বর্জ্য ব্যবস্থাপনা
টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় দৃষ্টান্ত স্থাপন সিলেটের
বাংলাদেশে টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দ্রুত নগরায়ণ, শিল্পায়ন এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে দৈনন্দিন বাড়তি বর্জ্যের পরিমাণ চ্যালেঞ্জকে আরও বাড়িয়ে তুলছে।
নানামুখী চ্যালেঞ্জের মধ্যে পরিবেশ দূষণ, জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি ও অপরিকল্পিত বর্জ্য ডাম্পিং রোধে কার্যকর, টেকসই ও বিজ্ঞানসম্মত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এখন জরুরি হয়ে পড়েছে। উন্নত দেশগুলো যখন এই বর্জ্যকে সম্পদে রুপান্তর করছে—আমরা তখন সঠিক ব্যবস্থাপনা করতে হিমশিম খাচ্ছি।
এশিয়া ইউরোপ ফাউন্ডেশনের এক গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে প্রতি ১৫ বছরে এর শহুরে বর্জ্যের পরিমাণ দ্বিগুন হচ্ছে। বাংলাদেশে ৯০’র দশকে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে ৬ টন মিউনিসিপ্যাল সলিড ওয়েস্ট তৈরি হতো, যা ২০১৯ সালের রিপোর্ট অনুসারে ২৫ হাজার টন ছাড়িয়ে গেছে। সিটি করপোরেশন এবং পৌরসভাগুলোর জন্য এই বর্জ্য টেকসই উপায়ে ব্যবস্থাপনা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই যখন সামগ্রিক চিত্র, তখন টেকসই উপায়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অনন্য এক উদাহরণ তৈরি করেছে সিলেট সিটি করপোরেশন। দেশের প্রথম এবং একমাত্র সিটি করপোরেশন হিসেবে বর্জ্যের টেকসই ব্যবস্থাপনায় কর্তৃপক্ষ লালমাটিয়া ডাম্পিং গ্রাউন্ডে ১৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে স্থাপন করেছে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির একটি ম্যাটেরিয়াল রিকভারি ফ্যাসিলিটি। এই ফ্যাসিলিটি স্থাপনে এবং বর্জ্যের টেকসই সমাধানে সিলেট সিটি করপোরেশন পাশে পেয়েছে লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশকে। একটি প্লাস্টিক ও পলিথিন মুক্ত শহর সিলেটবাসীকে উপহার দেওয়ার লক্ষ্যে একসঙ্গে কাজ করছে তারা।
সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩৭৫ টন বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য তৈরি হয়, যার একমাত্র ঠিকানা লালমাটিয়া ডাম্পিং গ্রাউন্ড। বাসা-বাড়ি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের এই বর্জ্যগুলো নির্দিষ্ট স্থান থেকে সংগ্রহ করেন সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা। সংগ্রহের পর কিছু রিসাইক্লেবল পণ্য তারা আলাদা করেন এবং বিক্রি করেন। বাকী সকল অপচনশীল বর্জ্য নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে নিয়ে আসা হয় এই ডাম্পিং গ্রাউন্ডে যার আয়তন প্রায় ৮ একর যেখানে ডাম্প করা রয়েছে আনুমানিক ৮ লাখ টন বর্জ্য। এই বর্জ্যের টেকসই সমাধানের জন্য দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করছিল সিলেট সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা।
সিলেট সিটি করপোরেশন এর প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ একলীম আবদীন এর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অতীতে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কার্যকরী কোনো সমাধান আসেনি।
বাংলাদেশে একমাত্র লাফার্জহোলসিম’র ছাতক প্ল্যান্টে আমদানি বিকল্প পণ্য ক্লিংকার উৎপাদন হয়। ক্লিংকার তৈরির সুবিধা থাকায় এই প্ল্যান্টে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সুযোগ রয়েছে। এর সুবিধার নাম জিওসাইকেল।
