টিকার চালান
দেশে পৌঁছেছে অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রায় ৮ লাখ টিকা
কোভ্যাক্স সুবিধার আওতায় জাপান থেকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ৭ লাখ ৮১ হাজার ৩২০ টিকার ডোজের দ্বিতীয় চালান দেশে পৌঁছেছে।
টিকা পৌঁছালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বিমানবন্দরে সেগুলো গ্রহণ করেন।
এর আগে জাপান থেকে টিকার ডোজ বহনকারী ক্যাথে প্যাসিফিকের একটি কার্গো বিমান বিকাল সোয়া ৩ টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়া এবং বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি উপস্থিত ছিলেন।
পড়ুন: জাপানের দেয়া অ্যাস্ট্রাজেনেকার দ্বিতীয় চালান ঢাকার পথে
আগামী ৩ আগস্ট ৬ লাখ ১৬ হাজার ৭৮০ ডোজের টিকার তৃতীয় চালান দেশে আসার কথা রয়েছে।
এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন গত ২৪ জুলাই জাপানের কাছ থেকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার দুই লাখ ৪৫ হাজার ২০০ ডোজ টিকার প্রথম চালান গ্রহণ করেন।
রাতে নারিতা বিমানবন্দরে জাপানে তৈরি অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা নিয়ে যখন কার্গো বিমান ঢাকার উদ্দেশে উড্ডয়ন করে তখন জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতো বলেন, এটি বন্ধুত্ব ও অংশীদারিত্বের বহিঃপ্রকাশ।
জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোতেগি তোশিমিতসুর সঙ্গে সাম্প্রতিক টেলিফোন আলাপের সময় ডা. মোমেন টিকার বিষয়টি উত্থাপন করেন এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা সরবরাহ করে বাংলাদেশকে সাহায্য করার অনুরোধ জানান।
পড়ুন: খুলনা বিভাগে করোনায় ১৯ মৃত্যু
পাটুরিয়াঘাট দিয়ে ঢাকায় ছুটছে মানুষ
ওই সময় তিনি স্পষ্টভাবে অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার জরুরি প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়েছিলেন। কারণ বাংলাদেশের অনেক সংখ্যক মানুষ সরবরাহ দেরিতে হওয়ায় অ্যাস্ট্রাজেনেকার দ্বিতীয় ডোজ টিকা দিতে পাচ্ছেন না।
জাপান সব সময় বলে আসছে, করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাংলাদেশের পাশে থাকবে।
জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, এই অঞ্চলের ১৫ টি দেশকে কোভ্যাক্স সুবিধার আওতায় মোট এক কোটি ১০ লাখ ডোজ টিকা সরবরাহ করা হবে।
৩ বছর আগে
যে কোন দেশ থেকে টিকার চালান এলে গ্রহণ করা হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বাংলাদেশ জরুরি ভিত্তিতে করোনার টিকা খুঁজছে জানিয়ে শুক্রবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবুল মোমেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ যে কোনো দেশ থেকে ভ্যাকসিনের চালান নিতে সরকার প্রস্তুত রয়েছে।
সিএনএনকে দেয়া এক লাইভ সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, 'জরুরি ভিত্তিতে আমাদের এটি দরকার, কোনো চালান এলে আমরা তা সাথে সাথে গ্রহণ করব।’
ড. মোমেন বলেন, সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো বাংলাদেশের অনেক জনগণ যারা অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রথম ডোজ নিয়েছে, তারা এখনও দ্বিতীয় ডোজ নিতে পারেনি।
আরও পড়ুন: টিকা পেতে কয়েকটি দেশের সাথে আলোচনা চলছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
'যেহেতু আমাদের কাছে আর টিকা নেই তাই আমরা দ্বিতীয় ডোজ দিতে পারছি না, এটা আমাদের জন্য বড় সমস্যা তৈরি করছে,’ বলেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, সরকার বিভিন্ন জায়গা থেকে ভ্যাকসিন পাওয়ার চেষ্টা করছে।
ড. মোমেন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র সরকার এবং দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ করে আমরা একটি চিঠি পাঠিয়েছিলাম। তারা আমাদের টিকা দিতে রাজি হয়েছে।’
