বাংলা
বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা করার লক্ষ্য রয়েছে বাংলাদেশের: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষার মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্য রয়েছে বাংলাদেশের।
বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকারে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এ কথা বলেন।
ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় হাছান মাহমুদ সামনের চ্যালেঞ্জের কথা স্বীকার করলেও জাতীয় স্বপ্নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, আমাদের স্বপ্ন বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা করা। এটাই আমাদের স্বপ্ন। আমি জানি এখানে অনেক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, কিন্তু এটাই আজ আমাদের স্বপ্ন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কারাগারে ছিলেন।
তিনি বলেন, 'অনেকেই জানেন না, তাকে যখন চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (কারাগার থেকে) নেওয়া হয়, তখন তিনি একটি সভার আয়োজন করেছিলেন। সেই সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে, ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করা হবে।বঙ্গবন্ধু তার কারাগারের সদস্যদের নিয়ে এই সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন।’
আরও পড়ুন: ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে ঘানার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎ
অনুষ্ঠানে ঢাকাস্থ বিভিন্ন বিদেশি মিশনের পাশাপাশি পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনও অংশ নেন। ফরেন সার্ভিস একাডেমির রেক্টর মাশফি বিনতে শামস, কূটনীতিক, মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
তরুণ নেতা হিসেবে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা তুলে ধরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন হাছান মাহমুদ।
বাংলাদেশকে উন্নয়নের নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন ড. হাছান মাহমুদ। এসময় তিনি তিনি মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন ২০২৪-এ তার নেতৃত্বের জন্য প্রাপ্ত প্রশংসার কথাও উল্লেখ করেন।
ইউনেস্কো ও জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ কর্তৃক অনুমোদিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন ভাষাগত বৈচিত্র্য উদযাপন করে এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অন্তর্ভুক্তিকে উৎসাহিত করে।
২০২৪ সালের প্রতিপাদ্য, ‘বহুভাষিক শিক্ষা - শেখার এবং আন্তঃপ্রজন্মীয় শিক্ষার একটি স্তম্ভ’, মাতৃভাষায় শুরু হওয়া শিক্ষার পক্ষে সমর্থন করে, বহুভাষিক শিক্ষার রূপান্তরকে সহজ করে এবং আদিবাসী ভাষা সংরক্ষণ করে।
বাংলাদেশে 'অমর একুশে' স্মরণে ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়, যা সাংস্কৃতিক ও ভাষাগত সংরক্ষণে জাতির অঙ্গীকারের কথা বলা হয়।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণে অংশ নেন রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।যা জাতীয় ঐক্য ও স্মরণীয় মুহূর্তের প্রতীক। এসময় কালজয়ী সংগীত 'আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি'র গানটি বাজানো হয়।
আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ‘ইশারায় ভাষা শিক্ষার অভিধান’ চালু করল ইউএনডিপি
বাংলা গানের বৈচিত্র্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে চেয়েছি: অর্ণব
ডিজিটাল মিউজিক প্ল্যাটফর্ম কোক স্টুডিওর মাধ্যমে উদীয়মান প্রতিভারা একত্রে কাজ করে ম্যাজিক্যাল সংগীত তৈরি করে নতুন দর্শকদের সামনে উপস্থাপন করার সুযোগ পান। ২০০৮ সালে কোক স্টুডিও’র যাত্রা শুরু হওয়ার পর সেই সাফল্যের ধারাবাহিকতায় ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশে আসে কোক স্টুডিও বাংলা।
এরই মধ্যে কোক স্টুডিওর দুটি সিজন সফলতার সঙ্গে শেষ হয়েছে। তৃতীয় সিজন আসবে ২০২৪ সালে। তার আগে নিজেদের সফলতার পরিসংখ্যান জানাতে এক আলাপের আয়োজন করে তারা।মঙ্গলবার বিকালে ঢাকার একটি রেস্তরাঁয় এই আলাপে ছিলেন সংগীতশিল্পী অর্ণব এবং কোকা-কোলা বাংলাদেশ লিমিটেডের হেড অব মার্কেটিং আবীর রাজবীন।
আরও পড়ুন: বিনিয়োগ সম্ভাবনা অন্বেষণে ঢাকায় সৌদি আরবের উচ্চ পর্যায়ের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল
অর্ণব বলেন, ‘এদেশের তরুণদের মধ্যে গান শোনার অনেক ভিন্নতা তৈরি হয়েছে। তারা অনেক ধরনের গান শুনতে চায়। আমরা বাংলা গানের বৈচিত্র্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে চেয়েছি। সেটি কতটুকু পেরেছি তা দর্শক বলতে পারবেন। কোক স্টুডিও বাংলা বিশ্বের সামনে তুলে ধরছে বাংলা সংগীত ও শিল্পীদের।’
কোকা-কোলা বাংলাদেশ লিমিটেডের মার্কেটিং প্রধান আবীর রাজবীন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ৩ লাখের বেশি কথোপকথন, হাজারো ফ্যান আর্ট, মিউজিক ও ড্যান্স কাভার এবং যন্ত্রসংগীতের মাধ্যমে কোক স্টুডিও বাংলা একটি প্রাণবন্ত ও সংযুক্ত কমিউনিটি তৈরি করেছে। এই কমিউনিটি প্ল্যাটফর্মটির গানগুলোর প্রতি নিজেদের ভালোবাসা সবসময় তুলে ধরছে। প্রথম দুই সিজনে আমরা অভূতপূর্ব সমর্থন ও সাড়া পেয়েছি। এতে আমরা সৃজনশীল ক্ষেত্রে নতুন কিছু করার প্রেরণা পাই।’
শুরু হওয়ার পর থেকেই বৈচিত্র্যময় ধারার প্রতিভাদের একত্রিত করে সৃজনশীল ও নতুন ধারার সংগীত সৃষ্টির মাধ্যমে সংগীত জগতে আলোড়ন তৈরি করে প্ল্যাটফর্মটি। যুগান্তকারী দুটি সিজনে কোক স্টুডিও বাংলা সংগীত জগতে দিয়েছে নতুন প্রাণের ছোঁয়া, অতিক্রম করেছে দেশের সীমানা, প্রশংসা কুড়িয়েছে ভক্ত ও শিল্পী সবার কাছ থেকেই। এখন পর্যন্ত চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের গান প্ল্যাটফর্মটিতে পরিবেশিত হয়েছে।
