তামাকমুক্ত বাংলাদেশ
তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে শপথ নিলেন যুবসমাজের প্রতিনিধিরা
বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করে গড়ে তুলতে শপথ নিলেন যুবসমাজের প্রতিনিধিরা।
বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ের এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর অডিটোরিয়ামে এ শপথ নেন তারা।
একই সঙ্গে তারা নিজের অবস্থান থেকে জনসচেতনতা বৃদ্ধির প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. সাইদুর রহমান এবং লিড পলিসি অ্যাডভাইজার, সিটিএফকে, বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমান।
সাইদুর রহমান বলেন, ‘আমরা তামাক প্রচারক এবং তামাকবিরোধী কর্মী দুই পক্ষের সঙ্গেই সম্পৃক্ত হই, যা স্বার্থের সংঘাত সৃষ্টি করে। এনজিওগুলো বর্তমানে মাত্র ছয়টি মূল পয়েন্টে মনোযোগ দিচ্ছে, কিন্তু তা পর্যাপ্ত নয়। সব এনজিওর একত্রিত হওয়া অত্যাবশ্যক। উন্মুক্ত স্থানে ধূমপানের ওপর কঠোর নিয়মাবলী প্রয়োগ করা উচিত। যদিও ধূমপান সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা সম্ভব নয়, তবে আমরা অবশ্যই নির্দিষ্ট এলাকায় বিশেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারি।’
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত তরুণরা তাদের সফলতার প্রমাণ দিয়েছে। তাহলে তারা কেন তামাকবিরোধী ক্যাম্পেইনে সফল হতে পারবে না? আমাদের কৃষকরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে, অথচ তামাক ব্যবসা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তরুণদেরও এই মরণঘাতী ব্যবসা বন্ধ করতে পদক্ষেপ নিতে হবে। তামাকবিরোধী আইন বাস্তবায়ন করতে হবে। এছাড়াও তামাক পণ্যের ওপর অতিরিক্ত কর আরোপ করা উচিত।’
আজহার আলী তালুকদার বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ততা তামাক কোম্পানির তুলনায় অনেক কম। তবুও, আমরা একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের সাক্ষী হচ্ছি। নেতৃত্ব তরুণদের হাতে চলে গেছে, যারা অর্থপূর্ণ পরিবর্তন আনতে সক্ষম। রাজনৈতিক দলগুলো যা গত ১৫ বছর ধরেও করতে পারেনি, সেখানে তরুণরা এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি নিয়ে কাজ করেছে। একই সঙ্গে আমরা একটি শক্তিশালী তামাকবিরোধী আইন প্রতিষ্ঠা করতে পারি।’
নুরুল আমিন বলেন, ‘দেশে একটি পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। এটাকে ধরে রাখতে হবে। পরিবারগুলোকে তামাকমুক্ত হতে চেষ্টা করা উচিত। তামাক শুধুমাত্র একটি মানসিক নির্ভরতা; এর কোনো উপকারিতা নেই। যদিও ১০০% তামাকমুক্ত দেশ অর্জন করা সম্ভব না, তবে আমাদের সফলতার হার বাড়ানোর জন্য কাজ করতে হবে।’
২ মাস আগে
তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে করবৃদ্ধি ও আইন শক্তিশালীকরণের তাগিদ
তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে আসন্ন ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে সুনির্দিষ্ট করারোপের মাধ্যমে সবধরনের তামাকপণ্য বিশেষ করে কমদামি সিগারেটের দাম বাড়িয়ে জনগণের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে নিয়ে যেতে হবে।
একইসঙ্গে খসড়া তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটি দ্রুত চূড়ান্ত করতে হবে।
আরও পড়ুন: ক্ষতি কমাতে তামাকজাত পণ্যের দাম বৃদ্ধির দাবি
বুধবার (১০ মে) ঢাকায় ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত ‘তামাক কর ও মূল্য পদক্ষেপ: বাজেট ২০২৩-২৪’ শীর্ষক সাংবাদিক কর্মশালায় এসব বিষয়ে আলোচনা করেন আলোচকরা।
তামাকবিরোধী গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্স (আত্মা) যৌথভাবে কর্মশালাটি আয়োজন করে।
কর্মশালায় প্রিন্ট, টেলিভিশন এবং অনলাইন মিডিয়ায় কর্মরত ২৬ জন সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন।
কর্মশালায় বক্তারা বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া সংশোধনীটি মন্ত্রিসভার অনুমোদনের জন্য কেবিনেট ডিভিশনে পাঠানো হয়েছে। এটি চূড়ান্ত করতে যত দেরি হবে তামাকজনিত মৃত্যু ও ক্ষয়ক্ষতি ততই বাড়বে।
কর্মশালায় জানানো হয়, আইএমএফ ঋণের বিপরীতে যে অতিরিক্ত কর রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে তার উল্লেখযোগ্য অংশ তামাকপণ্যের কর ও দাম কার্যকরভাবে বাড়িয়ে পূরণ করা সম্ভব।
বর্তমানে সিগারেট ব্যবহারকারীদের প্রায় ৭৫ শতাংশই কমদামি সিগারেটের ভোক্তা এবং এই স্তরে সম্পূরক শুল্কহার খুবই কম, মাত্র ৫৭ শতাংশ।
কর্মশালায়, নিম্ন স্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ৪০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫৫ টাকা নির্ধারণ করে ৩৫ দশমিক ৭৫ টাকা অর্থাৎ ৬৫ শতাংশ সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়।
মধ্যম স্তরে ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ৬৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭০ টাকা নির্ধারণ করে ৪৫ দশমিক ৫০ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ, উচ্চ স্তরে ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ১১১ টাকা থেকে ১২০ টাকা নির্ধারণ করে ৭৮ দশমিক ০০ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ এবং প্রিমিয়াম স্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ১৪২ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৫০ টাকা নির্ধারণ করে ৯৭ দশমিক ৫০ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপের প্রস্তাব তুলে ধরা হয়।
একইসঙ্গে বিড়ি, গুল এবং জর্দার দাম বাড়িয়ে দরিদ্র জনগোষ্ঠির ক্রয় ক্ষমতার বাইরে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয় কর্মশালায়।
কর্মশালায় জানানো হয় তামাকবিরোধীদের এই বাজেট প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হলে সরকারের ৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আয় অর্জিত হবে এবং চার লাখ ৮৮ হাজার প্রাপ্তবয়স্ক এবং চার লাখ ৯২ হাজার তরুণ জনগোষ্ঠির অকাল মৃত্যু রোধ করা সম্ভব হবে।
কর্মশালায় মূল উপস্থাপনা তুলে ধরেন প্রজ্ঞা’র তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক প্রকল্প প্রধান হাসান শাহরিয়ার।
আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) এর রিসার্চ ডিরেক্টর ড. মাহফুজ কবীর, সিটিএফকে বাংলাদেশ এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. আব্দুস সালাম, অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্স আত্মা’র কো-কনভেনর মিজান চৌধুরী এবং প্রজ্ঞা’র নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের।
আরও পড়ুন: তামাক নিয়ন্ত্রণকে এগিয়ে নিতে কারখানায় তদারকি আবশ্যক: গবেষণা
প্রস্তাবিত বাজেট তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনের অন্তরায়
১ বছর আগে
প্রস্তাবিত বাজেট তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনের অন্তরায়
২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পাস হলে সব ধরনের তামাকপণ্য আরও সহজলভ্য হবে এবং তরুণ ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে তামাকের ব্যবহার বাড়বে বলে জানিয়েছে তামাকবিরোধী আন্দোলনের নেতারা।
৩ বছর আগে