সিনহা
সিনহা হত্যা মামলা: দ্বিতীয় দিনে ১৩ আসামির পক্ষে যুক্তিতর্ক শেষ
সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার টানা চার দিনের সাক্ষ্য গ্রহণের দ্বিতীয় দিন ১৩ আসামির পক্ষে যুক্তিতর্ক শেষ হয়েছে।
সোমবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মামলার ১৫ আসামির মধ্যে ১৩ আসামির যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়েছে।
এদিন সকাল সোয়া ১০টার দিকে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে আসামি পক্ষের আইনজীবীরা যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। সন্ধ্যায় আদালত মুলতবি করার সময় পর্যন্ত আসামি লিয়াকত আলীর পক্ষে যুক্তিতর্ক অসমাপ্ত রয়েছে। যা মঙ্গলবারও চলবে বলে জানান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম।
আসামি লিয়াকত আলীর পক্ষে যুক্ততর্ক উপস্থাপন করেন অ্যাডভোকেট চন্দন দাশ।
অপরদিকে মঙ্গলবার মামলার প্রধান আসামি টেকনাফ থানার সাময়িক বহিষ্কৃত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হবে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম জানান, রবিবার এই মামলার যুক্তিতর্কের প্রথম দিন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সৈয়দ রেজাউর রহমান, পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মোস্তফা, অ্যাডভোকেট মোজাফফর আহমদ হেলালী ও অ্যাডভোকেট জিয়াউদ্দীন প্রমুখ আদালতে যুক্তিতর্ক তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: এস কে সিনহার দুর্নীতি মামলা: খালাস পাওয়া ২ আসামিকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
তিনি জানান, সর্বশেষ আট দফায় গত ৭ ডিসেম্বর ৮৩ জন সাক্ষীর মধ্যে ৬৫ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ রোডের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি মামলা করে। পরে ৫ আগস্ট কক্সবাজার আদালতে টেকনাফ থানার বহিষ্কৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস।
চারটি মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
পরে ওই বছরের ১৩ ডিসেম্বর ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ও র্যাব-১৫ কক্সবাজারের জ্যৈষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার মো. খাইরুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: এস কে সিনহার সঙ্গে দণ্ডিত লুৎফুলকে জামিন দেননি হাইকোর্ট
সিনহা হত্যা মামলা : পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণ ২৮, ২৯ সেপ্টেম্বর
২ বছর আগে
সিনহার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা: জামিন পেলেন নাজমুল হুদা
সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার (এস কে সিনহা) বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে মামলা করায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা পাল্টা মামলায় সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদাকে জামিন দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (২৪ নভেম্বর) ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ কে এম ইমরুল কায়েসের আদালতে নাজমুল হুদা আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন।
অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক ২০ হাজার টাকা মুচলেকায় ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন।
আজ মামলাটি চার্জশিট আমলে গ্রহণের দিন ধার্য ছিল। বিচারক চার্জশিট আমলে নিয়ে বিশেষ জজ আদালত-৯ এ বদলির আদেশ দেন। একই সঙ্গে মামলাটি চার্জ গঠনের জন্য ১৩ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেন।
আরও পড়ুন: ঘুষ গ্রহণ মামলা: আপিল বিভাগে নাজমুল হুদার জামিন
এর আগে, গত ৭ অক্টোবর চার্জশিট অনুমোদন করে কমিশন। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে নিজের বিরুদ্ধে নিষ্পত্তি হওয়া একটি মামলার রায় বদলে দেয়া হয়েছে ও উৎকোচ চাওয়া হয়েছে, এস কে সিনহার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করে ২০১৮ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর শাহবাগ থানায় মামলা করেন নাজমুল হুদা।
