উপকারিতা
নতুন প্রকল্প গ্রহণের আগে খরচ ও উপকারিতা বিবেচনা করুন: পরিকল্পনা কমিশনে শেখ হাসিনা
চলমান কোন কোন প্রকল্প স্বল্প ব্যয়ে দ্রুত শেষ করা যাবে এবং তা থেকে সবচেয়ে বেশি অর্থনৈতিক সুবিধা পাওয়া যাবে সেটি চিহ্নিত করতে পরিকল্পনা কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, 'যেসব উন্নয়ন কর্মসূচি অল্প টাকায় শেষ হবে, সেগুলোকে আমাদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। কারণ আমি মনে করি, এসব প্রকল্প যত দ্রুত শেষ করতে পারব তত দ্রুত দেশবাসী এর সুবিধা ভোগ করতে পারবে।’
শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি মিলনায়তনে নতুন সরকার গঠনের পর কমিশনের প্রথম সভার সূচনা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি এই কমিশনের চেয়ারপারসনও।
তিনি প্রকল্প বাস্তবায়নে দেরি করা ও মেয়াদ বৃদ্ধি এড়াতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে আরও সৌদি বিনিয়োগ চান প্রধানমন্ত্রী
প্রকল্পগুলোর ব্যয় ও প্রত্যাশিত সুযোগ-সুবিধার বিষয়টি গভীরভাবে খতিয়ে দেখতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, 'নতুন প্রকল্প গ্রহণের সময় প্রকল্প ব্যয়ের, কী পরিমাণ ঋণ লাগবে, সুদসহ আমাদের কত পরিশোধ করতে হবে, ঋণ পরিশোধের জন্য আমরা কত সময় পাব এসব বিষয় গভীরভাবে বিবেচনা করুন।’
একই সঙ্গে দেশের সেই পরিমাণ ঋণ নেওয়ার সক্ষমতা আছে কি না, তাও খতিয়ে দেখতে বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'যেকোনো প্রকল্প গ্রহণের আগে এটা খুবই প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, এছাড়া একটি নির্দিষ্ট এলাকার জন্য নির্দিষ্ট প্রকল্পের আয় ও কার্যকারিতা সরকারকে বিবেচনায় নিতে হবে। ‘এতে সাধারণ মানুষ কতটুকু লাভবান হবে এবং অর্থনীতিতে কতটুকু ঢুকবে। আমাদের সেদিকে নজর দিতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, ২০২৬ সালের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের জন্য প্রস্তুত বাংলাদেশ, এ সময় এ উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ সম্পন্ন করবে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন,‘ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমরা কী ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাব, সে বিষয় সুনির্দিষ্ট হতে হবে। সেখান থেকে আমাদের জন্য সেরা সুযোগ-সুবিধা নিতে হবে। আর সে অনুযায়ী আমাদের কাজ শুরু করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বল্প উন্নত দেশ হিসেবে যেসব সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে, উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পর তার অনেক সুবিধা পাওয়া যাবে না। যদিও এটি ২০২৯ সাল পর্যন্ত পাওয়া যাবে এবং সরকার এরই মধ্যে ২০৩২ সাল পর্যন্ত তা বাড়ানোর অনুরোধ করেছে।
তিনি বলেন, 'আমাদের চ্যালেঞ্জিং সময়ে আমাদের এই সমস্ত বিষয় বিবেচনা করতে হবে এবং সেগুলো মোকাবিলার উপায় খুঁজে বের করতে হবে।’
তিনি স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ইতিবাচক সুফল যাতে দেশের প্রতিটি দরজায় পৌঁছে যায় এবং জনগণ উন্নত ও সমৃদ্ধ জীবনের আনন্দ উপভোগ করতে পারে সেজন্য সবাইকে কঠোর পরিশ্রম করার আহ্বান জানান।
তিনি ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে স্মার্ট দেশে পরিণত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মসূচিতে সহযোগিতা করতে ফ্রান্সের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
১০ মাস আগে
লাল চাল: কেন খাবেন এবং কারা এড়িয়ে চলবেন?
