কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর
দেশের ৬ জেলার ১৪৪ কৃষক-কৃষি কর্মকর্তাকে পুরস্কার দিল ডিএই
কৃষিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখার জন্য তিনটি ক্যাটাগরিতে দেশের ৬ জেলার ১৪৪ জন কৃষক ও উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা এবং উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে পুরষ্কার দিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই)।
বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতাভুক্ত ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোণা জেলার প্রতিটিতে ৩টি ক্যাটাগরিতে ১ জন প্রথম, ২ জন দ্বিতীয় ও ৫ জন করে যৌথভাবে তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৮ মে) সকাল ১১টায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) সৈয়দ নজরুল ইসলাম অডিটোরিয়ামে কৃষক পুরস্কার বিতরণ ২০২৪ ও ‘আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আউশ ধান আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধিতে করণীয়’ শীর্ষক এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন: পরিবর্তনশীল জলবায়ুর জন্য কাসাভা উপযুক্ত, হেক্টরপ্রতি ফলন ৩৫-৫০ টন: বাকৃবি অধ্যাপক
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ বাদল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন দেশের এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদী না থাকে। তার নির্দেশেই কাজ করে যাচ্ছে কৃষি সপ্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। পাহাড়ি এলাকার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদেরও প্রকল্পের আওতায় আনা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের যথেষ্ট প্রভাব থাকলেও ডিএই মাঠ পর্যায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করছে। আমাদের দেশের কৃষকরা আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহারে সচেতন হচ্ছেন। এর ফলে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি ফলনও ভালো হচ্ছে।
বাকৃবির মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মফিজুর রহমান জাহাঙ্গীর বলেন, কৃষি জমির পরিমাণ ও মাটির উর্বরতা কমে যাওয়ায় খাদ্য উৎপাদন একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী খাদ্য চাহিদা মেটাতে কৃষি উৎপাদন ৬০ শতাংশ বাড়াতে হবে।
কৃষি উৎপাদন বাড়াতে কৃষকদের উদ্দেশ্যে ড. জাহাঙ্গীর বলেন, আধুনিক পদ্ধতিতে জমিতে সেচ দেওয়া, বছরের পর বছর একই চাষ না করা, জমিতে চাষ কম দেওয়া ও ফসলের উচ্ছিষ্ট জমিতে ফেলে রাখার মাধ্যমে জমির উর্বরতা ও ফলন বাড়ানো সম্ভব।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে কৃষকদের আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধিতে নানা বিষয় আলোচনা করা হয় এবং প্রকল্পের আওতাভুক্ত ৬টি জেলার কৃষি উৎপাদনের চিত্র তুলে ধরা হয়। তাছাড়া বস্তায় আদা চাষ ও পলিনেট হাউজের ব্যবহার ও উপকারিতা কৃষকদের মাঝে তুলে ধরা হয়।
