স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘বিবেক’
৩ শতাধিক মানুষকে সম্মানের সঙ্গে শেষ বিদায় দিয়েছে ‘বিবেক’
করোনায় মারা যাওয়া তিন শতাধিক মানুষকে সম্মানের সঙ্গে শেষ বিদায় দিয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘বিবেক’। বুধবার দুপুর পর্যন্ত গত ১৬ মাসে কুমিল্লায় ৩০৫ জনের লাশ দাফন করেছে মানবিক এ সংগঠন।
সংগঠন সূত্র জানায়, গত বছর ৩০ মার্চ প্রতিষ্ঠা লাভ করে ‘বিবেক’। শুরুতে করোনা সচেতনতা, মাস্ক বিতরণ, করোনা রোগীদের বাসা বাড়িতে খাদ্য, ওষুধ ও ফলমূল পৌঁছে দেন সংগঠনের সদস্যরা। ওই বছর ১৮ মে করোনায় মৃত এক ব্যাংক কর্মকর্তার জানাযা ও দাফন করে বিবেক সংগঠন। ১১ সদস্যের টিম এ পর্যন্ত ৩০৫ জনের লাশ দাফন করেছে।
আরও পড়ুন: করোনায় দাফন: কঠোর লকডাউনেও সক্রিয় কোয়ান্টামের স্বেচ্ছাসেবীরা
নগরীর বাসিন্দা আবু রায়হান বলেন, বিবেক এমন একটি সময় দাফন কার্যক্রম শুরু করেছে, যখন করোনায় মারা গেছে শুনলে স্বজনরা পালিয়ে যেতো। বাবার জানাযায় ছেলে অংশ নেয়নি। এমন সময় গেছে ‘বিবেক’ এর সদস্যরা ছাড়া কেউ গোসল, জানাযা ও দাফনে অংশ নেননি। তারা দিনরাত এ সেবা কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। টিমের ৩০০তম দাফন কার্যক্রম ছিল আমার একজন বড় ভাইয়ের। তাদের আন্তরিকতায় আমরা মুগ্ধ।
এ বিষয়ে ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ আরবি ও ইসলাম শিক্ষা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. মোশাররাফ হোসাইন বলেন, আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত নিশ্চয় রাসুলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি কোনো মৃত মুসলিম ব্যক্তির জানাযায় ঈমান সহকারে ও ছাওয়াবের আশায় শরিক হয় এবং জানাযা ও দাফন পর্যন্ত থাকে, ওই ব্যক্তি দুই কিরাত নেকি পাবে। আর প্রতি কিরাত হচ্ছে ওহুদ পাহাড়ের সমান। আর জানাযা পড়ে দাফনের পূর্বে ফিরে যাবে সে এক কিরাত নেকি নিয়ে ফিরবে। মানবিক সংগঠন ‘বিবেক’ জানাযা ও দাফন কার্যক্রমে যে উদাহরণ তৈরি করেছে তা আল্লাহ যথাযথ বিনিময় প্রদান করবেন।
সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ইউসুফ মোল্লা টিপু জানান, মহামারিতে মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করছি। যে কাজটি মরহুমের স্বজন সন্তানরা করতো, আমরাই তাদের স্বজন আমরাই তাদের সন্তান হয়ে করছি।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে রাজু হত্যার আসামি গ্রেপ্তার, মুসলিম রীতিতে দাফনের আবেদন স্ত্রীর
তিনি জানান, যাদেরকে শেষ বিদায় দেয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে মুসলিম, হিন্দু ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী মানুষ রয়েছেন। দাফন কার্যক্রমের পাশাপাশি দরিদ্র পরিবারের রোগীর জন্য বিনামূল্যে অ্যাম্বুলেন্স সেবা, অক্সিজেন প্রদান ও ওষুধ দেয়া হচ্ছে। এছাড়াও বেওয়ারিশ বা খুব দরিদ্র পরিবার হলে কাফনের কাপড়সহ দাফনের যাবতীয় খরচ সংগঠনই দিয়ে থাকে।