ধান থেকে খোসা ছাড়ানোর পর পরই পাওয়া যায় ব্রাউন রাইস বা লাল চাল। ধানের তিনটি অংশ থাকে। ফাইবার-ভরা বাইরের স্তরটি তুষ, একদম ভেতরের স্তরে থাকে পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ বীজ যা এন্ডোস্পার্ম নামক কঠিন মধ্যম স্তর দিয়ে আবৃত। বাইরে থাকা তুষের খোসা ফেলে দেয়া হয়।
সাধারণত আমরা যে চালের ভাত খাই অর্থাৎ সাদা চাল অপেক্ষা এই লাল চাল স্বাস্থ্যের জন্য অধিক উপকারী। চলুন জেনে নেই, কেন এই লাল চাল খাওয়া উচিত, আর কোন কোন ক্ষেত্রে লাল চাল এড়িয়ে চলবেন।
ব্রাউন রাইস বা লাল চাল খাওয়ার উপকারিতা-
লাল চালের পুষ্টিগুণ
যদিও সাদা চালের মত লাল চালে ক্যালোরি এবং কার্বোহাইড্রেট ভরপুর, তবে অন্যান্য প্রায় সকল পুষ্টি ক্ষেত্রে বাদামী বা লাল চাল সাদা চালকে ছাড়িয়ে যায়।
এই গোটা শস্যটি ফোলেট, রাইবোফ্লাভিন (বি-২), পটাশিয়াম এবং ক্যালসিয়ামের একটি ভাল উৎস।
উপরন্তু, লাল চালে অধিক হারে ম্যাঙ্গানিজ বিদ্যমান। এই খনিজ উপাদানটি শরীরের অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়ার জন্য অত্যাবশ্যক, যেমন হাড়ের বিকাশ, ক্ষত নিরাময়, পেশী সংকোচন, বিপাক, স্নায়ুর কার্যকারিতা এবং রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণ। ম্যাঙ্গানিজের অভাবে বিপাকীয় সমস্যা, হাড়ের ক্ষয়, দূর্বল বৃদ্ধি এবং কম উর্বরতা সম্বলিত জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। আপনার প্রায় সমস্ত দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় পুষ্টির জন্যে এই চালের মাত্র এক কাপ ভাত-ই যথেষ্ট।
ভিটামিন এবং খনিজ ছাড়াও, লাল চাল শক্তিশালী উদ্ভিদ যৌগ সরবরাহ করে। উদাহরণস্বরূপ, লাল চালের মধ্যে রয়েছে ফেনল এবং ফ্ল্যাভোনয়েডস নামক এক শ্রেণির অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরকে জারণ চাপ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। অক্সিডেটিভ স্ট্রেস হৃদরোগ, ক্যান্সার এবং অকাল বার্ধক্য সহ বেশ কয়েকটি ভয়াবহ রোগের দিকে ধাবিত করে।
ব্রাউন রাইসে পাওয়া অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো ফ্রি-র্যাডিক্যাল নামক অস্থির অণু দ্বারা সৃষ্ট কোষের আঘাত রোধ করতে এবং শরীরের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
আরও পড়ুন: হার্ট অ্যাটাক: করণীয় এবং প্রতিরোধে যে সকল পদক্ষেপ নিতে হবে
ওজন কমাতে লাল চাল
লালা চাল ওজন কমাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। সাদা চালের মতো পরিশোধিত শস্যের তুলনায় লাল চালের মতো গোটা শস্য প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং পুষ্টি ধারণ করে।
উদাহরণস্বরূপ, ১৫৮ গ্রাম লাল চালের মধ্যে ৩.৫ গ্রাম ফাইবার থাকে, যা সাদা ভাতের মধ্যে থাকে ১ গ্রামেরও কম।
ফাইবার দীর্ঘ সময় ধরে আপনার পাকস্থলি পরিপূর্ণ রাখে বিধায় ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার নির্বাচন আপনাকে সামগ্রিকভাবে কম ক্যালোরি গ্রহণে সাহায্য করতে পারে। লাল চাল পেটের মেদ কমাতেও সাহায্য করে।
হার্টের সুস্থতায় লাল চাল
লাল চাল ফাইবার এবং উপকারী যৌগসমৃদ্ধ হওয়ায় এটি হৃদরোগের ঝূঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে।
