ঔপন্যাসিক
হাসান আজিজুল হককে বিদায় জানালো রাজশাহী
ছোটগল্পকার ও ঔপন্যাসিক হাসান আজিজুল হককে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রাজশাহীর সর্বস্তরের মানুষ, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। সোমবার রাতে ৮২ বছর বয়সে মারা গেছেন এই লেখক।
দুপুর ১২টার দিকে একুশে পদক বিজয়ী লেখকের মরদেহ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আনা হলে প্রথমেই প্রয়াতের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানান জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল। তিনি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে হাসান আজিজুলের মরদেহে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
মরদেহে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
আরও পড়ুন: হাসান আজিজুল হকের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শোক
বাদ জোহর হাসান আজিজুলের নামাজে জানাজা শেষে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার উদ্যানে দাফন করা হয়েছে।
সোমবার রাত ৯টার দিকে হাসান আজিজুল শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত সমস্যা ছাড়াও হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন হাসান আজিজুল হক। কিছুদিন আগে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে ঢাকায় আনা হয়। পরে আবার রাজশাহীতে ফিরিয়ে নেয়া হয়।
আরও পড়ুন: প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক মারা গেছেন
হাসান আজিজুল হক ১৯৩৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি বর্তমান ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৮ সালে রাজশাহী সরকারি কলেজ থেকে দর্শন-এ সম্মানসহ স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৬০ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ১৯৭৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। ২০০৪ সাল পর্যন্ত তিনি সেখানে অধ্যাপনা করেন।
দেশের অন্যতম বিশিষ্ট লেখক হাসান আজিজুল হক সাহিত্যে অবদানের জন্য ১৯৭০ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পান। ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে একুশে পদকে ভূষিত করে। ২০১৯ সালে তাকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেয়া হয়।
৩ বছর আগে
প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক মারা গেছেন
একুশে পদকপ্রাপ্ত ঔপন্যাসিক ও ছোট গল্পকার হাসান আজিজুল হক আর নেই। সোমবার রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকা বিহাসে নিজের বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর।
হাসান আজিজুল হকের ছেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ হাসান মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার তপু জানান, মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় হাসান আজিজুল হকের মরদেহ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আনা হবে এবং দুপুর ১টা ২০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
আরও পড়ুন: বরিশালে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় আহত ভ্যানচালকের মৃত্যু, আটক ৩
দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত সমস্যা ছাড়াও হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন হাসান আজিজুল হক। কিছুদিন আগে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে ঢাকায় আনা হয়। পরে আবার রাজশাহীতে ফিরিয়ে নেয়া হয়।
হাসান আজিজুল হক ১৯৩৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি বর্তমান ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৮ সালে রাজশাহী সরকারি কলেজে থেকে দর্শন-এ সম্মানসহ স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৬০ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ১৯৭৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। ২০০৪ সাল পর্যন্ত তিনি সেখানে অধ্যাপনা করেন।
দেশের অন্যতম বিশিষ্ট লেখক হাসান আজিজুল হক সাহিত্যে অবদানের জন্য ১৯৭০ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পান। ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে একুশে পদকে ভূষিত করে। ২০১৯ সালে তাকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেয়া হয়।
পড়ুন: বিয়ানীবাজারে নার্সের রহস্যজনক মৃত্যু: স্বামী কারাগারে
ফের খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠানোর অনুমতি চেয়েছে পরিবার
৩ বছর আগে
মুর্তজা বশীর ভাই, কেমন আছেন আজকাল?
