পুলিশ কর্মকর্তা প্রত্যাহার
ফেনসিডিল বিক্রি: বগুড়ায় ৩ পুলিশ কর্মকর্তা প্রত্যাহারের পর তদন্ত কমিটি গঠন
বগুড়ার শিবগঞ্জ থানার মোকামতলা এলাকায় মাদক বিরোধী অভিযানে যাত্রীবাহী বাস থেকে উদ্ধারকৃত ৮৮ বোতল ফেনসিডিল বিক্রির ঘটনায় বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞা তিন সদস্য বিশিষ্ট এ তদন্ত কমিটি গঠন করেন।
কমিটির প্রধান বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পূর্ব) আলী হায়দার চৌধুরী। দুই সদস্য হলেন বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফয়সাল মাহমুদ ও শিবগঞ্জ থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: চিকিৎসক-পুলিশের পাল্টাপাল্টি বিবৃতি কাম্য নয়: হাইকোর্ট
ফেনসিডিল বিক্রির ঘটনায় বুধবার শিবগঞ্জ সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আরিফুল ইসলাম সিদ্দিকীকে প্রত্যাহার করে বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি অফিসে এবং মোকামতলা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক শাহীন উজ্জামান ও উপপরিদর্শক সুজাউদ্দৌলাকে তাদের কর্মস্থল থেকে প্রত্যাহার করে বগুড়া পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।
বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞা জানান, তদন্ত কমিটিকে দ্রুত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: চিকিৎসক-পুলিশের বাগবিতণ্ডা: হাইকোর্টের নজরে আনলেন এক আইনজীবী
উল্লেখ্য, গত ৩ এপ্রিল রাতে শিবগঞ্জ সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আরিফুল ইসলাম সিদ্দিকীর নেতৃত্বে বগুড়া-রংপুর মহাসড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে যানবাহন তল্লাশি করেন মোকামতলা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সদস্যরা। তল্লাশিকালে ঢাকাগামী বাস খালেক পরিবহন থেকে নাজিম নামের এক ব্যক্তিকে ৫০ বোতল এবং পিংকি পরিবহনের একটি বাস থেকে সাইফুল ইসলাম নামে একজনকে ১৯৮ বোতল ফেনসিডিলসহ আটক করা হয়। এ ঘটনায় মোকামতলা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক সুজাউদ্দৌলা বাদী হয়ে পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করেন। কিন্তু পিংকি পরিবহন থেকে ১৯৮ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার হলেও সেখানে ১১০ বোতল জব্দ দেখিয়ে সাইফুলের নামে মামলা দেয়া হয়। বাকি ৮৮ বোতল ফেনসিডিল পুলিশের এক কর্মকর্তা মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দেন। এ খবর ফাঁস হলে বগুড়ার পুলিশ সুপার মামলা দুটি জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কাছে স্থানান্তরের আদেশ দেন এবং গত ২০ এপ্রিল মোকামতলা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে ফেনসিডিল উদ্ধারের সময় উপস্থিত পুলিশ সদস্য ছাড়াও মামলার সাক্ষীদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
আরও পড়ুন: হেফাজত কর্মীদের হামলায় বাগেরহাটে ওসিসহ ৫ পুলিশ আহত
৩ বছর আগে
মামুনুলের পক্ষে ফেসবুক লাইভ: কুষ্টিয়ার সেই পুলিশ কর্মকর্তা প্রত্যাহার
হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের পক্ষ নিয়ে ফেসবুক লাইভে এসে বক্তব্য দেয়া পুলিশের সেই এএসআই গোলাম রাব্বানীকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে সোমবার সকালে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার খাইরুল আলম জানান, রবিবার এএসআই রাব্বানীকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
এএসআই রাব্বানী কুষ্টিয়ার ইন সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারে কর্মরত ছিলেন। প্রত্যাহারের আগের দিন তিনি ফেসবুক লাইভে এসে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের গুণকীর্তন করেন এবং সাংবাদিকদের চরম বিষোদগার করেন। পুলিশ কর্মকর্তার ওই লাইভটি ইতোমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে।
আরও পড়ুন: হেফাজতের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি শেখ সেলিমের
ফেসবুক লাইভে এসে এএসআই গোলাম রাব্বানী বলেন, 'কালকে মোবাইলে দেখলাম মামুনুল হক হুজুরের একটি ভিডিও। যে ভিডিওতে তিনি তার স্ত্রীকে নিয়ে একটা রিসোর্টে গেছেন। সেখানে আমার প্রশ্ন হলো যে অধিকাংশ সাংবাদিকরা সেখানে তাকে চিল্লাপাল্লা করে তার কাবিননামা দেখতে চাচ্ছে। আপনাকে এই অধিকার কে দিয়েছে? আপনাকে এই অধিকার কি রাষ্ট্র দিয়েছে? কোন সাংবাদিকদের যদি জানা থাকে এই ধরনের আইনসঙ্গত বিষয় আমি তো পুলিশে চাকরি করি। আমার এটা জানা নেই। কিন্তু ভণ্ডামির একটা সীমা আছে। সে যদি তার স্ত্রী ব্যতীত অন্য কাউকে নিয়ে যেত তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া যেত। তিনি (মামুনুল হক) একজন আলেম মানুষ। তাকে একটা ষড়যন্ত্রমূলক এ ধরনের হেনস্তা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কারণটা কি? ওনার মতো একজন আলেম এই ধরনের কাজ করবে এটা আমি বিশ্বাস করি না। ওনার স্ত্রীকে নিয়ে গেছে আর আপনি ভিডিও টিডিও করে দিয়া ওনারে ব্যাভিচারিনী বানাচ্ছেন, এগুলো ভণ্ডামি বাদ দেন। বাংলাদেশের যে মিডিয়াগুলো আছে আপনারা অধিকাংশ বদমাশ।'
সাংবাদিকদের তিনি ভণ্ড বলেও অভিহিত করেন।
আরও পড়ুন: হেফাজতের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি শেখ সেলিমের
তিনি বলেন, `এই বাংলাদেশে অনেক নাস্তিকরা বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম তুলে দেবে। এই তাদের বিরুদ্ধে কথা বলেন না কেন? কোন জারজ সন্তান সে বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম সংসদ থেকে তুলে দেবে। সংসদের আর সদস্যরা চুপ করে বসে থাকে, পুলিশ বাহিনী চুপ করে থাকে। আমাদের সিনিয়র অফিসাররা চুপ করে থাকে। তাদের ভেতরে কি আল্লার কালাম নাই? বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম তুলে দেবে? তাদের ভেতর আল্লাহর কালাম থাকলে সবাই সবার পক্ষ থেকে কথা বলত। আমাদের মুখ বন্ধ।'
আরও পড়ুন: সিলেটে হরতালে হেফাজত-ছাত্রলীগ সংঘর্ষ, আটক ৫
এব্যাপারে পুলিশের খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি ড. মুহিদ উদ্দিন জানান, গোলাম রাব্বানীর বিরুদ্ধে এরই মধ্যে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তাকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। পেশার বাইরে গিয়ে কেন অপেশাদার আচরণ করেছে- এটা জানতে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
৩ বছর আগে