মানবতাবিরোধী
নাটোরে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেপ্তার
নাটোরের লালপুর থেকে মানবতা বিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি ফসিয়ার রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে যশোর র্যাবকে সঙ্গে নিয়ে নাটোর র্যাব ক্যাম্পের সদস্যরা বুধবার (২৬ জুলাই) দুপুরে উপজেলার কদিমচিলান ইউনিয়নের সরদারপাড়া পানঘাটা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছদ্মবেশে থাকা ফসিয়ারকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তার ফসিয়ার রহমানের বাড়ি যশোরের বাঘারপাড়া থানার ছোট খুদরি গ্রামে।
নাটোর র্যাব ক্যাম্পের কমান্ডার সঞ্জয় কুমার সরকার জানিয়েছেন, মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে যশোরের বাঘাপাড়া এলাকায় খুন,অপহরণ,নির্যাতনের অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় চলতি বছরের ২৫ জুন রাজাকার ফসিয়ার রহমানসহ চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দেয় মানবতা বিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। এরপর থেকে পলাতক ছিলো ফসিয়ার।
তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তার আসামিকে র্যাব-৬এর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ৭১’র মানবতাবিরোধী অপরাধ: ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামি গ্রেপ্তার
মানবতাবিরোধী অপরাধে ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড
মানবতাবিরোধী অপরাধ: কেরানীগঞ্জে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেপ্তার
১ বছর আগে
৭১’র মানবতাবিরোধী অপরাধ: ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামি গ্রেপ্তার
৭১’র মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামি বয়োবৃদ্ধ আব্দুস শুক্কুরকে (৭৭) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৭।
তিনি কক্সবাজার জেলা মহেশখালী থানাধীন গুলগুলিয়াপাড়ার মৃত আলী রেজার ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন বলে জানায় র্যাব কর্মকর্তারা।
বুধবার (৫ জুলাই) দুপুরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব-৭ এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
আরও পড়ুন: মানবতাবিরোধী অপরাধ ত্রিশালের ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
এর আগে যুদ্ধাপরাধী বৃদ্ধ আব্দুস শুক্কুরকে কক্সবাজারের রুমানিয়াছড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. নুরুল আবছার জানান, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় কক্সবাজার জেলার মহেশখালী এলাকায় গণহত্যা, অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও লুটপাটসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ পাওয়ায় আব্দুস শুক্কুরের বিরুদ্ধে অপরাধের তদন্ত শুরু হয়।
দেশের বিভিন্ন স্থানে নাম-ঠিকানা পরিবর্তন করে আট বছর ধরে আত্মগোপন করেও শেষ রক্ষা হয়নি একাত্তরে পাক বাহিনীর দোসর আব্দুস শুক্কুরের।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ আব্দুস শুক্কুরের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালে ২১ মে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এর আগে তদন্তকারী সংস্থা তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দাখিল করে আদালতে।
র্যাব-৭ জানান, মানবতাবিরোধী অপরাধে ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামিকে গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে র্যাব গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। গত ৩ জুলাই কক্সবাজার জেলা সদর থানার রুমানিয়াছড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে পলাতক আসামি আব্দুস শুক্কুরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আরও পড়ুন: মানবতাবিরোধী অপরাধে ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড
আব্দুস শুক্কুর ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের বিপক্ষে সরাসরি অবস্থান নিয়ে কক্সবাজার জেলার মহেশখালী, কুতুবদিয়া ও পেকুয়া এলাকায় বাংলাদেশের নিরীহ মুক্তিকামী মানুষকে হত্যাসহ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসর হিসেবে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যা, নির্যাতন, মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত ছিল।
মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ করে মহেশখালীতে গণহত্যা, লুটপাট, ঘরবাড়ি লুট ও নির্যাতন করেছে।
আব্দুস শুক্কুরকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়- আইনশৃংখলা বাহিনীর হাত থেকে গ্রেপ্তার এড়াতে ছদ্মনাম ধারণ করে নাম ও ঠিকানা পরিবর্তন করে দীর্ঘ আট বছর যাবৎ দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করেছিল।
সর্বশেষ কক্সবাজার জেলার সদর থানা এলাকায় বসবাস শুরু করে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: মানবতাবিরোধী অপরাধ: কেরানীগঞ্জে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেপ্তার
১ বছর আগে
মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আব্দুল মজিদ গ্রেপ্তার
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি আব্দুল মজিদ ওরফে মজিদ মাওলানাকে (৮৫) গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাতে তাকে মাদারীপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।
অপরদিকে র্যাব-৩ ঢাকা এর এএসপি মিজানুর রহমান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদের দিক নির্দেশনায় র্যাব-৩ এর সিনিয়র এএসপি অভিজিত দাসকে নিয়ে সঙ্গীয় ফোর্সসহ মাদারীপুরের একটি কওমী মাদরাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেন।
আরও পড়ুন: মানবতাবিরোধী অপরাধে ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড
নেত্রকোণার পূর্বধলা থানার ওসি মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম মামলার বরাত দিয়ে জানান, মজিদ মাওলানাসহ পূর্বধলা উপজেলার সাত আসামি ১৯৭১ সালের দুপুর ১টায় রাজাকার বাহিনী নিয়ে বাড়হা গ্রামের আব্দুল খালেককে গুলি করে হত্যা করে তার মৃতদেহ কংস নদীতে ভাসিয়ে দেয়। ২০১৩ সালে তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মামলা করেন শহীদ আব্দুল খালেকের ছোট ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদের। ওই মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি ছিলেন আব্দুল মজিদ ওরফে মজিদ মাওলানা।
একাত্তরে মজিদ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে হত্যা-গণহত্যা, নির্যাতন, লুট, অগ্নিসংযোগ ও ধর্ষণসহ মানবতাবিরোধী সাতটি অভিযোগ ছিল। মজিদ মাওলানা মুক্তিযুদ্ধের সময় নেজামে ইসলামীর নেতা হিসেবে রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন। পরবর্তী সময়ে তিনি জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
আরও পড়ুন: মানবতাবিরোধী অপরাধ: ঢাকায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক দুই আসামি গ্রেপ্তার
১ বছর আগে
মানবতাবিরোধী অপরাধে ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড
একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ময়মনসিংহের ত্রিশালের ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (২৩ জানুয়ারি) এ রায় ঘোষণা করেন বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মোখলেসুর রহমান মুকুল, সাইদুর রহমান রতন, শামসুল হক ফকির, নুরুল হক ফকির, সুলতান মাহমুদ ফকির ও নাকিব হোসেন আদিল সরকার। দণ্ডপ্রাপ্তদের সকলেই পলাতক আছেন।
আরও পড়ুন: অবসরের পরই সরকারি কর্মকর্তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ না দেয়া কেন অবৈধ নয়: হাইকোর্ট
এছাড়া রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল।
এর আগে এই মামলার রায় ঘোষণার জন্য সোমবার দিন ঠিক করেছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তারই ধারাবাহিকতায় সোমবার রায় ঘোষণা করা হলো।
ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল জানান, এ মামলায় মোট ৯জন আসামি ছিলেন। তাদের মধ্যে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন দু’জন।
