করলা
ঠাকুরগাঁওয়ে সবজিবাহী ট্রাক উল্টে নিহত ২
ঠাকুরগাঁওয়ে সবজিবাহী (করলা) ট্রাক উল্টে আশরাফুল ও সহিবর নামের দুই শ্রমিক নিহত হয়েছে। এ সময় গুরুতর আহত হয় আরও ১৫ জন।
সোমবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের ফাড়াবাড়ি এলাকার দক্ষিণ বটিনা গ্রামের চেপটিগুড়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: বালি বোঝাই ট্রাক উল্টে চাঁপাইনবাবগঞ্জে নারী নিহত
নিহত আশরাফুল সদর উপজেলার কহরপাড়া গ্রামের হামিদুল ইসলামের ছেলে এবং নিহত সহিবর ওই এলাকার মৃত আব্দুর রহিমের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সোমবার দুপুরে ফাড়াবাড়ি এলাকার একটি করলার বাগান থেকে ট্রাক বোঝাই করে ১৫ জন শ্রমিক ও ওই ট্রাকের ওপরে বসেই ঠাকুরগাঁর উদ্দেশে রওনা হয়। পথে চেপটিগুড়ায় স্থানে ট্রাকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায় এবং রাস্তার পাশের পুকুরে গিয়ে পড়ে।
আশেপাশের লোকজন দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে ট্রাকের নিচে চাপা পড়া শ্রমিকদের উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে আশরাফুল ও সহিবরের মৃত্যু হয়।
সবজিবাহী ট্রাক উল্টে দুইজন নিহতের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ কবির।
আরও পড়ুন: নাটোরে ট্রাক উল্টে চালক নিহত
সাতক্ষীরায় ট্রাক উল্টে ২ শ্রমিক নিহত, আহত ১২
১ বছর আগে
বর্ষা মৌসুমে যেসব পুষ্টিকর সবজি খেতে পারেন
গরম আবহাওয়া থেকে স্বস্তির পাশাপাশি ব্যাকটিরিয়া সংক্রমণের সমূহ সম্ভাবনা থাকে, তাই সুস্বাস্থ্যের জন্য আপনার খাদ্য তালিকায় এই বর্ষা মৌসুমে পুষ্টিকর সবজি থাকা আবশ্যক। এ সময় শাক জাতীয় খাবার থেকে বিরত থাকুন, কেননা এই স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়ায় এগুলোর মধ্যে থাকা অতিরিক্ত ব্যাকটিরিয়া আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। এই শাক ছাড়াও কিন্তু এই বর্ষায় আপনার জন্য বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যকর সবজি আছে। চলুন জেনে নেই এরকমি কয়েকটি সবজির ব্যাপারে এবং কেন সেগুলো আপনার সুস্বাস্থ্যের জন্য উপকারি।
বর্ষা মৌসুমে ৫টি পুষ্টিকর সবজি
করলা
বৃষ্টি মৌসুমে পাওয়া তেঁতো করলা অন্ত্রের ভেতরে থাকা পরজীবী কৃমি ধ্বংসে অনেক কার্যকর। পাকস্থলি ও অন্ত্রের পরজীবীগুলোর সাধারণত এই বর্ষাকালেই বেশি উপক্রম হয়।
তেঁতো করলা ফাইবার, ভিটামিন-সি, ফোলেট এবং ভিটামিন-এ জাতীয় পুষ্টির আঁধার। টেস্ট-টিউব সমীক্ষায় এই সবজির ক্যান্সার-বিরোধী বৈশিষ্ট্য ধরা পড়েছে। এছাড়া এটি পেট, কোলন, ফুসফুস, এবং স্তন ক্যান্সারের কোষের বিরুদ্ধে কার্যকর হতে পারে।
তেঁতো করলা কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস করে হৃদরোগের সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়। এতে ক্যালোরি কম তবে ফাইবার বেশি। মানব এবং প্রাণী গবেষণায় দেখা গেছে যে, এটি পেটের চর্বি এবং শরীরের ওজন হ্রাস করতে সহায়তা করে।
আরও পড়ুন: বর্ষাকালে ভ্রমণের পূর্বে কিছু সতর্কতা
চিচিঙ্গা
চিচিঙ্গা এমন ফাইবার সরবরাহ করে যা পেটে বেশিক্ষণ থেকে ক্ষুধা কমিয়ে দেয়। ফলশ্রুতিতে দ্রুত গতিতে মেদ ঝরে পড়ে। এছাড়া ভারী খাবার গ্রহণের পরে কোষ্ঠকাঠিন্য, ফোলাভাব এবং পেট-ব্যথা প্রতিরোধেও বেশ কার্যকর এই ফাইবার।
নগন্য পরিমাণে কোলেস্টেরল থাকায় এই সবজি হৃদযন্ত্র ভালো রাখে। সেই সাথে রক্ত সঞ্চালনের উন্নতি এবং কার্ডিয়াক পেশীগুলোর সর্বোত্তম কার্যকারিতা নিশ্চিত করে। শরীরের বর্জ্য এবং কিডনিতে পাথর নির্মূলে সহায়তা করে।
