রাঙামাটি
পার্বত্য চট্টগ্রামে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের তৎপরতা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে
চট্টগ্রামের পার্বত্য অঞ্চলে একটি ক্রমবর্ধমান শক্তি হয়ে উঠেছে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)। কুকি-চিন নৃগোষ্ঠীর জন্য স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আহ্বানও জানিয়েছে তারা।
নাথান বমের নেতৃত্বে ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত কেএনডিও মূলত বান্দরবান ও রাঙামাটির পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসরত ছয়টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী বম, পাংখুয়া, লুসাই, ঘুমি, মো ও খিয়াংয়ের অধিকার ও স্বার্থ রক্ষার লক্ষ্যে কাজ করে।
সরকারি সূত্রের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সন্ত্রাসী গোষ্ঠীটির প্রাথমিক প্রচেষ্টা ছিল বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সংলাপের মাধ্যমে শান্তি, সম্প্রীতি এবং ওই এলাকায় অসন্তোষের সমাধান করা।
তবে, বছরের পর বছর তাদের দাবি পূর্ণ না হওয়ায় কেএনডিও ২০১৬ সালে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টে রূপান্তরিত হয়। তার সশস্ত্র শাখা কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি (কেএনএ) গঠনের মাধ্যমে আরও আক্রমণাত্মক হয়ে উঠে তাদের কার্যক্রম।
কর্মকর্তাদের মতে, কেএনএফ এখন কুকিল্যান্ড নামে একটি পৃথক কুকি-চিন রাজ্য গঠন করতে চায় এবং তাদের পূর্বপুরুষের জমি পুনরুদ্ধার করতে চায়। ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) এবং জেএসএসকে ‘সশস্ত্র সন্ত্রাসী’ উল্লেখ করে তাদের এই অঞ্চল থেকে দূর করতে চায়।
বেশ কয়েক বছর ধরে এই গোষ্ঠীর তৎপরতা বেড়েছে, যা আদর্শিক প্রচার থেকে সশস্ত্র সংঘাতে রূপ নিয়েছে।
আরও পড়ুন: বান্দরবানে কেএনএফের ২ সদস্য নিহত
কেএনএফের প্রধান লক্ষ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে ইনার লাইন পারমিট (আইএলপি) ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা, যা ব্রিটিশ উপনিবেশিক শাসনের একটি ধারা। এই ব্যবস্থায় আদিবাসী ছাড়া অন্য জনগোষ্ঠীর চট্টগ্রাম পার্বত্য অঞ্চলে প্রবেশের জন্য বিশেষ অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক ছিল।
আইএলপিকে আদিবাসী জনগোষ্ঠী এবং তাদের ভূমির জন্য প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা হিসেবে দেখা হতো।
কেএনএফ তাদের বক্তব্যে প্রায়ই তাদের সংগ্রামকে এই অঞ্চলগুলোর পুনরুদ্ধার এবং বাস্তুচ্যুত কুকি-চিন জনগণের পুনর্বাসন হিসেবে তুলে ধরে। এরা ব্রিটিশ শাসনের সময় মিজোরাম (ভারত) এবং চিন রাজ্যের (মিয়ানমার) মতো এলাকায় পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে কেএনএফ ক্রমবর্ধমান সহিংস সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছে। ২০২৪ সালের ২ এপ্রিল বান্দরবানের রুমা বাজারে সোনালী ব্যাংকের একটি শাখায় দুঃসাহসিক হামলা চালায় কেএনএফের ২০ থেকে ৩০ জনের একটি দল।
সশস্ত্র ঘাতকরা শুধু বিপুল পরিমাণ টাকা (প্রায় ১৫-২০ লাখ টাকা) লুটপাটই করেনি, রাইফেল ও এসএমজিসহ আগ্নেয়াস্ত্রও চুরি করেছে এবং ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণ করে। এই হামলার পরের দিন আরও একটি ব্যাংক ডাকাতি হয়েছিল। সেখানে হামলাকারীরা মোবাইল ফোন এবং আরও অর্থ নিয়ে পালিয়ে যায়।
