ইন ও সালিশ কেন্দ্র
কক্সবাজারে ৩ ফসলি জমি ভরাট, বিচারিক অনুসন্ধানের নির্দেশ
কক্সবাজার সদরের বাঁকখালী নদীর তীরবর্তী উত্তর মুহুরিপাড়ার তিন ফসলি প্রায় ৬০ একর উর্বর জমি অবৈধভাবে দখল ও ভরাটের অভিযোগের বিষয়ে বিচারিক অনুসন্ধান করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ৬০ দিনের মধ্যে অনুসন্ধান করে কক্সবাজারের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একই সাথে ভরাট কার্যক্রমের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পক্ষে করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. মুজিবর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার ভার্চুয়াল বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: ঢাবির অধ্যাপক মোর্শেদ হাসানকে অপসারণের আদেশ কেন অবৈধ নয়: হাইকোর্ট
রুলে মুহুরিপাড়ায় জমি অবৈধ দখলকারীদের প্রতিরোধে সরকারের বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতা কেন অবৈধ হবে না, অবৈধ দখলকারীদের থেকে উদ্ধার করে জমির মালিকদের ফিরিয়ে দিতে ব্যর্থতা কেন অবৈধ হবে না এবং অবৈধ দখলকারীদের থেকে উদ্ধার করে জমির মালিকদের ফিরিয়ে দিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
ভূমিসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, কক্সবাজার সদরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি), সদর থানার ওসি, কক্সবাজার পরিবেশ অফিসের সহকারী পরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ড. সৈয়দা নাসরিন, সঙ্গে ছিলেন মো. শাহীনুজ্জামান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।
আরও পড়ুন: ডিএজি ও এএজি নিয়োগের বৈধতা প্রশ্নের রুল শুনানিতে বিব্রত হাইকোর্ট
চলতি বছরের ১৪ মার্চ দৈনিক ইত্তেফাকে ‘কক্সবাজার অবৈধভাবে ভরাট হচ্ছে ৬০ একর ফসলি জমি, জমির মালিকরা অসহায়, প্রশাসন নীরব’ শীর্ষক প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে এ রিট করে আসক।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, কক্সবাজার সদরের বাঁকখালী নদীর তীরবর্তী উত্তর মুহুরিপাড়ার তিন ফসলি প্রায় ৬০ একর উর্বর জমি ভরাট করে ফেলা হচ্ছে। দুই কিলোমিটার দূরত্বে গড়ে ওঠা রেলস্টেশনকে কেন্দ্র করে বাণিজ্যিক চিন্তায় আবাসন প্রকল্প গড়তেই আইন উপেক্ষা করে রাত-দিনে এসব জমি ভরাট করছে ভূমিদস্যু চক্র। শতাধিক কৃষক পরিবারের ‘অন্ধের যষ্টি’ তিন ফসলি জমি ভরাট থেকে রক্ষায় জেলা প্রশাসক, কৃষি বিভাগ, পরিবেশ অধিদপ্তর ও কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন দিয়েও কোন সুরাহা পাচ্ছে না বলে অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্তদের। অথচ ‘কৃষি জমি সুরক্ষা ও ভূমি ব্যবহার’ আইনে ফসলি জমি ভরাট করে কোনো স্থাপনা বা আবাসন প্রকল্প বা শিল্পকারখানা গড়ে তোলার কোনো সুযোগ নেই। কক্সবাজার কৃষি বিভাগ, উপজেলা প্রশাসন মাটি ভরাট রদে উপযুক্ত আইন পাচ্ছে না বলে দাবি করলেও বিষয়টি গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জনিয়েছে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার জন্মসনদসহ নথিপত্র হাইকোর্টে তলব
কক্সবাজার সদর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রমতে, মধ্য ঝিলংজা ব্লকের বাঁকখালী নদীর তীরবর্তী প্রায় ৬০ একর জমি পলি দোআঁশ বেষ্টিত অতি উর্বর ভূমি। এসব জমিতে আমন ও বোরোর মৌসুমে প্রায় ১০ হাজার মণ ধান উৎপাধন হতো এসব ধানের বিক্রি মূল্য দাঁড়াত প্রায় ১ কোটি টাকা। পাশাপাশি আমন মৌসুমে ধানের পাশাপাশি শাকসবজি চাষ হতো।
৩ বছর আগে