ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট
চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার অনুমতি পেলেন সম্রাট
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার ঢাকার বিশেষ আদালত-৬ এর বিচারক মো. মঞ্জুরুল ইমামের আদালতে সম্রাটের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত আইনের মামলাটি চার্জ শুনানির জন্য ছিল। এজন্য এদিন সম্রাট সকালে আদালতে হাজিরা দেন।
তবে তার পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী এহসানুল হত সমাজী অভিযোগ গঠন শুনানি পেছানোর আবেদন করেন। আদালত সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে ৬ জুলাই অভিযোগ শুনানির পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন। সম্রাটের বিদেশে গিয়ে চিকিৎসার আবেদন করলে আদালত মঞ্জুর করেন।
সম্রাটের আইনজীবী এহসানুল হত সমাজী জানান, আজকে মামলাটি অভিযোগ শুনানির জন্য ধার্য ছিল।
আরও পড়ুন: দুদকের মামলায় সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শুনানি ১ জুন
তবে এই মামলার গুরুত্বপূর্ণ কিছু ডকুমেন্ট আমরা এখনো সংগ্রহ করতে পারেনি। এজন্য সময়ে আবেদন করি।
তিনি আরও বলেন, আদালত সময়ের আবেদনটি মঞ্জুর করেন। এছাড়া, আমরা আজকে সম্রাটের উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতির বিষয়ে শুনানি করেছি। আদালত স্বল্প সময় অর্থাৎ দুই মাসের মধ্যে পাসপোর্ট নিয়ে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেন। যে কোনো দেশে ভিসা পাওয়ার এক মাসের মধ্যে চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরার মৌখিকভাবে আদেশ দিয়েছেন।
জানা যায়, ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর দুদকের উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম দুই কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সম্রাটের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন।
২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর মামলাটি তদন্ত করে সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম।
আরও পড়ুন: সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি ৯ এপ্রিল
দুদকের মামলায় সম্রাটের চার্জ শুনানি পিছিয়ে ৮ নভেম্বর
১ বছর আগে
সম্রাট কেন জেলে? পাঁচ তারা জেল চাই!
মিডিয়া বলছে সম্রাট পিজিতে ছিল ২৪৪ দিন। পিজি কর্তৃপক্ষ বলছে ১৫ দিন। মিডিয়ার সূত্র জেল কর্তৃপক্ষ। পাবলিক মনে করছে এটা অংকের সমস্যা, সিস্টেমের নয়। ক্যাসিনো ঝামেলায় ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর গ্রেপ্তার হন ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট।
ব্যাপার কি?
এই প্রসঙ্গে ‘আমাদের পত্রিকা’ বিভিন্ন মানুষের সাথে কথা বলে মতামত নেয়।
সকল বিষয় সজ্ঞ বিশ্ষেজ্ঞকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, ‘এতো চিন্তিত হবার কিছু নেই। তিনি খুবই নিরীহ প্রকৃতির ভালো মানুষ এবং দেশে অনেক বড় বড় রাজনৈতিক কাজ করেছেন। তিনি আসলে একটু রেস্টে ছিলেন, সম্ভবত বাসাতেই ছিলেন। আমার সাথে ফোনে কথা হয় তবে ঠিকানা দেননি কারণ আমি ধরে নিয়েছি তিনি জেলেই আছেন বা পিজিতে বা বাসা। তবে মিডিয়ার সব দোষ। ধন্যবাদ।’
বিদেশে থাকা এক পন্ডিত যিনি দেশের বিষয় গবেষণা করেছেন তিনি বলেন, ‘এই বিষয়টার উত্তর জানা যাবে এডওয়ার্ড সাঈদের লেখায়, দেরিদার ভাবনায়। আমাদের বুঝতে হবে যে পশ্চিমা উদার পুঁজিবাদী সমাজের আদলে জেল ব্যবস্থা চলবে না। নতুন করে ফাঁনো ও ফুকোর আদলে জেল ব্যবস্থা দরকার।’
জনৈক রাজনীতিবিদকে জিজ্ঞাসা করা হলে জানান, তিনি কোনোদিনই তাকে ‘সম্রাট’ ডাকবেন না। আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি সবার জন্য। আমরা দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই। সম্রাট এই দেশের রাজতন্ত্রপন্থী নাম। এই ধরণের নাম যেমন, সম্রাট, রাজা, বাদশা ইত্যাদি সাংবিধানিকভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে।’
নারীবাদী কর্মী সুলতানাকে জিজ্ঞাসা করা হয়। তিনি এটাকে পুরুষতন্ত্রের একটি প্রকাশ বলে জানান। তার কথা হচ্ছে, ‘আমরা দেখলাম সকল আসামি পুরুষ এবং তাদের সবার বিভিন্ন হেলথ প্রব্লেম হচ্ছে। তারা পিজিতে যাচ্ছে এবং থাকছে অথচ আমরা কেউ শুনছি না নারী জেলবাসীদের কি হচ্ছে। তাদের অনেকেরই হৃৎপিণ্ড পুরুষতন্ত্রের নির্যাতনে ক্ষতিগ্রস্ত কিন্তু কই তারা তো পিজিতে নেই? আমরা সরকারের কাছে দাবি করছি এর সমাধানের জন্য এবং যদি না হয় আমরা দেশের বিভিন্ন জেলের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি নেব।
কয়েদির কথা
করম আলী মিয়া একজন পেশাদার বাটপার। তিনি প্রায় ২০ বছর ধরে ঢাকা জেলে ছিলেন কয়েদি হিসেবে। তার বক্তব্য হচ্ছে, জেল বলে কিছু নাই, সবই মায়া। এটি একটি জানালার মতো। কখনো খোলা কখনো বন্ধ। প্রয়োজনে জেলের দরজা খুলবে, কিন্তু খরচ করতে হবে। ‘কোথাও কি লেখা আছে যে সব সময় জেলে থাকতে হবে? আমি জেলে যেতাম মাসে একবার, কয়েকদিন থেকে আমার বাড়িতে আসতাম। ব্যবসা বাণিজ্য ভালোই চলতো, একাধিক বিয়ে করেছি, বহু সন্তান আমার, এটা কি করে সম্ভব হলো। আসলে জেল একটি মনের ব্যাপার, ভাবলে আছে, ভাবলে নেই।’
সবার সাথে আলাপ করে বোঝা গেলো এই জেল ব্যবস্থা ব্রিটিশদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত কিন্তু সেই কাল আর নেই। তাই জেল ব্যবস্থার সংস্কার চাই। আমাদের সাপ্তাহিক ও মাসিক জেলের সিস্টেম বানাতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ লোকদের দীর্ঘ দিন ভেতরে রাখা ঠিক হবে না। এতে দেশের ক্ষতি। তাছাড়া জেলে এসি, ফ্রিজ কিছুই নেই, এইভাবে জেল চলতে পারে না। পিজি আর কত লোড নেবে। আমরা আশা করবো যাতে সরকার পাঁচ তারা জেলের ব্যবস্থা করেন যাতে সবাই জেলে যেতে আগ্রহী হয়!
(লেখাটা কাল্পনিক)
লেখক: এডিটর এট লার্জ, ইউএনবি
৩ বছর আগে