এক সপ্তাহ
তাপমাত্রা বৃদ্ধি: পিরোজপুরে এক সপ্তাহে হাসপাতালে ভর্তি ৫৬৮ ডায়রিয়া রোগী
দেশের বিভিন্ন জেলায় বয়ে যাওয়া তাপপ্রবাহের মধ্যে পিরোজপুরে এক সপ্তাহে বিপুল সংখ্যক ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছে উপজেলার হাসপাতালে।
জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলার ৭টি উপজেলা হাসপাতালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৪০ জন। গত ৭ দিনে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা মোট ৫৬৮ জন।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে ২৩ লাখ মানুষ পাবেন ডায়রিয়ার টিকা
সিভিল সার্জন ডা. মিজানুর রহমান বলেন, প্রতিদিন ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তবে শিশু রোগীর সংখ্যাই বেশি। জেলায় মোট ৭টি হাসপাতালে এই মুহূর্তে আইভি স্যালাইন রয়েছে ৪ হাজার ১৮৬ ব্যাগ। এবারে যেহেতু তাপমাত্রা বেশি ও দীর্ঘমেয়াদি হওয়ার কারণে রোগীর সংখ্যা আগামীতে আরও বাড়বে।
সিভিল সার্জন আরও বলেন, গত একমাসে এ জেলায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৬৯৬ জন।
এদিকে মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) পিরোজপুর সদর হাসপাতাল এবং শিশু ওয়ার্ড ঘুরে দেখা যায়, রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় মেঝতে ও বারান্দায় রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বেড়েছে ডায়রিয়া, হাসপাতালে স্যালাইন সংকট
রাঙামাটিতে ডায়রিয়ার প্রকোপ
এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার-সোনালির দাম বেড়েছে ১০-৩০ টাকা
পবিত্র রমজান সামনে রেখে এক সপ্তাহ আগের তুলনায় ব্রয়লার মুরগি ও সোনালি মুরগির দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ১০ থেকে ৩০ টাকা।
গত রমজানের আগেও রেকর্ড দামে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে। তখন প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ২২৫ থেকে ২৩৫ টাকা। এক পর্যায়ে তা কেজিতে ২৫০ টাকা ছাড়িয়ে যায়। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি ব্রয়লারের দাম ছিল ২০০ টাকা। সেখান থেকে বেড়ে বর্তমানে হয়েছে ২২০ টাকা।
আরও পড়ুন: ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে কমবে ৩০-৪০ টাকা: ডিএনসিআরপি’র ডিজি
সোনালি মোরগের দাম কেজিপ্রতি বেড়েছে ২০-৩০ টাকা। প্রতি কেজি ৩৫০ টাকা থেকে বেড়ে ৩৭০ থেকে ৩৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগে যেখানে সোনালি মুরগি ৩১০ থেকে ৩৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সেখানে এখন বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকায়।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যদিও গত বছরের মতো ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়েনি। তবে অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মতো মুরগির দামও বাড়ছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ৪৫ দিন আগে প্রতিটি ব্রয়লার মুরগি (১ দিন বয়সী) প্রায় ৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ব্রয়লার মুরগির দাম সাধারণত প্রতি পিস ৩০ টাকা। এই বাড়তি দামের কারণে খামারে নতুন বাচ্চার সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছেন চাষিরা।
যে কারণে বাজারে এখন ব্রয়লার মুরগির সরবরাহ কমে গেছে। ফলে দাম বাড়ছে। গতবারের মতো এবারও শবে বরাত ও রমজানের আগে যাতে বাজারে কোনো ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি না হয়, সেদিকে নজরদারি করতে হবে বলে মনে করছেন মুরগি ব্যবসায়ীরা।
বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার ইউএনবিকে বলেন, সব ধরনের মুরগির দাম বাড়ছে।
মাংস ও ডিমের দাম বাড়লে সরবরাহ কম থাকায় মুরগির দামও বেড়ে যায়।
আরও পড়ুন: ব্রয়লার মুরগি ২৩০ টাকা কেজি, কমেছে ডিমের দাম
তিনি বলেন, ১ দিন বয়সী একটি বাচ্চার দাম ৩০ টাকা থেকে বেড়ে ৮০ টাকায় উঠলে ব্যবস্থা নিতে হয়। চাষের খরচ দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে।
বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে প্রথমেই মুরগির বাচ্চা, ডিম ও মুরগির খাদ্য সরবরাহে অস্থিরতা দূর করার পরামর্শ দেন তিনি।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশে খামারের মুরগির উৎপাদন ছিল ৩১ কোটি ৯৭ লাখ পিস।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, গত ১০ অর্থবছরে ক্রমান্বয়ে মুরগির উৎপাদন বেড়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আগ পর্যন্ত দেশে ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল প্রতি কেজি ১৫০ টাকা। এরপর থেকে মুরগির বাজার ওঠানামা করছে। কখনো চাষিরা লোকসান দিচ্ছেন, আবার অনেক সময় ক্রেতাদের বেশি দামে মুরগি কিনতে হচ্ছে।
গত বছর রমজানের ঠিক আগে মুরগির দাম বেড়ে যাওয়ায় দাম নির্ধারণের জন্য সরকার বড় চারটি মুরগি উৎপাদককে ডেকেছিল। সেই বৈঠকের সিদ্ধান্তে বাজারে মুরগির দাম কমানো হয়।
আরও পড়ুন: রমজানে দাম কমাতে ব্রয়লার মুরগি ও গরুর গোশত আমদানি করতে চায় এফবিসিসিআই
সারাদেশে সোমবার থেকে এক সপ্তাহের লকডাউন: কাদের
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আগামী সোমবার থেকে সারা দেশ এক সপ্তাহের জন্য লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার।
শনিবার ক্ষমতসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের তার সরকারি বাসভবনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
আরও পড়ুন: বিশ্বে করোনা আক্রান্ত ১৩ কোটি ছাড়াল
তিনি বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং মাস্ক পরিধান করা উচিত।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় সরকার ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে কিন্তু এখনো অনেকেই মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধির প্রতি অনিহা দেখাচ্ছে, যা প্রকারান্তরে ভয়াবহ পরিস্থিতি নিয়ে আসতে পারে।’
এদিকে, এক ভিডিও বার্তায় জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সরকার ‘দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে’ দেশব্যাপী সাত দিনের লকডাউন যাবে।
তিনি বলেন, ‘জরুরি সেবা দেয়া প্রতিষ্ঠান ছাড়া সব ধরনের সরকারি বেসরকারি-প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিল্পকারখানা খোলা থাকবে।’
ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘লকডাউনের মধ্যে শিল্পকারখানা খোলা থাকবে, সেখানে একাধিক শিফট করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শ্রমিকরা যাতে কাজ করেন তা নিশ্চিত করতে হবে।’
বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় একদিনে রেকর্ড ৬ হাজার ৮৩০ জনের শরীরে নতুন করে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে বলে শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছয় লাখ ২৪ হাজার ৫৯৪ জনে পৌঁছেছে।
এছাড়া ২৪ ঘণ্টায় এই ভাইরাসে আরও ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯ হাজার ১৫৫ জনে দাঁড়িয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার অধিদপ্তর জানায়, আগের ২৪ ঘণ্টায় ৬ হাজার ৪৬৯ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত এবং ৫৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: করোনার দ্বিতীয় ঢেউ: ১৮ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নে কঠোর অবস্থানে সরকার
স্বাস্থ্য সচিব আবদুল মান্নান করোনায় আক্রান্ত
সারা দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ২২৬টি পরীক্ষাগারে ৩০ হাজার ২৯৩টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। অ্যান্টিজেন টেস্টসহ পরীক্ষা করা হয় ২৯ হাজার ৩৩৯টি নমুনা।
২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ২৩.২৮ শতাংশ। মোট পরীক্ষায় এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ২১ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৭ শতাংশ।
এর আগে বৃহস্পতিবার অধিদপ্তর জানায়, আগের ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ছিল ২২.৯৪ শতাংশ।
এদিকে, ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও ২ হাজার ৪৭৩ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৪৭ হাজার ৪১১ জনে। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৭ দশমকি ৬৪ শতাংশ।
গত বছরের ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর ১৮ মার্চ প্রথম একজনের মৃত্যুর কথা জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।