তিনি বলেন, এখন সমস্যা হ'ল মার্কিন খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ) অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা রপ্তানির অনুমোদনে দীর্ঘ সময় নিচ্ছে।
ড. মোমেন বলেন, ‘উন্নয়নশীল দেশকে ৮০ মিলিয়নের মতো টিকা দেয়ার ঘোষণা দেয়ায় আমরা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রতি কৃতজ্ঞ। আমাদের জন্য এটি ভালো সংবাদ।'
টিকা পেতে কয়েকটি দেশের সাথে আলোচনা চলছে
দেশে জরুরি প্রয়োজনে করোনা টিকার চাহিদা মেটাতে ভারতকে অব্যাহত অনুরোধ করা ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, চীন, কানাডা, রাশিয়া, যুক্তরাজ্যসহ একাধিক দেশ থেকে সরকার ভ্যাকসিন পাওয়ার চেষ্টা করছে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘চীনের সাথে টিকার পাওয়ার বিষয়ে আলোচনা অনেকটা চূড়ান্ত পর্যায়ে। এছাড়া আমেরিকার কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়ার আশা করছে সরকার।’
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভারতের অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার সরবারহ না থাকায় আমাদের অনেকে দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করতে পারছেন না।
তিনি রাশিয়ার সাথে চলমান আলোচনার বিষয়টি তুলে ধরেন বলেন, 'আশা করছি সপ্তাহের মধ্যে সব কিছুর সমাধান হয়ে যাবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমরা অনানুষ্ঠানিকভাবে জানতে পেরেছি করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা কম থাকায় যুক্তরাষ্ট্রের টিকা সরবরাহের অগ্রাধিকার তালিকায় বাংলাদেশ নেই।
বাংলাদেশের জন্য এটি জরুরি বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এটাকে বাংলাদেশের সঙ্কট ভাবছে না এবং আমি এই ধারণা পছন্দ করি না। এটি বাংলাদেশের জন্য একটি সঙ্কট।’
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টে গ্লোবাল কোভিড-১৯ প্রতিক্রিয়া এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষার সমন্বয়কারী গেইল ই স্মিথ বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ৮০ মিলিয়ন অতিরিক্ত ভ্যাকসিন শেয়ার করতে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘এক্ষেত্রে কীসের ভিত্তিতে বিভিন্ন দেশকে ভ্যাকসিন বণ্টন করা হবে এই মুহূর্তে বলতে পারব না। আমি আগেই বলেছি আমরা ভারত এবং তাদের প্রতিবেশিদের করোনার অবস্থার প্রেক্ষিতে জরুরি মানবিক সহায়তা প্রদান করব।’
ভারত সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে ড. মোমেন বলেন, ভারত কখনোই বলেনি যে টিকা দেবে না। তবে তারা দিতে পারছে না।
তিনি বলেন, জরুরি প্রয়োজন মেটাতে উপহার স্বরূপ ভ্যাকসিন সরাবারহের ব্যাপারে বাংলাদেশ ভারতকে অনুরোধ জানিয়েছে, যদিও রপ্তানির ব্যাপারে ভারতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক রোজিনা অবশ্যই ন্যায়বিচার পাবেন: সিএনএনকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মন্ত্রী বলেন, 'আমি অবশ্যই বলব যে ভারতের সাথে এই ব্যাপারে আমাদের ইতিবাচক কথা হচ্ছে।'
এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে বাংলাদেশের জরুরি প্রয়োজন অনুযায়ী অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন সরবারহ নিশ্চিত করতে অনুরোধ করেন।
বাংলাদেশ ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট এর সাথে ৩ কোটি ডোজ অক্সফোর্ডের করোনা টিকা সরবরাহের চুক্তি করেছিল। সেরাম ইনস্টিটিউট এবং বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মার চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশকে প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ টিকা সরবরাহ করার কথা ছিল।
কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায়, জরুরি ভিত্তিতে প্রতি মাসে অন্তত ৩০ লাখ ডোজ টিকা সরবরাহের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
৩ বছর আগে