কারাগারে থাকা দু’জন ও পলাতক একজনসহ মোট তিনজন মারা গেছেন। আর বাকি ছয় জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে।
এছাড়া আসামিদের বিরুদ্ধে আটক, অপহরণ, নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগ আনা হয়।
২০১৮ সালের ১২ জুলাই দাখিল করা হয় এসব অভিযোগ। এরপর একই বছরের ৫ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বিচার কার্যক্রম।
আর সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় ২০১৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি। এদিকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তাসহ (আইও) রাষ্ট্রপক্ষের মোট ১৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।
এরপর ২০২০ সালের ৫ জানুয়ারি এই সাক্ষ্য শেষে রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন হয়। যা শেষ হয় গত ৫ ডিসেম্বর।
এরপর মামলায় রায় ঘোষণার জন্য সিএভি (অপেক্ষমাণ) রাখেন আদালত।
এর আগে ২০১৭ সালের ২৬ জানুয়ারি তদন্ত শুরু হয়। এরপর একই বছরের ৩১ ডিসেম্বর তদন্ত শেষে প্রতিবেদন প্রস্তুত করে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ত্রিশালের জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য মো. আনিছুর রহমান মানিকসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হয়।
যাতে তাদের বিরুদ্ধে আটক, অপহরণ, নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগ আনা হয়।
আরও পড়ুন: কারাগারে শূন্য পদে চিকিৎসক নিয়োগ না দেয়ায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজিকে হাইকোর্টের তলব
বিচারকের বিরুদ্ধে অশ্লীল স্লোগান: ২১ আইনজীবীকে হাইকোর্টে তলব
১ বছর আগে
যুদ্ধাপরাধী গিয়াস উদ্দিন খান আর নেই
মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার আসামি মো. গিয়াস উদ্দিন খান (৮০) মারা গেছেন। সোমবার সকাল ১০টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
মৃত গিয়াস উদ্দিন ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার মাইসুদ্দিন গ্রামের মৃত মফিজ উদ্দিন খানের ছেলে।
আরও পড়ুন: মাঙ্কিপক্সের বিরুদ্ধে প্রস্তুত ঢাকা মেডিকেল হাসাপাতাল: উপাচার্য
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার সুত্রে জানা গেছে, এই বন্দিকে ২০১৯ সালের ২০ মার্চ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, ঢাকা আদালত থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
গিয়াস উদ্দিনের ব্লাড পেশার লো হওয়ার কারণে কারা কর্তৃপক্ষ উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার হাসপাতালের সহকারী সার্জনের পরামর্শে ১৩ সেপ্টেম্বর ঢামেক হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা শেষে গত ২১ সেপ্টেম্বর তাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পুনরায় ফেরত আনা হয়। ২৬ সেপ্টেম্বর সকাল পৌনে ৯ টায় বন্দির শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে পুনরায় জরুরি ভিত্তিতে ঢামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়, সেখানে সোমবার সকাল ১০ টায় তিনি মারা যান।
হাসপাতালের চিকিৎসক মৃত্যুর কারণ হিসাবে বন্দির নিম্ন রক্তচাপ উল্লেখ করা হয়েছে।
বাচ্চু মিয়া জানান, পোস্ট মর্টেম শেষে লাশ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
আরও পড়ুন: ঢাকা মেডিকেলে কয়েদির মৃত্যু
ঢাকা মেডিকেলে হাই ফ্লো নাসাল ক্যানুলা মেশিন দিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
২ বছর আগে
দেশত্যাগে অনির্দিষ্ট সময়ের নিষেধাজ্ঞা সংবিধানবিরোধী পদক্ষেপ: হাইকোর্ট
অনুসন্ধান বা তদন্ত পর্যায়ে সন্দেহভাজন ব্যক্তির ওপর অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য দেশত্যাগে বিধিনিষেধ আরোপ সংবিধান ও মানবতাবিরোধী পদক্ষেপ, তাই এর সময়সীমা নির্দিষ্ট করতে হবে।
দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে নরসিংদীর আতাউর রহমান ওরফে সুইডেন আতাউর রহমানের করা এক রিট আবেদনে জারি করা রুলের রায়ে এমন অভিমত দিয়েছেন হাইকোর্ট।
রবিবার এই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
