জলবায়ু ঝুঁকি
জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলায় বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষের সুরক্ষায় অগ্রাধিকার দিচ্ছে: পরিবেশমন্ত্রী
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, বর্তমান সরকার জলবায়ু ঝুঁকি থেকে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষের সুরক্ষার জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিভিন্ন কার্যকরী কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার হোল অব সোসাইটি অ্যাপ্রোচে কাজ করার ফলে সমাজের অসহায় মানুষের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছে। এজন্য জাতীয় সব পরিকল্পনায় বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষের কথা বিশেষভাবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার (১৪ মে) বাংলাদেশ সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের অফিস কক্ষে জলবায়ু পরিবর্তন ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষ নিয়ে কাজ করা আফিয়া কবির আনিলার সঙ্গে আলাপকালে পরিবেশমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: কপ২৯ সম্মেলনে জলবায়ু সহনশীলতা অ্যাডভোকেসি জোরদার করবে বাংলাদেশ: পরিবেশমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুরা যাতে সব প্রতিবন্ধকতা দূর করে জীবনে সফল হতে পারে এবং তাদের জীবন সুরক্ষিত থাকে তার জন্য সরকার সবকিছু করছে।
আফিয়া কবির আনিলা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, পরিবেশ দূষণ থেকে বাংলাদেশের মানুষকে বাঁচাতেই হবে।
তিনি আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সমুদ্রের পানির উচ্চতা বেড়ে গেলে বাংলাদেশের অনেক মানুষ বাস্তুচ্যুত হবে। তাই মানুষকে রক্ষায় ব্যাপকভাবে গাছ লাগানোসহ জলবায়ু পরিবর্তন ঠেকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মন্ত্রীর কাছে বিশেষভাবে অনুরোধ করেন।
মন্ত্রী এসময় তার বিভিন্ন দাবি মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।
এরপূর্বে মন্ত্রী বাংলাদেশ সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের অফিস কক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভাণ্ডারির সঙ্গে বৈঠক করেন এবং দ্বিপক্ষীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলাপ করেন।
আরও পড়ুন: পারস্পরিক কল্যাণের ভিত্তিতে হতে হবে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক: পরিবেশমন্ত্রী
ধান উৎপাদনে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো হবে: পরিবেশমন্ত্রী
৭ মাস আগে
ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে জলবায়ু ঝুঁকি তীব্রতর হচ্ছে: জাতিসংঘ
এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে জলবায়ু সম্পর্কিত ঝুঁকিসমূহ তীব্রতর হচ্ছে এবং ঝুঁকিতে থাকা গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে প্রভাবিত করছে। গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে অর্থনৈতিক অবনতি থেকে রক্ষা করতে নীতিনির্ধারকদের অবশ্যই জলবায়ু সহনশীলতা এবং অভিযোজন ব্যবস্থাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে বলে সোমবার জাতিসংঘের কৃষি উন্নয়ন তহবিল (ইফাদ) এর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
‘এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে জলবায়ু সহনশীলতা তৈরি’ নামে এই প্রতিবেদনটি ইফাদের সহায়তায় অ্যাডাপটেশন ফর স্মলহোল্ডার এগ্রিকালচারাল প্রোগ্র্যাম (এসাপ)- এর মূল ফলাফল এবং অর্জিত অভিজ্ঞতালব্ধ শিক্ষা পর্যালোচনা করে করা হয়েছে।