বাংলাদেশে জিওসাইকেলের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক লতিফুর রহমানের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে সিলেট সিটি করপোরেশনের সঙ্গে টেকসই উপায়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে একটি সমঝোতা স্মারক সই করা হয়। এরপর শুরু হয় সিলেটে লালমাটিয়া ডাম্পিং গ্রাউন্ডে ম্যাটেরিয়াল রিকভারি ফ্যাসিলিটি বসানোর কাজ। ফ্যাসিলিটি বসানোর পর তা উদ্বোধন করা হয় ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে এবং এখান থেকে বর্জ্য নেওয়া শুরু হয় ২০২৪ সালের মে মাসের ১৪ তারিখে।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে নিয়ন্ত্রণের বাইরে মশার উপদ্রব, নগরজুড়ে উদ্বেগ
লতিফুর রহমান আরও জানান, প্রতিদিন গড়ে ৬০ টনেরও বেশি বর্জ্য এই ডাম্পিং গ্রাউন্ড থেকে ছাতকে লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের সিমেন্ট প্ল্যান্টে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এবং টেকসই উপায়ে ব্যবস্থাপনা করা হচ্ছে। আগামীতে এর পরিমাণ বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে কোম্পানিটির। এই ডাম্পিং গ্রাউন্ড থেকে বিভিন্ন ধরনের অপচনশীল দ্রব্য বিশেষ করে প্লাস্টিক ও পলিথিন পৃথক করা হয় এই ম্যাটেরিয়াল রিকভারি ফ্যাসিলিটির মাধ্যমে। তারপর কোম্পানির নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় তা নিয়ে যাওয়া হয় সিমেন্ট প্ল্যান্টে।
এই ডাম্পিং গ্রাউন্ডের সকল বর্জ্য টেকসই উপায়ে ব্যবস্থাপনা করতে সাত থেকে আট বছর সময় লাগতে পারে বলে জানান তিনি।
সিমেন্ট প্ল্যান্টে এই বর্জ্যগুলো নিয়ে তা সিমেন্ট কিল্নে প্রেরণের উপযোগী করে তোলা হয়। এরপর তা বিশেষ একটি ফিডারের মাধ্যমে সিমেন্ট কিলনে পাঠানো হয়। এই কিলনে ক্লিংকার তৈরির জন্য প্রয়োজন ১৫০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। এই তাপমাত্রায় সমস্ত বর্জ্য কো-প্রসেস হয়ে যায় যার কোনো অবশিষ্ট পরিবেশে ফেরত আসে না। বর্তমানে জিওসাইকেল প্রযুক্তির মাধ্যমে বছরে প্রায় এক লাখ টন বর্জ্য টেকসই উপায়ে ব্যবস্থাপনা করা সম্ভব। এর সক্ষমতা বাড়াতে এরই মধ্যে পরিকল্পনা নিয়েছে কোম্পানিটি।
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান বলেন, ‘লাফার্জহোলসিম জিওসাইকেল প্রযুক্তির মাধ্যমে যে সেবা দিচ্ছে তা প্রশংসার দাবিদার। সিলেট সিটি করপোরেশনের বর্জ্যবিহীন একটি সবুজ নগরী উপহার দেওয়ার যে লক্ষ্য রয়েছে, তা অর্জনে লাফার্জহোলসিম গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।’
লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, ‘লাফার্জহোলসিম সবসময়ই টেকসই উন্নয়নে বিশ্বাস করে। কোম্পানির টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সমাধান জিওসাইকেল পরিবেশ অধিদপ্তর অনুমোদিত এধরনের একমাত্র পদ্ধতি। এর মাধ্যমে আমরা দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সুবিধা দিয়ে আসছি। আমাদের লক্ষ্য ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে একটি বর্জ্যবিহীন দেশ উপহার দেওয়া।’
একই পদ্ধতিতে দেশের অন্যান্য সিটি করপোরেশনগুলোকে সহযোগিতা করতেও কোম্পানিটি আগ্রহী বলে জানান তিনি।
সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের একটি প্রতিনিধি দল সিলেট সিটি করপোরেশনের ম্যাটেরিয়াল রিকভারি ফ্যাসিলিটি ও ছাতকে লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের সিমেন্ট প্ল্যান্টে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তি ঘুরে দেখে সন্তুষ্টি প্রকাশ করার পাশাপাশি একসঙ্গে কাজ করার ব্যাপারে আশা প্রকাশ করেন।