ডিএই'র ময়মনসিংহ অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ সালমা আক্তারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ বাদল চন্দ্র বিশ্বাস পুরস্কার তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাকৃবির মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মফিজুর রহমান জাহাঙ্গীর।
আরও পড়ুন: সুস্থ-সবল জাতি গঠনে ওয়ান হেলথ গুরুত্বপূর্ণ: বাকৃবি উপাচার্য
বাকৃবিতে তিন দেশের শিক্ষার্থীদের মাঝে সার্জিক্যাল কিট বক্স বিতরণ
৬ মাস আগে
ঘূর্ণিঝড় মোখার সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে কৃষকদের আগাম ধান ও অন্যান্য ফসল কাটার নির্দেশ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের
ঘূর্ণিঝড় 'মোখা' এর ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে কৃষকদের ৮০ শতাংশ পাকা ধান, আম ও অন্যান্য ফসল কাটার নির্দেশ দিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই)।
মঙ্গলবার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কৃষকরা যাতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন সেজন্য গণপ্রচারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কৃষি কর্মকর্তাদের তাদের নিজ নিজ কর্মস্থলে সার্বক্ষণিক প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান এবং বাংলাদেশ কৃষি আবহাওয়া তথ্য সেবা (বামিস) পোর্টাল অনুসরণ করে আবহাওয়া পরিস্থিতি সম্পর্কে আপডেট নিতে বলেছে।
এতে আরও বলা হয়, আবহাওয়া অফিসের সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুযায়ী, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি ১২ বা ১৩ মে'র মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে এবং সেক্ষেত্রে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।
আরও পড়ুন: তাপপ্রবাহ থেকে ফসল রক্ষায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের নির্দেশিকা
১ বছর আগে
এক বছরে সরিষার উৎপাদন বেড়েছে ৩০০০ কোটি টাকার: কৃষি মন্ত্রণালয়
ভোজ্যতেলের চাহিদার শতকরা ৪০ ভাগ স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করতে তিন বছর মেয়াদি কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে কৃষি মন্ত্রণালয়। এর অংশ হিসেবে প্রথম এক বছরেই দেশে সরিষার আবাদ বেড়েছে দুই লাখ হেক্টর জমিতে এবং উৎপাদন বেড়েছে তিন লাখ ৩৫ হাজার মেট্রিক টন।
তেল হিসেবে বিবেচনা করলে এক লাখ ২১ হাজার মেট্রিক টন তেল বেশি উৎপাদিত হয়েছে। আর প্রতিলিটার তেলের মূল্য ২৫০ টাকা করে হিসাব করলে এক বছরেই উৎপাদন বেড়েছে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাবে গতবছর সরিষা আবাদ হয়েছিল ছয় লাখ ১০ হাজার হেক্টর জমিতে, এ বছর হয়েছে আট লাখ ১২ হাজার হেক্টর জমিতে। গতবছর উৎপাদন হয়েছিল আট লাখ ২৪ হাজার মেট্রিক টন, এ বছর হয়েছে ১১ লাখ ৫২ হাজার টন। এক বছরেই উৎপাদন বেড়েছে শতকরা ৪০ ভাগ।
আরও পড়ুন: জাপানে ইয়ানমারের কারখানা পরিদর্শন কৃষিমন্ত্রীর, বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান
দেশে বছরে ভোজ্যতেলের চাহিদা রয়েছে প্রায় ২৪ লাখ টন। এর মধ্যে সরিষা, তিল ও সূর্যমুখী থেকে স্থানীয়ভাবে উৎপাদন হয় মাত্র তিন লাখ টন, যা চাহিদার শতকরা ১২ ভাগ। বাকি ভোজ্যতেল আমদানি করতে হয়।