অন্যদিকে হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেছে দুদক।
এর আগে ১৬ মার্চ দুদকের দেয়া নিষেধাজ্ঞার চিঠি অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
আরও পড়ুন:হত্যাচেষ্টা মামলায় ইরফান সেলিমকে কেন জামিন দেয়া হবে না: হাইকোর্ট
রবিবার প্রকাশিত রায়ে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে আদালতের অভিমত হলো‘এই যে, অনুসন্ধান বা তদন্ত পর্যায়ে সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে দেশত্যাগে বারিত করার প্রয়োজন হলে এ সংক্রান্ত সুনির্দিষ্ট আইন বা বিধি প্রণয়ন এখন সময়ের বাস্তবতা; এবং ওই আইন বা বিধিতে সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পাশাপাশি দ্রুততম সময়ের মধ্যে দেশত্যাগে বারিত করার কারণ জানানো, গৃহীত পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির বক্তব্য/আপত্তি প্রদানের সুযোগ রাখতে হবে।’
‘অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য কারোর ওপর এ ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ সংবিধান ও মানবতাবিরোধী পদক্ষেপ, তাই এর সময়সীমা নির্দিষ্ট করাও ন্যায়সংগত হবে। আমরা ইতোমধ্যে বিধিমালার বিধি ১৮ আলোচনা করেছি, যেখানে অনুসন্ধান বা তদন্ত পর্যায়ে অপরাধলব্ধ বা অবৈধ সম্পত্তি অবরুদ্ধ বা ক্রোক করার বিধান আছে। যদি অনুসন্ধান বা তদন্ত পর্যায়ে অপরাধলব্ধ বা অবৈধ সম্পত্তি অবরুদ্ধ বা ক্রোক করার বিধান থাকে সে ক্ষেত্রে একই যুক্তিতে অনুসন্ধান বা তদন্ত পর্যায়ে সন্দেহভাজন ব্যক্তির দেশত্যাগে বারিত করার সুনির্দিষ্ট বিধি বা আইন প্রণয়নে দ্বিধা থাকা উচিত নয়। ’
আরও পড়ুন: দুদক গত ৫ মাসে কতজনকে অব্যাহতি দিল তালিকা চাইলেন হাইকোর্ট
‘সামগ্রিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে আদালতের সুস্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট অভিমত এই যে, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ বিভিন্ন তদন্ত সংস্থা ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উচিত হবে যে, অনুসন্ধান বা তদন্ত পর্যায়ে যে কোন অপরাধের সাথে জড়িত সন্দেহভাজন কোনো ব্যক্তিকে দেশত্যাগে বারিত করার জন্য অবিলম্বে প্রয়োজনীয় আইন বা বিধি প্রণয়ন করা এবং যতক্ষণ পর্যন্ত এই ধরনের আইন বা বিধি প্রণয়ন করা না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত অন্তবর্তী ব্যবস্থা হিসেবে এখতিয়ার সম্পন্ন আদালতের নিকট এ ধরনের বারিত আদেশ প্রার্থনা করা এবং আদালতের অনুমতি গ্রহণ করা।’
অভিমতে আদালত আরও বলেন, যথাযথ আইন বা বিধি প্রণয়ন না হওয়া পর্যন্ত অত্র রায়ের নির্দেশনা ও অভিমতের আলোকে অভিযোগের অনুসন্ধান কিংবা মামলার তদন্ত পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট তদন্ত সংস্থা/কর্তৃপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট এখতিয়ারসম্পন্ন আদালত সন্দেহভাজন ব্যক্তির দেশ ত্যাগের বিষয়ে যথাযথ আদেশ প্রদানে সম্পূর্ণ এখতিয়ারবান হবে।
আরও পড়ুন: সিসিকে ১০ মাসে তালাকের আবেদন বেড়েছে ৮ গুণ
অনুসন্ধান বা তদন্ত পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী সংস্থা/কর্তৃপক্ষ যথাযথ প্রতিনিধির মাধ্যমে এখতিয়ার সম্পন্ন আদালতে আবেদন জানালে আদালত সন্তুষ্টি সাপেক্ষে একটি সুনির্দিষ্ট সময়ের জন্য, যার মেয়াদ ৬০ দিনের অধিক হবে না বারিত আদেশ কিংবা স্বীয় বিবেচনায় ন্যায় সংগত অন্য কোনো আদেশ প্রদান করতে পারবে। সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা পক্ষ ওই আদেশ বাতিল বা প্রত্যাহার করার জন্য সংশ্লিষ্ট আদালতে আবেদন জানাতে পারবে এবং সেক্ষেত্রে আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে এবং নথিপত্র যদি দাখিল করা হয় পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় আদেশ প্রদান করতে পারবে। বারিত আদেশের মেয়াদ বৃদ্ধি করার প্রয়োজন হলে সংশ্লিষ্ট তদন্ত সংস্থা/কর্তৃপক্ষ পুনরায় সংশ্লিষ্ট আদালতে আবেদন করতে পারবে এবং আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য এবং সংশ্লিষ্ট পক্ষ যদি নথিপত্র দাখিল করে তা বিবেচনায় নিয়ে যথাযথ আদেশ দিবেন বলে রায়ে উল্লেখ করেন উচ্চ আদালত।