এতে অংশ নিয়েছেন প্রায় ১০০ জন শিল্পী, যার মধ্যে আছেন অনিমেষ রায়, হামিদা বানু, আলেয়া বেগম, মুকুল মজুমদার ঈশানসহ অনেক আড়ালে থাকা রত্ন। তাদের কারো কারো ক্যারিয়ারই শুরু হয়েছে এর মাধ্যমে। দুই সিজনের ২০টির বেশি গান প্রকাশ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় ৩টি গাড়ি পুড়েছে: ফায়ার সার্ভিস
ফিলিপাইনে যাত্রীবাহী বাস খাদে পড়ে নিহত ২৯
কোক স্টুডিও বাংলা ও নচিকেতার কনসার্ট সরাসরি টফিতে
আগামী ১০ নভেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে দেশের ডিজিটাল বিনোদন প্ল্যাটফর্ম টফির দুইটি কনসার্ট। ওই দিন বিকাল ৩টায় ‘বাংলাদেশ আর্মি স্টেডিয়াম’ থেকে এ কনসার্ট সরাসরি সম্প্রচার করবে 'কোক স্টুডিও বাংলা লাইভ ২.০'। এর মাধ্যমে কোক স্টুডিও বাংলার জনপ্রিয় শিল্পীদের মুগ্ধকর পরিবেশনা পৌঁছে যাবে সারা দেশের সংগীত প্রেমীদের কাছে।
'নচিকেতা লাইভ ইন ঢাকা উইথ জয় শাহরিয়ার' সরাসরি সম্প্রচার করা হবে সন্ধ্যা ৭টা থেকে। ১৯৯৩ সাল থেকে সমসাময়িক বাংলা গানের সঙ্গে নচিকেতার তিন দশকের অসাধারণ পথ চলার উদযাপন উপলক্ষে এই কনসার্টের আয়োজন করা হয়েছে। ঘরে বসেই দেশের যেকোনো প্রান্তের শ্রোতাদের তাদের প্রিয় শিল্পীদের সুর ও ছন্দ উপভোগ করার সুযোগ করে দেয় টফি। কনসার্ট দুটি উপলক্ষে টফির শীর্ষ ১০০০ জন দর্শক পাবেন এক্সক্লুসিভ অ্যাক্সেস কুপন, যা তাদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে টফিতে ক্রিকেট বিশ্বকাপ ম্যাচ উপভোগ করার বিশেষ সুযোগ দেবে।
আরও পড়ুন: সর্বোচ্চ আয়কারী ১০ দক্ষিণ ভারতীয় চলচ্চিত্র
টফির মার্কেটিং ডেপুটি ডিরেক্টর মুহাম্মদ আবুল খায়ের চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘টফিতে আমরা ব্যবহারকারীদের বিনোদনের অভিজ্ঞতা আরও উপভোগ্য করতে কন্টেন্টে বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করি। সেই ধারবাহিকতায় কনসার্ট দুইটি সরাসরি সম্প্রচার করবে টফি। আমরা আশা করি, এই উদ্যোগের মাধ্যমে সারা দেশের দর্শকরা তাদের ঘরে বসেই আকর্ষণীয় লাইভ মিউজিক পারফরম্যান্স উপভোগ করতে পারবেন। বিনোদনের অভিজ্ঞতাকে অনন্য উচ্চতায় উন্নীত করতে আমরা আশাবাদী।’
আরও পড়ুন: কোক স্টুডিও বাংলা কনসার্টে মঞ্চ মাতাবেন যারা
কোক স্টুডিও বাংলা কনসার্টে মঞ্চ মাতাবেন যারা
আগামী ১০ নভেম্বর বাংলাদেশ আর্মি স্টেডিয়াম মাতাবে ‘কোক স্টুডিও বাংলা লাইভ’ কনসার্ট। এবার ভক্তরা উপভোগ করবেন এক্সক্লুসিভ কোক স্টুডিও বাংলার অভিজ্ঞতা, যা আগে কখনো দেখা যায়নি। মূল আয়োজনের আগে বেলা ৩টা থেকে থাকছে প্রি-শো। এই সময়ে ভেন্যুতে উপস্থিত দর্শকদের জন্য রয়েছে নানা ধরনের মজার কার্যক্রম।
দর্শকদের কোক স্টুডিও বাংলার জাদুতে মাতাতে লাইনআপে থাকছেন শায়ান চৌধুরী অর্ণব, অনিমেষ রায়, পান্থ কানাই, মমতাজ বেগম, মিজান রহমান, ঋতু রাজ, সানজিদা মাহমুদ নন্দিতা, নিগার সুলতানা সুমি, জালালি সেট, রিপন কুমার সরকার (বগা);
সুনিধি নায়েক, সৌম্যদীপ শিকদার (মুর্শিদাবাদী), কানিজ খন্দকার মিতু, মো. মাখন মিয়া, রুবাইয়াত রেহমান, জান্নাতুল ফেরদৌস আকবর, শানিলা ইসলাম, আরমীন মুসা ও ঘাসফড়িং কয়্যার, রিয়াদ হাসান, পল্লব ভাই, মেঘদল, সোহানা (ডটার অব কোস্টাল), মুকুল মজুমদার ঈশান;
প্রীতম হাসান, ইসলাম উদ্দিন পালাকার, ফজলু মাঝি, ইমন চৌধুরী, এরফান মৃধা শিবলু, আলেয়া বেগম, ফুয়াদ আল মুক্তাদির, তাসফিয়া ফাতিমা (তাশফি), সূচনা শেলী, বাপ্পা মজুমদার এবং হামিদা বানুসহ দুই সিজনের শিল্পীরা।
আরও পড়ুন: ঢাকায় আসবেন জিৎ
উৎসবের আনন্দকে আরও বাড়িয়ে তুলতে বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকছেন এলিটা করিম, শুভ (ডি রকস্টার), অনুরাধা মণ্ডল, শাওন গানওয়ালা এবং মোক্তাদির দেওয়ান শান্ত। ব্যান্ড পারফরম্যান্স দিয়ে দর্শকদের মুগ্ধ করতে থাকছে হাতিরপুল সেশনস ও লালন ব্যান্ড।
আরও পড়ুন: বারবার একটা কথাই বুকে গিয়ে বিঁধছে: বান্নাহ
কোকা-কোলা বাংলাদেশ লিমিটেডের হেড অব মার্কেটিং আবীর রাজবীন গণমাধ্যমে বলেন, ‘সারা বাংলাদেশে কোক স্টুডিও বাংলা খুবই জনপ্রিয় এবং ভক্তরাও আরেকটা কনসার্ট আয়োজনের জন্য অনুরোধ করে আসছিলেন। কোক স্টুডিও বাংলা’র ম্যাজিক দিয়ে দর্শক-শ্রোতাদের মাতাতে প্ল্যাটফর্মটির ১০০ জনের বেশি শিল্পীর একটি দল নিয়ে প্রস্তুত। আমরা বিশ্বাস করি, এই কনসার্ট ভক্তদের জীবনে অনন্য অভিজ্ঞতা হয়ে থাকবে।’
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে যাত্রা শুরু করার পর প্রায় ১০০ জন গায়ক ও শিল্পীকে নিয়ে ২২টি গান প্রকাশ করেছে কোক স্টুডিও বাংলা।
আরও পড়ুন: চঞ্চল ও জয়া ছাড়াও যারা পাচ্ছেন এবারের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার
বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা করতে বিপুল অর্থের প্রয়োজন: শাহরিয়ার আলম
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেছেন, গত কয়েক বছর ধরে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো কার্যক্রমের প্রস্তাবনা নিয়ে কাজ করছে। জাতিসংঘের বৃহত্তম পুনর্গঠন যখন হবে তখন আমরা আমাদের বিষয়টি তুলে ধরবো।
তিনি বলেন, এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে তহবিলের বিশাল সম্পৃক্ততা রয়েছে এবং বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা করার জন্য ভালবাসা, শ্রদ্ধা এবং আকাঙ্ক্ষা থাকলেও প্রতি বছর এত বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা এই মুহূর্তে যৌক্তিক হবে কিনা তা ভাবতে হবে।
মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা এটি সম্পর্কে চিন্তা করেছি এবং এটি নিয়ে কাজ করেছি।’
আরও পড়ুন: প্রতিটি ভাষাকে সম্মান করে ‘আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক, ন্যায়সঙ্গত’ বিশ্ব চায় বাংলাদেশ
শাহরিয়ার সাংবাদিকদের বলেন, আমরা প্রায় পাঁচ থেকে ছয় বছর আগে হিসেব করেছি যে এর জন্য প্রতিবছর ৮০০ কোটি টাকা লাগবে।
জাতিসংঘের ছয়টি দাপ্তরিক ভাষা রয়েছে - আরবি, চীনা, ইংরেজি, ফরাসি, রাশিয়ান ও স্প্যানিশ।
এর আগে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছিলেন যে দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে বাংলা চালু করার প্রস্তাবে কোনো সদস্য রাষ্ট্রের বিরোধিতা না থাকলেও অর্থের জন্য জাতিসংঘের পক্ষে এটি চালু করা সম্ভব হচ্ছে না।
তিনি বলেছিলেন, জাতিসংঘ কর্তৃপক্ষ বলেছে যে জাতিসংঘে একটি নতুন দাপ্তরিক ভাষা চালু করার জন্য তাদের প্রতি বছর ৬০০ মিলিয়ন ডলারের প্রয়োজন হবে।
২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বলেছিলেন যে বাংলা ভাষাকে জাতিসংঘের একটি অফিসিয়াল ভাষা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
তিনি বলেন, ‘যেহেতু বাংলা ভাষায় বিশ্বব্যাপী প্রায় ৩০০ মিলিয়ন মানুষ কথা বলে এবং এ ভাষার শিল্প, সাহিত্য ও সমৃদ্ধ ইতিহাস রয়েছে। আমাদের সংসদে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে যাতে জাতিসংঘকে বাংলাকে তাদের অন্যতম দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে ঘোষণা করার অনুরোধ জানানো হয়।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের এই ন্যায্য অনুরোধটি গ্রহণ করার জন্য আমি আপনাদের সকলের কাছে আন্তরিকভাবে আহ্বান জানাচ্ছি।’
আরও পড়ুন: শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২৩ উপলক্ষ্যে ব্যাংককে শিশু-কিশোরদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা
প্রযুক্তিখাতের উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করতে চায় বাংলাদেশ-ভারত
দুই বাংলার হৃদয়বন্ধন কাঁটাতারের বেড়া মানে না: তথ্যমন্ত্রী
কলকাতা সফররত তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, কাঁটাতারের বেড়া কিংবা ভৌগলিক সীমারেখা বেঁধে দিলেও, এপার বাংলা-ওপার বাংলার মানুষের হৃদয়ের বন্ধন কেউ আলাদা করতে পারবে না।
শনিবার সন্ধ্যায় ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী আটশ’ বছরের পুরনো শহর কলকাতার রবীন্দ্র সদনে চতুর্থ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
বাঙালিরা অনেক মেধাবী উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ভারতবর্ষ থেকে যারা নোবেল পুরষ্কার পেয়েছে তাদের অধিকাংশই বাঙ্গালি। মেধায় বাঙ্গালিরা বিশ্বের অনেককে পেছনে রেখে এগিয়ে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: টেলিভিশন শিল্পীদের জন্য জাতীয় পুরস্কারের কথা ভাবা হচ্ছে: তথ্যমন্ত্রী
এছাড়া আমাদের সংস্কৃতি বিশ্বের উন্নত সংস্কৃতিগুলোর অন্যতম।
১৯৫৭ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে বাংলাদেশে চলচ্চিত্র শিল্পের যাত্রা শুরু উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমাদের শিল্প-সংস্কৃতি যেন কাঁটাতারের বেড়ায় আবদ্ধ হয়ে না যায়। শিল্পীদের ভৌগোলিক সীমারেখা নেই। উত্তম-সুচিত্রা শুধু ভারতের নয়, আমারা মনে করি তারা বাংলার, তারা আমাদেরও।
বিশেষ অতিথি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি, ইলেকট্রনিকস ও পর্যটন বিষয়ক মন্ত্রী বাবুল সরকার বলেন, দুই দেশের চলচ্চিত্রের উন্নয়নে আমাদের যৌথ উদ্যোগ নিতে হবে।
এপার বাংলা-ওপার বাংলার শিল্পীদের মধ্যে আসলে কোন দূরত্ব নেই। সভাপতির বক্তৃতায় ভারতের প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষ বলেন, বাংলা চলচ্চিত্রের দর্শক এখনো কমেনি।
দর্শকদের উৎসাহিত করতে দুই দেশের চলচ্চিত্রকে আরও সুসংগঠিত করতে হবে।
বাংলাদেশের সংসদ সদস্য সাইমুম সারওয়ার কমল, কলকাতায় বাংলাদেশ মিশনের উপ-হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস, প্রথম সচিব (প্রেস) রঞ্জন সেন প্রমুখ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
শেষে দু'দেশের শিল্পীরা যৌথভাবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন।
কলকাতার নন্দন এক, দুই ও তিন প্রেক্ষাগৃহে দুই নভেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বাংলাদেশের ২৫টি চলচ্চিত্রের উন্মুক্ত প্রদর্শনী চলছে।
উৎসবে পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে গুণিন, হৃদিতা, বিউটি সার্কাস, হাওয়া, পরাণ, পায়ের তলায় মাটি নাই, পাপ পূণ্য, কালবেলা, চন্দ্রাবতী কথা, চিরঞ্জীব মুজিব, রেহানা মরিয়ম নূর, নোনাজলের কাব্য, রাত জাগা ফুল, লাল মোরগের ঝুঁটি, গোর, গলুই, গণ্ডি, বিশ্ব সুন্দরী, রূপসা নদীর বাঁকে, শাটল ট্রেন, মনের মত মানুষ পাইলাম না, ন-ডরাই, কমলা রকেট, গহীন বালুচর, ঊনপঞ্চাশ বাতাস। প্রামাণ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে ‘হাসিনা: আ ডটার্স টেল’, বধ্যভূমিতে একদিন, একটি দেশের জন্য গান, মধুমতি পারের মানুষটি শেখ মুজিবুর রহমান ও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে খড়, ময়না, ট্রানজিট, কোথায় পাবো তারে, ফেরা, নারী জীবন, কাগজ খেলা ও আড়ং।
আরও পড়ুন: দিনের বেলায় বিদ্যুৎ বন্ধের কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি সরকার: তথ্যমন্ত্রী
বাংলাসহ ১০ ভাষায় রেডিও সম্প্রচার বন্ধ করছে বিবিসি
বাংলাসহ ১০টি ভাষার রেডিও সম্প্রচার বন্ধ করে দিচ্ছে বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিস।
