গ্যাসক্ষেত্র
২৬টি কূপ খননে সরকারের উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বানে বিলম্ব
দেশে গ্যাস উৎপাদন বাড়াতে বিভিন্ন উপকূলীয় গ্যাসক্ষেত্র জুড়ে ২৬টি কূপ খননের জন্য উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বানের উদ্যোগ নিয়েছিল সরকার। এই উদ্যোগ আরও এক মাস বিলম্বিত হবে বলে সরকারি সূত্রে জানা গেছে।
মূলত দরপত্র সংক্রান্ত নথিপত্র তৈরি নিয়েই এই বিলম্ব সৃষ্টি হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ খনিজ, তেল ও গ্যাস করপোরেশনের অধীনে তিনটি গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদনকারী কোম্পানি (সাধারণত পেট্রোবাংলা নামে পরিচিত) সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেড (এসজিএফএল), বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেড (বিজিএফসিএল) ও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেডের (বাপেক্স) অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে দরপত্র আহ্বান করার কথা ছিল।
আরও পড়ুন: তিতাস স্মার্ট প্রিপেইড মিটার প্রকল্পে অগ্রগতি সামান্য
কিন্তু সংবাদপত্র ও সংশ্লিষ্ট সরকারি ওয়েবসাইটে প্রকাশের জন্য দরপত্রের নথিপত্র চূড়ান্ত না হওয়ায় কোম্পানিগুলো দরপত্র আহ্বান করতে পারেনি।
এর আগে গত ৩ অক্টোবর জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগে এক সংবাদ সম্মেলনে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার ঘোষণা দেন, প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সবুজ সংকেত পাওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে দরপত্র আহ্বান করা হবে বলে আশা করছেন তারা।
একই সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান দেশীয় গ্যাসের উৎপাদন বাড়াতে সরকার শিগগিরই বিভিন্ন গ্যাসক্ষেত্রে ২৬টি কূপ খননের জন্য একটি উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করবে বলে আশ্বাস দেন।
সরকার জি-টু-জি ভিত্তিতে চুক্তি বা বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে অযাচিত চুক্তি করা থেকে বিরত থাকবে বলেও জানান তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, এই উদ্যোগের লক্ষ্য বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করে আমদানি করা ব্যয়বহুল এলএনজির ওপর নির্ভরতা কমানো।
দরপত্র আহ্বানে বিলম্বের বিষয়ে ফাওজুল কবির ইউএনবিকে বলেন, দরপত্র তৈরিতে তার মন্ত্রণালয় একজন দরপত্র ক্রয় বিশেষজ্ঞের সহায়তা নিচ্ছে এজন্য কিছুটা বেশি সময় লাগছে।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ খাতের বকেয়া পরিশোধে ৫ হাজার কোটি টাকার বন্ড দেবে সরকার
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্রনাথ সরকার বলেন, ঐতিহাসিকভাবে দ্রুত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন ২০১০ এর আওতায় একই ধরনের চুক্তির দলিল তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু এবার উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করতে হলে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুলস (পিপিআর) ২০০৮ মেনে চলতে হবে তাই বিলম্ব হচ্ছে।
সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেড এক সপ্তাহের মধ্যে দরপত্র জারি করতে পারে। অন্যদিকে বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেড ও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেডের পুরো মাস লাগতে পারে।
গত ৩ অক্টোবরের সংবাদ সম্মেলনে জ্বালানি উপদেষ্টা ২০২৫ থেকে ২০২৮ সালের মধ্যে ১০০টি কূপ খননের সরকারি পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন।
