সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া (এসআইআই)
বিকল্প উৎস থেকে টিকা সংগ্রহে ২ সপ্তাহ সময় লাগবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সরকার তিনটি বিকল্প উত্স- রাশিয়া, চীন এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে কোভিড টিকার অনুসন্ধান করছে এবং এই প্রক্রিয়াটি শেষ করতে কমপক্ষে দুই সপ্তাহ সময় লাগবে বলে মঙ্গলবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন জানিয়েছেন।
তিনি তার বাসভবনে সাংবাদিকদের বলেন, 'এটি একটি উপযুক্ত সময়। বাংলাদেশের তাত্ক্ষণিক প্রয়োজনের জন্য কমপক্ষে ২০ থেকে ৩০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পাওয়ার জন্য ভারতের সাথে আলোচনাও চলছে।’
আরও পড়ুন: ভ্যাকসিন সহযোগিতা: চীন নেতৃত্বাধীন ভার্চুয়াল বৈঠকে অংশ নেবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের সম্পূর্ণ স্টক বিশ্বব্যাপী সরবরাহ করা শুরু করবে।
হোয়াইট হাউস সোমবার জানায়, আগামী কয়েক মাসে রপ্তানির জন্য ৬০ মিলিয়ন ডোজ পর্যাপ্ত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে ।
ড. মোমেন বলেন, বাংলাদেশ রাশিয়া ও চীন থেকে জরুরিভাবে ভ্যাকসিন ব্যবহারের অনুমতি দিতে পারে। 'যেখানে পাব সেখান থেকেই আমরা ভ্যাকসিন নিব।'
কোভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবিলায় ভ্যাকসিন সহযোগিতা জোরদার করার বিষয়ে চীন নেতৃত্বাধীন ভার্চুয়াল বৈঠকে অংশ নেয়ার পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার বাসভবনে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, কোভিড-পরবর্তী দারিদ্র্য ও ই-কমার্স ফোরামের জন্য চীন একটি উন্নয়ন কেন্দ্র স্থাপনসহ তিনটি পরামর্শ শেয়ার করেছে।
আরও পড়ুন: রাশিয়ার টিকা 'স্পুটনিক ভি’ ব্যবহারের অনুমোদন দিল বাংলাদেশ
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'আমাদের বহুপাক্ষিকতায় বিশ্বাস করা উচিত। আমরা সহযোগিতা ও অংশীদারিত্বের উপর জোর দিয়েছি।'
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই দক্ষিণ এশিয়ার আরও চারটি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে দুপুর ২টায় শুরু হওয়ার ভার্চুয়াল বৈঠকে অংশ নেয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।
আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা এবং পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বৈঠকে অংশ নেন।
ডা. মোমেন বলেন, চীন এই প্রক্রিয়াটিতে ভারতকেও স্বাগত জানিয়েছে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের দায়িত্ব ভারতেরই।
তিনি বলেন, চীন উপহার হিসেবে ৬ লাখ ভ্যাকসিনের ডোজ দেবে এবং আশা করি শিগগিরই বাণিজ্যিক ক্রয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ ভ্যাকসিন পাবে।
আরও পড়ুন: মে মাসের প্রথম সপ্তাহে ২১ লাখ টিকা আসছে
বাংলাদেশ চুক্তির মাধ্যমে সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া (এসআইআই) দ্বারা উত্পাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা কোভিড-১৯ টিকার ৭০ লাখ ডোজ পেয়েছে। দ্বিপাক্ষিক অংশীদারিত্বের উপহার হিসেবেও বাংলাদেশ টিকার ৩৩ লাখ ডোজ পেয়েছে।
এটি ভারত থেকে যেকোনো দেশে পাঠানো বৃহত্তম পরিমাণ।
৩ বছর আগে
টিকার মজুদ নিয়ে চিন্তার কিছু নেই: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
কোভিড-১৯ এর টিকার মজুদ নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কোনো কারণ নেই বলে বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. একে আবদুল মোমেন জানিয়েছেন। তিনি আরও জানান, চীনের উপহারের ছয় লাখ ডোজসহ বাংলাদেশের পরিকল্পনা অনুযায়ী পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন থাকবে।
তিনি বলেন, 'আমাদের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। আমরা একটি লাইনআপ করেছি। আমাদের যথেষ্ট ভ্যাকসিন থাকবে। চীন উপহার হিসেবে ভ্যাকসিনের ছয় লাখ ডোজ দেবে। আমাদের এ নিয়ে মাথা ঘামানোর প্রয়োজন নেই ... আমরা ঠিক আছি।'
আরও পড়ুন: অন্যান্য দেশ থেকেও করোনার টিকা আনার উদ্যোগ সরকারের
বাংলাদেশ চুক্তির মাধ্যমে সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া (এসআইআই) দ্বারা উত্পাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা কোভিড-১৯ টিকার ৭০ লাখ ডোজ পেয়েছে। দ্বিপাক্ষিক অংশীদারিত্বের উপহার হিসেবেও বাংলাদেশ টিকার ৩৩ লাখ ডোজ পেয়েছে।