সিলেট সিটি করপোরেশনে এই ম্যাটেরিয়াল রিকভারি ফ্যাসিলিটি স্থাপনে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন তৎকালীন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। তিনি জানান, ‘অতীতে অনেক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করলেও সফলতা আসেনি। লাফার্জহোলসিমের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতিটি বাস্তবসম্মত এবং এর মাধ্যমে উভয়েই লাভবান হচ্ছে। সিলেট সিটি করপোরেশনের এই উদ্যোগ দেশের অন্যান্য সিটি করপোরেশনগুলোর জন্য উদাহরণ হতে পারে।’
এই প্ল্যান্টের কার্যক্রম সচল রাখতে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মনোযোগ আকর্ষণও করেন তিনি।
এশিয়া ইউরোপ ফাউন্ডেশনের এক গবেষণা অনুযায়ী বাংলাদেশে যে পরিমাণ বর্জ্য প্রতিদিন তৈরি হচ্ছে— তার শতকরা ৫৫ ভাগ যেখানে সেখানে ফেলা হয়। আর যতটুকু সংগ্রহ করা হয়, তার বড় একটা অংশ মাটিতে স্তুপ করে রাখা হয় কিংবা পুড়িয়ে ফেলা হয়—যা পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি। এর নেতিবাচক ফলাফল আমরা ভোগ করছি প্রতিদিন। যার অন্যতম উদাহরণ হতে পারে জলাবদ্ধতা। শহরগুলোর খাল, ডোবা এবং ড্রেন দিয়ে পানি প্রবাহিত হতে পারে না, অল্প বৃষ্টিতেই তলিয়ে যায় রাস্তাঘাট।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের অন্যতম উপায় হলো—সচেতনতা বৃদ্ধি এবং টেকসই উপায়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা।
ইউএনএফপিএ'র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে ঢাকা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম। এই অবস্থার জন্য প্রধান কারণ হলো দুর্বল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ না নিলে এই সমস্যাটি বাড়তে থাকবে।
আরও পড়ুন: মানহীন হাসপাতাল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, ঝুঁকিতে দেশ
২৬ দিন আগে
মানহীন হাসপাতাল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, ঝুঁকিতে দেশ
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়েছেন যে, বাংলাদেশের বর্তমান স্বাস্থ্যসেবার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নীতি বাস্তবায়ন থেকে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। যেখানে শহরাঞ্চলে ৫৫ শতাংশ কঠিন বর্জ্য থাকছে উন্মুক্ত অবস্থায়। যা দূষণ, জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি এবং জলবায়ু পরিবর্তনকে আরও বাড়িয়ে তুলছে।
প্রয়োজন মতো আইন প্রণয়নের মারাত্মক পরিণতি এবং একটি সমন্বিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা—এমনকি বাংলাদেশের এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি দেখভালেরও একটি নিবেদিত কর্তৃপক্ষ নেই।
দেশের মেডিকেল বর্জ্য উত্পাদন প্রতি বছর আনুমানিক ৩ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সামগ্রিক বর্জ্য উত্পাদন প্রতিদিন প্রায় ২৫ হাজার টনে দাঁড়িয়েছে। শুধু ঢাকায় দৈনিক প্রায় সাড়ে ছয় হাজার টন বর্জ্য উৎপন্ন হয়, যা ২০৩২ সাল নাগাদ বেড়ে সাড়ে ৮ হাজার টনে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের মতে, দক্ষিণ এশিয়ায় প্রতিদিন ১৫ লাখ টনেরও বেশি কঠিন বর্জ্য উৎপন্ন হয়। এর মধ্যে মাত্র ৪০ শতাংশ সংগ্রহ করা হয় এবং ১০ শতাংশেরও কম পুনরায় ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
'হেলথকেয়ার ওয়েস্ট ইন বাংলাদেশ: কারেন্ট স্ট্যাটাস, দ্য ইমপ্যাক্ট অব কোভিড-১৯' এবং সাসটেইনেবল ম্যানেজমেন্ট উইথ লাইফ সাইকেল অ্যান্ড সার্কুলার ইকোনমি ফ্রেমওয়ার্ক শীর্ষক এক গবেষণায় পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে যে, কোভিড-১৯ ও অন্যান্য জরুরি চিকিৎসা সংক্রান্ত জরুরি অবস্থা বাদ দিলে ২০২৫ সালে বাংলাদেশ প্রায় ৫০ হাজার টন মেডিকেল বর্জ্য (প্রতি শয্যায় ১ দশমিক ২৫ কেজি) উৎপন্ন করবে। যেগুলোর মধ্যে ১২ হাজার ৪৩৫ টন বিপজ্জনক হবে।
