শীতলক্ষ্যায় লঞ্চডুবি
শীতলক্ষ্যায় লঞ্চডুবি: ৮ জনের বিরুদ্ধে বিআইডব্লিউটিএ’র দুই মামলা
নারায়ণগঞ্জের আল-আমিন নগরের শীতলক্ষ্যা নদীতে মালবাহী জাহাজের ধাক্কায় যাত্রীবাহী লঞ্চডুবির ঘটনায় জাহাজটির আট কর্মচারীর বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।
বিআইডব্লিউটিএ’র উপ-পরিচালক (নৌ নিরাপত্তা) বাবু লাল বৈদ্য বাদী হয়ে সোমবার নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানায় ও নৌ আদালতে মামলা দুটি করেন বলে জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিএ নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক মাসুদ কামাল।
নারায়ণগঞ্জ সদর নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান জানান, পুলিশের করা মামলায় আটক মালবাহী জাহাজের চালক, গ্রিজার প্রকৌশলীসহ ছয়জন কর্মচারীকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাতদিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে হাজির করা হয়েছে বলেও জানান ওসি।
এদিকে সোমবার থেকে নারায়ণগঞ্জ-চাঁদপুর ও মুন্সীগঞ্জ রুটে অনির্দিষ্টকালের জন্য লঞ্চ চলাচল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ।
আরও পড়ুন: শীতলক্ষ্যায় লঞ্চ দুর্ঘটনা: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮
বিআইডব্লিউটিএ’র নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক মাসুদ কামাল বলেন, ‘এই রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধের অনেক কারণের মধ্যে রয়েছে লঞ্চ চালকদের দক্ষতার অভাব, অসাবধানতা, ছোট আকারের নৌযান।’
সোমবার নদী থেকে আরও দুটি লাশ উদ্ধারের পর এ দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে আটজনে দাঁড়িয়েছে।
সোমবার ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স সদর দপ্তরের উপ-সহকারী পরিচালক (মিডিয়া সেল) মোহাম্মদ শাহজাহান শিকদার জানান, সকালে নদী থেকে ৪০ বছর বয়সী আরেক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়।
লঞ্চের চার যাত্রী এখনও নিখোঁজ রয়েছে বলে জানান তিনি।
নিখোঁজ ব্যক্তিরা হলেন- ঢাকার ডেমরা এলাকার আব্দুল্লাহ আল জাবের আদনান (৩৫), মুন্সীগঞ্জের মোসলেম উদ্দিন হাতেম (৫৫), আরোহী ও জোবায়ের হোসেন।
আরও পড়ুন: শীতলক্ষ্যায় ৩০ যাত্রী নিয়ে লঞ্চডুবি
এর আগে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) উদ্ধারকারী জাহাজ ‘প্রত্যয়’ ভোর সাড়ে ৫টার দিকে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ডুবে যাওয়া লঞ্চ ‘এমভি আফসার উদ্দিন’ উদ্ধার করে।
তবে লঞ্চের ভেতরে কোনো লাশ পাওয়া যায়নি বলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদরদপ্তরের তথ্য মতে, রবিবার দুপুর আড়াইটার দিকে মুন্সীগঞ্জগামী এমভি আফসার উদ্দিন লঞ্চটি ‘রূপসী ৯’ মালবাহী জাহাজের ধাক্কায় ডুবে যায়।
২ বছর আগে
শীতলক্ষ্যায় লঞ্চডুবি: বন্দর থানায় মামলা
নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানার মদনগঞ্জ কয়লাঘাট এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীতে বেপরোয়া গতিতে পণ্যবাহী জাহাজ চালিয়ে সাবিত আল হাসান নামে মুন্সিগঞ্জগামী একটি লঞ্চ ডুবিয়ে ৩৪ জন যাত্রীকে হত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডবিøউটিএ)।
মঙ্গলবার রাতে জেলার বন্দর থানায় মামলাটি দায়ের করেন বিআইডবিøউটিএ নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের উপপরিচালক (নৌ নিট্রা) বাবু লাল বৈদ্য। মামলায় হত্যার উদ্দেশে বেপরোয়া গতিতে পণ্যবাহী জাহাজ চালিয়ে লঞ্চটি ডুবিয়ে ৩৫ জনের প্রাণহানি ঘটানো হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। তবে মামলায় আসামি হিসেবে কারো নাম উল্লেখ করা হয়নি।
