কে এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদন পাঠিয়েছে। টেকনিক্যাল কমিটি এ ভবন নিয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।
আরও পড়ুন: সায়েন্স ল্যাব ভবনে বিস্ফোরণ একটি বড় দুর্ঘটনা: ফায়ার সার্ভিসের ডিজি
ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করার বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে করপোরেশনের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মেরীনা নাজনীন বলেন, বিস্ফোরণে ভবনটি বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেজন্য ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আঞ্চলিক কমিটি কর্তৃক ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা এবং 'ঝুঁকিপূর্ণ ভবন' চিহ্নিত করে ব্যানার লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। বিষয়টি আমরা ঝুঁকিপূর্ণ ভবন সংক্রান্ত টেকনিক্যাল কমিটিকে অবহিত করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে পুলিশ ও অন্যান্য তদন্তকারী সংস্থা কর্তৃক তদন্ত কার্যক্রম ও আলামত সংগ্রহ চলছে। আলামত সংগ্রহ ও তদন্ত কার্যক্রম শেষ হলে ভবনটি নিয়ে করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলীর নেতৃত্বাধীন ‘ঝুঁকিপূর্ণ ভবন সংক্রান্ত ডিএসসিসি'র টেকনিক্যাল কমিটি’- পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।
আরও পড়ুন: সায়েন্স ল্যাব ভবনে নাশকতার আলামত পাওয়া যায়নি: ডিএমপি কমিশনার
আগামী বর্ষায় ১৫ মিনিটে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশিত হবে: ডিএসসিসি মেয়র
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, অতিবৃষ্টি হলেও আগামী বর্ষায় ১৫ মিনিটের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) আওতাধীন এলাকা থেকে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নগরীর ওয়ারী এলাকার র্যাংকিন স্ট্রিট সংলগ্ন সড়কের নর্দমা পরিষ্কার কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: শিক্ষার জাগরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে পুরানা মোগলটুলী স্কুল: ডিএসসিসি মেয়র
তাপস বলেন, প্রথম বছরে আমরা এক ঘণ্টার মধ্যে পানি নিষ্কাশনে সফল হয়েছি। গত বছর আমরা আধা ঘন্টার মধ্যে পানি নিষ্কাশনে সফল হয়েছি এবং সিত্রাং ঘূর্ণিঝড় হওয়ার পরেও ঢাকায় মাত্র নয়টি জায়গায় ব্যতীত আর কোথাও পানি জমে থাকেনি। এবার আমাদের লক্ষ্যমাত্রা হলো, অতিবৃষ্টি হলেও ১৫ মিনিটের মধ্যেই যেন ঢাকাবাসীকে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্ত করতে পারি।
বাৎসরিক সূচি অনুযায়ী নিয়মিতভাবে খাল, নর্দমা ও বক্স কালভার্ট পরিষ্কার করার কারণে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন সহজ হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ওয়াসার কাছ থেকে হস্তান্তর হওয়ার পর থেকে বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার আগে জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য আমরা বাৎসরিক সূচি অনুযায়ী প্রত্যেক বছরই সকল নর্দমা, নালা পরিষ্কার করি। সে কার্যক্রম সরেজমিন পরিদর্শনে আজ আমরা ৪১ নম্বর ওয়ার্ডে এসেছি। আমরা লক্ষ্য করি, এই নর্দমাগুলো প্রত্যেক বছরই একদম ভরে যায়। এখানে যেমনি বিভিন্ন ধরনের (গৃহস্থালি) সামগ্রী পাওয়া যায় তেমনি পয়:প্রণালী সামগ্রী-বর্জ্যও পাওয়া যায়। আমরা নিয়মিত পরিষ্কার করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। যার সুফল আমরা গত দুই বছর ঢাকাবাসীকে দিতে পেরেছি। এই নর্দমা, বক্স কালভার্ট ও খালগুলো পরিষ্কার করার কারণে পানি নিষ্কাশন এখন সহজ হয়েছে।