২০২২ সালে প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গেছে, ঢাকায় প্রতিদিন প্রতি শয্যায় মেডিকেল বর্জ্য উৎপাদনের পরিমাণ ১ দশমিক ৬৩ কেজি থেকে ১ দশমিক ৯৯ কেজি। কোভিড-১৯ মহামারির পরে এটির পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
কিছু অগ্রগতি সত্ত্বেও স্থায়ী চ্যালেঞ্জ
আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটি (আইসিআরসি) ২০১৫ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে কক্সবাজার জেলায় পাঁচটি মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সুবিধা স্থাপন করেছে। এ ধরনের উদ্যোগ সত্ত্বেও মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার চ্যালেঞ্জ অব্যাহত রয়েছে, বিশেষ করে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর এলাকায়।
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) নিয়ে মাসিক গোলটেবিল আলোচনা সিরিজ এসডিজি ক্যাফের ১২তম পর্বের আয়োজন করে ইউনাইটেড নেশনস অফিস ফর প্রজেক্ট সার্ভিসেস (ইউএনওপিএস) বাংলাদেশ।
২০২৪ সালের ৩ অক্টোবরের এই অনুষ্ঠানে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা– বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জ এবং সমাধান অন্বেষণ করা হয় এবং এসডিজি ১১, ১২ এবং ১৩ তুলে ধরা হয়। এর লক্ষ্য হলো- ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতিরোধ, হ্রাস, পুনর্ব্যবহার এবং পুনঃব্যবহারের মাধ্যমে বর্জ্য উৎপাদন হ্রাস করা।
আরও পড়ুন: কোরবানির পশুর বর্জ্য শতভাগ অপসারণ করেছে ডিএসসিসি
টেকসই সমাধানের উপর বিশেষজ্ঞদের অভিমত
অনুষ্ঠানটিতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বুয়েটের এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. রওশন মমতাজ। তিনি তার প্রবন্ধে বাংলাদেশের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সংকটের বাস্তবতা তুলে ধরেন।
তিনি একটি বড় পরিবারের বর্জ্য পৃথকীকরণ ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়ে উল্লেখ করেন যে, প্রতি ১৫ বছরে বর্জ্যের পরিমাণ দ্বিগুণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। দেশের অপর্যাপ্ত অবকাঠামো, পৃথকীকরণের অভাব এবং দুর্বলভাবে পরিচালিত ল্যান্ডফিলগুলো পরিবেশগত সমস্যাগুলোকে আরও বাড়াচ্ছে।
ড. মমতাজ তিনটি আর অর্থাৎ- হ্রাস, পুনঃব্যবহার এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য করার ওপর জোর দিয়েছেন। অতিরিক্ত উত্পাদক দায়বদ্ধতা (ইপিআর) অবশ্যই একটি টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কাঠামো বিকাশের জন্য বাস্তবায়ন ও প্রয়োগ করতে হবে।
ইউএনওপিএস বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সুধীর মুরালিধরন বলেন, ‘কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা শুধু নিষ্পত্তি নয়; এটি আমাদের ভোগের ধরণগুলো পুনরায় আকার দেওয়া এবং স্থায়িত্বকে অগ্রাধিকার দেওয়ার বিষয়ও।’
যদিও মেডিকেল বর্জ্য বাংলাদেশের মোট কঠিন বর্জ্যের মাত্র ১ শতাংশ হলেও এর ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা পুরো বর্জ্য প্রবাহকে দূষিত করে এবং বিপজ্জনক করে তোলে।
নিয়ন্ত্রক কাঠামো ও এর সীমাবদ্ধতা
বাংলাদেশ সরকার কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০২১ এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা অনুশীলন বাড়ানোর জন্য জাতীয় থ্রিআর কৌশল প্রণয়ন করেছে। সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাগুলো তাদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম উন্নত করতে এসব কৌশল অন্তর্ভুক্ত করেছে। কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০২১-এ প্রথমবারের মতো এক্সটেন্ডেড প্রডিউসার রেসপনসিবিলিটি (ইপিআর) চালু করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং টেকসই পণ্য উৎপাদনে দায়িত্বশীল উদ্যোগ নিতে আহ্বান পরিবেশ উপদেষ্টার
