স্বাস্থ্য অধিদপ্তর (ডিজিএইচএস)
ডেঙ্গুর প্রকোপ: আরও ২৪২ জন হাসপাতালে
দেশে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় ২৪২ জন নতুন ডেঙ্গু রোগীকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর (ডিজিএইচএস) এই তথ্য জানিয়েছে।
মহামারি করোনার পাশাপাশি বর্ষাকালে ছড়িয়ে পড়া এই মশাবাহিত রোগে বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে দেশ। গত ১ আগস্ট থেকে প্রতিদিনই ২শ’র বেশি ডেঙ্গু রোগী পাওয়া যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত রাজধানীতেই বেশিরভাগ রোগী পাওয়া গেছে বলে স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গুর প্রকোপ: আরও ২৪২ জন হাসপাতালে
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম জানিয়েছেন, বুধবার সকাল পর্যন্ত সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত প্রায় ৮৯৬ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের মধ্যে ৮২৪ জন রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন এবং বাকিরা ঢাকার বাইরে আছেন।
নতুন রোগীর মধ্যে ১১২ জনকে ঢাকার বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এর মধ্যে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে (আইইডিসিআর) ডেঙ্গুতে সন্দেহে দুই জনের মৃত্যুর তথ্য পাঠানো হয়েছে।
জানুয়ারি থেকে প্রায় ৫ হাজার ৫৩৪ জন রোগী ডেঙ্গু নিয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৪ হাজার ৫১৬ জনকে সুস্থ হওয়ার পর ছেড়ে দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশে প্রথম ডেঙ্গু রোগী পাওয়া যায় ২০০০ সালে। ওই বছর ৯৩ জন মারা গিয়েছিল।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু পরিস্থিতি: ২৪ ঘণ্টায় আরও ২১৩ রোগী হাসপাতালে
৩ বছর আগে
লকডাউন: ঢাকার রাস্তায় প্রাইভেট কারের চলাচল বৃদ্ধি
কোভিড-১৯ সংক্রমণ রোধে সরকার চলমান লকডাউন আরও এক সপ্তাহ বাড়ানো সত্ত্বেও প্রাইভেট কারের চলাচল গত কয়েকদিনের তুলনায় উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের (ডিজিএইচএস) নির্দেশনা অনুযায়ী, যে সকল ব্যক্তিরা তাদের মুভমেন্ট পাস পেয়েছেন তাদের নিজস্ব যানবাহনে চলাচল করার অনুমতি দেয়া হয়েছে এবং জরুরি পরিষেবায় নিয়োজিত ব্যক্তিদের এই বিধিনিষেধ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: লকডাউন ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত বৃদ্ধি, প্রজ্ঞাপন জারি
অবশ্য বৃহস্পতিবার মিরপুর রোড, বনানী এবং মহাখালীসহ রাজধানীর অনেক রাস্তায় রিকশা চলাচল করতে দেখা গেছে।
লকডাউনে সরকার রপ্তানিমুখী শিল্পগুলো খোলা রাখায় পোশাক শ্রমিকদের তাদের কর্মস্থলে যোগদানের অনুমতি দেয়া হয়েছে।
কোভিড-১৯ এর বিস্তার রোধে সরকার কঠোর লকডাউন কার্যকর করায় দোকান ও শপিংমলগুলো অবশ্য বন্ধ ছিল।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় চেক-পোস্ট স্থাপনের করে পুলিশ ও র্যা ব সদস্যদের যানবাহন ও লোকজনের চলাচল পর্যবেক্ষণ করতে দেখা গেছে।
ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আসাদুজ্জামান বলেন, 'গত কয়েকদিনে ব্যক্তিগত যানবাহন ও রিকশার চলাচল বেড়েছে। তবে যাদের মুভমেন্ট পাস আছে আমরা কেবল তাদের যাতায়াত করার অনুমতি দিই।'
তিনি বলেন, 'জরুরি পরিষেবাতে নিয়োজিত ব্যক্তিরা অনায়াসেই চলাফেরা করতে পারে।'
করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যার অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধি সরকারকে ১৪ এপ্রিল থেকে আট দিনের সর্বাত্মক লকডাউন আরোপ করে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ১২ এপ্রিল এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল।
আরও পড়ুন: লকডাউনে খাদ্য ও আর্থিক সহায়তার দাবি অটোরিকশা, হালকা যানবাহনের কর্মীদের
পরবর্তীতে, কোভিড-১৯ পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার লক্ষ্যে সরকার চলমান লকডাউনটি ২২ এপ্রিল থেকে আরও এক সপ্তাহ বাড়ানো হয়।
২০ এপ্রিল একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে বলা হয়, চলমান সর্বাত্মক লকডাউন ২২ এপ্রিল থেকে বাড়ানো হবে।
আন্তর্জাতিক বিশেষ ফ্লাইট এবং ব্যাংকিং কার্যক্রম চলবে এবং অন্যান্য বিধি-নিষেধ ২৮ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
১৯ এপ্রিল জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, 'নতুন লকডাউনে আগের সপ্তাহের সকল বিধি-নিষেধ বহাল রেখে ২২ থেকে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। এটি আরও কঠোর হবে।'
মার্চ মাসের মাঝামাঝি থেকে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকায় সরকার এর বিস্তারকে নিয়ন্ত্রণে রাখার পদক্ষেপের হিসেবে ৫ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের জন্য দেশব্যাপী একটি লকডাউন আরোপ করে। পরে ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত আরও একটি কঠোর লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছিল।
কোভিড-১৯ পরিস্থিতি
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৯৫ জন মারা গেছেন। এনিয়ে দেশে করোনায় মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৬৮৩ জনে।
বৃধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুনভাবে ৪ হাজার ২৮০ জন নতুন করে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২৮ হাজার ৪০৮টি। বর্তমানে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৭ লাখ ৩২ হাজার ৬০ জনে।
আরও পড়ুন: করোনায় ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত কমলেও মৃত্যু বেড়েছে
এর আগে, ১৯ এপ্রিল, দেশের আগের সব রেকর্ড ভেঙে করোনায় ১১২ জনের মৃত্যু ঘটে।
গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় এবং ১৮ মার্চ করোনায় প্রথম মৃত্যু ঘটে।
স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, করোনায় এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৭ লাখ ৩২ হাজার ৬০ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছে ৬ লাখ ৩৫ হাজার ১৮৩ জন যা মোট আক্রান্তের ৮৬.৭৭ শতাংশ।
৩ বছর আগে