টিআরএনবি
টেলিযোগাযোগ আইন সময়োপযোগী ও বিনিয়োগবান্ধব হবে: টিআরএনবির সেমিনারে প্রতিমন্ত্রী
নাগরিকদের কল্যাণ নিশ্চিতে সরকার সময়োপযোগী, ব্যবসা ও বিনিয়োগবান্ধব টেলিযোগাযোগ আইন প্রণয়ন করতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
বুধবার (৫ জুন) টিআরএনবি (টেলিকম অ্যান্ড টেকনোলজি রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশ) আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে এ তথ্য জানান তিনি।
‘রিফরম অব দ্য টেলিকমিউনিকেশন ল, ২০০১’ শিরোনামে এ বৈঠকে যৌথ আয়োজক ছিল অ্যামটব (অ্যাসোসিয়েসন অব মোবাইল অপারেটরস অব বাংলাদেশ)।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রস্তুত করা খসড়ায় প্রয়োজনীয় সংশোধনী এনে চূড়ান্ত আইন প্রণয়ন করা হবে বলে জানান পলক।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) পূর্ণ স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালনের প্রয়োজন আছে। একইসঙ্গে তাদেরও মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কাজ করতে হবে।’
খসড়া আইনের যেসব বিষয় ব্যবসা ও বিনিয়োগবান্ধব হবে না, সেগুলো সংশোধনের আশ্বাস দেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, ‘কোনো অংশীজন ও দেশের জনসাধারণের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, এমন যা কিছু এই খসড়া আইনে আছে, তা অপসারণ করার উদ্যোগ নেব। এক্ষেত্রে ভারত ও ভিয়েতনামের আইসিটি আইন আমরা অনুসরণ করতে পারি। দেশে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টিতে একটি সময়োপযোগী আইন করা হবে যা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সহায়ক হবে।’
তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী সেমিনারে আলোচকদের প্রস্তাব অনুযায়ী খসড়া আইনের ২টি ধারা বাদ দেওয়ার প্রস্তাব করেন। এ দুটি ধারা হচ্ছে ৭(৩) ও ২৬(ঙ)।
৭(৩) ধারায় বিটিআরসির কমিশনারদের অপসারণের ক্ষমতা মন্ত্রণালয়কে দেওয়া হয়েছে এবং ২৬(ঙ) ধারায় সোশ্যাল মিডিয়া ও অনলাইন প্লাটফর্ম পরিচালনার জন্য বিটিআরসি থেকেও লাইসেন্স নেওয়ার বাধ্যবাধকতা দেওয়া হয়েছে।
সেমিনারে ৭(৩) ধারার সমালোচনা করে বক্তারা বলেন, এ ধারার মাধ্যমে বিটিআরসির স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালন চরমভাবে ব্যাহত হবে। অন্যদিকে ২৬(ঙ) ধারা দেশে অনলাইনভিত্তিক ব্যবসা ও অন্যান্য উদ্ভাবনকে জটিলতায় ফেলবে।
একই সঙ্গে টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক পরিচালনায় গঠিত বিটিআরসির কাজ ডিজিটাল সার্ভিসের ক্ষেত্রে বিস্তৃত করা হলে বিটিআরসির স্বাভাবিক দায়িত্ব পালনেও বড় ধরনের জটিলতার সৃষ্টি হবে বলে মনে করেন বক্তারা।
এ দুটি সমালোচনাকে ইতিবাচক উল্লেখ করে দুটি ধারাই বাদ দেওয়ার ঘোষণা দেন প্রতিমন্ত্রী।
খসড়া আইন নিয়ে বিশিষ্ট অংশীজনদের সুপারিশ করা খসড়া পর্যালোচনার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে ৭ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি তৈরি করেন প্রতিমন্ত্রী। কমিটিকে আগামী ৭ দিনের মধ্যে সুপারিশ জমা দিতে বলেন। এই কমিটির সুপারিশ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনারও আশ্বাস দেন প্রতিমন্ত্রী।
সেমিনারে বিটিআরসির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘নতুন আইনের কারণে কেউ যেন কোনো সমস্যায় না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।’