বিবিসি জানিয়েছে, কোনো ভাষার পরিষেবা বন্ধ করা হচ্ছে না। তবে দর্শক-শ্রোতাদের সাথে সম্পৃক্ততা বাড়ানোর লক্ষ্যে এর বেশ কয়েকটিকে অনলাইন মাধ্যমে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
রেডিও সম্প্রচার বন্ধ করতে যেয়ে বিবিসিকে ৩৮২টি পদ বন্ধ করতে হবে। তবে প্রতিষ্ঠানটি বিশ্ব পরিষেবার জন্য বার্ষিক দুই কোটি ৮৫ লাখ পাউন্ড অর্থ বাঁচাতে পারবে বলে বিবিসি জানায়।
বাংলার পাশাপাশি অন্য যে ভাষায় রেডিও সম্প্রচার বন্ধ হতে যাচ্ছে-আরবি, ফারসি, চীনা, কিরগিজ, উজবেক, হিন্দি, ইন্দোনেশীয়, তামিল ও উর্দু।
লাইসেন্স ফি বাবদ অর্থ বৃদ্ধির বিষয় উল্লেখ করে উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও ক্রমবর্ধমান খরচের সাথে তাল মিলিয়ে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে প্রতিষ্ঠানটি জানায়। তাছাড়া বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিস আধুনিক, ডিজিটাল নির্ভর এবং সুবিন্যস্ত পরিষেবাকে সমর্থন করে।
বিবিসির ওয়ার্ল্ড সার্ভিস একটি আন্তর্জাতিক মাল্টিমিডিয়া সম্প্রচারকারী পরিষেবা। যা রেডিও, টেলিভিশন ও অনলাইন প্লাটফর্মে প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৩৬ কোটি ৩০ লাখ মানুষের কাছে পৌঁছায়।
আরও পড়ুন: সংবাদ প্রতিবেদনে বর্ণবাদী শব্দ অন্তর্ভুক্ত করায় চাকরি ছাড়লেন বিবিসির উপস্থাপক
চীনে বিবিসি’র সম্প্রচার নিষিদ্ধ
রাশিয়ায় বিবিসিসহ একাধিক বিদেশি গণমাধ্যম নিষিদ্ধ
বাংলায় শিক্ষাদানকারী অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্ম: পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির অনন্য মাধ্যম
প্রতিযোগিতাপূর্ণ বিশ্বে অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্মগুলো ক্রমাগত জনপ্রিয়তা লাভ করছে। বর্তমানে শুধুমাত্র শিক্ষাগত যোগ্যতা সনদ নিয়েই প্রগতির ধারার সঙ্গে তাল মেলানো বেশ কষ্টসাধ্য ব্যাপার। এখানে শুধু পাঠ্যক্রম বহির্ভূত দক্ষতাই নয়; প্রয়োজন হয় চাকরির বাজারে সর্বাধিক চাহিদা সম্পন্ন দক্ষতা অর্জনের। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলা অনলাইন ট্রেনিং প্ল্যাটফর্মগুলো বেশ সুনাম কুড়াচ্ছে। ঘরে বসেই খুব কম খরচে এবং সহজভাবে শেখার সুবিধায় বিভিন্ন বয়সের ও পেশার মানুষেরা সংযুক্ত হচ্ছে নতুন দক্ষতা লাভের প্রশিক্ষণে। অনলাইন ট্রেনিং সেন্টারগুলোও সময়ের সঙ্গে প্রয়োজনীয় কোর্সগুলো শুরুর কারণে শিক্ষার্থীরা আরও বেশি লাভবান হচ্ছে। এমনি কয়েকটি জনপ্রিয় বাংলা অনলাইন লার্নিং সেন্টার প্লাটফর্মের বিস্তারিত নিয়ে আজকের ফিচার।
বাংলায় শিক্ষাদানকারী সেরা ১০টি অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্ম
টেন মিনিট স্কুল
গোটা বাংলাদেশের স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদেরকে এক মঞ্চে নিয়ে আসতে তরুণ উদ্যোক্তা আয়মান সাদিকের অসামান্য উদ্ভাবন টেন মিনিট স্কুল। ২০১৫ সালের শুরু হওয়া এই অনলাইন শিক্ষার প্ল্যাটফর্মটি এখন আর স্কুলের গণ্ডির মধ্যে নেই।
বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে ছড়িয়ে পড়েছে এর পরিধি। সারা দেশ থেকে প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার শিক্ষার্থী নিয়মিত এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ক্লাসে অংশ নেয়। সম্ভাবনাকে খুব কম সময়েই বাস্তবে রূপ দেয়া প্রতিষ্ঠানটির পৃষ্ঠপোষক এখন দেশের বড় বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো।
সাধারণ পাঠ্যক্রমের পাশাপাশি এখানে আইইএলটিএস এবং চাকরির জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতাগুলোর কোর্স আছে। জনপ্রিয় প্রযুক্তি বিষয়ক কোর্সগুলোর মধ্যে আছে গ্রাফিক্স ডিজাইন, প্রোগ্রামিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এবং মাইক্রোসফ্ট অফিস।
আরও পড়ুন: গুগলে কীভাবে চাকরি পেতে পারেন
রেপটো এডুকেশন সেন্টার
রেপটোকে অনেকেই ইউডেমির বাংলাদেশ ভার্সন বলে থাকেন। বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা ভিডিও তৈরি করে এই সাইটে আপলোড করেন। শিক্ষার্থীরা কোর্সে ভর্তি হয় এবং প্রশিক্ষণ শেষে তারা অনলাইনেই প্রশংসাপত্র পায়। তার মানে পুরোটাই ইউডেমির প্রক্রিয়াকে অনুসরণ করছে।
এখানে প্রিমিয়াম এবং ফ্রি উভয় কোর্সই আছে। এগুলোর মধ্যে প্রোগ্রামিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, ফটোগ্রাফি, ইংরেজি ভাষা, ডেটাবেস, এমএস অফিস, গ্রাফিক ডিজাইন ইত্যাদি কোর্সগুলো বেশ জনপ্রিয়। এছাড়াও সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সার্কুলার সম্পর্কে জনসাধারণকে অবহিত করার জন্য ওয়েবসাইটের চাকরি বিভাগ ক্রমাগত আপডেট করা হয়।
বহুব্রীহি
এত এত কোর্সের মধ্যে কোনটি করা উচিত তা নিয়ে বিড়ম্বনায় থাকলে আসতে হবে বহুব্রীহির কাছে। কেননা এর বিভিন্ন কোর্সে নাম নথিভুক্ত করার আগে এর পরামর্শদাতাদের কাছ থেকে নির্দেশনা নেয়া যায়। যেকোনো সেক্টরে পেশাদার হতে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্মের মধ্যে এটি শিক্ষার্থীদের আস্থা অর্জন করেছে।
গ্রাফিক্স ডিজাইন, ডিজিটাল মার্কেটিং সহ ফ্রি-ল্যান্সিং-এর বিভিন্ন বিষয়গুলো এখানকার প্রধান কোর্সগুলোর মধ্যে অন্তর্ভূক্ত। তবে শুধু কোর্স-ই নয়; এই ওয়েবসাইটে শিক্ষার্থীরা অধ্যয়নের জন্যও আসতে পারে। বহুব্রীহির প্রতিষ্ঠাতারা এই সাইটটি প্রতিষ্ঠা করেছেন তরুণ প্রজন্মের জ্ঞানের তৃষ্ণা মেটাতে এবং তাদের শিক্ষায় আরও নিযুক্ত করতে। তাই নানা বিষয়ে জ্ঞানার্জন করে স্ব-শিক্ষিত হতে হলেও এই সাইট ব্রাউজ করা যেতে পারে।
আরও পড়ুন: কর্মজীবনে সাফল্যের জন্য কিভাবে নিজেকে গ্রুমিং করবেন?