রায়ে উচ্চ আদালত আরও বলেন, আমাদের সংবিধানের অনুচ্ছেদ-৩৬ এ মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণার (ইউনিভার্সাল ডিক্লারেশেন অব হিউম্যান রাইটস) অনুচ্ছেদ-১৩ এর প্রতিফলন ঘটেছে। ব্যক্তির চলাফেরার স্বাধীনতা যা তার জীবন ও ব্যক্তি স্বাধীনতার সাথে সম্পর্কিত তাতে হস্তক্ষেপ করা মৌলিক অধিকারের পরিপন্থি। কোনো নাগরিকের চলাফেরা তথা ব্যক্তিগত স্বাধীনতার ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করতে হলে সরকার কিংবা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সুনির্দিষ্ট কারণ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে অবশ্যই জানাতে হবে, যাতে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি তার বিরুদ্ধে নেওয়া পদক্ষেপের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট তার বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ পান।
সরকার কিংবা রাষ্ট্রের অন্য কোনো কর্তৃপক্ষ বা সংস্থা শুধুমাত্র ‘সৌখিন’ বা ‘খেয়ালি ইচ্ছার’ বশবর্তী হয়ে দেশের কোনো নাগরিকের চলাফেরার স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ করতে বা নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে না উল্লেখ করে আদালত বলেন, একজন নাগরিকের চলাফেরার স্বাধীনতা ব্যক্তিজীবনের স্বাধীনতার অন্তর্ভুক্ত, যা শাশ্বত। এ স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতে হলে আইন নির্ধারিত নিয়মে বা পদ্ধতিতে করতে হবে; অর্থাৎ কোনো নাগরিকের চলাফেরার মৌলিক অধিকার নিয়ন্ত্রণ বা বারিত করতে হলে তা করতে হবে আইন বা বিধি অনুসারে, জনস্বার্থে। যার বিরুদ্ধে এ ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে তার অধিকার রয়েছে এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণের কারণসমূহ জানার।
‘আমাদের বলতে দ্বিধা নেই যে, নাগরিকের চলাফেরার সাংবিধানিক অধিকার কোন ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষের খেয়াল খুশি অনুযায়ী নিয়ন্ত্রণ বা বারিত করা অসাংবিধানিক। ’
দুর্নীতি ও অর্থপাচার মামলার তদন্তের বিষয়ে আদালত বলেন,এটা বাস্তবতা যে, দুর্নীতি কিংবা মানিলন্ডারিং সংক্রান্ত মামলাসমূহ অনুসন্ধান বা তদন্ত কিছুটা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার, যদিও বা সংশ্লিষ্ট বিধিতে অনুসন্ধান বা তদন্তের সময়সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া আছে। আমাদের বিচারিক অভিজ্ঞতা বলে যে, কমিশন কিংবা অন্যান্য তদন্তকারী সংস্থা/কর্তৃপক্ষ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অনুসন্ধান বা তদন্ত কার্যক্রম আইন বা বিধিতে উল্লেখিত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে পারে না।
‘এটাও বাস্তবতা যে,অনুসন্ধান বা তদন্ত পর্যায়ে সন্দেহভাজন বা অভিযুক্ত অনেকে বিভিন্ন অজুহাতে দেশত্যাগ করছে এবং পরবর্তীতে তাদের আর আইন-আদালতের সম্মুখীন করা সম্ভব হচ্ছে না। এই সকল বাস্তবতাকে আমলে নিয়ে দুর্নীতি বা মানিলন্ডারিং সংক্রান্ত মামলায় কিংবা অন্যান্য মামলার ক্ষেত্রেও অনুসন্ধান বা তদন্ত পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তিকে দেশত্যাগে বারিত বা তার চলাফেরা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য প্রয়োজনীয় আইন বা বিধি প্রণয়ন অপরিহার্য হয়ে পড়েছে, যা সময়ের চাহিদাও বটে। সুনির্দিষ্ট আইন বা বিধির অনুপস্থিতিতে কোনো তদন্ত সংস্থার দাপ্তরিক আদেশ দিয়ে এ ধরনের পদক্ষেপ বা কার্যধারা গ্রহণ সংবিধান পরিপন্থি। ’
২০২০ সালের ২৪ আগস্ট আতাউর রহমানের সম্পদের তথ্য চেয়ে নোটিশ দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন। এ নোটিশের পর ২২ অক্টোবর তিনি তার সম্পদের তথ্য দুদকে দাখিল করেন। এরপর দুদক অনুসন্ধানে নামে। এ অনুসন্ধানকালে দুদক গত বছরের ২০ ডিসেম্বর আতাউর রহমানের দেশত্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে পুলিশের বিশেষ শাখায় (এসবি) চিঠি দেয়। ওই চিঠির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন আতাউর রহমান।
৩ বছর আগে