রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি
রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিগুলোকে স্বাবলম্বী হওয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানিগুলো স্বাবলম্বী হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় মঙ্গলবার বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) প্রস্তাবিত একটি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়ার সময় তিনি এই নির্দেশনা দেন।
প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন।
বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান অনলাইন প্ল্যাটফর্মে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
মান্নান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোকে তাদের নিজস্ব আয় থেকে অর্থ ব্যয় করার নির্দেশ দিয়েছেন। ভবিষ্যতে সরকারি তহবিল থেকে কোনও অর্থ বরাদ্দ দেয়া হবে না। তাদের নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে।’
আরও পড়ুন: গ্রামীণ পানি সরবরাহসহ ৫ প্রকল্প একনেকে অনুমোদন
তিনি বলেন, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী অর্থনৈতিক অঞ্চলে টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক স্থাপনের (প্রথম পর্যায়) শীর্ষক একটি প্রকল্প অনুমোদনের সময় এই নির্দেশনা দেন।
বিটিসিএল ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে মৌলভীবাজারের শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চলে, সাবরং এবং টেকনাফের নাফ ট্যুরিজম পার্ক, মহেশখালীতে সোনাদিয়া ট্যুরিজম পার্ক এবং জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চলে ৯০ কোটি ১২ লাখ টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। পুরো টাকা সরকারের রাজস্ব আয় থেকে আসবে।
প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) অধীনে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল স্থাপন (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্পের কাজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করার নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানান মান্নান।
এ প্রকল্পের সময়সীমা ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। সংশোধনীতে প্রকল্পের মেয়াদ ও খরচ উভয়ই বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রকল্পটির মূল খরচ ছিল ১ হাজার ৩৬৬ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। প্রথম সংশোধনীতে ১৯৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকা খরচ বাড়িয়ে করা হয়েছে ১ হাজার ৫৬১ কোটি ১৮ লাখ টাকা।
একনেক সভায় প্রায় ১১ হাজার ৯০১ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ১০টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী।
এর মধ্যে সরকার রাজস্ব থেকে দেবে ৮ হাজার ৯৯১ কোটি ৪৪ লাখ, বিদেশি ঋণ ৯৯ কোটি ৯১ লাখ এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৮০৯ কোটি ৯৮ লাখ টাকা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
একনেকে অনুমোদিত ১০টির মধ্যে একটি সংশোধিত এবং নয়টি নতুন প্রকল্প।
প্রকল্পসমূহের মধ্যে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের ‘সাইনবোর্ড-মোড়েলগঞ্জ-রায়েন্দা-শরণখোলা-বগী সড়কের (আর-৭৭৩) ১৭তম কিলোমিটারে পানগুচি নদীর উপর পানগুচি সেতু নির্মাণ’ প্রকল্পটি ৯১২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে। ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
আরও পড়ুন: করোনার দুর্দিনে জনগণের পাশেই আছেন প্রধানমন্ত্রী
স্থানীয় সরকার বিভাগের ‘কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চাঁদপুর জেলার গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্পটি ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা খরচে বাস্তবায়ন করা হবে। এটি ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের ‘উপজেলা পর্যায়ে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম (দ্বিতীয় পর্যায়)’ প্রকল্পে ১ হাজার ৬৪৯ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে।
অন্য প্রকল্পগুলোর মধ্যে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘তিস্তা সেচ প্রকল্পের কমান্ড এলাকার পুনর্বাসন ও সম্প্রসারণ’ প্রকল্পটি ১ হাজার ৪৫২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে। চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া উপজেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ’ প্রকল্পটি ১ হাজার ১৫৮ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে। বিদ্যুৎ বিভাগের ‘বাপবিবোর বৈদ্যুতিক বিতরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও ক্ষমতাবর্ধন (খুলনা বিভাগ)’ প্রকল্পটি ৩ হাজার ৭৬ কোটি ২২ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে।
সংষ্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ‘গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের বহুতল ভবন নির্মাণ’ প্রকল্প ৫২৪ কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে। স্থানীয় সরকার বিভাগের ‘রাঙামাটি জেলার কারিগর পাড়া হতে বিলাইছড়ি পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন ও ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ’ প্রকল্পটি ৩৩৮ কোটি ৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে।
৩ বছর আগে