বিপ্লব
৫ আগষ্টের বিপ্লব ইসলামী বিপ্লবের পূর্বাভাস: মামুনুল হক
৫ আগস্টে বিপ্লবের অন্যতম শক্তি হলো বাংলার তৌহিদী জনতা বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক।
তিনি বলেন, ‘এই বিপ্লব শিরকের বিরুদ্ধে বিপ্লব। এটাকে এখনই ইসলামের পূর্ণাঙ্গ বিপ্লব বলতে চাচ্ছি না। তবে আমি অবশ্যই এতটুকু বলব এই বিপ্লব ইসলামী বিপ্লবের পূর্বাভাস।’
সোমবার (২৪ নভেম্বর) কুমিল্লা কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে জেলা কওমী মাদরাসা পরিষদের মহাসম্মেলনে মামুনুল হক এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা-গবেষণা নিশ্চিত করা হবে: ভিসি নসরুল্লাহ
তিনি বলেন, ‘সূর্য উদয়ের কিছুক্ষণ পূর্বে যেমন সুবহে সাদিকের উদয় ঘটে, সুবহে সাদিকের আলো দিয়ে যেমন বোঝা যায়- সূর্যের উদয় সন্নিকটে, তেমনি ৫ আগস্টের বিপ্লব বাংলার প্রতিটি মানুষকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, এদেশের মানুষ ইসলামী বিপ্লবের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।’
মামুনুল হক আরও বলেন, ‘বাংলার মাটিতে অনিবার্য বিপ্লব হবে ইসলামী বিপ্লব। বাংলাদেশ হবে ইসলামের বাংলাদেশ। এছাড়া এদেশে শাসনতন্ত্র হবে ইসলামের শাসনতন্ত্র, সংবিধান হবে আল কোরআনের সংবিধান এবং রাজনীতি হবে খেলাফতের রাজনীতি।’
সংবিধান সংস্কারের দাবি জানিয়ে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব বলেন, আল্লাহর আইনের বিরুদ্ধে, কোরআন-সুন্নাহর আইনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে কোনো আইন, কোনো নীতিমালা কার্যকর হবে না। এই ব্যবস্থা নতুন প্রবর্তিত সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
আরও পড়ুন: এস আলম গ্রুপ নিয়ন্ত্রিত ইসলামী ব্যাংকের বোর্ড ভেঙে দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক
৩ সপ্তাহ আগে
আবেদন খারিজ, ইনসানিয়াত বিপ্লবের চেয়ারম্যানকে লাখ টাকা জরিমানা
সংসদ ভেঙে দিয়ে সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে পুনরায় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা চেয়ে রিট খারিজের বিরুদ্ধে করা আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালত।
একই সঙ্গে রিটকারী ইনসানিয়াত বিপ্লবের চেয়ারম্যান ইমাম হায়াতকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার এক লাখ টাকা এক সপ্তাহের মধ্যে আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামকে দিতে বলা হয়েছে।
বুধবার আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আব্দুর রউফ।
আরও পড়ুন: আদালত অবমাননা: ব্যাখ্যা জানাতে সুরক্ষা সচিবসহ কারা মহাপরিদর্শককে আপিল বিভাগে তলব
আদালত বলেছেন, একই বিষয়ে এর আগে একাধিক রিট হয়েছে। উচ্চ আদালতে বিষয়টি সেটেলড হয়ে আছে। এছাড়া, সংবিধানেও সংসদ ভেঙে দেওয়ার বিধান নেই।
সংসদ ভেঙে দিয়ে সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে পুনরায় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা চেয়ে রিট খারিজের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়। আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশের পক্ষে আইনজীবী আব্দুর রউফ এ আবেদন করেন।
পরে দুপুরে শুনানির জন্য চেম্বার বিচারপতির আদালতে উত্থাপন কর হয়।