মামলার চার্জশিটে সে সময় নাজমুল হুদা দাবি করেন, উচ্চ আদালতে ডিসমিস করার পরও প্ররোচিত হয়ে মামলাটির রায় পরিবর্তন করা হয়। মামলাটি ডিসমিস করতে দুই কোটি টাকা এবং আরও একটি টাকা ব্যাংক গ্যারান্টির অর্ধেক অর্থাৎ এক কোটি ২৫ লাখ টাকা উৎকোচ দাবি করেন সিনহা। তবে দেড় বছরের তদন্তে নাজমুল হুদার এ অভিযোগের কোনো প্রমাণ পায়নি দুদক।
মিথ্যা অভিযোগ করায় গত বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করেন দুদক পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন।
মামলার বিষয়ে তৎকালীন দুদকের সচিব মুহাম্মদ দেলোয়ার বখত বলেছিলেন, নাজমুল হুদা যে মামলাটি করেছেন, সেটি একেবারেই ভিত্তিহীন। দুদকের অনুসন্ধানেও আমরা সেটা প্রমাণ পেয়েছি। দুদক আইনের ২৮ এর ২ ধারায় বলা হয়েছে, কেউ যদি মিথ্যা তথ্য দিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন আর সেটি যদি তদন্তে বেরিয়ে আসে, তাহলে অভিযোগ দায়েরকারীর বিরুদ্ধে মামলা করা যাবে।
আরও পড়ুন: ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ: নাজমুল হুদা দম্পতির মামলা বাতিলের আবেদন খারিজ
নাজমুল হুদা দম্পতির জামিন বৃদ্ধি
২ বছর আগে
সিনহা হত্যা মামলার অভিযোগ গঠন, ওসি প্রদীপসহ ৬ জনের জামিন নামঞ্জুর
কক্সবাজারের টেকনাফে সেনাবাহিনীর সাবেক মেজর সিনহা হত্যা মামলার অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। আগামী ২৬, ২৭ ও ২৮ জুলাই সাক্ষী গ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে। এর সাথে সাবেক ওসি প্রদীপ ও কনষ্টেবল সাগরদেবসহ ৬ জনের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
রবিবার দুপুরে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল এ আদেশ দেন।
এদিন বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত টানা শুনানি চলে। এতে উভয় পক্ষের আইনজীবীরা বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
আরও পড়ুন: ওসি প্রদীপের জামিন না মঞ্জুর: সম্পত্তি ক্রোকের আবেদন
আদালত থেকে বেরিয়ে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি)এডভোকেট ফরিদুল আলম জানান, টেকনাফে পুলিশের গুলিতে নিহত আলোচিত সেনাবাহিনীর সাবেক মেজর সিনহা মো. রাশেদ হত্যা মামলার অভিযোগ গঠনের দিন ছিল রবিবার। আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে মামলার অভিযোগ গঠন করে আগামী ২৬, ২৭ ও ২৮ জুলাই সাক্ষী গ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে। একই সাথে সাবেক ওসি প্রদীপ ও কনস্টেবল সাগরদেবসহ ৬ জনের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করা হয়।
আরও পড়ুন: সিনহা হত্যা: তদন্তের তথ্য প্রকাশ না করার রিট কার্যতালিকা থেকে বাদ
এর আগে রবিবার সকাল ১০টার দিকে ওসি প্রদীপসহ ১৫ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় আদালতে ব্যাপক নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। আদালত প্রাঙ্গণে আসামির স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন। পরে আসামিদের কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: সিনহা হত্যা: চার পুলিশ সদস্য আরও ৭ দিনের রিমান্ডে
গত বছরের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে গাড়ি তল্লাশিকে কেন্দ্র করে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাখেদ খান।
এ ঘটনায় গত ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে প্রধান ও টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ নয়জন পুলিশ সদস্যকে আসামি করা হয়। আদালত মামলাটির তদন্ত করার আদেশ দেন র্যাবকে।
এরপর গত ৬ আগস্ট প্রধান আসামি লিয়াকত আলী ও টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ৭ পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
পরবর্তীতে সিনহা হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় অভিযোগে পুলিশের দায়ের করা মামলার ৩ জন সাক্ষী এবং শামলাপুর চেকপোস্টের দায়িত্বরত আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) ৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এছাড়া একই অভিযোগে পরে গ্রেপ্তার করা হয় টেকনাফ থানা পুলিশের সাবেক সদস্য কনস্টেবল রুবেল শর্মাকেও।
মামলায় গ্রেপ্তারকৃত ১৪ আসামিকে র্যাবের তদন্তকারী কর্মকর্তা বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরে ১৩ ডিসেম্বর ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন তদন্ত সংস্থা র্যাব।
৩ বছর আগে