ডিজিটাল সেবা
সব স্থলবন্দরে ডিজিটাল সেবা কার্যক্রম চালু করা হবে: নৌপ্রতিমন্ত্রী
স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে দেশের সব স্থলবন্দরে ডিজিটাল সেবা কার্যক্রম চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সাতক্ষীরা জেলায় ভোমরা স্থলবন্দরের ডিজিটালাইজেশন প্রকল্পের ই-পোর্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, বন্দরের সেবা কার্যক্রম কাগজহীন করতে বেনাপোল ও বুড়িমারী স্থলবন্দরের পর তৃতীয় বন্দর হিসেবে ভোমরা স্থলবন্দরে অটোমেশন চালু করা হয়েছে।
প্রায় ১২শ কোটি টাকা ব্যয়ে ভোমরা স্থলবন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “ভোমরা বন্দর আগামী দিনের প্রাণকেন্দ্র হয়ে যাবে। 'হিরো' পোর্ট হয়ে যাবে। বন্দরটি যেন কোনো সংকটে না পড়ে সেজন্যে সংশ্লিষ্ট সবাইকে কাজ করতে হবে।”
প্রতিমন্ত্রী বলেন, গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ট্রেড ফ্যাসিলিটেশনের (জিএটিএফ) অর্থায়নে প্রায় ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ভোমরা স্থলবন্দরে ডিজিটালাইজেশন করা হয়েছে। এই কার্যক্রম প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে পণ্য সরবরাহ সচল রাখতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ব্যবসাবান্ধব করে তুলতে ভোমরা বন্দরে ই-পোর্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম উদ্বোধন করা হয়েছে। স্থলবন্দরগুলোতে অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। আপডেট করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন উল্লেখ করে নৌপ্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময় সড়ক, রেল, আকাশ, নৌপথে সর্বক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘মোংলা বন্দরকে লাভজনক করা হয়েছে। পায়রা বন্দর করা হয়েছে। মাতারবাড়ি সমুদ্র বন্দর করা হচ্ছে। এসব উন্নয়নের ফলে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক নৌসংস্থায় 'সি' ক্যাটাগরিতে সদস্য নির্বাচিত হয়েছে।’
বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন- সংসদ সদস্য ডা. আ ফ ম রুহুল হক, সংসদ সদস্য আশরাফুজ্জামান আশু, সংসদ সদস্য লায়লা পারভীন সেঁজুতি, সুইসকন্টাক্ট বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর মুজিবুল হাসান, গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন (জিএটিএফ) ডিরেক্টর ফিলিপ আইলার, সুইসকন্টাক্টের ডিরেক্টর (গ্লোবাল প্রোগ্রামস) বেনজামিন ল্যাংসহ আরও অনেকে।
৪ মাস আগে
অভয় অ্যাপ: কিশোরীদের নিরাপত্তায় নতুন মাত্রা
জনবহুল স্থানে কিশোরীদের চলাফেরায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিওয়াইএস (বরিশাল ইয়থ সোসাইটি) এবং প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ নিয়ে এলো ‘অভয় অ্যাপ’। এর মাধ্যমে কিশোরীরা খুব সহজেই নিকটস্থ থানার পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক সহায়তা পাবে। বরিশাল ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল ভিত্তিক অভয় অ্যাপটির উদ্বোধন হয় ১২ জুন, ২০২১ অনলাইন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে।
চলুন, অত্যন্ত সময়োপযোগী এই প্রয়াসটির ব্যাপারে আরো কিছু জেনে নেই।
অভয় অ্যাপ-এর ফিচারসমূহ-
নিকটবর্তী থানার যোগাযোগ নাম্বার
অভয় অ্যাপের সেবাগুলোর মধ্যে এই ফিচারটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। গুগল প্লে-স্টোর থেকে অ্যাপটি ডাউনলোড করে মোবাইলে ইন্সটল করা পর এই অ্যাপে ঢুকলে হোমপেজেই সবার উপরে পাওয়া যাবে ‘নিকটবর্তী থানা’ অপশনটি। এটি ব্যবহার করে কিশোরীরা নিকটবর্তী থানার যোগাযোগ নাম্বার খুঁজে পাবে। অতঃপর সে নাম্বারে যোগাযোগ করে অভিযোগ পেশ করতে পারবে।
