পিকেটিং
অবরোধ: চট্টগ্রামে চলছে পিকেটিং, দুটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা
বিএনপির দ্বিতীয় দফা অবরোধের দ্বিতীয় দিনে চট্টগ্রামের আনোয়ারায় আরও একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
সোমবার (৬ নভেম্বর) সকালে আনোয়ারার চাতরি চৌমুহনী বাজারে ট্রাফিক পুলিশ বক্স এলাকার মসজিদের পাশে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিস গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এই নিয়ে ৭ ঘন্টার ব্যবধানে দু’টি বাস পুড়িয়ে দেওয়া হলো।
আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ বিএনপির
আনোয়ারা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মকর্তা মং সুইনু মামরা জানান, চাতরি চৌমুহনী বাজারে বাসে আগুন দেওয়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। বাসটি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত বাস মালিক নাইম উদ্দিন জানান, আগুনে পুড়ে যাওয়া চট্টমেট্রো জ ১১-০৭২৩ সিরিয়ালের বাসটি সকালে কেইপিজেড এর শ্রমিকদের কারখানায় নিয়ে যাওয়ার জন্য চাতরি চৌমুহনী বাজারে মসজিদের পাশে রাতে পার্কিং করে রাখা হয়েছিল।
এর আগে রবিবার রাত ১১টার দিকে নগরীর অক্সিজেন মোড়ে রেলগেট এলাকায় বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলে বাসটি বায়েজিদ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিকে ৪৮ ঘন্টা অবরোধের দ্বিতীয় দিনে নগরীর বিভিন্ন স্থানে ঝটিকা মিছিল করেছে বিএনপি যুবদল ছাত্রদল ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
দুপুরে চান্দগাঁও আরকান সড়কে সিএন্ডবি এলাকায় চান্দগাঁও ওয়ার্ড যুবদলের বিক্ষোভ মিছিল বের করে।
এর আগে সকালে সকালে সিটি গেইট এলাকায় উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ড বিএনপি যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা-কর্মীরা মিছিল করে।
নগরীর পাহাড়তলী বাজার এলাকায় চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সহ-সভাপতি ফজলুল হক সুমনের নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা মিছিল করে।
পরে সড়ক অবরোধ করে অবস্থান নেয় তারা। একই সময়ে বাকলিয়া থানা যুবদলের উদ্যোগে কালামিয়া বাজার ও রাহাত্তার পুল এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করে যুবদলের নেতা-কর্মীরা।
আরও পড়ুন: অবরোধ: সারাদেশে নিরাপত্তা জোরদারে ২২৮ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন
১১ মাস আগে
সিলেটে হরতালে হেফাজত-ছাত্রলীগ সংঘর্ষ, আটক ৫
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্র ঘোষিত সকাল-সন্ধ্যা হরতাল সিলেটে বড় ধরনের কোনো সহিংসতা ছাড়াই পালিত হয়েছে।
দিনভর মিছিল-পিকেটিং শেষে রবিবার বিকালে নগরীর কোর্ট পয়েন্টে সমাবেশ করে রাস্তা ছেড়েছেন সিলেট জেলা ও মহানগর হেফাজতের নেতা-কর্মীরা।
এর আগে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালনে ফজরের নামাজের পর থেকেই সিলেটে রাস্তায় নামেন হেফাজতের নেতা-কর্মীরা। ভোর থেকে তারা মহানগরীর বিভিন্ন রাস্তায় পিকেটিং শুরু করেন এবং পথে পথে চলা যানবাহন আটকে দেন। নেতা-কর্মীরা নগরীর গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলোতে ইট বিছিয়ে এবং কাগজ জড়ো করে তাতে আগুন ধরিয়ে পিকেটিং করেন।
আরও পড়ুন: নারায়ণগঞ্জে হেফাজত-পুলিশ সংঘর্ষ: গুলিবিদ্ধসহ আহত ২০
এদিকে, হরতালের কারণে রবিবার সকালে সিলেট থেকে ছেড়ে যায়নি দূরপাল্লার কোনো বাস। সিলেটের আঞ্চলিক সড়কগুলোতেও বাস এবং যাত্রীবাহী গাড়িসহ চলাচল করেনি কোনো ধরনের যানবাহন। নগরীতে কিছু সংখ্যক রিকশা ও শহরতলি এলাকায় সিএনজি অটোরিকশা চলাচল করে। তবে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ১৫-২০টি মোটরসাইকেলযোগে পুরো নগরীতে ঘুরে ঘুরে হেফাজত নেতা-কর্মীদের পিকেটিং করতে দেখা যায়।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর বন্দরবাজারে হেফাজত ও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী এবং শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষ ও তিন দফা ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় পাঁচজন আহত ও পাঁচজন আটক হন। আহতদের মধ্যে দুজন ছাত্রলীগ কর্মী।
জানা যায়, দুপুর ১২টার দিকে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা জেলা পরিষদের সামনে থেকে হরতালবিরোধী মিছিল নিয়ে চৌহাট্টা পয়েন্টে গিয়ে সেখানে অবস্থানরত মহানগর আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের নিয়ে মিছিল নিয়ে আবারও বন্দরবাজারস্থ কামরান চত্বরে এসে জড়ো হন।
এ সময় সিলেট বিভাগীয় ডাকঘরের সামনে হাটতে থাকা কয়েকজন হেফাজত নেতা-কর্মীকে দেখে ছাত্রলীগ ধাওয়া দেয়। তখন হেফাজত নেতা-কর্মীরা দৌঁড়ে কালিঘাটের দিকে পালিয়ে যান। পরে সেখান থেকে হঠাৎ কয়েকজন শ্রমিক ও হেফাজত কর্মী বেরিয়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ধাওয়া করে কামরান চত্বরের দিকে নিয়ে যান। পরে ছাত্রলীগ আবারও সংঘবদ্ধ হয়ে হেফাজত নেতা-কর্মী এবং শ্রমিকদের ধাওয়া করলে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সময় পাঁচজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে দুজন ছাত্রলীগ কর্মী।
পরে হেফাজত নেতা-কর্মী ও শ্রমিকারা পুলিশের দিকে ইট-পাটকের ছুড়লে পুলিশ পাঁচজনকে আটক করে। আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গণমাম্যম) বিএম আশরাফ উল্যাহ তাহের। আটকদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: হাটহাজারীর পরিস্থিতি থমথমে, মাদরাসা শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
এদিকে, বিকাল ৪টার দিকে নগরীর কোর্ট পয়েন্টে আবারও জড়ো হন হেফাজত নেতা-কর্মীরা। এ সময় তারা সমাবেশ করেন।
সমাবেশে হেফাজতের সিলেট জেলা ও মহানগরের শীর্ষ নেতারা বলেন, কেন্দ্র থেকে যে কোনো নির্দেশনা আসলে ঈমানি চেতনায় তা পালনে আমরা রাস্তায় নেমে পড়বো।
সমাবেশ থেকে সোমবার সারা দেশে দোয়া মাহফিল সফলের আহ্বান জানানো হয়।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনকালে শুক্রবার ঢাকা ও চট্টগ্রামে পুলিশের সাথে হেফাজত নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এতে একাধিক প্রাণহানির ঘটে। এর প্রতিবাদে রবিবার সারা দেশে সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত হরতালের ডাক দেয় হেফাজত।
৩ বছর আগে