সেজন্য, ভোজ্যতেলের আমদানি নির্ভরতা কমাতে তিন বছর মেয়াদি কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে কৃষি মন্ত্রণালয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী ধানের উৎপাদন না কমিয়েই আগামী ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের মধ্যে স্থানীয়ভাবে ১০ লাখ টন তেল উৎপাদন করা হবে, যা চাহিদার শতকরা ৪০ ভাগ। এর ফলে তেল আমদানিতে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করা সম্ভব হবে।
কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের মধ্যে সরিষা, তিল, বাদাম,সয়াবিন, সূর্যমুখীসহ তেলজাতীয় ফসলের আবাদ তিনগুণ বৃদ্ধি করে বর্তমানের আট লাখ ৬০ হেক্টর জমি থেকে ২৩ লাখ ৬০ হাজার হেক্টরে উন্নীত করা হবে। তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বর্তমানের ১২ লাখ টন থেকে ২৯ লাখ টনে এবং তেলের উৎপাদন বর্তমানের তিন লাখ টন থেকে ১০ লাখ টনে উন্নীত করা হবে।
আরও পড়ুন: তরুণরাই বাংলাদেশে ‘স্মার্ট এগ্রিকালচারের’ নেতৃত্ব দেবে: কৃষিমন্ত্রী
এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে তিনটি বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
প্রথমটি হচ্ছে, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি। বর্তমানে আবাদকৃত টরি-৭, মাঘী, ডুপিসহ স্থানীয় জাতের পরিবর্তে উচ্চফলনশীল সরিষার জাত বিনা-৪ ও ৯, বারি ১৪ ও ১৭ প্রভৃতি জাত ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।
দ্বিতীয়ত, অনাবাদি চরাঞ্চল, উপকূলের লবণাক্ত, হাওর ও পাহাড়ি অঞ্চলকে তেলজাতীয় ফসল চাষের আওতায় আনা হচ্ছে।
তৃতীয়ত, নতুন শস্যবিন্যাসে স্বল্প জীবনকালের ধানের চাষ করে রোপা আমন ও বোরোর মধ্যবর্তী সময়ে অতিরিক্ত ফসল হিসেবে সরিষার চাষ করা হচ্ছে।
এছাড়া, লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য তেলজাতীয় ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষকদের দেওয়া হচ্ছে নানারকম প্রণোদনা। এর ফলে প্রথম এক বছরেই প্রায় দুই লাখ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ বৃদ্ধি করা সম্ভব হয়েছে।
আরও পড়ুন: দেশের অর্থনীতিতে বিরাট ভূমিকা রাখবে পার্বত্য চট্টগ্রাম: কৃষিমন্ত্রী
১ বছর আগে
তাপপ্রবাহ থেকে ফসল রক্ষায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের নির্দেশিকা
সারাদেশে চলমান মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহের মধ্যে ফসল ও ফল রক্ষায় নির্দেশনা দিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই)।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সারাদেশে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এটি আট দিন (১০ এপ্রিল থেকে ১৮ এপ্রিল) অব্যাহত থাকতে পারে।
নির্দেশিকা
তাপপ্রবাহের ক্ষয়ক্ষতি থেকে ধান রক্ষার জন্য ধানের শীষে দানা শক্ত না হওয়া পর্যন্ত বোরো ধানখেতে ২-৩ ইঞ্চি পানি সংরক্ষণের পরামর্শ দিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
আম গাছের গোড়ায় পর্যাপ্ত সেচের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি প্রয়োজনে শাখা-প্রশাখায় পানি স্প্রে করার জন্যও কৃষকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাশিয়ায় আগামী বছর দেড় থেকে ২ লাখ টন আলু রপ্তানি হবে: কৃষিমন্ত্রী
