মো. শাহিন হাওলাদার
কিশোরীকে বিয়ে করা সেই চেয়ারম্যানের বরখাস্তের আদেশ হাইকোর্টে স্থগিত
সালিশে প্রভাবিত করে অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোরীকে (১৪) বিয়ে করায় পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার ৬ নম্বর কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহিন হাওলাদারকে (৬০) সাময়িক বরখাস্তের আদেশ এক মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।
ওই চেয়ারম্যানের করা এক আবেদনের প্রেক্ষিতে বুধবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের বিশেষ হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে শাহীন হাওলাদারের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ ও অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
আরও পড়ুন: সালিশে গিয়ে কিশোরীকে বিয়ে: সেই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এবার মামলা
গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, একই ইউনিয়নে এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল ওই কিশোরীর। গত ২৪ জুন রাতে তারা দুজন পালিয়ে যায়। বিষয়টি কিশোরীর বাবা কনকদিয়ার ইউপি চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদারকে জানান। এরপর চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে দেয়ার কথা বলে ২৫ জুন কনকদিয়া ইউপি কার্যালয়ে ছেলে ও মেয়ের দুই পরিবারকে যেতে বলেন।
সেই অনুযায়ী ২৫ জুন সকাল ৯টার দিকে দুই পরিবারের সদস্যরা ইউপি কার্যালয়ে যান। সেখানে মেয়েটিকে দেখে পছন্দ হয়ে যায় চেয়ারম্যানের। তিনি মেয়েটিকে বিয়ে করার আগ্রহ দেখান। পরে ওইদিনই দুপর ১টায় স্থানীয় কাজি মো. আবু সাদেককে বাড়িতে ডেকে পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে ওই কিশোরীকে বিয়ে করেন চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার। বিয়ের পর তা জানাজানি হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়। পরের দিন ২৬ জুন ওুই কিশোরী একই কাজীর মাধ্যমে চেয়ারম্যানকে তালক দেন।
আরও পড়ুন: প্রেমের সম্পর্ক: আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে এলেন মার্কিন নারী
এদিকে গত ২৮ চেয়ারম্যান মো. শাহিন হাওলাদারকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার বিভাগ।
এ বিষয়ে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার ৬ নম্বর কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহিন হাওলাদার সালিশ করতে গিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অপ্রাপ্ত বয়স্ক (১৪ বছর ২ মাস ১৪ দিন) কিশোরীকে বিয়ে করেন। এ ঘটনায় তিনি স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর ৩৪ (৪) (ঘ) ধারার অপরাধ সংঘটিত করায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া কেন তাকে চূড়ান্তভাবে অপসারণ করা হবে না পত্রপ্রাপ্তির ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তার জবাব সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠাতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলেও সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
আরও পড়ুন: প্রেমের ফাঁদে ফেলে প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণ
পরে স্থানীয় সরকার বিভাগের এই বরখাস্তের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদার। রিট আবেদনে বলা হয়, মেয়েটি প্রাপ্তবয়স্ক এবং তার আগের স্বামীকে তালাক দেয়ার পরই তাকে বিয়ে করা হয়। এ সক্রান্ত কাগজপত্রও আবেদনের সাথে দাখিল করা হয়। রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট ওই বরখাস্তের আদেশ স্থগিত করেন।
উল্লেখ্য, গত ২১ জুন অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছন শাহিন হাওলাদার। তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তার প্রথম স্ত্রী রয়েছে। সেই সংসারে এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।
৩ বছর আগে