বেসরকারি মোবাইল অপারেটরদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমরা চাই আপনাদের সার্ভিসটা হবে কম টাকায় সর্বোচ্চ সার্ভিস।’
আলোচনায় বক্তারা বলেন, প্রস্তাবিত টেলিযোগাযোগ আইনের খসড়ার কিছু দিক নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হয়েছে। বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য দেশে ২০০১ সালে প্রণীত একটি পৃথক আইন থাকা সত্ত্বেও নতুন আইনের খসড়ায় এ সংক্রান্ত ধারা সন্নিবেশিত করা হয়েছে যা সমস্যা তৈরি করবে। খসড়ায় সর্বোচ্চ ৩০০ কোটি টাকাসহ উচ্চ জরিমানার বিধান রয়েছে যা অনেক বেশি বলেও উল্লেখ করেন বক্তারা।
বৈঠকে খাতসংশ্লিষ্টরা বলেন, প্রশাসনিক জরিমানাই এক ধরনের শাস্তি, এর ওপরে অতিরিক্ত ক্ষতিপূরণের প্রস্তাব করা হয়েছে খসড়ায় যা ব্যবসাবান্ধব নয়। এতে এই খাতের সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর অপরাধকে জামিন অযোগ্য অপরাধ বলে বিবেচনা করা হয়েছে। অন্যদিকে সরকার বা কমিশনের কোনো পদক্ষেপের ওপর কোনো দেওয়ানী আদালতের এখতিয়ার থাকবে না বলে বলা হয়েছে। এ ধরনের বিধানকে সাংবিধানের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী উল্লেখ করেন বক্তারা।
আলোচকরা আরও বলেন, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকে নিরুৎসাহিত করে এমন কোনো ধারা আইনে থাকা উচিত নয়। সরকারের কাছে খাতসংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন একটি আইন প্রণয়নের অনুরোধ করেন তারা।
গোলটেবিল আলোচনায় দুটি মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান আমিনুল হক এবং রবির চিফ কর্পোরেট ও রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স শাহেদ আলম।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন টিআরএনবির সাধারণ সম্পাদক মাসুদুজ্জামান রবিন।
টিআরএনবি সভাপতি রাশেদ মেহেদীর সভাপতিত্বে এই গোলটেবিল আলোচনায় আরও অংশ নেন- অ্যামটব সভাপতি ও গ্রামীণ ফোনের সিইও ইয়াসির আজমান, বাংলালিংকের ভারপ্রাপ্ত সিইও তৈমুর রহমান, টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নূরুল মাবুদ চৌধুরী (অতিরিক্ত দায়িত্ব), গ্রামীণফোনের চিফ কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার হ্যান্স মার্টিন হেনরিকসন, এমটব মহাসচিব লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ জুলফিকার (অব), ই-ডটকোর কান্ট্রি ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুনিল আইজ্যাক, মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট জাকারিয়া শহীদ, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশনের (আইএসপিএবি) সভাপতি ইমদাদুল হক, সামিট কমিউনিকেশনের চিফ নেটওয়ার্ক আর্কিটেক্ট ফারুক ইমতিয়াজ, ফাইবার অ্যাট হোমের পরিচালক(কমিউনিকেশন) আব্বাস ফারুক এবং ব্রাক ইউনিভার্সিটির স্কুল অব ল’র শিক্ষক সাইমুম রেজা তালুকদার।
৬ মাস আগে
টিআরএনবির সভাপতি রাশেদ, সাধারণ সম্পাদক রবিন
দেশের টেলিযোগাযোগ ও প্রযুক্তি বিটে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন টেলিকম অ্যান্ড টেকনোলজি রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক বাংলাদেশের (টিআরএনবি) নতুন কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে সংগঠনটির বার্ষিক সাধারণ সভা ও এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