কেএনএফের সামরিক তৎপরতার কারণে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সরাসরি সংঘর্ষ হয়েছে। চলতি বছরের ৩ এপ্রিল এবং ৬ আগস্ট রুমা জোনে কেএনএ এবং সেনাবাহিনীর টহল দলের মধ্যে ঝুরবারং পাড়া ও পলি প্রংসাপাড়ার মতো এলাকায় ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।
এই সংঘর্ষের ফলে একজন সেনা জওয়ান নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হন।
এই অঞ্চলে কেএনএফ তাদের অবস্থান আরও শক্তিশালী করছে। তাদের দাবি, তাদের বাহিনীতে ৩,০০০-এর বেশি সদস্য রয়েছে। যদিও প্রকৃত সংখ্যা আনুমানিক ৫০ থেকে ৬০ জন বলে ধারণা করা হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক স্নাতক ও রাজনৈতিক প্রার্থী প্রেসিডেন্ট নাথান বম এবং চিফ অব স্টাফ উপা ভানচুং কেএনএফের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তারা একটি পৃথক কুকি-চীন আঞ্চলিক রাষ্ট্রের জন্য তাদের সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছে। গোষ্ঠীটির কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে ‘হেড-হান্টার্স’ নামে একটি এলিট কমান্ডো ইউনিট। এটি সহিংস সংঘর্ষের জন্য কুখ্যাত।
চট্টগ্রামের পার্বত্য অঞ্চলে আদিবাসী কুকি-চিন সম্প্রদায়ের উপস্থিতি প্রায়ই বৃহত্তর বাঙালিশাসিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের আড়ালে চাপা পড়ে গেছে।
কেএনএফের দাবি, তাদের কর্মকাণ্ডকে বছরের পর বছর অবহেলা করেছে সরকার। একই সঙ্গে তাদের প্রান্তিকীকরণ করা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে তাদের দাবিগুলো পূরণ করা হয়নি। জাতিগত বৈচিত্র্যের জন্য পরিচিত এই অঞ্চলটি দীর্ঘ সময় ধরে আদিবাসী সম্প্রদায় এবং বাংলাদেশি রাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে রয়েছে।
সংঘাত যত গভীর হচ্ছে, পার্বত্য চট্টগ্রামের ভবিষ্যৎ ততই অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। সরকার ক্রমবর্ধমান সহিংসতা এবং এই অঞ্চল অস্থিতিশীল হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট তার লক্ষ্য অর্জনে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। স্বায়ত্তশাসন ও কুকিল্যান্ড প্রতিষ্ঠায় কেএনএফের তৎপরতা যত বাড়বে, ওই অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠা তত দূরে চলে যাবে।
কুকি ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) কার্যক্রমকে কেন্দ্র করে পার্বত্য চট্টগ্রামে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা সম্পর্কে জানতে চাইলে নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আবদুল হামিদ বলেন, কেএনএফ ইস্যু জাতীয় সীমানা অতিক্রম করেছে।
তিনি বলেন, এই গ্রুপ ভারত, মিয়ানমার, চীন ও বাংলাদেশে সক্রিয় বলে জানা গেছে। বাংলাদেশের বান্দরবান অঞ্চলে সাম্প্রতিক অপারেশন ছাড়াও তারা ভারতের মণিপুর রাজ্যে হামলা চালিয়েছে, যার ফলে জীবন ও সম্পদের যথেষ্ট ক্ষতি হয়েছে।
এছাড়াও কেএনএফ স্বাধীন কুকি রাষ্ট্রের পক্ষে প্রচার চালাচ্ছে বলেও জানা গেছে। এটিকে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হামিদ বিশ্বশক্তির প্রভাবিত বৃহত্তর আঞ্চলিক গতিশীলতার প্রতিফলন বলে মনে করছেন।