এই বিধিমালা সত্ত্বেও, বাংলাদেশ এখনও মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য একটি নিবেদিত কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। এর পরিবর্তে প্রিজম বাংলাদেশ, ওয়েস্ট কনসার্ন, সেন্টার ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট (সিএসডি), এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ইএসডিও) এবং আইসিডিডিআর,বি'র মতো সংস্থাগুলো মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বিশেষ করে ঢাকায় নেতৃত্ব দিয়ে থাকে।
মেডিকেল বর্জ্য অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতি
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) জানিয়েছে, হাসপাতালের কিছু কর্মী সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনপা নিশ্চিতের পরিবর্তে পুনর্ব্যবহারযোগ্য মেডিকেল বর্জ্য (যেমন কাচের বোতল, সিরিঞ্জ, স্যালাইন ব্যাগ এবং ব্লাড ব্যাগ) অসাধু পুনর্ব্যবহারযোগ্য বর্জ্য সংগ্রহকারীদের কাছে বিক্রি করে। একটি চক্র ওষুধের দোকান, হাসপাতাল এবং ক্লিনিকগুলোতে বিক্রি করার আগে প্রয়োজনীয় জীবাণুমুক্তকরণ ছাড়াই এই উপকরণগুলো পরিষ্কার এবং পুনরায় প্যাকেজ করে বলে জানা গেছে।
২০০৮ সালের মেডিকেল বর্জ্য (ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ট্রিটমেন্ট) বিধিমালা অনুসারে, হাসপাতালগুলোকে পুনরায় ব্যবহার রোধ করতে প্লাস্টিকের টিউব এবং অন্যান্য বর্জ্য উপকরণগুলো কেটে বা ছিদ্র করে দিতে হয়। তবে টিআইবির গবেষণায় দেখা গেছে, ৩১ শতাংশ হাসপাতালে এই নিয়ম মানতে ব্যর্থ হয় এবং ৪৯ শতাংশ হাসপাতালে সুই ধ্বংসকারী যন্ত্রের অভাব রয়েছে।
২০২১ সালের জুন থেকে ২০২২ সালের নভেম্বর পর্যন্ত পরিচালিত 'গভর্নেন্স চ্যালেঞ্জেস ইন মেডিকেল ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ওয়ে ফরোয়ার্ড' শীর্ষক এক গবেষণায় ৪৫টি জেলার হাসপাতাল, সিটি করপোরেশন ও পৌর কর্তৃপক্ষসহ ৯৩টি মেডিকেল বর্জ্য কর্মী এবং ২৩১টি প্রতিষ্ঠানের ওপর জরিপ চালানো হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মকানুন মেনে না চলা এবং তদারকির অভাব রয়েছে।
যদিও ২০০৮ সালের বিধিমালা প্রকাশের তিন মাসের মধ্যে একটি কর্তৃপক্ষ গঠনের বাধ্যবাধকতা থাকলেও এখনও তা আলোর মুখ দেখেনি। এর পরিবর্তে সিটি করপোরেশন ও হাসপাতালগুলো লাইসেন্সবিহীন ঠিকাদারদের কাছে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আউটসোর্স করেছে।
স্বচ্ছতা ও সমন্বয়ের অভাব
ঢাকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ইউএনবির অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানই তাদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি নিয়ে কথা বলতে চায় না। অনেক হাসপাতাল এখনও উচ্চ বাছাই ব্যয় এবং প্রয়োগকারী ব্যবস্থার অভাবের কথা উল্লেখ করে সাধারণ আবর্জনা হিসাবে বর্জ্য অপসারণ করে।
তাছাড়া মেডিকেল বর্জ্য ট্র্যাক করার কোনো কেন্দ্রীয় ডাটাবেজ নেই। গবেষণায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মীদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়মও উঠে এসেছে। সরকারি হাসপাতালে চাকরির জন্য এক থেকে দুই লাখ টাকা ঘুষ লেনদেন হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় ও সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের অভাব অগ্রগতিকে আরও বাধাগ্রস্ত করছে। আমলাতান্ত্রিক অদক্ষতার কারণে বিভিন্ন প্রশাসনিক স্তরে জাতীয় উপদেষ্টা কমিটি ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কমিটির অনেকাংশেই অকার্যকর অবস্থায় রয়েছে।
