পিয়াসা
পরীমণি, পিয়াসা ও হেলেনাসহ ৮ জনের ব্যাংক হিসাব তলব
চিত্রনায়িকা পরীমণি, মডেল পিয়াসা এবং সাবেক আওয়ামী লীগ নেত্রী হেলেনা জাহাঙ্গীরসহ আটজনের ব্যাংক হিসাব তলব করেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সূত্রে জানা গেছে, পুলিশ বিভাগের অনুরোধে বিএফআইইউ থেকে একটি চিঠি দেশের সব ব্যাংকে পাঠানো হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, ‘চিঠি পাওয়ার পর তিন দিনের মধ্যে আট ব্যক্তির অ্যাকাউন্টের বিবরণ বিএফআইইউতে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’
পরীমণির নাম শামসুন নাহার স্মৃতি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, যা তার আসল নাম। ঠিকানা মঠবাড়িয়া, পিরোজপুর। অন্য সাতজন হলেন, হেলেনা জাহাঙ্গীর, মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াশা এবং মরিয়ম আক্তার মৌ, চলচ্চিত্র প্রযোজক নজরুল ইসলাম, রোজিনা আক্তার, সালেহ চৌধুরী এবং মিশু হাসান।
তাদের মধ্যে পরীমণি, হেলেনা জাহাঙ্গীর, নজরুল ইসলাম এবং মিশু হাসানকে সম্প্রতি আইন শৃঙ্খলা বাহিনী মাদক রাখা এবং মানুষকে ব্ল্যাকমেইল করাসহ বিভিন্ন অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে।
আরও পড়ুন: পরীমণি ফের ২ দিনের রিমান্ডে
পরীমণি-সাকলাইন ঘটনা তদন্তে কমিটি
ফের রিমান্ডে মডেল পিয়াসা ও মৌ
৩ বছর আগে
মদ + ইয়াবা + টাকা= ঢাকা ?
মাত্র কয়েকদিনের মধ্যে বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটলো। এর অনেকগুলোর মধ্যে বেশ কিছু মিল আছে। হেলেনা জাহাঙ্গীর, পিয়াসা, মৌ, একা... এদের কোনো না কোনো অপরাধে ধরা হয়েছে এবং বাড়িতে অভিযান চালানো হয়েছে। অভিযানে পুলিশ বিদেশি মদ, ইয়াবা এবং জুয়ার সরঞ্জাম জব্দের দাবি করেছে।
এসব সামগ্রী যাদের বাসায় পাওয়া যাচ্ছে তাদের কয়েকজনের মধ্যে বেশ কিছু মিল আছে। এরা সুশ্রী, তরুণী, কেউ মডেল, কেউ অভিনেত্রী, কেউ মিডিয়ার মানুষ। আমরা অনেকেই তাদের চিনি। নিজের কাজের জন্য যেমন তারা পরিচিত নিজস্ব পরিসরে, সম্পর্কের কারণেও অনেকে পরিচিত।
ঢাকার একটা দুনিয়া আছে, বড়লোকদের দুনিয়া, সেখানে তারা হাঁটা চলা করা মানুষ। সেলিব্রিটিদের সঙ্গে তাদের ওঠা বসা। সেখানে মদ, ইয়াবা ও অন্যান্য সব কিছুই চলে। ওদের সঙ্গে উঠতে বসতে চাওয়া মানুষের অভাব সেই। ভালো লাগবে না কেন সেখানে যেতে?
ইয়াবা আর মদ: ‘মাফ কইরা দেন ভাই’
বহু অপরাধ হয় ঢাকায়, দেশে। কিন্তু পুলিশের সবচেয়ে বড় সাফল্য মদ আর ইয়াবা উদ্ধারে। পুলিশ বলে ‘বিদেশি’ মদ পাওয়া গেছে। অপরাধটা বোঝা যায় না। ওটা কি বিদেশি হওয়াতেই অপরাধ ? মানে ব্যাপারটা কি দেশপ্রেমের ? একবার ভাবা যাক যদি পুলিশ বলে, অমুকের বাসায় দেশি মদের বোতল পাওয়া গেছে! তাহলে হয়তো গ্রেপ্তারের পর বড়লোক বা তাদের সঙ্গীরা আত্মহত্যা করতে পারেন অপমানে। তাই মনে হয় ধরা পরার পর বিদেশি মদ পাওয়া যায় তাদের বাড়ি থেকে ! ওটাই আভিজাত্য কেনার চিহ্ন আমাদের ‘হাইল্লা’ সমাজে!
আরও পড়ুন: হেলেনা জাহাঙ্গীর, সেফুদা ও কালো মিডিয়া
বেচারা ইয়াবা
যে দেশে প্রাতিষ্ঠানিক হিসেবে প্রায় এক কোটি নেশাখোর আছে , সেই দেশে প্রকৃত সংখ্যা কত নিজেরাই গুনে নেন। ইয়াবা তো রাস্তার পোলাপান, পাড়ার জুনিয়র মাস্তানও খায়। বুঝলাম এগুলো বিদেশি ইয়াবা কিন্তু যেখানে দেশের প্রায় ১০ শতাংশ মানুষ ইয়াবা খায়, সে দেশে এটা খুঁজে বের করলে কিছু আসে যায় না!
তাই এটা ধরা বাদ দেন। কিছু অন্য আইটেম খোঁজেন। পাবলিক বোর হয়ে যাচ্ছে ভাই! বরং কিছু বিদেশি বই, সংগীতের সিডি ইত্যাদি খুঁজে পেয়ে আমাদের চমকে দিন। মদ, ইয়াবার খবর শুনতে আর মজা লাগছে না! টাকা থাকলে খুচরার মতো যেগুলো মানুষের পকেটে আসে নেশার দ্রব্য হয়ে, তার কথা আর নাই বা বললেন।
পড়ুন: আওয়ামী লীগ নেত্রী হেলেনা জাহাঙ্গীর তিন দিনের রিমান্ডে
মিডিয়ার ওপর ইসরায়েলি বর্বরতার নিন্দা জানিয়েছে জাতীয় প্রেস ক্লাব
এরা কারা?
তবে যে কজনের নাম আসছে এই সপ্তাহে তারা প্রায় সবাই নারী। এটা সত্য তারা সুশ্রী। কিন্তু এরা কি স্বাধীনভাবে সফল মানুষ হিসেবে পরিচিত? এই সমাজে টাকায় রক্তের গন্ধ আছে , সেটা শুঁকতে শুঁকতে কেউ লাশ হয়, কেউ ঝুলে থাকে ফ্যান থেকে, কেউ বেছে নেয় বিষের বোতল। যে নারী টাকার জন্য জেলে যায় আর একই কারণে যে নারী বড়লোকের সঙ্গী হয়, তাদের মধ্যে আসলে কোনো তফাৎ নেই।
তাই দোষটা বরং ইয়াবা আর মাদককেই দেয়া হোক। ওদের তো বোধ-বুদ্ধি নেই!
লেখক: এডিটর এট লার্জ, ইউএনবি
৩ বছর আগে