কমিটিতে দৈনিক সমকালের বিশেষ প্রতিনিধি রাশেদ মেহেদী সভাপতি ও যমুনা টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার এস এম মাসুদুজ্জামান রবিন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: শিল্পী সমিতির নির্বাচন শেষে ভোট গণনা চলছে
সাত সদস্যের কমিটিতে কোষাধ্যক্ষ পদে দৈনিক ইনকিলাবের সিনিয়র রিপোর্টার ফারুক হোসাইন এবং সাংগঠনিক সম্পাদক পদে টেকশহরের নির্বাহী সম্পাদক আল- আমীন দেওয়ান নির্বাচিত হয়েছেন।
এছাড়া কার্যনির্বাহী সদস্য হয়েছেন দৈনিক ইত্তেফাকের সিনিয়র রিপোর্টার সমীর কুমার দে, চ্যানেল আইয়ের বিশেষ প্রতিনিধি পান্থ রহমান ও বাসসের সিনিয়র রিপোর্টার মাজহারুল আনোয়ার খান শিপু।
এই কমিটি এপ্রিল ২০২২ থেকে মার্চ ২০২৪ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবে।
আরও পড়ুন: কঠোর নিরাপত্তায় চলছে শিল্পী সমিতির নির্বাচন
বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির নির্বাচন ২০ মার্চ
২ বছর আগে
গ্রামীণ ফোনের কল ড্রপ সবচেয়ে বেশি: বিটিআরসি চেয়ারম্যান
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেছেন, ‘কল ড্রপ নিয়ে জিপিকে (গ্রামীনফোন) দোষতেই হবে । কারণ জিপির কল ড্রপ বেশি । সবচেয়ে বেশি কল ড্রপ গ্রামীনফোনের ছিল। অতি সম্প্রতি গ্রামীন ফোনের কল ড্রপ কিছুটা কমেছে।’
বৃহস্পতিবার বিটিআরসির প্রধান কার্যালয়ে টেলিকম রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক বাংলাদেশের ( টিআরএনবি ) সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে বিটিআরসির চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘কল ড্রপ নিয়ে আমিও ভোগান্তিতে আছি। আরেকটি আমার বড় ভোগান্তির কারণ হচ্ছে মানুষের ভোগান্তি। ১৭ কোটি মানুষের সমস্ত দায় আমার ওপরেই। কারণ তাদেরকে কোয়ালিটি সার্ভিস এনসিওর করার দায় আমার ওপর।’
শ্যাম সুন্দর সিকদার জানান, দুর্বল নেটওয়ার্ক এবং কল ড্রপের সমস্যা কমাতে বিটিআরসি ৩০০টি উপজেলায় টেস্ট ড্রাইভ পরিচালনা করছে।
আর পড়ুন: গ্রামীণফোনের ওপর বিটিআরসি’র নতুন বিধিনিষেধ আরোপ
তিনি বলেন, ‘কল ড্রপ নিয়ে আমাদের প্রায় ২২৭টি উপজেলায় আমাদের টেস্ট ড্রাইভ হয়েছে । তাতে ১২৮০০ কিলোমিটার কাভার করেছে । রংপুরের টেস্ট ড্রাইভ রিপোর্ট অনুযায়ী, সব টেলিকম অপারেটরের কল ড্রপের সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছেন মোবাইল ব্যবহারকারীরা।’
চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা ড্রাইভের সাথে নিয়মিতভাবে চিঠি এবং নির্দেশনা পাঠিয়ে টেলিকম অপারেটরদের ওপর আমাদের চাপ অব্যাহত রেখেছি।’
ভাইস চেয়ারম্যান ও কমিশনারের নেতৃত্বে দুটি হাই-প্রোফাইল কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান বিটিআরসি প্রধান। তিনি বলেন, ‘অপারেটর অফিস এবং ক্ষেত্র থেকে ডেটা সংগ্রহ করা হচ্ছে এবং তাদের নেটওয়ার্ক পরিষেবার অবস্থা সম্পর্কে তাদের অবহিত করা হচ্ছে। কারণ ডাটা ফরওয়ার্ডিংয়েও সমস্যা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘গত ৮ মার্চ আমরা অপারেটরদের কাছে স্পেকটাম নিলামে বিক্রি করেছিলাম। আবার ২.৩, ২.৬ ও ৩.৫ এই তিনটি ম্যাগাহার্টস অকশন করবো আগামী বছর মার্চ মাসে । এ বছরই ডিসেম্বর মাসেই অকশন দেয়ার প্ল্যান ছিল। কিন্তু অপারেটরদের অনুরোধে সেটি পিছানো হয়েছে।’