আরও পড়ুন: সমুদ্র সৈকতে প্লাস্টিক বর্জ্য শনাক্ত করতে স্যাটেলাইট প্রযুক্তি
জরুরি সংস্কারের আহ্বান
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান পদ্ধতিগত সুশাসন ব্যর্থতা ও দুর্নীতির কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এ খাতে জবাবদিহিতার অভাব রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায় এবং প্রতিটি পর্যায়ে পরিবেশ বিপর্যয়ে ভূমিকা রাখে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার কর্মকর্তারা জোর দিয়ে বলেন, স্বাস্থ্যসেবা পরিবেশ ও সেবার মান উন্নয়নে সরকারি ও বেসরকারি উভয় হাসপাতালেই কার্যকর মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্থানীয় সরকার সংস্থা ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সঙ্গে অধিকতর সচেতনতা, উন্নত কারিগরি সহায়তা এবং সমন্বয় বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তারা।
কর্তৃপক্ষ, টেকসই মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতের জন্য বিদ্যমান নিয়ম-কানুনের কঠোর প্রয়োগ, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (পিপিপি) বৃদ্ধি এবং বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা সুবিধাগুলোতে সম্মতি নিশ্চিত করার জন্য আরও ভাল পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থার পক্ষে পরামর্শ দিচ্ছে।
অবিলম্বে সংস্কার এবং একটি নিবেদিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করা না হলে— মারাত্মক পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকিতে পড়বে বাংলাদেশ।
৩২ দিন আগে
যশোরে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পরিশোধন কেন্দ্র পরিদর্শন করলেন এডিবি’র নির্বাহী পরিচালক
যশোরের ঝুমঝুমপুরে অবস্থিত উন্নত বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ ও ব্যবস্থাপনা প্ল্যান্টটি বেসরকারি সংস্থা স্কেইট ওয়েস্ট দ্বারা পরিচালিত অত্যাধুনিক ইন্টিগ্রেটেড ল্যান্ডফিল এবং রিসোর্স রিকোভারি ফ্যাসিলিটি এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) নির্বাহী পরিচালক সমীর কুমার খারে পরিদর্শন করেছেন।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের প্রকল্প পরিচালক (সিআরডিপি-২) হামিদুল হক, এডিবির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাগণ, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের প্রতিনিধিগণ, যশোর পৌরসভার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাগণ।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় উক্ত ইন্টিগ্রেটেড ল্যান্ডফিল এবং রিসোর্স রিকোভারি ফ্যাসিলিটি তারা পরিদর্শন করেন।
আরও পড়ুন: খুলনা সিটি করপোরেশনে ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা নেই, বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি
এ সময় দ্য স্কেইট লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. নাহিদ আলম এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাসুদ হোসেন জাহাঙ্গীর এবং টিম স্কেইট-এর সকল সদস্য উপস্থিত থেকে সম্মানিত অতিথিবৃন্দ এবং মিডিয়াকর্মীদের সঙ্গে এই উদ্যোগের তাৎপর্য তুলে ধরেন এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় তাদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন।
পরিদর্শনকালে সমীর কুমার খারে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় স্কেইট ওয়েস্টের উদ্ভাবনী পদ্ধতি ও উদ্যমের জন্য সাধুবাদ জানান।