গরম থেকে শাকসবজি বাঁচাতে কৃষকদের মাটির ধরন অনুযায়ী আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দুই থেকে তিনটি সেচের ব্যবস্থা করার পরামর্শ দিয়েছে অধিদপ্তরটি।
এছাড়া, তাপপ্রবাহের ক্ষতি থেকে ফল ও শাক-সবজির চারা রক্ষার জন্য মালচিং ও সেচ নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে সারাদেশে তাপপ্রবাহ চলছে এবং তাপমাত্রা আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সোমবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে রাজশাহী বিভাগের ডিমলায়।
আবহাওয়া অধিদপ্তর অনুসারে, রবিবার ঢাকায় তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা বেড়ে সোমবার হয় ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
আরও পড়ুন: আগামী বছরগুলোতে দেশে সারের দাম বাড়বে না: কৃষিমন্ত্রী
১ বছর আগে
আমনে আবাদ লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ অর্জিত: কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর
খরা আর অনাবৃষ্টির কারণে আমন আবাদে যে শঙ্কা তৈরি হয়েছিল, তাকে পিছনে ফেলে চলমান আমন মৌসুমে ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ অর্জিত হয়েছে।
শনিবার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা কামরুল স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এ বছর আবাদ লক্ষ্যমাত্রা হলো ৫৯ লাখ হেক্টর। আর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ কোটি ৬৩ লাখ মেট্রিক টন চাল। ২০২০-২১ সালে আমন মোট আবাদ হয়েছিল ৫৬ লাখ ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে এবং উৎপাদন হয়েছিল এক কোটি ৪৫ লাখ টন। গতবছর ২০২১-২২ সালে আবাদ হয়েছিল ৫৭ লাখ ২০ হাজার হেক্টর জমিতে এবংআর উৎপাদন হয়েছিল ১ কোটি ৫০ লাখ টন চাল।
এতে আরও বলা হয়েছে, খরা আর কম বৃষ্টিপাতের কারণে আমনে প্রায় ১৫ লাখ হেক্টর জমিতে সেচ দিতে হয়েছে। সেচকাজে প্রায় ছয় লাখ ৭৪ হাজার গভীর নলকূপ, অগভীর নলকূপ, এলএলপিসহ বিভিন্ন সেচযন্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে। দেশে মোট সেচযন্ত্রের পরিমাণ ১৪ লাখেরও বেশি।সম্প্রতি ময়মনসিংহে এক কর্মসূচিতে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমন উৎপাদনে অনিশ্চয়তা কেটে গেছে। আর কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে আমনে উৎপাদন গতবছরের তুলনায় বেশিও হতে পারে।
আরও পড়ুন: খরা-অনাবৃষ্টি: অবশেষে আমন আবাদে শতভাগ লক্ষ্যমাত্রার অর্জন
ফসলি জমি রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃষকদের খোলা চিঠি
জামানাত ছাড়াই কৃষককে ঋণ দেয়া যায়: কৃষিমন্ত্রী
২ বছর আগে
চলতি মৌসুমে ফরিদপুরে সাড়ে ৫ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদন
চলতি মৌসুমে ফরিদপুরে ৪১ হাজার হেক্টর জমিতে পাঁচ লাখ ৫১ হাজার মেট্রিকটন পেঁয়াজ উৎপাদন করেছে জেলার চাষিরা। তবে পেঁয়াজ সংরক্ষণে ব্যবস্থা না থাকায় দ্রুত বাজারে ছেড়ে দিতে হয়। তাই পেঁয়াজ খ্যাত এই জেলায় হিমাগার নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন চাষিরা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ফরিদপুরে মাটি পেঁয়াজ আবাদে উপযোগী, যে কারণে দেশের পেঁয়াজ উৎপাদনে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে এই জেলা। এখানে তিন ধরনের পেঁয়াজ চাষ হয়; মুড়ি কাটা, হালি ও দানা পেঁয়াজ। এছাড়া জেলার ৯ উপজেলার মধ্যে নাগরকান্দা, সালথা, বোয়ালমারী, ফরিদপুর সদর, ভাঙ্গা ও সদরপুরে বেশি পেঁয়াজের আবাদ হয়।
সরেজমিনে জেলার কানাইপুর বাজারসহ বেশ কয়েকটি পেঁয়াজের বাজার দেখা গেছে, বর্তমানে প্রান্তি পর্যায়ে চাষিরা পাইকারদের (ব্যবসায়ীদের) কাছে মণ প্রতি ১৩শ’ টাকা দরে বিক্রয় করছে। তবে চাষিদের দাবি, মণ প্রতি উৎপাদন খরচ হয়েছে ৯শ’ টাকা। এই ক্ষেত্রে মণ প্রতি যদি তারা ১৮শ’ টাকায় দর পেত তাহলে বেশি লাভ হতো।
বোয়ালমারী উপজেলার ঘোষপুর ইউনিয়নের পেঁয়াজ চাষি আশুতোষ মালো বলেন, এ মৌসুমে পেঁয়াজের আবাদে খরচ একটু বেশি হয়েছে।
কানাইপুর বাজারের পেঁয়াজ ব্যসায়ী ও চাষি শাহজাহান মিয়া জানান, শুক্র ও মঙ্গলবার এ বাজারের হাট বসে। গত ১৫ দিন হলো মণ প্রতি চাষি পর্যায়ে ১৩শ’ টাকায় বিক্রয় করছে। যা আগে হাজারের নিচে ছিল।
তিনি জানান, জেলার বাইলে বাজার, রামকান্তপুর বাজার, ঠেনঠেনিয়া বাজার, ময়েনদিয়া বাজার, ফকিরের বাজার, নালার মোড় বাজার, কাদিরদী বাজার, সাতৈর বাজারগুলোতে চাষিরা প্রচুর পেঁয়াজ নিয়ে আসে।
পড়ুন: হালদায় আশানুরূপ মাছের ডিম মিলছে না
২ বছর আগে
হাওরের ৪১ শতাংশ ধান কাটা শেষ হয়েছে: কৃষি মন্ত্রণালয়
হাওরের ৪১ শতাংশ ধান কাটা শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয় জানায়, এর মধ্যে কিশোরগঞ্জে ৩৮ শতাংশ, নেত্রকোণায় ৭৩, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২৯, সিলেটে ৩৭, মৌলভীবাজারে ৩৬, হবিগঞ্জে ২৫ ও সুনামগঞ্জে ৪২ শতাংশ ধান কর্তন হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছর দেশের হাওরভুক্ত সাতটি জেলা কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোণা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ এবং সুনামগঞ্জের হাওরে চার লাখ ৫২ হাজার ১৩৮ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছে। আর হাওর বাদে চার লাখ ৯৮ হাজার ১৮০ হেক্টর জমিতে ধান আবাদ হয়েছে। মোট (হাওর ও নন-হাওর মিলে) ৯ লাখ ৫০ হাজার ৩১৮ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ৯ হাজার ৭০০ হেক্টর জমির ধান অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে আক্রান্ত হয়েছে, যা মোট আবাদের শতকরা এক ভাগ।
আরও পড়ুন: দেশে খাদ্য সংকট নেই, বিএনপি কোরাস গেয়ে চলেছে: কৃষিমন্ত্রী
এদিকে অতিবৃষ্টি, পাহাড়ি ঢল ও বৈরি আবহাওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ৮০ শতাংশ পাকলেই হাওরের ধান কাটার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এছাড়া, পাকা ধান দ্রুততার সঙ্গে কাটার জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় কৃষকদেরকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। ধান কাটার যন্ত্র কম্বাইন হারভেস্টার ও রিপার পর্যাপ্ত বরাদ্দ দেয়ার পাশাপাশি অন্যান্য জেলা থেকেও নিয়ে আসা হয়েছে।
আরও পড়ুন: আপাতত পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের পরিকল্পনা নেই: কৃষিসচিব