গত ১০ ডিসেম্বর ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ নামে রাজনৈতিক দলটি এ রিট দায়ের করেন। রিটে আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সচিব, লেজিসলেটিভ সচিব, মন্ত্রী পরিষদ সচিব ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে (সিইসি) বিবাদী করা হয়।
ইনসানিয়াত বিপ্লবের চেয়ারম্যান ইমাম হায়াত সেদিন বলেছিলেন, গত নির্বাচনে আমরা দেখেছি ক্ষমতাসীন সংসদ সদস্যরা নিজ নিজ আসনে সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রশাসন, পুলিশ ও নিজেদের সশস্ত্র লোকদের ব্যবহার করে ভোটকেন্দ্র দখল ও অন্যদের ভোট প্রদানে বাধার সৃষ্টি করেছে।
তিনি আরও বলেন, সংসদ বহাল রেখে জালিয়াতিমুক্ত নির্বাচন অসম্ভব। প্রহসনমুক্ত নির্বাচনের মাধ্যমে দেশ ও গণতন্ত্র রক্ষায় আমরা ইনসানিয়াত বিপ্লব সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী সরকারের মাধ্যমে সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে নির্বাচনের আদেশ চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছি।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক নির্যাতন: আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পেলেন এমপি মোস্তাফিজ
গত ২০ ডিসেম্বর সংসদ ভেঙে দিয়ে সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে পুনরায় তফসিল ঘোষণা চেয়ে দায়ের করা রিট উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দেন হাইকোর্ট।
সেদিন রিটের পক্ষের আইনজীবী বলেছিলেন, নির্বাচন কমিশনকে লিগ্যাল নোটিশ না পাঠিয়ে সরাসরি রিট দায়ের করায় হাইকোর্ট রিট আবেদনটি খারিজ করে দিয়েছেন। এ কারণে গত ২১ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়।
এরপর দ্বিতীয় দফায় রিট করলে গত ২৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রিট শুনতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
আদালত বলেন, এই মুহূর্তে এ ধরনের রিট শুনব না। বিচারপতি মো. ইকবাল কবীর ও বিচারপতি বিশ্বজিত দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই অপারগতা প্রকাশ করেন।
চলতি বছরের ৮ মে উচ্চ আদালতের নির্দেশে রাজনৈতিক দল হিসেবে ইসির নিবন্ধন পেয়েছে ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ।
ইসিতে রাজনৈতিক দল হিসেবে ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশের নিবন্ধন নম্বর- ৪৬। দলটির নির্বাচনী প্রতীক হচ্ছে আপেল।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ নয়, ড. ইউনূসকে সাজা দিয়েছেন আদালত: কাদের
১১ মাস আগে
বার্সেলোনা মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস: ফাইভজি বিপ্লবের ভবিষ্যত সম্ভাবনা প্রদর্শন টেলিকম জায়ান্টদের
ফাইভজি ব্যবহারের মাধ্যমে আগামীতে অতি ঝুঁকিপূর্ণ শিল্প ব্যবস্থাপনাকে কিভাবে নিরাপদ করা সম্ভব হবে তার একটি বড় প্রদর্শনী দেখানো হয়েছে স্পেনের বার্সেলোনায় চলমান মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসে (এমডব্লিউসি)।
বিশ্বের সব টেলিকম কোম্পানির চার দিনব্যাপী এ সম্মেলনের উদ্বোধন করেছেন স্পেনের রাজা ফিলিপে। স্পেনের প্রেসিডেন্ট প্রেডো সানচেজ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। টেলিকম শিল্পের বড় ক্রীড়ানকদের বার্ষিক এই সমাবেশে প্রায় ৮০ হাজার প্রতিনিধি প্রত্যাশিত।
মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসে ফাইভজি প্রযুক্তিতে ভার্চুয়াল ইন্টারেক্টিভ অ্যাপ্লিকেশন, রোবট ক্লাস্টার, মনুষ্যবিহীন ড্রাইভিং, বুদ্ধিমান পরিধানযোগ্য সরঞ্জাম, বুদ্ধিমান টহল পরিদর্শন, বুদ্ধিমান ব্যাপক মাইনিং, স্মার্ট টানেলিং এবং কয়লা খনিতে অন্যান্য অ্যাপ্লিকেশন নিয়ে অনেক টেকনোলজি উদ্ভাবনকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ঘোষণা দিচ্ছে।