জলাবদ্ধতা নিরসনে জনগণের সহযোগিতা ও সচেতনতা কামনা মেয়র বলেন, আমাদের নর্দমাগুলোতে আমরা কাঠের টুকরো, টাইলস, কমোড, বালিশ, ফুটবল, প্লাস্টিক সামগ্রী থেকে শুরু করে এমন কিছু নেই যা পাওয়া যায় না। আমাদের নর্দমাগুলো পানি নিষ্কাশনের জন্য। আমি এলাকাবাসীকে আরও সচেতন হওয়ার অনুরোধ করব। আপনারা দয়া করে এসব বস্তু আমাদের নর্দমায় ফেলবেন না।
আরও পড়ুন: মেয়র হানিফ উড়ালসেতুর নিচে সৌন্দর্যবর্ধন নিশ্চিত করা হবে: ডিএসসিসি মেয়র
বুড়িগঙ্গা আদি চ্যানেলের প্রশস্ততা ১০ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে: ডিএসসিসি মেয়র
ডিএসসিসি ১৮ শতাধিক কেন্দ্রে ভিটামিন 'এ' ক্যাপসুল খাওয়াবে
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) আওতাধীন এলাকার এক হাজার ৮২৭টি কেন্দ্রে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।
সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ৬-১১ মাস বয়সী শিশুকে একটি করে নীল রঙের এবং ১২-৫৯ মাস বয়সী শিশুকে একটি করে লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।
আরও পড়ুন: মেয়র হানিফ উড়ালসেতুর নিচে সৌন্দর্যবর্ধন নিশ্চিত করা হবে: ডিএসসিসি মেয়র
রবিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান কার্যালয় নগর ভবনের বুড়িগঙ্গা হলে ‘জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন-২০২৩’- উপলক্ষে আয়োজিত সভায় এ তথ্য জানানো হয়।
করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবিরের সভাপতিত্বে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবির বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকায় এক হাজার ৮২৭টি কেন্দ্রের মাধ্যমে এবার ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।
১৫০ জন সুপারভাইজারের তত্ত্বাবধানে তিন হাজার ৬৫৪ জন স্বেচ্ছাসেবকের সহযোগিতায় সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলমান থাকবে।
জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় ৬-১১ মাস বয়সী এক লাখ ৯ হাজার ৫০০ জন শিশুকে একটি নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ (এক লাখ আইইউ) এবং ১২-৫৯ মাস বয়সী পাঁচ লাখ ২০ হাজার জন শিশুকে ১টি লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ (দুই লাখ আইইউ) ক্যাপসুল খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানান ডা. শামসুল কবির।
সভায় জাতীয় পুষ্টি সেবার (এনএনএস) লাইন ডিরেক্টরের প্রতিনিধি, বিভিন্ন হাসপাতালের পরিচালকের প্রতিনিধি, করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা, গালর্স গাইড-রোভার স্কাউট-রোটারি ক্লাব, আরবান প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সার্ভিসেস ডেলিভারি প্রকল্প (ইউপিএইচসিএসডিপি), আবু মিয়া ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি, মা ও শিশু উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও এনজিও হেলথ সার্ভিস ডেলিভারি প্রোগ্রাম (এনএইচএসডিপি) এবং ইউনিসেফের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ঠিকাদারদের কাছ থেকে কাজ আদায় করে নিন: ডিএসসিসি মেয়র
৪০ বছর পর ১৫ একর জমি উদ্ধার করলো ডিএসসিসি
ঠিকাদারদের কাছ থেকে কাজ আদায় করে নিন: ডিএসসিসি মেয়র
