বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা
ইতিহাসের অন্যতম হৃদয়বিদারক ঘটনা ১৫ আগস্ট: সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলাম
১৫ আগস্ট পৃথিবীর ইতিহাসের অন্যতম হৃদয়বিদারক ঘটনা বলে মন্তব্য করেছেন মেজর জেনারেল সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলাম (অব.)।
তিনি বলেন, ‘আগস্ট মাসের শুরুটা হয়েছে শেখ কামালের জন্মদিন দিয়ে। তারপর বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জন্মদিন। তারপর ঘটে গেল সেই ১৫ আগস্ট। পৃথিবীর ইতিহাসের অন্যতম হৃদয়বিদারক ঘটনা। সপরিবারে হত্যা করা হয় বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।’
শনিবার (২৭ আগস্ট) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে কিশোরগঞ্জ জেলা শিল্পকলা অডিটরিয়ামে সৈয়দ সাফায়েত ও সৈয়দ মাহবুবা ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের অনুষ্ঠানে তিনি এ সব কথা বলেন।
সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলাম বলেন, ১৫ আগস্টের পর ১৭ আগস্ট সিরিয়াল বোমা। একসঙ্গে ৫০০ বোমা মেরে সন্ত্রাসীদল আমাদের নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিল। তারপর একদম শেষে ২১ আগস্ট। আমাদের একমাত্র আশার আলো, আমাদের একমাত্র প্রদীপ বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয় ২১ আগস্ট। সেই পরিকল্পনা সফল হলে আমরা হয়তো এতোদিন ক্ষমতায় থাকতে পারতাম না।
আরও পড়ুন:২১ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের জন্য বিএনপি-জামায়াত সরকার দায়ী: প্রধানমন্ত্রী
শোককে শক্তিতে পরিণত করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আসুন প্রতিজ্ঞা করি, এই শোক যেন শক্তিতে পরিণত হয়।’
কাজী নজরুল ইসলামের ৪৬তম মৃত্যুবার্ষিকী দিনে কবির দুই লাইন আবৃত্তি করে সহযোদ্ধাদের সতর্ক করেন মেজর জেনারেল (অব.) সাফায়েতুল ইসলাম, ‘দুর্গম গিরি কান্তার মরু দুস্তর পারাবার হে! লঙ্ঘিতে হবে রাত্রি নিশীথে, যাত্রীরা হুঁশিয়ার।’
এই হত্যাকাণ্ডকে প্রচণ্ড ঘৃণার চোখে দেখার আহ্বান জানিয়ে ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মাহবুবা বলেন, এখানেই শেষ নয়। তারা আমাদের জননেত্রী শেখ হাসিনাকেও হত্যার উদ্দেশ্যে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিল। যে হামলায় আইভি রহমানসহ ২২ জন নিহত হন।
রিফাত উদ্দিন আহমদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ আফজাল, জেলা পরিষদের প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. জিল্লুর রহমান, কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মাহমুদ পারভেজ, কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মামুন আল মাসুদ খান ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ও সাবেক পরিচালক স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ডা. দ্বীন মোহাম্মদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন:হলমার্কের জেসমিনের জামিন প্রশ্নে শুনানি শেষ, সিদ্ধান্ত ২৮ আগস্ট
ঘাতকরা আরেকটি ১৫ আগস্ট ঘটানোর চেষ্টা করছে: শিক্ষামন্ত্রী
২ বছর আগে
বঙ্গবন্ধুর ছায়াকেও ভয় পেত খুনিচক্র: তথ্যমন্ত্রী
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, 'খুনিচক্র বঙ্গবন্ধুর ছায়াকেও ভয় পেত বলেই জাতির পিতার পরিবার-পরিজনকে হত্যা করেছে। আর সেই খুনিদের পৃষ্ঠপোষকেরাও বঙ্গবন্ধুর ছায়াকে ভয় পায়। তাই তারা বঙ্গবন্ধুকে অস্বীকার করে, অস্বীকার করার অপচেষ্টা চালায়।'