ইশিখন
তথাকথিত পাঠ্যক্রম সম্পর্কিত টিউটোরিয়াল ও মডেল টেস্ট সহ নানা ধরণের প্রফেশনার কোর্সের জন্য একটি নির্ভরযোগ্য অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ইশিখন। প্রতিটি কোর্সেই ট্রেনিং-এর সময় বিভিন্ন স্তরে উন্নীত হওয়ার জন্য ব্যবস্থা রয়েছে নির্বাচিত বিষয়ে মডেল পরীক্ষা দেয়ার।
এর টেকনিক্যাল অডিও-ভিজ্যুয়াল কোর্সগুলোও উত্তোরোত্তর নাম করছে। এগুলোর মধ্যে সিপিএ ট্রেনিং, ওয়ার্ডপ্রেস, এসইও(সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন), অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, গ্রাফিক ডিজাইন, অ্যান্ড্রয়েড ডেভেলপমেন্ট ইত্যাদি কোর্সগুলো যেকোন সময়ই নেয়া যায়।
এই ওয়েবসাইটের সবচেয়ে দরকারি দিকটি হল- এর ব্লগ বিভাগে অনেক তথ্যপূর্ণ লেখা পড়ে কোর্স পরবর্তী অনুশীলনের সময় কাজ করা যায়। তাছাড়া যে কেউই এই ব্লগের সাহায্যে শিক্ষার সর্বশেষ খবরের সাথে নিজেকে আপডেট রাখতে সক্ষম হবে।
শিখবে সবাই
২০১৭ সালের ১৭ মে কয়েকজন সমমনা, তরুণ প্রাণ ক্যারিয়ার হিসেবে ফ্রিল্যান্সিং এবং দূরবর্তী কর্মসংস্থান গ্রহণ করার উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠা করেন শিখবে সবাই প্ল্যাটফর্ম। গত পাঁচ বছরে এদের প্রশিক্ষণার্থীর সংখ্যা ৭ হাজার ৬৩০-এর অধিক, যাদের একটি বিরাট অংশ এখন অব্দি কাজ করছে আন্তর্জাতিক মার্কেটপ্লেসগুলোতে।
আরও পড়ুন: চাকরির সিভি ও পোর্টফোলিও তৈরির প্রয়োজনীয় কিছু ওয়েবসাইট
শিখবে সবাই বাংলাদেশে সর্বপ্রথম সম্পূর্ণ বিনামূল্যের অনলাইন সহায়তা কেন্দ্র চালু করে। এদের গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট, মোশন গ্রাফিক্স, ডিজিটাল মার্কেটিং-এর মত কোর্সগুলোতে বিশ্বের যে কোনো জায়গা থেকে নথিভুক্ত হতে পারবে। এমনকি এদের কোর্সের রিসোর্সের পরিমাণও বেশ সমৃদ্ধ। এরা ছাত্রদের পাশাপাশি বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে কর্মরত আইটি অনুশীলনকারিদেরও বিভিন্ন প্রোজেক্টের কাজে সহায়তা প্রদান করে থাকে।
ঘুড়ি লার্নিং
ঘুড়ি লার্নিং-এর শুরুটা ইংরেজি ভাষা শিক্ষা ও চর্চার মধ্য দিয়ে হলেও এখন এর ঝুলিতে যোগ হয়েছে আরও অনেক বৈচিত্র্যপূর্ণ কোর্স। ঘুড়ি লার্নিং প্রথমে বিবিসি জানালার ইংরেজি কোর্সগুলোকে দেশব্যাপি প্রোমোট করতো।
এখন এই সাইটে আইইএলটিএস এবং বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি, বিসিএস, এইচএসসি ও এসএসসি’র মত বিভিন্ন পরীক্ষার প্রস্তুতিমুলক কোর্স আছে। ইংরেজির পাশাপাশি যুক্ত করা হয়েছে আরবি, কোরিয়ান জাপানি, এবং চাইনিজ ভাষাশিক্ষা। আর অনলাইন ট্রেনিং-এর সবচেয়ে বড় অংশটা দখল করে আছে ডিজিটাল মার্কেটিং, ফটোগ্রাফি, গ্রাফিক্স ডিজাইন এবং ওয়েব ডিজাইনের মত টেকনিক্যাল কোর্সগুলো।
শিক্ষক
বার্মিংহামের অ্যালাবামা ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার সায়েন্সের অধ্যাপক ডক্টর রাগিব হাসান ২০১২ সালে তৈরি করেছিলেন বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরনো অনলাইন শিক্ষামূলক সাইট শিক্ষক। প্রকল্পটি বাংলাদেশ ও ভারতের গ্রামীণ ও সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের বাংলা ভাষায় বিনামূল্যে অনলাইন শিক্ষা এবং উচ্চ মানের কোর্স প্রদানের স্বপ্ন দেখিয়েছিলো।
আরও পড়ুন: অনলাইনে চাকরির ইন্টারভিউ দিতে প্রয়োজনীয় পাঁচ অনলাইন প্ল্যাটফর্ম
এই প্ল্যাটফর্মটি বিজ্ঞান ও প্রকৌশলের ছাত্র ও গবেষকদের জন্য সেরা। এই সাইটের টিউটোরিয়ালগুলোর মধ্যে ফ্রিল্যান্স কর্নার, মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট, কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, প্রকৌশল, এবং ভাষাশিক্ষা অন্যতম। আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্যাটাগরি হচ্ছে এসএসসি এবং এইচএসসি স্তরের কোর্সগুলো। এর মেন্টররা শুধু দেশেরই নন; দেশের বাইরে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের বাংলা ভাষাভাষি শিক্ষাবিদ এবং গবেষকরা তাদের দক্ষতা শিক্ষার্থীদের সাথে বিনিময় করেন।
এমএসবি একাডেমি
ইউডেমি ও স্কিলশেয়ারের মত আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে সফলতার পর ২০১৮ সালে এমএসবি(মোস্ট সিগনিফিকেন্ট বিট) একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন সফল ইউটিউবার মাসুক সরকার বাতিস্তা। এটি তার অনলাইন ট্রেনিং প্রদানের দক্ষতার এক অভাবনীয় ফলাফল। ইউটিউবে টিউটর হিসেবে জনপ্রিয়তার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের প্রিয় অনলাইন ট্রেনিং প্ল্যাটফর্ম হতে তার এমএসবিরও তেমন সময় লাগেনি।
ডিজিটাল মার্কেটিং, প্রোগ্রামিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন এবং অফিস টুল্সগুলো শেখানোর সঙ্গে সঙ্গে কোর্স পরবর্তী শিক্ষার্থীদেরকে অনলাইন সহায়তা প্রদান করে এমএসবি। যে কোন বয়সের লোকদের জন্য স্বনির্ভর এবং স্মার্ট নাগরিক হতে মাসুকের স্বচ্ছ ও সঠিক ট্রেনিং কোর্সগুলো বেশ যুগোপযোগী।
ইন্স্ট্রাক্টারি
অনলাইনে প্রসিদ্ধ আয়ের মাধ্যমগুলোতে দক্ষ জনশক্তি তৈরি কল্পে বাংলাদেশের ডিজিটাল লার্নিং প্ল্যাটফর্ম জগতে নতুন সংযোজন ইন্স্ট্রাক্টারি। ফাইভার, আপওয়ার্ক, থিমফরেস্টের মত আন্তর্জাতিক মার্কেটপ্লেসগুলোকে টার্গেট করে এখানে আছে বিভিন্ন কোর্সের ব্যবস্থা।
পড়ুন: কর্ম জীবনে উন্নতির জন্য কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকতেই কিভাবে প্রফেশনাল নেটওয়ার্ক তৈরি করবেন