অমন ছোটখাটো বিরাট মানুষ এদেশে কম এসেছে। যারা তাকে জানতেন, চিনতেন তারা বলতে পারবেন, মানুষের মনের দরিয়া কত বড় হতে পারে। কিছু মানুষ থাকে যাদের মনে যেমন আকাশ, ভাবনায় যেমন আকাশ, তেমনি ঠিকানাটাও সেথায়I বছর খানেক হলো নেই, বৃদ্ধ বয়সে কষ্ট পেয়ে গেলেন কিন্তু উনারা বোধহয় বিদায় নেন না। সারাক্ষণ মনের দরজায় করা নাড়ে।
২. আমি কাগজের মানুষ তাই হেথায় সেথায় দেখা হতো তার সাথে। কিন্তু তার মন ও ভাবনার সাথে প্রথম দেখা তার গল্প গ্রন্থ, ‘কাঁচের পাখির গান’ এর মাধ্যমেI যারা বইটা পড়েছেন তারা জানবেন কি অসাধারণ সেই ছোট গল্পগুলি।
শিরোনামের গল্পটাই যেমন, কথক এক রাতের জন্য কোনো নারীর সঙ্গ কিনেছে। কিন্তু ঘরের প্রস্তুতি নিচ্ছে যেন নববধূ আসছে। মেয়েটি এক সময় হাতের চুড়িগুলা বিছানায় খুলে রেখে ঘুমিয়ে পড়ে। কথক সেগুলাকেই স্বপ্নে দেখতে পায়। চুড়িগুলা কাঁচের পাখি হয়ে আকাশে গান গাইছে।
এই সম্পর্ককে এতো প্রেম ও পবিত্র ভাবে দেখানোর মুন্সিয়ানা তার ছিল। ষাট এর দশকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ গল্পকার তিনি, তবে সেইভাবে তাকে চিনি না , চিত্রশিল্পী বলেই জানি। কত বহুমাত্রিক তিনি সেটা তার গল্প আর ছবি না মিলিয়ে দেখলে পুরোটা বোঝা যাবে না।
৩. ৮০’র দশকের মাঝামাঝি একবার দেখা সাপ্তাহিক হলিডে অফিসে। সম্পাদক এনায়েতুল্লাহ খান (মিন্টু ভাই) সবার প্রিয় মানুষ তাই অনেকে আসেন। তবে বিচিত্র অফিসে যেমন সবাই যায়, সংসারী আর সংসার বিবাগী যেই হোক-হলিডে অফিসে একটু প্রতিষ্ঠিতদের বেশি ভিড়।
বশির ভাই বললেন, ‘আফসান, অন্য রকম ছবি আঁকছিI রেহালের আর কোরানের ছবি। খুব ভাল লাগছে।’ আড্ডা, আলাপ..., এমন সহজ সরল মানুষকে ভয় লাগে। যদি না বুঝে সারল্যের সুযোগ নেয়া হয়ে যায়।
ওই ছবিগুলার ওপর একটা লেখা লিখেছিলাম। শিরোনাম ‘New Directions Home’ । অনেকে পছন্দ করেI বার বার তিনি স্মরণ করিয়ে দিতেন আমাকে সবাইকে, ওই লেখাটার কথা। চাটগাঁ গেলে দেখা হতো, কিন্তু আমি বড় ব্যস্ত মানুষ, যোগাযোগ প্রায় রাখা হয়নি। খবর পেতাম ভালো আছেন।
৪. ২০১০ সালে আমি কানাডা থেকে ফিরে bdnews24.com এ যোগদান করি। সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী খুব দাওয়াতী মানুষ। অফিসে নিয়মিত আয়োজন হতো, বশির ভাই আসতেন, আড্ডা হতো। ওইসব গল্প যা ঘনিষ্ঠজনদের মাঝে হয়। তিনি আমার সিনিয়ার, আমরা এক সাথে কোনো শিল্প সাহিত্যের আন্দোলন করিনি, তাকে চিনেছি, তার সাহিত্য আর শিল্পের অনুরাগী হিসেবে। বড় কথা একজন সজ্জনতম মানুষ হিসেবে। সেই কারণেই বোধহয় তিনি ছিলেন সবার ঘনিষ্ঠ।
তিনি যে তার সকল পরিচয়ের ওপরে গিয়ে একজন প্রিয় মানুষ, এটাই বোধহয় মুর্তজা বশির ভাইয়ের শ্রেষ্ঠ পরিচয়।
ভালো থাকবেন, বশির ভাই, একদিন ওপরে তাকিয়ে আকাশে খুঁজে নেব এক আশ্চর্য কাঁচের ঈগল ডাকছে, বাংলাদেশের আকাশে উড়ছে।
লেখক: এডিটর এট লার্জ, ইউএনবি
৩ বছর আগে