তথ্যমন্ত্রী শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কাকরাইলে তথ্য ভবন মিলনায়তনে তথ্য মন্ত্রণালয়ের তিন সংস্থা চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, গণযোগাযোগ অধিদপ্তর ও চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড আয়োজিত 'সংকটে সংগ্রামে নির্ভীক সহযাত্রী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও চলচ্চিত্র প্রদর্শন' শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বিধান চন্দ্র কর্মকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান এবং সচিব মো. মকবুল হোসেন বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন।
তথ্যমন্ত্রী হাছান বলেন, 'বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকীতে জাতির সামনে প্রশ্ন, তারা কেন বঙ্গমাতাকে হত্যা করলো, তারা কেন ছোট্ট শিশু শেখ রাসেলকেও হত্যা করলো? আসলে খুনিচক্র বঙ্গবন্ধুর ছায়াকেও ভয় পেত বিধায় তারা বঙ্গমাতা থেকে ছোট্ট শেখ রাসেলকেও হত্যা করেছে। আর সেই খুনিচক্রের দোসরেরা এখনও বাংলাদেশে আস্ফালন করে।
কিন্তু ক্রমাগতভাবে যারা বঙ্গবন্ধুকে অস্বীকার করেছে, খলনায়ককে নায়ক বানানোর অপচেষ্টা চালিয়ে এসেছে, আস্তে আস্তে তারাই ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে যাচ্ছে, মানুষ সঠিক ইতিহাস জানতে পারছে, বলেন হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, 'বঙ্গমাতা আজীবন বঙ্গবন্ধুর ছায়ার মতো সঙ্গী ছিলেন, মরণেও তিনি সঙ্গী হয়েছেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ঘাতকের দল যে কামরায় বঙ্গমাতা ছিলেন সেখানে হাজির হলে তখন তিনি নিজেই বলেছিলেন তোমরা তাকে মেরেছো আমাকে এখানেই মেরে ফেলো। এই বলেই তিনি মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছিলেন।'
মানুষের সাফল্যের পেছনে জীবন সাথীর একটি বড় ভূমিকা থাকে, যা ছাড়া মানুষের পক্ষে সফল হওয়া কঠিন আর বঙ্গবন্ধুর ক্ষেত্রে সেটি আরও বেশি সত্য ছিল, উল্লেখ করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে করোনার টিকা নিয়ে বিএনপির বক্তব্য প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সরকার কোটি কোটি মানুষকে টিকা দেয়ার ব্যবস্থা করায় বিএনপি হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে।
ড. হাছান বলেন, বিশ্বের কয়েকটি দেশে টিকাদান শুরুর সময়েই বাংলাদেশ যখন ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা আনার প্রস্তুতি নিচ্ছিল, তখন থেকেই বিএনপি নেতারা জনমনে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে, বলেছে টিকা নিলে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হবে। তারাই আবার পরে লজ্জায় গোপনে এবং কেউ কেউ প্রকাশ্যেই টিকা নিয়েছেন। মাঝখানে ভারতের করোনা পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় টিকা আসতে দেরির সময়ও বিএনপি সমালোচনা করতে পিছপা হয়নি। কিন্তু এখন সরকার কোটি কোটি ডোজের সংস্থান করে গণ টিকাদানের ব্যবস্থা করেছে দেখে তারা হিতাহিত জ্ঞান হারিয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান বলেন, বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিব শুধু বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণীই ছিলেন না, নিকটতম প্রাজ্ঞ সহকর্মী ও সবচেয়ে বড় প্রেরণাদাত্রীও ছিলেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ পরিচালিত হচ্ছে বলেই আজ আমরা বঙ্গমাতার জন্মদিন পালন করতে পারছি, আগে তা সম্ভব হয়নি।
সচিব মো. মকবুল হোসেন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সাথে সারাজীবন ত্যাগ-তিতিক্ষা, ধৈর্য ও সংগ্রামের যে নজীর বঙ্গমাতা স্থাপন করেছেন ইতিহাসে তার তুলনা নেই। আমরা তাকে পরম শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি।
এসময় আরো বক্তব্য দেন চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক স. ম. গোলাম কিবরিয়া এবং চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান মো. জসীম উদ্দিন। অনুষ্ঠানের শুরুতে 'বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জীবন ও কর্ম' প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।
৩ বছর আগে