এর মধ্যে ৬৯টি অনুসন্ধান ও উন্নয়ন কূপ এবং বাকি ৩১টি কূপ হবে ওয়ার্ক-ওভার ওয়েল।
বাপেক্স ৬৯টি অনুসন্ধান কূপের মধ্যে ৪৩টি এবং বাকি ২৬টি কূপ উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ঠিকাদারদের মাধ্যমে খনন করবে।
বাপেক্স নিজস্ব রিগ ব্যবহার করে বিভিন্ন গ্যাসক্ষেত্র জুড়ে ৩৩টি কূপ খনন করবে এবং ভাড়া করা রিগ ব্যবহার করে আরও ১০টি কূপ খনন করা হবে।
উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য বাপেক্সের সক্ষমতাকে পুরোপুরি কাজে লাগানো।’
আরও পড়ুন: ঝুলে আছে ১০টি গ্রিড সংযুক্ত সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে বিপিডিবির দরপত্র আহ্বান
২ মাস আগে
বিয়ানীবাজার-১ গ্যাসক্ষেত্র থেকে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ শুরু
বিয়ানীবাজার-১ গ্যাসক্ষেত্রের একটি কূপ ওয়ার্কওভার (পুনঃখনন) কাজের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্যদিয়ে উৎপাদনে যায় দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত থাকা গ্যাস কূপটি।
মঙ্গলবার(১৪ নভেম্বর) সকালে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয়ের আওতায় পরিচালিত এই প্রকল্প গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশকে দেখে এখন আর কেউ বলতে পারবে না এদেশ দরিদ্র দেশ, প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ, হাত পেতে চলার দেশ। আমরা এখন একটা মর্যাদাসম্পন্ন দেশে পরিণত হয়েছি। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল।
আরও পড়ুন: রাজধানীর বনানী এলাকায় ২ ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে
পেট্রোবাংলার হিসাব অনুযায়ী, কূপটি উৎপাদন শুরু করায় জাতীয় গ্রিডে বিয়ানীবাজার গ্যাস ফিল্ড থেকে দৈনিক ৮-৯ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে।
সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের মহা ব্যবস্থাপক (কোম্পানি সচিব) প্রকৌশলী মো. ফারুক হোসেন জানান, সিলেট-৮, বিয়ানীবাজার-১ ও কৈলাশটিলা ৭নং কূপ ওয়ার্কওভার করে গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। এই তিনটি কূপ থেকে জাতীয় গ্রীডে প্রায় ২৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করতে পারছি।
তিনি আরও বলেন, দেশে গ্যাস সরবরাহ সংকট কাটাতে নতুন কূপ খনন, উৎপাদনে থাকা কূপের সংস্কার এবং পরিত্যক্ত কূপ পুনঃখননের উদ্যোগ নেয় পেট্রোবাংলা। এরই আওতায় বিয়ানীবাজার-১ কূপটির ওয়ার্কওভারের কাজ শুরু হয়। পরে বাপেক্সের ওই কূপে অনুসন্ধান কাজ চালিয়ে গ্যাসের মজুদ পায়।
আরও পড়ুন: রাজধানীর যেসব এলাকায় বৃহস্পতিবার গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে
এসজিএফসিএল সূত্রে জানা গেছে, বিয়ানীবাজার গ্যাস ফিল্ডের ১ নম্বর কূপটি চার দশক আগের। ১৯৮১ সালে এ গ্যাস ফিল্ডে কূপ খনন শুরু হয়। এরপর গ্যাস ফিল্ডটি থেকে গ্যাস তোলা শুরু হয় ১৯৯১ সালে। ২০১৪ সালে কূপটির সরবরাহ কমলে একপর্যায়ে গ্যাস উত্তোলনও বন্ধ হয়ে যায়। ২০১৬ সালে কূপটি পুনরায় উৎপাদনে এলেও ওই বছরের শেষ নাগাদ তা আবারো বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ২০১৭ সাল থেকে কূপটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল।
পেট্রোবাংলার গ্যাস মজুদের তথ্য অনুযায়ী, বিয়ানীবাজার গ্যাস ফিল্ডে ৯২ বিসিএফ (ডিসেম্বর-২০২১ পর্যন্ত) গ্যাস মজুদ রয়েছে। গ্যাসক্ষেত্রটিতে ২০৩ বিসিএফ গ্যাসের মজুদ আবিষ্কার হলেও এখন পর্যন্ত কূপটি থেকে ১১১ বিসিএফ গ্যাস উত্তোলন করা হয়েছে।
পেট্রোবাংলা ২০২২-২৩ অর্থবছরের মধ্যে মোট ১৬টি কূপ খনন, উন্নয়ন ও সংস্কারের পরিকল্পনা নিয়েছিল। এর মধ্যে বিয়ানীবাজার-১ কূপটিও ছিল।