তিনি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতার তাৎপর্যের ওপর জোর দেন এবং রিসোর্স রিকোভারি ফ্যাসিলিটি-এর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির প্রশংসা করেন।
আরও পড়ুন: প্রতিটি পণ্যের সঙ্গে ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনার নীতি তৈরি করা প্রয়োজন: গোলটেবিল বৈঠকে বিশেষজ্ঞ
৫৮৭ দিন আগে
করোনা সংক্রমণ এড়াতে কোরবানির সময় যা যা মেনে চলবেন
আর কিছুদিন পরেই কোরবানির ঈদ। এ সময় কোভিড সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে কোরবানির সময় সতর্কতা মেনে চলতে হবে। এ রকম একটা উৎসবে অনেক মানুষের সমাগম থাকাটা স্বাভাবিক। তাছাড়া পশু কোরবানির আগে ও পরে সৃষ্ট ময়লা-আবর্জনা থেকে জীবাণু ছড়াতে পারে। তাই চলুন, কোভিড সংক্রমণ এড়াতে কোরবানির সময় সতর্কতার জন্য জরুরি পদক্ষেপগুলোর ব্যাপারে জেনে নেই।
কোভিড সংক্রমণ এড়াতে কোরবানির সময় সতর্কতা-
কোরবানির জন্য সঠিক স্থান নির্বাচন করুন
পশু কোরবানির স্থানটি বসতবাড়ি থেকে একটু দূরে এবং খোলামেলা হওয়া দরকার। যে স্থানটি নির্বাচন করবেন, সেটি অবশ্যই আগে থেকে জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করে রাখবেন। এতে এলাকা জুড়ে জীবাণু ছড়ানোর সম্ভাবনা কম থাকে এবং পরিবেশ দূষণ রোধ হয়। তাছাড়া কোরবানি পরবর্তী প্রয়োজনীয় ময়লা নিষ্কাশনেও বেশ সুবিধা হয়। কোরবানির সকল কার্যক্রম শেষ হয়ে গেলে পুরো জায়গাটি স্যাভলন মেশানো পানি অথবা ব্লিচিং পাউডার দিয়ে স্যানিটাইজ্ড করে নিন।
আরও পড়ুন: কোরবানির পশু নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ছেড়েছে ‘ক্যাটল স্পেশাল’ ট্রেন
কসাই-কোরবানির সরঞ্জাম স্বাস্থ্যবিধির আওতায় আনুন
কসাইদের কাজ শুরুর আগে দেখে নিন তারা হ্যান্ড-গ্লাভস, মাস্ক এবং জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করা রাবারের জুতা পরছে কিনা। তাদের সাথে যারা কোরবানিতে অংশ নিবেন ও মাংস কাটবেন তাদের ক্ষেত্রেও এই সতর্কতা প্রযোজ্য। পশু ধরার আগে ও পুরো কাজ হওয়ার পর সাবান ও হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল করে নিন। পশু কোরবানির প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম আগে থেকেই স্যানিটাইজ্ড করে রাখুন। যে পাত্রে মাংস রাখাবেন তা আগে থেকেই সাবান-পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে রাখুন। মাংস কাটার সময় নিজেদের মধ্যে তিন ফুট দূরত্ব রেখে বসুন।
পশু কোরবানি ও চামড়া ছাড়ানোর সময় কোন অবস্থাতেই হাঁচি-কাশি দেয়া যাবে না। মাংস আলাদা করে যেখানে রাখা হবে তার আশপাশেও হাঁচি-কাশি দেয়া থেকে বিরত থাকুন। শুধু কোরবানির সাথে সম্পৃক্তরা ছাড়া অন্য কাউকে আশেপাশে ভীড়তে দেবেন না। আর কেউ এলেও তাকে অবশ্যই কমপক্ষে তিন ফুট দূরত্ব রেখে দাড়াতে হবে।
আরও পড়ুন: কোরবানির হাটে মহিষের আক্রমণে কিশোরের মৃত্যু
একটি নির্দিষ্ট স্থানে কোরবানির পশুর বর্জ্যগুলো ফেলুন
গ্রামাঞ্চলে কোরবানির আগে থেকেই খোলা মাঠে বা কোন পরিত্যক্ত স্থানে গর্ত করে রাখতে পারেন। আর শহরের ক্ষেত্রে কাছাকাছি একটি ডাস্টবিন ঠিক করে রাখুন। ডাস্টবিনটি রাস্তার কাছাকাছি হলে বর্জ্যের গাড়ি পৌঁছাতে সুবিধা হবে। আর গোলির ভেতরে হলে বর্জ্য একটি ব্যাগে ভরে নির্দিষ্ট স্থানে রাখুন। খেয়াল রাখবেন- কুরবানির পশুর গোবর ও অন্যান্য আবর্জনা যেন ড্রেনে ফেলা না হয়। এক্ষেত্রে ড্রেন বন্ধ হয়ে ময়লা উপচে পড়বে।