মতবিনিময় সভায় টিআরএনবি’র সভাপতি রাশেদ মেহেদী ও সাধারণ সম্পাদক সমীর কুমার দের নেতৃত্বে টিআরএনবি’র সদস্যরা এবং ও বিটিআরসি’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্হিত ছিলেন ।
আরও পড়ুন: বিটিআরসিকে আরও ১ হাজার কোটি টাকা দিচ্ছে গ্রামীণফোন
বিটিআরসিকে আরও ১ হাজার কোটি টাকা দিল গ্রামীণফোন
৩ বছর আগে
ডিসেম্বরের মধ্যে দেশে ফাইভ-জি চালু হবে: মোস্তফা জব্বার
চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই দেশে রাষ্ট্রায়ত্ব মোবাইল অপারেটর টেলিটকের মাধ্যমে ফাইভ-জি প্রযুক্তি চালু হবে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
ফাইভ-জি প্রযুক্তির সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ‘ফাইভ জি: ইকোসিস্টেম ইন বাংলাদেশ এন্ড আপকামিং টেকনোলজিস’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে মন্ত্রী এ কথা জানান।
টেলিকম রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ (টিআরএনবি) ওয়েবিনারটি আয়োজন করে।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘ফাইভ-জি প্রযুক্তি চালুর প্রক্রিয়া সরকারের একটি পরিকল্পিত প্রচেষ্টা। ডিসেম্বরের মধ্যেই টেলিটকের মাধ্যমে ফাইভ-জি প্রযুক্তি চালু হবে। পরবর্তীতে তা বিস্তৃত হবে। ২০২২ সালের মধ্যে অন্য অপারেটরদেরও ফাইভ-জি নিয়ে আসতে দেখবো।’
জনগণের সম্পৃক্ততা না থাকলে প্রযুক্তির সফলতা পাওয়া যাবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই প্রযুক্তি সম্পর্কে জনগণকে উদ্বুদ্ধ ও সম্পৃক্ত করতে হবে। এক্ষেত্রে গণমাধ্যম একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
মন্ত্রী বলেন, ‘চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রযুক্তি হবে ফাইভ-জি। আমরা এরই মধ্যে হুয়াওয়ে ও রবি’র মাধ্যমে ফাইভ-জি টেস্ট করেছি, যা আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছে। এর মাধ্যমেই আমরা বোঝাতে পেরেছি ফাইভ-জি প্রযুক্তি নিয়ে আমরা একচুলও পিছিয়ে থাকব না।’
আরও পড়ুন: বিনা ও বিনা’র বিজ্ঞানীর আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেন, ‘এ বছরের মধ্যেই ঢাকা শহরে ফাইভ-জি চালুর বিষয়টি চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। এ লক্ষ্যে রাষ্ট্রায়ত্ব মোবাইল অপারেটর টেলিটক প্রস্তুতি নেয়া শুরু করেছে। ব্রডব্যান্ড নীতিমালা তৈরির কাজ চলমান আছে। এর আগেই আমরা সব স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বসবো এবং তাদের মতামত নেয়া হবে।’
বিটিআরসি’র কমিশনার ও ফাইভ-জি গাইডলাইন কমিটির প্রধান এ কে এম শহিদুজ্জামান বলেন, ‘ফাইভ-জি ইস্যুতে বিটিআরসি এরই মধ্যে অপারেটর, টেলিকম খাত সংশ্লিষ্ট এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করেছে। মোবাইল অপারেটরগুলোর জন্য একটি কমন গাইডলাইন তৈরিতে কাজ চলছে, যা ফাইভ-জি বিস্তারে ভূমিকা রাখবে। বিটিআরসি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অনুকরণে তুলনামূলক কম দামে তরঙ্গ বরাদ্দে কাজ করছে এবং এ বিষয়ে যে কোনো সিদ্ধান্ত বিদ্যমান অপারেটরগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেই চূড়ান্ত করা হবে।’
