অফিসিয়াল সিক্রেটস আইন
কারাগার থেকে মুক্ত হলেন সাংবাদিক রোজিনা
অফিসিয়াল সিক্রেটস আইনের মামলায় ঢাকার একটি আদালত থেকে জামিন পেয়ে কারাগার থেকে মুক্ত হলেন প্রথম আলো পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার রোজিনা ইসলাম।
রবিবার বিকালে কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তিনি মুক্ত হন।
রোজিনা বিকাল সোয়া ৪টার দিকে কারাগার থেকে বের হয়েছেন বলে কারা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
সাংবাদিক ও বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষ রোজিনাকে ফুলের তোড়া দিয়ে কারাগারের গেটে গ্রহণ করেন।
এর আগে বোন ও ভগ্নিপতিসহ ১৩ আত্মীয় স্বজন রোজিনাকে গ্রহণের জন্য দুটি মাইক্রোবাসে কারাগারের গেটে পৌঁছে।
আরও পড়ুন: মন্ত্রী, সচিব বা রোজিনা ইসলাম কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নন: তথ্যমন্ত্রী
জামিন সংক্রান্ত নথিগুলো অনলাইনে কারা কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করা হয় এবং সেগুলো পরীক্ষা করার পর তাকে মুক্তি দেয়া হয়।
এর আগে রবিবার সকালে ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চূড়ান্ত জামিন শুনানি শেষে রোজিনাকে আগামী ১৫ জুলাই পর্যন্ত জামিন প্রদানের আদেশ দেয় আদালত।
তবে তাকে ৫ হাজার টাকা মুচলেকা ও পাসপোর্ট জমা দেয়ার শর্তে জামিন প্রদান করা হয়।
এর আগে গত বৃহস্পতিবর তার জামিন আবেদনের ওপর শুনানি হলেও, তাকে তাৎক্ষণিকভাবে জামিন না দিয়ে রবিবার রায় প্রদানের দিন ধার্য করা হয়।
৪২ বছর বয়সী এই নারী সাংবাদিক অত্যন্ত সুপরিচিত তার অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার জন্য। সোমবার দুপুর থেকে প্রায় ৫ ঘণ্টা তাকে সচিবালয়ে আটকে রাখার পর গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, তার বিরুদ্ধে করোনা টিকা ক্রয় সংক্রান্ত নথিপত্রের অবৈধভাবে ছবি তোলার অভিযোগ করা হয়েছে।
গত সোমবার রাতেই রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩৭৯, ৪১১ ধারা এবং অফিসিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্ট এর আওতায় মামলা দায়ের করে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ।
আরও পড়ুন: জামিনে মুক্তি পেলেন প্রথম আলোর সাংবাদিক রোজিনা ইমলাম
সাংবাদিক রোজিনা অবশ্যই ন্যায়বিচার পাবেন: সিএনএনকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মঙ্গলবার অফিসিয়াল সিক্রেট অ্যাক্টের মামলায় অভিযুক্ত রোজিনা ইসলামকে কারাগারে পাঠায় আদালত। অপরদিকে পুলিশের ৫ দিনের রিমান্ড আবেদনও বাতিল করে দেয়া হয়। ওইদিন ই তাকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের নারী সেলে নিয়ে যাওয়া হয়।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে রোজিনা ইসলামকে সচিবালয়ে আটকে রাখা এবং ৫ ঘণ্টা পর তাকে পুলিশে সোপর্দ করার বিষয়টি তদন্ত করতে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে।
তবে বুধবার রোজিনার বিরুদ্ধে করা মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশের ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চে হস্তান্তর করা হয়েছে।
সাংবাদিক রোজিনাকে হেনস্তার প্রতিবাদ, তার বিরুদ্ধে করা মামলা বাতিল এবং তার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে সারাদেশের সাংবাদিকরা মানববন্ধন এবং প্রতিবাদ সমাবেশ করে আসছিল। এরমধ্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের সংবাদ সম্মেলন বয়কটের ঘটানও ঘটে।
এদিকে এই ঘটনায় জাতিসংঘ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, টিআইব, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ উদ্বেগ ও নিন্দা প্রকাশ করে।
৩ বছর আগে