ফলন
খুলনায় সরিষার বাম্পার ফলনের প্রত্যাশা
খুলনায় এবার সরিষার বাম্পার ফলনের হাতছানিতে কৃষকের চোখে-মুখে আনন্দের রেখা ফুটেছে। চলতি মওসুমে খুলনায় রেকর্ড পরিমাণ জমিতে উন্নত জাতের সরিষা চাষ করেছেন চাষিরা।
এ মওসুমে ২৮৯ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ বেড়েছে। ৯ উপজেলার পাশাপাশি শহরের বিভিন্ন মাঠে মাঠে হলুদের সমারোহ দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। বেড়ে ওঠা ফসল আর ফুল দেখে অধিক ফলনের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা।
উন্নত জাতের বীজ ও সার প্রণোদনা পাওয়ার পাশাপাশি গত বছর সরিষা চাষ করে লাভবান হওয়ায় এবার কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছরও প্রত্যেক সরিষা চাষি অধিক মুনাফা লাভ করবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ।
আরও পড়ুন: প্লাস্টিক দূষণ সংকট: বুড়িগঙ্গার নিকটবর্তী স্থানীয়দের পুনর্ব্যবহারযোগ্য প্রকল্প গ্রহণ
খুলনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মওসুমে জেলায় এক হাজার ৯৫৪ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। এর মধ্যে দৌলতপুর মেট্রো এলাকায় ১৪ হেক্টর, লবণচরায় ৭ হেক্টর, রূপসা উপজেলায় ৩০৫ হেক্টর, বটিয়াঘাটা উপজেলায় ২৫০ হেক্টর, দিঘলিয়া উপজেলায় ১২০ হেক্টর, ফুলতলা উপজেলায় ১৮০ হেক্টর, ডুমুরিয়া উপজেলায় ৪২০ হেক্টর, তেরখাদা উপজেলায় ১৬০ হেক্টর, দাকোপ উপজেলায় ২৮ হেক্টর, পাইকগাছা উপজেলায় ২৬০ হেক্টর ও কয়রা উপজেলায় ২১০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করা হয়েছে।
গত বছর খুলনায় এক হাজার ৬৬৫ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করা হয়।
এদিকে সরিষা চাষে উদ্বুদ্ধ করতে জেলার এক হাজার ৮২০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদের জন্য ১৩ হাজার ৬০০ জন চাষিকে বীজ ও সার দিয়ে সহায়তা করেছে কৃষি বিভাগ। দৌলতপুর মেট্রো এলাকার ৫০ জন, লবণচরা মেট্রোর ৫০ জন, রূপসা উপজেলার দুই হাজার জন, বটিয়াঘাটার এক হাজার ৮০০ জন, দিঘলিয়ার এক হাজান ২০০ জন, ফুলতলার এক হাজার ৪০০ জন, ডুমুরিয়ার দুই হাজার ৩০০ জন, তেরখাদার এক হাজার ২০০ জন, দাকোপের ৩০০ জন, পাইকগাছার এক হাজার ৮০০ জন ও কয়রার এক হাজার ৫০০ জন চাষির প্রত্যেককে এক কেজি বীজ, ১০ কেজি ডিএপি সার ও ১০ কেজি এমওপি সার প্রণোদনা দিয়েছে কৃষি বিভাগ।
আরও পড়ুন: চাকরির পেছনে না ছুটে কমলা চাষে স্বাবলম্বী হওয়ার পথে কুড়িগ্রামের যুবক
১০ মাস আগে
কুমিল্লায় আগামজাতের রোপা আমনের ফলনে খুশি কৃষক
আগামজাতের রোপা আমনে ভালো ফলন পেয়ে খুশি কুমিল্লার কৃষকরা। ধানের জাত গুলোর জীবনকাল স্বল্প হওয়ায় ভালো ফলনের পাশাপাশি সরিষা চাষের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার কৃষককেরা রোপা আমনের আগাম জাতের ধান কাটতে শুরু করেছেন কার্তিক মাসের শেষ সপ্তাহে। ব্রি ধান ৭১, ব্রি ধান ৭৫, বিনাধান-১৭ ইত্যাদি নতুন জাত দখল করে নিচ্ছে ব্রি ধান ৪৯ ও স্বর্ণমসুরি ধানের মাঠ। তাছাড়া আবাদ বেড়েছে ব্রি ধান ৮৭ ও ব্রি ধান ৯৫ জাত ধানের।