রবির ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (অ্যাক্টিং সিইও) এম রিয়াজ রশিদ বলেন, ‘ফাইভ-জি থেকে চলেছে পরবর্তী টেলিকম সেবার মান নির্ধারক। এক্ষেত্রে শুধু বিটিআরসি কিংবা অপারেটরগুলো এককভাবে সুফল বয়ে আনতে পারবে না। সকলের সমন্বিত চেষ্টার প্রয়োজন আছে। কারণ ফাইভ-জির সুফল পেতে প্রযুক্তি, স্পেকট্রামের পাশাপাশি অবকাঠামো উন্নয়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইয়াসির আজমান বলেন, ‘টিআরএনবি’র এ আয়োজন খুবই উৎসাহদায়ক এবং সময়োপযোগী। টেলিকম শিল্প সংশ্লিষ্ট সকলে মিলে ফাইভ-জি ইকোসিস্টেম উন্নয়নে কাজ করছি। ফাইভ-জির সুফল পেতে প্রযুক্তি, ডিভাইস, ফাইবার, টাওয়ার অবকাঠামো ও স্পেকট্রাম একে অপরের পরিপূরক। ফাইভ-জি নিশ্চিতে কতটা সুলভে স্পেকট্রাম বরাদ্দ করা সম্ভব হবে, সে বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে।’
এমটবের চেয়ারম্যান ও বাংলালিংকের প্রধান নির্বাহী এরিক কর্মকর্তা (সিইও) এরিক অস বলেন, ‘টিআরএনবি ফাইভ-জি প্রযুক্তি বিকাশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিষ্ঠান। ফাইভ-জি প্রযুক্তিকে প্রয়োগের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা প্রয়োজন। তাই, ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতার কথা মাথায় রেখে স্পেকট্রাম নীতি সঠিকভাবে পর্যালোচনা করতে হবে।’
টেলিটকের এমডি মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, ‘আমরা এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে ফাইভ-জি চালু করতে চেষ্টা করছি। দেশে ফাইভ-জি নিশ্চিতের জন্য আমাদের ডিভাইস ও হ্যান্ডসেটের সক্ষমতা এবং উচ্চমানের ফাইবার প্রয়োজন। এছাড়াও, ফোর জি’র তুলনায় ফাইভ জি’র স্পেকট্রাম সক্ষমতার হার বেশি। যেখানেই ফাইভ-জি সংযোগের প্রয়োজন হবে, আমরা সেখানে পৌঁছে যাব এবং স্মুথ নেটওয়ার্ক স্থাপন করব।’
পড়ুন: অপোর ‘গেজ দ্য স্টোরি’: অসমাপ্ত গল্প শেষ করতে পারলে পুরস্কার
ম্যাক্রো ফটোগ্রাফি ও ট্রিপল ক্যামেরার বাজেট ফোন এ১৬
হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের সিওও তাও গুয়াংয়াও বলেন, ‘ফোর জি জীবন বদলে দিয়েছে, ফাইভ-জি সমাজ বদলে দিবে। ফোর জি ও এর আগের নেটওয়ার্কগুলো যা করতে পারেনি, ফাইভ-জি সেগুলো করার ক্ষমতা রাখে। তাছাড়া, সার্ভিস অভিজ্ঞতা উন্নত করতে এবং শিল্পের ডিজিটাল ও ইন্টেলিজেন্ট রূপান্তরের জন্য ফাইভ জি অপরিহার্য।’
এলএম এরিকসন (বাংলাদেশ)-এর কান্ট্রি ম্যানেজার আবদুস সালাম বলেন, ‘ফাইভ-জি’র জন্য মূলত ১৮’শ থেকে ২১’শ ফ্রিকোয়েন্সি প্রয়োজন। আমাদের ডাইন্যামিক স্পেকট্রাম শেয়ারিং’র জন্য যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। আমরা বিআরটিসি’র লাইসেন্সের জন্য অপেক্ষা করছি এবং ফাইভ-জি সংযোগের জন্য প্রয়োজনীয় সকল নেটওয়ার্ক ও প্রযুক্তি বাস্তবায়নে উন্মুখ হয়ে রয়েছি।’
কী-নোট স্পিকার ও টিআরএনবির সাধারণ সম্পাদক সমীর কুমার দে বলেন, ‘২০২৫ সালের মধ্যে প্রতিটি অ্যাপ্লিকেশন ফাইভ-জি’র (ওয়্যারলেস রোবট, গাড়ি, পরিবহন ও স্মার্ট ম্যানুফ্যাকচারিং) উপর নির্ভরশীল থাকবে। ২০২৫ সালের মধ্যে আমাদের জীবনযাত্রা ফাইভি-জি কেন্দ্রিক হয়ে উঠবে। তাই, ব্যবহারকারীদের সেরা অভিজ্ঞতা দিতে ও সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দেশের আইসিটি খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।’
৩ বছর আগে
ক্যাশলেস সোসাইটির দিকে যাচ্ছে দেশ: টিআরএনবি ওয়েবিনারে বক্তারা
মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের (এমএফএস) মাধ্যমে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি সরকারের ভাতা ও আর্থিক সহায়তা বিতরণের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাদিহিতা নিশ্চিত করেছে। পাশাপাশি ডিজিটালাইজেশনের কারণে দেশ ক্যাশলেস সোসাইটির দিকে যাচ্ছে বলে মনে করছেন সরকারের নীতিনির্ধারক ও সংশ্লিষ্ট খাতের বিশেষজ্ঞরা।
শনিবার টেলিকম রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশ (টিআরএনবি) আয়োজিত ‘ভাতা বিতরণে মোবাইল প্রযুক্তি: স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার নিশ্চয়তা’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে এমন অভিমত জানান আলোচকেরা।
আরও পড়ুনঃ ডিজিটাল বাংলাদেশ মানে দেশের সার্বিক উন্নয়ন: মোস্তফা জব্বার
আলোচনায় অংশ নেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শেখ রফিকুল ইসলাম, প্রাথমিক শিক্ষা উপবৃত্তি প্রদান প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ইউসুফ আলী, ‘নগদ’-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক, এমটব-এর সাবেক মহাসচিব টি আই এম নুরুল কবির ও বেসিস-এর সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবির।
সংগঠনের সভাপতি রাশেদ মেহেদীর সঞ্চালনায় সরকারি ভাতা বিতরণে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের ভূমিকা নিয়ে একটি প্রেজেন্টেশন দেন টিআরএনবির সাধারণ সম্পাদক সমীর কুমার দে।
আরও পড়ুনঃ বিটিআরসি ভবনের নির্মাণ উদ্বোধন করলেন মোস্তফা জব্বার
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘টাকাকে আমরা আর কাগজের মুদ্রায় দেখতে চাই না। সেক্ষেত্রে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে প্রতিটি মানুষের কাছে সেবা পৌঁছে দেওয়ার কাজ চলছে। প্রচলিত ব্যাংকগুলোর বিধিবিধানগুলোও পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। তারাও এখন পুরোনো পদ্ধতি বাদ দিয়ে অ্যাপের মাধ্যমে লেনদেন করছে এবং উৎসাহিত করছে।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক যদি এখন এমএফএস অপারেটরগুলোর মধ্যে আন্তলেনদেন বা ইন্টারঅপারেবিলিটির ব্যবস্থা করে তাহলে মানুষের জীবন আরও সহজ হবে এবং এমএফএস সেবা গ্রহণযোগ্যতা পাবে সাধারণ মানুষের কাছে।
আরও পড়ুনঃ ‘বিবেকের আয়না’ নিয়ে বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরছে ‘নগদ’
মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে এখন পর্যন্ত দেশের এমন কেউ নেই যে ডিজিটাল সেবার উপকার পাননি। এখন চাইলেই মানুষ যেকোনো প্রান্ত থেকে যেকোনো কারও সাথে যুক্ত হতে পারছেন। করোনাকালে দেশের দুর্গম অঞ্চলে সরকার নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করেছে। এখন সরকারি যেসব ভাতা, সবই স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় পৌঁছে যাচ্ছে ভাতাভোগীর হাতে। এ ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাদিহিতা নিশ্চিত করতে কাজ করছে এমএফএস অপারেটরগুলো।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে আমাদের প্রতি নির্দেশনা ছিল, আমরা যেন নির্বিঘ্নে সমাজিক নিরাপত্তা ভাতা দরিদ্র মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারি। তার জন্য আমরা মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মতো প্রযুক্তি গ্রহণ করি, যাতে ঘরে বসেই মানুষ তাদের ভাতা পেয়ে যায়। কাজটি সহজ করে দেওয়ার জন্য ‘নগদ’-কে ধন্যবাদ জানাই।
আরও পড়ুনঃ প্রতি সেকেন্ডে ‘নগদ’ এ যুক্ত হচ্ছে তিনজন গ্রাহক