এ কূপ থেকে দৈনিক পাঁচ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়ার আশা করা হয়েছিল যদিও এখন তা বেড়ে প্রায় ৯ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করতে পারছে বলে জানান পেট্রোবাংলা ও বাপেক্সর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: বনানীতে বুধবার ফের গ্যাস সরবরাহ বন্ধ
১ বছর আগে
সিলেট থেকে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে আরও ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস
জাতীয় গ্রীড সঞ্চালন লাইনে যুক্ত হচ্ছে প্রতিদিন আরও প্রায় ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। সোমবার থেকে সিলেটের বিয়ানীবাজার গ্যাসক্ষেত্রের ১ নম্বর কূপ থেকে এই গ্যাস সঞ্চালন লাইনে যুক্ত হবে। যা চলমান গ্যাস সঙ্কট কিছুটা লাঘব হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকা বিয়ানীবাজারের ১ কূপ গত গত সেপ্টেম্বরে খনন কাজ শুরু করে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স)।
সোমবার (২৮ নভেম্বর) থেকে এই কূপ হতে গ্যাস সরবরাহ শুরু হবে জানিয়ে সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেডের (এসজিএফএল) মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আব্দুল জলিল প্রামানিক বলেন, রবিবার বিকালে আমরা পরীক্ষামূলক সব কাজ সম্পন্ন করেছি। গ্যাসের চাপ পরীক্ষার (টেস্টিং) কাজ শেষে চূড়ান্ত পর্যায়ে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহের জন্য কারিগরি সব প্রস্ততি সম্পন্ন হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে সোমবার সকাল থেকেই এ কূপ হতে সঞ্চালন লাইনে গ্যাস সরবরাহ শুরু হবে।
এই কূপ থেকে প্রতিদিন ৮ মিলিয়ন গ্যাস গ্রিড লাইনে সরবরাহ করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।
বিয়ানীবাজার গ্যাসক্ষেত্রটি সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেডের (এসজিএফএল) আওতাধীন। এই গ্যাসক্ষেত্রের ২ নম্বর কূপ থেকে দৈনিক ৭ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় সঞ্চালন লাইনে সরবরাহ হচ্ছে।
এসজিএফএল সূত্রে জানা গেছে, বিয়ানীবাজার গ্যাস ফিল্ডের ১ নম্বর কূপ থেকে ১৯৯১ সালে গ্যাস তোলা শুরু হয়। ২০১৪ সালে তা বন্ধ হয়ে যায়। ২০১৬ সালে আবার উত্তোলন শুরু হলেও ওই বছরের শেষ দিকে আবারও তা বন্ধ হয়ে যায়। ২০১৭ সালের শুরু থেকেই কূপটি পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। এরপর বাপেক্স ওই কূপে অনুসন্ধানকাজ চালিয়ে গ্যাসের মজুত পায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১০ সেপ্টেম্বর ওই কূপে নতুন করে পুনঃখননকাজ (ওয়ার্ক ওভার) শুরু হয়। পুণঃখনন শেষে গত ১০ নভেম্বর থেকে কূপে গ্যাসের মজুদের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়। এরপর গ্যাসের চাপ পরীক্ষা শেষে কূপ থেকে দ্রুত জাতীয় সঞ্চালন লাইনে গ্যাস দেয়ার জন্য প্রস্তুত করা হয়।
আরও পড়ুন: ৪০০ কোটি টাকার বিল বকেয়া: ডিএনসিসি এলাকায় গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করছে তিতাস
এসজিএফএল’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, বর্তমানে এই কূপের ৩ হাজার ২৫৪ মিটার গভীরে ৭০ বিলিয়ন ঘনফুটের বেশি গ্যাস মজুত আছে। গ্যাসের চাপ পরীক্ষার পর দেখা গেছে কূপটি দৈনিক ১০ থেকে ১২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করতে সক্ষম। তবে কারিগরি বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে দৈনিক ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হবে। এতে দৈনিক ১২৫ থেকে ১৩০ ব্যারেল কনডেন্স গ্যাস পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