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, রোপাআমন মৌসুমের শুরুতে বুড়িচং উপজেলার কৃষকদের মাঝে ব্রি ধান ৭১, ব্রি ধান ৭৫, ব্রি ধান ৮৭, ব্রি ধান ৯৫, ব্রি হাইব্রিড ধান ৪, ব্রি হাইব্রিড ধান ৬, বিনাধান-১৬, বিনাধান-১৭, বিনাধান-২০ ও বিনাধান-২২ জাতের ১ টন বীজ কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করে উপজেলা কৃষি অফিস। পুরাতন দীর্ঘ জীবনকালীন জাত গুলোর পরিবর্তে আগাম জাতের ধান আবাদের মাধ্যমে শস্য বিন্যাসে সরিষা চাষ অন্তর্ভুক্তির জন্য এ কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়। জাত গুলোর মধ্যে এ বছর প্রথমবারের মতো ছয় হেক্টর জমিতে চাষ হওয়া ব্রি ধান ৭১ বেশি পছন্দ হয়েছে কৃষকদের। ১১৫ দিনে ভালো ফলন হওয়ায় ও জাতটিতে রোগ পোকার আক্রমণ কম হওয়ায় এই আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে রোপা আমনের বাম্পার ফলন
তাছাড়া ব্রি ধান ৭৫ জাতটি ৯৫ হেক্টর, ব্রি ধান৮৭ জাতটি ২৮৫ হেক্টর, ব্রি ধান ৯৫ জাতটি ৩১ হেক্টর ও বিনাধান-১৭ জাতটি ২১ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে।
রোপা আমন মৌসুমে মোট ৯ হাজার ২৮০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন অর্জিত হয়েছে বুড়িচং উপজেলায়। আগাম জাতের ধানে ফলন পাওয়া যাচ্ছে প্রতি হেক্টরে চাউলে দুই দশমিক ৮৭ টন থেকে দুই দশমিক ৯৮ টন পর্যন্ত। যা জাতীয় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি।
উপজেলার পাহাড়পুর বেলবাড়ির কৃষক ওমর ফারুক জানান, আগাম জাত বিশেষ করে ব্রি ধান ৭১ চাষ করে আমরা ভালো ফসল পেয়েছি। সঙ্গে সময় কম লাগায় সরিষার চাষ করতে পারবো বলে মনে হচ্ছে।
বুড়িচং উপজেলার রামপুর ব্লকের উপ-সহকারী সুলতানা ইয়াসমিন বলেন, আমাদের কৃষি অফিসার মহোদয় মাঠে পরীক্ষামূলক আগামজাতের ধানের বীজ দিয়েছেন। আগামজাতের ধানে ভালো ফলন হয়েছে। এতে সরিষা চাষে কৃষক জমি খালি পাবে।
আরও পড়ুন: বৃষ্টিহীন, তীব্র তাপদাহে রোপা আমন ও সবজি নিয়ে বিপাকে নওগাঁর কৃষকরা
উপজেলা কৃষি অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) কৃষিবিদ বানিন রায় জানান, বুড়িচং উপজেলার কৃষকেরা সরিষা চাষে অভ্যস্ত ছিলেন না। ফলে ব্রি ধান ৪৯, ব্রি ধান৩২ ও স্বর্ণমসুরি ধানের প্রতি কৃষকদের আগ্রহ বেশি ছিল। সরিষা আবাদ বৃদ্ধির পরিকল্পনার অংশ হিসাবে আগাম জাতের ধানের বীজ সংগ্রহ করে কৃষকদের মাঝে বিতরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। বেশ কয়েকটি জাত জাত যেমন ব্রি ধান৭১, বিনাধান-২০, বিনাধান-২২ প্রথমবারের মতো চাষ হয়েছে। কৃষকেরা জাত গুলো পছন্দ করছেন।
যে জমি গুলো আগাম জাত করা যাবে সেগুলোকে সরিষা আবাদের আওতায় আনতে আমরা কাজ করছি বলেও জানান কৃষি অফিসার।
আরও পড়ুন: মাগুরায় আমন ধান কাটা উৎসব উদযাপন
১ বছর আগে
মাগুরায় আউশের ব্যাপক ফলন
মাগুরা জেলায় চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আউশ ধানের আবাদ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রায় দুই হেক্টর জমিতে বেশি আবাদ হওয়া তুলনামূলকভাবে লাভ বেশি হচ্ছে। ফলে এ চাষ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
জেলা কৃষি কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার প্রামাণিক জানান, এ বছর আউশ মৌসুমে জেলায় মোট ১১ হাজার হেক্টর জমিতে আউশ ধানের চাষ হয়েছে। চাষকৃত এ জমিতে ১৯ হাজার মেট্রিকটনের বেশি চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ।
আরও পড়ুন: বিরূপ আবহাওয়াতেও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় লিচুর বাম্পার ফলন
