কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম
জামায়াতের আমির জানতেন তার ছেলে জঙ্গি সংগঠনের সদস্য: সিটিটিসি প্রধান
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান নতুন গঠিত জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র সঙ্গে তার ছেলে ডা. রাফাত সাদিক সাইফুল্লাহর জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
বৃহস্পতিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান আসাদুজ্জামান এ দাবি করেছেন।
সিটিটিসি প্রধান বলেন, জামায়াতের আমির জানতেন যে তার ছেলে জঙ্গিবাদে জড়িত। ‘কিন্তু তিনি নীরব ছিলেন এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে এ তথ্য জানাননি।’
তিনি বলেন, ‘যদি কেউ জঙ্গিবাদে জড়ানোর পর স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চায়, পরিবার আবেদন করে, তাহলে বিবেচনা করা যেতো। কিন্তু তিনি (শফিকুর রহমান) আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে না জানিয়ে পুরো বিষয়টি গোপন করেছিলেন।’
গত ৯ নভেম্বর রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে শফিকুর রহমানের ছেলে রাফাতসহ তার এক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আরও পড়ুন: হাজিগঞ্জে ১১ নারী ‘জামায়াত কর্মী’ আটক
রাফাত আনসার আল ইসলামের সদস্য ছিলেন এবং তাদের নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ায় যোগ দেয়ার জন্য কিছু সমর্থক সংগ্রহ করেছিলেন।
সিটিটিসি প্রধান দাবি করেছেন, সম্প্রতি বাড়ি ছেড়ে আসা একদল যুবক রাফাতের নেতৃত্বে বান্দরবানে যায়, সেখান থেকে তারা পার্বত্য চট্টগ্রামের একটি সশস্ত্র গ্রুপ কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) এর সঙ্গে জঙ্গিদের প্রশিক্ষণের জন্য সিলেটে যায়।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমানকে ১৩ ডিসেম্বর জঙ্গিবাদে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়।
১৭ ডিসেম্বর ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেছেন, জামায়াত প্রধানের দ্বারা নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়াকে সমর্থন ও অর্থায়ন করার প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ।
এদিকে ঢাকার আদালত থেকে দুই জঙ্গির পালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে সিটিটিসি প্রধান আজ (বৃহস্পতিবার) বলেন, ‘এখনও বলার সময় আসেনি। তারা এখনও দেশ থেকে পালাতে পারেনি।’
আরও পড়ুন: নতুন জঙ্গি সংগঠনকে মদদ দিচ্ছেন জামায়াতের আমীর: ডিএমপি কমিশনার
রাজশাহীতে জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল ছত্রভঙ্গ করতে গিয়ে ২ পুলিশ আহত
২ বছর আগে
মগবাজার বিস্ফোরণ: মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ১১
মগবাজারে বিস্ফোরণের ঘটনায় মোহাম্মদ নুর নবী (৩০) ও মো. রাসেল (২১) নামে আরও দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ জনে।
বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজে (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তারা।
আরও পড়ুন: মগবাজার বিস্ফোরণ তদন্তে দ্রুত ইতি টানতে নারাজ আইজিপি
নিহত মোহাম্মদ নুর নবী (৩০) পেশায় ভ্যান চালক ছিলেন।
গত রবিবার মগবাজার ওয়্যারলেস গেটের কাছে এক বিস্ফোরণের ঘটনায় ৯ জন নিহত এবং অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হয়। আহতদের মধ্যে মোহাম্মদ নুর নবীর শরীরের ৯০ শতাংশ আগুনে পুড়ে যায়। তিনি শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের আইসিইউতে (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) চিকিৎসাধীন ছিলেন।
আরও পড়ুন: মগবাজারে বিস্ফোরণ: দুই দিন পর নিরাপত্তারক্ষীর লাশ উদ্ধার
বৃহস্পতিবার আনুমানিক ভোর ৪ টা ৩০ মিনিটের দিকে মোহাম্মদ নুর নবী শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বলে নিশ্চিত করেন হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. পার্থ শঙ্কর পাল।
এছাড়া বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া দুইটায় আইসিইউতে মো. রাসেল (২১) মারা যায় বলে নিশ্চিত করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ ইন্সপেক্টর বাচ্চু মিয়া।
আরও পড়ুন: মগবাজারে বিস্ফোরণ: অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে পুলিশের মামলা
এদিকে মঙ্গলবার বিস্ফোরণের দুই দিন পর ভবনের ধ্বংসাবশেষের নিচ থেকে ভবনটির নিরাপত্তারক্ষীর লাশ পাওয়া যায়। এদিন বেলা সাড়ে ৩টার দিকে হারুন-উর-রশিদ (৬৫) এর লাশ উদ্ধার করা হয়।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-পরিচালক (অপারেশন) দেবাশীষ বর্ধন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগের দিন মগবাজারে অবহেলার কারণে বিস্ফোরণের অভিযোগ এনে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা করেছে।
আরও পড়ুন: মগবাজারে বিস্ফোরণ: পুলিশের তদন্ত কমিটি
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ইউএনবিকে জানান, উপপরিদর্শক রেজাউল করিম রমনা থানায় এই মামলা করেন।
রবিবার সন্ধ্যায় মগবাজার ওয়্যারলেস গেটের কাছে আড়ংয়ের পাশে একটি ভবনেশক্তিশালী বিস্ফোরণে কমপক্ষে সাতজন নিহতে এবং ৬৬ জনেরও বেশি আহত হয়।
পরের দিন সোমবার পুলিশ প্রধানের নির্দেশে বিস্ফোরণ তদন্তের জন্য একটি সাত সদস্যের কমিটি গঠন করে পুলিশ। এই কমিটির নেতৃত্ব দেবেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)-এর অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার।
এছাড়া বিস্ফোরণের ঘটনা তদন্তের জন্য ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে।
৩ বছর আগে