দেশে গ্যাসসংকটের সময়ে এ কূপ থেকে জাতীয় সঞ্চালন লাইনে গ্যাস সরবরাহ একটি আনন্দের সংবাদ উল্লেখ করে মিজানুর রহমান বলেন, বিয়ানীবাজার গ্যাস ফিল্ডের ১ নম্বর কূপে গ্যাস পাওয়ার পর আনুষঙ্গিক কাজ দ্রুত শেষ করে জাতীয় সঞ্চালন লাইনে সরবরাহের জন্য বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে। এর জন্য আমরা সফলভাবে কাজটি দ্রুত করতে পেরেছি। এ ছাড়া বিয়ানীবাজারের বিভিন্ন এলাকায় ত্রিমাত্রিক সিসমিক জরিপ চলছে। সেই জরিপ থেকে নতুন গ্যাস ফিল্ড পাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
মিজানুর রহমান বলেন, ২০২৫ সাল নাগাদ দেশের সকল কোম্পানি প্রায় ৪৬ টি কূপ খননের (ওয়ার্ক ওভার) মাধ্যেমে ৬১৮ মিলিয়ন গ্যাস বৃদ্ধি করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
বর্তমানে এসজিএফএলের আওতায় পাঁচটি গ্যাসক্ষেত্র আছে। এগুলো হলো হরিপুর গ্যাস ফিল্ড, রশিদপুর গ্যাস ফিল্ড, ছাতক গ্যাস ফিল্ড, কৈলাশটিলা গ্যাস ফিল্ড ও বিয়ানীবাজার গ্যাস ফিল্ড। এর মধ্যে ছাতক গ্যাস ফিল্ড পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে। বাকিগুলোর ১২টি কূপ থেকে বর্তমানে প্রতিদিন ৯১ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বিয়ানীবাজারে গ্যাসের সন্ধান: বাণিজ্যিকভাবে উত্তোলন নিয়ে অপেক্ষা
বিয়ানীবাজারের কূপ থেকে দিনে মিলবে ১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস
২ বছর আগে
কৈলাশটিলা গ্যাসক্ষেত্র: ১০ মে থেকে আসবে ১৭-১৯ এমএমসিএফডি গ্যাস
দেশের কৈলাশটিলা গ্যাসক্ষেত্র থেকে প্রতিদিন প্রায় ২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস (এমএমসিএফডি) আবিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ ২ মে তার ফেসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে এ তথ্য জানান।
তিনি স্ট্যাটাসে বলেন, ‘ঈদের আগে গ্যাস সরবরাহ সংক্রান্ত একটি ভালো খবর জানাতে চাই। আমাদের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেডে প্রায় দুই কোটি ঘনফুট গ্যাস (প্রতিদিন) আবিষ্কার হয়েছে। ’
আরও পড়ুন: বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রে পুনরায় পূর্ণ উৎপাদন শুরু
এদিকে, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, এসজিএফএল জানিয়েছে ১০ মে থেকে জাতীয় গ্রিডে ১৭-১৯ এমএমসিএফডি গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, আশা করা হচ্ছে গ্যাসক্ষেত্রের বর্তমান অঞ্চলটি পরবর্তী কয়েক বছর ধরে গ্যাস উৎপাদন অব্যাহত রাখবে।
নসরুল হামিদ বলেন, গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রম বাড়ানো হয়েছে এবং অনুভূমিক ও উল্লম্ব উভয় ড্রিলিংয়ের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, গভীর ড্রিলিং পরিচালনা করা সম্ভব হলে এটি আরও ভালো ফলাফল দেবে।
মন্ত্রী বলেন, কৈলাশটিলা গ্যাসক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত সাতটি কূপ খনন করা হয়েছে যার মধ্যে ২টি এখন প্রায় ২৯ এমএমসিএফডি গ্যাস উৎপাদন করছে।
আরও পড়ুন: বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রে প্রসেস ট্রেনের একটিতে উৎপাদন পুনরায় শুরু
২ বছর আগে
জকিগঞ্জে নতুন গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার
সিলেটের জকিগঞ্জকে দেশের ২৮ তম গ্যাসক্ষেত্র হিসেবে ঘোষণা করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘোষণা দেয়া হয়। জকিগঞ্জে ৬৮ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুদ রয়েছে বলে জানানো হয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ অফশোর তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানে মার্কিন বিনিয়োগ চায় বাংলাদেশ