এর মধ্যে মাগুরা সদর উপজেলায় আউশের আবাদ হয়েছে ৫ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে। শালিখায় আউশের আবাদ হয়েছে ৩ হাজার ৫১০হেক্টর জমিতে, মহম্মদপুরে ১ হাজার ৮০০ হেক্টর ও শ্রীপুরে ৩০০ হেক্টর জমি এ চাষের আওতায় আনা হয়েছে। বর্তমানে জেলার চার উপজেলায় ক্ষেত থেকে পুরোদমে আউশ ধান কাটা চলছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুশান্ত কুমার প্রামাণিক বলেন, ইতোমধ্যেই জেলার ৬৫ শতাংশ জমির আউশ ধান কাটা শেষ হয়েছে। ধান কেটে ঘরে তোলা পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি জানান।
আরও পড়ুন: মাগুরায় গমের বাম্পার ফলন, দাম নিয়ে শঙ্কায় কৃষকেরা
তিনি আরও জানান আউশের চালের ভাত খেতে সুস্বাদু। এ জেলার মাটি আউশ ধান উৎপাদনের বেশ উপযোগী। এ চালের চাহিদা থাকায় কৃষকরা আগ্রহ সহকারে প্রতি বছর আউশ আবাদ করেন।
৩ বছর আগে
সিরাজগঞ্জে রসুনের বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাসি
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার মাঠ জুড়ে এবারও বিনা চাষে বোনা রসুনের বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। মাঠে মাঠে পুরুষদের সাথে নারীরাও এখন রসুন তোলায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, শস্যভান্ডার খ্যাত এবার চলনবিলের উপজেলার চর হামকুড়িয়া, চর কুশাবাড়ী, নাদো সৈয়দপুর, ধামাইচ, সবুজপাড়া, বিন্নাবাড়ী, দিঘী সগুনা, কুন্দইল, ধামাইচ, মাগুড়াবিনোদ, বারুহাসসহ বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলের মাঠে বিনা চাষে রসুনের চাষ করা হয়।
আরও পড়ুন: যশোরে রসুন চাষে বাম্পার ফলনের আশা কৃষকদের
এ প্রসঙ্গে কৃষক আব্দুর রাজ্জাক, কোরবান আলীসহ অনেকেই জানান, এ অঞ্চলে প্রতি বছরই বিনা চাষে রসুন চাষাবাদ করা হয়ে থাকে। ধান চাষে তেমন লাভ না হওয়ায় বিনা চাষে এই রসুন চাষাবাদে ঝুকেছে কৃষকেরা। তবে শীত মৌসুমে বিনা চাষে এ রসুন বোনা হলেও সার-বীজ-কীটনাশক দিয়ে খরচ হয়ে থাকে অনেক। এবার রসুন চাষে বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় সাড়ে ৭ টন রসুন উৎপাদন হবে।
উৎপাদিত রসুন স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ইতোমধ্যেই দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে। বর্তমানে হাট-বাজারে প্রতি কেজি রসুন গড়ে ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে বাজার মূল্য ভালো থাকলে এ রসুন চাষে স্বাবলম্বী হবেন বলে তারা জানান।
আরও পড়ুন: করোনাভাইরাসের প্রভাবে দাম বেড়েছে আদা, রসুনের
সংশ্লিষ্ট উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, গত বছর এ উপজেলায় ৪৪০ হেক্টর জমিতে রসুনের চাষাবাদ হয়েছে। এ বছর ৪৪০ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও ৫১৭ হেক্টর জমিতে রসুন চাষাবাদ করেছে কৃষকেরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার ফলনও ভালো হয়েছে।
ইতোমধ্যেই এ অঞ্চলের কৃষকেরা সিংহভাগ রসুন ঘরে তুলেছে।
আরও পড়ুন: আদা-রসুনের মূল্য: পাইকারিতে সস্তা, খুচরা বাজারে চড়া
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবু হানিফ বলেন, ‘শীতের মৌসুমে চলনবিলের জমির পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে কৃষকেরা কাঁদা মাটিতে সার ছিটানোর পর বিনা চাষে এ রসুন চাষ করে। এ রসুন বোনার পর খড় বা নাড়া দিয়ে ঢেকে দেয়া হয় জমি। এ কৌশল অবলম্বনে ফলন ভালো হয়ে থাকে। জেলায় এবার ১ হাজার ৪ হেক্টর জমিতে রসুনের আবাদ হয়েছে।’
এ রসুন চাষ চলনবিলে বেশি হয়ে থাকে বলে জানান তিনি।
৩ বছর আগে