এই মুহূর্তে হাওরে প্রায় এক হাজার ৭০০ কম্বাইন হারভেস্টার ও রিপার ধান কাটছে। যার মধ্যে এক হাজার ১০০ কম্বাইন হারভেস্টার স্থানীয় আর ৩৫০টি কম্বাইন হারভেস্টার বহিরাগত বা অন্যান্য জেলা থেকে নিয়ে আসা হয়েছে বলে মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে।
২ বছর আগে
খুলনাঞ্চলের বোরো ধানে পোকার আক্রমণ: লোকসানের শঙ্কায় চাষিরা
খুলনাঞ্চলের বোরো ধানের খেতে বিভিন্ন ধরনের পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। কীটনাশক ব্যবহার করেও কোনও সুফল মিলছে না। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন চাষিরা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খুলনা সূত্রে জানা গেছে, এ বছর খুলনা জেলায় ৬২ হাজার ৭৩০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। এর মধ্যে খুলনা মেট্টোপলিটন এলাকায় ৫৩৫ হেক্টর, লবণচরা এলাকায় ৩৬০ হেক্টর, রূপসা উপজেলায় পাঁচ হাজার ৭১৫ হেক্টর, বটিয়াঘাটা উপজেলায় ছয় হাজার ৫০ হেক্টর, দিঘলিয়া উপজেলায় চার হাজার ৯০০ হেক্টর, ফুলতলা উপজেলায় চার হাজার ২৩০ হেক্টর, ডুমুরিয়া উপজেলায় ২১ হাজার ৯০০ হেক্টর, তেরখাদা উপজেলায় আট হাজার ৩৫০ হেক্টর, দাকোপ উপজেলায় ২১৫ হেক্টর, পাইকগাছা উপজেলায় পাঁচ হাজার ৬২৫ হেক্টর ও করা উপজেলায় চার হাজার ৮৫০ হেক্টর।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খুলনার উপ-পরিচালক কৃষিবিদ হাফিজুর রহমান বলেন, ‘ধানক্ষেতে মাজরা পোকা দেখা দিলে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। এ পোকা ধানের ফলনে কোনও ক্ষতি করে না। পোকা দমনের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া ব্যবহার করতে হবে।’
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে ঢলের আশঙ্কায় হাওরে দ্রুত ধান কাটার অনুরোধ করে মাইকিং
তবে ধানের ছড়া থেকে শীষ বের হতে শুরু করতেই শীষগুলোতে পোকার আক্রমণ দেখা দিচ্ছে।ফলে ওই ছড়াতে আর ধান না হয়ে শুকিয়ে সাদা (চিটা) হয়ে যাচ্ছে। ওই পোকার আক্রমণ থেকে বোরো ধান রক্ষায় কৃষকদের বিভিন্ন কীটনাশক ব্যবহার করতে দেখা গেছে। এর পরও প্রতি বিঘা জমিতে পাঁচ থেকে ছয় মণ করে ধান কম পাওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।
জদুর বিল এলাকার কৃষক সলেমান সরদার বলেন, ‘বোরো রোপণের পর ২০ থেকে ২৫ দিন পর্যন্ত কোনও পোকা আক্রমণ করেনি। হঠাৎ করে ক্ষেতে পোকার আক্রমণ বেড়েছে। রক্ষা পেতে বিভিন্ন কীটনাশক ব্যবহার করেছি। এরপরও প্রতিকার মিলছে না।’
কৃষক আবুল সরদার ও কামরুল ঢালী বলেন, ‘এ বছর বোরো ধানের বীজ খুবই ভালো ছিল। কিন্তু পোকা সব শেষ করে দিচ্ছে। ধানের শীষ কেটে দিয়েছে।’
কয়রা উপজেলা কৃষি অফিসার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘কয়রা উপজেলার বিভিন্ন বোরো ক্ষেতে পোকার আক্রমণ বেড়েছে। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পরিদর্শন ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন। তাছাড়া কৃষকরা বেশি ফলনের আশায় কৃষি বিভাগের অনুমোদনহীন বিভিন্ন জাতের ধানের আবাদ করে থাকেন। সেই জাতগুলো নতুন ধরনের মাজরা পোকা ও রোগবালাই বহন করে এবং আক্রান্ত হয়। একই মাঠে বা পাশাপাশি জমিতে সেসব জাতের ধান চাষ করার কারণে পোকা ও রোগবালাই অনুমোদিত জাতের ধানেও ছড়িয়ে পড়ে। এ বিষয়ে কৃষকদের সুপরামর্শ দেয়া হলেও তারা মানেন না। তবে ইতোমধ্যে নানা ধরনের পরামর্শ দিয়ে পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: হাওরাঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রণোদনা দেয়া হবে: কৃষিমন্ত্রী