২০১২ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত চলমান এসাপ কর্মসূচিটি গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব অভিযোজন এবং প্রশমন করতে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে গ্রামীণ উন্নয়ন প্রকল্পগুলোতে ৩০৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে। বাংলাদেশ, ভুটান, কম্বোডিয়া, লাওস, নেপাল ও ভিয়েতনামে জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজনে পাঁচ লাখ ১০ হাজারের বেশি ক্ষুদ্র কৃষি পরিবারকে সহায়তার মাধ্যমে কর্মসূচিটি এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে।
প্রতিবেদনটি গ্রামীণ জনগণের জীবন ও জীবিকার ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব, অভিযোজন এবং প্রশমনে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর সহায়তায় ইফাদের বহুমুখী, কার্যকরী এবং উদ্ভাবনী পদ্ধতিগুলো তুলে ধরে।
এই প্রতিবেদনটি এই অঞ্চলে গৃহীত সফল কর্মপ্রক্রিয়া ও পন্থাসমূহ ও স্কেল-আপের সুযোগ পর্যালোচনা করে যা কি না এসাপ কার্যক্রমের আরেকটি নতুন পর্যায়, ‘এনহ্যান্সড অ্যাডাপটেশন ফর স্মলহোল্ডার এগ্রিকালচারাল প্রোগ্র্যাম (এসাপ+)’ এর জন্য দৃঢ় একটি ভিত্তি স্থাপন করে। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা ১০ মিলিয়ন মানুষের, বিশেষ করে নারী ও যুবকদের, জলবায়ু সহনশীলতাকে সহায়তা করার জন্য এসাপ+ জলবায়ু অর্থায়নে সম্ভাব্য অতিরিক্ত ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার যোগ করছে।
ইফাদের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের আঞ্চলিক জলবায়ু ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞ কিসা এমফালিলা বলেন, ‘প্রায়ই ক্ষুদ্র উৎপাদকরা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের ক্ষেত্রে সহনশীলতা বৃদ্ধির জন্য কী করা দরকার তা জেনে থাকেন, আমরা তাদের যথাযথ অর্থের যোগান ও প্রযুক্তিতে অভিগম্যতা দিয়ে সহায়তা করতে পারি।’
তিনি আরও বলেন, ‘কৃষকরা সময়ের সাথে সাথে অনেক সফল অভিযোজন কৌশল তৈরি করেছে বলে প্রতিবেদনটি নিশ্চিত করে এবং এই স্থানীয় জ্ঞান ব্যবহার করার জন্য আমাদের দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।’
বুধবার বিকাল ৩টায় জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলন কপ-২৬ এ ইফাদ প্যাভিলিয়নে একটি লাইভ ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে এক ভার্চুয়াল-ফিল্ড ট্রিপে বাংলাদেশের (রিপোর্টে অন্তর্ভুক্ত) ক্ষুদ্র কৃষকরা জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ-খাইয়ে নিতে কী পদক্ষেপ নিচ্ছে তা পরিদর্শন করা হবে। তথ্যচিত্র নির্মাতা কাসা আলমের সাথে দর্শকরা বাংলাদেশে ভার্চুয়াল ভ্রমণের মাধ্যমে ইফাদ প্রকল্পে অংশগ্রহণকারী কৃষকদের জলবায়ু সম্পর্কিত প্রতিবন্ধকতা এবং গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর অভিযযোজন কৌশল নিয়ে আলোচনা করবেন।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে কোনো দেশ সুরক্ষিত নয়: প্রধানমন্ত্রী
এছাড়া প্রতিবেদনে বেশ কিছু সুপারিশ করা হয়েছে। সেগুলো হলো: দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি এবং প্রভাবের দ্রুত মূল্যায়ন করতে প্রযুক্তির ব্যবহার, স্থানীয় জনগণের অভিজ্ঞতা, জ্ঞান এবং সৃজনশীলতাকে কাজে লাগানো।
ক্ষুদ্র কৃষকরা অনেক সফল অভিযোজন কৌশল তৈরি করেছে, সেগুলো চিহ্নিত, পরিমার্জিত, পরিচিত করা এবং দ্রুত ও পর্যাপ্ত অর্থায়ন করা।
স্থানীয়দের তৈরি সমাধানগুলোকে আরও উন্নত এবং এদের গ্রহণযোগ্যতাকে দ্রুততর করতে সরকারি ও বেসরকারি অংশীদারিত্ব ব্যবহার করা। প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম এবং যন্ত্রপাতির যোগান, পরামর্শ পরিষেবা, প্রযুক্তি সমাধান, পণ্য বাজারজাত লাভজনক করে বাজার অভিগম্যতা নিশ্চিত করতে সরকারি খাতের উদ্যোগগুলোকে বেসরকাতি খাতের সাথে সমন্বয় করা।
