আইসিউ
ফুটবল কিংবদন্তি পেলে আবার আইসিইউতে
কোলন টিউমার অস্ত্রপাচারের পর ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছিলেন ফুটবল কিংবদন্তি পেলে। তবে শুক্রবার হঠাৎ তাকে আবার হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে।
পেলের মেয়ে কেলি নাসিমেন্টো শুক্রবার তার বাবার সাথে ইনস্টাগ্রামে একটি ছবি পোস্ট করে বলেন, ‘বাবা সুস্থ হয়ে উঠছেন। এই বয়সে এমন অস্ত্রোপাচারের পর সুস্থ হতে কিছুটা সময় লাগে। কখনো ভালো থাকে আবার কখানো খারাপ হয়ে যায়। গতকাল বাবা কিছুটা ক্লান্ত ছিলেন, এখন সুস্থ আছেন।’
এর আগে মঙ্গলবার থেকে সাও পাওলোর আলবার্ট আইনস্টাইন হাসাপাতাল থেকে পেলের স্বাস্থ্যের বিষয়ে নতুন কোনো বিবৃতি দেয়া হয়নি। সেইদিনই তাকে আইসিইউ থেকে জেনারেল শয্যায় নেয়া হয়।
আরও পড়ুন: কোয়ারেন্টাইন বিতর্কে ব্রাজিলে মাঠ ছাড়ল মেসি বাহিনী
পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় পেলে নিশ্চিত করেছেন যে তিনি সুস্থ আছেন এবং দিনের বেলা পরিবারের সদস্যরা তাকে দেখতে এসেছেন।
পেলে বলেন, ‘আমি প্রতিদিন হাসি। আমি আপনাদের কাছ থেকে যে ভালোবাসা পেয়েছি তার জন্য অনেক ধন্যবাদ।’
চলতি বছরের আগস্টে নিয়মিত পরীক্ষার অংশ হিসেবে হাসপাতালে নেয়া হলের পেলের শরীরে কোলন টিউমার ধরা পড়ে এবং পরে ৪ সেপ্টেম্বর সেটি অস্ত্রোপাচার করা হয়।
ব্রাজিলের হয়ে ১৯৫৮, ১৯৬২ এবং ১৯৭০ বিশ্বকাপ জিতা পেলে ৯২ ম্যাচে ৭৭ গোল করে এখনো দেশটির ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলদাতা।
আরও পড়ুন: বার্সেলোনা ছাড়ার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না: মেসি
ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ফাইনাল: যে ফল ছিল আগের চার লড়াইয়ে
৩ বছর আগে
ক্রিকেট :মুস্তাফিজ, সাকিব, আমরা, আমাদের চাচাতো ভাই ইত্যাদি
আমার খুব ঘনিষ্ট এক বন্ধু ভীষণ ক্রিকেট বিরোধী। সে প্রায় নীতিগত ভাবে বিরোধী। সে খুব নির্মম একটা অভিজ্ঞতার কথা বললো। এক হাসপাতালে রোগী আইসিউতে আর তার পাশেই ডাক্তার-নার্সরা খেলা দেখছেন এবং কেউ আউট হলে কিংবা চার-ছয় মারলে তারা জোরে হর্ষধ্বনি দিয়ে উঠছেন। এটা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়, ধিক্কার জানাই এমন ঘটনার। তবে এটা সচরাচর হাসপাতালে ঘটে না। কিন্তু ঘরে-অফিসে-ক্লাবে ক্রিকেট খেলার সময় এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। কথা হলো, ক্রিকেট আমাদের দরকার, তবে অবশ্যই তা শোভন আচরণের মাধ্যমে। কিন্তু ক্রিকেট কেন দরকার, এ প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক।
ক্রিকেট এখন কী ?