অপরদিকে পাইকগাছায় চলতি মওসুমে বোরো ধানের বাম্পার ফলনেও হাঁসি নেই কৃষকের মুখে। কোন কোন এলাকায় শেষ সময়ে নেক ব্লাস্টের আগ্রাসনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ। প্রস্তুতি না থাকায় কৃষি বিভাগের পরামর্শেও কাজ হয়নি আক্রান্ত ক্ষেতে। ইতোমধ্যে অনেক এলাকায় কর্তন শুরু হলেও শীষে ধান না থাকায় শ্রমিকের মজুরী উসুল হচ্ছেনা। এমন পরিস্থিতিতে প্রণোদনা দাবি করেছেন তারা।
পাইকগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, ‘নেক ব্লাস্ট থেকে রক্ষা পেতে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কৃষক পর্যায়ে সভা-সমাবেশ, মাইকিং, লিফলেট বিতরণপূর্বক ও কৃষকদের করণীয় তুলে ধরেছেন।
কৃষি বিভাগ আরও জানায়, ইতোমধ্যে বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা উফশি জাতের ধান কাটা শুরু করেছেন। বাম্পার ফলন পেয়ে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। তবে কোন এলাকার কৃষকরা বলছেন ভিন্ন কথা, তাদের দাবি, প্রস্তুতি না থাকায় তারা ধানের পরিবর্তে চিটাসহ গাছ কর্তন করছেন। এজন্য তারা কৃষি বিভাগের আগাম সতর্কতা কিংবা পরিকল্পনাহীনতাকেই দায়ী করছেন।
কৃষি অফিস জানায়, চলতি মওসুমে নেক ব্লাস্ট উপজেলায় বোরো খেতে খুব বেশি ক্ষতি করতে পারেনি। তাদের হিসাবমতে, উপজেলায় মাত্রা ৪০ হেক্টর জমিতে এ ছত্রাকের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে।
পাইকগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, কৃষি বিভাগের সার্বিক তদারকি ও কৃষকদের অতিরিক্ত সতর্কতায় নেক ব্লাস্ট খুব বেশি ক্ষতি করতে পারেনি। ব্লাস্ট ছাড়া অন্যান্য রোগ-জীবাণুর প্রকোপ কম ছিল বলেও দাবি তার। সব মিলিয়ে সকল প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে বোরোর বাম্পার ফলন হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে বাঁধ উপচে হাওরে ঢুকছে ঢলের পানি
২ বছর আগে
চুয়াডাঙ্গায় গাছে গাছে আমের মুকুল, ছড়াচ্ছে সৌরভ
চুয়াডাঙ্গায় ঋতুরাজ বসন্তে ফুটা নানা ফুলের সঙ্গে আমের মুকুলও সৌরভ ছড়াচ্ছে। এবার সময়ের আগেই সোনালি মুকুলে ভরে গেছে জেলার আম বাগানগুলো। মাঘের আমন্ত্রণে আসা আগাম মুকুল ফাল্গুনকে স্বাগত জানিয়ে বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীদের মনে আশার আলো জ্বালিয়েছে।
জেলার সরেজমিনে কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা গেছে, গাছে গাছে নানা ফুলের সঙ্গে থোকায় থোকায় হলুদ রঙের আমের মুকুল আসতে শুরু করেছে। গাছে মুকুল ও গুটি আম দেখে ইতোমধ্যে ব্যবসায়ীরা বাগানের দরদাম হাঁকছেন। আর বাগানের মালিকেরা আমের ভালো ফলন পেতে ছত্রাকনাশক প্রয়োগসহ বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ততার সময় পার করছেন।