তিনি বলেন, বিষয়টি সমাধান করতে সমন্বিত কৌশলের প্রয়োজন, যা ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, উদীয়মান প্রবণতা এবং সম্ভাব্য পরিস্থিতি বিবেচনায় নেবে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হামিদ রাজনীতিবিদ, সুশীল সমাজ, এনজিও এবং বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে একযোগে কাজ করার মাধ্যমে নমনীয় ও কঠোর শক্তি ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
কুকি-চিন জনগণের বাস্তুচ্যুতি সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতা কমানোর জন্য বিশেষত ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা করে সক্রিয় কূটনীতি অবলম্বনের গুরুত্বও তুলে ধরেন তিনি।
আরও পড়ুন: বান্দরবানে সেনা অভিযানে ৩ কেএনএফ সদস্য নিহত
৩ সপ্তাহ আগে
সংঘর্ষের কারণে খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে মোবাইল ব্রডব্যান্ড পরিষেবা ব্যাহত: বিটিআরসি
চলমান সংঘর্ষের কারণে খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি জেলায় মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ফিক্সড ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
শনিবার বিটিআরসির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী সংঘর্ষে স্থানীয় টেলিযোগাযোগ অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিকেল ৪টার দিকে আগুনের ঘটনার ফলে সামিট কমিউনিকেশনস লিমিটেড এবং বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেটের (বিটিসিএল) অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যার ফলে মোবাইল অপারেটর রবির ১৬টি টাওয়ার নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: বন্যাকবলিত ১০ জেলায় ১২৩৫ মোবাইল টাওয়ার অকেজো: বিটিআরসি
এতে আরও বলা হয়, জেলায় রবির প্রায় ১৫০টি টাওয়ার রয়েছে। কিন্তু উত্তেজনাকর পরিস্থিতি চলমান থাকায় সঙ্গে সঙ্গে সেসব টাওয়ার মেরামত করা সম্ভব হয়নি।
শুক্রবার রবি ১৪টি টাওয়ার সচল করতে পেরেছে এবং দুটি টাওয়ার এখনো মেরামত করা যায়নি। শিগগিরই সবগুলো সাইট সচল করা হবে।
খাগড়াছড়ি জেলায় টেলিটকের ৭২টি টাওয়ার রয়েছে। পিডিবি থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় ২৩টি ও অন্যান্য কারণে আরও ৬টিসহ মোট ২৯টি টেলিটকের টাওয়ার বর্তমানে অচল রয়েছে বলেও জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
এছাড়া খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি জেলায় পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে সহিংসতায় উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা সচল রয়েছে বলে দাবি বিটিআরসির। তবে কিছু কিছু এলাকায় ইন্টারনেট সংযোগ ক্যাবল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এবং কোনো কোনো এলাকায় বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক না থাকায় স্বল্পসংখ্যক গ্রাহক ইন্টারনেট সংযোগ থেকে বঞ্চিত রয়েছেন বএল জানায় প্রতিষ্ঠানটি।
আরও পড়ুন: বকেয়া পাওনা আদায়ে টেলিটক-বিটিসিএল-বিটিআরসির বৈঠক অনুষ্ঠিত
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এলাকায় আিইএসপি অপারেটরদের ক্ষতিগ্রস্ত নেটওয়ার্ক পুনঃস্থাপন ও জেনারেটরের মাধ্যমে গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেট সংযোগ প্রদানের কার্যক্রম চলছে। এলাকাগুলোতে ক্রমান্বয়ে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবাও চালু হচ্ছে।
