ফলন বিপর্যয়
প্রচণ্ড খরায় মাগুরায় লিচুর ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা
জেলায় অতিরিক্ত খরা, প্রচণ্ড দাবদাহ ও নির্ধারিত সময়ে বৃষ্টি না হওয়ায় চলতি মৌসুমে লিচুর ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন মাগুরার চাষিরা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, জেলা সদরের হাজীপুর, হাজরাপুর, মির্জাপুর, ইছাখাদাসহ ৩০ গ্রামের ২ শতাধিক চাষি লিচু চাষ করে থাকেন। এক মাস আগে যখন লিচুর ফল আসতে শুরু করে, ঠিক তখনই বৃষ্টিপাতের প্রয়োজন ছিল। নির্দিষ্ট সময়ে বৃষ্টি না হওয়ায় এবার লিচুর ফলন ভালো হয়নি। তাছাড়া বৈশাখের শুরুতেই দাবদাহ থাকায় লিচু বাগানের প্রতিটি গাছের লিচু ফেটে যাচ্ছে। একদিকে যেমন লিচুর ফলন ভালো হয়নি, তেমনি এবার লিচু ফেটে নষ্ট হওয়ায় শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
কৃষি বিভাগ জানায়, এবার জেলায় মোট ৫৮৮ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ হয়েছে। চাষিরা এবার হাজরাপুরী, মোজাফফরী, বোম্বায়, চায়না-৩সহ বিভিন্ন জাতের লিচু আবাদ করেছে। প্রচণ্ড খরা ও তীব্র দাবদাহে এবার সদরের বিভিন্ন বাগানের লিচু ফেটে যাচ্ছে। এ বিষয়ে কৃষিবিভাগ থেকে নানাবিধ পরামর্শ দেয়া হচ্ছে ।
আরও পড়ুন: লিচু গাছের আমটি ছিঁড়ে নেয়ার কথা স্বীকার করলেন সাবেক মেম্বার
মাগুরা সদরের শিবরামপুর গ্রামের আকামত আলী বলেন, আমার ৪টি বাগানে মোট ৩০০ লিচু গাছ রয়েছে। বাগানের সব লিচু গাছে এবার মুকুল আসেনি। সব গাছে ফল না থাকায় আমার আর্থিক ক্ষতি হবে। মুকুল আসার আগে নিয়মিত সেচ ও সার প্রদান করে আসছি। মুকুল শেষে লিচু ফল যখন একটু একটু বড় হতে থাকে ঠিক তখনই দাবদাহ বাড়তে থাকে। এ সময় প্রতিটি গাছের গোড়ায় পানি দিতে শুরু করি। কিন্তু প্রচণ্ড তাপে লিচু ফেটে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অনেক গাছের লিচু তাপে পুড়ে রং নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এতে ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কা রয়েছে।
আরও পড়ুন: নাটোরে আম-লিচু সংগ্রহের সময় নির্ধারণ
ইছাখাদা গ্রামের জিয়ারুল বলেন, আমার তিন বাগানে ২ শতাধিক গাছ রয়েছে। এবার বাগানের প্রতিটি গাছে মুকুল আসেনি। নির্দিষ্ট সময়ে বৃষ্টি হয়নি । লিচুর ফল একটু বড় হতে শুরু করলে খরা ও দাবদাহ দেখা দিয়েছে। এবার প্রতিটি গাছের অধিকাংশ লিচু ফেটে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। গত বছর লিচু ভালো ফলনে আমাদের আর্থিক সংকট হয়নি। কিন্তু এবার লিচুর ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কা রয়েছে।
এই ইছাখাদা গ্রামকে বলে লিচুর গ্রাম; কিন্তু এবার বাগানের প্রতিটি গাছে তুলনামূলক লিচু না থাকাতে চাষিরা বিপাকে রয়েছেন।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে লিচু গাছে আম আকৃতির ফল!
মাগুরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সুশান্ত কুমার প্রামাণিক বলেন, জেলায় মোট ৫৮৮ হেক্টর জমিতে লিচুর চাষ হয়েছে। এবার নির্দিষ্ট সময়ে বৃষ্টিপাত না হওয়া ও প্রচণ্ড দাবদাহে অনেক লিচু নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমরা চাষিদের নিয়মিত ভালো পানি দিয়ে সেচ ও গাছের গোড়ায়, পাতায় এবং ফলে স্প্রে করার পরামর্শ দিয়েছি। এখন লিচুতে রং আসতে শুরু করেছে। যদি এই মুহূর্তে বৃষ্টিপাত হয়; তবে লিচুর ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কা রয়েছে।
৩ বছর আগে