ছোটগল্প
বড়পর্দায় রবীন্দ্রনাথের ‘হৈমন্তী'
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোটগল্প ‘হৈমন্তী’ অবলম্বনে পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘হৈমন্তীর ইতিকথা’ নির্মাণ করলেন মির্জা সাখাওয়াৎ হোসেন।
‘হৈমন্তী’ রবীন্দ্রনাথের একটি বিখ্যাত ছোটগল্প। এতে বিধৃত হয়েছে আবহমান কালের বাঙালি সমাজের নীরব নিষ্ঠুর এক কাহিনী। এক গৃহবধুর আত্মবিসর্জনের গল্প।
তবে গল্পের অঙ্গে অঙ্গে রয়েছে প্রাণবন্ত একজুটির রোমাঞ্চ ও ভালোবাসার স্পর্শ। পরিচালক যা চিত্রিত করেছেন সেল্যুলয়েডের পাতায় কাব্যিক চিত্রায়নে।
এই চলচ্চিত্রের নাম ভূমিকা রূপায়ন করেছেন নবাগত চিত্রনায়িকা ঐশিকা ঐশি।
আরও পড়ুন: বিদেশের মাটিতে মেয়ের সঙ্গে গাইলেন সামিনা চৌধুরী
অন্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন- সাইফ খান, ঝুনা চৌধুরী, রাশেদা চৌধুরী, খলিলুর রহমান কাদেরী, মির্জা সাখাওয়াৎ হোসেন, মুনা আক্তার, অরূপ কুন্ডু, মো. আব্দুর রাজ্জাক, মোহাম্মদ আবদুল হামিদ, আনিছুর রহমান, সিনথিয়া লিজা ও শিশুশিল্পী সিমন্তিনী চৌধুরীসহ প্রমুখ।
এই চলচ্চিত্রে চিত্রায়ন করা হয়েছে বেশ কয়েকটি রবীন্দ্রসংগীত।
কণ্ঠ দিয়েছেন প্রখ্যাত রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী ড. অণিমা রায়, মামুন জাহিদ, শিমু দে ও জয়ন্ত আচার্য্য। সংগীতায়ন করেছেন দীনবন্ধু দাশ।
‘হৈমন্তীর ইতিকথা’ চলচ্চিত্রটির পোস্ট প্রোডাক্টশনের কাজও সমাপ্ত হয়েছে। এখন আয়োজন চলছে সেন্সরের জন্য জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া।
আরও পড়ুন: 'প্যারাসাইট' অভিনেতা লি সান-কিউন মারা গেছেন
শেখ মণিকে নিয়ে টেলিছবি ‘বিন্দু থেকে বৃত্তে’
১০ মাস আগে
মুর্তজা বশীর ভাই, কেমন আছেন আজকাল?
অমন ছোটখাটো বিরাট মানুষ এদেশে কম এসেছে। যারা তাকে জানতেন, চিনতেন তারা বলতে পারবেন, মানুষের মনের দরিয়া কত বড় হতে পারে। কিছু মানুষ থাকে যাদের মনে যেমন আকাশ, ভাবনায় যেমন আকাশ, তেমনি ঠিকানাটাও সেথায়I বছর খানেক হলো নেই, বৃদ্ধ বয়সে কষ্ট পেয়ে গেলেন কিন্তু উনারা বোধহয় বিদায় নেন না। সারাক্ষণ মনের দরজায় করা নাড়ে।
২. আমি কাগজের মানুষ তাই হেথায় সেথায় দেখা হতো তার সাথে। কিন্তু তার মন ও ভাবনার সাথে প্রথম দেখা তার গল্প গ্রন্থ, ‘কাঁচের পাখির গান’ এর মাধ্যমেI যারা বইটা পড়েছেন তারা জানবেন কি অসাধারণ সেই ছোট গল্পগুলি।
শিরোনামের গল্পটাই যেমন, কথক এক রাতের জন্য কোনো নারীর সঙ্গ কিনেছে। কিন্তু ঘরের প্রস্তুতি নিচ্ছে যেন নববধূ আসছে। মেয়েটি এক সময় হাতের চুড়িগুলা বিছানায় খুলে রেখে ঘুমিয়ে পড়ে। কথক সেগুলাকেই স্বপ্নে দেখতে পায়। চুড়িগুলা কাঁচের পাখি হয়ে আকাশে গান গাইছে।
এই সম্পর্ককে এতো প্রেম ও পবিত্র ভাবে দেখানোর মুন্সিয়ানা তার ছিল। ষাট এর দশকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ গল্পকার তিনি, তবে সেইভাবে তাকে চিনি না , চিত্রশিল্পী বলেই জানি। কত বহুমাত্রিক তিনি সেটা তার গল্প আর ছবি না মিলিয়ে দেখলে পুরোটা বোঝা যাবে না।
৩. ৮০’র দশকের মাঝামাঝি একবার দেখা সাপ্তাহিক হলিডে অফিসে। সম্পাদক এনায়েতুল্লাহ খান (মিন্টু ভাই) সবার প্রিয় মানুষ তাই অনেকে আসেন। তবে বিচিত্র অফিসে যেমন সবাই যায়, সংসারী আর সংসার বিবাগী যেই হোক-হলিডে অফিসে একটু প্রতিষ্ঠিতদের বেশি ভিড়।
বশির ভাই বললেন, ‘আফসান, অন্য রকম ছবি আঁকছিI রেহালের আর কোরানের ছবি। খুব ভাল লাগছে।’ আড্ডা, আলাপ..., এমন সহজ সরল মানুষকে ভয় লাগে। যদি না বুঝে সারল্যের সুযোগ নেয়া হয়ে যায়।
ওই ছবিগুলার ওপর একটা লেখা লিখেছিলাম। শিরোনাম ‘New Directions Home’ । অনেকে পছন্দ করেI বার বার তিনি স্মরণ করিয়ে দিতেন আমাকে সবাইকে, ওই লেখাটার কথা। চাটগাঁ গেলে দেখা হতো, কিন্তু আমি বড় ব্যস্ত মানুষ, যোগাযোগ প্রায় রাখা হয়নি। খবর পেতাম ভালো আছেন।
৪. ২০১০ সালে আমি কানাডা থেকে ফিরে bdnews24.com এ যোগদান করি। সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী খুব দাওয়াতী মানুষ। অফিসে নিয়মিত আয়োজন হতো, বশির ভাই আসতেন, আড্ডা হতো। ওইসব গল্প যা ঘনিষ্ঠজনদের মাঝে হয়। তিনি আমার সিনিয়ার, আমরা এক সাথে কোনো শিল্প সাহিত্যের আন্দোলন করিনি, তাকে চিনেছি, তার সাহিত্য আর শিল্পের অনুরাগী হিসেবে। বড় কথা একজন সজ্জনতম মানুষ হিসেবে। সেই কারণেই বোধহয় তিনি ছিলেন সবার ঘনিষ্ঠ।
তিনি যে তার সকল পরিচয়ের ওপরে গিয়ে একজন প্রিয় মানুষ, এটাই বোধহয় মুর্তজা বশির ভাইয়ের শ্রেষ্ঠ পরিচয়।
ভালো থাকবেন, বশির ভাই, একদিন ওপরে তাকিয়ে আকাশে খুঁজে নেব এক আশ্চর্য কাঁচের ঈগল ডাকছে, বাংলাদেশের আকাশে উড়ছে।
লেখক: এডিটর এট লার্জ, ইউএনবি
৩ বছর আগে