বিটিআরসি থেকে মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ফিক্সড ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধের কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি বলে জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে। সাময়িক এ অসুবিধার জন্য বিটিআরসি গ্রাহকদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করছে।
আরও পড়ুন: বিটিআরসি-বিআইজিএফের সমঝোতা স্মারক সই
৩ মাস আগে
খাগড়াছড়ি-রাঙামাটিতে সহিংসতায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে: আইএসপিআর
খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে সহিংসতার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে আইএসপিআর চলমান উত্তেজনা প্রশমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহায়তা করতে সম্প্রদায়ের নেতাদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে।
আরও পড়ুন:জনগণের সঙ্গে অসদাচরণের জন্য দোষী সেনা সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে: আইএসপিআর
এতে বলা হয়, এই অস্থিরতা তিন পার্বত্য জেলায় সহিংস দাঙ্গায় পরিণত হতে পারে। তাই তিন জেলার জনগণকে শান্ত থাকার এবং শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখতে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হচ্ছে।
এর আগে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসন ও রাঙামাটি জেলা প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে জনসমাগম নিষিদ্ধ করেছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলাচল সীমিত করে।
গত বৃহস্পতিবার ও আজ শুক্রবার ভোরে খাগড়াছড়িতে সহিংস ঘটনায় ৩ জন নিহত ও ৯ জন আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: 'বৈঠকে তরুণ কর্মকর্তাদের অসন্তোষের মুখে সেনাপ্রধান,’ খবর প্রত্যাখান আইএসপিআরের
৩ মাস আগে
রাঙামাটিতে সড়ক ও নৌপথ অবরোধ করেছে ইউপিডিএফ
রাঙ্গামাটির লংগদুতে পাহাড়ের আঞ্চলিক সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) এর দুই সদস্যকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় রাঙ্গামাটিতে অর্ধদিবস সড়ক ও নৌপথ অবরোধ পালন করছে ইউপিডিএফের সদস্যরা।
সোমবার (২০ মে) সকাল থেকে অবরোধের কারণে রাঙ্গামাটি-খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রাম সড়কে দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। তবে ইউপিডিএফের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় কঠোরভাবে অবরোধ পালিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাসচাপায় ২ শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় উত্তপ্ত চুয়েট, কাপ্তাই সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
রাঙ্গামাটির লংগদুতে জেএসএস সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হামলায় ইউপিডিএফের সদস্য ও সমর্থককে গুলি করে হত্যার প্রতিবাদে খুনিদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে সোমবার সড়ক ও নৌপথ অবরোধের ডাক দেয় ইউপিডিএফ। ভোর সাড়ে ৫টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়।
এদিকে সংগঠনটি ও তাদের সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা সকাল থেকে বিভিন্ন সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে ও আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ পালন করেছে।