সফল অভিযোজন কৌশলগুলো গ্রামীণ সম্প্রদায়গুলোতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে গৃহীত হবে তখনই যখন বাধা অপসারণ করা হবে এবং অর্থায়ন পাওয়া যাবে। সহায়ক নীতি কাঠামো থাকলে এবং সরকারি প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি খাত পর্যাপ্ত অর্থ ও পরামর্শমূলক পরিষেবা প্রদান করলে ক্ষুদ্র কৃষকরা দ্রুত উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্ভাবন গ্রহণ করবে।
জলবায়ু সহনশীলতা বাড়ানোর উদ্যোগগুলোকে সহায়তা করার জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্ল্যাটফর্ম চালু করা হয়েছে যা কি না মহামারিসহ অন্যান্য প্রতিকূল ঘটনা থেকেও রক্ষা করবে। উৎপাদক, সরবরাহকারী, ক্রেতা এবং অন্যান্য অংশীদারদের বিনিময় সহজতর করতে এবং কোভিড-১৯ মহামারির মতো বাহ্যিক অভিঘাতে কৃষক ও খাদ্য শৃঙ্খলের ঝুঁকি কমাতে প্রযুক্তি প্ল্যাটফর্মগুলো সহায়তা করতে পারে।
পড়ুন: জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় বৃহত্তর অর্থায়ন চান হাসিনা ও প্যাট্রিক
ঢাকা-প্যারিস সম্পর্ক উন্নয়নে ফ্রান্স সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
৩ বছর আগে
যুক্তরাজ্যকে জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর পাশে চায় ঢাকা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জলবায়ু সমস্যা ও ঝুঁকি মোকাবিলায় যুক্তরাজ্যকে পাশে চায় বাংলাদেশ। পুরো বিশ্বজুড়ে জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর চাহিদা ও প্রত্যাশা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরার ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্য বিশেষ অবদান রাখবে বলেও আশা ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।
সিওপি২৬ প্রধান অলোক শর্মা বুধবার ঢাকা পৌঁছে সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে তার বাসভবন গণভবনে সাক্ষাৎ করতে গেলে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তাদের বৈঠকের ব্যাপারে সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানান প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।
তিনি জানান, তারা বর্তমান জলবায়ু পরিবর্তন, এর বৈশ্বিক প্রভাব, জলবায়ু সমস্যা নিরসন, কোভিড-১৯ সহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।
এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, অপরিমিত কার্বন নির্গমনসহ নানা কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সবচেয়ে ক্ষতির সম্মুখীন হতে যাওয়া দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।
তিনি জানান, জ্বালানির চাহিদা মেটাতে বাংলাদেশ সরকার নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে ব্যাপকভাবে কাজ করছে এবং দেশে বর্তমানে ৫৮ লাখ সোলার পাওয়ারের গ্রাহক রয়েছে।
আরও পড়ুন: সিওপি২৬ সভাপতি অলোক শর্মা ২ দিনের সফরে ঢাকায়
কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর তুলনায় ভাসানচর অনেক উন্নত: জাতিসংঘ
এছাড়া সরকারের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি ও করোনা নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ সরকারের কার্যক্রম নিয়েও আলোচনা হয় দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে।
এসময় সিওপি২৬ সভাপতি অলোক শর্মা আগামী নভেম্বরে জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত সিওপি-২৬ গ্লাসগো সম্মেলন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অংশ নেয়ার আমন্ত্রণ জানান।
জলবায়ু সমস্যা মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে বাংলাদেশ বেশ কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে আশাব্যক্ত করেন সিওপি২৬ সভাপতি।
৩ বছর আগে