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি (বাপেক্স) গত জুন মাসে এটি আবিষ্কার করেছিল, কিন্তু জকিগঞ্জ উপজেলার অনানাদাপুর গ্রামে ড্রিল করা কূপ থেকে গ্যাস পুনরুদ্ধারের সম্ভাব্যতা মূল্যায়ন করার জন্য এতদিন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হয় নি।
১৯৭৫ সালে বহুজাতিক শেল তেল কোম্পানি থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সিলেটের পাঁচটি গ্যাসক্ষেত্র দখলের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত উপলক্ষে ৯ আগস্ট জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস পালনের জন্য জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ আয়োজিত একটি ওয়েবিনারে নতুন গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কারের এই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হয়।
আরও পড়ুনঃ চট্টগ্রামে সাবেক মন্ত্রীপুত্রের ২২টি অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন
প্রতিমন্ত্রী বলেন, নতুন গ্যাসক্ষেত্রে ৬৮ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের সম্ভাব্য মজুদ রয়েছে যা আগামী ১২-১৩ বছরে প্রতিদিন ১০ মিলিয়ন ঘনফুট (এমএমসিএফডি) উত্তোলনযোগ্য।
‘নতুন গ্যাসক্ষেত্রে সমগ্র রিজার্ভের মূল্য হবে এক হাজার ২৭৬ কোটি টাকা’, তিনি আরও যোগ করেন।
নতুন এই ক্ষেত্রে জীবাশ্ম জ্বালানির সঠিক অবস্থান খুঁজতে একটি থ্রিডি জরিপ করা হবে। এখন পর্যন্ত দেশে ২৭ টি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে। এই গ্যাসক্ষেত্রগুলোতে ২১ . ৪ প্রমাণিত মজুদ টিসিএফ রয়েছে, আরও ছয়টি টিসিএফ সম্ভাব্য মজুদ রয়েছে। এর মধ্যে, প্রায় ১৮ টিসিএফ নেয়া হয়েছে। প্রমাণিত স্টক হিসাবে মাত্র তিনটি টিসিএফ বাকি আছে এবং সম্ভাব্য মজুদ আরও সাতটি টিএসএফ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ কলমা নদীতে গ্যাস উদ্গীরণ, সুনামগঞ্জে আতঙ্কে গ্রামবাসী
নসরুল হামিদ বলেন, ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে পুরো গ্যাস বিতরণ ব্যবস্থাকে একটি অটোমেশনের আওতায় আনার পদক্ষেপের অংশ হিসেবে গ্যাসের লিকেজ ঠেকাতে ঢাকা শহরের পুরনো গ্যাস পাইপলাইনগুলো নতুন করে বসানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব আনিসুর রহমান বলেন, ‘সরকার দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় দুটি কোম্পানি থেকে গ্যাস আমদানি করছে এবং আন্তর্জাতিক স্পট মার্কেটে অন্যান্য কোম্পানি থেকেও দেশীয় চাহিদা মেটাচ্ছে।’
আরও পড়ুনঃ শ্রীকাইল ২ গ্যাসক্ষেত্রের ৪ নম্বর কূপ থেকে গ্যাস সরবরাহ শুরু
তিনি আরও বলেন, ‘এই আমদানির জন্য স্থানীয় গ্যাসের দামের সাথে সামঞ্জস্য রেখে মূল্য কম রাখার জন্য ভর্তুকি হিসেবে ছয় হাজার ৩১২ কোটি টাকা প্রয়োজন, কারণ স্থানীয় গ্যাসের দাম প্রতি ৩-৫ ইউনিট ডলারের বিপরীতে আমদানি খরচ ৮-৯ ডলার।’
আনিসুর রহমানের সভাপতিত্বে ওয়েবিনারে আরও বক্তব্য দেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ওয়াসেকা আয়শা খান, একই কমিটির সদস্য খালেদা খান এবং বিশিষ্ট জ্বালানি বিশেষজ্ঞ নার্গিস রহমান এবং বুয়েটের অধ্যাপক ড এম তামিম, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান এবিএম আবদুল ফাতাহ, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) এবিএম আজাদ, হাইড্রোকার্বন ইউনিটের মহাপরিচালক মঞ্জুরুল কাদের, ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্স বাংলাদেশের (এফইআরবি) চেয়ারম্যান অরুণ কর্মকার এবং এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার ম্যাগাজিনের সম্পাদক মোল্লা আমজাদ হোসেন।
৩ বছর আগে