এছাড়া অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, গত শনিবার লংগদুর বড় হাড়িকাবা এলাকায় জেএসএসের ৭ জনের একদল সন্ত্রাসী সাংগঠনিক কাজে নিয়োজিত ইউপিডিএফ কর্মীদের উপর সশস্ত্র হামলা চালায়। এতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে ইউপিডিএফ সদস্য বিদ্যাধন চাকমা ও সমর্থক ধন্য মনি চাকমা ঘটনাস্থলে নিহত হন।
আরও পড়ুন: ফাইরুজের আত্মহত্যার ঘটনায় জবি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ, অভিযুক্ত সহকারী প্রক্টর ও সহপাঠী সাময়িক বরখাস্ত
নারায়ণগঞ্জে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
৭ মাস আগে
রাঙামাটির দুর্গম ৯টি ভোটকেন্দ্রে হেলিকপ্টারে গেল নির্বাচনি সরঞ্জাম
আগামী ৮ মে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের সাধারণ নির্বাচনে রাঙ্গামাটির চারটি উপজেলায় ভোটগ্রহণ হতে যাচ্ছে।
এর মধ্যে সোমবার (৬ মে) সকালে দুর্গম জুরাছড়ি ও বরকল দুই উপজেলায় হেলিকপ্টারযোগে বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনি সরঞ্জাম ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পৌঁছানোর কাজ শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাত পোহালেই মসিক নির্বাচন, কেন্দ্রে পৌঁছেছে নির্বাচনি সরঞ্জাম
সকালে জুরাছড়ি যক্ষ্মা বাজার আর্মি ক্যাম্প থেকে হেলিকপ্টারযোগে রাঙ্গামাটির জুরাছড়ির সাতটি ও বরকলে দুইটি দুর্গম ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনি সরঞ্জাম ও কর্মকর্তাদের পাঠানোর কাজ শুরু হয়।
নির্বাচনি অন্যান্য সরঞ্জামের মধ্যে রয়েছে ব্যালট পেপার, ব্যালট বক্স, স্ট্যাম্প প্যাড এবং অমোচনীয় কালি। ৮ মে ভোটগ্রহণ ও ফলাফল গণনা শেষে পুনরায় নির্বাচনি কর্মকর্তারা ফিরে আসবেন।
এ বিষয়ে রাঙ্গামাটি রির্টানিং কর্মকর্তা ও সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মনির হোসেন বলেন, প্রথম ধাপে ৮ মে ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনে চারটি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আর প্রথম ধাপের এ নির্বাচনে রাঙ্গামাটি সদরসহ চার উপজেলায় সর্বমোট ৩২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
আরও পড়ুন: নির্বাচনি জনসভায় 'অনুপ্রবেশকারী' বলায় মুসলিম বিদ্বেষের অভিযোগ মোদির বিরুদ্ধে
৭ মাস আগে
সাজেকে অগ্নিকাণ্ডে ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি
রাঙামাটির সাজেক পর্যটন কেন্দ্রের কংলাক পাহাড়ে অগ্নিকাণ্ডে তিনটি রির্সোট, একটি বাড়ি ও একটি দোকান পুড়ে গেছে। এতে প্রায় ৫০ লাখ ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাজেক থানার সার্কেল এএসপি আবদুল আওয়াল।
আরও পড়ুন: নরসিংদীতে অগ্নিকাণ্ডে একই পরিবারের ৬ জন দগ্ধ
বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে আগুনের সূত্রপাত হয়। এতে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। আনুমানিক ৫০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছে রিসোর্ট মালিকরা।
আগুনে পুড়ে যাওয়া রিসোর্টগুলো হচ্ছে– মেঘছোঁয়া রিসোর্ট, ফুরেংগি রিসোর্ট ও দুমদে রিসোর্ট।
স্থানীয়রা জানায়, সাজেকের কংলাক পাড়ার একটি টিনের ঘর থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। সেখান থেকে দুমদে রিসোর্টে ছড়িয়ে পড়ে। এরপরে আরও দুইটি রিসোর্টে ছড়িয়ে যায়।
আরও পড়ুন: কেনিয়ার রাজধানীতে গ্যাস বিস্ফোরণে অগ্নিকাণ্ডে নিহত ৩, আহত ২৭১ জন
১০ মাস আগে
না ফেরার দেশে রাঙামাটির ‘সাদা মনের মানুষ’ তিলোকানন্দ