এগুলোর মধ্যে গ্রাফিক্স ডিজাইন, এসইও, ভিডিও এডিটিং, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কোর্সগুলো ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইন্স্ট্রাক্টারির একটি বিশেষ জায়গা তৈরি করেছে। অবশ্য এর পেছনে একটা বড় প্রভাব আছে ইন্স্ট্রাক্টারির দক্ষ প্রশিক্ষকদের। প্রত্যেকে স্ব স্ব দক্ষতার ক্ষেত্রগুলোতে কর্মরত থাকায় শিক্ষার্থীদেরকে বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষাদান করতে পারেন।
বাংলাডেমি
বাংলাদেশের প্রথম সারির অনলাইন লানিং প্ল্যাটফর্মগুলোর মধ্যে বাংলাডেমি অন্যতম। এই স্কিল ডেভেলপমেন্ট প্ল্যাটফর্মটি ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষস্থানীয় মেন্টরদের কাছ থেকে দক্ষ-ভিত্তিক কোর্স অফার করে। এদের অনলাইন রেকর্ডকৃত গ্রাফিক্স ডিজাইন, ডিজিটাল মার্কেটিং, ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট, ভিডিও এবং এনিমেশন কোসগুলো শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্যারিয়ার গড়তে যথেষ্ট।
শুধু নির্দিষ্ট বিষয়ে প্রশিক্ষণের পরই সেবা শেষ হয়ে যায় না। বিশ্বের স্বনামধন্য মার্কেটপ্লেসগুলোর উপর সহজ টিউটোরিয়ালগুলো প্রশিক্ষণ পরবর্তী অবস্থাতেও শিক্ষার্থীদের সুবিধা দেয়। এদের বিশেষত্ব হল প্রতিটি কোর্সে কোনো চার্জ ছাড়াই লাইভ সাপোর্টসহ অন্যান্য সুবিধা পাওয়া যায়।
শেষাংশ
চাকরীর পাশাপাশি ব্যবসা ক্ষেত্রেও তথ্য-প্রযুক্তির গুরুত্ব বাড়ার কারণে অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্মগুলোর প্রধান কোর্সগুলো থাকে তথ্য-প্রযুক্তি কেন্দ্রিক। ক্যারিয়ারের ধারায় যুগান্তকারি পরিবর্তন আসায় দক্ষতা অর্জনের ক্ষেত্রে অবশ্যাম্ভাবি হয়ে পড়েছে তরুণ ফ্রিল্যান্সার এবং উদ্যোক্তাদের সান্নিধ্য অর্জন। শুধু অনলাইনে ঘরে বসে শেখাটাই নয়, এখন আরো বেশি তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে পড়েছে অনলাইনে আয়ের স্ট্র্যাটেজিগুলো জানা এবং ভালোভাবে সেগুলো কাজে লাগানো।
আরও পড়ুন: চাকরি প্রার্থীদের সফল সিভি তৈরির কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস
মাতৃভাষায় শিক্ষা গ্রহণ সবর্দাই আনন্দদায়ক এবং ফলপ্রস। ইংরেজি মাধ্যমে অনেক অনলাইন লার্নিং প্লাটফর্ম থাকলেও সেগুলো সবার জন্য বোধগম্য নাও হতে পারে। উপরোল্লিখিত বাংলায় শিক্ষাদানকারী অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্মগুলো সেই অভাব পূরণে এগিয়ে এসেছে। এই প্রশিক্ষণগুলো সম্ভব করতেই স্বনামধন্য ও স্ব স্ব ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের একত্রিত করছে এই প্ল্যাটফর্মগুলো। ফলশ্রুতিতে বাংলায় অনলাইন ভিত্তিক প্রযুক্তি শিক্ষা ছড়িয়ে পড়ছে বাংলাদেশের আনাচে কানাচে।
রোমাঞ্চকর রহস্য ও ভৌতিক গল্প শোনার কিছু বাংলা ইউটিউব চ্যানেল
গল্প শোনার প্রতি সবারই একটা বিশেষ ভালোলাগা কাজ করে; হোক সেটা নিজে বই পড়ে, নানী-দাদীর কাছ থেকে গল্প শুনে কিংবা ইউটিউবে অডিওবুক স্ট্রিমিং করে। আর যদি সেটা হয় রোমাঞ্চকর রহস্য ও ভৌতিক গল্প, তাহলে তো কথাই নেই। একদা এক ব্রাক্ষণ জঙ্গলের ভেতর দিয়ে হেটে যাচ্ছিলো অথবা পোড়োবাড়িতে প্রবেশের সাথে সাথে তার পেছনের দরজাটি বন্ধ হয়ে গেলো; কথাগুলো দূর থেকে শুনতে পেলেও অবচেতন মনেই যেন সবাই কান পেতে থাকে পরে কি ঘটছে তা শোনার জন্য। এখন হয়ত আর সেই গল্পদাদু নেই, কিন্তু রোমাঞ্চকর রহস্য ও ভৌতিক গল্প শোনার জন্য আছে দারুণ কিছু বাংলা ইউটিউব চ্যানেল। তেমনি কয়েকটি চ্যানেলের ব্যাপারে জানা যাবে আজকের ফিচারে।
রহস্য ও ভৌতিক গল্প শোনার সেরা ১০টি বাংলা ইউটিউব চ্যানেল
থ্রিলার ল্যান্ড
২০২০ সালের ১৫ মার্চ থ্রিলার, হরর, ফ্যান্টাসি ও সাসপেন্স গল্পের ওপর ফোকাস করে খোলা হয় এই ইউটিউব চ্যানেলটি। ভারতীয় কতক গল্পবলিয়েদের কন্ঠের মাধুর্যে গত দুই বছরে চ্যানেলটির সংগ্রহ হয় ৮ লাখ ৪৯ হাজার গ্রাহক। কমেন্ট বক্স জুড়ে দর্শক মুখরতা স্থির চিত্রের নেপথ্যের কথাগুলোর আবেশের কথা জানান দিয়ে যায়। থ্রিলার ল্যান্ডে এ পর্যন্ত মোট ১১৭টি ভিডিও বানানো হয়েছে, যেগুলোতে পাওয়া সর্বমোট ভিউ সংখ্যা ৬৪ লাখেরও বেশি।
এগুলোর মধ্যে সর্বাধিক জনপ্রিয়তা পাওয়া অডিওবুকটি হচ্ছে মহুয়াডহর মায়া শিরোনামের ভিডিওটি। প্রতি সপ্তাহে অন্তত একটি করে গল্প বলা প্রকাশ করা হয়ে থাকে চ্যানেলটিতে। বাংলা রহস্য ও ভৌতিক গল্পের চ্যানেলের দিক থেকে থ্রিলার ল্যান্ড শীর্ষস্থানীয় একটি ইউটিউব চ্যানেল।
আরও পড়ুন: ঈদুল আযহার বাংলা সিনেমা ২০২২: সিনেমাপ্রেমিদের ঈদ আনন্দ
ভেল অব টেল্স
বিশ্বসাহিত্যের প্রায় প্রতিটি ধারাকে ফিচার করা হলেও এই চ্যানেলের গল্পগুলোর মধ্যে রহস্যের উপস্থিতিটা বেশি পরিলক্ষিত হয়। ভারতীয় কয়েকজন গল্পকথক নামকরা সাহিত্যগুলোর পাশাপাশি নিজেদের কন্ঠে নিয়ে আসে নিজেদেরই রচিত কিছু গল্প। সর্বমোট ৮৫টি ভিডিওর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কাহিনীগুলো বিদেশি গল্প থেকে অনূদিত, যার কাজটি করেন চ্যানেলের পরিচালকরাই।
২০১৯ এর ২৯ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ভেল অব টেল্সের মোট গ্রাহক সংখ্যা ৫ লাখ ৯ হাজারের বেশি। সব মিলিয়ে ৪১ লাখের বেশি বার দেখা ভিডিওগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভিউ পেয়েছে শার্লক হোমসের সিংহের মানি গল্পটি। গ্রাহক সংখ্যার দিক থেকে থ্রিলার ল্যান্ড-এর পরেই রাখা যেতে পারে এই চ্যানেলটিকে।
স্ক্যাটার্ড থটস