মূলত ফাইভজি এই বছরের কংগ্রেসে মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু হয়েছে।
শিল্প জায়ান্টরা ফাইভজি প্রযুক্তির প্রয়োজনীয় ব্যবহার শুধু শিল্প উৎপাদনেই নয়, মানুষের জীবনেও প্রদর্শন করছে। যেমন- ফাইভজি চালিত মনুষ্যবিহীন হেলিকপ্টার থেকে শুরু করে ঘরের কোনে থাকা ফাইভজি রাউটার প্রভৃতি।
আরও পড়ুন: ২০৩৩ সালের মধ্যে গৃহস্থালির ৩৯ শতাংশ কাজ স্বয়ংক্রিয় হতে পারে: বিশেষজ্ঞরা
মনুষ্যবিহীন হেলিকপ্টার প্রদর্শন করছে টি মোবাইল। এই হেলিকপ্টারটি কোন চালক ছাড়াই যাত্রীসহ নিরাপদে উড়তে ও অবতরণ করতে পারবে। এমনকি আকাশে ওড়ার সময় কোন প্রতিকূল পরিস্থিতি টের পেলে নিকটস্থ নিরাপদ স্থান বেছে নিয়ে জরুরি অবতরণও করতে পারবে হেলিকপ্টারটি।
ফাইভজি রাউটার এখনকার রাউটারের চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা হবে।
তারবিহীন এই রাউটারে শুধুমাত্র একটি কোডের মাধ্যমে নির্দিষ্ট অপারেটরের কাছ থেকে কোডের মাধ্যমে নেটওয়ার্কে সংযুক্ত হবে। আর এই একটি রাউটারে যে ব্যান্ডউইথ থাকবে তা দিয়ে পরিবারের সব ধরনের স্মার্ট ইন্টারনেটের সঙ্গে সংযুক্ত রাখা সম্ভব হবে। ডিভাইস উচ্চগতির এছাড়া রাউটারটির বিস্তৃত ব্যবহার এবং স্মার্ট সিটির মডেলের প্রদর্শনী তো আছেই।
ফাইভজি’র আগামী ব্যবহার নিয়ে জিএসএমএ’র মহাপরিচালক ম্যাটস গ্রানার্ড মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসের একটি সেমিনারে বলেন, ফাইভজি আগামীতে সাধারণ জীবনযাত্রা থেকে শুরু করে বড় শিল্প উৎপাদন ব্যবস্থায় কি অসাধারণ পরিবর্তন আনবে সেটা এই মুহুর্তে উপলব্ধি করা কঠিন। এবারের এমডব্লিউসিতে ‘স্মার্ট মাইনিং’ প্রকল্প দেখিয়েছে সেই পরিবর্তন কি ধরনের হতে পারে। আগামীতে নিরাপদ, সহজ, সাশ্রয়ী ও মানবিক জীবন ব্যবস্থা, বিশ্ব ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ফাইভজির কার্যকর ব্যবহারের যে প্রদর্শন হলো তা নিশ্চিতভাবেই পুরো বিশ্বকে ফাইভজি ব্যবহারের ক্ষেত্র প্রস্তুতে নিশ্চিতভাবে সহায়তা করবে।
নতুন ধরনের ডিভাইস, নতুন ধরনের প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন, এমনকি আগামীতে কি ধরনের প্রযুক্তি আসছে সে বিষয়গুলোও তুলে ধরা হচ্ছে প্রদর্শন কেন্দ্রগুলোতে।
ইনটেলের প্যাভিলিয়নে দেখা গেল, আগামী প্রজন্মের কম্পিউটারের সম্ভাব্য প্রসেসর। অরেঞ্জ দেখিয়েছে অদূর ভবিষ্যতের স্মার্ট প্রযুক্তির সঙ্গে মানুষের আবেগ কিভাবে মিশে যাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যাদুর স্পর্শে।
আরও পড়ুন: ক্যালিফোর্নিয়ার রাস্তায় রোবোট্যাক্সির সফল পরীক্ষা চালাল অ্যামাজনের জুক্স
এছাড়াও ভেলোসিটি উদ্যেগকে সামনে রেখে এবারের আয়োজনে বিশ্বের প্রায় সব বড় বড় প্রতিষ্ঠান স্মার্ট প্রযুক্তির প্রদর্শনকেই প্রাধান্য দিয়েছে। ডিভাইস যেমন- স্মার্টফোন, স্মার্ট ওয়াচ ও স্মার্ট কম্পিউটার নির্মাতারা তাদের আগামী দিনের ডিভাইসে স্মার্ট প্রযুক্তি কিভাবে সংযুক্ত হবে তার প্রদর্শন করেছেন।
যারা ডিভাইসের মূল উপাদান যেমন- মাইক্রেচিপ, চিপসেট, সেমি কন্ডাকটর, প্রসেসের, মাইক্রো প্রসেসর তৈরি করছেন তারাও সামনে এনেছেন স্মার্ট প্রযুক্তি। সব মিলিয়ে আগামীর স্মার্ট পৃথিবী হচ্ছে এবারের মূল আকর্ষণ।