আমার আসলে ক্রিকেট খেলা হিসেবে ভালো লাগে কিনা বলতে পারব না। খুব একটা না বোধ হয়। আগে শুধু টেস্ট ক্রিকেট ছিল, পাঁচ দিন ধরে তা দেখার সুযোগ পেত কেবল ছাত্র, বেকার ও অবসরপ্রাপ্তরা। এটা তাদেরই খেলা, ধুক্কুর, ধুক্কুর করে চলছে তো চলছেই কোন শেষ নেই। খুবই বিরক্তিকর। তা-ও নাকি এটা পূর্বের চেয়ে অনেক ভালো। আগে খেলা চলতো রেজাল্ট না হওয়া পর্যন্ত। খাইছে, কি কয় ?
অতএব যাদের কোনো কাজ নেই এটা তাদের খেলা, কিন্তু এখন আর আগের সেই অবস্থা নেই। এই খেলাকে একদিনের, টি-টোয়েন্টি ইত্যাদি নানা সংস্করণে সময় উপযোগী করে ফেলা হয়েছে।
টি-টোয়েন্টি আনন্দের উপকরণ, মেরে পিটিয়ে তক্তা বানিয়ে, পাগলের মতো দৌঁড়িয়ে, মাত্র কয়েক ঘন্টায় খেলা শেষ। ভালো মন্দ বোঝার সময় থাকে না। আমাদের আজকের জীবনের গতির সাথে মেলে। উত্তেজনা, আনন্দ, সবই পাওয়া যায় অল্প সময়েই।
ভালো লাগার রহস্যটা কী ?
সব চেয়ে ভালো লাগে একটা বিষয়, আমার পতাকা। যখন দেশের জার্সি পরে দেশের ছেলে-মেয়েরা খেলে, আসলে তখন আমার দেশ খেলে। অতএব যখন জিতে, আমার দেশ জিতে। আমরা তো খেলার এত নিপুণ পর্যবেক্ষক নই, আমরা আম-দর্শক, কোন খেলায় দেশ জিতছে দেখতে আমাদের ভালো লাগে, গর্ব হয়। কারণ আমাদের জেতার পরিসর, সুযোগ তো কম। তাই ক্রিকেট আর খেলা থাকে না, এটা হয়ে ওঠে দেশপ্রেমের একটা অংশ, গৌরব সন্ধানের উপায়। অর্থাৎ সব কিছুরই মূলে কিন্তু সেই দেশ।
খারাপ লাগে কেন ?
মুস্তাফিজ যখন ওভারে মাত্র ১ রান দিয়ে বিজয়ের পথ সুগম করে দেয়, বিদেশিরা বাধ্য হয়ে তাকে ‘জাদুকর’ বলে। তখন ভালো লাগে। কিন্তু সাকিবের এক ওভারে ৫ ছক্কা খারাপ লাগে। মনে হয় আমাদের বুকের ওপর পাথর মারলো কেউ, সাকিবের কষ্ট তখন আমাদের সবার হয়ে যায়। অনেকে বলবে, এটা তো নিছক খেলা, আমি বলবো, খেলা ঠিক কিন্তু এটা তো আমার পরিচিতি, এটা কোনোদিনই শুধু খেলা নয় আমার জন্য।
দেশে এখন বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া টি-টোয়েন্টি সিরিজ চলছে। টানা তিনটিতে জিতে আমরা সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছি। কিন্তু শনিবার চতুর্থ ম্যাচে হারার পর মনে হয়েছে ব্যাটসম্যানদের আরো দায়িত্ব নিতে হবে। আর একটা কথা, বিজয়ের পর আমরা যেন আত্মতুষ্টিতে না ভুগি। তবে বলে লাভ নেই, এটা আমাদের অনেক হয়।
সোমবার সিরিজের শেষ খেলা, জিতলে খুশিতে সবাই আত্মহারা হবে জানি। তবে হারার জন্য অনেকেই মনে মনে প্রস্তুতি নিচ্ছে। সব কথার শেষ কথা, দেখা যাক !
লেখক: এডিটর এট লার্জ, ইউএনবি
৩ বছর আগে