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) বাস্তবায়িত জলাবদ্ধতা নিরসনসহ চলমান অন্যান্য অবকাঠামো উন্নয়ন কার্যক্রমে নিয়োজিত ঠিকাদারদের কাছ থেকে যথাযথভাবে কাজ আদায় করে নিতে কাউন্সিলরদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান কার্যালয়ে নগর ভবনের মেয়র মোহাম্মদ হানিফ মিলনায়তনে করপোরেশনের দ্বিতীয় পরিষদের অষ্টাদশ বোর্ড সভায় তিনি কাউন্সিলরদের প্রতি এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, আবারও বর্ষা মৌসুম সমাগত। জলাবদ্ধতা নিরসন আমাদের গুরুত্বপূর্ণ ও বিশাল কর্মযজ্ঞ। গত বছর আমরা অনেক সফলতার পরিচয় দিয়েছি। এ বছর আমাদের জন্য আরও গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের খালগুলো পরিষ্কার করার জন্য ইতোমধ্যে কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। যার যার এলাকায় খাল আছে-আপনারা দয়া করে আপনাদের চাহিদা দিয়ে, একটু নজরদারি করে সেগুলো পরিষ্কার করিয়ে নেবেন। সেজন্য ঠিকাদার নিয়োগ করা আছে। কিন্তু কিছু সময় হয়তো অবহেলা হয়। ঠিকাদাররা এক থেকে দুই দিন কাজ করলো আবার হয়তো পরের দিন কাজ করলো না-এ ধরনের বিষয়ও মাঝে মধ্যে লক্ষ্য করা যায়। সুতরাং আপনাদেরকে একটু নজরদারি বাড়িয়ে ঠিকাদারদের কাছ থেকে কাজ আদায় করে নিতে হবে।
আরও পড়ুন: দিনে উন্মুক্ত স্থানে বর্জ্য না ফেলার অনুরোধে ডিএসসিসি মেয়র
জলাবদ্ধতা নিরসনের সুফল ভোগ করতে নর্দমা পরিষ্কার কার্যক্রম তদারকির ওপর জোর দিয়ে তাপস বলেন, আমরা সকল নর্দমা পরিষ্কারে ঠিকাদার নিয়োগ করেছি। ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ থেকে শুরু হয়ে তা এপ্রিল পর্যন্ত চলমান থাকবে। আপনারা অবশ্যই আমাদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে সংশ্লিষ্ট তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে যোগাযোগ করে আপনার ওয়ার্ডের নর্দমাগুলো পরিষ্কার করিয়ে নেবেন। কোথায় কোথায় বর্জ্য জমে ভরাট হয়ে গেছে তা আপনাদের নখদর্পনে আছে। অবশ্যই সেগুলো পরিষ্কার করিয়ে নিতে হবে। কারণ জলাবদ্ধতা নিরসনে নর্দমাগুলো ব্যাপক ভূমিকা রাখে।
খাল ও নর্দমা পরিষ্কার ছাড়াও মাঠ পর্যায়ে চলমান সকল উন্নয়ন কার্যক্রম যেন সঠিকভাবে সম্পন্ন হয় সেজন্য সব কাউন্সিলরকে সজাগ থেকে ঠিকাদারদের কাছ থেকে কাজ আদায় করিয়ে নেয়ার তাগাদা দিয়ে মেয়র বলেন, এতে করে ঢাকাবাসীকে সেবা দেয়ার যেন মহত ব্রত আমাদের রয়েছে, তা পূর্ণতা পাবে।
এছাড়াও আজকের বোর্ড সভায় দুই বছর ছয় মাসের মেয়াদকাল অতিক্রম করায় স্থানীয় সরকার সিটি করপোরেশনের আইন, ২০০৯ এর ৫০(১) ধারা অনুযায়ী অর্থ ও সংস্থাপন বিষয়ক স্থায়ী কমিটি পুনর্গঠন করা হয়।
সভায় মেয়র সাধারণ আসনের ৪২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ সেলিমকে সভাপতি ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মো. সুলতান মিয়া, ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের ওমর বিন আব্দাল আজিজ, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের আবুল বাশার, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাদল সরদার এবং সংরক্ষিত আসনের মধ্যে ১৪ নম্বর আসনের লাভলী চৌধুরী, ২০ নম্বর আসনের নাছরিন আহমেদ ও ১৭ নম্বর আসনের সাথী আক্তারকে পুনর্গঠিত কমিটির সদস্য হিসেবে নাম প্রস্তাব করলে কাউন্সিলররা তা একযোগে অনুমোদন দেন।
বোর্ড সভায় করপোরেশনের কাউন্সিলররা ছাড়াও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান, সচিব আকরামুজ্জামান, প্রধান প্রকৌশলী সালেহ আহম্মেদ, পরিবহন মহাব্যবস্থাপক মো. হায়দর আলী, ভারপ্রাপ্ত প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবির, প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: করোনাভাইরাস বিস্তার রোধে সোমবার থেকে মাঠে থাকার ঘোষণা ডিএসসিসি মেয়রের
রাজধানীর খাল-কালভার্ট পরিষ্কারের কাজ অত্যন্ত দুরূহ: ডিএসসিসি মেয়র