করোনা মহামারির কারণে এক মাত্র সিনেমা হল বন্ধ
কুষ্টিয়ার সচল একমাত্র সিনেমা হলও বন্ধের উপক্রম
কুষ্টিয়া শহরে চারটি, উপজেলায় আটটিসহ জেলায় মোট ১২টি সিনেমা হল গড়ে উঠেছিল। সেই ৬০’র দশকে দুর্বল কাহিনী, গুণগত মান নিম্নমুখী, আকাশ শিল্প’র দাপটের কারণে এখন একটি মাত্র সিনেমা হল টিকে থাকলেও করোনা মহামারির কারণে সেটিও এক বছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ হয়ে রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, জেলার ১১টি হল এখন হাড়ি-পাতিলের গোডাউন আর কমিনিটি সেন্টারে রূপ নিয়েছে। বেকার হয়ে পড়েছে এ শিল্পের সাথে জড়িত শ্রমিকরা। ৬০’র দশকে শহরের প্রাণকেন্দ্রে সর্বপ্রথম গড়ে উঠেছিল ‘রকসি সিনেমা হল’। সেটিও ২০০৩ সাল থেকে বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে হলটি হাড়ি পাতিলের গোডাউন হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
সাংস্কৃতির রাজধানী কুষ্টিয়া শহরের একেবারে প্রাণ কেন্দ্র এনএস রোডে পরিমল থিয়েটার কর্তৃপক্ষ নির্মাণ করেছিলেন ‘কেয়া সিনেমা হল’। সেটি ভেঙে সেখানে গড়ে উঠেছে বহুতল বিশিষ্ট বাণিজ্যিক ভবন পরিমল টাওয়ার।
আরও পড়ুন: সিনেমা হল খুলছে ১৬ অক্টোবর
‘পৌরসভার বাণী’ সিনেমা হলটি প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ। এখন সেটি পৌরসভার কমিউনিটি সেন্টার হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। কুষ্টিয়া পৌরসভার কাছ থেকে ভাড়া নিয়ে দীর্ঘদিন আজাদ নামে একজন ব্যবসায়ী হলটি পরিচালনা করতেন।
তিনি জানান, ছবির মান ক্রমাগত নিম্নমুখী হওয়ায় এবং আকাশ সংস্কৃতির দাপটের কারণে দর্শকরা হল থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়ায় অব্যাহত লোকসানের কারণে তিনি হল বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন।
সিনেমা হলের সুদিন ফিরিয়ে আনতে হলে বুকিং এজেন্টে তদারকির বিষয়ে সরকারি উদ্যোগ প্রয়োজন। সেই সাথে ট্যাক্স, খাজনা কমাতে হবে বলে জানান বনানী সিনেমা হল কর্মচারী খালেক বারী।
শহরের রকসী সিনেমা হলের মালিক জামাল হোসেন জানান, আগে হলে যে ছবি আসতো সে সময় প্রায় প্রতিটি ছবিই হাউজ ফুল হতো। কিন্তু এখন দর্শকরা আর হলে আসতে চান না। তাই বেকার হয়ে পড়েছে এ শিল্পের সাথে জড়িত শ্রমিকরা। তারা সবাই ভিন্ন পেশা বেছে নিয়েছেন।
কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের ছাত্র আরাফাত জানান, সবার আগে পরিবার-পরিজন নিয়ে সিনেমা হলে ছবি দেখার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে। সামাজিক, কাহিনী নির্ভর ও আধুনিক ডিজিটাল প্রিন্টে ছবি নির্মাণ করতে হবে। তবেই বাংলা সিনেমার সেকাল ফিরে আসবে বলে তিনি দাবি করেন।
আরও পড়ুন: সিনেমা হল খুলছে ১৬ অক্টোবর
শহরের ব্যস্ততম বনানী সিনেমা হল মালিক বকুল হোসেন জানান, ভালো কাহিনী নির্ভর ছবি নির্মাণ, সিনেমা হলের নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ উন্নত ব্যবস্থাপনার জন্য সরকারি ঋণ সহায়তা পেলে বন্ধ সিনেমা হলগুলো আবার চালু করা সম্ভব।
৩ বছর আগে