ইনস্টিটিউট অব পাবলিক হেলথ
করোনা: দেশে বেসরকারি খাতে ভ্যাকসিন উৎপাদনের বিপক্ষে বিশেষজ্ঞরা
স্থানীয় ফার্মাসিউটিক্যাল প্রতিষ্ঠানগুলো করোনার ভ্যাকসিন আমদানি বা উৎপাদন করার ক্ষেত্রে বেশ আগ্রহ দেখাচ্ছে। তবে দেশের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন বেসরকারি খাত নয়, বরং সরকারের উচিৎ নিজস্ব উদ্যোগে করোনার ভ্যাকসিন সংগ্রহ করা বা উৎপাদন করা। এত ভ্যাকসিনের মান, সাশ্রয়যোগ্যতা ও সুষম বণ্টন নিশ্চিত করা যাবে।
রাশিয়ার স্পুটনিক ভি ভ্যাকসিন বাংলাদেশে তৈরির জন্য সরকারকে প্রস্তাব দেওয়া তিনটি প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন: অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা পেতে তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বিশ্লেষকরা সরকারকে করোনার ভ্যাকসিন তৈরির জন্য স্বল্প সময়ের মধ্যে ইনস্টিটিউট অব পাবলিক হেলথ (আইপিএইচ) বা রাষ্ট্রায়ত্ত এসেনশিয়াল ড্রাগস্ লিমিটেডকে (ইডিসিএল) আধুনিকায়নের মাধ্যমে করোনার টিকা উৎপাদনের পরামর্শ দিয়েছেন।
বেসরকারি উদ্যোগ
স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তরের (ডিজিএইচএস) মুখপাত্র রোবেদ আমিন জানান, ইনসেপটা, ইউনিহেলথ এবং পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস, এই তিনটি স্থানীয় প্রতিষ্ঠান রাশিয়ার স্পুটনিক-ভি ভ্যাকসিন তৈরি করার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
আরও পড়ুন: টিকার জন্য রাশিয়ার সাথে শিগগিরই চুক্তি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, একই ভ্যাকসিন তৈরির জন্য প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের প্রস্তাব সরকারকে দিয়েছে এবং তাদের সক্ষমতা যাচাই করা হবে।
এছাড়া ডিজিএইচএসের এই কর্মকর্তা জানান, আরেক বাংলাদেশি ফার্মাসিউটিক্যাল সংস্থা রেনাটা লিমিটেড মডার্নার কোভিড-১৯ টিকা আমদানির জন্য সরকারের কাছে অনুমতি চেয়েছে এবং এ বিষয়ে আলোচনা চলছে।
আরও পড়ুন: ভ্যাকসিনের অতিরিক্ত ডোজ অনুদানের আহ্বান ইউনিসেফের
এছাড়া সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দেশে ভ্যাকসিন উৎপাদনের সম্ভাবনাও যাচাই করছে সরকার।
টিকা উৎপাদনের সক্ষমতা কেমন?
যদিও তিনটি সংস্থা ভ্যাকসিন উৎপাদনের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে, তবে ডিজিএইচএসের প্রাক্তন পরিচালক ডা. বেনাজির আহমেদ বলেছেন, সংস্থাগুলোর এই কাজটি করার ক্ষমতা নিয়ে তার সন্দেহ আছে।
তিনি বলেছেন, “সংস্থাগুলো রাশিয়া বা চীন থেকে প্রচুর পরিমাণে ভ্যাকসিন আমদানি করে, দেশে বোতলজাত বা প্যাকেজিং করে বিপণনের ব্যাবস্থা করতে পারে। তবে প্রচুর পরিমাণে ভ্যাকসিন আমদানির মাধ্যমে চাহিদা মেটাতে অনেক বেশি সময় লাগবে। ভ্যাকসিন উৎপাদনের অনুমতি পাওয়ার জন্য আবেদন করা সংস্থাগুলির সক্ষমতা গুরুত্বের সাথে মূল্যায়ন করা উচিত সরকারের।”
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের প্রাক্তন উপদেষ্টা প্রফেসর মোজাহেরুল হকও মনে করেন যে, এই সংস্থাগুলোর ভ্যাকসিন উৎপাদনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সকল সুবিধাদির ঘাটতি রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠানগুলো অবশ্যই খুব ভালো মানের ওষুধ উৎপাদন করে। তবে করোনার ভ্যাকসিন উৎপাদনের জন্য পর্যাপ্ত প্রস্তুতি এবং সুবিধা নেই তাদের কাছে। যেহেতু কিছু সংস্থা করোনার ভ্যাকসিন উৎপাদনের জন্য আগ্রহ দেখাচ্ছে, তাই তাদের সক্ষমতা সঠিকভাবে পরীক্ষা করা উচিত।’
৩ বছর আগে