বাংলালিংকের চিফ কর্পোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তৈমুর রহমান ইউএনবিকে বলেন, মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস ২০২৩ এ বছর বিশেষ প্রযুক্তির ওপর নয় বরং উদ্ভাবনী সেবার ওপর বেশি জোর দিচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। এছাড়াও এটি নেটওয়ার্কের জন্য দক্ষতা বৃদ্ধির ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। উদ্ভাবনী পরিষেবার কিছু উদাহরণ হল যে কীভাবে বেশিরভাগ টেলিকম প্রযুক্তি মানুষের দৈনন্দিন জীবনে সাহায্য করতে পারে যেমন লজিস্টিক এবং ড্রোনের মাধ্যমে ডেলিভারি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং রোবোটিক্সের মাধ্যমে নিরাপত্তা বৃদ্ধি ইত্যাদি।
তিনি আরও বলেন, নেটওয়ার্কে দক্ষতা বৃদ্ধি এবং নেটওয়ার্ক রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সামগ্রিক খরচ কমানোর কিছু উদাহরণ হল- দক্ষ নেটওয়ার্ক ডিজাইন সফ্টওয়্যার, সরলীকৃত নেটওয়ার্ক অপারেশন সেন্টার সমাধান ও নেটওয়ার্ক উপাদানগুলির শক্তি খরচ হ্রাস ইত্যাদি।
আরও পড়ুন: মাইক্রোসফট বিংয়ের নতুন সংস্করণে থাকছে চ্যাটজিপিটি প্রযুক্তি
১ বছর আগে
৪র্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে সরকার: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কাঙ্খিত পর্যায়ে নিয়ে যেতে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে সরকার।
তিনি বলেন, ‘আমরা গবেষণা ও আবিষ্কারের জন্য বাজেট বাড়িয়ে একটি উদ্ভাবনী শিক্ষা ইকোসিস্টেম (আইইই) প্রণয়ন করছি। আমরা ন্যাশনাল ব্লেন্ডড লার্নিং পলিসি-২০২১ তৈরি করছি। এইসব নীতির মাধ্যমে আমরা প্রযুক্তিগত ব্যবধান ঘুচিয়ে একটি শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করতে পারব।’
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে দুই দিন ব্যাপী অনুষ্ঠিত চতুর্থ শিল্প বিপ্লব-২০২১ শীর্ষক সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে শনিবার গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, নতুন নতুন আবিষ্কারের পাশাপাশি প্রযুক্তির ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। বাংলাদেশকেও সেই গতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি কৃষিভিত্তিক হলেও শিল্পায়ন প্রয়োজন। আমাদের কৃষি এবং শিল্প দুটোই দরকার। এ বিষয়টা মাথায় রেখেই আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছি।
আরও পড়ুন: সব বাধা ভেঙে নারীদের এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ভিত্তি হিসেবে তিনটি বিষয় গুরুত্ব পাচ্ছে- (১) অত্যাধুনিক প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে শিল্পের বিকাশ (২) দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টি এবং (৩) পরিবেশের সুরক্ষা।
তিনি বলেন, শিল্পায়নের লক্ষ্য মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করা, নতুন পণ্যের বাজার তৈরি করা এবং কর্মসংস্থানের মাধ্যমে অর্থনীতির গতি ত্বরান্বিত করা। প্রায় ১০০ বছর পর শিল্পায়নের যুগান্তকারী এই বিবর্তন অসাধারণ। প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায় অতিক্রম করে মানবজাতি চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ঊষালগ্নে পৌঁছেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন যে অদূর ভবিষ্যতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ডিভাইসের সঙ্গে মানুষের সহাবস্থান হবে। ফলে বেশ কিছু নতুন ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে নিজেদের মতো করে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা। এ জন্য প্রযুক্তিকে সহজলভ্য এবং সহজে হস্তান্তরযোগ্য করতে হবে।