সাদা মনের মানুষ উপাধিপ্রাপ্ত বর্ষীয়ান ভিক্ষু মহাসংঘরাজ শ্রীমৎ তিলোকানন্দ মহাথেরো আর নেই। বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে চট্টগ্রাম থেকে চিকিৎসা নিয়ে সড়ক পথে নিজ বিহারে ফেরার পথে মৃত্যু বরণ করেন।
ভান্তের বয়স হয়েছিল আনুমানিক ৮৬ বছর। ভান্তে দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত কারণে ডায়াবেটিস, কিডনি জটিলতাসহ নানা রোগে ভুগছিলেন।
আরও পড়ুন: রাঙ্গামাটিতে ৪১ মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, ভান্তের লাশ বাঘাইছড়িতে তার নিজ বিহারে আনা হয়েছে এবং সংরক্ষণসহ বিহার কমিটির পরবর্তী সিদ্ধান্তনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভিক্ষু সংঘ থেকে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসা শেষে অবশেষে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন ভান্তে। তার চিকিৎসার জন্য যারা কায়িক, বাচনিক, মানসিক ও আর্থিক সহযোগিতা দিয়ে এসেছেন, তাদের প্রতি পার্বত্য ভিক্ষু সংঘের পক্ষ থেকে বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা ও আশীর্বাদ জানান।
তিনি রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সুনামধন্য কাচালং শিশু সদনের অধ্যক্ষ, পার্বত্য ভিক্ষু সংঘ বাংলাদেশের চতুর্থ মহাসংঘরাজ, সাদা মনের মানুষ উপাধিপ্রাপ্ত। এ ছাড়া মিয়ানমার সরকারের কাছ থেকে অগ্রমহাপণ্ডিত উপাধিও পেয়েছেন তিনি। বহু প্রতিষ্ঠানের জনক, অসহায়দের অনাথ পিতা, মগবান শাক্য মনি বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ছিলেন।
আরও পড়ুন: রাঙ্গামাটিতে প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপিত
রাঙ্গামাটিতে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ‘আষাঢ়ী পূর্নিমা’ উদযাপিত
১ বছর আগে
দীর্ঘ ৪৬ দিন পর ভেসে উঠল রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতু
বৃষ্টি ও উজানের ঢলে কাপ্তাই হ্রদে পানি বেড়ে ডুবে যাওয়া ‘সিম্বল অব রাঙামাটি’ খ্যাত পর্যটন ঝুলন্ত সেতু দীর্ঘ ১ মাস ১৬ দিন পর ভেসে উঠেছে।
এতে পর্যটন কর্তৃপক্ষ সেতুতে আগের দেওয়া পর্যটক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এরই মধ্যে পর্যটকরা ঝুলন্ত সেতুতে প্রবেশ করেছে।
আরও পড়ুন: রাঙ্গামাটিতে পাহাড় ধসের আশঙ্কায় সতর্কতা জারি
রাঙ্গামাটিতে আগত পর্যটকদের পছন্দের তালিকায় থাকে পর্যটন করপোরেশনের ঝুলন্ত সেতু। পাহাড়ের দুই দ্বীপ ও প্রকৃতিকে কাজে লাগিয়ে ৮০- এর দশকে তৈরি করা হয়েছে ঝুলন্ত সেতু। এদিকে গত ৩ সেপ্টেম্বর থেকে ঝুলন্ত সেতু বন্ধ করে দেওয়া হয়।
পর্যটন বোট ঘাটের ইজারাদার রমজান আলী জানান, কাপ্তাই হ্রদের পানি বাড়ায় সঙ্গে সঙ্গে প্রতি বছরই সেতুটি হ্রদের পানিতে ডুবে যায়। এতে পর্যটন ঝুলন্ত সেতুটি ডুবে যাওয়া ঝুলন্ত সেতু পারাপারের টিকিট বিক্রি বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ।
তিনি আরও জানান, এতে করে পর্যটক শূন্য হয়ে পড়ে। আর পর্যটক না আসায় দেড় মাসেরও বেশি সময় পর্যটকবাহী বোটগুলোর চালকরা ঘাটে বসে দিন পার করতে হয়েছে। এতে অতি কষ্টে দিন পার করেছে। তবে সেতুটি ডুবে থাকার কারণে ব্যবসায় যে ক্ষতি হয়েছে তা এবার শীত মৌসুমে পুষিয়ে ওঠার চেষ্টা চালিয়ে যাবেন।
আরও পড়ুন: রাঙ্গামাটিতে গাছবোঝাই ট্রাক থামিয়ে চালককে গুলি
১ বছর আগে
রাঙামাটিতে বিপন্ন প্রজাতির লজ্জাবতী বানর উদ্ধার
