দৌলতদিয়া ঘাটে ভিড়
দৌলতদিয়ায় রাজধানী ছেড়ে আসা যাত্রী ও ছোট যানের ভিড়
রাজধানী ছেড়ে আসা অধিকাংশ মানুষ মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কারের মতো গাড়িতে এসে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে ভিড় করছে।
বৃহস্পতিবার সকালে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে আসা প্রতিটি ফেরিতে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলগামী মানুষকে ব্যক্তিগত গাড়ির সাথে আসতে দেখা গেছে।
আরও পড়ুন: ৬ ঘণ্টা পর মেঘনায় চাঁদপুর-শরীয়তপুর ফেরি চলাচল ফের শুরু
তবে সকাল ৭টা থেকে ৯টা পর্যন্ত দৌলতদিয়া ঘাটে অপেক্ষা করে দেখা যায়, লঞ্চ ঘাট বন্ধ রয়েছে।
ফেরিতে নদী পাড়ি দিয়ে আসা যাত্রীরা বিভিন্ন ধরনের ছোট যানবাহনে করে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের দিকে ছুটছেন।
এ সময় কয়েকজন যাত্রী অভিযোগের সুরে বলেন, গণপরিবহন বন্ধ থাকার অজুহাতে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে কয়েকগুন বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ায় দুই দফায় ৯ ঘণ্টা বন্ধের পর ফেরি চলাচল শুরু
এছাড়া দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ছোট-বড় সবকটি ফেরি চলাচল করতে দেখা যায়। পাটুরিয়া ঘাট ছেড়ে আসা অধিকাংশ ফেরিতে ব্যক্তিগত গাড়ির সাথে যাত্রীর চাপও দেখা গেছে।
এদিকে দৌলতদিয়ার ৫নম্বর ঘাটের রাস্তায় এক পাশে ব্যাগ ও নাতী-সন্তান নিয়ে আনোয়ারা বেগম নামে এক গৃহবধূকে পরিবহনের জন্য বসে থাকতে দেখা গেছে।
আরও পড়ুন: আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দৌলতদিয়া ঘাটে হামলায় আহত ৮, গ্রেপ্তার ১
বসে থাকার কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, কয়েকদিন আগে মানিকগঞ্জ মেয়ে বাড়ি বেড়াতে গিয়েছিলেন তিনি, এখন বাড়ি ফেরার অপেক্ষা করছেন। বোয়ালমারী যেতে অটোরিকশায় জনপ্রতি ভাড়া চাওয়া হছে ৪০০ করে। তিনজন মিলে ৯০০ টাকা ভাড়া দিতে চাইলেও রাজি হচ্ছে না অটোরিকশাগুলো।
তিনি বলেন, এত ভাড়া দিয়ে কি যাওয়া যায়?
বিভিন্ন স্থান থেকে আসা মাইক্রোবাসে যাত্রী তোলায় ব্যস্ত শ্রমিক শাহ আলম বলেন, তিনি গণপরিবহনের যাত্রী তোলায় কাজ করেন। বিনিময়ে পরিবহন থেকে জনপ্রতি যাত্রী বাবদ নির্ধারিত অঙ্কে টাকা পান। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় বিপদে পড়েছেন তিনি। বাধ্য হয়ে ফেরিঘাটে এসেছেন মাইক্রোবাসে যাত্রী তুলে দিতে। তার মতো এরকম অনেকেই ঘাটে যাত্রী তোলার কাজ করছে বলে তিনি জানান।
তিনি আরও জানান, এক মাসের বেশি সময় ধরে বেকার হয়ে বসে থাকায় উপায় না পেয়ে ফেরি ঘাটে আসা যাত্রীদের মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকারে তুলে দেয়ার কাজ করছেন তিনি। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বর্তমানে অনেক বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে বলে তিনিও স্বীকার করেন।
ঢাকা থেকে পরিবার নিয়ে মাগুরার গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেয়া সরকারী চাকরিজীবী রাকিবুল হক বলেন, ‘আজ ছুটি নিয়ে স্ত্রী-সন্তানকে গ্রামের বাড়ি দিতে যাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘গণপরিবহন না থাকায় নিজের মোটরসাইকেলে করে ভোরে সেহরি খেয়ে রওনা হয়েছি। করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে মোটরসাইকেলে আসলেও ফেরিতে এসে দেখি মানুষের ভিড়। ভিড়ের মধ্যে অনেক কষ্ট সহ্য করে নদী পাড়ি দিতে হয়েছে।’
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের সহকারী ব্যবস্থাপক খোরশেদ আলম বলেন, ‘ঈদ করতে অনেকে আগেভাগে গ্রামের বাড়ি ছুটছেন। রাজধানী ছেড়ে আসা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলগামী অধিকাংশ যাত্রী ব্যক্তিগত গাড়ি বা প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ভাড়া করে যাচ্ছেন। যে কারণে পাটুরিয়া ঘাটে ছোট গাড়ির চাপ রয়েছে। এসব গাড়ি এবং যাত্রী পারাপার করতে ছোট ফেরির সাথে পর্যায়ক্রমে বড় ফেরিও চলছে।’
৩ বছর আগে