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর থেকে সরকার তথ্যপ্রযুক্তি অবকাঠামো গড়ে তোলা, বিভিন্ন আইন প্রণয়ন এবং প্রযুক্তিতে দক্ষ নাগরিক গড়ে তোলরে কাজে মনোযোগ দিয়েছে। ২০০৮ সাল থেকে নির্বাচনে না জয়লাভের পর সরকার ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পাশাপাশি শিল্প খাতে উদ্ভাবনী প্রযুক্তি প্রসারের লক্ষ্যে কাজ করছে। ফলস্বরূপ, দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা এখন ১২০ মিলিয়ন ছাড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: বিশ্বের ৪৩তম ক্ষমতাধর নারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
তিনি বলেন, আমরা শিগগিরই ৫ জি নেটওয়ার্ক চালু করবো। এটি দেশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাব্যবস্থা, জীবনযাত্রার মান এবং প্রচলিত ডিজিটাল ও সোশ্যাল মিডিয়াকে পুরোপুরি বদলে দেবে। আমি বিশ্বাস করি, আইসিটি এবং সফ্টওয়্যার শিল্প ভবিষ্যতে আমাদের রপ্তানি খাতকে সমৃদ্ধ করবে। আমরা বাংলাদেশে গবেষণা-উন্নয়ন ও উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপনের জন্য বিদেশি শিল্পকে বিশেষ প্রণোদনা দিচ্ছি।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহ, এর সদস্য মো. সাজ্জাদ হোসেন।
অনুষ্ঠানের একটি ভিডিও উপস্থাপনা পরিবেশন করা হয়। এসময় তিনজন নোবেল বিজয়ী এবং ছয়জন বিশিষ্ট বিজ্ঞানী মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন। এছাড়া ‘মুজিব-১০০ আইডিয়া কনটেস্ট’ ও ‘মুজিব-১০০ ইন্ডাস্ট্রিয়াল এক্সিবিট’ নামে দুটি সাইড ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এ অনুষ্ঠান উপলক্ষে ১৭টি দেশ থেকে মোট ৫২৫টি গবেষণা পত্র জমা দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১০০টি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপনের জন্য নির্বাচিত হয়েছে।
এছাড়াও কয়েক হাজার আইডিয়ার মধ্যে থেকে ১০টি সেরা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে। নির্বাচিতদের প্রত্যেকে ১০ লাখ টাকা করে পুরস্কার পাবেন।
আরও পড়ুন: উৎপাদন বাড়াতে শ্রমিক-মালিক সুসম্পর্কে গুরুত্ব প্রধানমন্ত্রীর
৩ বছর আগে
হাওরে সবজি চাষে নিরব বিপ্লব
হাওর এলাকার উর্বর মাটি সবজি চাষের জন্য খুব উপযোগী। বর্ষার পানি সরতে কিছুটা বিলম্ব হলেও বাড়ির আঙ্গিনার উচুঁ জমি থেকে দ্রুত পানি সরে যায়। এসব উঁচু স্থানে শীতকালীন সবধরনের শাকসবজি চাষ করা যায়।
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস্তবায়নাধীন মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের উদ্যোগে পরিচালিত “সমন্বিত খামার ব্যবস্থা গবেষণার মাধ্যমে হাওর অঞ্চলে খামারের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি” শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে উচুঁ জমিতে সবজি চাষের উদ্যোগ নেয়া হয়। ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে প্রকল্পের কাজটি শুরু হয়, যার সুফল বর্তমানে হাওরের কৃষকরা ভোগ করছেন।