আরও পড়ুন: প্রান্তিক পর্যায়ে ডিজিটাল কানেক্টিভিটি বাড়ানোর আহ্বান বিশেষজ্ঞদের
জরুরি হটলাইন নাম্বার
এ অংশে জরুরি হেল্পলাইন নাম্বার ও সরকারী তথ্যসেবা নাম্বার সহ বেশ কিছু নাম্বার লিপিবদ্ধ করা আছে। এগুলোতে যোগাযোগের মাধ্যমে কিশোরীরা নারী নির্যাতন প্রতিরোধের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবে।
নারীর অধিকার সম্পর্কিত নীতিসমূহ
প্রতিটি কিশোরীর উচিত নিজের অধিকার সম্পর্কে সচেতন থাকা এবং অন্য কিশোরী ও তরুণীদের তাদের অধিকার সম্বন্ধে সচেতনা করা। আর এ লক্ষ্যেই বিভিন্ন সময়ে প্রণীত উল্লেখযোগ্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নীতিমালা অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে অভয় অ্যাপে।
নারী সহিংসতার তথ্যাবলি
এই ফিচারটি ঠিক কোন কোন কাজগুলো নারী সহিংসতার মধ্যে পড়ে সে ব্যাপারে কিশোরীদেরকে অবগত করবে। এখানে ব্র্যাক-এর রেফারেন্সে ইভ টিজিং থেকে শুরু করে নারীর প্রতি সাইবার অপরাধ সম্পর্কিত তথ্য পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের সহিংসতামুলক কর্মকান্ড স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ক্যাশলেস সোসাইটির দিকে যাচ্ছে দেশ: টিআরএনবি ওয়েবিনারে বক্তারা
অনুপ্রেরণামূলক ভিডিও
অধিকাংশ ক্ষেত্রে লজ্জা এবং ভয়ের কারণে বাংলাদেশে নারীদের প্রতি অবিচারগুলো সবার অগোচরে থেকে যায়। সেই সব অপকর্মের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে তাদের প্রয়োজন উৎসাহ এবং সাহস। এই প্রেক্ষাপটকে সামনে রেখেই তৈরি করা হয়েছে এই সেকশনটি। এখানে বিভিন্ন সীমিত পরিসরের নাটিকা সম্বলিত বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে কিশোরীরা জানতে পারবে- কিভাবে তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিটি অপতৎপরতার সঠিক জবাব দিতে হয়।
অভয় অ্যাপটির জন্য যা প্রয়োজন
অ্যান্ড্রয়েড-৫ ও তার উপরের ভার্সন ব্যবহারকারীরা গুগল প্লে-স্টোর থেকে ডাউনলোড করে তাদের মোবাইল ফোনে অ্যাপটি ব্যবহার করতে পারবেন। বিওয়াইএস ৮ জুন, ২০২১ এ অ্যাপটি রিলিজ করার পর বর্তমানে এটির ১.৬ ভার্সন চলছে। মাত্র ৩.০১ মেগাবাইটের এই অ্যাপটি ব্যবহার করার জন্য স্মার্টফোনের লোকেশন অন রাখতে হবে। বাংলা এবং ইংরেজি দুই ভাষাতেই অ্যাপটি চালানো যাবে। খুব সহজ ইউজার ইন্টারফেসের এই অ্যাপটিতে যোগাযোগের নাম্বারগুলো নিমেষেই ফোনের ডায়ালে চলে আসায় সাথে সাথেই ফোন কল করা যায়।
আরও পড়ুন: ফেসবুকে জানা যাবে নিকটস্থ টিকাকেন্দ্রের খোঁজ
অভয় অ্যাপের স্বপ্নদ্রষ্টা
অত্যন্ত সাবলীল ও সমসাময়িক এই অ্যাপটির উদ্যোক্তা বিওয়াইএস (বরিশাল ইয়থ সোসাইটি)। ২০১৪ সাল থেকে এক ঝাক তরুণ-তরুণী দ্বারা পরিচালিত এই সংগঠনটি সুবিধা বঞ্চিত কিশোরীদের অধিকার সুনিশ্চিত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। ১০,০০০-এর বেশি সদস্য ও ৮০০-এর বেশি স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে ২৯০টি বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ এবং শতাধিক কিশোরীর কর্মসংস্থানের মত ১৭টিরও বেশি প্রোজেক্ট তারা সফলভাবে সম্পন্ন করেছে।
‘সহিংসতার ভয় আর নয়’ স্লোগান নিয়ে বিওয়াইএস সারা বাংলাদেশের ১০ লক্ষ কিশোরীকে অভয় অ্যাপ-এর আওতাভুক্ত করবে।
অভয় অ্যাপ-এর দেখানো পথ ধরে সামনে নারী সহিংসতা প্রতিরোধে আরো কার্যকরী পদক্ষেপের উদ্ভব হবে। এভাবে ছোট্ট একটি শহর থেকে নিরাপদ হবে গোটা একটি জেলা। জেলা থেকে বিভাগ; অতঃপর পুরো দেশের জনবহুল রাস্তাগুলো ঢেকে যাবে নিরাপত্তার বেষ্টনীতে, যেখানে কিশোরীরা নির্ভয়ে চলাফেরা করতে পারবে।
৩ বছর আগে