বিশ্ব বিখ্যাত গোয়েন্দা গল্প শুনতে হলে স্ট্রিমিং করতে হবে স্ক্যাটার্ড থটসের ভিডিওগুলো। রোমহর্ষক পোস্টার আর কন্ঠের নাটকীয়তায় পুরো ভিডিওটি যে আসলে স্থির চিত্রের, তা বেমালুম ভুলে বসতে হবে। ২০১৯ সালের ২৬ ডিসেম্বর থেকে কয়েকজন ভারতীয় তরুণ-তরুণী তাদের নিরন্তর প্রচেষ্টায় প্রতিনিয়ত চ্যানেলটির গুণাগুণ বাড়িয়ে চলেছেন।
তার ফসল আজ অবধি চ্যানেলটির সংগৃহীত ১ লাখের বেশি গ্রাহক এবং ১২৭টি ভিডিওতে ৯৩ লাখের বেশি ভিউ। সহজ বাংলা ভাষায় যখন রহস্যের জটগুলো খুলতে শুরু করবে, সে মুহুর্তের চমকপ্রদ অভিজ্ঞতার মত অমূল্য আর কিছু হয় না। এখন পর্যন্ত চ্যানেলটি সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বার যে ভিডিও দেখা হয়েছে তার শিরোনাম হলো শার্লক হোমসের ব্রুস পার্টিংটন প্ল্যানের অ্যাডভেঞ্চার।
আরও পড়ুন: নিউইয়র্কে প্রথম ইংরেজি মঞ্চ নাটকে তাসনুভা আনান
থ্রিলার স্টেশন
থ্রিলার ল্যান্ডের কয়েক মাস আগে ২০১৯-এর ৩১ অক্টোবর এই ইউটিউব চ্যানেলটি প্রতিষ্ঠা করা হলেও এখন পর্যন্ত এর অর্জিত গ্রাহকের সংখ্যা ১ লাখের বেশি। চ্যানেল টাইটেল প্রায় একই রকম হলেও কিন্তু ভারতীয় বাংলা চ্যানেল দুটোর নির্মাতারা এক নন। অবশ্য দুটোরই ইউটিউব কন্টেন্টের মুল বিষয়বস্তু এক- থ্রিলার, গোয়েন্দা ও রহস্য গল্প।
চ্যানেলটির বর্তমান ভিডিও সংখ্যা মোট ৪৭টি এবং তাতে সর্বমোট ভিউ সংখ্যা ৬৩ লাখের বেশি। গল্পকথকরা এখানে সব সময় স্থির চিত্রের আড়ালে থাকেন না। মাঝে মাঝে স্টুডিওতে রেকর্ড করা অবস্থাতে তাদের পুরো গল্প বলাটাও দেখানো হয়। ভিডিওগুলোর মধ্যে সর্বাধিক ভালো লাগা কন্টেন্টটির নাম ‘রাত নামলেই’।
গল্পের ফেরিওলা
রাজদ্বীপ চক্রবর্তী, ইন্দ্রনীল ও তাদের কিছু বন্ধুরা মিলে গল্পের ফেরিওলার নাম। ২০২০-এর ৪ এপ্রিল থেকেই তিনি তার অসাধারণ গল্প বলার নৈপুণ্য দিয়ে অতি যত্নে গড়ে তুলেছেন গল্প ফেরিওলা ইউটিউব চ্যানেলটি। বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন জনরাতে পরিভ্রমণ হলেও রাজদ্বীপ ইউটিউবার মূলত রহস্য ও হরর কন্টেন্টের জন্য বিখ্যাত।
এখন পর্যন্ত ভারতীয় বাংলা চ্যানেলটির অর্জন ১ লা্খেরও বেশি গ্রাহক। সর্বমোট ১২১টি ভিডিওতে ১০ লাখের বেশি ভিউ পাওয়া চ্যানেলটি এখনো গ্রাহকদের চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে। সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পাওয়া ভিডিও হলো ‘সাবাশ ফেলুদা’। প্রাসঙ্গিক স্থির চিত্রের পাশাপাশি এর ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যানিমেশনগুলোও বেশ মনোযোগ ধরে রাখার মত।
আরও পড়ুন: বাণিজ্যিক সিনেমায় অনুদান বন্ধের দাবি: চলচ্চিত্র পরিষদের প্রতিবাদ
এখনো গল্প
এখনো গল্প ঠিক গল্পের চ্যানেল নয় বরং বাস্তব জীবনের কিছু অভিজ্ঞতার কথামালা। চ্যানেলের গল্পবলিয়েরা নিজেদের এবং দর্শকসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগৃহীত অতিপ্রাকৃত অভিজ্ঞতাগুলোকে তুলে ধরে নিজেদের কন্ঠে। ভারতীয় বাংলা চ্যানেলটির বেড়ে ওঠার গতি বেশ ধীর।
২০১৬ সালের ২৫ ডিসেম্বর-এ প্রতিষ্ঠিত হয়েও এখন পর্যন্ত গ্রাহক সংখ্যা মাত্র ৪২ হাজার থেকে কিছু বেশি। মাত্র ৭৯ ভিডিওতে সর্বমোট ভিউ পড়েছে ২৫ লাখের বেশি। হরর জনরার পাশাপাশি রোমান্টিক গল্পও এই চ্যানেলটির একটি প্রধান কন্টেন্ট। সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় কন্টেন্টের তালিকায় শীর্ষে আছে একটি রোমান্টিক গল্প। তবে দ্বিতীয় স্থানটি অধিকার করে আছে ‘শেষ ট্রেন’ নামের হরর গল্পটি।
ক্ষীরের পুতুল
বিখ্যাত এক সাহিত্যের নামানুসারে নির্মিত এই ইউটিউব চ্যানেলটির পরিচালকেরা হলেন সঞ্জিত মল্লিক, মৃত্যুঞ্জয় দাস এবং বিক্রম সাহা। এই চ্যানেলটির কন্টেন্ট কোন অডিওবুক নয়; গল্পের সাথে সামঞ্জস্য রেখে নির্মাণ করা হয়েছে কার্টুন। স্বভাবতই শিশু-কিশোরদের গল্প শোনার জন্যও দারুণ একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম এটি। হরর-ফ্যান্টাসি বা রূপকথার গল্পগুলোই বেশি প্রাধান্য পেয়েছে এই ভারতীয় বাংলা চ্যানেলটিতে।
২০১৯-এর ১৫ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়ার পর চ্যানেলটির মোট গ্রাহক সংখ্যা দাড়িয়েছে ২ লাখ ৯৮ হাজারের অধিক। ক্ষীরের পুতুলের সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো- এই দুই বছরে মাত্র ২৮টি ভিডিওতে মোট ভিউ পড়েছে ৬ লাখ ৩৯ হাজারের বেশি। গল্পগুলোর অধিকাংশই সর্বোচ্চ ১১ থেকে ১৩ মিনিট দীর্ঘ। এগুলোর মধ্যে শীর্ষস্থানীয় ভিডিওটির শিরোনাম ‘রিক্সায় ভূত’।
আরও পড়ুন: শনিবার ‘দ্য প্যাশন অব ড্রয়িং-২’ আয়োজন করবে গ্যালারি কসমস
ফাহিমের অডিও বুক বাংলা
বাংলাদেশি ইউটিউবারদের মধ্যে রহস্য গল্প নিয়ে অডিওবুক বানানোর ক্ষেত্রে শীর্ষে আছেন অষ্ট্রেলিয়া প্রবাসী বাংলাদেশি ইউটিউবার ফাহিম। হুমায়ুন আহমেদে রহস্য ও অদ্ভূতুড়ে গল্প শুনতে আগ্রহী হলে যেতে হবে এই চ্যানেলটিতে। এছাড়াও শ্রুতি মধুর শব্দ চয়নে বিদেশি গল্পের অনুবাদগুলো দারুণভাবে প্রস্ফুটিত হয়ে উঠে ফাহিমের অডিওবুকে।
এই চ্যানেলটির যাত্রা শুরু ২০১৮ সালের ২ মার্চে। চার বছরে ফাহিমের অর্জন ৩ লাখের বেশি গ্রাহক। প্রতিটি কন্টেন্ট বেশ দীর্ঘ হওয়া সত্ত্বেও কমেন্ট বক্সে ভক্তদের উন্মাদনা ফাহিমকে তার কন্টেন্টের অডিও গুণাগুণ আরও বাড়াতে প্রেরণা যোগায়। তার প্রমাণ মেলে তার ৩৮৯টি ভিডিওর ৩৯ লাখের বেশি ভিউতে। ফাহিমের সেরা কন্টেন্ট হলো হুমায়ুন আহমেদের ‘মিসির আলীর চশমা’।
গল্প তরু হরর