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ ও প্রকাশনা দপ্তরের উপ-পরিচালক খলিলুর রহমান ফয়সাল জানিয়েছেন, দক্ষিণ সুনামগঞ্জের জয়কলশ ইউনিয়নের নোয়াগাও এলাকায় এর কার্যক্রম শুরু হয়। নোয়াগাও গ্রামের ১৫৬ জন কৃষকের মধ্যে শতকরা ২৬ ভাগ কৃষক সবজি চাষ করতেন। ২০২১ সালে সেটি শতভাগ হয়েছে এবং ছড়িয়ে পড়েছে পার্শ্ববর্তী হাওরবেষ্টিত গ্রামগুলোতে।
আরও পড়ুন: পুনরায় ৪ দেশে বাজার ফিরে পেয়েছে খুলনার কাঁকড়া
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাওরপাড়ের কৃষকেরা এখন বসতবাড়ির আশেপাশে শীতকালীন শাকসবজি যেমন লাউ, মিষ্টি কুমঁড়া, শিম, বরবটি, ফুলকপি, বাধাঁকপি, স্কোয়াশ, টমেটো, লাল শাক, পালং শাক, মূলাসহ বিভিন্ন সবজি চাষ করছেন। বাড়ির আশেপাশের কান্দা জমিতে (অপেক্ষাকৃত উচুঁ জমি) শীতকালীন সবজি চাষ করা খুবই লাভজনক।
গবেষণায় দেখে গেছে, স্কোয়াশ বিদেশী সবজি হলেও সুনামগঞ্জের হাওরের মাটিতে এর ফলন চমকপ্রদ। হাওরের পলিমাটিতে এখন ব্যবসায়িক ভিত্তিতে স্কোয়াশ চাষাবাদের প্রসারতা বৃদ্ধি পাচ্ছে ও বাজারজাত করা হচ্ছে। কান্দা জমিতে স্কোয়াশসহ যেকোন সবজি চাষ করা লাভের মুখ দেখছে কৃষক। প্রতিটি চাষী পরিবারে খাদ্য উৎপাদন এবং পুষ্টি নিরাপত্তা বেড়েছে।
আরও পড়ুন: ইউরোপে কমলেও, খুলনাঞ্চলের চিংড়ির রপ্তানি বেড়েছে জাপানে
গ্রীষ্মকালেও বাড়ির আঙ্গিনার জমি ব্যবহার করে সবজি উৎপাদন সম্ভব, বলে জানিয়েছেন প্রকল্পের গবষেণা সহযোগী ও বর্তমানে সিকৃবির উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের প্রভাষক মান্না সালওয়া পড়শি।
তিনি বলেন, “বর্ষা শুরুর আগেই করলা, ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা, চালকুমড়াঁর বীজ রোপন করতে হয়। এভাবে বাড়ির আঙ্গিনায় সারা বছর সবজি চাষ করা যায়।”
আরও পড়ুন: ৪০০ কোটি টাকার বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষ্যে খুলনা
প্রকল্পের সুবিধাভোগী খামারগুলো পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বর্তমানে প্রতিটি খামার সারা বছরে গড়ে প্রায় ৪৫ হাজার ৫৯০ টাকা আয় করছে। সমন্বিত খামার ব্যবস্থা গবেষণার প্রকল্পের আগে এ সকল পরিবারের সবজি চাষে বার্ষিক আয় ছিল মাত্র ২১৪ টাকা। রবিশস্য আবাদে কৃষকেরা আগ্রহী হয়ে উঠেছে। বর্তমানে প্রকল্প গ্রামে শুষ্ক মৌসুমে হাওরের প্রতিটি বাড়ি একটি খামার হিসেবে চিত্রায়িত হচ্ছে।
গবেষক প্রফেসর ড. মো. আবুল কাশেম বলেন, প্রকল্পটি শুরুর আগে এ অঞ্চলের কৃষকদের বার্ষিক আয় ছিলো প্রায় ৫০ হাজার টাকা। প্রকল্পটি সমাপ্তির পর সে আয় দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৬৭ হাজার টাকা। শুধু সবজি নয়, অন্যান্য শস্য, হাঁস-মুরগী, ভেড়া, মাছ ইত্যাদি সমন্বিত চাষের ফলে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।
“সমন্বিত খামার ব্যবস্থা গবেষণার মাধ্যমে হ্ওার অঞ্চলে খামারের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি” প্রকল্পটির নেতৃত্ব দিয়েছেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. মো. আবুল কাশেম, মাইক্রোবায়োলজি ও ইমিউনোলজি বিভাগের প্রয়াত প্রফেসর ড. আবু বকর সিদ্দিকি, কৃষি অর্থনীতি ও পলিসি বিভাগের প্রফেসর ড. জসিম উদ্দিন আহমদ, কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ বিভাগের প্রফেসর ড. মো. শহীদুল ইসলাম।
গবেষণায় সহযোগী হিসেবে ছিলেন মান্না সালওয়া, মামুন খান, নাসিমা বেগম, জয়নাল আবেদীন প্রমুখ।
পিএইচডির ছাত্র হিসেবে এই প্রকল্পে আরও যুক্ত ছিলেন প্রফেসর ড. মো. আব্দুল আজিজ এবং ড. তপন কুমার সাহা।
৩ বছর আগে