আরও পড়ুন: মিলছে না ন্যায্যমূল্য, লোকসানে চুয়াডাঙ্গার পান চাষিরা
চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, গত বছর চুয়াডাঙ্গা সদরে ৮২৫ হেক্টর জমিতে ১০ হাজার ৭৬০ মেট্রিক টন, আলমডাঙ্গায় ২৮০ হেক্টর জমিতে ৫ হাজার ৩৪০ মেট্রিক টন, জীবননগরে ৪০০ হেক্টর জমিতে ৭ হাজার মেট্রিক টন ও দামুড়হুদায় ৩১০ হেক্টর জমিতে ৭ হাজার ৮৭৫ মেট্রিক টনসহ জেলায় মোট এক হাজার ৮৯২ হেক্টর জমিতে ৩২ হাজার ৯৫৫ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হয়েছিল।
২ বছর আগে
গরুর দাম বেশি হওয়ায় ঘোড়া দিয়ে হালচাষ
গরুর দাম বেশি হওয়ায় প্রায় এক বছর ধরে ঘোড়া দিয়ে হালচাষ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ধন্দোগাঁও গ্রামের কৃষক ভূষণ চন্দ্র। তার এই কাজে সহযোগিতা করছেন স্ত্রী ভানু রাণী।
কৃষক ভূষণ চন্দ্র বলেন, ‘প্রায় এক বছর ধরে ঘোড়া দিয়ে জমি চাষ করে আসছি। আমি একজন প্রান্তিক কৃষক। বর্তমান বাজারে গরুর দাম অনেক বেশি। এক জোড়া হালের গরু কিনতে গেলে খরচ পড়ে ১ লাখ ২০ হাজার থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত। এই টাকা দিয়ে ছয় জোড়া ঘোড়া কেনা যায়। ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকাতেই এক জোড়া ঘোড়া কেনা যায়।’
তিনি বলেন, ‘আগে হালের গরু ছিল, এখন নেই। বাজারে গরুর দাম বেশি হওয়ায় কেনার সামর্থ্যও নেই। তাই নিজের চাষাবাদের প্রয়োজনে বাজার থেকে গরুর বদলে ২২ হাজার টাকা দিয়ে দুটি ঘোড়া কিনেছি। শুধু নিজের জমিতে চাষাবাদ করছি না, অন্যের জমিতেও টাকার বিনিময়ে চাষ করে দিচ্ছি। এক বিঘা জমি চাষ দিতে নিচ্ছি ৫শ টাকা। প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই বিঘা জমিতে হালচাষ করা যায়।’
আরও পড়ুন: ঘোড়ার মাংস হালাল: আদালত
ভূষণের স্ত্রী ভানু রাণী জানান, প্রথম দিকে ঘোড়াগুলোকে হালের কসরত শেখাতে অনেক কষ্ট হয়েছে তাদের। ঘোড়ায় লাঙল-জোয়াল জুড়ে দিয়ে অনেকবার চেষ্টার পর আয়ত্তে আসে। এখন পুরোদমে ঘোড়া দিয়ে হালচাষ করছেন তাঁরা।
ধন্দোগাঁও এলাকার কৃষক মনসুর আলী ও আব্দুল আজাদ বলেন, তাদের এলাকায় বড় কোনো গরু-মহিষ নাই। ভূষণের ঘোড়া দিয়েই তাদের জমিগুলোতে লাঙল দিতে হয়। এতে খরচও কম লাগে।
পার্শ্ববর্তী মাস্টারপাড়া এলাকার কৃষক হাসান আলী বলেন, ‘ঘোড়া দিয়ে লাঙল দিলে জমি গভীরভাবে খনন হয়। পাওয়ারটিলার বা মাহেন্দ্র গাড়ি দিয়ে হালচাষ করলে জমি সমান হয় না। তাই ঘোড়ার হাল দিয়ে জমি সমান করছি। এতে জমিতে পানি ধরে রাখা সহজ হয়।’
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আবু হোসেন জানান, কৃষকেরা এখন যান্ত্রিক উপায়ে জমি চাষ করেন। ঘোড়া দিয়ে হালচাষ করা অপ্রচলিত একটা বিষয়। সময়ের সঙ্গে ঘোড়ার যে ব্যবহার তা উঠে গেছে। কৃষক ভূষণ চন্দ্র নিজের প্রয়োজনে বাড়তি আয়ের জন্য ঘোড়া দিয়ে জমি চাষ বা মই দেন।
তবে কৃষি বিভাগ আধুনিক মানের যন্ত্রাংশ ব্যবহার করে চাষাবাদ করার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেয় বলে জানান এই কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন: ইঁদুরের গর্তে দু-মুঠো খেয়ে বাঁচার স্বপ্ন!
দার্জিলিং জাতের কমলা চাষে সফল ঠাকুরগাঁওয়ের জুয়েল
২ বছর আগে