‘নগদ’-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক বলেন, আর্থিক খাতে ডিজিটালাইজেশন না করা গেলে ডিজিটাল বাংলাদেশের সামগ্রিক লক্ষ্য অর্জিত হবে না এবং প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষকে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির আওতায় না আনা গেলেও লক্ষ্য পূরণ অসম্ভব হবে। এ বিষয়গুলো মাথায় রেখেই দুই বছর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে ‘নগদ’ যাত্রা শুরু করে।
“আজ দুই বছর পর এসে অন্তত এটুকু বলতে পারি, আমাদের যে লক্ষ্য তার খুব কাছাকাছি পৌঁছানো গেছে। ‘নগদ’ একটি সরকারি সেবা হওয়ায় অন্য আরেকটি সরকারি সংস্থাও ‘নগদ’-এর ওপর আস্থা রাখছে এবং সহজেই তাদের ভাতা, সহায়তা ও অনুদান বিতরণ করতে পারছে। একই সঙ্গে প্রযুক্তিগতভাবেও আমরা এতটাই নিজেদের তৈরি করেছি যে, মোবাইল ফোনে আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে পৃথিবীর যেকোনো সেরা কোম্পানির সঙ্গেও ‘নগদ’-এর তুলনা হতে পারে,” যোগ করেন তানভীর।
‘নগদ’-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, এমএফএস বিশেষ করে ‘নগদ’-এর কারণেই সরকারি ভাতা ব্যবস্থাপনায় বড় পরিবর্তন এসেছে এবং তালিকায় থাকা ভুয়া গ্রাহকদের বাদ দেওয়া সম্ভব হয়েছে। আর সে কারণে সরকারের বরাদ্দ থেকে ছাড় করা টাকাও আবার সরকারকে ফেরত দেওয়া সম্ভব হয়েছে।
এমটব-এর সাবেক মহাসচিব টি আই এম নুরুল কবির বলেন, ‘আমাদের জার্নি হচ্ছে ক্যাশলেস সোসাইটির দিকে। সরকারের কৌশলগত জায়গাগুলোয় সবাই একসাথে কাজ করছে। প্রযুক্তি ব্যবহারে পিছিয়ে পড়া মানুষগুলোকে প্রযুক্তির ধারায় নিয়ে আসা একটি সফলতা। তিনি বলেন, এক সময় পিতলের একটি টোকেন নিয়ে আমরা ব্যাংকে বসে থাকতাম। সরকারি অফিস থেকে টাকা বিতরণ করা হতো। এখন মোবাইলের মাধ্যমে টাকা ভাতাভোগীর হাতে খুব সহজে পৌঁছে যাচ্ছে। বাংলাদেশ অনেকখানি এগিয়ে গেছে। এর পেছনে দূরদর্শী চিন্তা অন্যতম কারণ। আর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই দূরদর্শী চিন্তার মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন। সামনে সব ধরনের লেনদেন ডিজিটাল হয়ে যাবে। তখন আরও বেশি মানুষকে আর্থিকভাবে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে।’
বেসিস সভাপতি আলমাস কবির বলেন, ২০০৮ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণার একটি বড় সুফল হলো এমএফএস। তিনি বলেন, এমএফএস এখন আর্থিক অন্তর্ভুক্তির জন্য সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখছে। ডাক বিভাগের অনেক বড় নেটওয়ার্ক আছে, সেটি কাজে লাগিয়ে ‘নগদ’-কে মানুষের কাছে ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব। এখন দেশ ডিজিটালাইজেশনের দিকে যাচ্ছে। সামনে ক্যাশলেস সোসাইটি হতে যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখবে এমএফএস। তখন যেকোনো ধরনের পেমেন্ট থেকে শুরু করে যেকোনো আর্থিক লেনদেন হবে এমএফএস দিয়ে। সামনে এই সেবাকে তরান্বিত করতে ইন্টারঅপারেবিলিটি প্রয়োজন। তাহলেই মানুষের কাছে খুব সহজে সেবা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে।
আলোচনার সূত্রপাত করে সমীর কুমার দে বলেন, আগে যেখানে মোবাইলের মাধ্যমে ভাতা বিতরণে সরকারের হাজারে ২২ টাকা করে খরচ হতো, সেটি এখন ৭ টাকায় নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
৩ বছর আগে