আগে থেকে ঠিক করা জায়গায় মাংস কাটার কাজ শেষ করুন। এ সময় উচ্ছিষ্টগুলো ছিটিয়ে না ফেলে একটি নির্দিষ্ট স্থানে রাখুন। অতঃপর সব উচ্ছিষ্ট একসাথে করে পূর্ব নির্ধারিত ডাস্টবিনে ফেলুন। গ্রামাঞ্চলে গর্তে রেখে মাটি চাপা দিয়ে রাখতে পারেন। দ্রুত বর্জ্য নিষ্কাশনের জন্য স্থানীয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কমিটির দৃষ্টি আকর্ষণ করুন।
আরও পড়ুন: কোরবানির পশুর চামড়ার দাম বাড়ালো সরকার
যত দ্রুত সম্ভব চামড়া ব্যবস্থাপনার কাজ শেষ করুন
চামড়া ছাড়ানো হয়ে গেলে সাথে সাথে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করার ব্যবস্থা করুন। এছাড়া মাদরাসার লিল্লাহ বোর্ডিং, মসজিদ বা এতিমখানায়ও দান করে দিতে পারেন।
আরও পড়ুন: ডিজিটাল কোরবানির পশুর হাটের উদ্বোধন
মাংস সংরক্ষণে করোনা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন
মাংস বাড়িতে নেয়ার আগে থেকেই হাত, রান্নাঘর বিশেষ করে মাংস রাখার পাত্রগুলো সাবান ও হালকা গরম পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন। মাংস এমনভাবে রান্না করুন, যেন মাংসের প্রতিটি অংশ বেশ ভালোভাবে সেদ্ধ হয়। রান্নার কাজ শেষ হলে কাঁচা মাংসের সংস্পর্শে আসা সব কিছু আগের মত করে হালকা গরম পানি ও সাবান দিয়ে ধুয়ে শুকিয়ে নিন। রেফ্রিজারেটরে কাঁচা মাংস রাখার সময় ছোট ছোট প্যাকেটে মুখ বন্ধ করে মাংস রাখুন। রেফ্রিজারেটর থেকে মাংস বের করে রান্নার পূর্বে ভালো করে সাবান-পানি দিয়ে হাত ধুয়ে নিন।
আরও পড়ুন: দেশের বাইরে থেকে কোরবানির পশু আসতে দেওয়া হবে না: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
শেষাংশ
যেহেতু করোনা মহামারি চলাকালীন দ্বিতীয়বারের মত ঈদুল আজহা পালিত হতে যাচ্ছে, তাই কোরবানি পরবর্তী সতর্কতা মেনে চলার উপর আরো বেশি জোর দিতে হবে। এর ফলশ্রুতিতে আপনি নিজে সুস্থ থাকার পাশাপাশি আপনার পাশের জনকেও কোভিড সংক্রমণ থেকে মুক্ত রাখতে পারবেন।
১৩৪০ দিন আগে
সিটি করপোরেশনের যথাযথ পরিষেবা বঞ্চিত ডেমরার বাসিন্দারা
বর্জ্য পদার্থের দুর্গন্ধ এবং মশা-মাছির উপদ্রবে অতিষ্ট হয়ে উঠেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) আওতাধীন ডেমরা এলাকার বাসিন্দারা।
১৫৮৩ দিন আগে
শিগগিরই বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে যাচ্ছে সরকার: এলজিআরডিমন্ত্রী
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, খুব শিগগিরই দেশে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে যাচ্ছে সরকার।
১৬৮০ দিন আগে
রাজধানীতে জলাবদ্ধতার দায় ওয়াসা ও সিটি করপোরেশন উভয়ের: টিআইবি
ঢাকায় জলাবদ্ধতা নিরসনে ব্যর্থতার জন্য ঢাকা ওয়াসা ও দুই সিটি করপোরেশনসহ দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট সবগুলো প্রতিষ্ঠানই দায়ী বলে মনে করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
১৬৯৭ দিন আগে
ডিএনসিসিতে ২৫৬ স্থানে দেয়া যাবে পশু কোরবানি
আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় পশু কোরবানির জন্য ২৫৬টি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে।
১৬৯৮ দিন আগে
দিনে উন্মুক্ত স্থানে বর্জ্য না ফেলার অনুরোধে ডিএসসিসি মেয়র
দিনের বেলায় উন্মুক্ত স্থান ও রাস্তায় বর্জ্য না ফেলতে ঢাকাবাসীকে অনুরোধ করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
১৭১০ দিন আগে
বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম, স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ঠাকুরগাঁও শহর
সুনির্দিষ্ট আইন ও নির্দেশনা থাকলেও ঠাকুরগাঁও জেলা শহরের সরকারি হাসপাতাল, বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগণস্টিক সেন্টারগুলো চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও প্রক্রিয়াজাতকরণ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না।
১৮২৭ দিন আগে