ফোনে আড়িপাতা বন্ধ ও তদন্ত
ফোনে আড়িপাতা বন্ধ ও তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে রিট
টেলিফোনে আড়িপাতা বন্ধের নিশ্চয়তা ও ফাঁস হওয়া ঘটনাগুলোর তদন্ত চেয়ে মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের ১০ আইনজীবী বাদী হয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদন করেছেন।
রিট আবেদনে সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, সচিব, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে বিবাদী করা হয়।
১০ আইনজীবীর পক্ষে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির আবেদনটি দায়ের করেন।
আরও পড়ুন: ১১ আগস্ট থেকে হাইকোর্টের ৫৩ বেঞ্চে ভার্চুয়াল কার্যক্রম শুরু
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মুস্তাফিজুর রহমান সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চে আদালতের কার্যসূচি অনুযায়ী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
রিট আবেদনে ২০১৩ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সংঘটিত ২০টি আড়িপাতার ঘটনা উল্লেখ করা হয়। তার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সংলাপ, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ফোনালাপ, প্রয়াত সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ ও রাজশাহী মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার নাজমুল হাসানের ফোনালাপ, ভিকারুন্নিসা নুন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ, মাওলানা মামুনুল হক, যশোর-৬ আসনের সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদার, ফরিদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরী (নিক্সন), সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যার ফোনালাপ, সাবেক ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুরের ফোনালাপ উল্লেখযোগ্য।
এ সকল আড়িপাতার ঘটনা বাংলাদেশের গণমাধ্যমে বহুল প্রচারিত হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
রিট আবেদনে বলা হয়, সংবিধানের ৪৩ অনুচ্ছেদে চিঠিপত্র ও যোগাযোগের অন্যান্য উপায়ের গোপনীয়তা সংরক্ষণ নাগরিকের মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। এই অধিকার সংবিধান কর্তৃক নিশ্চিত করা হয়েছে। অর্থাৎ, সংবিধানের তৃতীয়ভাগে উল্লেখিত মৌলিক অধিকার সমূহের মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা সংরক্ষণ অন্যতম।
এছাড়াও টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন ২০০১ এর ধারা ৩০ (চ) অনুযায়ী টেলিযোগাযোগের একান্ততা রক্ষা নিশ্চিত করবে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন। কিন্তু লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, এই ধরনের ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনা অহরহ ঘটছে। অথচ, বাংলাদেশের সংবিধান ও প্রচলিত আইন অনুযায়ী কমিশনের দায়িত্ব হল ব্যক্তিগত গোপনীয়তা সংরক্ষণ নিশ্চিত করা।
টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০০১ এর ধারা ৭১ ধারা অনুযায়ী আড়িপাতা দণ্ডনীয় অপরাধ। এই অপরাধে দোষী ব্যক্তি দুই বছর কারাদণ্ড অথবা অনধিক ৫ কোটি টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। অথচ আজ পর্যন্ত কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে কারও বিরুদ্ধে কোনও মামলা দায়ের করেনি। এই পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টের ১০ জন আইনজীবী এই রিট আবেদন দায়ের করেন।
আরও পড়ুন: ভার্চুয়াল আদালতে শুনানি: ২৫ দিনে ৩৯ হাজার ২০২ জনের জামিন
রিটকারী আইনজীবীরা হলেন, অ্যাডভোকেট মুস্তাফিজুর রহমান, অ্যাডভোকেট রেজওয়ানা ফেরদৌস, অ্যাডভোকেট উত্তম কুমার বনিক, অ্যাডভোকেট শাহ নাবিলা কাশফী, অ্যাডভোকেট ফরহাদ আহমেদ সিদ্দীকী, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ নওয়াব আলী, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ইবরাহিম খলিল, অ্যাডভোকেট জি এম মুজাহিদুর রহমান (মুন্না),অ্যাডভোকেট ইমরুল কায়েস ও অ্যাডভোকেট একরামুল কবির।
৩ বছর আগে