ভারত থেকে যে কোনো দেশে প্রেরিত বৃহত্তম পরিমাণ এটি।
নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে ড. মোমেন বলেন, রাশিয়া ও বাংলাদেশের দুই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বাংলাদেশে টিকা সহ-উত্পাদনের প্রস্তাবে নীতিগতভাবে একমত হয়েছেন।
'আমরা একই পৃষ্ঠায় আছি। আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিস্তারিত জানে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দ্বারা বিষয়গুলি চূড়ান্ত করা হবে,' বলেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
গত সপ্তাহে ইউএনবির সাথে আলাপকালে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, রাশিয়া বাংলাদেশকে টিকা সহ-উত্পাদন করার প্রস্তাব দিয়েছে। 'এটা খারাপ না। আমরা আমাদের বিকল্পগুলো উন্মুক্ত রাখছি।'
তিনি বলেছিলেন, পরিস্থিতি ঠিকঠাক থাকলে রাশিয়া প্রযুক্তি দেবে এবং বাংলাদেশি ফার্মাসিউটিক্যাল সংস্থাগুলো এখানে রাশিয়ার টিকা তৈরি করবে। 'এটি সস্তা হবে এবং আশা করি এটি আরও ভাল হবে।'
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আলোচনার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ড. মোমেন বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গণ টিকাদান কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর উদ্বৃত্ত থাকলে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন সরবরাহের আশ্বাস দিয়েছে।
আরও পড়ুন: টিকা নেয়ার পর আক্রান্ত হলেও স্বাস্থ্যঝুঁকি কম: গবেষণা
জলবায়ু সম্পর্কিত মার্কিন রাষ্ট্রপতির রাষ্ট্রদূত জন কেরি সাম্প্রতিক সময়ে তার বাংলাদেশ সফরে সাংবাদিকদের বলেছেন, 'আমরা আশ্বাস দিতে পারি, আমাদের গুরুতর গণ টিকাদান কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর উদ্বৃত্ত থাকলে আমরা যে কোনো উপায়ে ভ্যাকসিন পুরোপুরি সরবরাহ করব।'
ভারতে ব্যাপক চাহিদা থাকা সত্ত্বেও, বাংলাদেশ আশা করে ভারত দুই দেশের মধ্যকার চুক্তি অনুযায়ী সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া (এসআইআই) দ্বারা উত্পাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড-১৯ টিকার অবশিষ্ট ডোজ সরবরাহ করবে। তবে অন্যান্য বিকল্পও উন্মুক্ত রাখবে।
সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে টিকার তিন কোটি ডোজ কেনা হয়েছে এবং ৫০ লাখ ডোজের প্রথম চালান গত জানুয়ারিতে আসে এবং কোভিড-১৯ টিকার ২০ লাখ ডোজের দ্বিতীয় চালানটি ফেব্রুয়ারিতে এসেছিল।
টিকার রপ্তানি বন্ধে ভারতের কয়েকজন রাজনৈতিক নেতার দাবিসহ বিশ্বব্যাপী টিকার উচ্চ চাহিদার কথা স্বীকার করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
মন্ত্রী জানান, 'আমি মনে করি, যেহেতু আমরা অগ্রিম অর্থ প্রদান করে ব্যবস্থা করেছি সেহেতু এই দাবি আমাদের জন্য প্রযোজ্য হবে না। ভারত ঘোষণা করেছে যে সময়সূচি অনুসারে টিকা সরবরাহ করা হবে। এবং আমরা এটি বিশ্বাস করি।'
চীন বাংলাদেশকে টিকা সরবরাহের ব্যাপারে একবার অনেক আগ্রহ দেখিয়েছিল। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) কর্তৃক তাদের টিকা অনুমোদিত না হওয়ায় বাংলাদেশ তখন অনিচ্ছুক ছিল।
ডা. মোমেন বলেন, চীন তাদের বিশাল জনসংখ্যার জন্য টিকা পরিচালনা করে এবং ৫০টিরও বেশি দেশে প্রমাণ করা ছাড়াই তাদের টিকাকে পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়াহীন বলেছে। 'আমরা তাদের সাথে (চীন) আবার আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি যেন তারা আমাদের সহায়তা করতে পারে।'
আরও পড়ুন: চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে ভারতের টিকা পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
রাশিয়ান ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড (আরডিআইএফ) জানিয়েছে, ভারত রাশিয়ান স্পুটনিক ভি কোভিড-১৯ টিকা ব্যবহারেরও অনুমোদন দিয়েছে।
বিশ্বব্যাপী এর ব্যাপক চাহিদা থাকা সত্ত্বেও এই টিকা পেতে প্রতিবেশী ভারতের সাথে প্রথম হাত মেলানো কয়েকটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ একটি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্ব এবং দূরদর্শিতার কারণে এটি সম্ভব হয়েছিল। তিনি প্রথম থেকেই এই উদ্যোগ নিয়েছিলেন।'
৩ বছর আগে