রাঙামাটি শহরের ভেদভেদী আনসার ক্যাম্প এলাকা থেকে বিপন্ন প্রজাতির একটি লজ্জাবতী বানর উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার (২৪ জুলাই) সন্ধ্যার দিকে ক্যাম্পের পাশে পরিত্যাক্ত অবস্থায় বানরটিকে উদ্ধার করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের সদর রেঞ্জ।
সোমবার (২৪ জুলাই) রাত ১১টার দিকে পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) ছালেহ মো. শোয়াইব খানের নির্দেশনায় কাপ্তাই রেঞ্জ কর্মকর্তা খন্দকার মাহমুদুল হক মুরাদ বন বিভাগের সদস্যদের নিয়ে এই বানরটি অবমুক্ত করেন।
আরও পড়ুন: কাপ্তাইয়ে দুর্লভ প্রজাতির লজ্জাবতী বানর উদ্ধার
রেঞ্জ কর্মকর্তা বলেন, সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় রাঙামাটি জেলা শহরের ভেদভেদি আনসার ক্যাম্পের পাশে পরিত্যক্ত অবস্থায় বিপন্ন এই প্রাণীটি দেখতে পান আনসার সদস্যরা।
পরে তারা পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের সদর রেঞ্জে সংবাদ দিলে, কর্মকর্তারা তাদের লোকবল দিয়ে এটি উদ্ধার করে কাপ্তাই রেঞ্জে বুঝিয়ে দেন।
পরে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা নির্দেশে লজ্জাবতী বানরটি রাত সাড়ে ১০টার দিকে কাপ্তাই জাতীয় উদ্যানের গহীন অরণ্যে অবমুক্ত করা হয়।
এই বন কর্মকর্তা বলেন, লজ্জাবতী বানর সাধারণত দিনের বেলায় চোখে দেখে না। রাতে চলাফেরা করে এবং খাদ্য খেয়ে জীবন ধারণ করে।
তিনি আরও বলেন, তাই এটাকে রাতে অবমুক্ত করা হয়েছে।
এছাড়া কাপ্তাই জাতীয় উদ্যানে এই নিয়ে চলতি বছরে তিনটি লজ্জাবতী বানর অবমুক্ত করা হলো বলেও জানান তিনি।
বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক ইউনিয়ন একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা যা প্রকৃতি সংরক্ষণ এবং প্রাকৃতিক সম্পদের সঠিক এবং টেকসই ব্যবহারের ক্ষেত্রে কাজ করে।
তাদের মতে জাতীয় উদ্যানের তালিকায় এই মহা বিপন্ন প্রাণীটির নাম নেই অথচ কাপ্তাই জাতীয় উদ্যানে প্রায়ই লজ্জাবতী বানর দেখেছেন বলে বন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে বিপন্ন প্রজাতীর লজ্জাবতী বানর উদ্ধার
১ বছর আগে
লংগদুতে বজ্রপাতে যুবকের মৃত্যু
রাঙামাটির লংগদুতে বজ্রপাতে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে আড়াইটার সময় উপজেলার কালাপাকুজ্যা রশিদপুর এলাকার (কাপ্তাই হ্রদে) বড় বিলে জাল দিয়ে মাছ ধরার সময় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত হেলাল হোসেন (৩০) উপজেলার কালাপাকুজ্যা ইউনিয়নের রশিদপুর এলাকার পান্না মুন্সির ছেলে।
আরও পড়ুন: মতলব উত্তরে বজ্রপাতে কৃষক নিহত
স্থানীয়রা জানান, সোমবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে আড়াইটার সময় কালাপাকুজ্যার রশিদপুর এলাকার (কাপ্তাই হ্রদে) বড় বিলে জাল দিয়ে মাছ ধরার সময় হঠাৎ বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। এ সময় হেলাল বজ্রপাতে গুরুতর আহত হয়। পরে স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় ইবনে সিনা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক হেলাল হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন।
ইবনে সিনা হাসপাতালের চিকিৎসক মানসুরুর রহমান জানান, সোমবার দুপুর আনুমানিক আড়াইটার দিকে স্থানীয়রা বজ্রপাতে আহত হেলাল হোসেনকে হাসপাতাল নিয়ে আসে। আমরা পরীক্ষা করে দেখেছি-হাসপাতালে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে বজ্রপাতে নিহত ১
ঘুড়ি উড়াতে গিয়ে বজ্রপাতে শিশুর মৃত্যু
১ বছর আগে