লাল চালের ভাতে লিগনান্স নামক যৌগ রয়েছে যা হৃদরোগের ঝূঁকির কারণগুলো উপশমে সাহায্য করতে পারে। লিগনান সমৃদ্ধ খাবার যেমন- তিসি, তিল এবং বাদাম, উচ্চ কলেস্টেরল, নিম্ন রক্তচাপ এবং ধমনীর শক্ত হয়ে যাওয়া হ্রাসে সাহায্য করে।
লাল চালের মধ্যে থাকা ম্যাগনেসিয়াম নামক খনিজ উপাদান হার্ট-সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আরও পড়ুন: কোলেস্টেরল কমানোর কার্যকরী ঘরোয়া উপায়
উচ্চ ডায়াবেটিস কমাতে লাল চাল
যদিও রক্তে শর্করার উপর কার্বোহাইড্রেট সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে, ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তিরা সাদা ভাতের মতো পরিশোধিত শস্য জাতীয় খাবারগুলো কম খেয়ে রক্তে শর্করা এবং ইনসুলিনের স্পাইক কমিয়ে থাকেন।
সাদা চালের বদলে লাল চাল খেয়ে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা বিভিন্ন উপায়ে উপকৃত হতে পারেন। লাল চালে বিদ্যমান ম্যাগনেসিয়াম এবং ফাইবার উভয়ই রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
লাল চালে সাদা ভাতের তুলনায় কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স থাকে, যার অর্থ হল এটি ধীরে হজম হয় এবং রক্তে শর্করার উপর কম প্রভাব ফেলে। নিম্ন গ্লাইসেমিক সূচকযুক্ত খাবার নির্বাচন করা ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের রক্তের শর্করাকে আরও ভালভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করতে পারে।
সাদা চালে গ্লাইসেমিক সূচক (জিআই)-এর মাত্রা বেশি, যা একটি খাদ্য কত দ্রুত রক্তে শর্করা বাড়ায় তা পরিমাপ করে। লাল চালের জিআই-৫০ এবং সাদা চালের জিআই-৮৯, যার অর্থ হল সাদা চাল রক্তে শর্করার মাত্রা লাল চালের তুলনায় অনেক দ্রুত বৃদ্ধি করে। উচ্চ-জিআই খাবার খাওয়ার সাথে টাইপ-২ ডায়াবেটিস সহ বেশ কিছু দীর্ঘস্থায়ী রোগ হওয়ার সম্ভাবনা জড়িত।
ঘ্রেলিনের মাত্রা কমানো ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে, যা অতিরিক্ত খাওয়া কমাতে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করতে পারে।
এছাড়াও, লাল চাল প্রাথমিক অবস্থায় টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা হ্রাস করতে পারে।
আরও পড়ুন: করোনা মহামারি থেকে শিশুকে নিরাপদ রাখবেন কীভাবে?
ক্ষতিকর গ্লুটেন এড়াতে লাল চাল
গ্লুটেন একটি প্রোটিন যা গম, বার্লি এবং রাইয়ের মতো শস্যে পাওয়া যায়।
অনেকে গ্লুটেনে অ্যালার্জি থাকার কারণে পেটে ব্যথা, ডায়রিয়া, ফুসকুড়ি এবং বমির মতো হালকা থেকে গুরুতর প্রতিক্রিয়া অনুভব করে থাকেন। উপরন্তু, গাঁট-ফোলানো বাত ও টাইপ-১ ডায়াবেটিসের মত অটোইমিউন রোগাক্রান্ত লোকেরা প্রায়ই গ্লুটেন-মুক্ত খাদ্য থেকে উপকৃত হন।
এই সকল কারণে গ্লুটেন-মুক্ত খাবারের ক্রমবর্ধমান চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে।
সৌভাগ্যবশত, লাল চালের ভাত প্রকৃতিগতভাবেই এই সমস্যাযুক্ত প্রোটিন থেকে মুক্ত থাকার কারণে যারা গ্লুটেন নিতে পারেন না তাদের নিরাপদ পছন্দে পরিণত হয়েছে।
গ্লুটেন-মুক্ত ডায়েটে থাকা লোকেদের জন্য বিভিন্ন স্বাস্থ্যকর গ্লুটেন-মুক্ত পণ্য যেমন ক্র্যাকার এবং পাস্তার মধ্যে লাল চাল ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
আরও পড়ুন: কোরিয়ান মেয়েদের রূপ রহস্য: দৈনন্দিন ত্বক পরিচর্যার ১০টি ধাপ
৩ বছর আগে