২০২০ সালের ১২ নভেম্বর পথ চলা শুরু হয় গল্প তরু হররের। এটি মূলত গল্প তরু ইউটিউবের একটি শাখা চ্যানেল। দুটোরই বিষয়বস্তু গল্প বলা বা অডিওবুক। নামের মতই গল্প তরু হররে রোমাঞ্চকর রহস্য ও ভৌতিক গল্প ফিচার করা হয়ে থাকে। ১০১টি ভিডিওতে মোট ২ লাখের বেশি ভিউয়ে সমৃদ্ধ এই বাংলাদেশি চ্যানেলেও শোনা যাবে হুমায়ুন আহমেদের রহস্য গল্পগুলো। এখন পর্যন্ত হুমায়ুন আহমেদের ‘দৌলত শাহর অদ্ভূত কাহিনী’ অডিওবুকটি সেরা কন্টেন্ট হয়ে আছে। গ্রাহকের দিক থেকে যাচাই করা হলে চ্যানেলটি বেশ ছোট; মাত্র ৪ হাজারের বেশি এর গ্রাহক সংখ্যা।
গল্পকথন বাই কল্লোল
কল্লোল নামটি ইতোমধ্যে একটি ব্র্যান্ড হয়ে গেছে বাংলা গল্প শোনা লোকদের মাঝে। ২০১৮ সালের ২ সেপ্টেম্বর প্রথম ভিডিও প্রকাশের মাধ্যমে গল্পকথনের ইউটিউব অভিষেক ঘটে। দেড় বছরের মাথাতেই কল্লোল বেশ নামডাক পেয়ে যান। অবশ্য তার কন্টেন্ট শুধু হরর গল্প নিয়ে নয়। বাংলা সাহিত্যে আধুনিক জনপ্রিয় শাখা-প্রশাখাগুলো জীবন্ত হয়ে উঠে তার কন্ঠের স্পর্শে।
গত চার বছরে তিনি মোট ৫৬২টি ভিডি প্রকাশ করেছেন, যেগুলোতে সর্বশেষ মোট ভিউ পড়েছে দেড় কোটিরও বেশি। বর্তমানে কল্লোল এই চ্যানেলটির মাধ্যমে ১ লাখ ৩৬ হাজারের বেশি গ্রাহককে গল্প শুনিয়ে যাচ্ছেন। তার ২০২১-এর ১০ অক্টোবর শুরু করা রূপকথা বাই কল্লোল নামের ইউটিউব চ্যানেলটিও ইতোমধ্যে ৯ হাজার ৯৮০ জন গ্রাহক পেয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: ঈদ উপলক্ষে মোশাররফ করিমের ‘অমানুষ’
পরিশিষ্ট
রোমাঞ্চকর রহস্য ও ভৌতিক গল্প শোনার এই বাংলা ইউটিউব চ্যানেলগুলোর গ্রাহকদের সবাই কিন্তু শিশু-কিশোর নন। টান টান উত্তেজনায় চাদরে নিচে বিছানায় সেধিয়ে যাওয়ার নেশার কাছে ছোট বেলার মত বড় বেলাও হার মেনে যায়। তাই এই দর্শকদের বিরাট অংশ প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষজন। নস্টালজিয়া থেকেই হোক অথবা হরর গল্পের প্রতি ভালবাসা থেকেই হোক; কানে ইয়ার ফোন গুঁজে জীবন্ত হয়ে ওঠা ভয়েস ওভার আর্টিস্টদের কন্ঠে বুদ হয়ে থাকার ঝোঁক কেউই সামলাতে পারেন না। ভিডিওগুলোর পোস্টার এবং এনিমেশন ঘটনাগুলোকে চোখের সামনে এত প্রানবন্ত করে তোলে, যা সেই গল্পদাদুর নাটকীয় কন্ঠ শুনে মানসপটে ভাসতে থাকা চলচ্চিত্রের থেকে কোন অংশে কম নয়।
বাংলা ও অসমীয়া সংস্কৃতির যোগসূত্র গড়বে চলচ্চিত্র: তথ্যমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, চলচ্চিত্র বাংলা ও অসমীয়া সংস্কৃতির যোগসূত্র গড়বে। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসবটি এর একটি মাইলফলক।
ভারতের ত্রিপুরা ও আসাম সফররত তথ্যমন্ত্রী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আসামের গুয়াহাটিতে হোটেল ভিভান্ত মিলনায়তনে ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী স্মরণে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব’ উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে ও বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনের ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ ও ভারতের জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে সপ্তাহব্যাপী এ উৎসব উদ্বোধনে সম্মানীয় অতিথি হিসেবে যোগ দেন আসামের পরিবেশ, বন ও মৎস্যবিষয়ক মন্ত্রী পরিমল শুক্লাবৈদ্য। আসামের মুখ্যমন্ত্রীর স্ত্রী রিংকি শর্মা ভুঁইয়া বিশেষ আলোচকের বক্তব্য দেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. হাছান মাহমুদ আসামবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্রের আসাম আর বাংলাদেশের মানুষের ভাষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অনেক মিল রয়েছে। আমাদের পোশাকেরও মিল রয়েছে। আমরা একই পাখির কলতান শুনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকারের যৌথ উদ্যোগে নিশ্চয়ই দুই দেশের মানুষের বন্ধুত্ব আরও নিবিড় হবে, ব্যাবসা-বাণিজ্যসহ সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলেও আমাদের যোগাযোগ আরও বাড়বে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-ভারতের মৈত্রীর বন্ধন রক্তের অক্ষরে লেখা: তথ্যমন্ত্রী
মন্ত্রী হাছান বলেন, একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি সাত বছরের শিশু। একাত্তরের অনেক স্মৃতি আমাকে আবেগতাড়িত করে। মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রামে ভারতের আন্তরিক সহযোগিতা, ভারতের সেনাবাহিনীর ভূমিকা আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের সাহস জুগিয়েছে। ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক রক্তের অক্ষরে লেখা যা কখনো ভুলবো না।
‘আমরা ভারতীয় হতে পারি, কিন্তু বঙ্গবন্ধুর নামটা মনে গেঁথে আছে’
আসামের পরিবেশমন্ত্রী পরিমল শুক্লাবৈদ্য বলেন, পৃথিবীর মধ্যে একটি বিখ্যাত নাম শেখ মুজিবুর রহমান যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ নামের রাষ্ট্র স্বাধীনতা পেয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি ভারতের নাগরিক হলেও বাংলাদেশের সঙ্গে আমার ঠাকুরমার সম্পর্ক। আমার পূর্ব পুরুষরা একজন বিশ্ব নন্দিত সংগ্রামী নেতা পেয়েছিলেন যার নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আমরা ভারতীয় নাগরিক হতে পারি, কিন্তু বঙ্গবন্ধুর নামটা আমাদের মনের মধ্যে গেঁথে আছে।’
সমাজ গবেষক রিংকী শর্মা ভুঁইয়া বলেন, গুয়াহাটিতে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব আয়োজন খুবই তাৎপর্যপূর্ণ যেহেতু প্রতিবেশী বাংলাদেশ এবার স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী পালন করছে।