চিচিঙ্গা অতিরিক্ত শ্লেষ্মা নিঃসরণ সহজেই শ্বাসনালী থেকে সরাতে পারে। ফলে কোনো প্রকার শ্বাসকষ্ট হয়না। অতিরিক্ত অ্যাসিডকে উপশম করে গ্যাস্ট্রাইটিস, পেপটিক আলসার এবং জ্বলন থেকে অল্প সময়ের মধ্যেই অব্যাহতি দেয়।
আরও পড়ুন: বজ্রপাত থেকে বাঁচার জন্য সতর্ক হোন
পটল
পটলে বিদ্যমান অ্যান্টিপাইরেটিক ক্রিয়াকলাপ জ্বর এবং সর্দি হ্রাস করতে সাহায্য করে যা বর্ষার সময় একটি সাধারণ রোগ।
রক্তের শুদ্ধির জন্য পটল বেশ উপকারী। এটি রক্ত ও টিস্যু পরিষ্কার করে ত্বকের যত্ন নেয়।
এই সবজিতে থাকা প্রচুর পরিমাণে ফাইবার সঠিক হজমে সহায়তা করে। পটলের বীচি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে। তাই পটল খাওয়ার সময় এর বীচি ফেলে দেবেন না। এগুলো রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে, যার ফলস্বরূপ দেহের কোলেস্টেরল কমে যায়। এটি কম ক্যালোরি সম্পন্ন এবং দীর্ঘক্ষণ আপনার পেট ভরা রাখবে। সুতরাং ওজন কমাতে আপনি নিঃসন্দেহে এর তরকারি খেতে পারেন।
আরও পড়ুন: সাইক্লিং, দৌড় কিংবা সাঁতার: ওজন কমাতে কোনটি বেশি কার্যকরী?
কাকরোল
তিক্ত স্বাদযুক্ত কাকরোল যকৃতের ক্ষতি, প্রদাহজনিত অসুস্থতা রোধ এবং জ্বর কমাতে সহায়তা করে।
এর ফল নিউরোপ্রোটেক্টিভ বৈশিষ্ট্যযুক্ত হওয়ায় মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বহাল রাখতে পারে।
এর হাইপোগ্লাইসেমিক বৈশিষ্ট্য অতিরিক্তভাবে ইনসুলিনের নিঃসরণ এবং সংবেদনশীলতা উভয় ক্ষেত্রে কার্যকর ভুমিকা রাখার মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারে।
কাকরোলের বীচিতে থাকা ফাইবার গ্যাস্ট্রিক আলসার, পাইলস এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রভৃতি প্রশমন করে।
কম ক্যালোরির হওয়ায় আপনার অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে কাকরোল খেতে পারেন।
কাকরোলের শাঁসে থাকে ভিটামিন বি-৯, যা কোষের বৃদ্ধি এবং প্রজননের জন্য প্রয়োজনীয়। এভাবে এটি গর্ভাবস্থায় নিউরাল টিউব ত্রুটির সম্ভাবনা হ্রাস করে।
আরও পড়ুন: জন্মদিনে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি মিঠুন
ঢেঁড়শ
ঢেঁড়শ ভিটামিন-সি, ভিটামিন-কে এবং প্রোটিনে ভরপুর। এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো বিশেষত শক্তিশালী পলিফেনল প্রদাহ রোধ, হৃদযন্ত্র এবং মস্তিষ্কের ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারে।
প্রাণী গবেষণা মতে, ঢেঁড়শ রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে দেয়। এতে লেকটিন নামে একটি প্রোটিন রয়েছে, যার উপর ক্যান্সার প্রতিরোধী গবেষণা চলছে।
ঢেঁড়শ খাওয়ার ফলে আপনার রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণ থাকবে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে, এটি ডায়াবেটিসের সাধারণ ক্রিয়াকলাপেও হস্তক্ষেপ করতে পারে।
ঢেঁড়শ গর্ভবতী মহিলাদের প্রতিদিনের ফোলেটের চাহিদা মেটাতে সক্ষম।
আরও পড়ুন: বর্ষায় পোকামাকড়ের উপদ্রব থেকে বাঁচতে করণীয় সম্পর্কে জেনে নিন
শেষাংশ
এগুলোর মাধ্যমে আপনার বর্ষা মৌসুমে পুষ্টিকর সবজি তালিকা পরিপূর্ণ করতে পারেন। আপনার ও আপনার পরিবারের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সুষম খাদ্যের তালিকা প্রস্তুতিতে অন্য কোনো কঠোর ডায়েটের প্রয়োজন নেই। সর্বপরি, সবজি ঘরে আনার পর অবশ্যই ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করার দিকে নজর রাখবেন।
৩ বছর আগে