আরও পড়ুন: শীতলক্ষ্যায় ‘ত্রুটিপূর্ণ’ সেতুর কারণে আরও লঞ্চ দুর্ঘটনার আশঙ্কা নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী’র
মামলার বাদী বাবু লাল বৈদ্য জানান, পেনাল কোড ২৮০, ৩০৪, ৩৩৭, ৩৩৮, ৪২৭, ৪৩৭ ধারাসহ ইনল্যান্ড শিপিং অর্ডিন্যান্স ১৯৭৬ এর ৭০ ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। হত্যার উদ্দেশে এবং বেপরোয়া গতিতে নৌযান চালিয়ে ৩৫ জনকে হত্যা সংঘটিত করার অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলায় আসামি হিসেবে কারো নাম উল্লেখ করা হয়নি।
বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা জানান, বিআইডবিøউটিএ’র কর্মকর্তা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলাটি দায়ের করেছেন। এতে হত্যার উদ্দেশে বেপরোয়া গতিতে জাহাজ চালিয়ে হত্যা সংঘটিত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আশা করছি খুব শিগগিরই দোষীদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।
আরও পড়ুন: শীতলক্ষ্যায় লঞ্চডুবি: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৪
উল্লেখ্য, শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর নির্মাণাধীন সৈয়দপুর-মদনগঞ্জের নির্মাণাধীন শীতলক্ষ্যা সেতুর নিচে কয়লাঘাট এলাকায় এসকেএল-৩ নামের একটি লাইটার জাহাজের ধাক্কায় সাবিত আল হাসান নামের নারায়ণগঞ্জ থেকে মুন্সিগঞ্জগামী লঞ্চটি অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে ডুবে যায়। গত মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত ৩৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে ঘটনার ২ দিন পেরিয়ে গেলেও আটক হয়নি ঘাতক এসকেএল-৩ নামের জাহাজটি।
৩ বছর আগে
শীতলক্ষ্যায় লঞ্চডুবি: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৪
নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীতে অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে ডুবে যাওয়া লঞ্চ থেকে সোমবার রাতে এবং মঙ্গলবার সকালে আরও ৫টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা ৩৪ জনে দাঁড়িয়েছে।
সদর থানার ওসি শাহজামান জানান, নদীর বিভিন্ন অংশ থেকে পুলিশ লাশগুলো উদ্ধার করেছে।
পাঁচজন হলেন-মুন্সিগঞ্জ জেলার কাজী ইউসুফ (৪০), রাজধানীর মিরপুর এলাকার রাজীউদ্দিন কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র তানভীর হোসেন (১৭), রাজধানীর লালমাটিয়া এলাকার সিরাজুল ইসলামের ছেলে মো. সোহাগ (২৫), মালপাড়া মুন্সিগঞ্জের রিজভী আহমেদ (২১) এবং মুন্সিগঞ্জ জেলার হারাধনের ছেলে আকাশ সাহা (১১)।
এর আগে সোমবার স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস এবং কোস্ট গার্ডের ডুবুরিরা উদ্ধারকারী জাহাজ 'প্রত্যয়'-এর সাহায্যে ডুবে যাওয়া লঞ্চটি উদ্ধার করতে সক্ষম হয় এবং সেখান থেকে দুপুরে আরও ২১টি লাশ উদ্ধার করে।
আরও পড়ুন: শীতলক্ষ্যায় নৌকা থেকে লাফিয়ে পড়ে পোশাক কর্মী নিখোঁজ
রবিবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ নারায়ণগঞ্জে প্রায় ৫০ জন যাত্রী নিয়ে মুন্সিগঞ্জগামী লঞ্চ এমএল রাবিত আল হাসানকে একটি তেলবাহী ট্যাংকার ধাক্কা দেয়। সংঘর্ষের পরপরই লঞ্চটি ডুবে যায়। প্রায় ২০ জনের মতো যাত্রী সাঁতরে পারে আসতে সক্ষম হয়।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে পশুর নদীতে ট্যুরিস্ট লঞ্চডুবি
পুলিশ জানায়, লঞ্চটিকে আঘাত করার পরেও থামেনি বলে তেলবাহী ট্যাঙ্কারটি জব্দ করা যায়নি।
স্থানীয় প্রশাসন ৭ সদস্যের এবং বিআইডাব্লইউটিএ ৪ সদস্যের আলাদা দুটি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
আরও পড়ুন: নারায়ণগঞ্জে মসজিদে বিস্ফোরণ: নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৯
৩ বছর আগে